আমার বাবার শখ পূরন করতে ভর্তি হয়েছিলাম ইংরেজি বিভাগে। কি শিখেছি, কেন শিখেছি, কতটুকু শিখছি তা নিয়ে আমার প্রচুর সংশয় আছে । তবে চিটাগাং ইউনিভার্সিটির সেশন জটের কল্যাণে চার বছরের কোর্স ছয় বছরে শেষ করাতে ছাত্র অবস্থায়ই বেশ চাকরি টাকরি করার অভিজ্ঞতা হয়ে যায়।
আমি হিসাব করে দেখলাম আমি প্রায় চারটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, নৌ-বাহিনী আর দুটি বেসরকারী ইউনিভার্সিটিতে পড়িয়েছি। তা বলে আমি যে খুব মেধাবী কোন ছাত্রী ছিলামনা। কেমন করে যেন ইন্টারভিঊ বোর্ডে উতরে গিয়ে চাকরিগুলো পেয়েছি। প্রায় প্রতিটা জায়গায় আমার তথাকথিত ইংরেজি জ্ঞানের ভান্ডার উত্তোরোত্তর বেড়েছে। যেমনঃ
১। আমার প্রথম চাকরি ছিল আমি যখন ২য় বর্ষের ছাত্রী। একটা অখ্যাত ব্যাংএর ছাতা টাইপ ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। বেশ ভাব নিয়ে ক্লাশ টুএর ক্লাশ টিচার হয়েছি! একদিন দায়িত্ত পড়ল এক ছাত্রের মায়ের সাথে বাতচিত করে ছাত্রের বাকি পড়া ৪ মাসের বেতন আদায়ের! কারণ ছাত্রের মা বেতন দিলে আমার বেতন হবে । আমি মাকে বেত্নের কথা বলতেই তিনি বললেন; আমার halfpant মানে বাচ্চার বাবা দেশে আসলেই টাকা দিয়ে দিব!
২। এরপর আরো কয়েকটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়িয়ে অবশেষে যখন মাস্টার্সের সার্টিফিকেট পেলাম, তখন ঠিক করলাম আর স্কুল না এইবার আরো উন্নত কোন জায়গায় যাব। চাকরি পেলাম নৌবাহিনীতে সিভিল ইন্সিট্রাক্টর হিসাবে। প্রথমদিন রুমে বসে ঝিমাচ্ছি (ওদের অফিস শুরু হয় সকাল সাড়ে সাতটায়); হঠাত শুনি বুটের আওয়াজ সাথেঃ ষাঁড় (sir), ক্লাস!!!!
৩। এরপর জীবনে আরো উন্নতির উদ্দেশ্যে জয়েন করলাম ঢাকার এক অখ্যাত বেসরকারী ইউনিভার্সিটিতে। যার শ্লোগান লিখতে বলায় আমার এক ছাত্র লিখে দিলঃ We bring out the BEAST in you!!!!
৪। এরপর চাকরিটা ছেড়ে দেই। এরমধ্যেই এক ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রীদের পিকনিকের দাওয়াত পেলাম। দাওয়াতের ইমেইলে বিস্তারিত বর্ণনা ছিল পিকনিকে খাবার দাবার কিভাবে নেয়া হবে, কোথায় মিট করতে হবে ইত্যাদি। এই ইমেইলে আমাকে সম্মোধন করা হলো "Dear Mem" বলে। আর পানি কিভাবে নেয়া হবে তা বলা হলোঃ Water will go by personally. আমি আয়োজক এক ছাত্রীকে ফোন করে যখন জিজ্ঞেস করলাম পানির ব্যাপারটা কি? সে বললঃ পানি যার যারটা সে সে নেবে!!!!
আরো অনেককিছু শিখেছি আমি। সময় সু্যোগ মত বলব খন!!!!
---------রুমঝুম------------
মন্তব্য
দয়া করে কিছু মনে করবেন না, প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় একটা ঘটনা না বলে পারলাম না... আমার চৈনিক বস একদিন আমাকে একটা ইমেইল পাঠিয়েছিলো, "Read this, very impotent!" - আমার প্রথম চিন্তাটাই ছিলো ব্যাটা কি নিজেকে বললো না আমাকে?
হেহে। আমার মনে হয় মেইলটারে কইছে ।
-মেফিস্টো
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস যে আপনাকে বলেনি।
-স্বপ্নাদিষ্ট
ভালোই লিখেছেন। আমার সবথেকে ভীতির দুটো বিষয় হচ্ছে ইংরেজি আর ম্যাথ।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ!
ম্যাথ আমি এত ভয় পাই যে দুই এর সাথে দুই যোগ করতে বললে হাতের তালু ঘেমে যায়।
আসুন, হাত মেলাই।
লেখা ঠিকাসে, আর একটু বড় আর এই এট্টু গোছানো হলে পড়ে আরো আরাম পেতাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আম্মো আছি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বাহ ভাল ত।
"দুনিয়ার অ-অংকবিদ এক হও"।
হাত ত মেলাতে পারি, কিন্তু আবার মানুষাংক ধরবেননা ত? তা হলে কিন্তু হাতের তালু ঘেমে যাবে!
আমারো ঠিক একি ব্যপার মনে হচ্ছে এখন। আরো গোছান লেখা লিখতে পারতাম। প্রতিটা ঘটনার অল্প একটু ডিটেল প্লাস ফিডব্যাক!
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
মজাদার
তবে আরেকটু বড় করলে ভাল হত, খুব চট করে শেষ হয়ে গেল।
ঠিক বলেছেন। আমারো পড়তে গিয়ে মনে হল হঠাত করে শেষ হয়ে গেল। আরেকটু ডিটেল থাকতে পারত।
রুমঝুম, আপনার লেখা আগে পড়েছি বলে মনে পড়ছে না। প্রথম লেখা হলে সুস্বাগতম, লেখা চালিয়ে যান। এই লেখাটা পড়ে কেন যেন হাসি আসেনি। আমার মনে হচ্ছিল কারো অজ্ঞতা নিয়ে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে। আমি শিওর আপনি ওভাবে উপস্থাপন করতে চাননি।
আরে রু, কিছুদিন আগেই না আমার সাথে আমার ভার্সিটি ঘুরে এলেন?
আমি কিন্তু সেভাবে ব্যঙ্গ করিনি। আর আমার ছাত্রদের ভুলের কিছুটা দায় কিন্তু আমার নিজেরও। তবে সব মজাতেই কেউনা কেউ আহত হয়।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
থুক্কু, নামটা মনে ছিল না।
"এইটা ঠিক আছে"- মানে "Its Ok"....
অজ্ঞতা নিয়ে ব্যঙ্গ মনে হয়নি। তবে লেখার স্ট্রাকচারটা সিরিয়াস লেখার মত লেগেছে, একেবারে পয়েন্ট করে ঘটনাগুলো বলেছেন, প্যারা করে আরেকটু ডিটেইলস বললে হয়ত ভাল হত আরেকটু। আর লেখার মধ্যে অতিরিক্ত ইমোটিকন্স!!
লিখতে থাকুন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
পয়েন্টগুলো একদম শেষে হঠাত কি খেয়াল হল, দিয়ে দিলাম। প্রতিটা ঘটনা কিন্তু প্রথমে এমনি আলাদা আলাদা করে লিখেছি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
অসাধারণ, অফিসে যাওইয়ার আগে এরকম লেখা পড়ে ভালো লাগলো
we bring out the.........
আরিফিন সন্ধি
ধন্যবাদ। আসলেই কি যে অবস্থা আমাদের। একটু সাবধান হলেই কিন্তু হয়।
ভালো লেগেছে। কিন্তু শিরোনামের দুপাশে হাইফেন দিয়ে ওটাকে চেপে মারতে লেগেছেন কেন?
ইংরেজির মরে যাওয়া দেখে!
আপনার water will go by personally পড়ে আমি হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছি।
আমাদের বাসায় ত এরপর কোন আউটিং বা পিকনিক হলে একবার অন্তত এই কথাটা উঠবেই উঠবে।
কয়েকবার গালফ এ্যায়ারে দেশে আসা-যাওয়া হয়েছে। কতো কিছুই চোখে পড়ে। আমি যন্ত্র নিয়ে কাজ করি বিধায় অনেক কিছুই চোখ এড়িয়ে যায়।
এইবার বউকে নিয়ে আসার সময় বাহরাইন এয়ারপোর্টে টয়লেটের নির্দেশক হিসেবে বেশ বড়ো করে লিখা:
Mens Toilet
Womans Toilet
উনি দেখেতো পুরো থ । ছবি তুলে নিয়ে এসেছেন।
একটি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের এই অবস্হা হলে haflpant ঠিকই আছে
আসলেই এইরকম ছোট খাট ভূল গুলোই প্রমান করে দায়িত্তের প্রতি অবহেলা।
'ভূল'-গুলিকে 'ভুল' না করে নিলে কিন্তু 'দায়িত্বে' অবহেলাই হল! সেটা মনে রাখা চাই কিন্তু!
লেখা ভাল হয়েছে। চলুক। ভুল করতে করতে আর ভুল ধরতে ধরতেই একদিন আমরা ভুল এড়িয়ে যেতে পারবো।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
ছিঃ ছিঃ ছিঃ...লজ্জায় মাথা কাটা গেল...
আমার কয়েকটা প্রথম শ্রেনীর মাল্টিন্যাশনালে চাকরীর অভিজ্ঞতাওয়ালা বসের ইংরেজী শুনলে ঐ কোম্পানীগুলার রিক্রুটমেন্ট প্রসেসের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মে যায় ! তবে আপনার অভিজ্ঞতাগুলো দারুণ। ভুলভালগুলো মজার হলে ভালই লাগে
আমারো মাঝে মাঝে মনে হয় অন্তত এইচ এস সি পাশ করতে যতদুর শুদ্ধ ইংরেজি জানা দরকার তাও না জেনে অনেকে অনেক বড় বড় জায়গা দখল করে আছে। কিভাবে সম্ভব?
১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত আমি পড়েছিলাম সরকারী এক বিদ্যালয়ে। ইংরেজীর ভিত ওই জায়গা থেকেই ভীষণ খারাপ আমার। ভাল করার অনেক চেষ্টা করেও জানিনা এখন কি অবস্থা। সব জায়গায়ই ইংরেজী শিক্ষকের খুবই অভাব। আর মুখস্ত করে ইংরেজী শিখে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ঢা.বি থেকে ইংরজীতে পাশ করে সবাই যখন ব্যঙ্কের চাকরীর জন্য পাগল হয়ে উঠে তখন আমি খুবই হতাশা বোধ করি।
আমার কিন্তু কিছু কথা আছে এই ব্যাপারে। আমরা যারা ইংরেজিতে অনার্স/ মাস্টার্স করেছি, তারা ইংরেজি তেমন কিছুই শিখিনি। অন্তত কিভাবে ইংরেজি পড়ান উচিত তা আমাদেরকে তেমন করে শেখান হয়নি।
বাংলাদেশ এ আমার জানা মতে শুধু নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে TESOL ( Teaching English to the Speaker of other Language) এর কোর্স আছে। আর আমার মনে হয়না নর্থ সাউথ থেকে ডিগ্রী নিয়ে কেউ প্রাইমারি স্কুলে ইংরেজি পড়াতে যাবে।
কলেজ বা ইউনিভার্সিটি গুলোতে ইংরেজি বিভাগে মুলত ইংরেজি সাহিত্য পড়ান হয়। সাথে হয়ত এক বছর বা একটি ELT( English Language Teaching) এর উপর কিছু থিউরি পড়ান হয়।
সুতরাং আমার মনে হয় ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের ইংরেজির শিক্ষকের ভুমিকায় সাফল্যের সম্ভাবনা অন্য যে কোন বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের চাইতে বেশি না। তাছাড়া প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতন ভাতার কথা না হয় নাই বা বললাম। তাই বেচারারা ব্যাংকে চাকরি করতে চাইবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই।
অনেক কথা বলে ফেললাম। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার ভাগ্য দেখে ঈর্ষা হচ্ছে খুব। ঐ হতচ্ছাড়া বিভাগটা থেকে চার বছরের অনার্স করতে আমার লেগেছে আট বছর। মাস্টার্স এর রেজাল্ট বেরুতে বেরুতে আরো দু'বছর। আত্মীয়-স্বজন মনে করতো ফেলের বন্যা বইয়ে দিচ্ছি। ওরাতো আর জানতোনা আমি আসলে ভালু স্টিউডেন্ট।
আমরা মোটামুটি তুলনামূলকভাবে লাকি ব্যাচ বলতে পারেন। তাই অন্য ব্যাচগুলোর চাইতে আগে বেরিয়েছি।
তবে দুঃখের কথা কি বলবো? আমি ইংরেজি বিভাগে পড়ে যাচ্ছি ত যাচ্ছি আর ওই দিকে আমার ভাগ্না ভাগ্নীরা পর্যন্ত এর মধ্যেই এইচ এস সি পাশ দিয়ে আইইউটি-আহসান উল্লাহ থেকে ইঞ্জিনিয়র হয়ে বেরিয়ে গেল চোখের সামনে দিয়ে।
রুমঝুম ১, আপনার সাথে ৪০ নং মন্তব্যে সহমত।
আমরা যারা ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স/মাস্টার্স করেছি তাদের Phonetics and Phonology,Advance Reading and Writing Skills এবং ELT( English Language Teaching) এসবের কিছু থিউরি পড়ানো হত।
ELT যদিও খুব মজার এবং প্রয়োগিক বিষয় তারপরও খুব হতাশার কথা অধিকাংশ কলেজ -বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষকদের এ বিষয়টা সম্পর্কে স্বচ্ছ কোন ধারনাই নেই।আমাদের দেশের শিক্ষকদের অধিকাংশ শিক্ষকই মুখস্থ শিক্ষক।অধিকাংশ সরকারি কলেজগুলোতে ইংরেজি শিক্ষক সংখ্যার যে বেহাল তা অকল্পনীয়।আর তো প্রাইমারি--!
লেখাটা মজার,আরো লিখুন।
ধন্যবাদ যুমার।
যতদিন প্রয়োগিক দিকটি মাথায় রেখে সিলেবাস ডিজাইন না হবে ততদিন কোন লাভ হবেনা। আমাদের একটা বই ছিল "সিলেবাস ডিজাইন"। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে বসে ছিলাম সিলেবাস ডিজাইন শেখার জন্য। কিন্তু ক্লাসে দেখলাম মুখস্ত করার জন্য কয়েকটা থিউরির কথা বলা হয়েছে। খুবই হতাশ হয়েছি।
শিক্ষকদের কথা বলবেন না। আমি নিজে বেশ কিছুদিন পড়িয়েছি। সিস্টেমটা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে ক্লাসে আপনি প্রশ্ন কিরকম হবে আর উত্তর কিভাবে লিখলে বেশি মার্কস পাওয়া যাবে তার বাইরে কেউ কিছু বললেই ইভালুয়েশন খারাপ হয়। ছাত্রদের দোষ নেই। পুরো ব্যবস্থাটাই এইরকম হয়ে গেছে।
তবে দিদি, এ ধরণের টুকরো টুকরো মজার অভিজ্ঞতাকে কোন একটা গল্পের ছাঁচে ফেলে দিলে বোধ হয় বেশি মজারু হয়। আর গল্প আকারে লিখলে কারও প্রতি অবজ্ঞা করা হচ্ছে বলেও মনে হয় না, যেমনটা রু বলছিলেন।
শুভেচ্ছা অহর্নিশ।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
ধন্যবাদ মৌনকুহর। আসলে একটু গল্পের আদল আনা যেত ঘটনাগুলোতে। তবে লেখার হাত ভাল না ত তাই ভয় হয়।
আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা।
নতুন মন্তব্য করুন