আন্না, গ্লুকোজ খেতে চান না

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি
লিখেছেন অনিন্দ্য রহমান (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৫/০৮/২০১১ - ৯:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
আন্না হাজারে একজন অর্ধশিক্ষিত, স্থূল এবং সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি, ঠিক সেই রাজনীতিবিদদের মতনই যাদের প্রতিপক্ষ হিসাবে তাকে খাড়া করিয়েছে ভারতের কর্পরেট মিডিয়া এবং টিভিসৌখিন মধ্যবিত্ত। জ্বী, আমিও টিভিসৌখিন। কিন্তু, ন্যাটোর সাথে গাদ্দাফির ইঁদুরবিড়াল খেলা বাদ দিয়ে আন্না হাজারে ও তার স্যাঙাৎদের কাজকাম দেখছি। সুতরাং এই লিখা।

আন্নার অর্ধশিক্ষিত হওয়ায় আমার আপত্তি নাই। জনপ্রতিনিধি হতে হলে কোনো বিশেষ ‘শিক্ষা’র প্রয়োজন আছে এমনটা স্বীকারও করি না (যদিও আন্নাকে কেউ ভোট দেয় নাই) । তবে এইটা সত্য যে আন্না সংসদীয় গণতন্ত্র সম্পর্কে কোনো ধারণা রাখেন না। অথচ সংসদের কাছেই আবদার করে বসে আছেন। স্থূলতা আপেক্ষিক। আর সুযোগসন্ধান রাজনীতিতে অস্বাভাবিক না। আন্নার রাষ্ট্রীয় বা আর্থিক নীতি (লাইন) সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা কারুর আছে কি না জানি না। সুতরাং তার রাজনীতির ধারণাটাই আপাতত দাঁড়ায় না। রাজনীতি অবশ্য খারাপ জিনিস। ব্যাড।

৪ রকম বিষয় নিয়ে লিখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু একটা নিয়ে লিখব। কারণ আবার টিভি দেখতে যেতে হবে। তার আগে বাকি ৩টা নিয়ে এক দুইলাইন করে লিখে রাখি।

২.
বাদপড়া বিষয় ১: আন্নাগোষ্ঠীর প্রস্তাবিত বিল কেন আদৌ একটা ‘বিল’ সেইটা আমার কাছে স্পষ্ট না। যেকেউ যদি বিল আনতে পারতে তাহলে পার্লামেন্টের দরকার কী? আর পার্লামেন্টের যদি দরকার না থাকে তাহলে এই ঘটনার মাজেজা কী? যদিও প্রশ্ন সেইটা না। প্রশ্ন হচ্ছে বিলে কী আছে, কী নাই, এই বিষয়ে কথিত 'আমজনতা' তকমাধারীদের কিছু জানা আছে বলে মনে হল না। বাংলাদেশের আন্নাপ্রত্যাশীদেরও না। সুতরাং বিলে কী আছে বড় কথা না। অংশগ্রহণটাই বড়। ভেরি স্পোর্টিং।

বাদপড়া বিষয় ২: বিশ্বজুড়ে সোশাল মিডিয়ার উস্কানিক্ষমতার (শব্দটা ‘ভাল’ অর্থে নিবেন) সাথে পাল্লা দিয়ে ভারতীয় টিভি মিডিয়াও এইবার ‘দেখিয়ে দিল’। এইসব টিভিচ্যানেলের রাজনৈতিক অর্থনীতির সাথে এই ব্র্যান্ড আন্নার সম্পর্ক নিয়ে যথেষ্ট লিখা যায়। ফোর্ড ফাউন্ডেশনের টাকায় রামলীলার কিছু ইতিহাস অরুন্ধতী রায় তার দি হিন্দু-তে প্রকাশিত প্রবন্ধে টেনেছেন।

বাদপড়াবিষয় ৩: সিভিল সোসাইটি ও পলিটিকাল সোসাইটির দ্বন্দ্ব। নিজকে রাষ্ট্রের অংশ না মনে করার ব্যক্তিবাদী প্রবণতা পুঁজির পক্ষে স্বাস্থ্যকর। সিভিল সোসাইটির গাজোয়ারি গণতন্ত্রকে কেবল রুগ্ন করে। (এই বিষয়ে অন্যত্র বিস্তার করব)

৩.
এই গাজোয়ারির সার্কাসে বাদ-না-পড়া বিষয়: শরীর

শরীর উপরন্তু সার্কাসের সরঞ্জাম। ‘চোখ বেঁধে ছুরি নিক্ষেপ’ নিখুঁত নিশানাবাজীর কসরৎ। শিল্পও বটে, ইংরেজিতে ইমপেইলমেন্ট আর্ট, বাংলায় লক্ষ্যভেদকলা? কিন্তু সার্কাস কম্পানির তরফে - সর্বাগ্রে উৎকণ্ঠাব্যবসা। ছুরি কে ছুঁড়ল তারও চেয়ে অনেক বেশি জরুরি কার দিকে ছোঁড়া হচ্ছে। যেহেতু কখনই নিক্ষিপ্ত ছুরিকার সামনে কোনো পুরুষকে বুক পেতে দাঁড়াতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না, এহেন ব্যবসার মূলধন নারীর শরীরকে দাঁও পে লাগানো, সন্দেহ কি। সুতারং শরীরটাকে ইন্টারেস্টিং হতে হয়। আন্নার বয়স ৭৪। গান্ধীবাদবিক্রেতা আন্নাগোষ্ঠীর বিজ্ঞাপনী জোরও ঐখানে।

কিন্তু সত্য হল, যতীন দাস থেকে পট্টি শ্রীরামুলুর ঔপনিবেশিক শরীর এই সার্কাসের থেকে কিছুটা দূরত্বেই থাকে। ঔপনিবেশিক শরীরে লেগে আছে চাবুকের দাগ। 'রক্তজবার মত ক্ষত'। ধর্ষণের চিহ্ন। ঐ শরীর আর নিছক আত্মার বাহন থাকে না। জীর্ণবস্ত্রের উপমা থেকেও অনেক জরুরি হয়ে উঠে শরীরের বস্তুমূল্য। যেই শরীরকে বশে আনতে চায় ঔপনিবেশিক ক্ষমতা, সেই শরীরকেই প্রতিবাদের মতন ছুঁড়ে দেয়া - এর চেয়ে তীব্র আর কি। তাই অনশন প্রতিবাদের একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ চিহ্ন হয়ে উঠে।

কিন্তু, (ঐ যে) শরীর উপরন্তু সার্কাসের সরঞ্জাম।

৪.
মিডিয়াকে প্রতিবাদব্যবসা এবং উৎকণ্ঠাব্যবসা দুইই একসাথে ম্যানেজ করে নিতে হয়। এর জন্য আন্নার অনশনকাণ্ড যে ‘আমরণ না’ অন্তত এই তথ্যটা কখনই ঠিক মতন খোলাসা না করা ভাল। তিনি নিজেই দিল্লি পুলিশের খাতায় এই কথা লিখে এসেছেন। কিন্তু নিজের শরীর বাজী রাখবার বীরত্বকে লঘু করতে আন্নাও চান না। তাই যখনই সুযোগ পান, বলেন, দেশের জন্য মরে যাওয়া ভাল। আমার জীবন দিয়ে দেশের ভাল করতে পারলেই আর কিছু চাই না। যতবার পারেন ‘মরে যাওয়া’র ব্যাপারটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেন। কিন্তু উৎকণ্ঠার উপাদানগুলোকেও হাতছাড়া করেন না। ‘জ্যায়দা বোলনেসে তখলিফ হোতে হ্যায়’। তখলিফের হিসাবটাও ভাল মতন কষা। আন্না নিজেই জানান তার ৬ কিলো ওজন কমেছে। আন্নার তখলিফও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলা প্রয়োজন।

মৃত্যুর আশঙ্কা ছাড়া খেলা জমে না। ভোঁতা ছুরি মেরে কী লাভ? কিন্তু সমস্যা হল সময় ফুরিয়ে আসছে। যেহেতু আমরণ না, তাই মিডিয়াকে অন্য আইটেমে যেতে হবে। এতক্ষণ দেখলেন ছুরি নিক্ষেপের খেলা। কিন্তু এইবার বাঘের মুখে হাত ঢুকাবে প্রিন্সেস স্বপ্না।

৫.
আন্নার সম্ভাব্য অনশন ভাঙার বিষয়টাকে জায়েজ করতে প্রথমে নিউজ চ্যানেল এনডিটিভিতে হাজির হন কথিত ‘টিম আন্না’র সভ্য শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর। আর্ট অফ লিভিং নামক বিরাট এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা রবিশঙ্করের ভারতের প্রভাবশালী ‘আধ্যাত্মিক’ নেতা। তিনি বর্খা দত্তকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন ‘লাইফ ইস মোর ইম্পর্ট্যান্ট’। আন্নার অনশন তুলে নেয়া উচিৎ। তিনি বেঁচে থাকলে সমাজের আরো বেশি উপকার হয়। ঘণ্টায় অন্তত চারবার করে এই সাক্ষাৎকার প্রচার হতে থাকে।

এর কয়েক ঘণ্টা পর, জনমতে আন্নার সম্ভাব্য অনশনভঙ্গের বিষয়টা জায়েজ করতে এনডিটিভি স্টুডিওতে হাজির হন আরেক ধর্মীয় কাম রাজনৈতিক নেতা স্বামী অগ্নিবেশ, ‘টিম আন্না’র সহযোগী। ইনিও একটা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন তহবিলের দেখভাল করেন। তিনিও জোরের সাথে বলেন আন্নাকে অনশন তুলে নিতে হবে। গান্ধীবাদে আমরণ অনশনের বন্দোবস্ত নাই। অর্থাৎ গান্ধীবাদের সাথে আরো ‘কমপাটিবল’ হতে আন্নাকে অনশন তুলে নিতে হবে।

মজা হল, এর মধ্যে উগ্র হিন্দুগোষ্ঠী শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল থ্যাকারেও বাণী দিয়েছেন। তার পার্টি আন্নাকে সমর্থন দিয়েছে। তিনি অনুরোধ করেছেন আন্নাকে অনশন ভাঙতে। বলেছেন ‘আন্নার পক্ষে’ তার সঙ্গীসাথী অনশন শুরু করতে পারেন। এই ‘বিকল্প’ নিয়ে মুখ খোলেননি আন্নার আরেক সঙ্গী পুলিশের সাবেক বড় কর্তা এবং নবজ্যোতি নামক এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা কিরণ বেদী। তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছেন ‘ভয়ের কিছু নাই’। টিকে থাকার কৌশল ‘আন্না জানতে হ্যায়’। আন্না বলেছেন তিনি আরো অন্তত ৮দিন টিকতে পারবেন। আন্না জানতে হ্যায়।

রামলীলা ময়দানে ২৪ ঘণ্টা কভারেজ চলছে। মোটামুটি দেখার চেষ্টা করছি। একবার ছাড়া কখনই দেখি নাই আন্না পানি খাচ্ছেন। বাই দ্য ওয়ে, আন্না পানি খাচ্ছেন শুরু থেকেই। কেবল গ্লুকোজ নিবেন না। যে একবারের কথা বললাম সেটা সম্ভবত স্রেফ ভুল করে সুইচ করা। কারণ শটটা বুঝতে না বুঝতেই কেটে দেয়া হয়। অবশ্য এত বুঝার কাজ নাই।


মন্তব্য

নিটোল ( অতিথি) এর ছবি

হুমম... গ্যালারিতে আছি। দেখি কোথাকার জল কোথায় গড়ায়...

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চিন্তিত

লেখা ঠিকাছে কিন্তু সিকোয়েন্স এবং কনসিকোয়েন্সগুলো নিয়ে ভাবছি।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দেখেন কালকে যদি আন্না মরিয়াও প্রমাণ করেন তিনি আমরণ যুদ্ধ করছেন, তাতে কিছুই প্রমাণ হবে না। পার্লামেন্টারি ডেমক্রেসি ছেলের হাতের মোয়া না যে এইধরণের ফালতু ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হবে। আর যদি হয়, সেইটা পার্লামেন্টারি ডেমক্রেসি না, ছেলের হাতের মোয়া।

দুর্নীতির সাথে লড়তে কে না চায়। কিন্তু তাই বইলা প্যারালাল বুরেক্রেসি তৈরি করার কী অর্থ। আরে ভাই সরকারী লোককে তো আমরাই ঘুষ দেই, কারণ আমরা যেই বাড়ি বানাইছি (ঘুষের টাকায়) সেইটা আইনের মধ্যে পড়ে নাই। আমরা আইন ফাঁকি দিব। ঘুষ খাবে রাজউকের লোক। দোষ কার? বুরেক্রেসিতে কারা যায়? পলিটিক্সে কারা যায়? তারা পাবলিক থাইকা আলাদা কেন? পাবলিকের সংজ্ঞা কী? আর সো কলড পাবলিক (পড়েন মধ্যবিত্ত) কি করাপ্ট না? আমি আপনে কি করাপ্ট না? ঘুষ দেয়া কী অপরাধ না? কথায় কথায় গান্ধীর নাম নেয়। স্বরাজের কনসেপ্টই জানে না। আত্মনিয়ন্ত্রণই তো স্বরাজের মূল কথা। আন্না নামক এই বৃদ্ধ ভাঁড় আসলে কর্পরেট ইন্ডিয়া আর গেরুয়াদলের ভেন্ট্রিলকির পুতুলমাত্র ,এমন সন্দেহ কি একেবারেই নাই? যদি থাকে আমি সেই সন্দেহটা রেজিস্টার করলাম, আমার মতন।

কনসিকোয়েন্স? দেখতে যাইয়ে ...


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

দুর্নীতির সাথে লড়তে কে না চায়। কিন্তু তাই বইলা প্যারালাল বুরেক্রেসি তৈরি করার কী অর্থ।

খুব দামী একটা কথা বলেছেন। ব্যুরোক্র্যাসিতে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে প্যারালাল ব্যুরোক্র্যাসি তৈরী করার কোনও যুক্তি নেই। আর সবথেকে বড় কথাটাও বলে ফেলেছেন আপনি। ব্যুরোক্র্যাসিকে অনেকাংশে নষ্ট তো আমরাই, পাবলিকরাই করি।

এখানে আন্নার পিছনের মানুষগুলোর ক্যারেক্টারস্ট্রিকস যদি দেখেন তবে দেখবেন সেখান বাল আছে, সাধু রবিশংকর আছে, ক্রেইন বেদী আছে। প্রশ্ন হচ্ছে এই ত্রিধারা একত্রে মিললো কিভাবে? সাধারনভাবে আশ্চর্যজনক নয় কি? উগ্রসাম্প্রদায়িক চক্র, আন্তর্জাতিক শান্তিবাদী এনজিও আর সাবেক পুলিশ। আর সাথে আন্না।

বাবু মেখে দেন দাড়িতে খেজাব মিয়া চৈতনে তৈল
চার চোখে করে আঁড় চোখাচোখি কি মধু মিলন হৈলো।

এই ত্রিধারার তো এজেন্ডা ছাড়া কোত্থাও যাওয়ার কথা না। কিন্তু এখানে তারা এসেছে এবং একত্রে ব্যাক্তিবিশেষের পিছনে খুঁটো হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং-

আমি সেই সন্দেহটা রেজিস্টার করলাম, আমার মতন।

আমাকেও সন্দেহটা রেজিস্টার করতে হচ্ছে। সিকোয়েন্স তো জমজমাট কিন্তু কনসিকোয়েন্সের জন্যে আরও অপেক্ষা করা লাগবে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অরফিয়াস এর ছবি

আন্নার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বা সুযোগসন্ধান এই বিষয়ে তর্কে যাচ্ছিনা, কিন্তু ভারতে RTI কিন্তু এসেছে এই আন্না হাজারের একার আন্দোলনেই, আর ভারতের সাধারণ জনগনকে দুর্নীতি সম্পর্কে অবহিত করার কাজটাও কিন্তু উনি যথেষ্ট ভালো ভাবেই করেছেন|
এবার আসা যাক লোকপাল বিলের প্রসঙ্গে, লোকপাল বিল সরকার কর্তৃক পরিত্যাক্ত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, এই বিলে লোক্পালের আওতায় প্রধানমন্ত্রী এবং বিচারপতিকেও আনা হয়েছে, লোকপাল ইচ্ছা করলে এদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারে এবং এদেরকে কারণ দর্শানোর জন্য বাধ্যও করতে পারে, সরকারের পক্ষের বক্তব্য হচ্ছে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কোনভাবেই লোক্পালের আওতায় আনা যাবেনা| আর এই বিল কিন্তু কোনো অদক্ষ ব্যাক্তির হাতে তৈরী হয়নি, বিচারবিভাগে বহু দিন কাজ করা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ড্রাফট এ কাজ করেছেন, আর দুর্নীতি দমনের জন্য RTI দাখিল করে কয়লা মাফিয়াদের বিবাগভাজন হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আন্নার একজন সাথী, তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে, আর এই RTI এর হাত ধরেই কিন্তু ভারতের সব দুর্নীতির বড় বড় খবর একে একে বের হয়ে আসছে, আর যেকোনো সাধারণ মানুষের জন্য এই লোকপাল বিলের এবং আন্দোলনের ব্যাপার গুলোকে সচ্ছ রাখার জন্য Indiaagainstcorruption.org নামের একটি সাইট ২৪ ঘন্টা আপডেট হছে, এছাড়াও ইন্টারনেট এ অজস্ত্র উপায়ে এর সম্পর্কে জানার উপায় আছে, তাই আমার মনে হয়না এতে কারো অজ্ঞ থাকার কোনো কারণ থাকতে পারে, যদি কেও অজ্ঞ থাকে তো সেটা তার একান্তই ব্যাক্তিগত অজ্ঞতা|

লোকপাল এর পুরো প্রক্রিয়াকে সচ্ছ ও গতিশীল করার জন্য এতে জনগনের সামনে প্রত্যেকটি তদন্ত সঠিক ভাবে ও সব প্রমানাদি উপস্থাপন করার ব্যাবস্থা আগে থেকেই রাখা আছে, এছাড়াও লোকপাল বিলে যে অংশও গুলো তোলা হয়েছে তা যদি সত্তি সঠিক ভাবে প্রয়োগ হয় তাহলে দুর্নীতি কমবে ব্যাপক ভাবে, এছাড়াও ভারতের যেসব দুর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের টাকা বিদেশে আটকে আছে তাও দেশে ফেরত আসার সম্ভাবনা ও সুযোগ ২টাই তৈরী হবে, যা বর্তমান ব্যাবস্থায় কোনভাবেই হচ্ছেনা|

সবশেষে এটা বলাই যায় যে দুর্নীতির জন্য সাধারণ জনগনের যে নাভিশ্বাস উঠছে তা থেকে বাঁচার জন্য আন্নার প্রদর্শিত পথ এখন পর্যন্ত সঠিক ও গ্রহণযোগ্য মনে হওয়ায় তার পিছনে সমর্থন দিন দিন বাড়ছে, ভারতের ইলেকট্রনিক মিডিয়া বরাবরই নাটুকে স্বভাবের ও অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশের জন্য দায়ী, আমি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আমি থাকি এলাহাবাদে, তাই যেদিন এলাহাবাদ হাইকোর্ট অযোধ্যা রাম মন্দিরের ও বাবরি মসজিদের মামলার রায় ঘোষণা দিলো সেদিন টিভিতে দেখাচ্ছিলো এলাহাবাদে ১৪৪ ধারা চলছে অমুক হচ্ছে তমুক হচ্ছে, কিন্তু সেই সময়ে আমি নিজে শহরে আরও সাধারণ মানুষের সাথে স্বাভাবিক ভাবেই ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম, আমাদের সাধারণ জীবন যাপনে এর কোনো প্রভাবই ছিলনা, তাই আর যাই হউক না কেন ভারতীয় মিডিয়ার উপর ভিত্তি করে কোনো সিধান্তে আসা একদমই ঠিক হবে বলে মনে হয়না...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ভারতে RTI কিন্তু এসেছে এই আন্না হাজারের একার আন্দোলনেই

এই একার ভিতরে অরুনা রায়কে দেখতে পাইতেছি না। কিংবা আন্নার এখনকার অন্যতম সংগঠক অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। আপনি যতই সচেতন হন না কেন, সবকিছু একার মধ্যে ঠেইলা দিলে মিডিয়ার পক্ষে আইকনবাজী করতে সুবিধা হয়। সিভিল সোসাইটি, এনজিও আর ধর্মব্যবসায়ী - সকলের।

লোকপাল জনলোকপাল বা অরুনা রায়ের বিল কোনটা সাথে কোনটা কী মিল-অমিল আছে সেইটা আন্নাভক্তরা জানতে আগ্রহী এইটা আমার মনে হয় না। আন্নার মঞ্চে তো অনেকেই অনেক কিছু বলতেছেন। রাজু শ্রীবাস্তব আইসা জোকও মেরে জাইতেছেন। কিন্তু বিল বিষয়ে তেমন কিছু বলতে আমার চোখে পড়ে নাই। আর আন্না তো আত্মপ্রচারে ব্যস্ত। মাঝে মাঝে অগভীর দার্শনিক বক্তব্য আওড়ানোতে ব্যস্ত। তারচেয়ে বড় কথা তারা যেই বিলটা বানাইছেন, সেইটা 'ঠিক' আছে কিনা সেইটা দেখতে সালমান খুরশিদকে দেয়ার কথা বলছেন। মঞ্চে কেজরিওয়াল আর কিরণ বেদীকে বলতে শুনলাম, আমরা মূল জিনিসটা দিছি। আইনের বিষয় অত জানি না। আইনের বিষয়ে যদি ছোটখাটো কিছু কারেকশন থাকে তাইলে সেইটা ওরা দেখে ঠিক করে পাশ করে ফেলবে। সংসদ তো আসলে এদের সম্পত্তি। পাবলিক ভোট দিয়া লেজিসলেটরদের পাঠায়। তারা আন্না আর তার স্যাঙাৎদের হুকুম তামিল করবে। ভালো। আরও মজা হইল, এরা বাকি দুইটা বিল পড়তে আগ্রহী সেইরকমও বলে নাই। দারুণ গণতান্ত্রিক ব্যাপার।

ভারতের মিডিয়ার উপর ভিত্তি কইরা সিদ্ধান্তে আসছি এমনটা ভাবলে একটু দুঃখ পাই। আমি বরং ভারতীয় মিডিয়া বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্তে আসছি। এনডিটিভির মূল অফিসে সপ্তাহ-দুই কাটানোর অভিজ্ঞতা আছে। আপনার সাথে খুবই একমত। এদের 'নাটুকে স্বভাব'। এই নিয়া একটা লিখা দিব কোনো একদিন।

আর যেই সাধারণ জনগণের কথা বললেন, এদের কথা প্রায়ই শুনি। অরুন্ধতী রায় তো লিখছেনই। আমি কোট করি।

‘The People' only means the audience that has gathered to watch the spectacle of a 74-year-old man threatening to starve himself to death if his Jan Lokpal Bill is not tabled and passed by Parliament. ‘The People' are the tens of thousands who have been miraculously multiplied into millions by our TV channels, like Christ multiplied the fishes and loaves to feed the hungry. “A billion voices have spoken,” we're told. “India is Anna.”

Who is he really, this new saint, this Voice of the People? Oddly enough we've heard him say nothing about things of urgent concern. Nothing about the farmer's suicides in his neighbourhood, or about Operation Green Hunt further away. Nothing about Singur, Nandigram, Lalgarh, nothing about Posco, about farmer's agitations or the blight of SEZs. He doesn't seem to have a view about the Government's plans to deploy the Indian Army in the forests of Central India.

ধন্যবাদ


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

লোকটারে আমার ভালো লাগেনি। অস্পস্ট বলে মনে হয়। মামাদের সমর্থিত অস্বাভাবিক সরকারের সময় আমাদের লরিয়েটের সাথে এর মিল আছে। ফেব্রিকেটেড আচরণ?

অ. ট. অনিন্দ্য কি ভুই পাইলো? চোখ টিপি সে দেখি সহজ ভাষায় লিখে। দেঁতো হাসি

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

নির্লজ্জতায় মিল পাই। আর এনজিওবাজীতে। যদিও নানান প্রভেদ আছে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আন্না পানিও খান্না... জলপান করেন হাসি

এইবার বাঘের মুখে হাত ঢুকাবে প্রিন্সেস স্বপ্না

এইটা বান্ধায়া রাখলাম...

বাকীটুক রাজনীতি... খারাপ জিনিস... ব্যাড

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আন্না খেল আপাতত খতম। সে দাবি করছে পিপল পাওয়ার ইস বিগার দ্যান পার্লামেন্ট। পার্টি!


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রণদীপম বসু এর ছবি

ছি ছি ! একটা অহিংস বিষয়রে অনিন্দ্য এইভাবে নষ্ট কইরা দিলো !!

যাক্, আমরা নাহয় প্রিন্সেস স্বপ্নার অপেক্ষায় থাকি !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নৈষাদ এর ছবি

আরেকটা চমৎকার বিশ্লেষণ অনিন্দ্যের। স্টাইলটাও পছন্দ হল।

অংশগ্রহণটাই বড়। ভেরি স্পোর্টিং।

ম্যানেজমেন্টের মতন। মাঝে মধ্যে একেকটা Fad আসে, কিছুদিন দৌড়া-দৌড়ি, তারপর বেক টু দ্য প্যাভিলিয়ন। গভীরে যাবার দরকার নেই - জানার কোন শেষ নেই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই।

২ এবং ৩ নিয়েও আপনার বিশ্লেষণ পড়ার আশায় রইলাম (৩ এর সাথে ১ ও কিছু এসে পড়বে)।

(অটঃ ১। আমিও দেড় সপ্তাহের মত ছুটি কাটিয়ে পুরা টিভিসৌখিন মধ্যবিত্ত। বিবিসির গাদ্দাফির ইদুর-বেড়াল, গভীর রাতে দেশি টকশো, মাঝে মাঝে এনডিটিভিতে আন্না হাজারে, প্রচুর প্রচুর বিনোদন। ২। আমিও কিন্তু সেই যুগে আর্ট অভ লিভিং … প্রচুর)

না প্রকাশে অনিচ্ছুক অতিথি এর ছবি

নতুন একটা কিছু ভেবে নজর করতেই মনটা দড়ি ছিঁড়ে পালালো। লোকপাল বিল! মনের ভেতর জেগে উঠলো পঞ্চান্ন হাজার বর্গ মাইল জমিন। ব্যাপারটা বাংলাদেশে নানাভাবে পরীক্ষা হয়েছে। সবটাই ব্যর্থ। কেন একটু বলি। তার আগে বলে নেয়া ভাল, ওই যে পঞ্চান্ন হাজার বর্গ মাইল ভেসে উঠলে তাই মন দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আর পড়া হয়ে উঠেনি। তবে পড়ুয়ারা মিলিয়ে দেখুন যদি আমার দেখা ঠিক ঠিক মিলে যায় বুঝবেন ওতে আর রস নেই। অন্তত এদেশে।

আন্নার কান্না লোকপাল বিল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কে হবেন ওই গোদা? নির্বাচিত নাকি অনির্বাচিতরা? অনির্বাচিত
বিদ্যাজীবীরা তো আদলতে আছেন, অ্যান্টি করাপশন কোম্পানীতে আছেন, মিডিয়াতে আছেন। আছেন না? ওসব পচা বললে আগে বলুন গণতন্ত্র হরি বোল। গণতন্ত্রের উপর টুপি পরানোর মস্ত এক ব্যবস্থা। আর ভারতবাসীর উচিৎ ইসলামাবাদে তীর্থযাত্রা করা।

তা বেশ করলাম না পালরাজ্য প্রতিষ্ঠা। ওই পালের গোদাদের ঠিক করবেন কারা? পার্লামেন্ট নাকি বিচারপতি নিয়োগের নিয়মেই খুঁজে নেয়া হবে এই ডিবির পাল। পার্ল্যামেন্ট নিযোগ দিলে কী দাঁড়ালো ব্যাপার খানা? আর নিখুঁত প্রতিযোগিতার পরীক্ষায় টিকে এলে, একবার তাকাতেই হয় ভারতের আমলাদের দিকে, ওরা কী চুষছে বসে বসে?

ভারী কথা সাজাচ্ছে। মন্ত্রীরা তাদের চেলারা ভাই বেরাদাররা যে চেটেপুচে ফাক করে দিলে। সে কথা তো একবারও বলছে না। সত্যিই তাই। এটা তো ঘটছেই। অ্যন্টি করাপশন অধীন বলে কাজে না এলেও সবার জানা ওতে চাকরি জুটলে তিন পুরুষ বসে খাওয়া যায়। তাতে ভারতেই হোক আর বাংলাদেশে। তবে স্বাধীন পাল মানে কিন্তু অ্যান্টি করাপশনের বাবুদের মত না। রেটটাও স্বাধীন একটু হাই। দ্বৈত শাসনের দ্বৈত ঘুষে জের বার হবে জনগণের।

অতো কথায় কাজ কী! কটা বাঘা বাঘা কেস তো দেখিয়ে তারা। হুম এইবার বলি এক গল্প। বছর কুড়ি আগে শোনা। বাংলাদেশের কোনো এক দ্বীপে সিনেমা হল বসবে। বাধা দিচ্ছেন হুজুররা। শেষে ফন্দি করে প্রথম এক মাস চলল হজের টানা শো। আর কবে যে সেখানে অঞ্জু ঘোষ পেছন দেখালেন সেটা আর কারুর মনে নেই। এখন নিশ্চয় মর্নিং শো-ও বসে ওখানে।

মধ্যপ্রাচ্যে চলছে পবিত্র গণতন্ত্র আনার লড়াই। ভারতে তো সে ডালভাত। ওকথা সেথায় মাল টানবে না। তাই গণতন্ত্রের সংকট উত্তরণ। করছেন কারা, পেছনে তাকালে কততকগুলো এনজিওর নাম! পড়লাম বোধ হয় এই ব্লগেই। যাচ্চলে, টিভির পর্দায় মঞ্চে বসে ছিপ মারা দেখেই আমদ পাচ্ছেন দেখি অনেকে। আমি একটা তাগির সুতো মাচার নীচে খুটিতে বাঁধা দেখলুম মনে হয়। জল ঘেটে দেখুন পশ্চিমা গরম হাওয়াটা ইরাক আফগান পাকিস্তান হয়ে কেমন এদিকে আসছে না তো? ভারতকে একটু চিৎ তো করা চাই নয় তো পশ্চিমা ষণ্ডা শরীর জুড়োবে না। অর্থনৈতিক যুদ্ধে যে ভারত আর চীনই এখন পশ্চিমের ঘাড় মটকাবে এতো ওদেরই কথা।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দ্বৈত শাসনের দ্বৈত ঘুষ

আপনার মন্তব্য যথার্থ। আশঙ্কাও। অনেক ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মঞ্চে বসে ছিপ মারা দেখেই আমদ পাচ্ছেন দেখি অনেকে

আবার পড়লাম ... গড়াগড়ি দিয়া হাসি


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সাইফ জুয়েল এর ছবি

জল ঘেটে দেখুন পশ্চিমা গরম হাওয়াটা ইরাক আফগান পাকিস্তান হয়ে কেমন এদিকে আসছে না তো? ভারতকে একটু চিৎ তো করা চাই নয় তো পশ্চিমা ষণ্ডা শরীর জুড়োবে না। অর্থনৈতিক যুদ্ধে যে ভারত আর চীনই এখন পশ্চিমের ঘাড় মটকাবে এতো ওদেরই কথা।

সহমত। চলুক

মনামী এর ছবি

বলিউড থেকেও সমর্থন পেয়েছেন।

সাইফ জুয়েল এর ছবি

আন্নার সাঙ্গপাঙ্গদের বলা হচেছ টিম আন্না। কি করপোরেট নাম। এ থেকেই বোঝা যায় আন্না কাদের তৈরী। অরুন্ধতীর লেখাটা পড়েছি। আন্নার স্বরপ তিনি উদঘাটিত করেছেন। লেখাটাকে রেফারেন্স হিসেবে আনায় আনিন্দ রহমানকে ধন্যবাদ।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

অরুন্ধতী রায় ছাড়াও অনেকে লিখছেন। নানান কিছু। আমার এক বন্ধু এই লিঙ্কটা দেখাইল। একটা লাইন পছন্দ হইল : The anti-corruption movement has the simplicity of a third-rate fable.

মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

তামান্না হায়দার এর ছবি

ওদের তলে তলে এত কিছু তা ভাবিনি। আজকাল অনেককেই তো বলতে শুনছি বাংলাদেশে একজন আন্নার খুব প্রয়োজন।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

জামায়াতও বলে সৎ লোকের শাসন চাই। যদিও এই কথাটা তারা তাদের গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দিছে। সৎ লোকের শাসন খুব প্রয়োজন।

তলে তলে অনেক কিছুই থাকে। ভাবলেই ভাল হাসি


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

হাসান মোরশেদ এর ছবি

নির্বাচিত গনতন্ত্রের বিকল্প মডেল- খোঁজ দ্যা সার্চ চলছে দেশে দেশে। ইউনুস বিষয়ক পুরানো পোষ্টে এই কথাটা বলছিলাম। অনেকেই অভিমান করছিলেন।
বাংলাদেশে একদফা চেষ্টা হয়েছে, হবে- আরো হবে।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

লোকসভায় কংগ্রেসের সদস্য রাহুল গান্ধী, ঘণ্টা দুই আগে:
Madam Speaker, laws and institutions are not enough. A representative, inclusive and accessible democracy is central to fighting corruption. Individuals have brought our country great gains. They have galvanized people in the cause of freedom and development. However, individual dictates, no matter how well intentioned, must not weaken the democratic process. This process is often lengthy and lumbering. But it is so in order to be inclusive and fair. It provides a representative and transparent platform where ideas are translated into laws. A tactical incursion, divorced from the machinery of an elected Government that seeks to undo the checks and balances created to protect the supremacy of Parliament sets a dangerous precedent for a democracy. Today the proposed law is against corruption. Tomorrow the target may be something less universally heralded. It may attack the plurality of our society and democracy.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

হাসান মোরশেদ এর ছবি

Today the proposed law is against corruption. Tomorrow the target may be something less universally heralded. It may attack the plurality of our society and democracy.

রাহুল গান্ধী জায়গামতো ধরছে।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নীরব পাঠক এর ছবি

ভারি একটা লেখা চলুক

আসলে মায়া সবই মায়া...গানের রিয়ালেটি শোতেও তিনি গিয়াছেন শুনলাম

তানিম এহসান এর ছবি

লেখা, মন্তব্য সব মিলিয়ে দারুন, আমরা কি অদ্ভুত একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি - পৃথিবী জুড়ে একটা তোলপাড় - আরো বহুদূর দেখতে হবে বলেই মনে হচ্ছেঃ কাজেই ছিপে টান পড়লেই যে মাছ গেঁেথছে ভাবার কোন কারণ নেই, যেমন নেই ছিপ পড়তে দেখলেই মাছ হিসেবে সেটাকে খপ করে আকড়ে ধরার! অদ্ভুত সময়!!

সুমন তুরহান এর ছবি

সব ব্যাটাই নষ্ট দেখছি!

-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

সব না।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নুসায়ের এর ছবি

আমার দুই ল্যাবমেট ভারতীয়। একজন গুজরাটি, আরেক জন গোয়ানিজ। দিন চারেক আগে আন্না হাজারের ঘটনাবলী নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে তাদের মধ্যে। আমি গোটা ব্যাপারটাই জানি ই-প্রথম আলোর পৃষ্ঠা থেকে (মানে তেমন কিছুই জানি না!)। সুতরাং চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করলাম। গুজরাটি জন মনে হলো আন্নার (এবং বিজেপির) চরম ভক্ত, গোয়ানিজ ছেলেটা তেমন আশাবাদী না। তার বক্তব্য হলো, জ্বর সারাবে কুইনিন, কিন্তু কুইনিন সারাবে কে? তবে দুইজনেই রাজনৈতিক নেতা/দল/সরকারের উপরে ত্যক্ত-বিরক্ত (বাংলাদেশের তথা-কথিত "আম-জনতা"র মতোই)। আমার মনে একটাই প্রশ্ন উকি-ঝুকি মারছে, আন্না কি মন্ত্রী, জন-প্রতিনিধি, নেতা? আম-জনতা সংসদে বিল আনবে কি করে? মজা নাকি!

কোন রাজনৈতিক দলকে সাপোর্ট দিই বা না দিই, গণতান্ত্রিক সরকারের বিরোধীতা করাটাই এখন ফ্যাশন। এই ফ্যাশন (পড়তে পারেন রোগ) এমন প্রকট আকার ধারণ করছে, যে দিন কয়েক আগে এক বন্ধুর ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেখলাম সে মনে করে সকল সরকারী কর্মচারী (সকল মানে সকল, রেলের কেরাণী থেকে শুরু করে সরকারী কলেজের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইত্যাদি) ঘুষ খায়, কাজে ফাকি দেয় এবং এদের জন্যেই দেশের এ হালত! আরেকজন জানাচ্ছে, বিসিএস পরীক্ষা (লিখিত/মৌখিক) দিয়ে আজকাল নাকি চেনা-জানা/ঘুষ ছাড়া চাকরী পাওয়া দায় । আমার ব্যাচমেট, নিতান্তই সাধা-সিধে যে ছেলেটা গত বিসিএসে ভালো করে রেলে চাকরী করছে, তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে ভাবছি। কিছুদিন পরে “সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রী কেবল নেতাদের আত্মীয়/ঘুষ দিয়ে ভর্তি হইছে” এও শুনতে হবে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

চলুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মন_মাঝি এর ছবি

আন্নার সাথে (এর ব্যাপারে আমি খুব একটা জানি না, তাই আপনার বিশ্লেষনই সঠিক ধরে নিলাম) লিবিয়ার বিদ্রোহ বা সাধারন ভাবে 'আরব বসন্ত'-কে ইকুয়েট করার ব্যাপারে একমত হতে পারলাম না। 'আরব বসন্ত' ফেইক না, বিদেশী স্বার্থসৃষ্টও না। আমার মতে এটা অথেন্টিক।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

'আরব বসন্ত' ফেইক না, বিদেশী স্বার্থসৃষ্টও না। আমার মতে এটা অথেন্টিক।

দ্বিমত/সন্দেহ আছে। পরে কথা হবে আশা করি।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মন_মাঝি এর ছবি

ওক্কে, পরে কথা হবে। হাসি

তবে এখানে এটুকু বলে রাখি, বিদেশী "স্বার্থসৃষ্ট" আর "স্বার্থসমর্থিত" -- এই দুইটা ঠিক এক জিনিষ না। আমি পরেরটায় বিরাট কোন দোষ দেখি না। পৃথিবীর বহু স্বাধীনতা-সংগ্রাম, বিপ্লব, বিদ্রোহই মনে হয় বিদেশী সহায়তা নিয়েছে, যে সহায়তা মোটেই নিঃস্বার্থ ছিল না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বিদেশী সমর্থনের কারনে মূল সংগ্রাম/বিপ্লব/যুদ্ধকে নাকচ করে দিলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকেও কিন্তু নাকচ করে দিতে হয়। সেটা কি ঠিক হবে ? বিদেশী "স্বার্থসৃষ্ট" আর "স্বার্থসমর্থিত"-র মধ্যে পার্থক্য এখানেই। আপাতত এইটুকুই।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

স্বার্থসমর্থিত বললে মানেটা অন্যরকম দাঁড়ায়। ঠিকাছে। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে কোনো একটা স্পেসিফিক সরকারপতনের আন্দোলনের সাথে গুলায়া ফেলাটা ঠিক হবে না বোধ হয়। নতুন রাষ্ট্র গঠন পুরাপুরি ভিন্ন জিনিস।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন নাকি?

দেখেন, আন্নার লোকজনও আন্নার সার্কাসবাজীকে 'সেকেন্ড স্ট্রাগল ফর ইনডিপেন্ডেন্স' বইলা চালায়া দিতে চাইতেছে। তারা স্ট্রাগল এবং ইনডিপেন্ডেন্স দুইটা শব্দের মানেই ঠিক জানে না প্রত্যয় হয়।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মন_মাঝি এর ছবি

প্লিজ! একটু ল্যাটিচ্যুড দেন ভাইয়া !

আমি সিরিকাস দার্শনিক বিতর্কের (সে যোগ্যতাও নাই) উদ্দেশ্য নিয়ে আঁটঘাট বেঁধে, সব ফাঁকফোকর বুজিয়ে একটা নিশ্ছিদ্র উদাহরন দেই নাই। যেটুকু বুঝাতে চেয়েছি সেটুকু আশা করি দুর্বোধ্য না - এটাকে তার থেকে বেশি কচলালে যে অর্থ বেরুবে (বা বেরুতে পারে) সেটা আমার উদ্দিষ্ট না (বা না-ও হতে পারে)। হাসি

যাহোক, নীচে কিছুটা অফ-টপিক হলেও আপনার প্রতিমন্তব্যের প্রেক্ষিতে একটু লম্বা করে একটা প্রতি-প্রতিমন্তব্য দিচ্ছি। তবে এই পোস্টে এই প্রসঙ্গে আমার এই শেষ মন্তব্য, কারন এই অঃটঃ আলোচনায় আপনার মূল পোস্টের ফোকাসটা ঘুরে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

১। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পাকিস্তানি সরকার তথা কোনো একটা স্পেসিফিক সরকারপতনের আন্দোলন অবশ্যই ছিল না।

২। (ক) লিবিয়ার আন্দোলনও আসলে একটা স্পেসিফিক সরকারপতনের আন্দোলনমাত্র নয়, এটা একটা আমূল সিস্টেমিক পরিবর্তনের- এক্কেবারে আগপাস্তলা পরিবর্তনের, এবং প্রায় পুরোটাই নতুন কিছু গঠনের - আকাঙ্ক্ষাজাত। এই অর্থে এটা স্রেফ একটা আন্দোলন বা আপরাইজিং নয় - বরং বিপ্লব। বলা চলে নতুন রাষ্ট্র গঠনের মতই। সত্যি কথা হল - ঐখানে কোন রাষ্ট্রই ছিল না আসলে গত ৪২ বছর। যা ছিল, তা হল স্রেফ পার্সোনাল ফিয়েফডম বা ব্যক্তিগত জমিদারি -- আক্ষরিক অর্থেই। এবং এই জমিদারি আবার অসংখ্য একতাহীন পরস্পর বিরোধী, এমনকি শত্রুভাবাপন্ন, বড়ছোট জাতিগোষ্ঠী ও ট্রাইবের জোড়াতালি দিয়ে এখনো পর্যন্ত প্রায় সম্মতিহীনভাবে বলপূর্বক সাঁটানো। এই ট্রাইবগুলিও আবার এসেছে ঐতিহাসিকভাবে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন বৃহৎ অঞ্চল থেকে - যারা ঐতিহাসিক ভাবে কখনই সম্ভবত ঠিক এক রাষ্ট্র ছিল না। এইবারেই, আসলে প্রকৃত অর্থে ওদের নেশন-বিল্ডিং শুরু হতে যাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত বুঝা যাচ্ছে ওরা এটা চায়, কিন্তু শেষমেষ পারবে কিনা সেটা পরের কথা। সুতরাং আমি এটাকে নতুন রাষ্ট্র গঠনই বলব। বাংলাদেশ বরং এসব দিক দিয়ে অনেক সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল।

(খ) ইয়েমেনের অবস্থাও খানিকটা লিবিয়ার মত। সমাধান করতে গেলে সেই রাষ্ট্র যে চেহারা নিবে তা একটা 'নতুন" রাষ্ট্রের চেয়ে খুব কিছু কম হবে না।

(গ) বাহরাইনেও প্রায় একই অবস্থা। এই দেশ আক্ষরিক অর্থেই বহিরাগত সংখ্যালঘু বিজেতা শাসক(ও তাদের স্বগোত্রীয়)-গোষ্ঠী দ্বারা শাসিত, যেখানে ভিন্‌ সম্প্রদায়ের সংখ্যাগুরু নেটিভরাই বরং নিজভূমে পরবাসী বা বিদেশীর মত অনধিকার পরাশ্রিত। সুতরাং এখানেও আপাদমস্তক সিস্টেমিক পরিবর্তন প্রয়োজন - যা হতে গেলে সেটা প্রায়
"নতুন রাষ্ট্র গঠন"-এর চেহারাই নিবে।

(ঘ) সিরিয়ার অবস্থাও অনেকটা বাহরাইনের মত কোন কোন দিক থেকে। এবং এখানে পরিবর্তন আনতে গেলে মনে হয় বিদেশী হস্তক্ষেপ না চাইলেও ঘটবে। ইরান ও হি্যবুল্লাহ সাইডলাইনে দর্শক হয়ে বসে থাকবে না। আর তা না থাকলে কি ঘটবে সেটা রীতিমত অচিন্তনীয়।

(ঙ) ইজিপ্টের আন্দোলনটা অন্যদের মত না হলেও, এখানেও কিন্তু সিস্টেমিক পরিবর্তনের আকাঙ্খাটা ঠিকই আছে। মিশরীয়রা বিদেশী হস্তক্ষেপ চায়নি, এবং আন্দোলনের পক্ষে মনে হয় না হস্তক্ষেপ হয়েওছে - এমনকি সময় মত তেমন কোন ইফেক্টিভ সমর্থন জ্ঞাপনও। যট্টুক হয়েছে তার মনে হয় সবটাই ওদেরই কৃতিত্ত্ব। মিশরীয় আন্দোলনটা প্রতিষ্ঠিত পাশ্চাত্য (+ইস্রায়েল) স্বার্থের বা মধ্যপ্রাচ্যীয় রাজতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রগুলির স্বার্থানুকুল ছিল না। সৌদিরা এর ব্যপক বিরোধিতা করেছিল। আম্রিকা সমর্থন জ্ঞাপন করেছে তখনই, যখন পরিনতি প্রায় নিশ্চিত - তাও আবার পিছলে বেরিয়ে যাবার জন্য ব্যাকডোর খোলা রেখেই। এবং এখনো তারা পুরোপুরি মিশরিয় জনদাবীর সমর্থক না - গণতন্ত্রের ওপর মিলিটারি ওভারসাইট ওরা এখনো চায় - ইস্রায়েল এবং অন্যান্য স্বার্থে। ইস্রায়েল এখনো সমর্থন করে না। এটার সাথে অন্য দেশের গুলি মেলালে চলবে না। একেক দেশের পরিস্থিতি একেক রকম।

(চ) যখন আর কোন উপায় থাকে না, যখন একটা দেশের মানুষ সীমাহীন ও প্রতিকারহীন সর্বগ্রাসী লাঞ্ছনা-বঞ্চনা-শোষন-অত্যাচার-হত্যা-নির্যাতন-নিপীড়নে বিপর্যস্ত হতে হতে মনে করে মানুষের মত বাঁচার জন্য তাঁদের আর কোন উপায়ই সামনে খোলা নাই, সহ্যের সমস্ত সীমা অতিক্রম করে তারা যখন রাষ্ট্রযন্ত্র বা রাষ্ট্রের শাসকদের বিরুদ্ধে মরনপন লড়াইতে ঝাপিয়ে পড়ে ব্যপক নিধনযজ্ঞের ঝুঁকি নিয়েই, তখন আমার মনে হয় অনেকসময় মানুষ হিসাবে তারা বিদেশীদের সাহায্য চাইতেই পারে। ইতিহাসে মনে হয় এর অনেক নজির পাওয়া যাবে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দুঃখিত আপানার ল্যাটিচ্যুড ভরাট করে দেয়ার জন্য।

কিন্তু কচলানোর তিতাকর্মটা কাউকে তো করতেই হবে ভাই, বিরাগভাজন হওয়ার আশঙ্কা মাথায় নিয়াই।

আরবের দেশগুলায় সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়া একটা ডিটেইল পোস্ট দেন না। আলোচনা হওয়া দরকার। জরুরি বিষয়। ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নীড় সন্ধানী এর ছবি

দেশী আবুলদের নিয়ে চিন্তায় থাকাতে বিদেশী আন্নার খবরে নজর দিতে পারিনি। আগ্রহও ছিল না। তাই বিস্তারিত জানতাম না। আপনার বক্তব্য যদি সঠিক হয় আন্না একজন ভণ্ড। ভণ্ড না হলেও ব্যাপারটা অন্ততঃ ইন্টারেস্টিং।

আসলে ভারতের দুর্নীতি নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। কিন্তু কৌতুহলী হই দুর্নীতির রেটিং, প্রসার, প্রভাব ইত্যাদি ব্যাপারে বাংলাদেশ আর ভারতের তুলনামূলক অবস্থান নিয়ে।

দুর্নীতির লজ্জাশরম বলে একটা জিনিস শুনেছিলাম মাহাথির মোহাম্মদের এক বক্তব্যে। বাংলাদেশের দূর্নীতিতে লজ্জাশরম উঠে গেছে অনেক আগেই। যদ্দুর জানি ভারতের দুর্নীতিতে সেই জিনিস এখনো আছে। তবু ওখানে দুর্নীতি নিয়ে অনশন হয়। কিংবা অনশন নাটক হয়।

আমাদের তো সে উপায়ও নেই। কারণ আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে দুর্নীতিবাজদের নিয়ে ঘরসংসার করলেও, দুর্নীতির সাথে জেহাদ ঘোষনা করি সরকার বদলের পরপরই। আবার তিন মাস না যেতেই সেই জেহাদ তারেক-মামুনদের পথ দেখায়, কিংবা আবুল-সাজাহানদের। আমাদের তাই আন্না হাজারে লাগে না, আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে শিষ্টের দমন, দুষ্টের পালন একসাথেই করতে পারঙ্গম।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ব্যাপারটা অন্ততঃ ইন্টারেস্টিং। অবশ্যই।

আমারও ভারতের দুর্নীতি নিয়া আগ্রহ নাই। আমি এই ঘটনা নজরে রাখছি একটাই কারণে, বাংলাদেশের সিভিল সোসাইটি ও নিজেদের আমজনতা হিসাবে দাবী করা নির্লজ্জ মধ্যবিত্তের একাংশ এবং সুবিধাবাদী মিডিয়া যেকোনোদিনই সংসদীয় গণতন্ত্র নস্যাৎ করতে এইধরণের ছ্যাঁচড়ামির আয়োজন করবে। তখন যাতে মিলায়া দেখতে পারি।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. আন্নার রাজনৈতিক পরিচয় কী? উনি সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত না থাকলেও উনার রাজনৈতিক মতটি কী? এই বিষয়টা পরিষ্কার হওয়া দরকার। নয়তো তার উদ্যোগ আখেরে কাদের জন্য ভালো ফল দেবে সেটা বোঝা যাবে না।

২.১. সংসদের বাইরে থেকে যদি বিল তোলা যায়, এবং সেই বিল কোনো উপায়ে পাশ করানো যায়; তাহলে সংসদের দরকার কী? যাক, অস্পষ্ট বিষয়গুলো একটু একটু করে স্পষ্ট হচ্ছে।

২.২. টাকা (অর্থনীতি) আর ক্ষমতা (রাজনীতি) ছাড়া অন্য কোনো কিছুর পক্ষে বড় ধরনের আলোড়ন তোলা দুষ্কর। তাই চারপাশের কোথাও মিডিয়া বা অন্য কেউ বড় আলোড়ন তুললে বুঝতে হবে সেখানে ঐ দুই আবশ্যিক উপাদান আছে।

২.৩. সিভিল সোসাইটি আর পলিটিক্যাল সোসাইটির দ্বন্দ্বও কি এক প্রকার রাজনীতি নয়? বিস্তারিত শোনার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

৩. এই ঘটনার আগে থেকেই আন্না সেলিব্রেটি। তাই চাকু ছুঁড়ে মারার জন্য তাকে বেছে নেয়াটাই স্বাভাবিক। আগামী দিনে একই জায়গায় কিরণ বেদীদের দেখা যাবে। এরপর হয়তো কোনো বলিউড স্টার আসবেন।

যথাযোগ্য শ্রদ্ধা বজায় রেখেই বলা যায়, যতীন দাস থেকে পোত্তি শ্রীরামুলুতে যেতে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, স্বপক্ষ-প্রতিপক্ষ, আফটারম্যাথ সবই আশঙ্কাজনকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। আর এখন তো টিভিতে WWF-এর রেসলিং দেখানোর মতো কাণ্ডকারখানা চলছে।

৪. প্রিন্সেস স্বপ্না আসবেন কি আসবেন না নিশ্চিত নই, তবে ভবিষ্যতে পাবলিক আরো অথেনটিক খেলা দেখতে চাইবেন। তখন কিন্তু স্টান্টম্যানের দরকার হবে, বা কাউকে সত্যি সত্যি উঁচু ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে দেখাতে হবে। সুতরাং একটা পলিটিক্যাল স্টান্টম্যান(পারসন)দের গ্রুপ তৈরি হতে যাচ্ছে বোধহয়।

৫. টিভি দেখছি না, দেখার ইচ্ছেও নাই। তাই জানি না নাটক এখন কোন পর্যায়ে আছে। এইসব নাটকের পরিণতি লোকে জানে। তাই কেউ অবাক হবেন না, শুধু নিয়ম মতো হাততালি দেবেন। এইসব Fad দেখলে উপস্থিত ব্যবসাটার বদলে আমার মনে শুধু এই কুচিন্তাটা ঢোকে - এইসব নাচানাচির আড়ালে কোন বৃহৎ দুষ্কর্মটাই না হয়ে গেলো!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

২.৩. সিভিল সোসাইটি আর পলিটিক্যাল সোসাইটির দ্বন্দ্বও কি এক প্রকার রাজনীতি নয়? বিস্তারিত শোনার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

লিখতেছি। On Techno/Mobo/Democracy।

নাটক আপাতত শেষ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এইতো এক প্রিন্সেস এসে গেছেন! দেখুন মজা!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

চিন্তিত


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

আন্নাতো গ্লুকোজ খেয়ে ফেল্লেন হে

দময়ন্তী এর ছবি

প্রচুর নাচাকোঁদার পর আপাতত এক পর্ব সমাপ্ত৷ কিন্তু আন্নার কোন দাবীটা যে সরকার মানল, সেটাই ঠিক করে বুঝে উঠতে পারলাম না৷

সে যাই হোক, লোকপাল বিল আর জনলোকপাল বিলের একটা তুলনামূলক আলোচনা পড়ছিলাম৷ তা দেখলাম আন্নাদাদু প্রধানমন্ত্রীকে লোকায়ুক্তের অন্তর্ভুক্ত করতে যত আগ্রহী ঠিক ততটাই আগ্রহী এন জি ও দের সবরকম নজরদারীর বাইরে রাখতে৷ এইটা বেশ ইন্টারেস্টিং একটা পয়েন্ট৷ এন জি ও দের নজরদারীর বাইরে রাখার অর্থ পরোক্ষে তাদের ফান্ড প্রোভাইডারদেরও নজরদারীর বাইরে রাখা৷ এই ব্যপারটা আমার অন্তত একটুও পছন্দ হল না৷ আমি বলছিনা যে সব এন জি ও রাই গোলমেলে, কিন্তু এন জি ও রা সব দেশেই বিদেশী শক্তিদের জন্য একটা ইনফ্লুয়েনশিয়াল টুল৷ কাজেই তাদেরকে নজরদারীর আওতার বাইরে রাখাটা একেবারেই অনুচিত৷

এমনিতে দূর্নীতির বিরুদ্ধে আন্নার পয়েন্টগুলো ভাল৷ অনেক লোক জেনুইন ক্ষেপে গিয়ে যোগ দিয়েছে, এটাও ঘটনা৷ কিন্তু সেটাই সব নয়৷ ধরেন দিল্লীতে অটোওয়ালারা যাত্রীদের যথেচ্ছ ঠকায়৷ তো, এই মওকায়ও তারা লুটতে ছাড়ছে না কিন্তু৷ বিভিন্ন জায়গা থেকে রামলীলা ময়দানে যেতে ৩-৪ কিমি'র জন্য দেড়শো দুশো টাকাও চার্জ করছে৷ যারা দিচ্ছে আর যারা নিচ্ছে তারা সব্বাই আবার দূর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল৷ আবার ধরেন যে শিক্ষিত উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত এই দূর্নীতির লড়াইয়ে সহমর্মিতা জানাচ্ছে সেইই ওষুধের দোকানে গিয়ে শ্যাম্পু, সাবান কিনে ওষুদের বিল বানিয়ে এনে অফিসে মেডিকাল বিলের টাকা ট্যাক্স ফ্রী ক্লেইম করার জন্য জমা দিচ্ছে৷ তা এইসব দেখলে শুধু ঘোড়া কেন, গোটা চিড়িয়াখানারই হো হো করে হাসার কথা৷

আরও দু চারকথা হয়ত বলা যেত, তা রবিবারের দুপুরটা --- আলসেমি লাগছে৷ হাসি

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনার কমেন্টের জন্য। বিশেষত রবিবার দুপুর যখন। এনজিওর বিষয়টা লালুও বলছে গতকালকে লোকসভায়। এইটা একটা বিরাট কনসার্ন তো অবশ্যই। এনজিও ব্যবসা বন্ধ হইলে সিভিল সমাজ খাবে কী? এনজিওর বড় বড় দোকান আর তার সেগুলার মহাজনদের কিছু বললে সিভিল সমাজ হাহাকার করে উঠে। আর সো কলড আম আদমীর দুর্নীতিপরায়ণতা নিয়া যা বললেন সেইজন্য হাততালি


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মাহমুদুল হাসান এর ছবি

আন্না নিয়ে ভাবনায় আমি আনিন্দ ও অরন্ধতি সাথে ভিন্নমত পোষণ করি। এখানে "অর্ধশিক্ষিত", আর অরন্ধতির "সন্তু" শব্দ দুটি খুব শ্লেষাত্মক মনে হচ্ছে। অনিন্দা তো স্বীকার করেছেন বিষয়টি তেমন বুঝতে পারেন নাই, সুর মিলিয়েছেন প্রথম আলোর অরন্ধতির কলামে। হতে পারে আন্নার দুর্বলতা (আনিন্দ ও অরন্ধতি উল্লেখিত) গুলো মিডিয়া বা এন জি ও ব্যবহার করেছে, কিন্তু তিনি যে পথটা দেখালেন সেটা আমাদের তথাকথিত সিভিল সমাজের পুরস্কার প্রাপ্ত জ্ঞানীরা কোনদিন খুঁজে পাননি। ঈর্ষা না করে জ্ঞানীদের উচিত এই শক্তিকে সঠিক পথে প্রয়োগে যত্ন করা। আন্না জনগন থেকে উঠে আসা একটা প্রত্যাশা, একটা স্বপ্ন যেটা ঝড় হয়ে জনবিচ্ছিন্ন রাজনীতিবিদ আর জ্ঞানীদের তাসের ঘর গুড়িয়ে দেবে অতীতের মত আগামী সকালে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

সুর মিলিয়েছেন প্রথম আলোর অরন্ধতির কলামে।

আপনি মনে হয় ধরেই নিছেন আন্না বিষয়ক আমার যাবতীয় জ্ঞানের উৎস প্রথম আলো গড়াগড়ি দিয়া হাসি

ধরেন বাংলাদেশের আন্নার মতন "জনগণ থেকে উঠে আসা একটা প্রত্যাশা" নাজিল হইল। আর তাকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ আর মায়ানমার এক হয়ে গেল। খুব মজা হবে তখন। (জোক মারলাম)


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নুসায়ের এর ছবি

হা হা হা

তিনি যে পথটা দেখালেন সেটা আমাদের তথাকথিত সিভিল সমাজের পুরস্কার প্রাপ্ত জ্ঞানীরা কোনদিন খুঁজে পাননি

আমাদের ভাগ্য ভালো।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।