পোকা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ১০/০৯/২০১১ - ১০:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চেয়ারে বসে থাকতে থাকতে কোমড় ব্যথা হয়ে গেল, আরমান বিরক্ত মুখে আরেকবার নড়েচড়ে বসে। বয়টাকে অর্ডার দিয়েছে ত কতক্ষণ আগে, এখনো চায়ের খবর নেই।আরিফের আসার কথা আরো পনের মিনিট আগে, দূরদূরান্তেও তার টিকিটা দেখা যাচ্ছে না। বড় টেবিলটার এক কোনে গুটিসুটি মেরে আছে একা, টেবিলের ওপর পড়ে থাকা পানি আর চায়ের মিশ্রণ, কয়েকটা চায়ের গ্লাস আর উচ্ছিষ্ট খাবারগুলোর দিকে তাকিয়ে কেমন একটা বিবমিষা হয় ওর। অনেকটা দাঁতের সাথে লোহার চামচের ঘর্ষণে যেমন লাগে তেমন।

চিন্তাটা থেকে মন ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করছে এমন সময় লোকটাকে চোখে পড়ল ওর। ছোট করে ছাঁটা চুল, ধূসর পাঞ্জাবী-পাজামা পরনে, রোদে পোড়া তামাটে মুখ। কাছে আসাতে দেখল চোখগুলো প্রায় রক্তবর্ণ, তার ওপর দুটো ছ্যাঙা শুয়ে আছে। ভুরুগুলো এত উৎকট ঘন কেন? লালচোখ-লোকটা কোন দ্বিধা না করে টেবিলের একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ল। আরমানের মুখোমুখি চেয়ারের পাশেরটাতেই। ওর মনে হল লোকটা একটা মৃদু হাসিও দিল ওর দিকে তাকিয়ে।
টেবিলটা বেশ বড়, নিদেনপক্ষে দশ-বারো জন বসতে পারে ওটাকে ঘিরে। খালি চেয়ারগুলোর দিকে চেয়ে আরমানের দাঁতে ধাতব ঘর্ষণের অনুভূতিটা আবার ফিরে এল। নিজের অজান্তেই উপরের পাটির দাঁতগুলোর ওপরে জিভ বুলিয়ে নিচ্ছিল, হঠাত ওর কানে এল মিহি সেই কন্ঠস্বর যাকে ভোলার সাধ্য ওর বাকি জীবনে আর হবে না- “কেউ কথা রাখেনি, কেউ কথা রাখে না”। তাকিয়ে দেখে লোকটা ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে। “জ্বি, কিছু বললেন?” লোকটা এবার হাসি মুছে ফেলে সহজভাবে বলে- “অবশ্য আমরা সবাই একই কয়েনের দুই পিঠ। কথাগুলো আমরাই ভাজি, আর আমরাই খাই। তাই নয় কি?”
আরমান হঠাত লেবুর গন্ধ পায়। লোকটার গা থেকে আসছে? নাকি কথা থেকে? নিচু গলায় কিছু বলে, যার অর্থ দাঁড়ায় ‘আমি আপনার কথা ঠিক…’। লোকটা আবার হাসে, মসলিনের মত মিহি হাসি। “সবাই বোঝে না প্রথমে। তারপর কেউ কেউ বোঝে। আস্তে আস্তে বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড বুঝে ফেলে। বুঝে আকৃতি পরিবর্তন করে। একটা জোর ভূমিকম্প, তারপর সব ঠিক। ক্ষণকালের জন্য। তারপর আবার কেউ বলে। আরেকটা কেয়ামত। এভাবেই চলে আর কি”।
লেবুর গন্ধটা আরো প্রকট হয়ে যেন নাসারন্ধ্র বেয়ে ওপরে উঠতে চায়। মাথায় একটা ঝাঁকি দিয়ে ও তাড়ানোর চেষ্টা করে। “ওভাবে হবে না। প্রচুর কাগজে পেটপূর্তি করতে হবে আগে। তারপর অনেক নির্ঘুম রাত, ঠান্ডা চায়ের কাপ, অবলার পীড়া আর মরুভূমির কটাক্ষ”। লোকটার চোখে করুণা। আরমান হাত নেড়ে কি একটা বলতে গেলে আঙুলগুলো ঠক করে কিসে বাড়ি খায়। চায়ের গ্লাস, কখন দিয়ে গেছে বেয়ারা কিছু টেরই পায়নি। “এই প্রথম কাপ তোমার। খেয়ে নাও, সর পড়ে যাওয়ার আগেই”। ঘামতে থাকা হাতে ও গ্লাসটা চেপে ধরে। এখনো উষ্ণ।
প্রথম চুমুকটা দিয়ে টের পায় ওর ওপর লাল চোখদুটো স্থির সেঁটে আছে। কতদিন ঘুমায় না লোকটা? নাকি আফিম-গাঁজার ঘোরে বেমক্কা দু’দিন ঘুমিয়ে আজ বের হল? “ঘুম জরুরী জিনিস। একেকজনের জন্য একেক পরিমাণে দরকারী। আইনস্টাইন দাদু ঘুমাতেন দিনে দশ ঘন্টা, নাহলে সুস্থিরমত কাজ করতে পারতেন না। তবু আমাদের মত অভাগাদের সেসব বিলাসের অবকাশ কোথায়। পোকাটা যে বড্ড যন্ত্রণা দেয়”। চোখদুটো আরো লাল দেখায় এখন।
“মাঝে মাঝে স্বস্তি মেলে না, তা নয়”। এবরোথেবরো ঠোঁটে হাসি ফোটে আবার। “এই যেমন আজ একটু মিলবে”।
আরমানের ওষ্ঠাধর কেঁপে ওঠে। “কে-ক্কেন? আজ কেন?” উত্তর না দিয়ে লোকটা ওর হাতে হাত রাখে। আরমান কিছুটা বিব্রত বোধ করে। এভাবে অচেনা মানুষের হাত ধরে কেউ। অবশ্য কোন সাধারণ মানুষ অপরিচিত কারো সাথে এত প্যাঁচালও পাড়ে না। লোকটা যেন আবার মৃদু স্বরে কি বলতে শুরু করেছে। আরমান ধীরে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। লোকটার লাল চোখে অনির্বচনীয় ব্যথা ভর করে। অনুত্তপ্ত গলায় বিরামহীন সে বলে যায় আর আরমানের মনে হয় সে নির্ঘাত ডুবে যাচ্ছে। ঘোরের মধ্যে আবছাভাবে তার মনে ছেপে যায় কিছু নাম, জানা ও অজানা, জটিল ও সহজ, দূরের ও কাছের। ঘোরের মধ্যেই নিজের হাতের দিকে তাকাতে ও চমকে ওঠে। লোকটার পাঞ্জাবী পড়া রোমশ হাতের ওপর হাঁটছে কাল পোকাটা, হাতার ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসছে। ভয়ে-বিস্ময়ে আরমান কিছু না বলে দেখে গেল যে পোকাটা নির্দ্বিধায় তার হাত থেকে অপর হাতে উঠে গেল আঙুল বেয়ে। ডান হাতের আঙুলের ওপর পোকাটার নিঃশব্দ পদচারণ আরমান স্পষ্ট টের পেল। সেদিকেই একদৃষ্টিতে ও তাকিয়ে ছিল যখন লোকটা ওর হাতে একটা হালকা ঝাঁকি দিয়ে বলল- “দেখলে? কেমন একটা সুরসুরি লাগে, তাই না?”
“হ্যাঁ?”
“না, কিছু না। বলছিলাম পৃথিবী আরেকবার ধাক্কা খেয়েছিল যখন ফ্রয়েড বললেন যে মানুষের সব কাজের পেছনেই যৌনতারণা কার্যকর। ওনার মতে শিশুদের মধ্যেও তা বিদ্যমান এবং প্রত্যেক শিশুই তার পিতা বা মাতার প্রতি যৌনাকর্ষণ বোধ করে। তত্ত্বটা পৃথিবীর মানুষের জন্য প্রথমে স্বস্তিদায়ক ছিল না বৈকি। এই সত্য অনুধাবন করে ফ্রয়েড বাবাজির কত কষ্ট হয়েছে বুঝুন। ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন নিশ্চয়ই ভদ্রলোক”।
আরমান তখনো পোকাটাকে পর্যবেক্ষণ করছে। শুঁড়দুটো উর্ধ্বে তুলে পোকাটা গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে তার বাহু বরাবর। একটু ভালভাবে দেখলে কুতকুতে কাল চোখদুটো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। পোকাটাও কি ওর দিকেই তাকিয়ে আছে না? অস্ফুট স্বরে আরমান শুধু বলে- “ফ্রয়েড?” নামটা চেনা চেনা লাগে, কিন্তু নামের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন কথা মনে করতে পারে না।
“অবশ্য ঝাঁঝরা কে-ই বা হয়নি বল? কোপার্নিকাস থেকে শুরু করে আইনস্টাইন, সক্রেটিস থেকে শুরু করে মার্ক্স- সবাই নিজ নিজ কক্ষপথে সৌরানলে দগ্ধ হয়েছেন”।
আরমান হঠাত মাথার মধ্যে একটা সূক্ষ্ম যন্ত্রণা অনুভব করে। তর্জনি দিয়ে কপালের ডান পাশটা চেপে ধরতে বাধ্য হয়, লক্ষ্য করে লোকটা এখনো বিড়বিড় করে কি যেন বলে যাচ্ছে- “…অনেক রঙের আকাশ আর মেঘ দেখবে। অনেক আকৃতির যন্ত্রণা”। আরমান হাতের দিকে চায়, কোথায় গেল ওটা? অস্থির চোখগুলো আঙুলের ডগা থেকে ঘাড় পর্যন্ত খোঁজে- নেই।
লোকটা হালকা মেজাজে শিষ দিয়ে ওঠে- “এইযযাহ, ঢুকে গেছে”।

* * *

খপ করে বেড়ালটা টিকটিকির মাথা কামড়ে ধরে। কিছুক্ষণ কচর-মচর আওয়াজ হয়, অর্থাৎ ভক্ষণকর্ম চলছে।দেহটা পুরোপুরি সাবাড় করলে লেজটা পড়ে থাকে মেঝেয়, তখনও নড়ছে। একটু শুঁকে ক্ষুধার্ত বেড়াল নড়তে থাকা লেজটাকেও মুখে পুরে নিয়ে দৌঁড়ে পালায়। পুরো দৃশ্যটা আরমান নির্বিকার চোখে দেখে। এই কি রীতি? সবল দূর্বলকে খাবে, দুনিয়া জুড়ে যা দেখতে পাওয়া যায়। সাম্যবাদের স্বপ্ন কি তবে প্রকৃতি-বিরুদ্ধ? মাথার ভেতরটা দপদপ করে ওঠে। ওই শুরু হল আবার। পোকাটা ওর পুরো মগজটা কুড়ে না খাওয়া পর্যন্ত ছাড়বে না। দিনকে দিন আরো ক্ষুধার্ত হয়ে উঠছে ওটা, প্রতিদিন তার চাহিদা একটু একটু করে বাড়ছে। এখনো কি ওটা একাই আছে ভেতরে, নাকি বিভাজিত হয়ে অবিরাম বংশবিস্তার করে চলেছে? নইলে এত ক্ষুধা কেন লাগে ওর?
ঘুমের মধ্যেও পোকাটার ফিসফিসানি শুনতে পায় আরমান। কিংবা পোকাগুলোর। বিকৃত চাঁদের গল্প বলে ওরা, একটানা সুরে গেয়ে যায় ভীনগ্রহী মানুষের গান। “আশরাফুল মাখলুকাত!”- আরমান ঘুমের মধ্যে গুঙিয়ে ওঠে। পোকাগুলোর সমবেত চিতকারে সব খানখান হয়ে যায়- “God is dead. God remains dead…”। তীব্র ব্যথা নিয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠে ও, গলা দিয়ে তখনো নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ বেরোচ্ছে শিষ দিয়ে।
উঠে চা বানায় এক কাপ, ঘুম আসবে না আর বোঝাই যাচ্ছে। জানালার সামনে টেবিলে বইয়ের স্তুপ থেকে একটা বই বেছে নিয়ে বসে পড়ে। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উলটে যায়, চায়ের কাপের ধোঁয়া ক্রমশ স্তিমিত। চোখ কচলে লাল করে জেগে ওঠে চেয়ারেই, যখন সূর্যের প্রথম রশ্মি চোখে আঘাত করে। জেগে ওঠে পোকাটাও। জানান না দিলেও আরমান টের পায়।
সকালে নাস্তার টেবিলে যখন বসে, ওর দিকে অদ্ভুত চোখে তাকায় ফরহাদ, ওর ছোট ভাই। ও-ও কি পোকাটাকে দেখতে পায়? শুধু মা কিছু বোঝে না, হাসিমুখে রাঁধে আর খাওয়ায়- ছেলে তার শুকিয়ে যাচ্ছে। যাবে না? খাওয়া-দাওয়া করে নাকি ঠিকমত কিছু। মা পাতে পোচ ডিমটা তুলে দিলে আরমানের মনে হয় এই একটি মানুষই বোধয় আছে নির্ভেজাল, এই একজনই নিঃস্বার্থভাবে সারাজীবন পাশে থেকে যাবে। নিঃ…স্বা…র্থ…ভাবে- আরমান তর্জনি দিয়ে কপাল ডলে। মুখ দিয়ে যন্ত্রণাকাতর শব্দ নির্গত হয়। মা মাথায় হাত রাখেন- কি হল বাবু, মাথাব্যথা?
আরমান ফ্যাকাসে হাসে- “না মা, কিছু না”। মা গভীর মমতায় ওর চুলে হাত রাখেন, কপালে দুশ্চিন্তার রেখা। আরমান দাঁতে দাঁত চেপে পোকাগুলোর কোরাস উপেক্ষা করে- “কোথাও কেউ নেই…”।

* * *

সিগারেটটা নিভিয়ে আরমান যখন দোকানে ঢুকল তখন পরিচিত অনেকগুলো চোখ উঠে ওর ওপর থিতু হল। না চেনার কি কিছু আছে? শুধু কিছু দাড়ি গজালে, চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করলে, গতর শুকালে- মানুষ কি খুব বদলায়। তবু আরমান জানে ওকে এখন অনেকেই চেনে না, ও-ও চেনে না অনেককে।
ছোট বয়টাকে ডেকে চায়ের অর্ডার দিতে গিয়ে চোখ পড়ল ছেলেটার ওপর। ব্যাগ কাঁধে ঝোলাতে ঝোলাতে এই দিকেই এগিয়ে আসছে। চেয়ার টেনে বসে চায়ের অর্ডার দিয়ে ব্যাগ থেকে একটা বই বের করে পড়া শুরু করল। আরমান ওর মাথার ভেতরে পোকাগুলোর প্রবল অস্থিরতা অনুভব করে। বোঝে ওরা বেরিয়ে আসতে চাইছে, ওদের এখন বিস্তার প্রয়োজন।
একটা গলা খাঁকাড়ি দিয়ে ও প্রশ্নটা আচমকা ছুঁড়ে দেয়- “পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ?”
ছেলেটার বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে বোঝা যায় প্রশ্নটা লক্ষ্যচ্যুত হয়নি এ যাত্রা।

* * *

------------
দিঠিহীন


মন্তব্য

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

গল্পের মেজাজটা ভালো লাগলো। চমৎকার তবে মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম। পাঠক হিসেবে আমার ব্যর্থতা আশা করছি ক্ষমা করবেন।
.....................মানিক

দিঠিহীন এর ছবি

খেই হারিয়ে ফেলার দায় নিঃসন্দেহে লেখকের উপরেই বর্তায়। ওয়ার্ড থেকে কপি-পেস্ট করে দেয়ার পর খেয়াল করিনি যে প্যারাগুলোর স্পেসিং ঠিকমত আসেনি। এছাড়া বিরতিচিহ্নেরও কিছু সমস্যা আছে বোধ করি। মন্তব্য করার জন্য অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------

দিঠিহীন (ফারাবী)

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

গল্পটার পেছনের চিন্তা আর কাহিনিবিন্যাস ভালো লেগেছে। তবে মনের চিন্তাগুলোকে প্রকাশে লেখনী কতোটা সুবিচার করতে পেরেছে সে ব্যাপারে নিঃসন্দেহ নই। লোকটার প্রথম আসা, অতিরিক্ত লাল হয়ে থাকা চোখের ওপরে গুরুত্বারোপণ, মায়ের ভালোবাসা হাইলাইট করা, এই রকম বেশ কটা পয়েন্ট একেবারেই সুপারইম্পোসড মনে হয়েছে। এগুলো স্থান না করে নিলে বোধহয় পোকায় ধরা মানুষগুলোর বোহেমিয়ান মনন গল্পের আমেজে যোগ হতে পারতো।
তারপরেও, যখন গল্পটা শেষ করি, পেছনের চিন্তাটা অনেক ভালো লেগেছে।
লেখনী চালু থাক।

দিঠিহীন এর ছবি

লেখনীর বিষয়ে আমি নিজেই নিঃসন্দেহ নই ভাই। তাই ত সচলে দেয়া গল্পটা, ভুল-ভ্রান্তি সম্পর্কে ধারণা পাবার জন্য। কিছু বিষয় সুপারইম্পোজড হয়েছে বোধ হয়, সম্ভবত গল্পের ক্ষীণ কলেবরের কারণে। আর পোকায় ধরা মানুষগুলোর মনন বোহেমিয়ান হলেও ঘটনাবলীর অতিশায়নও কিন্তু তাদের সেই সংবেদনশীল মননেরই একটা অংশ।

আপনার সযত্ন পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

---------
দিঠিহীন (ফারাবী)

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. ফারাবী নামের একজন অতিথি লেখক ছিলেন যিনি খৈয়াম/গালিব নিয়ে বেশ আগে লিখেছিলেন। আপনি কি সে-ই?

২. অনেকদিন আগে "রহস্যপত্রিকা"য় মানুষের মগজে পোকা থাকা, সেই পোকার মাথা চিবিয়ে খাওয়া, অন্য মাথায় ট্রান্সফার হবার একটা গল্প পড়েছিলাম। ঐ গল্পটা সম্ভবতঃ অনুবাদ ছিল। আপনার গল্পটা পড়তে সেই গল্পটার কথা মনে পড়ল। আপনার গল্পে প্রথম জনের কাছ থেকে আরমানের গায়ের ভেতর পোকা ঢুকতেই বাকি গল্পটা আঁচ করা যাচ্ছিলো। এর কারণ হয়তো আমার আগের ওই গল্পটা পড়া থাকা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দিঠিহীন এর ছবি

১। আমি 'সেই' ফারাবী-ই দাদা। অনেকদিন পর সচলে লেখা দিতে গিয়ে একটু গুলিয়ে গিয়েছিল। পাসওয়ার্ড খুঁজে পাচ্ছিলাম না, পরে আবিষ্কার করলাম ওটা রেজিস্ট্রেশনের সময়ই দিয়ে দেয়া হয়, সচল হবার সময় কাজে আসে। যদিও আমার ইনবক্সে তেমন কোন ইমেইল খুঁজে পাইনি। তাই বিভ্রান্ত হয়ে অন্য নামের আশ্রয় নেয়া।

২। আপনার পড়া গল্পটা আমারও পরিচিত মনে হচ্ছে। তবে আমি যেটা পড়েছিলাম তাতে ওটা পোকা না, মাকড়সা ছিল। সংক্রমণের ব্যাপারটা ছিল কিনা খেয়াল নেই। ওটা হরর গল্প ছিল, অনুবাদ। আমার এই গল্পের বিষয়টা ওটার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন বলেই মনে হয়। যদিও কাফকার 'মেটামরফোসিস'-এর প্রভাব থাকলেও থাকতে পারে। গল্পটাতে অনেকদিন যাবত আচ্ছন্ন আছি।

------------
দিঠিহীন (ফারাবী)

অপছন্দনীয় এর ছবি

ঐ গল্পটার নাম ছিলো "ঘুণপোকা" ... অনেক ছোটবেলায় পড়া, তখন পড়তে গিয়ে গা শিউরে উঠেছিলো মন খারাপ

শাব্দিক এর ছবি

পড়তে গিয়ে কেন জানি ক্যান্সারের মত লাগছিল, যেভাবে জীবানু গুলি বংশ বিস্তার করে, খেয়ে শুকিয়ে ফেলে দেহটাকে। লেখাটা মগজে ঢুকে গেল, এটা অবশ্যই লেখার গুন।

দিঠিহীন এর ছবি

ইতিবাচক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ শাব্দিক। ভাল থাকবেন। হাসি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আইনস্টাইন দশঘণ্টা ঘুমাতেন
এইটা পড়েই আমার ঘুম পাওয়া শুরু করল
বাকিটা পড়ব ঘুমের পর

দিঠিহীন এর ছবি

মন খারাপ বেশ, ঘুমের পালা চুকিয়েই নাহয় জানান গল্প কেমন ঠেকল।

তানিম এহসান এর ছবি

চলুক

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে!

লেখকের স্বাধীনতার প্রতি সন্মান রেখেই বলি, কোন কোন জায়গায় যুতসই বাংলা শব্দ থাকা সত্ত্বেও ইংরেজির ব্যবহার অনভিপ্রেত ঠেকেছে। যেমন, 'কয়েন'!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

দিঠিহীন এর ছবি

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। এ বিষয়টা প্রায়শই ঘটে যায় নিজের অজান্তে। তবে কিনা আজকাল মূলধারার লেখাগুলোতেও ইংলিশের যা প্রাদুর্ভাব, তাতে নিজেই নিজেকে অতটা দুষতে পারি না। খাইছে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।