ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি ভাগ করলে পরিমাণ কমে। এই ভাগ শিখতে ছোট বেলায় আমাদের জান ঝালাপালা হয়ে যায়। আর স্যারদের বেত্রাঘাতের অভিজ্ঞতা কম বেশি সবারই আছে। কিন্ত সাইকোলজি কি আর গনিত মানে?? ভেবে দেখুন না আনন্দ ভাগাভাগিতেই বাড়ে। আপনি যতই আনন্দে থাকুন না কেন তা ভাগ করতে না পারলে ফিকে হয়ে আসে। তা যদি হয় ঈদ এর আনন্দ তবে তো কথাই নেই। এই ঈদ এর আনন্দ ভাগ (বাড়াতে) করে নিতে দবির মিয়া নাড়ির টানে গ্রামের দিকে রওনা হল। আমজনতার কাতারে আছে বলেই বিলাস বহুল গাড়ী কিংবা হেলিকপ্টার এর চিন্তা বাদ দিয়ে লোকাল বাসে চড়ার ডিসিশান নিলেন তিনি। প্রথমে ট্রেন এর কথা মাথায় আসছিল কিন্তু ট্রেন এর টিকেট চাঁদের চেয়েও দুর্লভ। সেটা টিভি নিউজ দেখেই বুঝে গেছেন। সড়ক যোগাযোগের বেহাল দশা দেখেই এবার নাকি বাসে মানুষ কম হবে। এই ভেবে সোজা বাস স্ট্যান্ডে চলে গেলেন তিনি। বাস স্ট্যান্ডে গিয়েই মোহ ভঙ্গ হল তার। একি !! চারিদিকে মানুষ আর মানুষ!!! কিন্তু বাস নেই। যে একটা বাসের দেখা মিলল তাতে কোনও গেট দেখলেন না তিনি। আমজনতা বাদুড় ঝোলার মত সিটি বাসে চড়ে। ওনারও বেশ অভিজ্ঞতা আছে বাদড় ঝোলার। কোন দিকে ভ্রুক্ষেপ না করেই দশ বারো জনকে পেছনে ফেলে তিনিও এক পা বাসে ঢোকালেন। যা থাকে কপালে। ঠিক সেই মুহূর্তে ওনার মোবাইল এ মেসেজ এল "পৃথিবীতে ভাল মানুষের হায়াত কম, আপনি অনেকদিন বাচবেন, যাত্রা শুভ হোক" মেসেজের প্রেরক ওনার অফিস এর কলিগ ইসমাইল। বড় পাজি লোক। সব বিষয় নিয়েই ইয়ার্কি করে। মেসেজ নিয়ে ভাবার সময় নেই এখন দবির মিয়ার। বাড়ি পৌঁছানোই মুখ্য বিষয়। মানুষের ভিড়ে ঘেমে একাকার হলেন হলেন দবির মিয়া অনেকটা কাক ভেজা টাইপের। এদিকে নবাবজাদা ড্রাইভারের কোন দেখা নাই। গেট দিয়ে ঢোকার রাস্তা নাই বলে ব্যাটা ড্রাইভার ড্রাইভিং সিটের জানালার পাশ দিয়ে ঢুকল। ব্যাটার চেহারার দিকে তাকানোর কোন অবস্থা নেই। ইয়া বড় ভুঁড়ি, লম্বা লম্না গোফ, যেন সাক্ষাত আজরাইল। যা হোক গাড়ি চলতে শুরু করল কচ্ছপ গতিতে। কিন্তু একি!! গাড়িতে তিল ধারনের জায়গা নাই অথচ হেল্পার হারামজাদা মানুষ তুলছে!!! যেই একবার যুদ্ধ জয় করে গাড়িতে উঠলো সেই-ই অকথ্য ভাষাই হেল্পারকে গালাগালাজ করছে। এই হেল্পার হারামজাদার চামড়া নির্ঘাত গণ্ডারের (সঙ্গত কারনেই সেই অকথ্য কথা গুলো লেখা যাচ্ছেনা)।
প্রিয় পাঠক এত অল্পতেই ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। জার্নি তো মাত্র শুরু। আমাদের অশিক্ষত ড্রাইভারদের বোঝানো উচিত "slow and steady wins the race". তারা অযথাই রেস লাগায়। পথিমধ্যে দবির মিয়ার গাড়ির সাথে আরেকটা গাড়ির রেসের গল্প বলি। চরম রেস। দবির মিয়ার জান প্রায় হাতে উঠার অবস্থা। এর মাঝেই জ্যাম। "যাক বাবা, বাচা গেল" দবির মিয়া ভাবল। কিন্তু একি!! ড্রাইভার পাশের কাঁচা রাস্তা দিয়ে রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালাতে শুরু করল। খাদে পড়িতে পড়িতেও পড়িলনা। এই অবস্থায় জ্যাম ডিঙ্গিয়ে আবার গাড়ি চলতে শুরু করল রাজপথ দিয়ে। কাচা রাস্তার কথা আসতেই একটা কথা বলে রাখা ভাল, কাঁচা রাস্তা রাজপথ থেকে ভাল। রাজপথ তো প্রায় পুলসিরাতের মত। রাস্তাগুলো অনেকটাই স্পোর্টস চ্যানেল দেখা ওয়াইল্ড রেসের মত। কেন যে বুদ্ধিজীবীরা বলে চালকেরা অদক্ষ এটা দবির মিয়ার মাথায় ঢুকে না। তাদের তো গাড়ির রেসে পাঠানো উচিত, নিশ্চিত মাইকেল শুমাখার ফেল। ড্রাইভারদের সাহসিকতার দেখে মনে হয় আমরা জাতি হিসেবে বেশ সাহসী।
পাদটীকাঃ- এই লেখা লেখার সময় নিউজ চ্যানেলের ব্রেকিং নিউজ- দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪০ জন আহত, ৪ জন নিহত।
মন্তব্য
কি কমু কিচ্ছু বুঝতেছি না।
লেখাটা দিয়ে কি বুঝাতে চাইলেন বুঝতে পারলাম না। অসম্পূর্ণ রয়ে গেল মনে হয়
========
আমি জানি না
অতি মাত্রায় স্যাটায়ার করতে গিয়া লেহাডা বিগড়াইয়া লাইছেন মিয়া । তাই কি বলতে চাইছেন তাই পাঠক বুঝতে পারতাছেনা।
কনসেপ্টটা ভালো ছিল।
দেখুন তো সমস্যাগুলো ধরতে পারেন কিনা:
আপনের আনন্দ ভাগাভাগির কথা পড়ে বুদ্ধের একটা বাণী মনে আসল-
"Thousands of candles can be lit from a single candle, and the life of the candle will not be shortened. Happiness never decreases by being shared."— Buddha
facebook
নতুন মন্তব্য করুন