“দালানে বাস করা আর কমোডে হাগু করা; এইটুকুই এখন পর্যন্ত বাঙালির নাগরিক জীবনের অগ্রগতি।” “বাংলাদেশটা বাঙালিদেরই দেশ। কিন্তু রোজার মাসে বড়ো বিশ্রীভাবে হঠাৎ মুসলমানের দেশ হয়ে যায়।”
“কিছু সমস্যা বিখাউজের মতো; তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারে না কিন্তু চুলকাতে চুলকাতে মাথা অস্থির করে ফেলে।”
“কেউ হাত ধুয়ে রাখলেই তাকে রাজনীতিবেক্কল ভাবা ঠিক না; নখের ভেতরে ময়লা লুকিয়ে আমিও পৌছেঁ দিতে পারি যে কারো রক্তের ধারায়।”
“মুরগির মাংসে দাঁত বসিয়ে মুরগিরে গালি দেয়- ধুত্তুরি অত শক্ত ক্যান হাড্ডি তোর?”
“মূর্খ তিন ধরনের; জ্ঞানী মূর্খ- ভণ্ড মূর্খ আর অজ্ঞান মূর্খ। প্রথমদল জানে ও স্বীকার করে সে মূর্খ। দ্বিতীয়দল জানে কিন্তু স্বীকার করে না যে সে মূর্খ আর তৃতীয়দল জানেই না যে সে মূর্খ।”
“বাংলাদেশে রোজার মাসটা হচ্ছে সামরিক আইন জারি করে বাধ্যতামূলক উৎসব উদযাপন। এর একদিকে চলতে থাকে রোজা না করা মানুষদের উপর শারীরিক মানসিক সামাজিক আর্থিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক নির্যাতন আর অন্যদিকে মাইকে বাজারে রাস্তায় অফিসে রোজার দোহাই দিয়ে চলতে থাকে মাসব্যাপী রোজাপ্রদর্শনের সাড়ম্বর উৎসব।”
“ধর্ম পালন- ধর্ম প্রদর্শন এবং ধর্ম আরোপ। প্রথমটা বিশ্বাসীদের কাজ; দ্বিতীয়টা ভণ্ড ও বিভ্রান্তের আশ্রয় আর তৃতীয়টা রাজনৈতিক কর্মসূচি।”
............ এবং আরও হাজারো ‘লীলেনকথা’। এরপর কোমায় চলে যাওয়া ছাড়া আর পথ খোলা থাকেনা। কেননা আমিও হাগু-মুতু পর্যায়ভুক্ত বাঙালি হোমোসেপিয়ান্স।
প্রথম পরিচয়:
সাত আট মাস আগের কথা। অফিসে বসে কাজ করছি, হঠাৎ হেলতে দুলতে দাদার আগমন। দাদার চাল চলন সবসময়ই উদ্ভট। চালায় গাড়ি, ভালোবাসে সাহিত্য, করে পারটাইম সাংবাদিকতা। দাদাই হঠাৎ অবতারণা করলেন –
- লীলেন ভাই এর লেখা পড়েছিস?
- কে?
- লীলেন।
- লেনিন। হুম। অনেক কিছুই পড়া। বিশেষত Das Kapital (ড্যাশ ক্যাপিটেল)টা তো বহুবার...
- কি? Das Kapital তোর মাথা। আমি মাহবুব মাহবুব লীলেন এর কথা বলছি।
এই বলে তীর্থদা আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই ‘মাংস পুতুল’ কাব্যের কয়েকটি লাইন আপন মনে আউরাতে লাগলেন। লাইন গুলো এখন আমার স্পষ্ট মনে নেই। আবছায়া ভাবে শুধু...............
আমি বললাম, বাংলাদেশের কবি?
জবাবে দাদা আমার দিকে আশাহত ভাবে তাকালেন, ভাবলাম এবার খিস্তি থেকে আমাকে কেউ উদ্ধার করতে পারবেনা। কিন্তু না, দাদা আবারো কেমন আবেগ প্রবন হয়ে বলে উঠলেন, প্লিজ কবিকে কখনো দেশ দিয়ে বিচার করিস না।
এরপর আমি ভেসে গেলাম এবং রাতে বাসায় ফিরে এসে গুগুল এ লীলেন গুগ্লাইলাম। এই শুরু...
গুরু, আমার কচলানি শুরু :
সচলায়তনে ঢুঁ মারতে শুরু করলাম। সৌজন্যে তীর্থদার গুতানি। পাশাপাশি আগরতলার বাজারে লীলেন খোঁজ। পাইলাম না, তবে সচলে সচলাইতে সচলাইতে ‘নিম নাখারা’। আর যায় কই, ই-বুক খানা ডাউনলোডাইলাম। প্রচ্ছদ দেখে মাথা হাফ গুবলেট। তারপর একটানা ‘বৈরাত’ ও ‘নাটাঙ্গি’ কমপ্লিট। এরপর খানিকটা শ্বাস নেওয়ার প্রয়োজনে ছাদে গমন এন্ড তীর্থদাকে ফোন। ও প্রান্ত থেকে সহাস্য উত্তর, কি মরা মানুষের বডিতে হাত ঢুকে যাওয়ার গল্পটা নাকি নিরব মুক্তিযুদ্ধ? তারপর একটানা ‘ভুমিলক্ষ্মী’, প্লানচেট হয়ে ‘আন্ডুল’ ‘মাটি’ সাত খানায় ছত্রছান হয়ে গেলাম। তারপর ‘মুখবই’ এর ফেইসে এ স্ট্যাটাস দেখা এন্ড বাকি পর্ব সমাপ্ত , মানে রঙিন ফানুস(নাটক) এর কাসেম এর মতো আমারও মাথামুথা আউলাইয়া গেলো।
এবং একজন অসহ্য পর্যায়ের মানুষ:
আমার জ্ঞানের ভাণ্ডার ৫০ পয়সা দামের পুচকি বেলুনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কত কথা যে বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সব আউলাইয়া যাইতাছে। এমন নয় যে এর আগে আমি এমন ছোটগল্প পড়িনি, এমন নয় যে এর আগে আমি স্পষ্ট কথা বলতে শুনিনি, এমন নয় যে এর আগে আমি এমন ঝকঝকে টানা ভাষায় লেখা পড়িনি, কিন্তু এমন নির্মম ও অসহ্য ভাবে দেশ, সমাজ, রাজনীতি, জীবনবোধ, ধর্ম, বাস্তব কিংবা সংস্কারকে ফালাফালা করতে দেখিনি, না দেখিনি! বাস্তব কে যে কতটা ‘বাস্তব’ করে দেখিয়েছেন তিনি তা ভাষায় প্রকাশ করা আমার পক্ষে অসম্ভব। হাসান আজিজুল হক এর ‘শত্রু’কে লীলেন যে ভাবে Deconstruct ( বিনির্মাণ) করেছেন ‘নাটাঙ্গি’তে তা দেখে বলতে হয়, শূন্যের পথ নির্মিত হয়েছে পরা জগতের অন্বেষণে। একমাত্র বুদ্ধদেব বসুর ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ ছাড়া এমন বিনির্মাণ আমার চোখে দুর্লভ। যদিও বুদ্ধদেব বসুরটা পুরানাশ্রিত, আর লীনেন দেখিয়েছে এখনকার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাঁর গ্রন্থের মুল্যায়ন কিংবা সমালোচনা করা এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। কিংবা সেই যোগ্যতা সত্যিই আমার নেই। ‘বৈরাত’ এর মানুষগুলি যেন আমার মতো বয়সের ছেলেদের কথা। ‘মাটি’তে হারিয়ে যায় চোরাবালির স্রোত, কিংবা ‘ভুমিলক্ষ্মী’তে মিশে থাকে অন্তিম দিগন্তের দীর্ঘশ্বাস। তাই তো তাঁকে বলতে দেখি “আত্মহত্যা করতে গিয়ে বহু মানুষ ফিরে আসে কিংবা বেঁচে যায়। কিন্তু যখন আত্মহত্যার সমর্থক গোষ্ঠী তৈরি হয়ে যায় তখন আর ফিরে আসা কিংবা বাঁচাবাচি বলতে কিছু নাই; ওরাই মৃত্যুটা নিশ্চিত করে দেয়।”
যখন তিনি বলেন “মগজে পিঁপড়া ঢুকে গেছে; এখন একটা ব্যাঙ ঢুকিয়ে পিঁপড়া খাওয়াতে হবে”, ‘৭১ এ ভূগোলে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ’ তখন আমার মগজেও লক্ষ লক্ষ পিঁপড়ার দল দাপাদাপি করে। আবার গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা ফুটে উঠে “ছাত্র হিসেব আমি সব সময়ই শিক্ষকদের হাড়-জ্বালানিয়া ছিলাম। যাদেরকে বেশি জ্বালিয়েছি তাদের মধ্যে একজন চলচ্চিত্রকার আখতারুজ্জামান; এইমাত্র পত্রিকা খুলে দেখলাম স্যার আর নেই। জামান স্যার সালাম; আপনার 'পোকামাকড়ের ঘর বসতি'তে আমরা পোকামাকড় হয়েই থাকলাম কিন্তু আর কোনোদিনই আপনাকে কামড়াতে পারবনা।” আত্ম শক্তিতে জাগ্রত মানুষটি তাই বলতে পারেন “ধর্ম পালন- ধর্ম প্রদর্শন এবং ধর্ম আরোপ। প্রথমটা বিশ্বাসীদের কাজ; দ্বিতীয়টা ভণ্ড ও বিভ্রান্তের আশ্রয় আর তৃতীয়টা রাজনৈতিক কর্মসূচি।” স্যাটায়ারের চূড়ান্ত নিদর্শন “ঢাকা শহরে বাড়িওয়ালাদের স্থান পিতামাতারও উপরে। বাপমায়ের জন্য কামাই না করলেও সারা মাস বাড়িওয়ালার জন্য কামাই করতে হয়। আর গাড়িওয়ালাদের স্থান সন্তানেরও অধিক। প্রতিদিনই তাদের আব্দার মতো খুচরা পয়সা দিয়ে খুশি রাখতে হয়...” কিংবা নিজেকে নিয়ে এমন রসিকতা বোধ হয় তাকেই মানায় “ছোটবেলা ঠিক করা তারিখ অনুযায়ী আগামী বছর আমার মরে যাবার কথা।বৌম্যাডাম সেটা জেনে শর্ত দিয়েছেনে মরার আগে যেন একটা পাত্র ঠিক করে তাকে বিয়ে দিয়ে যাই। কিন্তু আমার তো এমন কোনো শত্রু নাই যাকে বৌম্যাডামের বর বানিয়ে জীবনটা ছারখার করে দিতে পারি…”
আরও এমন বহু অপ্রিয় সত্যের অসহ্য খতিয়ান। আরও কত যে লিখেছেন মানুষটা যা আমার কাছে এখনো অধরা। যতটুকুই পড়েছি তাতে করে একটা কথা সোচ্চার কণ্ঠে বলি, লীলেনের নিরব বিপ্লবের একজন সাক্ষী হতে পেরে আমি আপ্লুত এবং স্রোতমুখী। আমার তীর্থদা বলেন, জানিস লীলেন ভাই একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ, বর্তমানে চাকরি করার দৌলতে কিছুটা সচ্ছল হয়েছেন। কিন্তু মাটির কাছে থাকা এই মানুষটির মতো কিছু মানুষের জন্য দেখিস একদিন বাংলার বুকে একটা নূতন সূর্য নেমে আসবে। নিরবে নিরবিচ্ছিন্ন গতিতে।
রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিম, বিষ্ণুরা দুরঅস্ত হালের সমরেস, সুনীল গাঙ্গুলিরাও আমার মত কমন পাব্লিকের কাছে ভাই গোত্র হয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু মাহাবুব লীলেন যে কি করে লীলেন ভাই হয়ে গেলো তা বলতে পারবনা। তাই ‘এই অসহ্য পর্যায়ের ভালো মানুষ’টিকে আমার কুর্নিশ।
শরৎচন্দ্র বেঁচে থাকলে কি লিখতেন জানিনা, তবে আমি খানিকটা চেষ্টা করতে পারি : নীরব স্রোতের কাণ্ডারি, সত্যের পাঁচিল ভাঙা নিরাবরণ প্রেতচ্ছায়া তুমি। তোমার দুর্যোগের পথ ক্লান্ত নয়। তোমার জীবন চৈতন্যে মিশে একদিন একাকার হবে দেশের ভবিতব্য। চির উদ্যমী সাহসী লেখক তোমাকে সালাম।
***** অসহ্য পর্যায়ের ভালো মানুষ আমি: মাহবুব লীলেন।
------------------------------------------------------------------------
আগরতলা
সেপ্টেম্বর, ০১। ২০১১
-------------------------------------------------------------------------
কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ১। ফেইসবুক ২। গুগুল ৩। সচলায়তন
মন্তব্য
das kapital লিখেছেন কার্ল মার্কস,লেনিন নয়।মাহবুব লীনেন গল্প লেখেন জানি কবিতাও লিখতে পারেন হয়তো।শুধু কটা ষ্ট্যাটাস নিয়ে এই লেখাটা অসম্পূর্ণ লাগলো।তবে ষ্ট্যাটাস গুলা সুন্দর।
মাহবুব লীনেন নয় "মাহবুব লীলেন" হবে..
ভাই ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন। শিরোনাম আর তারসাথে নীড়পাতার একদম উপ্রে লীলেনদার ছবি দেখে বেশ ভয় পেয়েছিলাম। পুরো লেখা পড়ে বুঝলাম ঘটনা খারাপ কিছু না
সচলে আমার পড়া সবচেয়ে ভাল লেখার তিনটা তালিকা একবার হয়েছিল। সেখানে আমার নিজের দেওয়া অপশনে দুইটা লেখাই ছিল লীলেনদার। এখনো মনে আছে সচল তখন মোটে আসা শুরু করেছি তখন এক লেখায় তার মন্তব্য দেখে তার পিছনের লেখা গুলো পড়তে গিয়ে প্রথমেই পড়া হয় ছায়ামুখ। পড়া শেষ করার পর কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে ছিলাম, মনে হয়েছিল যদি আমিও এমন লিখতে পারতাম। যাই হোক লোকটা ভয়ানক ফাকিবাজ, ছয় মাসে নয় মাসে একবার লিখে।
অফটপিকঃ এই লেখা পড়ার পর মনে হচ্ছে লীলেনদা একজন ছদ্মবেশি মডু
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
অফটপিকের উত্তর: লীলেন মাস্টর মডু হইলে আমি মডুদের মডু
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
মডুদের মডু কথা পড়েই চোখের সামনে দেখতে পেলাম সাত রঙ্গা মডুরা ভয়ে ভয়ে আপনার সামনে বসে আছে আর আপনি বেত নাড়িয়ে বলছেন দলছুটের লেখা আটকাল কে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ধুর! আমি বেত দিয়ে মারি নাকি? আমিতো বোতল দিয়ে মারি। সিমন জানে বোতলের মারের মর্তবা।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
হ, বোতলের মার ভয়ংকর। ব্যথা থাকিবে কিন্তু দাগ থাকিবে না। তা সিমন ভাই কে এই দাগহীন মার দিল কে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
আবার জিগায়
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ব্লগ খুব খ্রাপ জায়গা। দূরের মানুষগুলোও মনেহয় অনেক কাছের।
বিয়ের পর বৌকে জিঞ্জেস করেছিলাম নজমুল আলবাব, আরিফ জেবতিক, হাসান মুর্শেদ কে চেনো নাকি?
উত্তরে বল্লেন, উনি সবাইকে খুব ভালো করেই জানেন।
পাল্টা আমাকে প্রশ্ন উনাদের কিভাবে জানি এবং আমার ক্লাসমেট কিনা?
আমি শুধু বল্লাম উনাদের ব্লগ একটু পড়ি আর আমি উনাদের থেকে ছোট।
দাড়ি রাখার পর অনেকদিন ছোট করা হয়নি। প্রত্যেকদিনের মতো গতসপ্তাহে অফিসে আসার পূর্বে বউকে উম্মা দিতে গিয়েছি। মুখ কানের কাছে নিয়ে এসে বল্লো আমাকে নাকি মাহবুব লীলেনের মতো লাগতেছে।
শিরোনাম দেখে ভয় পাইছি।
কালো বর্ডারে লীলেনদার ছবি দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। ব্লগটা পড়ে নিশ্চিন্ত হলাম।
আর ডাস ক্যাপিটাল লেনিনদা লেখেননি, মার্ক্সদাদুর বই ওটা।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সচল বেরাদার গন আপনাদের অবগতির জন্য জানাই - মহামতি লেনিন নয় কার্ল মার্কস যে ডাস ক্যাপিটাল লিখেছেন তা আমি জানি । তাহা এই অধম সজ্ঞানেই ব্যবহার করিয়াছে । স্যাটায়ার । হা হা হা । আগডুম বাগডুম ।
তখন আমি কথা বলার সময় লেনিন -ই বলিয়াছিলাম । তাই এই লেখায়ও সত্যতাই বললাম।
-----------------------------------------------------
আর। " মাহবুব লীনেন নয় "মাহবুব লীলেন" হবে.." অটা আমি জানি গো বেরাদার
ঊনি বাংলাদেশের সম্পদ; বাংলা সাহিত্য আরো সমৃদ্ধ হবে।
_____________________
Give Her Freedom!
নিবিড় ভাই এবং নজমুল আলবাব ভাই আমার তো মনে হয় সবচেয়ে বড় মডু হইল "সচলাচল মডু " ।
খাঁটি কথা সহজে বললেন - মৃত্যুময় ঈষৎ ।
ধুর মিয়া! ভয় পেয়ে গেছিলাম!
শিরোনামে লীলেনদার নাম, ছবির চারপাশে কাল বর্ডার আর প্রিভিউতে 'কোমায় চলে গেলাম' লেখা দেখে ভয় পেয়ে গেছিলাম!
আমিও বিলকুল ভয় পেয়ে গেছিলাম, আজকাল চারিদিকে যা চলছে! ঠিক ঐ দ্রোহীদা যা বললেন, "শিরোনামে লীলেনদার নাম, ছবির চারপাশে কাল বর্ডার আর প্রিভিউতে 'কোমায় চলে গেলাম' লেখা দেখে"...
জব্বর একখান চমকাইয়া গ্যছিলাম কালো বৃত্তের মাঝে ফডুটা দেখে। পরে স্থস্তির নিঃশ্বাস নিলাম।
ভালো পাই লীলেন ভাইয়ের লেখা। বোধের দুয়ারে ধাক্কা মেরে তোলপাড় জুড়ে দেয় তার লেখনী।
আমি ভু্ই পাই নাই
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দুর্দান্ত
দ্রোহী ভাইজান ভয় পাইয়েন না । লীলেন মিয়া ওরফে অসহ্য পর্যায়ের ভালো মানুষটা ভালোই আছে । যদিও আমার সাথে ওনার - পেরাস্নাল যোগাযোগ নাই।
কৌস্তভ ভাই - লিলু ভাই অক্ষত আছেন । কালো বর্ডার এ ছবিটা কেন দিছি তা আশা করি আপনি বুঝতে পারছেন । ওটার একটা অভিপ্রেত অর্থ প্রকাশ করার জন্যই এই কাজটা করা।
এই চলার পথ সহজ নয়।
নজমুল আলবাব ভাই ভূত পাইতেন না । অরারে আমেরিকার পেন্টু বাবু ধইরা লইয়া গেছে। স্পেশাল ট্রেনিং এ ।
আমি তো জুতসই একটা শোকমন্তব্য লেখার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিলাম ! আর মনে মনে একটা দুঃখ দুঃখ ভাব নিয়া ফুলতেছিলাম যে, আহা, এই শেষকৃত্যের আলাভোলা মার্কা ছবিটা তো আমার অর্বাচীন ক্যামেরার চোখেই দেখা ! রে ক্যামেরা, তুই কী করিলি ! এই ছিলো তোর মনে ! হতচ্ছাড়া, এইভাবে তুই 'হয়ে যাচ্ছিলো প্রায়' ক্যাটেগরির একজন মহান দার্শনিককে শেষ পর্যন্ত ছবিই বানিয়ে দিলি !! ধিক ওরে যন্ত্রাধম তোকে ধিক................
এমন পরিকল্পনাটা ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ ফুশ হয়ে গেলো পোস্টের নিচে যেতে যেতে ! শেষে হতাশ হয়ে আশ্বস্ত হলাম, যাহ্, লোকটা আরো কিছুদিন হাবলাহোবলা ভালো মানুষগুলারে জ্বালাইবার জন্য রয়েই গেলো শেষে !! হা হা হা !
তবে সবাইকে কানে কানে বলে রাখি, মাহবুব লীলেন সেই ব্যতিক্রমী মেধাবী, যাকে মূল্যায়ন না করে বাংলা সাহিত্যের কোন উপায় থাকবে না।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ধন্যবাদ sokal roy মহাশয় ।
দাদা- রণদীপম বসু, আফনেই তাইলে এই ছবির উত্তরক। ছবিটা গুগুল থেইকা লইবার সময় নিচে নামডা দেখেছিলাম। তবে আফনেই যে সেই কত্তা তা জানা ছিলুনা, থ্যাঙ্কু ।
তবে সবাইকে কানে কানে বলে রাখি, মাহবুব লীলেন সেই ব্যতিক্রমী মেধাবী, যাকে মূল্যায়ন না করে বাংলা সাহিত্যের কোন উপায় থাকবে না।
--------------------------------------------------------
আমার
“সব অভিমান আকাশের চেনা চেনা
সবার জন্য সুদিন কি আসবেনা
উত্তর চেয়ে আকাশ পেতেছে কান
আমিও বেধেছি আমার প্রেমের গান।"
আমি মোট তিনবার মারা গেছি। একবার গাড়ির নিচে পড়ে। একবার পানিতে ডুবে আরেকবার জবাই হয়ে। তিনবারই নিজের শোকবার্তা নিজেই লিখতে পেরেছি। কিন্তু শোকবাণী লেখার সুযোগ ছাড়াই চতুর্থবার যে আমি মারা যেতে পারি তা দেখে বেশ বড়ো একটা ধাক্কা খেলাম
অবশেষে শরীরে চিমটি কাটতে কাটতে নিজের প্রাণ পরীক্ষা করতে গিয়ে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রফেসর রাজ্জাকের কথাটা মনে হওয়ায় বুঝলাম- না এখনো মরি নাই তবে....
ঢাকা ভার্সিটির টিএসসি মিলনায়তনের সেই সংবর্ধনায় প্রফেসর রাজ্জাককে বসিয়ে রেখে সবাই যার যার মতো বলল। তারপর উনি উঠলেন। উঠে বললেন-
(বক্তব্যটা স্মৃতি থেকে নেয়া। বাক্য গঠন ঠিক নাও হতে পারে)
অ ভাই। আগামী বছর আমার মরার একটা তারিখ ঠিক করা আছে। দেখি কিছু করতে পারি কি না....
০২
মহাকালে কোন জায়গায় আমার এইসব হাবিজাবির ঠাঁই হবে কে জানে
আমি শুধু জানি মগজে যত ধুলোবালি জমা হয় তা অক্ষরে ঢেলে দেয়াই আমার কাজ
০৩
এরকম প্রশংসা হজম করা তো প্রচণ্ড কঠিন
এখন 'মুই কী হনুরে' বলে না আবার কয়েক বছরের জন্য ঘুমিয়ে পড়ি....
০৪
পরিচিত মানুষ মরে গেলে যাতে দ্রুত ছবিসহ পোস্ট দেয়া যায় সেজন্য রণদা একটা 'মরণশীল ফটোগ্রাফি' প্রজেক্ট চালু করেছিল। যার সাথে পরিচয় হতো তারই একটা ফটো খিঁচে রাখতো মোবাইলে
আমার এই ছবিটাও কিন্তু রণদা'র মরণশীল ফটোগ্রাফি প্রজেক্টের ছবি...
(ডরাইছি ভালৈ)
কতদিন সচলে আপনার লেখা পড়ি না, লীলেনদা!!!
_____________________
Give Her Freedom!
facebook
লিলেন ভাই আপনার হজ্ঞল কতাই ভাল্লাগে ।
না ভাই আমি প্রশংসা করিনি। শুধু নিজের মনের ভাবটা প্রকাশ করছি। আর একটা অনুরুধ, এখানে আপনার বই পত্তর মার্কেটে পাওয়া যায়না। প্লিজ ভাই কিছু যদি ই-বুক করতে পারেন তাইলে আমার মত আপনার কিছু ভক্ত এর স্বাদ নিতে পারব।
আমি বাংলাদেশের বাঙ্গালী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর পরিচয় পেলাম আপনার মাধ্যমে, ভালো লাগল । ধন্যবাদ ।
নতুন মন্তব্য করুন