০৪. ফড়িং ও ঘুড়ি
ছোটবেলায় ফড়িং ধারা ও ঘুড়ি উড়ানো এদু’টি বিষয়েই মায়ের কড়া নিষেধ ছিল। আমাদের দু’ভাইয়ের প্রায় প্রতিটি সকালই বেপোরোয়া হ’য়ে উঠতো ঘুড়ি উড়ানো অথবা ফড়িং ধরার নেশায়। একটি টকটকে লাল অথবা গাঢ় বেগুনী রঙের ফড়িঙের পিছু পিছু ছুটতে ছুটতে কতো সকাল মধ্যাহ্নের কড়া নেড়েছে তার হিসাব নেই। স্কুল ছুটির পর সহপাঠিরা যখোন পোশাক ছেড়ে খেয়েদেয়ে লাঠিম অথবা গুলতির আড্ডায় মশগুল আমরা তখনো একটি লাল ফড়িঙের পিছু ছুটছি।
বাড়ীফিরে মায়ের তীব্র বকুনী কোনো আলাদা স্বাদ তৈরী করেনি কখনো। বরং সন্তর্পনে আমাদের দু’জোড়া চোখ খুঁজতে থাকতো মায়ের সেলাইয়ের সুতো। লাল ফড়িঙের ল্যাজে সাদা রঙের মিহি সুতো বেঁধে দিলেই হ’য়ে যেতো লাল ঘুড়ি।
তারপর বাবা যেদিন বইয়ের মলাট বাঁধাইয়ের জন্য এনে দিলেন অনেকগুলো মোটা খাকি রঙের মলাট কাগজ সেদিনই হলো প্রকৃত প্রস্তাবে ফড়িঙের মুক্তি। ততোদিনে বন্ধুদের কাছে শিখে গেছি মলাট কাগজ ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে সত্যিকারের ঘুড়ি বানানোর কৌশল।
আমাদের দু’ভাইয়ের কোনো লাটাই ছিলোনা, অবশ্য মাঞ্জাসুতার কথা জেনেছি অনেক পরে। সে বয়সে বই বাঁধাইয়ের সুতোই আমাদের কাছে সবচে সুলভ ছিলো। কারণ এগুলো টাকা দিয়ে কিনতে হয়নি কখনো। আমাদের দু’ভাইয়ের সেই একটি ঘুড়িই ছিলো ঘুড়ি উড়ানোর বয়সে; নিজ হাতে তৈরী।
___________________
সকলের সুবিধার কথা চিন্তা করে পূর্ববর্তী পর্বসমূহের লিঙ্ক গুলো নিচে দেয়া হলো:
http://www.sachalayatan.com/node/40730
http://www.sachalayatan.com/node/40759
http://www.sachalayatan.com/node/40778
আলতাফ শেহাব
মন্তব্য
**********ক্যাটেগরি: কবিতা ভুলে দেয়া হয়েছ। অনুগল্প হব।
ব্যাপার নাহ। সবই আজকাল একই। তবে, অনিন্দ্যা রহমান শিরোনাম পড়ে কী বলবে তাই ভাবছি
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
নতুন মন্তব্য করুন