বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম স্বায়ত্বশাসিত দেশ ভ্যাটিকান সিটি আয়তনে মাত্র এক বর্গ কিলোমিটারের চেয়ে কম হলেও এর প্রতাপ দৌর্দন্ড। বিশ্বের নানা প্রান্তের শতকোটি ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখে এই ক্ষুদে ভূখণ্ডটিকে, এখানেই যে বাস করেন তাদের ধর্মের জীবিত সবচেয়ে সন্মানিত ব্যক্তি পোপ! যার মুখ নিঃসৃত বাণী বিশ্বাসীদের কাছে ধর্মসৃষ্ট ঈশ্বরের অমোঘ বাণীর মতই পবিত্র। সেই সাথে বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ জাদুঘর, যা বিশ্বের সেরা সব চিত্রকর্ম আর ভাস্কর্যের সম্ভার, বিশ্বের ২য় বৃহত্তম গির্জা, উচ্চতম গম্বুজ আর বিশ্বের সুন্দরতম ছাদ সিস্টেইন চ্যাপেল- এইসবই একসাথে ভ্যাটিকান সিটিকে পরিণত করেছে ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণের প্রাণকেন্দ্রে। চলুন বন্ধুরা, ঘুরে আসি এই স্বর্গীয়, অপার্থিব, অনন্য, অসাধারণ, অতুলনীয় সৌন্দর্যময় শিল্পকলার প্রাণকেন্দ্র পোপের দেশ ভ্যাটিকান সিটি থেকে।
প্রাণসঞ্চালনকারী নদী টিবের অধ্যুষিত রোম মহানগরীর মাঝেই ভ্যাটিকান সিটির অবস্থান। রোম ভ্রমণের এক ফাঁকে এক রৌদ্রকরোজ্জল দিনে টিবের পার হয়ে দাঁড়ালাম ভ্যাটিকান সিটির সীমানা প্রাচীরের সামনে।
সেই উঁচু দেয়াল ধরে এগোতে এগোতে দেখা পেলাম হাজার হাজার দর্শনার্থীর, যারা কাকভোর থেকে অপেক্ষারত ভ্যাটিকান জাদুঘরের মূল দরজায়। বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধশালী ও বৃহত্তম জাদুঘরটি দেখার রোমাঞ্চ সবার চোখে-মুখে। খুব আস্তে আস্তে এগোচ্ছে লাইন, দেরী করে আসার খেসারত দিতে হল হাজার দুই দর্শনার্থীর পিছনে দাড়িয়ে! বেশ খানিকক্ষণ পরে ১৫ ইউরোর টিকিট কেটে নিরাপত্তার ঝামেলা শেষ করে প্রবেশ করলাম পৃথিবীর ক্ষুদ্রত্তম দেশটাতে।
গাইড বই থেকে আগেই জেনে নিয়েছি ভ্যাটিকান সিটির জাদুঘর এতই বিশাল আর এর সংগ্রহশালা এত রকমারি জিনিসে পরিপূর্ণ যে সমস্ত সংগ্রহ দূরে থাক, বিশেষ ভাবে অতি বিখ্যাত নিদর্শনগুলোও একদিনে দেখা সম্ভব নয়! তাই প্রথম থেকেই মোটামুটি ঠিক করা ছিল কোন কোন জায়গা আর অমূল্য শিল্পকলাগুলো প্রধানত দেখতে চাই-ই চাই, সেই সাথে সাথে পথের মাঝে যা দেখা হবে তা বাড়তি পাওনা।
প্রথমেই এক চিলতে সবুজ চত্বর, এর পরপরই মর্মর প্রাসাদের সমাহার। ভ্যাটিকান জাদুঘর মূলত কয়েকটি ভাগে বিভক্ত, যেমন মিশরীয় সংগ্রহ, ইৎরুস্কান সংগ্রহ, বোর্গিয়া ডিপার্টমেন্ট, রোমান চিত্রকলা, রাফায়েল কামরা, সিস্টেইন চ্যাপেল। তাই চাহিদা অনুযায়ী পথ খুজে নিতে হয় পথ নির্দেশক দেখে।
প্রথমেই সূর্য দেবতা অ্যাপোলোর ভাস্কর্য স্বাগত জানায় সকলকে, এরপর ঢুকে পড়ি রোমানদের তৈরি পশু পাখির শ্বেত-পাথরের ভাস্কর্যের সংগ্রহশালায়। এ এক অন্যন্য জগৎ, চারপাশের নিখুত প্রাণীমূর্তিগুলো যেন হঠাৎ কোন অভিশাপে পাথর হয়ে যাওয়া প্রাণ, অপেক্ষায় আছে জীয়ন কাঠির ছোঁয়ায় ফের জেগে উঠবার। তাদের পশমগুলো পর্যন্ত পাথর কুঁদে তৈরি করা হয়েছে অমানুষিক দক্ষতায়, অপরিসীম মমতায়, নিপুন হাতে।
সময়ের স্বল্পতা বিধায় অনেক কষ্টে হাটা ধরলাম অন্য সংগ্রহশালার দিকে। মিশরীয় সংগ্রহশালার মূল আকর্ষণ হাজার হাজার বছর আগের মিশরীয় মমি! এর পরে একের পর এক অমূল্য শিল্পকলায় থরে থরে সাজানো গ্যালারীগুলো, মাইলের পর মাইলে চলে গেছে। কোনটাতে ট্রাপেস্ট্রির বিশ্ব সেরা সংগ্রহ, কোনটাই ফ্রেসকো, কোনটাতে প্রাচীন ম্যাপের আদলে পেইন্টিং এর ছড়াছড়ি। এ এক আচ্ছা ফ্যাসাদ! এমন অদ্ভুত মধুর সমস্যায় পড়িনি কখনো, কোনটা ফেলে কোনটা দেখব।
চিত্রকর্ম আর সুনিপুণ হাতের সূক্ষ কাজ, হাজার হাজার অবিশ্বাস্য রকমের জীবন্ত ভাস্কর্যগুলো যে পথের দু ধারেই শুধু সাজানো তা তো নয়- মেঝেগুলোও একেকটা দেখার মত, আকর্ষণীয় সব নকশা, নানা ধাঁচে বহু বর্ণের মোজাইকে তৈরি। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, মেঝের চেয়ে লক্ষগুণ ঝামেলা তৈরি করল ছাদগুলো, মাইলের পর মাইল নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চলে যাওয়া কোনও ছাদের মনে হয় এক মিলিমিটার জায়গাও বাদ রাখেন নি ইতালিয়ান চিত্রকরেরা। এঁকে গেছেন একের পর এক অত্যাশ্চর্য পেইন্টিং। চারিদিকে জীবনের উজ্জল আলো ছড়ানো ভ্যাটিকানের এই জাদুঘরের তুলনা শুধু সে নিজেই।
তার উপর আছে হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড়, কোথাও সুস্থির হয়ে দুদণ্ড দাড়িয়ে শিল্প উপভোগের যো নেই, কেবল গুটি গুটি পায়ে সামনের দিকে এগোনো। তাই বলছি এ কি আজব সমস্যা, দেখার আনন্দে মন কানায় কানায় পরিপূর্ণ, আবার খুঁটিয়ে উপভোগের সম্ভাবনায় গুঁড়ে বালি। এ যেন শাঁখের করাত, যা মনে করিয়ে দেয় রবার্ট ফ্রস্টের কবিতা-
Heaven gives its glimpses only to those
Not in position to look too close.
এভাবেই সৌন্দর্য সুধা উপভোগ করতে করতে কখন যে ভুবন বিখ্যাত রাফায়েলের কামরাগুলোতে নিজের অজান্তেই অনুপ্রবেশ করে ফেলেছি বলতে পারি না! বাম পাশের দেয়ালে চোখ পড়তেই টনক নড়ল- প্রিয় চিত্রকর রাফায়েলের বিশ্বখ্যাত স্কুল অফ এথেন্স আমার চোখের সামনে!!
বিশাল সেই ক্যানভাস থেকে একে একে খুজে বাহির করলাম সক্রেটিস, প্লেটো, টলেমী, পিথাগোরাস, অ্যারিষ্টটল, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, মাইকেল এঞ্জেলো, ইউক্লিড, আলেকজান্ডার, হিরোডটাস, জোরোয়াস্টার এবং একমাত্র নারী সদস্য বিদুষী গণিতবিদ হাইপেশিয়া সহ স্বয়ং রাফায়েলকে যিনি পরিচিত ছিলেন মরণশীল ঈশ্বর বলে! এই বিশেষ চিত্রকর্মটি রাফায়েল এমন ভাবে নীল-সাদা আকাশের ব্যাকগ্রাউন্ড দিয়ে একেছিলেন যেন দর্শনার্থীর কাছে মনে হয় সে নিজেই এথেন্সের সেই জ্ঞানসভায় উপস্থিত আছে। কৌতূহলী দৃষ্টি মেলে শ্রদ্ধাবনত মস্তকে দেখছে চিরঅমর মহাজ্ঞানীদের সেই মিলনসভা। তৎকালীন পোপ ২য় জুলিয়াসের এই আবাসকক্ষগুলোর দেয়াল জুড়ে রাফায়েল একের পর এক অসাধারণ চিত্রকর্ম উপহার দিয়ে গেছেন আমাদের। বিশ্ব নিঃসন্দেহে তার কাছে আরও অগণিত অমর সৃষ্টি পেত যদি না অকাল মৃত্যু ১৫২০ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে ছিনিয়ে নিয়ে যেত এই মরণশীল ঈশ্বরকে। উল্লেখ্য, তিনি সে যুগের অন্যতম সেরা স্থপতি ও নকশাবিদও ছিলেন, সেই সাথে সম্ভবত পৃথিবীর প্রথম দিককার একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ!
এরপরের গন্তব্য ভুবননন্দিত সিস্টেইন চ্যাপেল! বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাস্কর, রেনেসাঁ যুগের অন্যতম সেরা স্থপতি, কবি, নকশাবিদ মাইকেল এঞ্জেলো যে গুটিকয় অমর অনন্যসাধারণ চিত্রকর্মের মাধ্যমে নিজেকে সর্বকালের অন্যতম সেরা চিত্রকরের মর্যাদায় আসীন করেছেন তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত এই সিস্টেইন চ্যাপেল। অনেক শিল্পসমালোচকদের চোখে সিস্টেইন চ্যাপেলই বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত শিল্পকর্ম আর সেই সাথে অবধারিত ভাবেই এটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সিলিং বা ছাদ। কারণ, এই সুবিশাল চিত্রকর্মটি মাইকেল এঞ্জেলো এঁকেছেন চ্যাপেলের ছাদে, এক হাতে চার বছর ধরে, উল্টো ভাবে উপুড় হয়ে অপরিসীম যন্ত্রণা সহ্য করে আমাদের এই বিস্ময় উপহার দেবার জন্য। এই বিভিন্ন ভাগে পেইন্টিং দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে বাইবেলের নানা অধ্যায়- ঈশ্বরের আলো ও অন্ধকারকে আলাদা করা, আদমের সৃষ্টি, তারপর ইভ, পরবর্তীতে তাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়ন, নূহের বন্যা ও পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ঘটনা।
১৫০৮ থেকে ১৫১২ সাল, মাত্র চার বছরে এই প্রায় অসম্ভব কাজটি তিনি সম্ভব করেন মাত্রাতিরিক্ত নিপুণ হাতে, যা অবলোকন করে নিজের অজান্তেই শ্রদ্ধায় এর স্রষ্টার প্রতি মাথা নিচু হয়ে যায় দর্শনার্থীদের এবং ঘাড় ব্যাথা হয় সকলেরই। অথচ এর জন্য প্রতিশ্রুত পারিশ্রমিকের কিছুই পান নি তিনি পোপের বদখেয়ালে! উল্লেখ্য, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জমে থাকা ধুলোয় প্রায় অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া ছাদ থেকে বর্তমান প্রযুক্তির সাহায্যে প্রায় এক দশক ধরে স্তরের পর স্তর ধুলোবালি পরিষ্কার করে নতুন জীবন দান করা হয় ১৯৯৪ সালে। নতুন পোপ নির্বাচনের সময় এই বিশাল ঘরটিতেই রুদ্ধদার নির্বাচন চলে। এর চারিদিকের দেয়ালে বত্তিচেলি, রাফায়েলসহ ভুবনবিখ্যাত নানা চিত্রকরের অপূর্ব সব কাজ, কিন্তু সত্যি কথায় সিস্টেইন চ্যাপেলের অনন্য সৌন্দর্যের সামনে ম্লান হয়ে যায় অন্যান্য সব কিছুই।
এর সভা কক্ষেরই বেদীর দেয়াল জুড়ে আছে মাইকেল এঞ্জেলোর আরেক অমর সৃষ্টি বিশাল চিত্রকর্ম দ্য লাস্ট জাজমেন্ট বা শেষ বিচার! সিস্টেইন চ্যাপেল তৈরির তিন দশক পরে এই বিশাল ফ্রেসকো তৈরির কাজে হাত দেন মাইকেল এঞ্জেলো, শেষ করেন নয় বছরে! এইখানে তার অনন্য তুলির সাহায্যে বর্ণনা করা হয়েছে ধর্মগ্রন্থের মতে অবিশ্বাসীদের পরকালের শাস্তিপূর্ণ জীবন। দ্য লাস্ট জাজমেন্টের উচ্চতা ৪৫ ফিট আর প্রস্থ প্রায় ৪০ ফিট, আশাকরি পাঠক এই পরিমাপ থেকে এর বিশালতার কিছুটা আন্দাজ পাবেন।
দ্য লাস্ট জাজমেন্ট আঁকার পরে তা দর্শনে অবিশ্বাসীদের শাস্তির চিত্র অনেককেই আতঙ্কিত করলেও যথেষ্ট মনোপীড়ার কারণ হয়ে দাড়িয়ে ছিল তা তৎকালীন পোপসহ রক্ষনশীল সমাজের। জানা যায়, পোপের আদেশে নগ্ন মানবদেহের স্থান বিশেষে আব্রুর ব্যবস্থাও করা হয়ে ছিল। কিন্তু সিস্টেইন চ্যাপেলের সাথে সাথে দ্য লাস্ট জাজমেন্টের পরিষ্কার ও মূল রঙ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াও চলে এবং বর্তমানে দর্শকেরা একে আদিরূপে দেখার সৌভাগ্য পান। যদিও এখানে ছবি তোলা নিষেধ, তারপরও রক্ষীদের নজর এড়িয়ে সবাইই ব্যস্ত কিভাবে ফ্রেমবন্দী করা যায় এই অপার বিস্ময়ের আধারগুলোকে। শুধু বলতে চাই, সিস্টেইন চ্যাপেল ও দ্য লাস্ট জাজমেন্টের অপার্থিব, নিখুত, স্বর্গীয়, নয়নমনোহর সৌন্দর্য নিয়ে কোটি কোটি পাতার বই ছাপা হয়েছে আজ পর্যন্ত, তৈরি হয়েছে অসংখ্য তথ্যচিত্র ও চলচ্চিত্র, এবং তা অব্যাহত রবে বহুকাল, তাই এই নিয়ে আর বেশী আলোচনা এই ক্ষুদ্র পরিসরে না করি, তবে মনের গহনে অনেক দিন ধরেই ইউরোপে অবস্থানকালীন সময়েই সিস্টেইন চ্যাপেলের নিচে একবার হলেও দাঁড়ানোর যে সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা ছিল তা পরিণতি পাওয়ায় যারপরনাই আনন্দিত হয়ে পা বাড়ালাম পরের গন্তব্যে- ভ্যাটিকানের আরেক সম্পদ সেন্ট পিটারের ব্যাসিলিকা আর বার্নিনির চত্বর দেখতে।
সেন্ট পিটারের ব্যাসিলিকায় এক সাথে ষাট হাজার লোক অবস্থান করতে পারে, যা একে পরিণত করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশী মানুষ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন খ্রিষ্টান স্থাপত্যে এবং ক্যাথলিকদের কাছে এ এক অতি পবিত্র তীর্থস্থান। ভিতরে প্রবেশের জন্য তখন হাজার হাজার দর্শকের ভিড় ব্যাসিলিকার সামনের চত্বরে। পৃথিবীর অন্যতম নয়নাভিরাম এই চত্বরটির কাজ শুরু হয় ১৬৫৬ সালে, ভ্যাটিকানের বরপুত্র, রেনেসাঁ আমলের অন্যতম প্রতিভা বার্নিনির তত্ত্বাবধানে। প্রায় এক যুগ পরে শেষ হয় তার নির্মাণ কাজ, এই সুবিশাল চত্বরের ঠিক কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে দ্য উইটনেস নামের ৮৪ ফুট উচ্চতার এক ওবেলিস্ক স্তম্ভ। বিশ্বের ২য় উচ্চতম এই ওবেলিস্কটির উচ্চতা ভিত্তি থেকে ১৩০ ফিট! মিশর থেকে প্রায় ২০০০ বছর আগে আনা এই স্তম্ভটির সাথে জড়িয়ে আছে ক্যালিগুলাসহ অন্যান্য ঐতিহাসিক সব চরিত্র। এর চত্বরে আরো স্থান পেয়েছে বার্নিনির নির্মিত এক বিশালাকার অনিন্দ্যসুন্দর ঝরনা যার নকশা তৈরি হয় ১৬১৩ সালে, এই স্ফটিক স্বচ্ছ জলধারা আজো পূর্ণ বেগে বহমান। চত্বরের অন্য পাশেই ভ্যাটিকানের সীমানা শেষ, শুরু রোম তথা ইতালি!
একটু ভালমত খেয়াল করলেই তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে নামী স্থাপত্যকলার নিদর্শন এই ব্যসিলিকার এক প্রান্তে এই সুরম্য ব্যালকনি নজরে আসে, যার পিছনে ঝুলছে গাঢ় লাল রঙের পর্দা। জানা গেল ভ্যাটিকানের এক ও অদ্বিতীয় অধীশ্বর পোপ এই বারান্দাতেই দাড়িয়ে বিশ্বকে দর্শন দেন।
নিরাপত্তার বেড়ী পার হতেই চোখে পড়ল বিচিত্র রঙ-চঙে পোশাক পরা সুইস গার্ডদের, ১৫০৬ সালে যাত্রা শুরু হওয়া ভ্যাটিকানের এই নিরাপত্তাবাহিনীর মূল দায়িত্ব পোপের নিরাপত্তাবিধান, আর এদের পোশাকের মূল নকশাবিদ- মাইকেল এঞ্জেলো!
অবশেষে ঢোকার সুযোগ হল সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায়। বলা হয়ে থাকে যীশু খ্রিষ্টের সরাসরি ১২ জন শিষ্যের অন্যতম গালি থেকে আশা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা ধীবর পিটার একসময় রোমে আসে এবং নিভৃতে তার বিশ্বাস প্রচার করতে থাকে। পরে ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত অত্যাচারী রোমান সম্রাট নিরোর সময় পিটারকে উল্টো করে
ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করা হয় ক্যালিগুলার সেই ওবেলিস্কের সামনে এবং অন্য অনেকের সাথেই তাকে গোর দেওয়া হয় সেই চত্বরেই যার উপরে দাড়িয়ে আজ এই বিশাল মর্যাদাপূর্ণ তীর্থস্থান। এর আকাশ ছোঁয়া প্রায় সাড়ে চারশ ফুট উচ্চতার গম্বুজটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু গম্বুজ, যার ভিতরের ব্যস ৪৬৪ ফিট ১ ইঞ্চি! এই আক্ষরিক অর্থেই চক্ষুচড়কগাছ করা গম্বুজ নির্মাণের মূল কৃতিত্ব দেওয়া হয় মাইকেল এঞ্জেলোকে।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এই ব্যাসিলিকা যে কতটা জাঁকজমকপূর্ণ, দেয়ালে দেয়ালে কতটা কারুকার্য, ছাদে শিল্পের সমারোহ আর কোণে কোণে কত বিখ্যাত শিল্পীর ভাস্কর্য আর শিল্পকর্মে পরিপূর্ণ তার আর নতুন করে ব্যাখ্যা দেওয়ার কিছু নেই। ধারণা করা হয় উপাসনার মূল বেদীর নিচেই সেন্ট পিটারের দেহাবশেষ সংরক্ষিত আছে। মনের মাঝে শুধুই মুগ্ধতার রেশ, একদিনে আর কতই বা দেখা যায়!
মনের আনন্দে পথহারা পথিকের মত উদভ্রান্ত ভাবে মূল দরজার দিকে এগোচ্ছি এমন সময় বাম দিকে দেখা পেলাম ভ্যাটিকান তথা বিশ্বের অন্যতম এক শিল্প সম্পদের- মাইকেল এঞ্জেলোর পিয়েতা!
মেরীর কোলে পূর্ণ বয়স্ক যীশুর মৃতদেহ, কি অপূর্ব তাদের মুখমণ্ডলের অভিব্যক্তি, অজানা আবেগে উদ্ভাসিত! মাত্র ২৫ বছর বয়সে মাইকেল এঞ্জেলো এই সাদা মার্বেলের ভাস্কর্যটি তৈরি করেন এবং এটিই তার খোদাই করা ভাস্কর্য যেখানে শিল্পী তার নাম খোদাই করে রেখেছেন সফেদ মার্বেলে, হাতুড়ি-ছেনি দিয়ে, কালের করাল গ্রাস থেকে অমর, অক্ষয়, অব্যয় করে। আর মেরীর আলখেল্লার কাপড়ে বাতাসের তৈরি ভাজ দেখে ভুলেই যেতে হয় এটা পাথরের ভাস্কর্য, মোম দিয়ে বানানো বলে ভ্রম হয়! আরও কাছ থেকে দেখার ইচ্ছে ছিল শৈশবেই ভবেশ রায়ের বই পড়ে জানা এই অসীম স্নিগ্ধ ও অনন্য সুন্দর ভাস্কর্যটিকে, কিন্তু তা হবার জো নেই। কারণ, কয়েক দশক আগে এক বিকৃতমস্তিস্ক ধর্মান্ধ নিজেকে যীশু দাবি করে মেরীর মূর্তিতে হাতুড়ির আঘাত হেনে খানিকটা ক্ষতি সাধনে সক্ষম হয়! এর পরপরই পিয়েতার স্থান হয় বুলেটপ্রুফ কাঁচের পিছনে, দর্শনার্থীদের থেকে বেশ কয়েক মিটার দূরে।
পিয়েতা দর্শনের অপূর্ব সুখানুভূতি নিয়ে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার মূল দরজায় দিয়ে বাহিরে আসা হল, সারাদিনের অবিরাম হাঁটাহাঁটির পর খানিকটে বিশ্রামের আশায় দাঁড়ালাম এর বাধানো সিঁড়িতে। তখনও হাজার পর্যটকের আনাগোনা চারিপাশে, সামনেই বার্নিনির বিশাল চত্বর, ক্যালিগুলার ওবেলিস্ক। আরও দূরে সূর্যদেব ডুবুডুবু করছে পশ্চিম দিগন্তে, তারই খানিকটা কমলা আভা ভ্যাটিকান থেকে যেয়ে পড়েছে টিবেরের জলধারায়। এমন শান্ত স্নিগ্ধ নয়নমনোহর মুগ্ধতা নিয়েই বিদায় নিল জীবনের এক অসাধারণ স্মৃতিময় দিন, মনের মানসপটে তখনও চিরস্থায়ী ভাবে জ্বলজ্বল করছে সিস্টেইন চ্যাপেল ও অন্যান্য অমর শিল্পকর্মগুলো।
মন্তব্য
ফরমালিন না, আপনাকে চোবাতে অন্য কিছু লাগবে...
আজ্ঞে, যদি সোমরসে ডোবাতে চান, তাহলে আর কি করে অপছন্দ করি বলুন!
facebook
হেহ হেহ রসটা যদি সত্যি সোমরস হয়, তাইলে ডুবানোর আগে দুই এক ঢোক...এদিক ওদিক...
তা আবার বলতে ! আকন্ঠ!
facebook
চলে যাচ্ছিলাম, আপনার পোস্ট দেখে আরো দশমিনিট সময় দিলাম। এবং সময় দেয়া সার্থক। এত জায়গায় ঘুরেন কীভাবে?
অনেক অনেক ধন্যবাদ। সময়ের মতো অমূল্য জিনিসকে যদি সার্থক করে তুলতে পারে আমার সামান্য লেখা, এর চেয়ে বড় আর কি হতে পারে।
facebook
ভাই আপনে থাকেন কই? আপনার লেখা পইড়া তো কিছুই বুঝি না, কয় দিন পরপর দেখি একেক জায়গার কাহিনী।
আর, আপনার লেখা যথারীতি অনেক ভালো লেগেছে। আপনের মতো হইতে মঞ্চায়!
আপাতত আছিরে ভাই হেলিসিংকিতে। বিভিন্ন সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখি আর কি, কোনটা গত সপ্তাহের, কোনটা বছর কয়েক আগের।
আমার মত হবার দরকার নাই, মা সুখী হবে না। মা কে অসুখী করে হতেই চান ! তাইলে আর কি, দলে আসেন!
facebook
মন ভরলো না। এতে অবশ্য আপনাকে দোষ দেওয়া যায় না! অসংখ্য ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
পছন্দ হল না , হুমম
facebook
দ্বৈত মন্তব্য। কেটে দ্যান।
আমি ভ্রমণপিপাসু নই খুব একটা। তারপরেও যে দুটো জায়গাতে যাবার আমার প্রবল ইচ্ছা, তাদের একটি এই ভ্যাটিকান সিটি। ...সকলেই এ শহরে গিয়ে সিস্টিন চ্যাপেল আর এঞ্জেলোর পিয়েতা, সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকা দেখতেই যায়- অথচ আমার কাছে মনে হয় শহরটাই একটা মিউজিয়াম !! অলিতে-গলিতে কত দুর্দান্ত ভাস্কর্য। বতিচেল্লি, পেরুজিনো, কোসিমো রেসেল্লি, বার্নিনি...
মজার ব্যাপার হচ্ছে, পোপ জুলিয়াস দা সেকেন্ড যখন মাইকেল এঞ্জেলোকে ছাদে ফ্রেস্কো আকঁবার জন্যে নিযুক্ত করেন- মাইকেল তাতে রাজিই হননি। তিনি পোপের জুড়াজুড়িতে রাজি হয়ে আবার দেখলেন স্কেল আর ডিজাইন মিলছে না। এরপরে তিনি পোপকে বলে একেবারে সেই ক্রিয়েশন অফ ম্যান থেকে শুরু করলেন...
একদিন ঠিক সব ছেঁড়েছুঁড়ে ভ্যাটিকানে চলে যাবো। দেখে নেবেন...
ভ্যাটিকানের তো ফুটবল দল নাই, গিয়া কী করবেন?
হেহে, ঐজন্যেই তো যামু। ফুটবলের টিম আমি খুলুম, বিশ্বকাপের থিকা তো আর ভ্যাটিকান্রে বাদ্দিবার পার্বো না
অথচ আমার কাছে মনে হয় শহরটাই একটা মিউজিয়াম !!
অবশ্যই, গোটা শহরই জাদুঘর! তাইতো লিখলাম।
ফুটবল দল খোলার চিন্তাটা দারুণ, কিন্তু শুধু ব্যাটা রেফারি যদি ক্যাথলিক হয় তাহলে কাপ ঠেকাই কে ! না হলে খবর আছে---
facebook
অসম্ভব সুন্দর
facebook
আপনার মাথা থেকে হ্যারিপটার স্টাইলে মেমরিগুলো বার করে আনতে হবে। তারপর সেগুলো ঘরে বসে দেখব আমরা।
ভ্যাটিকানের শিল্পসৌন্দর্য অবশ্যই লোভনীয়। কিন্তু তাতে এখন যে শিশুকামী-পৃষ্ঠপোষকরা বসে রয়েছে, তাদেরকে ওখান থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া প্রয়োজন। এরাই একসময় হিটলারকে এনডোর্স করেছিল, ইনকুইজিশন করিয়েছিল... এদের পাপের অন্ত নেই।
ওরে দাদারে, মাথা দিমু না, মেমরি তো অনেক পরের কথা!! কি ফিচেল আইডিয়া !
শিশুকামী-পৃষ্ঠপোষকরা শুধু ঘাড় ধরে বাহির না, তাদের এত দিনের অন্যায়ের ন্যায্য শাস্তি দিয়ে চিরতরে বাহির করে গোটা দেশটাকেই জাদুঘর করা উচিত।
facebook
Lucky you!
হিংসায় জ্বলে পুড়ে খাক্ হয়ে গেলাম। কিন্তু পোস্ট দারুন ভাল লেগেছে
যাহ্, হিংসা কিসের !!
facebook
হিংসার কারন একটা না; দুইটা। একা একা এত্ত এত্ত দেশ ঘুরে বেড়ান মনের সুখে! আবার কি সুন্দর করে, মনের মাধুরী মিশিয়ে বর্ণনাও করেন!!
আচ্ছা ! আর এত ঝামেলা করে ছবি তুলি , তার কোন দাম নেই !! দাঁড়ান পরের পোষ্ট ছবি ছাড়া দিতে হবে একা একা সবসময়ই ঘুরি না, যেমন পরের ভ্রমণগুলোতে বন্ধুসহই পথ চলব
facebook
'এই' হবে নাকি 'এক' হবে?
মনে হচ্ছে কাজটা ভবেশ রায় করেছেন।
ধন্যবাদ আপনের ফিডব্যাকের জন্য। পরের টা এক হবে, টাইপো! দুঃখিত!
facebook
যথারীতি অসাধারণ, দাদা!!!! স্বপ্নিল শহরে!!!
_____________________
Give Her Freedom!
শহরটা স্বপ্নিলই হত , ঐ জোব্বাওয়ালাগুলোকেও জাদুঘরের অংশ করতে পারলে।
facebook
ওণু, অ্যাপোলো ব্যটার আরো বড় ছবি দিতে পারলা না মিয়া? কিযে কর।
ঠাকুর-দেবতা নিয়ে মস্করা করেন না দাদা! অভিশাপ লাগবো। তবে অ্যাপোলোর উপর আমার টান টা একটু বেশী, তার মূর্তি থেকেই আমার অতি প্রিয় বুদ্ধ দেবের মূর্তি গড়ার ধারণা এসেছে কিনা ( যদিও এই ধারণাটা আমার অপছন্দের, এবং বুদ্ধদেবও নিশ্চয়ই অপছন্দ করতেন)
facebook
আবার কয়, অলরেডি এমন অভিশাপ লাগছে যে জঙ্গলে মঙ্গল করতেছি। আর ভয় কি। কিন্তু অ্যাপোলোর উপর তোমার টান ঠিক স্বাস্থ সম্মত নয়, তাছাড়া এইটা আমাদের আপামর বোনসাধারনের কথা চিন্তা করে ছাড় দাও না মিয়া।
হুমম ভেনাসের উপর দাবী রাইখেন না , তয়লেই অয়ব। কিলিমাঞ্জারোর কই হল, গ্রুপে ৫ জন আছে, আর আপনার ২ জন, দেখতে থাকেন, বেশী লোক হলে সস্তাও পড়ে
facebook
কি যে বল, আবার ভেনাস? নেড়া কয়বার বেলতলায় যায়? কিলিমাঞ্জারো আছে পাইপলাইনে, ভুলি নাই (তোমার এপোলোর কসম )
বৌদি কি এতই দৌড়ের উপর রাখছে যে ভেনাসও বাদ ! বুদ্ধিমান ন্যাড়া তো বেলতলায় ২ বার যায় জানতাম!
facebook
আরে ভাই বিয়ার আগ পর্যন্ত একটা ভেনাস নিয়াই ছিলাম, এখন সেই ভেনাস ঘরে আইসা পড়ছে (মতান্তরে আমিই ভেনাসের ঘরে যাইয়া ঢুকছি)। বেল/নারকেল কোন পতনে আর ভয় পাই না, হেল্মেট আছে হেহ হেহ হে, তয় নিস্প্রয়োজন হেতু তলায় ঘুরাঘুরি বাদ।
আসতেছেন না আগামী বছর? আসেন। অন্তত আপনার একটা আঙুল কেটে রেখে দেবো!
আপনার সঙ্গে ভ্যাটিক্যান ঘুরে খুব ভাল্লাগলো। আপনার লেখার প্রশংসা করা তো সাধারণ ব্যপার। একটা কথা বলতে চাই কেবল। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, আপনি এমন কিছু উপমা/শব্দ ব্যাবহার করেন যেগুলো বহুব্যবহারে জীর্ণ! পড়তে ভালো লাগে না। আপনার লেখায় ওই শব্দগুলো চাঁদের কলঙ্কের মতো। পরেরবার ভেবে দেখতে পারেন
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আর আসি, আমি পাগল না প্যান্টলুণ!!
আঙ্গুল, লাঙ্গুল কোনটাই হারাতে রাজি নয়। যান, থুরিনগনে যাব না, ভাবছি ড্রেসডেন যাব। অনেক দিন আগে শেষবার গেছি, সেখান থেকে ফেরী করে হামবুর্গ।
আপনার কথা ঠিক, কিছু শব্দ আমার এত প্রিয় হয়ত যে বারংবার আসে, সেই সাথে সীমিত শব্দভাণ্ডারের ব্যাপারটা আর কথতব্য নয়।
facebook
ভাইরে আপনেরে বলার আর কিছু নাই।
দিয়া ভাগি।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
আরে কই ভাগেন ! দাঁড়ান এট্টূ এক সাথেই ভাগি!
facebook
ওরে ওরে!!
facebook
পোপ হিসেবে নিয়োগটা পেয়ে নিই, তারপর যাচ্ছি ভ্যাটিকান ঘুরতে। অন্যদের মত আপনাকে হিংসা করলাম না, কারণ আমার পর্যটন প্ল্যান হলো আমাদের গ্যালাক্সি জুড়ে
দারুণ!! হয়ে যাবে ইন্টার গ্যালাক্সি !! কিন্তু পোপ হবার দরকারটা কি, ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যা বলতে হবে সবসময়, সেই সাথে লোক ঠকানো, চিরকুমার মনে নিস্কাম থাকার ব্যাপারটা তো আছেই অন্তত সবার সামনে
facebook
আপনি মানুষটা বেশি সুবিধার নন তারেক মিয়া। অত্ত ঘুরেন ক্যান ? আমার তো হিংসে হয়।
আর পোস্ট নিয়া কি কমু। ফা-ন-টা-স-টি-ক অইছে ভাই।
আর আমিতো ছবি পাগল।
ডাকঘর | ছবিঘর
ঘুর ঘুর করতে ভাল লাগে যে ! কি আর করি, একটাই জীবন ! একটু ঘুরলামই না হয় !
facebook
এতো সব নেংটু মূর্তি আর ছবি দেখে লজ্জা পাইছি ... । অ্যাপোলো এতো বড় দেবতা কিন্তু একটা লুঙ্গী কেনার মতো পয়সা নাই, আফসোস।
হ ( )
দেবতা ছোট বড় হয়ে তো লাভ নাই, কাপড় পড়বে না অদৃশ্য থাকবে তা তো ভক্তকূলের উপর নির্ভর! হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের নেশা বইটার সংলাপ খেয়াল আছে না- পূজারীর বিশ্বাসেই দেবতা বেঁচে থাকে !
facebook
আপনি দেখি সচলবতুতা! দারুণ ঘুরাঘুরির উপরেই থাকেন মজা লাগে সেসব পড়তে। অবশ্য, আমিও কম ঘুরিনা। শুধু আপনার মত সময়ে ক্যামেরার ক্লিকটা করে উঠতে পারিনা। স্বপ্নে কী আর ক্যামেরা থাকে বলেন
অনার্যদায়ের সাথে একমত। একটু ভেবে দেখবেন। আর 'বাহির' শব্দটা আপনি একটু বেশিই ব্যবহার করেন যেন। চলতি কথার মাঝে এই শব্দটা একটু ছন্দপতন ঘটায়। বিনীত অনুরোধ থাকলো এর প্রতি যত্নশীল হবার। ছবি আর বর্ণনায়
স্বপ্ন দেখায় মূল কথা। একসময় সেটাই বাস্তব হয়ে দাড়ায়। আসলে ঐ পুচকে দেশে এত বেশী ভিতর বাহির করতে হয়েছে, বাহির কলমের বাহির হয়েছে অনেক বার!
facebook
অস্বাধারন জায়গা, সাথে অস্বাধারন বর্ণনা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
facebook
সিস্তিন চ্যাপেল এর ছবি গুলো কি চিকনে তোলা? ওখানেতো ছবি তোলা নিষেধ ছিল। মানে আমি যখন গিেসিলাম তখন, এ বছরের শুরুর দিকে। সেন্ট পিটার বাসিলিকার গম্বুজের চুড়ায়ে ওঠা যায়, টিকিট করে অবশ্য। অসাধারণ! ওখান থেকে বাসিলিকার ভেতরে নিচে তাকালে বোঝা যায় বাসিলিকাটা কত উচু।
Statue of Liberty পুরাপুরি এটে যাবে। মাথা ছাদ ছুবেনা।
সারফিফ
আর বলতে, চামে চিকনে! ব্যাটারা বলে যাচ্ছে নো ফোতো, আমার মত হাজার পাবলিক কোনমতে তুলে ফেলছে। পরিপাটি জুতোর ফিতে খামোকাই খুলে বাঁধতে যেয়ে এইটুকু পেরেছি
facebook
আপনি কিন্তু ইদানিং মিষ্টি ভেতর ট্যাবলেট গুলে দিচ্ছেন। ভ্রমণের সাথে ইতিহাস।
বরাবরের মতোই চমৎকার
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ইদানীং ইতিহাস নিয়ে একটু লেখা বেশী হচ্ছে, আমার আবার জাদুঘর নিয়ে লিখতে খুব ভাল লাগে। তবে পরের পোষ্ট অন্য কিছু নিয়ে। ভাল লাগার জন্য ধন্যবাদ
facebook
দারুণ দারুণ
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
ধন্যবাদ দমুদি!!
facebook
হিংসায় জর্জরিত হয়ে গেলাম!
কই, সিক্স প্যাক তো দেখি ঠিক-ই আছে !
facebook
facebook
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
facebook
নাহ, এই ছেলেকে নিয়ে আর পারা গেলো না...আর কতো?
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
কেবল তো শুরু করলাম !!!
facebook
ভাই, আপনে আমার মাথা খাইছেন...কিউবা'র ভ্রমণ বৃত্তান্ত পইড়া কিউবা ঘুরার বন্দোবস্ত করতেছি, আর আজকে আপনি ভ্যাটিকান দিয়া মাথা আউলাইয়া দিছেন...আমি বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, ছাত্রমানুষ। এত্ত টাকা কই পাই...আপনার লেখা সেরাম হইছে...........একটা অনুরোধ, যত্ত জায়গায় গেছেন আর ছবি তুলছেন নিদেনপক্ষে একটা ই-বুক তো বানাইতে পারেন...তাইলে আমার মতো অনেকের পইড়াও সুখ, জায়গায় যাওনের নিয়ত থাকলে অভিজ্ঞতার ঝাপি (আপনারটা) খুইলা নেয়া যাইব....আচ্ছা ভ্রমন কাহিনীগুলার সাথে কি খরচের বৃত্তান্ত দেয়া যায় না..................................................লেখায়
আরে ভাই, আমি তো ঠিক পথেই বলছি, হাভানা যাবার পথে রোমে ২ দিনের ট্রানজিট, ১ দিন রোম, আরেক দিন ভ্যাটিকান !!
বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, ছাত্রমানুষ- সে তো আমিও রে ভাই। এখন পর্যন্ত ছাত্রই আছি, থাকতেও চাই অনেক অনেক বছর হয়ত শেষ পর্যন্ত।
আসলে লেখায় বেশি আর্থিক ব্যাপারটা আনলে কেমন যেন কেঠো কেঠো হয়ে যায়, আমার ভাল লাগে না।
ই-বুক টা ভাল বলেছেন, বই প্রকাশের কথাও চলছে, দেখা যাক, জানাব। ভালো থাকুন।
facebook
আপনার ভিসার জন্য কী পরিমাণ দৌড়াইতে হয় সেইটা ভাবতেছি...
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
সমগ্র ইউরোপ পাঁচ টন!
এদিক দিয়ে বেঁচে গেছেন উনি।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ইউরোপে তো এখন খুব সুবিধে, অধিকাংশ দেশ এক ভিসাতেই ঘোরা যায়, তবে সমস্যাই আছি পরের বড় ট্যুর টা নিয়ে, এতগুলো ল্যাটিন দেশের ভিসা জোগাড়ের চিন্তাতেই কালো ঘাম ছুটে যাচ্ছে, মূল কারণ, বিড়াল তাজা মাছ দেখলে যেমন লোভাতুর দৃষ্টি দেয়, সবুজ পাসপোর্ট দেখলেই ভিনদেশী অ্যাম্বাসী আর ইমিগ্রেশনের লোকেরা তার চেয়ে কোন অংশে কম বিমাতাসুলভ আচরণ করে না
facebook
হিংসায় জ্বলে গেলাম !!! আমিও যেতে চাই ।
চলে আসেন।।
facebook
facebook
ধুর ব্যাটা বদ! দ্যাশে আসে খালি, কল্লা নামায় দিমু! :|
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আবদার নাকি, কল্লা নামানো এত সহজ! বদরামো আর বাঁদরামোর দেখছেন টা কি। আর সাড়ে ৩ মাস যাক শুধু, কত ভুট্টায় কত দানা সুদে আসলে বোঝায়ে দিব--
facebook
উই উইল ছিঃ!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আমি শিল্পবোদ্ধা নই তারপরও লেখা এবং ছবি, দুটোতেই
ভ্যাটিকান সম্পর্কে আমার আগ্রহ অনেক দিনের। পরিচিত এক ভদ্রলোক একবার একটা এ্যাসাইনমেন্টে পোপের ফটোগ্রাফার ছিলেন। তার কাছে থেকে অনেক কিছু শুনেছি বিশেষ করে পোপের নিরাপত্তাব্যবস্থা। জটিল অবস্থা।
দূর্জনে বলে উনি নাকি দুনিয়ার সবথেকে বড়ো চাঁদাবাজ।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
লেখাগুলা খুব খিয়াল কইরা!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আর বলতে
facebook
তাতো বটেই। ডাকাতও বলতে পারেন, চিরকুমার ডাকাত!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
facebook
খুব খুব ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
facebook
আপনার পোস্টে এখন থেকে আর মন্তব্য করবোনা, তবে নিশ্চিত জানবেন পড়েছি! রাফায়েল গ্যালারী বুকের ভেতর হাতুড়ীপেটা করলো আর পিয়েতার ছবিটি অসাধারন এসেছে আপনার ক্যামেরায়, এত সুন্দর আর কোথাও পাইনি আমি। বর্জিয়া রুমে যান নাই? মারিও পুজোর ‘দ্য ফ্যামিলি’ বইটাতে এদের সব ঘটনা পড়েছিলাম, এখনও মনে আছে। উড়ন্তঘুড়ি ভাই, ভালো থাকবেন
যাওয়া হয়েছে পলকের জন্য! আসলে এত ভিড় আর এত কিছু দেখার, সবটা উল্লেখ করতে পারিনি, তাহলে পোষ্ট বেশী বড় হয়ে যায়। দাঁড়ান, এরপরে মেডিচি চ্যাপেল নিয়ে লেখব।
facebook
দুইটা জিনিস মনে পড়লো -
১। মাইকেল, লিওনার্দো, রাফায়েল-এর যত শিল্পই চুরি করা যাক না কেন, এই যে ফ্রেসকো আর ছাতের শিল্পকর্ম, এইগুলান চুরি করতে গেলে কালাঘাম ছুটে যাবে!
২। সুইস গার্ডদের পোশাক দেখলেই আমার মনে হয় মাইকেলের রসবোধ প্রখর ছিল!
আর বাকিটা, মানে লেখা, ছবি, ঘোরাঘুরি নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নাই।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
তাতো বটেই, মাইকেল এঞ্জেলো ছিলেন সে যুগের অন্যতম সেরা রোমান্টিক কবি। তার কিছু কাব্য পড়ে বেশ ভাল লেগেছিল, আর কবিরা রসিক হবেনা তো কি রাজনীতিকরা হবে !
কথা সত্য, চুরি করার চেয়ে এইখানে বাস করাই ভাল !
facebook
অদ্ভুত সুন্দর।আরো কয়েকটা ছবি দিতে পারতেন!
ছবিতো দিতে ইচ্ছে করে অনেক, কিন্তু ফ্লিকার বাগড়া দেয়!
facebook
আহ পিয়েতা! কবে দেখুম সামনাসামনি?
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
এই কাজটা আসলেই অদ্ভুত মায়াবী। একটা ভাল ভিডিও -ও করতে পারছিলাম কাঁচের পিছন থেকেই, একসময় আপলোড করতে হবে।
facebook
হাহ্ হা! এই বার বিশ্ব-পর্যটক মশাইয়ের সাথে কমন পড়েছে! ওখানে আমিও গিয়েছিলাম। ২০০৬ সালে। প্রমাণ স্বরূপ ফটুকও তুলে রেখেছি। নাতি-পুতিকে দেখাতে হবে না?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
facebook
ইয়ে মাইনে, ওস্তাদ আপ্নের হেল্পার সেল্পার ( ক্যামরা ধরা, ঘোড়ায় বসলে আপ্নেরে ধরা ) দরকার পড়লে এট্টু ডাক দিয়েন।
আরে কি কথা! বন্ধুদের সাথে ভ্রমণের মজাই আলাদা, চলে আসেন, সীট খালি, সীট খালি--
facebook
দুর্দান্ত অণু ভাই ।
জোব্বাওলা বদ লোকদের শহর হলেও, ভ্যাটিকেনের ইতিহাস সত্যিই ঈশ্বর্যমন্ডিত। কোথায় যেনো পড়েছিলাম ভ্যাটিকেন সিক্রেট আর্কাইভে গ্যালিলিওর লেখা ও তাঁকে দন্ডিত করার কাগজপত্র এখনো আছে। দেখতে পারলে বেশ হতো, কিন্তু ব্যাটারা তো ওখানে শুনেছি ঢুকতে দেয় না।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
ঠিকই শুনেছেন। বলা যায় না, হয়ত লিওনার্দোর ডায়েরিও থাকতে পারে। ব্যাটারা ফাজিল আর ভীতু, নাহলে জ্ঞান কেউ এভাবে রুদ্ধদ্বার করে রাখে।
facebook
আপনি শুধু তৃষ্ণা জাগিয়ে দেন, ভাইয়া।
কি করি কন ! সচলে তৃষ্ণা নিবারণের কোন ইমো নাই!
facebook
নতুন মন্তব্য করুন