শুরুতেই পুরনো সতর্কবাণী আবারও দিয়ে নিচ্ছি। জগাখিচুড়ি কোমল পেটে হজম হবার নয়। এ খিচুড়িতে বিভিন্ন ধরনের মসলা আছে, তাঁর মধ্যে কিঞ্চিৎ (!) অশ্লীলতার গন্ধ পেতে পারেন কেউ কেউ।
ব্লগে মানুষ কেন লেখে? প্রতি লেখার জন্য সব পাঠক ৪ আনা করে পয়সা দিলেও তো অন্তত একটা জগা খিচুড়ি লিখে স্বাদে গিয়ে এক থালা খিচুড়ি খাওয়া যেত। তা যখন পাওয়া যায়না তাইলে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়ে লাভ কি? আমার কেউ সাক্ষাৎকার নিতে আসলে বলে দিতাম, লিখি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। এই যে আমাদের ঘুণে ধরা সমাজ, চারিদিকে এতো অন্যায় অবিচার এর বিরুদ্ধে কলম ধরে ... ইত্যাদি ইত্যাদি। যাই হোক, সাক্ষাৎকার যখন কেউ নিচ্ছে না তখন বলে রাখি আমি লিখি প্রশংসা পাবার লোভে। লোকজন লেখা পরে যখন দুই একটা ভালো মন্দ কথা বলে তখন বেশ গর্বে বুক ফুলে যায়। ঐযে সার্কিট যেটাকে বলেছিল, ইন প্রাইড মাই চেস্ট বিকাম ব্রেস্ট, সেই রকম কিছু। অথবা বাংলাতে বললে গর্বে বুক ফুলে ইয়ে ফকির থেকে ইয়ে সম্রাট হয়ে যাওয়া টাইপ এর কিছু।
তো মিলিটারি স্কুলে থাকতে আমাদেরও একবার মনে হল এইরকম গর্ব করার মতো কিছু একটা করার। মাথায় ভূত চাপল নাটক করব একটা। আমাদের সেই মেঘনাদ বধের বাংলা শিক্ষককে গিয়ে ধরলাম, পরিচালক হয়ে বেশ একটা রঙ্গ রসে ভরপুর হাসির নাটক নামিয়ে দেয়ার জন্য। তিনি বললেন, হুম। তারপরে ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন, বল রস কত প্রকার? রনি কানের কাছে ফিসফিস করে বলে, তিন প্রকার, খেজুরের রস, আখের রস আর যৌন রস। শিক্ষক বললেন, রস নয় প্রকার। বীর রস, করুণ রস, অদ্ভুত রস, রৌদ্ররস, ভয়ানক রস, হাস্যরস, বীভৎস রস, শান্ত রস এবং আদি রস। আদি রসের নাম শুনে রনি একটু নড়েচড়ে উঠেছিলো। কিন্তু শিক্ষক মহাশয় সযত্নে সেইটি এড়িয়ে গিয়ে বাকি আট রসের নীরস বর্ণনা দিতে লাগলেন আর আমরা বিরস মুখে শুনতে লাগলাম। শেক্সপিয়ার নাকি পারতেন প্রায় সব কয়টি রসকে তার নাটকে আনতে, মলিয়ের হাস্যরসে পটু বটে কিন্তু অন্য রসে দুর্বল। ঘণ্টাখানেক জ্ঞানের পর আমরা আবার মিনমিন করে স্মরণ করিয়ে দিলাম আমাদের নাটক করার ব্যাপারটা। তিনি গর্জে উঠলেন, কোথায় পাব আমি সেরকম অভিনেতা, কোথায় পাব আমি সেরকম ষ্টেজ, এখানে ব্যাক স্ক্রিন নেই, ভালো রিহারসেল এর জায়গা নেই, ব্যাক ষ্টেজ নেই, মেকআপ ম্যান নেই,ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা শুধু শুধু দুই ঘণ্টা জ্ঞান রস আহরণ করে দুনিয়ার সব রসের প্রতি বিরস হয়ে রসের মায়রে বাপ বলে বের হয়ে এলাম। টিপু ছিল ক্লাসের সেরা সাহিত্যিক কিন্তু বেশ সিরিয়াস ধরনের। এমনিতে শান্ত কিন্তু একবার কে যেন রবীন্দ্রনাথ আর তার ভাবীকে নিয়ে কুকথা বলায় তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। ওকে গিয়ে আমাদের দুঃখের কথা বলতে গিয়ে আবারও আমরা ধরা খেলাম। সেও দেখি রস নয় প্রকার এই তথ্য ভালভাবেই জানে। আরেকদফা রস বিষয়ক জ্ঞান শুনানোর পর আমাদের আশ্বাস দিলো সব কয়টা রস মিলায়ে বেশ একটা রসালো নাটক লিখে দিবে। রনিও বেশ উৎসাহী হয়ে বলল, আদি রসটা আমার হাতে ছেড়ে দে, বাকি ৮ টা তুই মিলায়ে ঘুঁটা দে। এক সপ্তাহ পরে টিপু নাটকের যেই খসড়া লিখে নিয়ে এলো সেটা দেখে আমাদের চোখ কপালে। নাটকের শুরুতেই নায়ক সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে সূর্য দেখে আবৃত্তি করে, আজি এ প্রভাতে রবির কর, কেমন পশিল প্রাণের পর। একটু পরে আবার বৃষ্টি নামে, নায়কের নায়িকার কথা মনে পরে। আবার আবৃত্তি করে, এমন দিনে তারে বলা যায় এমন ঘনঘোর বরিষায়। রনি বলে, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে মানুষ আগে পাক্কু করে, আবৃত্তি করবে কেন? তুই বরং ওইটাকে করে দে, নায়ক বাথরুমে বসে আছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে আবৃত্তি হচ্ছে, আজি এ প্রভাতে পাক্কু কর, একবারে না হলে চা খেয়ে আবার চেষ্টা কর, তাও না হলে দূরে গিয়া মর। সদ্য প্রসবিত নাটকের গর্বে টিপুর মন ভালো ছিল, অন্য সময় হলে কবিগুরুকে অপমানের দায়ে মারামারি লাগিয়ে দিত। সে যাই হোক, পুরা নাটকই দেখা গেলো কাব্য রসে ভর্তি। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর শেষ অঙ্কটি। শেষ দৃশ্যে নায়ক মারা যাচ্ছে, কিন্তু পুরাই কই মাছের প্রাণ। মরতে মরতে আবার ক্যাঁতরে উঠে দুই লাইন করে আবৃত্তি করে। শেষে শেষের কবিতা থেকে "নাই অভিমান, নাই দীন কান্না, নাই গর্বহাসি, নাই পিছু-ফিরে দেখা। শুধু সে মুক্তির ডালখানি, ভরিয়া দিলাম আজি আমার মহৎ মৃত্যু আনি" আবৃত্তি করতে করতে নায়কের দম যায়। কিন্তু সেখানেও শেষ না, এরপর শুরু হয় নায়িকার করুণ সব আবৃত্তি। নায়ক বাংলা মিডিয়াম এর ছেলে হলেও নায়িকা আবার ইংলিশ মিডিয়াম। তাই রবীন্দ্রনাথের কাছা ফেলে এক্কেবারে শেক্সপিয়ারের পেন্টালুন ধরে টান দেয়। নায়ককে চুম্বন করে বলে, I will kiss thy lips, Haply some poison yet doth hang on them, To make die with a restorative. হটাৎ করে পয়জন আসলো কোথা থেকে, অমিত-লাবণ্যই বা কেমনে রোমিও জুলিয়েট হয়ে গেলো আমরা বুঝলাম না। সবচেয়ে বড় সমস্যা নায়িকা পাবো কিভাবে এখানে। টিপু দেখতে অবশ্য বেশ ইয়ে, ঠেলেঠুলে ওকে বানিয়ে দেয়া যায়। রনি অশ্লীল ভাবে হেসে বলল, তুই নায়িকা হলে আমি নায়ক হতে রাজী আছি। আয় আমরা শেষ সিন টা রিহারসেল করি।
বিরক্ত হয়ে আমরা ঠিক করলাম, নাটক না করে যাত্রা টাইপের একটা কিছু করবো কোন রকম স্ক্রিপ্ট ছাড়াই। নায়ক দেশের ভোলাভালা ভালোমানুষ রাজা (অনেকটা আমাদের ইয়াজুদ্দিন স্যার এর মতো) , ভিলেন কুটিল সেনাপতি (অনেকটা আমাদের ... এহ, নাম বলে মিলিটারির প্যাঁদানি খাই আর কি?)। আমাদের সেই "শীষ্য হ" খ্যাত দিগম্বর রশিদ নায়ক। নায়ক হিসেবে ওকে দেখলেই মানুষ হাসবে, কষ্ট করে ডায়লগ বলে হাসাতে হবে না। আর ডায়লগ বলার ক্ষমতাও ওর ছিলোনা। আমাদের তেমন কোন স্ক্রিপ্ট ছিলনা, একেকটা দৃশ্য করতে করতে একটা মোটামুটি স্ক্রিপ্ট দাড়িয়ে গেলো। সমস্যা হলো, রশিদ কিছুই মনে রাখতে পারে না। একেকবার রিহারসেলের সময় একেক কথা বলতে লাগলো। আমরা বললাম, তাই হোক, ব্যাটা যা খুশী বলুক, বাকিরা ইম্প্রভাইজ করবে। শেষ দৃশ্যে লুঙ্গী পরা রাজা দুষ্টু সেনাপতির সাথে তুমুল তরবারি যুদ্ধ করে। মাস্ক অফ জরো এর কাথেরিন জেটা জোনস এর মতো রাজার লুঙ্গী বিভিন্ন জায়গায় ছিড়ে লোমশ উরু বের হয়ে যায়। অনেক কষ্টে রাজা যুদ্ধে জয়ী হয়। নাটক এমন আহামরি কিছু ছিলোনা, ডায়লগের চেয়ে পুরো নাটকে হাস্যকর যুদ্ধ দৃশ্য আর লাফালাফি করে ভাঁড়ামির মাধ্যমে দর্শককে হাসানোর চেষ্টা ছিল। সেই অল্প বয়সেই আমরা বুঝে গিয়েছিলাম মিলিটারি ব্রেনের উপর বেশী চাপ দেয়া ঠিক না, হালকা জিনিসই ভালো। যাই হোক, আমাদের সেই সস্তা নাটকই মঞ্চস্থ হবার পরে বিশাল জনপ্রিয়তা পেল। আমাদের ভয়ঙ্কর কর্নেল প্রিন্সিপ্যালও দাঁত বের করে হাসতে লাগলো। শুধু মাত্র আমাদের মেঘনাদ বধের বাংলা শিক্ষক নাক চোখ কুঁচকে রইলেন। এমন নিচু মানের রসে বিরক্ত বোঝাই যায়। তিনি ছাড়াও অন্য আরেকজন বাংলার শিক্ষক ছিলেন আমাদের। সেই শিক্ষক কিন্তু মহা মুগ্ধ। ষ্টেজে উঠে ছোটোখাটো একটা বক্তৃতা দিয়ে ফেললেন। নাটকে দুষ্টের পতন শিষ্টের জয়কে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নাটকটি দেখে হালকা হাস্য রসের মনে হলেও এর মাঝে নাকি লুকিয়ে আছে অনেক গভীর বক্তব্য। কিন্তু বিপদ হলো এর পরে। মিলিটারির লোকজনরা স্বভাবতই একটু হাস্যরসে দুর্বল। এতে দোষের কিছু নেই। হাস্যরস আর বীর রস ঠিক একসাথে যায়না। তবে একবার কোন রসিকতা বুঝে গেলে তারা সেইটা শুনে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে। যতবারই রিপিট করা হোক না কেন তারা ততবারই একই পরিমাণ হেসে সমান পরিমাণ গড়াবে। তখন যদি ওইটা বদলে নতুন কোন রসিকতা করা হয় তাইলে ধুন্ধুমার কাণ্ড লেগে যায়। তাঁরা অপমানিত হয়। Windows থেকে হটাৎ করে আপনাকে Linux এ নিয়ে ফেললে আপনি যতটুকু অসস্থি বোধ করবেন অথবা আমার বন্ধু মিনহাজকে লুঙ্গী ফেলে পাজামা পরে ঘুমাতে বললে যতটুকু অসস্থি বোধ করবে, তারাও হুটহাট করে নিত্যনতুন রসিকতা করলে ঠিক ঠাহর করে উঠতে পারে না। তো আমাদের সেই নাটক মিলিটারি প্রিন্সিপ্যালের পছন্দ হয়ে যাওয়াতে আমরা পরলাম বিপদে। দুই মাস পরে বলে, কোন এক মিলিটারির বড় কর্তা আসছে, তার সম্মানে আবার নাটকটা করতে। আবার করতে হলো। শুধু মাত্র সেই নতুন ব্যক্তি ছাড়া বাকি সব একই দর্শক। প্রিন্সিপ্যাল আর বড় কর্তা অডিটোরিয়াম ফাটিয়ে হাসল, বাকিরা কষ্ট করে মুখ বাঁকাল। কয়েকমাস পর আবার জানি কে আসবে, আবারও আমাদের একই নাটক করতে হল। এবার অবস্থা আরও খারাপ। খাবার পানিতে কি একটা সমস্যা হবার কারনে অনেকেই পেটের সমস্যায় ভুগছে তখন। আমাদের তখন ডায়রিয়া আমাদের দিয়েছে বেগ কেড়ে নিয়েছে আবেগ অবস্থা। আবেগশূন্য ভাবে একেকজন ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাথরুমে যাওয়া আসা করে। এমন অবস্থায় আমাদের তৃতীয়বারের মতো হাসির নাটক মঞ্চস্থ করতে হলো। আমরা সবাই করুণ মুখে ডায়লগ ডেলিভারি দেই, প্রিন্সিপ্যাল আর নতুন বড়কর্তা ভাবে এটাও বোধহয় রসিকতা আর গড়াগড়ি দিয়ে হাসেন।
জগাখিচুড়িতে চেষ্টা করি অশ্লীলতা এড়িয়ে থাকতে কিন্তু তারপরেও উনিশ বিশ হয়ে যায়। অনেক সময়েই শ্লীল- অশ্লীলের মাঝে ব্যবধান খুবই অল্প। যেমন আমার অফিসের ক্ষেত্রে ব্যবধানটা মাত্র এক ব্লকের। যেই লোক অফিসে স্যুট- টাই পরে ঘুরছে সেই লাঞ্চ পিরিয়ডে পাশের জিমনেশিয়ামের লকার রুমে দিব্যি উদোম হয়ে ঘুরাফিরা করছে। একারনেই প্রতি শুক্রবার আমাকে কয়েক ডজন এবড়ো থেবড়ো নিতম্ব (মতিকেণ্ঠর ভাষায় যাকে বলে ভাঁজ পরা পুটু) দেখতে হয়। অফিস থেকে লাঞ্চ টাইমে যাই টেবিল টেনিস খেলতে, পাশের একটা YMCA জিম এ। কাঁচে ঘেরা কমন শাওয়ার রুম। কে কোথায় কিভাবে জান প্রাণ দিয়ে সাবান ঘষে গোসল করছে না চাইলেও দেখতে হয়। আমার অফিসের লোকজনের সাথেও দেখা হয়। হপ্তাখানেক আগেই আমার এক বসের সাথে দেখা। আমি কোন মতে একটা টাওয়েল দুই হাত পা দিয়ে চেপে চুপে মিনিমাম ইজ্জত রক্ষা করে শাওয়ার রুম থেকে লকার রুমে আসছি। ব্যাটাদের টাওয়েলের যেই সাইজ ওইটা দিয়ে মনিকা বেলুচ্চির ইজ্জতই ঠিক মতো রক্ষা হয় না আর আমি তো কোন ছাড়। এইসময় দিগম্বর বস বের হয়ে এসে গল্প জুড়ে দিলেন। আমেরিকার ইকনমির কি হচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আরে ব্যাটা তুই একটা ন্যাংটা মানুষ তোর ইকনমি নিয়ে এতো চিন্তা কেন, আগে তো ইজ্জত টা বাঁচা। এর পর থেকে ভয়াবহ মানসিক সমস্যায় পড়েছি। মাঝে মাঝে মানুষের মাথার ভেতর কোন একটা বিরক্তিকর ছড়া অথবা গানের লাইন ঢুকে যায়, আর বের হতে চায় না। আমার মাথার ভিতরে এরকম শৈশবে শেখা " ন্যাংটা পুটু, বিলাই কুটু" এই দুই লাইন ঢুকে পরল। বস দিব্যি সুট টাই পরে মিটিং এ প্রেজেন্টেশন দেয়, আর আমার মাথার ভেতরে কে যেন অনবরত আবৃত্তি করে যায়, " ন্যাংটা পুটু, বিলাই কুটু, ন্যাংটা পুটু, বিলাই কুটু"।
আরেকবার এইরকম অশ্লীলতার বিপদে পড়েছিলাম অস্টিন গিয়ে। সদলবলে ঘুরতে বেড়িয়েছি, এবার বন্ধুদের সাথে আরও আছে এক বন্ধুর বাবা মা। এক সপ্তাহ আগেই বাংলাদেশ থেকে এসেছে বেড়াতে। আমি ভাবলাম খালাম্মা খালু সহ গিয়ে একটু লেকের বাতাস খেয়ে আসি। গেলাম অস্টিনের লেক ট্রাভিস এর ধারে একটা পার্কে, হিপ্পি হলো নাম। গাড়ি নিয়ে ঢোকার সময়েই গেটে আমাকে বললো, ডু ইউ নো ক্লোদিং ইজ অপশনাল হেয়ার? আমি বললাম, ও ইয়া ইয়া। আমেরিকা আসার আগে এক বড় ভাই এটা শিখিয়ে দিয়েছিলো। বলেছিল, এরা খুবই হড়বড় করে কথা বলে। যাই বলবে শুনে সাথে সাথে বলবি, ও ইয়া ইয়া। তারপরে মনে মনে চিন্তা করবি হালায় কি বললো। আমিও তাই ও ইয়া ইয়া বলে ভেতরে ঢুকেই মনে মনে বললাম, ইয়া মাবুদ, হালায় এইটা কি কইলো। কি কইলো সেটা বুঝতে বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। ক্লোদিং অপশনাল বললেও, আমরা ছাড়া আর কাউকে দেখলাম না সেই অপশন গ্রহণ করেছে। এতো কাপড় চোপড় পড়ে বরং আমাদের নিজেদেরকেই দিগম্বর মনে হচ্ছিলো। খোঁজ না নিয়ে গিয়ে কত বড় গাধামি করেছি সেইটা বাড়ি ফিরে এসে বুঝতে পেরেছিলাম। গুগলে Hippi Hollow লিখে একটা গুঁতা দিলেই সব ইনফো চলে আসে। খালাম্মা খালুর কাছে মান ইজ্জত সবই যখন গেলো তখন ভাবলাম এসেই যখন পড়েছি, একটু ভালো মতো ভেতরটা ঘুরে দেখি। বন্ধুটিকে তার মা বাবার টহলের দায়িত্বে রেখে আমরা পর্যবেক্ষণে বের হলাম। বেশীরভাগ প্রকৃতিপ্রেমিকই পঞ্চাশ বা ষাটোর্ধ। পুরাই আমাদের দেশের উল্টা অবস্থা। আমাদের দেশের মানুষরা যত বয়স হয় ততো পর্দার প্রতি উৎসাহী হয়। দেশে থাকতে একবার এরকম বোরখা পরা ষাটোর্ধ দাদীর সাথে হেঁটে যাচ্ছিলো টাইট জামা কাপড় পরা উদ্ভিন্ন যৌবনা তরুণী। সেটা দেখে এক সিনিয়র ভাই খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে আমাদের বলেছিলেন, দেখ কাণ্ড! ভাত নিয়া যায় ঢাইকা ঢুইকা, আর পোলাও কোর্মা উথলায়ে পরে। সে যাই হোক, হিপ্পি হলোতে অন্তত উথলানো পোলাও কোর্মা দেখার সৌভাগ্য আমাদের হলোনা, পান্তা ভাতেই ক্ষান্ত থাকতে হলো। সৌভাগ্য অবশ্য হয়েছিলো Mardi Gras এ গিয়ে। তখন সদ্য আমেরিকাতে এসেছি। রীতিমতো ভদ্রভাবে গিয়ে সুপারভাইজার এর কাছে অনুমতি নিলাম, স্যার কালকে একটু Mardi Gras দেখতে যাবো কিনা টাই মিটিং এ আসতে পারবোনা। সুপারভাইজার মুচকি হেসে অনুমতি দিলেন। নিউ অরলিন্সের Bourbon Street এ গিয়ে বুঝলাম, সুপারভাইজারের মুচকি হাসির কারন এবং Mardi Gras কি জিনিস। আমাকে নরকের ডিজাইন করতে দিলে অবশ্যই নরকের মেইন স্ট্রীট বানাতাম এটাকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এটা নাকি ধর্মীয় উৎসব। অনেকটা আমাদের রমজান মাসের মতো একটা সময় শুরু হয় যখন প্রার্থনা, উপাস আরও সব আত্মনিয়ন্ত্রণের চর্চা করা হয়। আর সেটা শুরুর আগের দিনের "Fat Tuesday" হচ্ছে Mardi Gras। যত খুশী খেয়ে নাও, আকাম কুকাম করে নাও! সেই আকাম কুকাম কোন পর্যায়ে হতে পারে বলতে গেলে জগাখিচুড়ির শ্লীলতার স্কেল ও ভেঙ্গে যাবে!
যাই হোক জগাখিচুড়ি এবারে শেষ করি। ছয় পর্ব জগা লিখব ভেবেছিলাম, সেটা পূর্ণ হলো। লেবু কচলে তেতো হবার আগেই কচলানো বন্ধ করা প্রয়োজন। কে যেন বলেছিলো, ঠিক বয়সে লেখকের মৃত্যু না হলে (অথবা লেখা না থামালে) পাঠকেরই মৃত্যু হয়। মনে হয় আমিই বলেছিলাম!
শেষ করার আগে একটা কৌতুক বলে শেষ করি। খুব উঁচু মানের কিছু না। রিকশা স্কেলে দেড় রিকশা হতে পারে বড়োজোর। কিন্তু ঈশপের গল্পের মতো একটা মরাল আছে এটার। এক পাগল ছিল। এমনিতে ভালো কিন্তু সুযোগ পেলেই মাঝে মাঝে গুলতি দিয়ে ঢিল ছুড়ে মানুষজনের বাসার সব কাঁচ ভেঙ্গে ফেলত। পাগলা গারদে রেখে অনেকদিন চিকিৎসা করানো শেষে একদিন ডাক্তারদের সামনে হাজির করানো হলো। কথাবার্তা বলে দেখা গেলো ব্যাটা পুরাই সুস্থ। ছেড়ে দেবার আগে এক ডাক্তার শেষ প্রশ্ন করলো, ছাড়া পাবার পর কি করবি আগে? পাগল বলে,
-একটা বড় হোটেলে যাবো। ভালো মতো গোসল করব। তারপর একটা মেয়ে যোগাড় করে রুমে নিয়ে আসবো।
ডাক্তাররা সবাই উত্তর শুনে খুশী। পাগল মানুষের সেক্স ফীলিংস থাকেনা, এই ব্যাটা পুরাই সুস্থ। রসালো কিছু শুনার আশায় বলল,
-এরপর কি করবি?
-এর পর মেয়েটার জামা খুলবো, ব্রা খুলবো, প্যান্টি খুলবো।
-তারপর?
- তারপর ব্রা আর প্যান্টি থেকে ইলাস্টিক খুলে গুলতি বানাবো। আর গুলতি মেরে হোটেলের সব কাঁচ ভাঙ্গবো।
এই সরকারকে সবাই ভোট দিয়েছিলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আশায়। এরপর কয়েক বছরে পিলখানা হত্যা, লোডশেডিং, শেয়ার বাজার, পুলিশের মাস্তানি, বিপ্লবকে ক্ষমা, মন্ত্রীদের ভাঁড়ামি, তারেক-মুনীর হত্যা সহ কতশত কাণ্ড হয়েছে। সব কিছুর বিচার চাই আমরা। কিন্তু তাই বলে ওই পাগলের গুলতি মেরে কাঁচ ভাঙ্গার মতো আমরাও মূল জিনিসটা কিন্তু ভুলি নাই, ভুলবো না।
জগা খিচুড়ি - ০১
জগা খিচুড়ি - ০২
জগা খিচুড়ি - ০৩
জগা খিচুড়ি - ০৪
জগা খিচুড়ি - ০৫
মন্তব্য
হুম...
আগের পর্বগুলার মতই খাসা হইছে
ধন্যবাদ হতচ্ছাড়া ( হতচ্ছাড়া বলে গালি দিলাম না কিন্তু, আপনার নামটাই তো এই)
মাত্রই লিখেছিলাম খিচুড়ি চাই খিচুড়ি চাই!! চাইতে না চাইতেই দেখি পেয়ে গেলাম!!! আর খিচুড়ি খেয়ে পেটটাও ভালোই ভরলো!!
কিন্তু শেষ করতে হবে কেন, বলেন তো উদাসদা?? খিচুড়ি না হয় দীর্ঘ বিরতিতে লিখলেন, মাঝে অন্য বিষয়ে লিখবেন!! কিন্তু এখনই শেষ এটা বৈলেন না!!
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ মৃত্যুময় ঈষৎ এবং ঈদের শুভেচ্ছা। আসলে অন্য কিছু লিখার চিন্তা করছি এই মুহূর্তে। তবে অনেক বিরতি দিয়ে ভবিষ্যতে হয়তো আবার জগাকে নিয়ে বসবো।
শুভেচ্ছা ভাইয়া। জ্বি, অন্য কিছুই লিখুন না হয়, তবে মাঝে মাঝে খিচুড়িও চাই।
_____________________
Give Her Freedom!
আম্রিকায় বুড়োদের নেংটো হবার উৎসাহ বেশি- আমার জিমের অভিজ্ঞতাও তাই বলে, লকার রুমে শুধু বুড়োদেরই দেখি উদোম হয়ে ঘুরে বেড়াতে (ইয়াক)
অটঃ UTD থেকে আগে একজন উদাস নামে কমেন্ট করত। আপনি?
তানভীর ভাই, আমিই সেই উদাস। ভালো থাকবেন।
ছয় পর্ব দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল তবু ভরিল না চিত্ত !
এটা মহাভারত এর মতন স্ফিত আকারে দেখতে চাই !
আমার দাবি মানতে হবে ! মানতে হবে !
খিচুরির পরিমান বাড়াতে হবে !
ধন্যবাদ parikshit। আকার মহাভারতের মতন স্ফিত হলে তো তখন পড়ার উৎসাহই হারিয়ে ফেলবেন।
শুরুটা দারুণ হয়েছে। শৃঙ্গার রস জিনিসটা আদতে খারাপ না, তবে অনেক সময় ব্যাকফায়ার করতে পারে আর কি। আমার নিজ়ের একটা উদাহরণ দিই, তখন পড়ি খুব সম্ভবত ফাইভে বা ফোরে। একদিন চাচা মারফত প্রাপ্ত একটা দৈনিক পত্রিকায় একটা কৌতুক পড়লাম। কৌতুকটা ছিল এরকম,
এক বিখ্যাত পীর এসেছেন গুনাহগার বান্দাদের হেদায়েত করার জন্য। তবে উনার একটা শর্ত, ওনার সাথে দেখা করার আগে কেউ মনে কোন খারাপ চিন্তা আনতে পারবেননা। আনা মাত্রই সে বিলকুল হাফিস হয়ে যাবে।
তো পয়লা এলেন একজন বিখ্যাত বিজনেস ম্যাগনেট, কিন্তু ঢোকা মাত্রই তিনি ভ্যানিশ।
পরে এলেন বিশিষ্ট কবি হোসেন মুহাম্মদ এরশাদ, বলা বাহুল্য, তিলমাত্র দেরি না করে তিনিও হাফিস হয়ে গেলেন।
এরপর এলেন একজন চিত্রনায়িকা, এবার পীরসাহেব নিজে হাফিস হয়ে গেলেন।
কৌতুকটা খুব জাতের না, কিন্তু কেন জানি ঐ বয়েসে পড়ে মনে হয়েছিল, এর মধ্যে আধ্যাত্মিক কিছু আছে।(বলাই বাহুল্য, শানে নুঝুল মাথার উপর দিয়েই গিয়েছিল)। তাই তর সইতে না পেরে এক মামাকে পাকড়াও করে বলে ফেললাম। বলার পর কোথায় মামা হাসবেন, উল্টো দেখি ভ্রুকুঞ্চিত করে আমার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে আছেন। তারপর ঠাণ্ডা স্বরে বললেন, আমাকে বলেছিস ভাল কথা, আর কাউকে বলতে যাসনে। আমি অবশ্য সেই নিষেধবাণী শোনার মত গাড়ল ছিলামনা, আরও দুয়েকজনের কাছে বলে বেদম ভর্তসনার পর তবেই ক্ষান্ত দিয়েছিলাম।
তাই আবারো বলি, শৃঙ্গার রস অতীব বিপজ্জনক, আর এজন্যই তো আমি জগাখিচুড়ি পড়িনা
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
ধন্যবাদ অদ্রোহ। কৌতুকটা আগে শোনা ছিলো একটু অন্যভাবে। শৃঙ্গার রস আসলেই অতীব বিপজ্জনক। আমার বন্ধু মহলেও এরকম ভরা মজলিশে বেফাঁস জোকস করে ধরা খাবার বহু মজার ঘটনা ছড়িয়ে আছে।
অশ্লীলতার লোভে পড়তে বসলাম কিন্তু অশ্লীলতার দেখা পেলাম না। তবে খিচুড়ি সবসময়েই ভালো লাগে সে খাওয়ায় হোক, লেখায় হোক বা অন্য কিছুতে হোক।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয়। অশ্লীলতার দেখা না পেলেই ভালো। দুষ্টুমি করতে গিয়ে যেন ওই রেখাটা পার না হয় সেই চেষ্টাই করি।
চাঁদ রাতে জগাখিচুরি উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ! শেষের গল্পটি অভিজিৎ রায়ের লেখায় পড়েছিলাম, যা কিনা বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা বোঝানোর জন্য উনি টেনে এনেছিলেন। আর আপনি রাষ্ট্র ও সমাজের সমসাময়িক বাস্তবতার নিরিখে ব্যবহার করেছেন। পাশাপাশি 'ইন প্রাইড মাই চেস্ট, বিকাম ব্রেস্ট' এর মত রসও বিলিয়েছেন। আপনাকে ঈদের শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ কাজি মামুন এবং ঈদের শুভেচ্ছা। অভিজিৎদার ওই লেখা টা পড়া হয়নি, লিঙ্কটা দিতে পারবেন কি?
অসাধারন, আসলেই শ্লীল-অশ্লীলের ব্যবধান খুবি সামান্য, উদাহরণটা মারাত্মক হইছে। পুরান গুলা পড়তে যাই তাড়তাড়ি।
এখানকার মানুষের এই জিমে অথবা সুইমিংপুলের চেঞ্জরুমে এই দিগম্বর হয়ে থাকার প্রবণতাটা আমার খুবই বিশ্রী লাগে। আরে ব্যাটা তোর নাঙ্গা হয়ে থাকতে ইচ্ছা করে থাকনা কে মানা করছে, কিন্তু আমাকে কেন দেখতে হবে?
জীবনে একবারই নাটক করার অপচেষ্টা করেছিলাম, ক্লাস নাইনে স্কাউট ক্যাম্পুরীতে গিয়ে। সেটা যে শেষমেষ কী হয়েছিল নিজেরাই জানিনা।
আমাদের এখানেও দুইটা বীচ (কুকুরী না ) আছে যেখানে জামাকাপড় ঐচ্ছিক, একটাতে গিয়েছিলাম গতবছর কিন্তু শীতে। আমরা ছাড়া আর কেউ ছিল না। আমরা অবশ্য অপশনটা গ্রহণ করেছিলাম।
শেষ করে দিলেন? থাকত এটা, আপনার যখন ইচ্ছা লিখতেন। ভালো কোন কিছু শেষ করে দিলে কেন জানি মনে চোট লাগে।
আর আমরা ভুলি নাই কিছুই, ভুলবোও না।
সবশেষে ঈদ মোবারক।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
এই দেখেই হয়ে গেলো? বাংলাদেশে অফিসে কয়েকটা চৈনিক ছিলো টয়লেট সম্পর্কে যাদের ভাব হলো "একটা প্রাকৃতিক কাজ করছি, সবাইই করে - তাহলে এর মধ্যে লুকানোর কি আছে? দরজা আটকাতে হবে কেন?"
একদিন টয়লেটের খোলা দরজা খুলে ঢুকে দেখি একটা ঠিক কমোডে বসে না, বরং কমোডের উপরে দুই পা তুলে চেপে বসে আছে - আমাকে দেখে খুব আন্তরিক একগাল হাসি দিয়ে বললো "হাই" - ভাগতে হলো জায়গাটা ছেড়ে! কতক্ষণ পরে আবার এসে বললো "তুমি ওইভাবে চলে গেলে কেন? তোমাদের দেশে কি হাই বলে গ্রিট করে না?" এর তুলনায় তো জামাকাপড় অপশনাল বিচ কিছুই না!!!
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
_____________________
Give Her Freedom!
সেটাই। কাপড় বদলাতে এসে লুঙ্গী পরে আব্রু ঢেকে বাড়াবাড়ি করতে বলছি না দরকার হলে ন্যাংটো হয়েই বদল কর। কিন্তু উদাস মুখে দিগম্বর হয়ে লকার রুম জুড়ে ঘুরে বেড়ানরও কোন মানে দেখি না। ধন্যবাদ এবং ঈদ মোবারক।
একটু মনে হয় ভুল হয়ে গিয়েছে। ক্লাস নাইনে কেউ ক্যাম্পুরীতে যায় না বা যেতে পারে না। যায় জাম্বুরীতে।
আমার জীবনের ২য় বিদেশ ভ্রমণ ২০০৭-এ। ২১তম বিশ্ব স্কাউট জাম্বুরী, ইউ কে। ছিলাম মোটামুটি ১ মাস। শেষের ২ সপ্তাহ জাম্বুরীর জন্য, বাকি দিনগুলো আত্মীয় দের বাসায় ছিলাম আর ধুম ধারাক্কা ঘোরাঘুরি। যাই হোক, জাম্বুরীতে যখন ছিলাম, তখন দেখতে হয়েছিল ইংরেজ, চীনা, জাপানী, স্প্যানীস ইত্যাদী দিগম্বরদের। আর থাইগুলোর কথা বলে আর লজ্জা দিয়েন না। শাওয়ার রুমে গোসল করতে গিয়েছি। আমরা আবার বাঙ্গালী ভদ্র ছেলে। লুঙ্গি না হোক অন্তত একটা গামছা পড়ে গোসল করি। গিয়ে মনে হচ্ছিল আমরাই দিগম্বর, আর সবাই কাপড় পড়া ভদ্রলোক। সবগুলো ন্যাংটু হয়ে হাটাহাটি করছে। এর মাঝে কেউ কেউ তার বিশেষ অঙ্গে ধরে নাড়াচাড়া ও করছে। (অফটপিকঃ মেডিকেলে এনাটমিতে এক বছর আগে পড়েছি male external genitelia-র skin হচ্ছে corugated and hyper-pigmented। এখনো মনে হয়, কাহিনী কি? ইংল্যান্ডে মি তো ধবধবে সাদা দেখেছিলাম।
এ হাসনাত
(গুড়)
খেজুর দিলেন নাকি আখ দিলেন ?? ......
ইস্কুল জীবনে এক দোস্ত ছিল, গ্রীন রোডে থাকত। পড়ার এমন কোনো বাড়ি ছিল না যেটায় তার হাতের ছোঁয়া নাই। একখান না একখান জানলার কাঁচ সে ভাঙবেই। নতুন বাড়ি হলে তো কথাই নাই। নিজের পড়া -পাশের অন্য পড়া - এমনকি বেপাড়া'র শার্শি ভেঙ্গে এতই 'কূ'নাম অর্জন ছিল তার যে দুর্ঘটনায় কারো বাড়ির জানলার কাঁচ ভাঙ্গলেও বাড়িতে নালিশ চলে আসতো "আপনার পোলায় আমার বাড়ির শার্শি ভাঙসে"...
ছোটবেলায় নিজেও খুব গুলতি খেলতাম। টার্গেটও খারাপ ছিল না...
সাধু সাবধান... বিচার কিন্তু চাইই চাই !!!
লেখায় (গুড়)
ধন্যবাদ বোকা মেঘ। যেভাবে কমেন্টে লিখলেন ওরকম করে আরও কিছু ঘটনা মিলিয়ে একটা লেখা লিখে ফেলুন না। স্কুলজীবনের ঘটনা নিয়ে লিখা কোন কিছুই কারো খারাপ লাগবে না।
চরম চরম
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
বলছেন?? ...
এক নাটকে নয় রসের আমদানী তো অতি সিম্পল! আটরশির পীরের হাতে রসময় গুপ্তের বই ধরায়ে দিলেই তো হয়! হে হে হে
আর আপনের পাগলের কৌতুকটা পুরা হয় নাই। মানে, আমি আরেকটু ডিটেইলে জানি আরকি!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমি ২ ভার্সন বলেছি আপনে বরং ৩ ভার্সনটা বলে ফেলেন ...
সংগ্রহে রাখতে চাই। জাভাস্ক্রিপ্ট অফ করে কপি পেস্ট করতে হবে নাকি পিদিএফ দিবেন?
পদ্ধতিটা কি ঠিক জানা নেই, খোঁজ দা সার্চ করে জানাব নে। ধন্যবাদ।
এখনি অন্ধ বন্ধ করো না পাখা
সিরিজ চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই, আর কোন কবিতা পাইলেন না? এইতাই বলতে হলো? এই কবিতা নিয়ে দুঃসহ কিছু সৃতি আছে। ওরে বিহঙ্গ ওরে বিহঙ্গ করতে করতে একসময় জীবন নষ্ট হয়ে গেছিলো ...
তাই বলে ওই পাগলের গুলতি মেরে কাঁচ ভাঙ্গার মতো আমরাও মূল জিনিসটা কিন্তু ভুলি নাই, ভুলবো না।
সেটাই, ভুলি নাই, ভুলবো না। ধন্যবাদ sam
পাঠক প্রাণিটা থেকে গা বাঁচিয়ে চলতে না পারলে বিপদ। এরা শুধু খাই খাই করে। এই ক্ষুধা শেষ হবার নয়। তবে এটার প্রয়োজন আছে। পাঠকের ক্ষুধাই বলে দেয় আপনি লেখক কেমন! আপনার রান্না পছন্দ বলেই তাদের এত খাই খাই। ক্ষুধাটা তাই থাকুক। কিন্তু এটা গায়ে মাখবেন না। আপনার যখন লিখতে ইচ্ছে করবে তখনই কেবল লিখুন। পাঠকের ক্ষুধা/তৃপ্তি দেখতে/মেটাতে যদি লিখতে থাকেন তাহলে সে ফরমায়েসি আলুসেদ্ধ হবে। পোলাও কোর্মা হবেনা। তাই ক্ষুধা থাকুক, কিন্তু আপনার উপর সেই ক্ষুধার জোর না থাকুক।
এই মন্তব্য নিতান্তই একজন পাঠক হিসেবে করা। আপনার লেখা ভালো হচ্ছে অবশ্যই, কিন্তু তাতে রস কমছে। এই লেখাটা তাই আমার খুব ভালো জগাখিচুড়ি মনে হয়নি (এমনিতে কিন্তু লেখা হিসেবে চমতকার হয়েছে)। এটা বরং অন্য কোনো নাম দিয়ে প্রকাশ করতে পারতেন। জগাখিচুড়ি যখন স্বতস্ফূর্তভাবে আসবে তখন আসবে। না আসলে নাই। পাঠকের আগে আপনার দায় আপনার লেখার কাছে। লেখার দায় মিটলে পাঠকের কথা ভেবে দেখতে পারেন। না ভাবলেও সমস্যা নেই।
আর বিদায় জানাতে চাইলেই জানানো যায়। ওতে বীরত্বের কিছু নেই। ও বরং কাপুরুষতা (নাপুরুষতা? )। জগাখিচুড়ি যদি আপনার মাথায় এসে ভর করে আর অক্ষর হয়ে বেরতে চায় তাহলে তাকে কী করবেন আপনি? তাই যতো দীর্ঘই হোক, বিরতি থাকুক। বিদায় না থাকুক। লিখতে থাকুন।
এই লেখাটা দারুণ হয়েছে। আপনার লেখা পছন্দ বলেই অনেকগুলো কথা বলে ফেললাম।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ অনার্য দা আপনার বিস্তারিত এবং চমৎকার কমেন্টের জন্য। জগাখিচুড়ি যদি আবার কখনো লিখি আপনার এই কমেন্টের কারনেই লিখবো (কাপুরুষ, নাপুরুষ বলে গাল দিয়ে একদম লুঙ্গী ধরে টান দিছেন ... ইজ্জত বাঁচানোর দায়ে এবং নিজেকে পুরুষ(!) প্রমাণ করার জন্য হলেও ভবিষ্যৎ এ আবার কখনো লিখতে হবে ... )
আসলে আমি একসাথে দুই লেখা লিখতে পারিনা। অনেক আগে লেখা লেখি করতাম, মাঝখানে লম্বা বিরতি পরেছে। তাই সচলে জগাখিচুড়ি লিখা শুরু করেছিলাম টিউনিং ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য। এটা যে রম্যরচনা হবে নাকি অন্যকিছু হবে সেরকম কোন ভাবনাই ছিলোনা। যা মনে এসেছে লিখেছি, এবং রম্য ট্যাগ না থাকার পড়েও এটা একসময় রম্য রচনা হয়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত যা লিখেছি কলম কামড়ে কিছুই লিখতে হয়নি। অনেক সময় অফিসে কাজ করতে করতে কোন একটা অতীত স্মৃতি মনে পরে নিজেই ফিক করে হেসেছি, তখন সেটা লিখে ফেলেছি। লিখতে লিখতে অনেক সময় মনের আনন্দে রঙ দিয়েছি, একটার সাথে আরেকটা গিট্টু পাকিয়েছি। এই মুহূর্তে আসলে অন্য কিছু লিখার কুচিন্তা মাথায় ঘুরছে (খাদ্য রস বিষয়ে ... )। তাই জগার ভূত মাথা থেকে না নামালে সেটা শুরু করতে পারছিলাম না।
আপনার কমেন্টটাও অনেক পছন্দ হয়েছে বলে অনেক কথা লিখে ফেললাম। এবং আপনার উপদেশ শিরোধার্য করলাম, জগাকে বিদায় না বলে বরং বিরতি বলি। আফটার আল, আপনি তো আর পুরুষ না (মহাপুরুষ আরকি ... )
সেকি? এই সিরিজ এইখানে শেষ? আমি ভেবেছি জগা খিচুড়ির এই পর্বটা শেষ হল! আমি তো দেখি টিউব লাইটের উপরে আরেক কাঠি। এইটা কি মগের মুল্লুক? কি আপনার একার? সচলায়তনে তো সবাই তালের ও রসের ভাগ পায় তা গাছটা যারি হোকনা। পাশাপাশি ছায়াও। দয়া করে থামার চিন্তা ভুলেও চিন্তা করবেন না। চলুক চলুক।
ওয়ান মোর ওয়ান মোর
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সিরিজটা বন্ধ হলে সরস লেখা চালু থাকুক।
"হিপি হলো" অস্টিনের বিখ্যাত ন্যুড বিচ...আরও মাইল খানেক সামনে উইন্ডি পয়েন্টটা হচ্ছে ভদ্রসদ্র জায়গা। যেটা বলেছেন - ষাটোর্ধ লোকজনই বেশি সেখানে।
অস্টিনে পরবর্তী সফরের সময় আওয়াজ দিয়ে আসবেন, প্রোফাইলে ই-মেইল পাবেন।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
চালু থাকবে তাসনীম ভাই। ডালাস থেকে অস্টিন বেশী দূরে না, তাও যাবো যাবো করে যাওয়া হয়না। নেক্সট মাসে ইচ্ছা আছে, দেখা করবো অবশ্যই। হিপি হলো তে গিয়ে ধরা খাবার পর বন্ধুবান্ধবকে এখন লেক ট্রাভিস যাবার কথা বললেই আঁতকে উঠে। ষাট বছর হবার আগে পর্যন্ত না হয় উইন্ডি পয়েন্ট এই যাবো, এরপর হিপি হলো ... ।
যথারীতি ভালো লেগেছে। খিচুড়ি লিখবেন না, পোলাও কোর্মা লিখবেন সেটা আপনার ইচ্ছা, কিন্তু লেখা ছেড়ে দিয়েন না যেন।
আরে নাহ, লেখা ছাড়বো কেন? আর যে শিরোনামেই লিখি না কেন শেষ পর্যন্ত সেটা জগাখিচুড়ি টাইপ কিছু একটা হয়ে যাবে ... :D। ধন্যবাদ এবং ঈদ মুবারাক।
খাসা হয়েছে , লিখে যান ভাই। মিলিটারি নিয়ে মন্তব্যগুলোতে পুরোপুরি একমত(আমার কোন মিলিটারি বন্ধু বা আত্মীয় সচলে এসে এই লেখা পড়ার সময় পাবে বলে মনে হয় না, তারা লেফট- রাইট কমান্ড ফলো করতেই ব্যস্ত)
facebook
ওই অণু, তুমি মিয়া কমেন্ট কইরা কাইটা পড়তেছ ঘটনা কি? তোমার ছবি সমৃদ্ধ নতুন লেখা কই?
আর কি লিখবো, আপনে যেই ভাবে সারা দুনিয়া ঘুরতেছেন সেইটা দেখে আর লেখা লেখি করতে মন চায় না। বোঁচকা বাচকি নিয়ে বের হয়ে পর্ব একদিন ঠিক।
খিচুড়ি শেষ শুনে দুঃখ পেলাম । রান্না থামাইয়েন না।
লেখার শেষ কৌতুকটা ছোটবেলায় পড়ে খুব মজা পেয়েছিলাম। তখন তো আর জামাকাপড় খোলার মাজেজা জানতাম না কিন্তু শেষ লাইনটা ঠিকই বুঝছিলাম। একবার বাসায় শুনানোর পর অনেকবারই ভরা মজলিসে গুরুজনদের সামনে এই কৌতুক বলতে হয়েছে। তখন তো বুঝি নাই কেন সব ময়মুরুব্বিরা এইটা শুনে হাসতে হাসতে গড়ায় পড়তো।
রান্না চলবে।
এইরকম আরেকটা কৌতুক ছিল, এক ছাত্র কে শিক্ষক জিজ্ঞেস করলো বল তো এমন একটা বস্তু কি যেটার নাম বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়। ছাত্র বলে, স্যার চুল। মাথায় থাকলে চুল, চোখের উপরে থাকলে ভুরু, ঠোঁটের উপরে মোছ, গালের উপর দাড়ি। শিক্ষক আঁতকে উঠে বলে, ওরে থাম আর নীচে নামিস না। বাল্যকালে এই কৌতুক শুনে মাথা চুলকেছি, হাসির কিছু খুঁজে পাই নি। বড় হয়ে বুঝলাম, ওরে দুষ্টু, ঘটনা তাহলে এই!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
দারুন মজাদার লাগলো।
উপরি হিসেবে আরো একটি মজাদার জিনিশ চোখে পড়লো। লেখাটার পাশে বাদরসদৃশ ছবিটার উপর হঠাৎ করে কার্সার পড়ে যাওয়াতে একটা পপ আপ মেসেজ দেখালো! বিশ্বাস না হয় নিজেই পরীক্ষা করে দেখুন!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
জানি কি দেখায়, লেখা দেখায় চরম উদাস এর ছবি ... । সমস্যা কি তাতে? বাদর বলে কি মানুষ না নাকি আমি?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
খিচুড়ি পর্ব শেষ হলেও ক্ষতি নাই তাতে। এবার মোরগ পোলাও, বিরিয়ানি, মোগলাই পারাটা পর্ব শুরু করে দ্যান।
সেটাই, একটা না একটা খাওয়া জুটে যাবে। কিন্তু আপনের লেখা কই? লেখা লেখি কি ছেড়ে দিলেন নাকি? একটা ভ্রমণ কাহিনী টাহিনি ছাড়েন না। আমার তো নিজের লেখা পড়লে একটুও হাসি আসে না, তাইলে হাসবোটা কেমনে? আপনেও লেখেন না, লুৎফুল আরেফিন ভাই এরও খোঁজ নাই, মুখফোড় বহুদিন পর পর চুই সাইজের একটা লেখা দেয়, হিমুও লিখে না অনেকদিন?? তাইলে হাসবোটা কেমনে, রস-আলো পড়ে??
খিচুড়ি শেষ হলেও অন্য লেখা জারি রাখেন
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
রাখবো,
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আপনে কোন অরফিয়াস? আপনের কি নুকতা আছে না নাই??
নুকতা ছাড়া আর নুকতা সহ দুইটাই আমি আসলে ঠিকানা বিভ্রাট আরকি... হে হে হে .... এখন এক খানা অর্ফিয়াসই পাইবেন....
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
অতিব উপাদেয় ও সীস্বাদু।
লোভ সামলাতে না পেরে পরখ করলাম সবগুলো পদ-ই।
আহা শেষ হয়ে গেলো! রাতও প্রায় শেষ হয়ে গেলো। যাই ঘুমাতে যাই। অনেক অনেক মজা পেলাম আপনার লেখা পড়ে উদাস ভাইয়া। ছদ্মনামে বন্ধুদের এমন তুলোধুনো করার পথ দেখিয়ে দেবার জন্য আবারও ধন্যবাদ। বলা যায় না আমি আবার এই উৎসাহে কি লিখে বসি
মন খারাপ। আপনার লেখাগুলো পড়লে হাসি। পড়া বন্ধ হলে আবার
এত ভাল লেখেন কিভাবে? এত স্বতস্ফূর্ত!
আর ব্যাপার না। এমন অসাধারণ খেলার পর হারজিত আসলেই ব্যপার না। এই দিন দিন না আরও দিন আছে।
রস নিয়ে জানলাম অনেক কিছু .. প্রিন্সিপাল কি সোহরাব আলি ছিল তখন?
নাম বৈলেন না ... ডর লাগে
ইয়া ইয়া
নতুন মন্তব্য করুন