২ দিন আগের কথা।
-হ্যালো।
-হ্যালো, আমি নিশু।
-সুন্দরী! তোমার খবর কি?
-সুন্দরী! যাক শেষ পর্যন্ত তুমি আমাকে সুন্দরী বললা।
-সুন্দরী বলছি নাকি? বুল অয়ে গেচে। এই বুলের কুনু কমা নেই। আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম সুন্দরীর বান্ধবী। তোমার সেই ‘অপ্সরা’ বান্ধবীর খবর কি?
-অই ব্যাটা। ঠিক হবি কোনদিন? নাকি লুল প্রজাতী হয়ে যাচ্ছিস?
-হায়রে নারী। ধিক তোমায়। আমার মন তুমি বুঝলানা। হাহহহহ............এখন বলো, এহেন কিরণশোভিত প্রভাতে আমার নিদ্রা পন্ড করার হেতু কি?
-কালতো ১১ তারিখ। কলেজ যাবি কবে? পোলাপাইন তো ক্লাস শুরু করে দিসে...
-কি তুই এই সকাল বেলা এইরকম একটা কথা বলার জন্য আমার ঘুম ভাঙ্গাইছিস। X(আজ তোর একদিন কি আমার যয় রাইত লাগে...
মেডিকেলে একটা কথা খুব প্রচলিত। শতকরা ৯৫% মেডিকেল স্টুডেন্ট ফার্স্ট প্রফেশনাল পরীক্ষার আগে ফেইসবুকে এই স্ট্যাটাস দিয়ে ‘আমরা মেডিকেল স্টুডেন্ট’ এই কথা প্রকাশ করে থকেন (আমি কিন্তু ৫% এর অন্তর্ভূক্ত)ঃ ‘আপনার কি কাউকে আইক্কা ওয়ালা বাঁশ দেয়ার ইচ্ছা। তাহলে তাকে ফুসলিয়ে-ফাসলিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়ে দিন। বাঁশ যে কোনদিক দিয়ে ঢুকছে পোলায় টেরও পাইবনা’।কাহিনী কিন্তু সত্য। যারা প্রফেশনাল পরীক্ষা দিয়েছে তারাই জানে আইক্কা ওয়ালা বড়ুয়া বাঁশ কাকে বলে।
পুরো বাংলাদেশে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রেকর্ড তৈরী করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ১ মাসের মধ্যে গত ৪ আগস্ট প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষা শেষ করেছে। রেকর্ড কেন জানেন? একটা উদাহরণ দেই তাহলেই টের পাবেন। আমদের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ২ জুলাই, আর সিলেটের জালালাবাদ আর আর মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা শুরু হুয়েছিল ৯ জুলাই। আমাদের পরীক্ষা শেষ ৮ আগস্ট, আর JRRMC-র পরীক্ষা শেষ হয়েছে...থুক্কু শেষ হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মেডিকেল কলেজে এখনও পরীক্ষা শেষ হয় নাই। হে হে তাইলে বুঝেন আমরা কিরাম বিল্ডিং বিল্ডিং ইস্টুডেন্ট;)। বাংলাদেশের যে সকল পোলা মাইয়্যা এখনও প্রফের বাঁশ গলধঃকরণ করছে (অবশ্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গলধঃকরণ প্রযোজ্য হবে না, সেক্ষেত্রে গলার ঠিক বিপরীত ছিদ্র ব্যবহৃত হয়। নন-মেডিকেল ভায়েরা এন্ড আপারা জাইন্যা নেন, মেডিকেল টিচারদের কাছে Oral আর Anal দুইটাই সমান, কারণ দুইটাই একই ধরনের এপিথেলিয়াল টিশ্যু দিয়ে তৈরী) তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা ঈদ উপলক্ষে মাত্র ১ মাস ১২ দিনের অটোভ্যাকেশন নেয়ার মহান সিদ্ধান্ত নিলাম। সেই মহান সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমাদের কলেজে যাওয়ার কথা ১৬ সেপ্টেম্বর। আমাদের এই সিদ্ধান্তের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়া (হাতের হইলেও এক কথার ছিল, পায়েরটা দেখাইছে:(), আমাদের মহান গুরু মশাইরা ১১ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু করে দিয়েছেন। আমাদের ক্লাসের কিছু শ্রমিক পোলাপাইন (শৌচকার্য ও গলধঃকরণ ব্যতীত যাদের জীবনের একমাত্র ব্রত, উদ্দেশ্য ও কর্ম শুধুই অধ্যয়ন করা) এই ইস্যুতে আমাদের বিরোধী দল অর্থাৎ মাস্টার প্রজাতীর সাথে হাত মিলিয়েছে। তাদের প্রতি তীব্র ধীক্কার জানিয়ে কেন তাদের ক্লাস করা অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে কালকেই হাইকোর্টকে রুল জারি করার আহবান জানাচ্ছি।
কতদিন পরে বাড়ি আসছি। মাত্র দেড়মাস...না না পুরো দেড়মাসও না, আরো ১ মাস ১২ দিন বাড়িতে আছি। আমি যদি এখন বাড়ি থেকে চলে যাই, যে মুভিগুলা কিনছি ওইগুলা কে দেখব, যে বইগুলা কিনছি ওইগুলা কে পড়ব, আর প্রফের সময় যে ঘুম ঘুমাইতে পারি নাই সেগুলা কে ঘুমাইব?? উত্তর দে হারামজাদা, নাইলে কিন্তু আমি কলেজে যামুনাX(।
এক বদমাইস আজকে ফোন দিসে। কলেজে যাইয়া লই, তারপরে তরে দেখামু, কত গমে কত বার্লি। ফোন দিয়ে বলে,
-আজকে কি হইছে জানিস?
-তোর বান্ধবী কার সাথে পালাইছে আমি জানুম কেমনে?
-আর দূর ব্যাটা। একজন পালাইছে বইল্যা সবাই কি পালাইব নাকি? আইজকা খবির স্যার আমাদের প্রথম ক্লাসেই পোস্ট মর্টেম দেখাইতে নিয়া গেছিল।
গ্ররররররররররররররররররররররররররররররররররররররররররর......
আমি কলেজে যামুনা। আমার ইচ্ছা।
আমার চিন্তা-ভাবনা ছিল, ১৬ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু হলে ১ সপ্তাহ যাবে স্যারদের পরিচিতিমূলক ক্লাস শেষ করতে। আমি নাহয় এই Boss-দের (শব্দটা কিন্তু ইটালিকে লিখেছি, যারা নাইন-টেনের বায়োলজি পড়েছেন, তারাও জানেন ছাপার হরফ ইটালিকে লিখলে তা বৈজ্ঞানিক নাম বুঝায়)সাথে কিছুদিন পরে মানে ২৪-২৫ তারিখের দিকে মোলাকাত করব। আর যারা জানেননা, তারা জেনে নেন ৩ তারিখ থেকে পূজা শুরু (মা দূর্গা, তুমি তাড়াতাড়ি এসো);)।
১০ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু হওয়ায় আমাকে এখন ১৬ তারিখ-ই সিলেট ছাড়তে হবে।কলেজতো মানে না, তবু মনকে বলি, আমি কলেজে যামু না, আমার ইচ্ছা।
এ হাসনাত
মন্তব্য
দুর্দান্ত! হৃদয় ছুয়ে গেল!
এরকম লিখা দিয়ে সচলের নীড়পাতা প্লাবিত হয়ে যাক।
ধইন্যা
এ হাসনাত
কী বলেন, কতো কী বুঝি, এই এক জ্বালা!
আমার এনাটমি পরশু। আমার বলতে ইচ্ছা করছে "আমি পরীক্ষা দিমু না। আমার ইচ্ছা"
তোর ডায়লগ দিয়া তরে উত্তর দেইঃ মানুষ তিন জায়গায় একা যায়। বাসরঘরে, কবরে, প্রফের টেবিলে।
যতই না না কর, কুনু লাব নাই।
এ হাসনাত
লেখা মজার লেগেছে, আরো লিখুন।
তবে-
১। ভাষা কিছুটা খেলো লেগেছে, যেমন, "বুল অয়ে গেছে, এই বুলের কুনু কমা নেই" ইত্যাদি।
২। বানানে একটু সতর্ক হোন, অবশ্য লিখতে লিখতেই এটা ঠিক হয়ে যাবে। যেমনঃ খবর কি> খবর কী?, প্রজাতী>প্রজাতি।
ভালো থাকুন।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এবং দুটুই হল
আর আপনি যখন এত বাঁশ খাইলেন তাই অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়া আপনার জন্য কিছু বাম্বুর ইনফরমেশন রাইখ্যা গেলাম, হা হা হা
ডাকঘর | ছবিঘর
হায়, আমিতো আর ইচ্ছা করলেও কলেজে যাইতে পারুম না।
বাইচ্চা গেসেন মিয়া। আবার কান্দে।
মেডিকালের ছাত্রছাত্রীদেরকে যারা কাছ থেকে দেখে নাই, তাদেরকে এই বিষয়ে অধ্যয়ন আর প্রফের আনন্দ বুঝানো যাবে না সহজে!
সবে তো শুরু, ব্যাম্বু ইটিং এনজয়েবল হোক সেই শুভকামনা থাকলো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
লেখাটা ভালো হৈলেও মানবজাতির মেডিকেল প্রজাতির জন্য আমাদের কোনো সমবেদনা নাই বলে দুঃখিত
আমি কি কসসি? আমার উপর আপনার এতো রাগ ক্যান?? হু?
সমস্যাটা কি বাংলাদেশের মেডিক্যালের পরীক্ষা পদ্ধতির না কি সারা বিশ্বের মেডিক্যালের পড়াশুনার এই অবস্থা?
জানিনারে ভাই। জানলে একটু জানাইয়েন। আমাদের মত অন্যরাও বাঁশ খাচ্ছে শুনলে জানে একটু আরাম লাগত।
ভালই তো, বর্ণনা সঠিক হলে যেটুকু এই লেখার জন্য ব্যয় হল তাকে রীতিমত ত্যাগ স্বীকার বলা যেতে পারে! তবে বাংলা হরফে ইংরেজী লেখা হবে নাকি ইংরেজী হরফেই লেখা হবে, তা ঠিক করে নিলে সুবিধা হত আমাদের মত পাঠকদের।
আপনার কথাটা ঠিক বুঝিনি। একটু বুঝিয়ে বলবেন?
ডাক্তারদের সারাজীবনই লেখাপড়া করতে হয় !!! ভাবলেই কেমন মায়া লাগে !! :(
ধুর ধুর স্কুল কলেজে না গেলে কি হয় রে! তার চেয়ে আপনি বাড়িতেই থাকেন। কেনা মুভিগুলো দেখেন। বইগুলো পড়েন। আচ্ছা করে ঘুম দেন আর ঘুম ভেঙে সচলে পোস্ট লেখেন। আমরা পড়ি মজা করে
তারপর বাপ যখন ঘাড় ধরে বাড়ি থেকে বের করে দিবে তখন কিন্তু আপনার বাসায় থেকে লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে
সমস্যা হল ৭৫% উপস্থিতি না থকলে পরীক্ষায় এটেন্ড করা যায় না। কোন ব্যাটা যে এরকম নিয়ম বানিয়েছিল, তাকে পেলে... । পোলাপাইনগুলাও বদ হয়ে গেছে। প্রক্সি দেয় না...
আরে আমি তো উৎসাহ দিলাম! উৎসাহ দেয়াটা যে বিপদের তা তো বুঝিনি বাপু
দুর্দান্ত! চালায়া যান মিয়া।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
নতুন মন্তব্য করুন