১
অনেকদিন আগে দেখা এক স্ট্যান্ড-আপ কমেডিতে কমেডিয়ান দুর্দান্ত একটা কথা বলেছিলেন রসিকতার ছলে। কথাটা অনেকটা এমন ছিলো, মানুষজন হিটলারের প্রতি যতোটা না আক্রোশ বোধ করে তারচেয়ে বেশি আক্রোশ বোধ করে বাসে চুপিসারে যে পকেটমার তার পকেট মেরে দিয়েছিলো তার উপর। "ঈশ! শালারে যদি হাতের কাছে পাইতাম"- বুকের ভেতর থেকে উঠে আসা এমন অনুভূতি আমরা হিটলারের উদ্দেশ্যে বোধ করিনা, বোধ করি পকেটমারের প্রতি।
কথাটা নিদারুণ হলেও সত্য। অন্তত এ দেশের মানুষের জন্য তো বটেই। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না হলে অন্যের কোনো ক্ষতিই পারেনা আমাদের স্পর্শ করতে। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছে, প্রতিদিনই বাস-ট্রাক-গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হচ্ছে, মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। সে খবর টেলিভিশনের পর্দায় আমাদের চোখে পড়ে, খবরের কাগজে চোখে পড়ে। আমরা হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সামান্য সময়ের জন্য দুঃখ বোধ করি, কিন্তু সেটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলেনা। আমরা খবরের কাগজটা পাশে রেখে, চায়ে শেষ চুমুক দিয়ে জীবন যাপন করতে চলে যাই।
তারপরও নিত্যনতুন এইসকল দুঃসংবাদ মাথায় চাপ ফেলে খুব। মাঝে ফেসবুক থেকে বের হয়ে গেলাম, পেপার পড়া বন্ধ করলাম। অবশ্য ফেসবুক এখন এমনই এক জিনিস, এখান থেকে বের হলে দুনিয়ার সকল ধরণের খবর পাওয়া বন্ধ। আমারও তাই হলো, চোখ-কান বন্ধ রেখে কয়েকদিন চাপহীন জীবন যাপনের বৃথা চেষ্টা করলাম। ঐ সময়েই রুমানা মঞ্জুর নির্যাতিত হলেন, আমার খবর পেতে লাগলো একদিন, তাও ল্যাবের পোলাপানের কল্যাণে।
ঘটনার বর্ণনায় তাজ্জব হয়ে গেলাম। একটা মানুষের পক্ষে এমন কাজ করা কীভাবে সম্ভব সেটা চিন্তা করে কূল-কিনারা করতে পারলাম না। অবস্থা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ফেসবুক দোকান খুলে বসলাম আবার। দুই একদিনের মাঝেই "এক হাতে তালি বাজানো তত্ত্ব" কে পুঁজি করে বাঙালি সফলভাবে আলোচনা মোড় ঘুরিয়ে দিতে সমর্থ হলো। রুমানা মঞ্জুরেরও নিশ্চয়ই দোষ আছে! নতুবা স্বামী তাকে এভাবে মারতে যাবে কেন!
বসে বসে এ রঙ্গ-তামাশা দেখলাম। এরপর এলো পরিমল! সচেতন মানুষেরা যখন পরিমল ইস্যুতে প্রতিবাদী, তখনই একদল তার "হিন্দুত্ব" নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে যেতে থাকলো। পরিমল ছাড়াও অনেক "হিন্দু"র নাম-ধাম-ছবি পোস্ট আকারে আসলো যা দেখে এমন মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়, এই হিন্দুগুলাকে বের করতে পারলেই, দেশটা ছায়া-সুনিবিড়-শান্তির নীড়ে পরিণত হবে।
বাসার কাছেই নদীর ওপারে ছয়জন "ডাকাত"কে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। ডাকাত নয় নির্দোষ, খবরটা জানাজানি হবার পর, ফেসবুকের কল্যাণে এরা আবার নিহত হলো মানুষের কাছে। শবেবরাতের দিন গাঞ্জা খাইলো ক্যান ব্যাটারা? অথচ ছোটবেলায় এই শবেবরাত কতো মজাদার একটা রাতই না ছিলো। বাসায় সবসময় কড়াকড়ির মাঝে থাকতাম, পবিত্র এই রাত এবং শবেকদরের রাত ছিলো পুরো বছরের সবচেয়ে আনন্দময় সময়। পাড়ার সমবয়সীরা সবাই রাতভর এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ঘুরতাম। মাঝে মাঝে নৌকা ভাড়া করে ভাসতে থাকতাম তুরাগের উপর। বড়দেশী গ্রামের মতো অনেক গ্রামই আছে ঐ এলাকায়। আমরা যেতাম বিশাল গোলাপের বাগান আছে এমন এক জায়গায়। ভাগ্যিস গোলাপের বাগানে ডাকাতির অভিযোগে কেউ আমার মুখে ভরে দেয়নি ককটেল বোমা।
এইসব নানা ঘটনা আমাদের সবার কাছে উপস্থিত হয়েছে স্রেফ "একটি" ঘটনা হিসেবেই। আমরা অল্পস্বল্প আলোড়িত হয়েছি হয়তো, কিন্তু ভুলে যেতে দেরি করেনি একেবারেই।
তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর নিহত হলেন সড়ক দুর্ঘটনায়। মৃত্যুর মাধ্যমে এই অবুঝ জাতিকে তারা বহুদিন পর একটু নাড়া দিয়ে গেলেন। যে মানুষ চুপচাপ এতদিন তিন ঘণ্টা জ্যাম ঠেলে কোথাও আশা যাওয়াকে নিয়তি হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন, তিনিও মৃদুস্বরে বলতে বাধ্য হলেন, এমনটা তো হবার কথা না, এমনটা কেনো হচ্ছে আমাদের সাথে।
সেই বিপ্লবও ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তারেক মাসুদ বা মিশুক মুনীরের মৃত্যুটা বরঞ্চ বেশ একটা ক্ষতিই করে দিয়ে গেলো আমাদের। না না, তাদের মত মানুষ এদেশ হারিয়েছে এ ক্ষতি নয়, এ ধরণের ক্ষতিতেই বরঞ্চ অভ্যস্ত আমরা। ক্ষতিটা হলো অন্যভাবে।
দেশের মানুষ দেখলো, এমন একটা ঘটনাও আমাদের রাজা-উজিরদের সামান্যতম লজ্জা বা অপরাধবোধ এনে দিতে পারেনি। ঘটনার পরপরই ক্যাথরিনকে যম-মন্ত্রীর কাছ থেকে শুনতে হয়েছে, দোষটা আসলে কার ছিলো। তার একদিন পরেই বুক ফুলিয়ে নৌ-মন্ত্রী ঘোষণা দিয়ে দিলেন চব্বিশ হাজার পরীক্ষা বিহীন লাইসেন্স প্রদানের স্বপ্নের কথা- কারণ দেশে চালক সংকট। পত্রপত্রিকায় সেই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলো, মানুষজন ক্ষোভে ফেটে পড়লো। কিন্তু সেই ক্ষোভের মূল্যের চেয়ে এই চব্বিশ হাজার ড্রাইভারের প্রত্যেকের কাছ থেকে পাওয়া পাঁচ হাজার টাকাই যে অনেক বড় তা আমরা দেখলাম। দেখলাম আমাদের মন্ত্রী মহোদয় বলছেন, গরু-ছাগল-উট-ভেড়া চিনলেই তো ড্রাইভার হওয়া সম্ভব এমন চমৎকার যুক্তি।
আমরা দেখলাম বিন্দুমাত্র লজ্জা শরমের তোয়াক্কা না করে তাদের মুখ চালানো। তারা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, তোরা অফ যা। আমাদের একটু লুটে পুটে খেতে দে। মন্ত্রী তো আর মরার দেশ সেবা করার জন্য হইনি, হয়েছি লুটে পুটে খাবার জন্য। পেট ভরে খেতে দে ঠিকমতো।
একটা মজার ঘটনা মনে পড়লো লিখতে লিখতেই। গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ জয়ী হবার পর পরিচিত এক বড়ভাই বলেছিলেন, এবার শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়তো হবেন না, মতিয়া চৌধুরীকে এ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। গতবার আওয়ামীলীগ জয়ী হবার পর আসলেই ভেবেছিলাম দেশে হয়তো এবার সত্যিকার অর্থেই একটা সুস্থ পরিবর্তন আসবে, রাত না বদলাতেও দিনটা হয়তো সামান্য হলেও বদলাবে। তাই ভাইয়ার এই চমকপ্রদ কথা ছিলো খুবই আশান্বিত হয়েছিলাম এই ভেবে যে, ব্যক্তি স্বার্থ উপেক্ষা করে আরেকজনকে ক্ষমতা প্রদানের চমৎকার দৃষ্টান্ত এদেশেও হতে পারে। যাহোক সেটা হয়নি, বলাই বাহুল্য। তারপরও আশায় বুক বেঁধেছিলাম শেখ হাসিনার হাত ধরেই হবে পরিবর্তন।
কতোটা পরিবর্তন হয়েছে এটা দেশের সবাই এখন দেখতে পাচ্ছে। তিনবছর পার হলো তাই না। অবশ্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা না করতে। এতে করে নাকি শত্রুর হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের সময়ও নাকি স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠীরা সমালোচনা নামক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দেশের মানুষকে বিভ্রান্তির জালে আটকে ফেলেছিলো- যার পরিণতি পনেরই আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ড।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শুধু একটি কথাই বলতে চাই শ্রদ্ধার সাথে। সংবিধান সংশোধন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আধাখেঁচড়া করে ফিরিয়ে আনা কোনো সফলতা নয়, অন্তত দেশের সাধারণ মানুষের কাছে তো নয়ই। সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়া খুবই সাধারণ। যেমন ধরেন, একটু বেঁচে থাকার অধিকার, পরিবার-পরিজন-সন্তান নিয়ে, একটু আনন্দের প্রত্যাশা, সারাদিন কর্মক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরার পর একটু খানি বিদ্যুৎ, একটু খানি কম জ্যাম-জট এমনই।
এর কোনোটা কি আপনি দিতে পেরেছেন? সামান্য একটু স্বস্তির খবর কি আজ পর্যন্ত আপনি আমাদের দিতে পেরেছেন? পারেননি। আমরা বুঝে গেছি আপনি পারবেনও না। কারণ আপনার নিয়োগ করা বেপরোয়া মন্ত্রীদের সামান্য পদচ্যুত করার ক্ষমতাই আপনার নেই। আপনার কাছ থেকে আমরা কী আশা করবো। কিছু না। মুখভর্তি কথা ছাড়া। অথচ এই দেশের অসংখ্য মানুষ পাওয়া যাবে যারা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যা অর্জন করেছেন, দেশ বিদেশে এমন বিষয় নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করছেন। আপনি তো পারতে তাদের হাতে মন্ত্রণালয়গুলো তুলে দিতে। কিন্তু দেন নি এবং এখন প্রমাণ করেছেন দিতে আপনার তেমন কোনো আগ্রহও নেই। কারণ হতে পারে তারা পথে প্রান্তরে আওয়ামীলীগ করে কখনও মার খায়নি, ভোটের সময় অর্থের ব্যবস্থা করেনি। এই দুষ্টু চক্র থেকে আপনি বেরোতে পারবেন এই আশা ছিলো আমাদের, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনি আমাদের আশাহত করলেন।
হতে পারে এটাই আমাদের শেষ আশাহত হওয়া। আগামীবার আর আপনাদের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা দেখিনা। আগামীবার আপনাদের শত্রুদেরই হয়তো এ দেশের জনগণ আবার ক্ষমতায় বসাবে। তবে মনে রাখবেন, আগামীবার বিএনপি নির্বাচিত হলেও এদেশ চালাবে জামাত। আমাদের জন্য এটাই হয়তো শেষ বাংলাদেশ। আগামীবার থেকে আরেকটি ছোট্ট পাকিস্তান হিসেবেই আত্মপ্রকাশ করতে পারবো আমরা- অনেক দিন করি করি করবার পর।
তার আগ পর্যন্ত নিজের ভেতরে আবদ্ধ থাকি, যতক্ষণ না রাস্তায় বাস চাপা পড়ে, কিংবা পুলিশের পিটুনিতে কিংবা ডাকাত সন্দেহে কিংবা আরও অন্যান্য অসংখ্য উপায়ে ভবলীলা সাঙ্গ হচ্ছে। সবকিছু নষ্টদের অধিকারের চলে গেছে। মেরুদণ্ডহীন জাতি আমরা, আমরা বসে বসে দেখি, দেখতেই থাকি ... আপনারা এগিয়ে চলুন। তবে চলার পথে একটা কথা মাথায় রাখতে পারেন- সত্যিকার শত্রু কারা তা চেনার বাকি রয়েছে আপনার।
২
ইচ্ছেঘুড়ি নামে একটা সিরিজ চালাতাম আইইউটি তে থাকার সময়। আইইউটি ছাড়ার সাথে সাথে নিজের কথা বলার সেই সিরিজের সমাপ্তি টানতে হলো, সেই সাথে নিজের কথা বলার জন্য ব্লগ লেখাকেও।
আজ প্রায় বছর দেড়ের পর দিনপঞ্জি লিখতে বসলাম সচলে। কেনো জানি আজ বার বার মনে হচ্ছিলো নিজের ভেতরের মানুষটা ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে অসলতায়, বিষণ্ণতায়, চারপাশের বাঁধভাঙ্গা কষ্টে। সবকিছু একবারে লেখা সম্ভব না আমার পক্ষে, কিন্তু মাথা তা মানবে কেনো? হাত তা মানবে কেনো? তাই কোথা থেকে কোথায় জানি হারিয়ে গেলাম লেখাটা লিখতে লিখতে। তারই ফলশ্রুতি এই এলোমেলো সূচনা। অবশ্য প্রতিটা ঘটনা সুক্ষ্ম দৃষ্টিকোন দিয়ে বিচার করে লিখেও তেমন একটা লাভ নেই, কে শোনে কার কথা। দিন শেষে এই সকল ব্লগ, স্ট্যাটাস আমাদের ব্যক্তিগত দুঃখই হয়তো কিছুটা লাঘব করে, মাথার চাপ কিছুটা হলেও কমায়- অন্য কিছু না।
এই দেশে বড় কষ্টে আছি আমরা। বড় কষ্টে আছি।
এমন নির্মল আনন্দে থাকতে পারলে মন্দ হতো না। হাজার হোক, জীবন একটাই ...
মন্তব্য
সেদিন "Apple" আর স্টিভ জবস এর খবর পড়তে গিয়ে পেলাম পাদ্রী মার্টিন নেইমলার (Martin Niemoller) এর এই কথাগুলো, যা আমাদের দেশের মানুষের জন্যে খুব বেশি প্রযোজ্য
লেখায়
কমেন্টের লেখাগুলো সত্যিই আমাদের জন্য অতিমাত্রায় প্রযোজ্য।
পোষ্টটার কথা আর কি বলব? আমি নতুন ব্লগার, গত ৩ সপ্তাহ ধরে এই কথাগুলো লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি, আমার কলমের দুর্বলতার কারণে লিখে ফেলতে পারিনি। আপনি ফিরে এসে মনের কথাগুলো বলে দিলেন। ধন্যবাদ।
জাফর স্যার পাশে আছেন, "ঘুরে দাঁড়ানোর সময়"
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার পাশে আছেন, "নৌপরিবহনমন্ত্রী ও তাঁর ‘অশিক্ষিত’ ড্রাইভার"
নিরাপদ সড়কের দাবীতে "গ্রুপ" তৈরী হয়েছে, ইতিমধ্যে প্রায় ২৭০০ মেম্বার হয়ে গিয়েছে, অনেক কাজ শুরু হচ্ছে ওখান থেকে।
আপনার মতো ব্লগাররা ফিরে আসছে, আমার মত আনাড়ী লেখক ব্লগার হওয়ার চেষ্টা করছে।
আরো অনেকে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, কিছু একটা না করে ছাড়বেই না মনে হচ্ছে।
একই সময়ে এত মানুষ একযোগে এগিয়ে যাওয়ার ঘটনা সহজে ঘটে না। একটু ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলে এবার কিছু একটা করা সম্ভব। সব জনগন একযোগে চাইলে সরকারের কোন উপায় থাকবে না কাজ না করে। কেউ স্বীকার করুক আর নাই করুক জনগণইতো সকল ক্ষমতার মূল উৎস। আমরা সব জনগণ একবারে এটা টের পেলেই সব সমস্যা দূর করে দিতে পারব।
সুমন_সাস্ট
ধন্যবাদ সুমন_সাস্ট মন্তব্যের জন্য ...
ধীরে ধীরে জাগরণ আছসে। তবে দেশে মনে হয় ভালো নেতৃত্বের খুব সংকট। জাফর ইকবাল স্যার যদিও তাঁর শেষ লেখাটায় তারেক মাসুদ মেয়ের রূপকে দেশ এই ঘটনার মাধ্যমে বদলে যাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, কিন্তু স্পষ্ট করে তিনি বলেছেন নৌমন্ত্রী এবং যমমন্ত্রীর পদত্যাগেই এই দেশের মানুষ খুশি হয়ে যাবে। ফেসবুকে সেদিন সচলের সৌরভ ভাই মন্তব্য করেছিলেন, এই দুইমন্ত্রীর পদত্যাগে খুব একটা লাভ নেই, কারণ আমাদের রাজনৈতিক দলের থলেতে এদের মতো মানুষের কোনো অভাব নেই। কথাটা কিন্তু একেবারেই সঠিক। এদের সাবস্টিটিউট এদের মতোই কেউ হবে।
পুরো সিস্টেমটা বদলানোর বিপ্লবে এদেশের মানুষের বিপ্লবিত হবার জন্য বোধহয় আরও সাফার করতে হবে। তখনই আমরা নিজেদের অবস্থানের কথা ভুলে গিয়ে একাত্ম হতে পারবো। এবং সেক্ষেত্রেও এই বিপ্লব যেনো ভালোমানুষের কাছ থেকে ছিনতাই না হয় সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় হিসবে উপনীত হবে। এ সবই আসলে পরের কথা ...
আমরা আর কত অপেক্ষা করব সেই বিশেষ সময় আসার, দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার? এখনই কেন মনে হচ্ছে না যে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে?
আমরা এখন অসুস্থ হলে মনে হয় মাটি কামড়ে পরে থাকি, চিকিৎসা করতে গেলে গেলে আবার জান নিয়ে টানাটানি না শুরু হয়ে যায়।
কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হলে মনে হয়, না গিয়ে কাজটা সারা যায় না? যানবাহনে উঠলে আবার জান নিয়ে ফিরতে পারব কিনা কে জানে?
বাজারে আম উঠলে মনে হয় আম খেতে গিয়ে ফরমালিন খাওয়ার চেয়ে না খাওয়াই ভাল। কিন্তু মাছ না কিনেতো উপায় নেই।
মৌলিক চাহিদা পূরণে আর কতটা বাধা আসলে মনে হবে যে "নাহ, যথেষ্ট সাফার করেছি। এবার কিছু একটা করা দরকার।"
সম্ভব হলে গ্রুপে এসে কিছু গাইড করেন।
সুমন_সাস্ট
কী লক্ষ্যভেদী কথা! দারুন লাগলো ...
জানিনা কথাটা কতটুকু সত্যি। আমার ডিপার্টমেন্টের এক বড় ভাই আমাদের বলেছিলেন যে দেশের এই অবস্থায় উনি আসলে ব্যপক খুশি। কারন, দেশে আসলে এখন এক ধরনের মাৎসন্যা/পুরোপুরি বিশৃঙ্খল অবস্থা (anarchy) চলছে। যা নাকি আসলে একটা ভালো লক্ষন। আমাদের দেশটা এত দিন ধরে একটা বাজে সিস্টেমের ভেতর দিয়ে চলেছে এবং চলছে। এই এখনকার সময়টা তারই একটা চরম রূপ। হয়ত জামাত ক্ষমতায় আসার ভেতর দিয়ে এই অরাজকতার ষোলকলা পূর্ণ হবে এবং তখন দেশ সহ পুরো সিস্টেমটা ভেঙে পড়বে। এবং শুধুমাত্র তখনই এ দেশকে নতুন করে সুন্দর করে গড়ে তোলার একটা সুযোগ পাওয়া যাবে। নাইলে এ সিস্টেমের ভেতরে থেকে আসলে পরিবর্তনের কোন জায়গা নাই।
পুরানা বিল্ডিঙের উপ্রে নতুন কইরা ফ্লোর বানাইলে বিল্ডিং তো কাঁপবেই, তা আপনি যতই ঠ্যাক দেন না ক্যন। তার থেকে পুরানটা ভেঙে নতুন দাঁড়া করানোটা কি বেশি ভালো না?
তানভী
অন্য কেউ এসে বোমা না মারলেই হয়।
আমি যদিও আমার লেখায় জামাত আসার কথা বলেছি সেটা কিন্তু একেবারেই আক্ষরিক অর্থে নয়। বিএনপি যদি আসে, তবে পেছনের থাকা জামাত হবে গত চারদলীয় সরকারে শাসন আমলের চেয়ে অনেক অনেক শক্তিশালী।
গণজাগরণ ঘটুক আমিও চাই। কিন্তু আমরা কেবল আশাই করি, একদিন এমন একটা কিছু হবে। অনেকটা উপর থেকে ফেরেশতা বা আবাবিল পাখি আমাদের এসে বাঁচিয়ে দেবে এমন আশার মতো। নিজেরা কিছু না করলে এমনেই চলতে থাকবে।
কষ্টফষ্ট তো আমাদের গায়ে লাগার কোনো লক্ষণ দেখিনা।
বাইরে আসার আগেও দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম অনেক। বাইরে আশার পর কেন জানি কষ্ট হচ্ছে দেশকে নিয়ে। তবুও আবার অনেক আশা নিয়ে দেশে যাচ্ছি। কেন জানি এখননি খুব বেশি আত্তকেন্দ্রিক হতে মন সায় দিচ্ছে না। দেখি না কি হয়?
লেখায়
গগন
খুবই সাহসী সিদ্ধান্ত। শুভকামনা রইলো ...
এতদিন পর লিখলেন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অলসের চুড়ান্ত হইয়া গেছি দুনিয়ার প্রতিটি ক্ষেত্রেই
ঘটনাপ্রবাহ এমনই যে সবচেয়ে সহজ কাজটা হল হতাশ হওয়া। আমি নিজে এই সহজ কাজটা করতে চাই না। কিন্তু অন্যকে মানাই বা করব কেন?
আপনার লেখার একটা অংশে মনে হল আপনি টেকনোক্রেটদের শাসন চাচ্ছেন। স্পেসিফিক এই জিনিসটা আমি গণতন্ত্রের পক্ষে অস্বাস্থ্যকর মনে করি। (এখন প্রশ্ন হতে পারে, আমাদের দেশের গণতন্ত্র? তার আবার স্বাস্থ্য? উত্তর হয়ত জানি না।)
পুনশ্চ: জামাতের ক্ষমতায় আসার বিষয়টাও একটু বেশীই সহজ মনে করছেন বোধ হয়।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ অনিন্দ্য রহমান।
প্রথম লাইনটা খুবই সত্য। হতাশ হয়ে যাওয়াটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে সোজা কাজ এখন। লেখাটা যদিও হতাশায় ভরপুর কিন্তু আসলে আমিও হতাশ হতে চাইনা। বা এখনও পুরোপুরি হইনি। পড়ালেখা শেষ করে দেশে রয়ে গেছি, দেশের জন্য কাজ করবো এই অভিপ্রায়ে। যদিও জীবনের মৌলিক চাহিদাও যেদেশ পূরণ করতে পারেনা, ব্যক্তি নিরাপত্তা বা আনন্দের ব্যবস্থার কথা বাদই দিলাম এমন নানাবিধ কারণে মাঝে মাঝেই সব ছেড়ে ছুড়ে চলে যেতে ইচ্ছা করে- সেটা অবশ্যই স্বার্থপরতা, মানতে আপত্তি নেই। কিন্তু মানুষ হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই বোধহয় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে এই সীমাবদ্ধতা আমি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে চাই, যখন ব্যর্থ হই তখনই বোধহয় এমন হতাশায় জর্জরিত লেখা বের হয়।
লেখাটাকে এলোমেলো একারণেই বলেছি। আমি ঠিকমতো নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা না করেই কিছু বিষয় অবতারণা করে ফেলেছি। আমি ঠিক টেকনোক্রেটদের শাসন চাচ্ছিনা। তবে এমন হতে পারে, দেশের শাসনকারী এবং সেবাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আমরা আলাদা করতে পারি। যেমন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সমবায় এমন একটা মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বভার অবশ্যই রাজনীতিতে অভিজ্ঞ একজনের কাছেই যাওয়া উচিত এবং একই সাথে মনে করি, এদেশের বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ সেবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়গুলো অভিজ্ঞ এবং পারদর্শী মানুষের কাছেই তুলে দেওয়া উচিত। সুক্ষ্ম একটা সীমারেখা। অবাস্তব কীনা জানিনা, তবে আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হচ্ছেনা।
এবারের ব্রেকেটের প্রসঙ্গ, এদেশে তো আসলে সবচেয়ে নিন্মবুদ্ধিসম্পন্ন, অশিক্ষতি, সাধারণজ্ঞানহীন, কান্ডজ্ঞানহীন, লোভী, দূর্নীতিবাজরা চালাচ্ছে। যাদের বেশিরভাগেরই নূন্যতম বিচারবুদ্ধি নেই। সরলীকরণ বা ঢালাও সমালোচনা করছি না, তবে বেশিরভাগের অবস্থা এমনই। আর গণতন্ত্রের কথা কী বলবো। দুই পরিবার আর তাদের চাটুকারদের মাঝেই তো এদেশের গণতন্ত্র ঘুরপাক খাচ্ছে। এদের হাতে দেশের শাসনভার দেখার চেয়ে আমি অনির্বাচিত, যোগ্য, মেধাবী ব্যক্তিদেরই দেখতে বেশি স্বচ্ছন্দ্য বোধ করবো।
এখন আবার প্রশ্ন হতে পারে, যে গুন কথা বলা হলো সেগুলোই বা নির্ধারিত হবে কীভাবে। হ্যাঁ! এখানে আমাদের কাজ করার বা চিন্তাভাবনার সুযোগ রয়েছে। তবে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি নির্লোভ, দেশপ্রেমিক এমন মানুষ আমাদের চারপাশেই অনেক আছে।
তাদের অনির্বাচিত সরকারে, বা টেকনোক্রাট মন্ত্রী হিসেবে দেখতে আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। যদিও খুবই অসম্ভব একটা ব্যাপার।
ধন্যবাদ
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
খোঁচাটা বুঝিনাই
দেশের পরিস্থিতি সাপেক্ষে বললাম। বিষয়টা যে দীর্ঘমেয়াদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এটা স্বীকার পূর্বক। এদেশে তো এমন যোগ্য মানুষের নির্বাচিত হয়ে দেশ শাসনের সুযোগ দেখিনা- তাই অনির্বাচিত ট্যাগ।
আবীর...
মঈনু সরকার ছিলো অনির্বাচিত আর যোগ্যদের সমন্বয়ে গঠিত...
এইবার আপনার অবস্থান কী?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং এই ব্যাপারে আমি নিজেও অভিমত ব্যক্ত করতে আগ্রহী।
প্রথমত সেনা শাসনের উপর আমার সফট কর্নার আছে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। ব্যক্তিগত কারণেই সেনাবাহিনী জিনিসটার উপর আমি বীতশ্রদ্ধ। সেনাশাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের থলেতে কিছু ভালো কাজ থাকলেও সামগ্রিকভাবে সেনাশাসনের ক্ষতিটাই অনেক বেশি এবং এটা মইনইউ সরকারের জন্যই প্রযোজ্য, কোনো সন্দেহ নাই। কাঁচা হাতের অনেক দিন আগের লেখাটায় নজর বুলাইতে পারেন- সেই সময়েই লেখা, তাতে করে আশা করি ঐ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে আমি কী ভাবতাম তা কিছুটা হলেও প্রকাশ পাবে।
রাজনীতি বিষয়ে জ্ঞান কম আমার। তবে কম জ্ঞান আপাতত অনেক বড় বড় বিষয় নিয়েও ভাবতে বাঁধা দিচ্ছেনা। তাই আমিও ভাবতেছি। সেটা অনেকটা এমন। অনির্বাচিত, যোগ্য মানুষের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর আমাদের জন্য বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একটা ভালো উপায় হতে পারে।
তবে তার জন্য কিছু শর্তও প্রযোজ্য হবে। প্রথমত মইনু সরকারের মতো সরকার চাই না। সেনাবাহিনীর বা বাংলাদেশের সকল বাহিনী এবং সকল মানুষ আমার ভাবনার সরকারের অংশীদারী হবে, গণতন্ত্রে তো তাই হবার কথা। কিন্তু মইনু সরকারের মতো দেশের প্রতিটা ক্ষেত্রে সেনাকর্মকর্তার নিয়োগ চাই না।
এরপরই আসল প্রশ্ন, এমন মানুষ কী আদৌ পাওয়া সম্ভব? আমি পাওয়ার আশা করেছি এই কারণে যে, সেরকম মানুষ আমি দেখেছি, চলেছি। যারা পাঁচবছর দেশ শাসন করার পর দেশকে একটা জাতে তুলে বা এটলিস্ট তোলার রাস্তায় এনে নির্দ্বিধায় গণতান্ত্রিক ভোটাভুটিতে নির্বাচিত দলের হাতে ক্ষমতা প্রদান করতে এক মিনিটও ভাববেন না। কারণ তারা কেউ বিশাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্নধার না। দেশ চালানোর ভার তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব, তিনি সে দায়িত্বটুকুই সঠিকভাবে পালন করবেন, দেশের মালিক হয়ে বসবেন না।
এগুলো আসলেই চিন্তা। অপরিপক্ক কিনা জানিনা, তবে চিন্তা হিসেবে আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হচ্ছেনা। আবার চিন্তা করছি বা এই নিয়ে লিখছে মানেই এই না যে, আমি মনে করি এটাই বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের একমাত্র সমাধান, আমাদের সবার তাই করতে হবে।
শেষ কথা। আম্লীগ বিএনপি শাসন আমল ভালো না দুই বছরের তত্ত্বাবধায়কের সরকারের শাসনআমল ভালো? এই প্রশ্নটার উত্তর অধিকাংশ সাধারণ মানুষ মনে হয় মইনু সরকারেই টিক চিহ্ন দিবে। কেনো সেটা আর ব্যাখ্যা করার দরকার নেই। তবে আমি নিজে মন্দের ভালো তত্ত্বে বিশ্বাসী নই এবং সামান্য হলেও দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল বুঝতে পারি, তাই আমি সেই সরকারকে অফিসিয়ালি সমর্থন করিনা। তবে নোংরা রাজনীতিবিদগুলার মাঝে সামান্যতম ভয় ভীতি দেখা গেছে সেই দুইবছর- অনেক কিছুর পরও এই মন্দ লাগেনি ব্যাপারটা, এইটা স্বীকার করে গেলাম।
* আমার ভাবনার অনির্বাচিত মডেল মন্দের ভালো না। এই ব্যবস্থাকে আমি ভালো হিসেবেই দেখছি।
* দেশের যা অবস্থা, একটা গরুকে ক্ষমতায় বসালে অবস্থার উন্নতি না হলেও বিশেষ অবনতি হবেনা।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
অনিন্দ্য দা, আমি ঠিক বুঝতেছিনা এই কোটেশন এবং ঠিক উপরেই আমার আরেকটা কথা কোট করে আপনি আমার ভাবনার অপরিপক্কতা, অযৌক্তিকতা বোঝাতে চাচ্ছেন, নাকি অন্য কিছু?
আমি তারপরও আমার অবস্থান পরিষ্কার করে যাচ্ছি। আমার চিন্তায় ভুল থাকলে আমার সেরকম সৎসাহস আছে সেটা গ্রহণ করার এবং শুদ্ধভাবে চিন্তা করার। দেখিয়ে দিলেই বেশি কৃতজ্ঞ হবো।
রোজা উপলক্ষে ঘুপচি চায়ের দোকানে বিড়ি খাওয়ার জন্য রিকশাআলা বা সমাজের এই অংশের মানুষের সাথে বেশি সময় কাটছে। সবাই তো এখন রাজনীতি নিয়েই আলাপ করে। তাদের আলাপ এবং অন্যান্য আরও অনেক ঘটনার পরিপ্রেক্ষতিতেই আমি টিক চিহ্ন দেবার সম্ভাবনার কথা বলেছি। ভুল হতে পারে, কারণ আমি গ্রহণযোগ্য কোনো উপায়ে সার্ভে করিনাই।
একই সাথে পুরো পোস্টে এবং কমেন্টে এবং গেরিলা নিয়ে লেখা আগের পোস্ট পড়লে সাধরণ জনগণ সম্পর্কে আমার মানসিকতাটা বুঝতে পারবেন। সাধারণ মানুষ এটা করবে মানেই এই না যে, এইটা ভালো এই মত দিচ্ছি।
টুকে রাখলাম। মানে এক ভাবে ব্যখ্যা চাইলাম আর কী। আপনি একধরণের ব্যখ্যা তো দিলেনও। যেই বাক্য সম্পর্কে আপনার ধারণাটা আরো একটু বুঝতে চাই সেই বাক্যটাই কোট করলাম। আর কিছু না।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো একটা আজিব মডেল বাংলাদেশে এস্তেমাল করা হয় গোলাম আজমের পরামর্শে। এর কুফল এখন হাড়ে হাড়ে টের পাইতেছি
জনগনের ভোটে নির্বাচিত সরকারের চেয়ে জনগনের আস্থা অনির্বাচিত সরকারে... এরচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি হইতে পারে না
সেই অনির্বাচিত সরকার নির্বাচিত হবে তবে কীসের ভিত্তিতে?
যোগ্যতা আর মেধার সঙ্গে নির্বাচিত অনির্বাচিতের সম্পর্ক কোথায়? আপনার কেন যোগ্য আর মেধাবী প্রশ্নে অনির্বাচিতদের প্রতিই আস্থা জাগলো? কেন আমরা যোগ্য মেধাবীদের নির্বাচিত করতে পারি না?
অনির্বাচিত সরকার ফেরেস্তা আইসা গঠন করলেও তীব্র অসমর্থন আমার
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমাদের দেশে পাড়ার গুন্ডা হয় কমিশনার, এলাকার গুন্ডা এমপি, তারচেয়ে বড় গুন্ডা মন্ত্রী ... ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন ধরেন আমি আপনাকে কমিশনার হিসেবে নির্বাচিত করতে চাই। পারবো? সঠিক পথ অবলম্বণ করে?
পারবো না। পারতাম, যদি আপনার কাড়ি টাকা থাকতো। যেই টাকা দুই নাম্বার হওয়াতে ইচ্ছামতো খরচ করাতে আপনার বিন্দুমাত্র চিন্তা হয়না, আপনার যদি বিশেষ গুন্ডাবাহিনি থাকতো।
দেশে যোগ্য লোকের অভাব নাই। কিন্তু বর্তমান সিস্টেমের ভেতর দিয়ে সেই যোগ্য লোকদের জায়গা মতো বসানোর কোনো সুযোগও একইসাথে দেখিনা। এই কারণেই আমার অনির্বাচিত ট্যাগ।
এখন প্রশ্ন আছে। সম্ভব না বইলা এমন সল্যুশন তো গ্রহণযোগ্য হইতে পারেনা। কী জানি। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত যেভাবে এখন দেশ চলতেছে তাতে গরুছাগলরে দেশ চালানোর দায়িত্ব দিলেও কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হবেনা। যদিও দীর্ঘমেয়াদী সিস্টেম পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করাটাই সমুচিত। কিন্তু আমি এই দীর্ঘদিনের যাতনা এবং আসলেই কোনোদিন সিস্টেম পরিবর্তন করা যাবে কীনা, স্বয়ং সিস্টেমের মধ্যে থেকে না নিয়ে আশাহীন। যেহেতু আমাদের আর হারানোর কিছু নেই, তাই এই রিস্কি প্রকল্পের চিন্তা।
বাঙালির সবকিছু শর্টকাটে করার প্রবণতা থেকে এইক্ষেত্রে আমিও বের হইতে পারিনাই। আমিও শর্টকার্টেই একটা সমাধানের চিন্তা করছি। আর তাই "অনির্বাচিত" ট্যাগ।
সবকিছু ছাড়িয়ে আপনাকে এখন একটা নির্দোষ প্রশ্ন করতে চাই। এই মন্তব্যের জবাবের ভিত্তিতে আমি আমার এই বিষয়ক পুরো চিন্তা আস্তাকুড়ে ফেলে দিয়ে প্রস্তুত। বাংলাদেশে এমন দশজন মানুষ কী খুঁজে পাওয়া যাবেনা, যাদের সবাই মেনে নেবে, যারা সৎ ও আদর্শবান নাগরিক, দেশপ্রেমিক, যারা অনির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধি সফলভাবে নিয়োগ করতে পারবেন? উত্তরটা একবাক্যেই দিয়ে দিতে পারেন।
যদি বলেন, সম্ভব না। তাহলে আপনাকে আমি শ্রদ্ধা করি, আপনার চিন্তাভাবনা আমার সাথে মিলে এবং আপনার অভিজ্ঞতাও অনেক। সেইকারণে আমি এক বাক্যে এইটা মেনে নেবো এবং ভবিষ্যতে অনির্বাচিত সরকারের কথা একবারের জন্যও ভাববো না। দেশ এই সিস্টেমে উচ্ছ্বনে যাচ্ছে যাক। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যদি ততদিন বেঁচে থাকতে পারি, তাইলে ফুটে যাবো।
আপনি দেশের রাজনীতির প্রচলিত সিস্টেম ভাংতে চান... গুড...
তার বিকল্প হিসেবে আপনি দিচ্ছেন অনির্বাচিত সরকার থিউরি। এই ব্যাপারটা আমি কোনোভাবেই বুঝতেছি না, এইখানে আপনি নতুনত্বের কী পাইলেন এবং কোথায় পাইলেন?
বাংলাদেশের ইতিহাসের বেশিরভাগটা সময়ই অনির্বাচিত সরকারই ক্ষমতায় ছিলো, নির্বাচিত সরকার ছিলো খুবই কম সময়। অনির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা তো নতুন করে পরীক্ষার কিছু নাই!
যোগ্য লোক আর অযোগ্য লোক বিষয়ে নিচে বলতেছি
এই চিন্তা আপনিই প্রথম করছেন না।
এরশাদ আমলে [৮৩/৮৪] এরকমই একটা শর্টকাট সমাধান হিসেবে জামাতের তৎকালের আমীর গোলাম আজম প্রথম অনির্বাচিত নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যাবস্থার রেসিপি দিছিলো... সেই থেকে চলতেছে এখনো... কিন্তু কখনোই সর্বগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন করা যায় নাই।
ইতিহাসের প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকার শাহাবুদ্দিন সরকারকেই সবচেয়ে যোগ্য ও নিরপেক্ষ বিবেচনা করা হয়, কিন্তু তাঁর [অ]নির্বাচন নিয়াও রাজনৈতিক দলগুলো একমত হইতে পারে নাই... সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চাপে পড়ে বাধ্য হয় অবশেষে। আর সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার [অ]নির্বাচন নিয়া কী হইলো তা তো দেখলামই
তবু অনির্বাচিত?
না পাওয়া যাবে না। সৎ লোক পাওয়া যাবে, যোগ্যতার ব্যাপারটা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। কিন্তু গোটা বাংলাদেশে এমন একজন লোকও পাওয়া যাবে না, যাকে "সবাই মেনে নিবে"।
আর রাজনীতিক অভিজ্ঞতার বাইরে থেকে লোক আমদানী করে রাজনীতির সমস্যার সমাধান সম্ভব না। এইটা অলীক কল্পনা।
সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতার মঈন সরকারও ব্যর্থ হইছে মাইনাস টু ফর্মুলা প্রয়োগে... কারণ এই দুটো দলের শেকড় দেশের প্রতিটা উঠান পর্যন্ত বিস্তৃত... সেখানে আপনি কীভাবে স্বপ্ন দেখেন দশজন সৎ লোক এসে পাল্টে ফেলবে সবকিছু?
রাজনীতির সিস্টেম পাল্টাতে হলে রাজনীতিতে থেকেই পাল্টাতে হবে। বিকল্প নাই কোনো
এইখানে আপত্তি জানাই। আলাপ চলতেছে, যুক্তি নিয়া ঝগড়া চলুক, এখানে ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা/অশ্রদ্ধার জায়গা নাই। শ্রদ্ধার খাতিরে তালগাছ নিতে আমি অপারগ... আলাপ চলতে পারে, নাইলে বাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শেষটা কইছি এই কারণে যে আপনার চিন্তাভাবনা আমার ভালো লাগে। শ্রদ্ধার খাতিরেই মাইনা নিমু তা না যাই হোক, ব্যাপারটা পরিষ্কার হইলো। এইখানে এবং ফোনে। তয় আমার লাস্ট লাইন দেইখা আপনি মাইন্ড খাইছেন বইলা এক বোতল জরিনা জরিমানা করা হইলো
রোজা রমজানের দিনে এসব কী কন?
নেন গান শোনেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আসলেই শুধু ব্যক্তিগত দুঃখই লাঘব হবে আর কিছু না! মানুষের মনে মন্ত্রীদের প্রতি যত অভিযোগ থাকুক হাসিনা যতদিন মুখ বন্ধ রেখেছিলেন ততদিন কেউ কেউ ভাবতো আপা ব্যাপারটা দেখলে নিশ্চয়ই কিছুটা সুরাহা হবে। কিন্তু আপাই এখন পালের গোদা...পাল্লা দিয়ে মুখ ছুটাচ্ছেন...ভালো'র বন্যায় দেশের মানুষ ভেসে যাচ্ছে! এরা আসলে মানুষ না! সব অমানুষ...সব অসুর।
আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা মনে হয় বিরোধী দল বলে যেটা থাকে সেটার মত অকাল কুষ্মান্ড সরকারের পক্ষেও হওয়া সম্ভব না। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত একটা "বিরোধী দল" পাওয়া গেলনা। শুধু নিজেদের স্বার্থ দেখা!! আর বিএনপি আজ পর্যন্ত কখনো দেশের মানুষের জন্য কিছু করেনি...তাদের সবকিছু তারেক জিয়া আর বিএনপি অরিয়েন্টেড!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আসলেই দেশ উন্নয়নের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে। এই দেখলেন না, কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী কন্যা পুতুলের সুযোগ্য নেতৃত্ব, অধ্যাবসায় এবং আগ্রহে বাংলাদেশ অটিজম দিয়ে একটা সেমিনার হয়ে গেলো। এগুলো কী কম বড় এচিভমেন্ট? আমাদের ভালো ভালো কথা বলতে হবে। নতুবা শত্রুর হাতে অস্ত্র দিয়ে দেওয়া হবে।
এই যে দেশের এতো খারাপ একটা অবস্থা প্রধান বিরোধী দলরে একটা কথাও তো কইতে দেখিনা। এরা আছে একুশে আগষ্টের গ্রেনেড হামলায় ক্যান তারেককে প্রধান আসামী করা হইলো তা নিয়া। গ্রেনেড মারতে পারবে তারা কিন্তু কিছু বলা যাবেনা।
শুভ প্রত্যাগমন!
"Beneath this mask there is more than flesh. There is an idea, and ideas are bulletproof."
আমি আমার জীবনে সবচেয়ে বেশি দেখছি এই মুভিটা। আর দ্বিতীয়টা হইলো লক স্টক এন্ড টু স্মোকিং ব্যারেল।
অনেকদিন পর আবীরের লেখা পড়ে ভাল্লাগো। তবে দুশ্চিন্তা করার মতো বিষয়গুলো পড়ে মনটা খারাপ হলো।
ধন্যবাদ। ভালো লেখাও লিখবো আশা করি
এই দেশে আশাবাদী হওয়াটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ। আশাবাদী হবার একমাত্র উপায় বাংলাদেশের চেয়ে নিকৃষ্ট দেশগুলোর দিকে তাকানো, আফগানিস্তান, মায়ানমার, পাকিস্তান। আমাদের কোন পরিণতি অপেক্ষা করছে জানি না। তবে নিশ্চয়ই সুখবর নেই আপাততঃ। আমি বিদ্যমান ব্যবস্থায় কোন স্বাস্থ্যকর গনতান্ত্রিক সরকার আশা করি না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হুম ...
জামাত দেশ চালাবার মত ভয়াবহ দুঃস্বপ্নও আমাদের দেখতে হচ্ছে...এতটাই নির্জীব হয়ে গেলাম আমরা!
@তানভী-
আমাদের বসে থাকতে হচ্ছে এই অপেক্ষায় যে কবে আমাদের সিস্টেম ভেঙ্গে পড়বে আর আমরা সেটা নতুন করে গড়ব? আমরা কি আদৌ জানি সিস্টেম ভেঙ্গে পড়ার পর তা কিভাবে নতুন করে গড়তে হয়? কাদেরকে দিয়ে গড়তে হয়? এমন যদি হয় সিস্টেম ভাঙ্গার এই সময়টার অনেক মূল্য দিতে হল আমাদের?????? তখন কি নতুন করে শুরু করাটা অনেক বেশি মূল্যের হয়ে যাবেনা? রাজনীতি বল, দেশনীতি বল, এগুলো unpredictable....বইয়ের বর্ণনা অনুযায়ী ধাপে ধাপে মিলে যায়না রাজনীতি...আমার শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছে, আমরা বর্তমানটাকে ভয় পেয়ে পালাচ্ছি, ভবিষ্যতটা আমাদের কাছে সহজ মনে হচ্ছে! কিন্তু দেখ, সময়মত বীজটা না বুনলে, ফসলটা কিন্তু এমনিই আসবেনা!
জানিনা আমার কথাটা বোকামি হয়ে গেল কিনা। তবে হ্যাঁ আমরা একদিক থেকে আমরা কেউ বসে নেই, কিন্তু আসলে আমরা সবাই বসেই আছি!! এর কারণ কি? কারন আমরা দিশেহারা হয়ে পড়ছি, আমাদের পিঠ আস্তে আস্তে দেয়ালের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে, কিন্তু পুরোপুরি দেয়ালে এখনো ঠেকে নাই বলে আমরা পালটা ধাক্কাটা দেবার মত কোন অবলম্বনও পাচ্ছি না। এজন্যই আসলে সিস্টেম ভেঙে পড়ার কথাটা বলা।
আর সিস্টেম ভেঙে পড়লে বেশি মূল্য দেবার প্রশ্ন আসে না। কারন আসলে তখন আমাদের সর্বোচ্চ মূল্যটাই দিতে হবে। সব হারায়ে ফেললে তারপরই মানুষ নতুন করে শুরু করার কথা চিন্তা করে, তার আগে না।
বীজটা যে বুনতে চাইছেন, এজন্য শষ্যক্ষেত্রটা তো আগে তৈরি করতে হবে। নষ্ট মাটিতে আপনি যতই সময় দেখে ভালো বীজ লাগান তাতে লাভ টা কি হবে?
আমি হয়তো একটু বেশিই নৈরাশ্যবাদীর মত কথা বলছি। জানিনা, .........
তানভী
দ্বিতীয় সুবর্ণরেখা,
দুঃস্বপ্ন হবে ক্যানো? জামাত তো ইতিমধ্যেই পাঁচবছর দেশ চালাইছে
লেখা ভালো লেগেছে আবীর।
বিষয়বস্তু নিয়ে আর কি বলবো।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
বলার প্রয়োজন দেখিনা। আপনি তো ঢাকারই বাসিন্দা, কষ্টটুকু বোঝার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট
অনেকদিন পর তোমার লেখা দেখলাম সচলায়তনে। আগের মতোই ভালো লাগলো। তবে লেখার বিষয়টা ভালো লাগলো না।
আমি একটা সিনেমা দেখলাম ওইদিন (অনেক দেরিতে, আরো আগেই দেখা উচিত ছিলো)- V for Vendetta । দ্রোহীদার মন্তব্যটা পড়ে মনে পড়লো, ওই সিনেমাটা দেখার সময় আমারো মনে হচ্ছিলো এমন একটা কিছুর দরকার আমাদের দেশে।
অলমিতি বিস্তারেণ
রিমেম্বার রিমেম্বার দ্য ফিফথ অফ নভেম্বর
লেখা ভালো লাগল। বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলতে আর ভালো লাগেনা। আশাহীন জীবন মৃত্যুর চাইতেও ভয়ঙ্কর, অথচ ক্রমশ সেদিকেই যাচ্ছি বোধহয়...
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হুম ...
দেড় বছর পর লিখলেন? নেমেই তো ছক্কা হাঁকালেন !
একটা অপ্রাসঙ্গিক, অসংলগ্ন ভাবনা :
জামাত ক্ষমতার কেন্দ্রেই বসে আছে । যারা মনে করছেন জামাত খালেদার কাঁধে চড়েই শুধু ক্ষমতায় বসবে তারা হাসিনার আচলে বেঁধে রাখা জামাতি মন্ত্রের তাবিজ খেয়াল রাখেন নাই, আফসোস ! মনমোহনের জামাত বিষয়ক বক্তব্য----দেশের ২৫ ভাগ মানুষের বিষয়ে-----আমলে নিতে হয়, কথাটা মনমোহন বলেছিলেন,আও-বাও-ফাও কেউ না, খেয়াল কইরা ! মনমোহনের তো বাংলাদেশের জনগনের মধ্যে মন্ত্রী-সচিবদের সাথেই বেশী সাক্ষাৎ হয়, মন্ত্রী দের ২৫ ভাগই কী তাইলে জামাতপন্থী ?? সৈয়দ আশরাফ একবার ছাত্রলীগে শিবির দেখে হাঁক-ডাক দিয়ে তারপর চুপ হয়ে গেলেন ক্যান ? মন্ত্রীসভার সৈয়দ আশরাফের কলিগদের কতজন রাজাকার ?
ভাঙা-গড়ার লড়াই শুরু করলেই বা কী হবে ? কল্পনাবিলাসী ভেড়ুয়া লোকজন দিয়া কিছুই হবে না ! আমরা যারা পরিবর্তন চাই বলে পরস্পরের পিঠ চুলকাই, তারাই জানিনা পরিবর্তন কোথায় দরকার !
জহির আহমেদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের আর জবাব দেবার দরকার দেখিনা। আমার ভাবনার সাথে মিলে গেলো একেবারেইইই
এই ভাঁড় অপদার্থ মন্ত্রীগুলোর কাছে শেখ হাসিনাও জিম্মি, তাদের অবৈধ ব্যবসার কোটি কোটি টাকা দান করেন হাম্বা লীগের ফান্ডে, দলের কর্মকাণ্ড চলে তাদের টাকায়। প্রধানমন্ত্রী তাদের সর্বোচ্চ ধমকই দিতে পারবেন, মন্ত্রী পরিষদ থেকে চাইলেও ঘাঁড় ধাক্কা দিতে পারবেন না! দেশটাই যেন এরা কিনে নিয়েছে!
অনেকদিন পর লিখলেন। ভালো হয়েছে..........
_____________________
Give Her Freedom!
রাজা-উজিররা কেউ কারো কাছে জিম্মি না। যে যেইটা চায় ঠিক ঠিক সেইটাই করতেসে...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সেটাই...
ধন্যবাদ মৃত্যুময় ঈষৎ মন্তব্যের জন্য ...
না মানে উনি স্বঘোষিত শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক তো তাই ধরে নিয়েছিলাম উনি দেশটার ভালোই চান!! তবে কিছু মানুষকে উনার তোয়াজ করে চলতে হয় এটা বোধ হয় সত্য!
_____________________
Give Her Freedom!
চমৎকার লেখা রায়হান। এই বিষণ্নতা আমাদের অনেকের ভিতরেই এখন খুব বেশি কাজ করতাছে। একটা একটা ঘটনা ফেসবুকে এখন দুই-তিন দিনের স্ট্যাটাসের বেশি তেমন আলোড়ন তুলে না। এই ভয়াবহতায় আমরা স্বাভাবিক হয়া যাইতাছি। মানুষ(টানুষ) মরলে আমাদের মনে হৈতে থাকে ঐটা একটা সংখ্যা কেবল, আর কোনও আলাদা পরিচয় নাই। টিভি খবরে সবাই দুঃখ দুঃখ মুখ কৈরা স্বজন মারা যাওয়া আত্মীয়দের কথা শোনে। দুই দিনের মাথায় ভুইলা যায়। আমরা পুরা জাতি ধৈরা মনে হয় গোল্ডফিশ স্মৃতি নিয়া ঘুরি।
স্মৃতিগুলা জাইগা থাকুক।
স্মৃতিগুলা জাইগা থাকুক।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আওয়ামী সরকার কি বোঝান ব্যাপার টা ঠিক আমার কাছে পরিষ্কার না, কিন্তু জামাত ক্ষমতায় আসবে এটা বোধহয় সম্ভব না, অন্তত আমাদের সাধারন মানুষের মাঝে যদি কিছুটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে থাকে।
আমাদের দেশের মানুষ মুক্তযুদ্ধের চেতনা নিয়ে যতোটা না কনসার্ন তারচেয়ে বেশি কনসার্ন বেহেশত পাওয়া নিয়ে। আমি অবশ্য এজন্য মানুষের কোনো দোষ দেখিনা, জাহান্নামের মধ্যে তারা থাকে, নূন্যতম সুযোগ সুবিধা আনন্দের অধিকার নাই, তারা শর্টকার্টে হোক বা অন্য কোনোভাবে বেহেশতে যেতেই বেশি আগ্রহি। এই আগ্রহকে পুজি করেই ধর্মব্যবসায়ী গ্রুপগুলো এতোটা ফাল পারতেছে।
ছোট উদাহরণ। আমার পরিচিত অনেক মানুষই আছে, মুখে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, কথায় কথা শিবিরকে গদাম লাথি মারে কিন্তু 'চিন্তায় চেতনায়' একেবারে জামাতি। শেষমেষ এটাই আমাদের কাল হবে। গেরিলা সিনেমা নিয়ে একটা ব্লগ লিখছিলাম সেখানে এই বিষয়টা নিয়ে নিজের ভাবনাগুলো কিছুটা বলেছি।
হ্যাঁ! এটা ঠিক যে, সরাসরি জামাতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনার অবস্থা এখনও দেশে তৈরি হয়নি। তবে জামাত কিছু ক্ষমতায় এসেছে। এভাবেই পথ তৈরি হয়।
ফিলসোফিক্যালি চরম ইনকন্সিসটেন্ট এই জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শেখানো বেশ কষ্টকর কাজই।
গরু, ছাগল, ভেড়া চিনলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া সঙ্গত কিনা জানিনা তবে মন্ত্রী হওয়া যায় নিশ্চয়। আর 'সোনারপাথরবাটি' শব্দটি বাগধারায় পড়েছি বটে তবে বাস্তবে পেলাম সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে।
মন্তব্য : প্রৌঢ়ভাবনা
এত গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো তুমি এরশাদাদু ট্যাগ লাগিয়ে ঠিক করনি। এই কথাগুলোই আজকাল বলা দরকার। লেখা খুব ভালো লেগেছে। অনেকদিন পরে ফেরায় স্বাগত জানাচ্ছি।
কোনো একটা অদ্ভুত কারণে পরিষ্কার করে কেউ রাজার বাদশাদের সমালোচনা করছেনা। আমি নিজেও লেখাটা লেখার সময় ভাবছিলাম এখন যদি আমারে হাইকোর্ট তলব করে। আমি তো অস্ট্রেলিয়া থাকিনা, দেশেই থাকি
কথাগুলো আমরো। সবাই মৌসুমী হয়ে গেলে তো সমস্যা।
মনে হলো আমার মনের কথাগুলো পড়ে গেলাম! যা বলেছেন তাতে আমি পূর্ণভাবে সহমত, আমরা যা ভাবছি তার চাইতেও সঙ্গোপনে কিন্তু তোড়জোড়ে সাজানো হচ্ছে সব - জামাত জামাত নয়, জামাত তার চাইতেও বেশী জামাত, মানুষ যতটানা ধর্মভীরু তার চাইতেও বেশী ধর্মের কল নিয়ে ঘোরে আর রাজনৈতিকরা যতটানা দেশ তার চাইতেও বেশী বিক্রি করে আমাদের সব অর্জন --- আমার কেন যেন মনে হচ্ছে ভেঙে পড়া সবকিছুর পর একটা ধপাস আওয়াজ হওয়া বাকি, তারপর সব ধুলা, সব বালি! কথা হচ্ছে, এইধরনের সময়গুলোতে জেগে উঠার ইতিহাস এই গাঙেয়-বদ্বীপের মানুষের, তারা সবসময় জেগেছে, কেউ কোনদিন পুরোপুরি শান্তিতে আমাদের শাসণ করতে পারেনি - ভারতীয় উপমহাদেশের এই একটা অংশের মানুষের রক্তে একটা কি যেন আছে যা আমাকে বিশ্বাস করতে শেখায় একটা কিছু ঘটবেই, ঘটার কথা আছে ভীষণ।
শুধু একটাই ভয়, আমাদের ’অর্জন’গুলো ধরে রাখতে আমাদের যেভাবে ক্রমাগত ব্যার্থ করে দেয়া হয়েছে যুগে যুগে - তাতে এইবার সেই ব্যার্থতার দায়ভার আমরা ঝেড়ে ফেলে একটা দারুন বাঙালী হয়ে অবিরত জেগে থাকবো কিনা!
সময়ের অপেক্ষায় টেনশন বাড়ে, আমাদের সংহতি বেড়ে যাক! শুভেচ্ছা,
ভালো লেগেছে|
এবার কয়েকটা প্রসঙ্গে আসি, স্কুলে থাকতে সমাজ বই এ অর্থনীতির একটা বিষয় পরতাম, "দারিদ্রের দুষ্ট চক্র", ঠিক একই ভাবে আমরা বাংলাদেশের মানুষ "রাজনীতির দুষ্ট চক্রে" আছি, আমাদের দেশে যেই অবস্থা চলে আসছে তার পরিবর্তন খুব সহজে হবেনা, এই বিষয়ে যারা আমার সাথে একমত না এবং যারা দিন বদলের সুরে বিশ্বাস করেন তাদের জন্য আমার শুভ কামনা, কিন্তু আমি তাদের মতো আশাবাদী হতে পারছিনা| তার পিছনে যথেষ্ট কারণ আছে|
দেশে বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনা কিংবা আইন শৃঙ্খলার যা অবনতি হয়েছে তা নতুন না, সব সরকারের আমলেই এরকম হচ্ছে, এর জন্য দরকার দেশের চলমান অনেক কিছুর পরিবর্তন, তা হবেনা, কারণ এতে ব্যাক্তি স্বার্থ জড়িত| স্বার্থে খোঁচা লাগলে দেশ প্রেম জানালা দিয়ে পালায় এরকম মানুষের সংখ্যা বেশি, কেও না মানতে চাইলে কিছু করার নাই|
দেশে সুশীল সমাজ নামে একটা শ্রেণী আছে, তারা তাদের জ্ঞান দিয়ে অনেক কিছু বলেন, অনেক কিছু করতে চান, তা কাজে পরিণত হয়না, তার কারণ দেশে মেধাবীদের জন্য যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা নাই, তাই উন্নত জীবনের জন্য অধিকাংশ এখন দেশের বাইরে, তাই সমাজ চেতনায় এবং দেশের উন্নতিতে সুশীল সমাজের প্রভাব কমছে, দেশে স্বার্থানেষী লোভী মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়েছে, এটা বাড়তেই থাকবে, মাত্র ১,৪৭,৫৭০ বর্গমাইলের একটা দেশে যদি মানুষের সংখ্যা ১৭ কোটি ছাড়িয়ে যায়, তাহলে দেশে সব কিছুতেই টানাটানি পড়বে, আর যারা বলে দেশে যথেষ্ঠ সম্পদ আছে তারা ২০ বছর আগের দুনিয়াতে আছে, এরকম অতিরিক্ত জনগনের বোঝা নিয়ে দেশে যথেষ্ঠ কিছুই থাকতে পারেনা, তাই এখন যা অবস্থা আছে ভবিষ্যতে আরও খারাপ হবে|
বিএনপি জিতলে জামাত আসল ক্ষমতায় থাকবে, এই কথাটার সাথে আমি মোটামুটি একমত, যুদ্ধাপরাধীদের যেই দল এত বছর টিকে গেলো, আর তাদের লোক মন্ত্রিত্ব করে গেলো, জাতীয় পতাকা সম্বলিত সরকারী গাড়িতে রাস্তা দাপিয়ে বেড়ালো, দেশে বিজয় দিবসে তারা আলোচনা অনুষ্ঠান ও শহীদ স্মরণ করে এর পরেও যাদের চোখে এদের ক্ষমতা চোখে পরেনা, যারা এখনো আশায় থাকে যে জামাত এর বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসাটা কঠিন ব্যাপার তারা ভাবতে থাকুক, আমি ভাবিনা কারণ জামাত ক্ষমতায় এসে গেছে, এখনো আছে ভবিষ্যতেও থাকবে, আর এদের মূল এত গভীরে যে এদের দেশ থেকে টেনে তোলা যাবেনা, যারা স্বপ্ন দেখে, তাদের সম্মান করি, আমি দুস্বপ্ন দেখি, তাই চিন্তা কম করি|
দেশে কিছু মানুষ থাকবে, যারা মৃত্যু পর্যন্ত দেশটার জন্য চেষ্টা করবে, দেশের জন্য ভাববে, ভালো পরিবর্তন করতে চাইবে, এদের সত্তি সম্মান করি, তাদের জন্য স্যেলুট কিন্তু এদের দল খুব একটা ভারী না, ভারী হবেওনা, যেখানে নিজের জীবন ধারণ করতে ধোঁয়া বের হয়ে যায়, তার উপরে নিজের পরিবারকে সামলাতে তেল যা থাকে সব বের হয়ে যায়, সেখানে এর বাইরে চিন্তা করার আর সাহস খুব কম লোকের হয়, এটা মানতে চায় কম লোকে, মুখের উপর বললে কষ্ট পায় অনেকেই, কিন্তু এটা সত্তি, মানতে না চাইলে সমস্যা নাই, কিন্তু তাতে কিছু পরিবর্তনও নাই|
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
লেখাটা পূর্ণতা পেলো আপনার মন্তব্যে। একমত ...
গণতন্ত্র বা গণতন্ত্রায়নের কোনো বিকল্প আপাতত দেখি না।
যে যার জায়গায় হালকা ক্ষমতা পেলেই লুটেপুটে খাওয়ার কালচার শুরু করে। দুর্নীতিকে সীমিত আকারে রাখার উপায় বের করতে পারলে অনেক সমস্যা কমার সুযোগ আছে।
এই সরকারের সদিচ্ছা অনেক জায়গায় নেই, সেটা স্পষ্ট। গণতন্ত্র এক ধরনের লুটপাটতন্ত্র হয়ে গেছে। কিন্তু কর্পোরেট বা এনজিও বা অনির্বাচিত-কিন্তু-যোগ্যলোকের দল গঠন করে ক্ষমতায় এলে (সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়া আসার সম্ভাবনাও কম) বৃহত্তর পরিসরে অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ সেখানে জনতা রায় দেয়ার সুযোগ পায় না, ফলে দায়বদ্ধতার কোনো ব্যাপার সেখানে ক্ষমতাসীন দলের থাকবে না। অন্যদিকে জনতার রায় নিয়ে গণতান্ত্রিক দলগুলো স্বৈরাচারের পথ ধরেছে, সেখানে জনতার রায়ের আদৌ কি ভূমিকা- সেটাও একটা প্রশ্ন।
আপাতত যেটা ভাবছি। অদক্ষ মন্ত্রী সরানো, গ্রহণযোগ্য নাগরিক সুবিধা আদায়, মন্ত্রণালয়ের কাজকর্মের স্বচ্ছতা, দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তিপ্রদান সহ অনেকগুলো ক্ষেত্রে নির্বাচিত সরকারকে বাধ্য করানোর জন্য একটা কোনো পন্থা কি দাঁড় করানো যায়?
একমত। এই দ্বন্দ্বের কারণেই বুঝিনা আসলে আমাদের কী করা উচিত তাই উলটা পালটা প্রলাপ ... মন্তব্যের জন্য ধইন্যা অনেক
প্রত্যাবর্তন শুভ হোক।
এমনিতে আর কিচ্ছু বলার নাই।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
নাই
মৈণূভালা
আমি কইনাই কোনোদিন কমুও না
অনেকদিন পর
লেখাটা আগেই পড়ছিলাম কিন্তু মন্তব্য করতে এসে দেখি আগেই সবাই সব কিছু বলে ফেলছে
আর ইচ্ছে ঘুড়ি বড় প্রিয় সিরিজ ছিল। আগে বলছি কীনা মনে করতে পারি না তাই আরেকবার বলি, ইচ্ছে ঘুড়ি ছিল আমার সচলে সবচেয়ে প্রিয় সিরিজগুলোর একটা
আর ঘটনা কী? গত দুইদিন যখন সচলে ঢুকি দেখি তুই লগইন
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
একটু দেরীতেই পড়া হল ... বলার কিছু বোধহয় আর বাকি নেই, লেখা আর মন্তব্যের পর।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা বোধহয় শুধু ভাবতেই পারি
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
নতুন মন্তব্য করুন