'লেখক' নিয়ে লেখা : হুমায়ূন আহমেদ

মর্ম এর ছবি
লিখেছেন মর্ম [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৫/০৯/২০১১ - ৩:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অটোগ্রাফ জোগাড়ের নেশা আমাদের অনেকেরই আছে- সে আলাদা করে রাখা অটোগ্রাফ খাতায় হোক, হাতের কাছে পাওয়া চিরকুটে হোক, চিঠিতে হোক বা বইতে। মনের মধ্যে ‘আকাশের তারা’ হয়ে থাকা একটা মানুষের ‘চিহ্ন’ যে কত মূল্যবান সেটা সে-ই জানে ভিড় ঠেলে উত্তেজনায় টগবগ করতে করতে ঐ ‘চিহ্ন’ যে কখনো না কখনো জোগাড় করে এনেছে!

অটোগ্রাফ পেতে তাই ভাল লাগে, খুব ভাল। আর সে অটোগ্রাফ যখন নিজে এসে হাজির হয় তখন?! খুব একটা হয় না বোধ হয় এরকম! আমার বেলায় কিন্তু হয়েছিল!

স্কুলে পড়ি, প্রাইমারি তখনো পেরোইনি, বয়সের হিসেবে দুই অংকের কোঠায় পৌঁছাতে তখনো একটু বাকি আছে। ছোট্ট, খুব সুন্দর একটা শহরে থাকি- যে শহরের খুব বিখ্যাত একটা নদী আছে, যে নদীর নামে একটা গ্যাসফিল্ড-ও আছে- তিতাস। শহরের নাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

এপ্রিল মাস চলছে- ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল’ প্রাঙ্গণে চলছে বইমেলা- এক মাস ধরে মেলা চলার কথা, মোটামোটি জমজমাট মেলা, বাইরে নাগরদোলা, হাতে তৈরী নানান খেলনার দোকান, খাবারের দোকান, চানাচুর, মুড়কি, ঝালমুড়ি, আর গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলেই সারি সারি স্টল, কত কত বই- ঢাকার বইমেলায় যে বই নেই তা দিব্যি এখানে হাজির- নতুন, পুরোন- সব।

স্কুল খোলা ছিল- দুপুরে বাসায় ফিরে একদিন খবর পেলাম খুব খুব বিখ্যাত একজন লেখক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসেছেন বইমেলায় অতিথি হয়ে। বিকালের দিকে একদম মাথায়-আকাশ-ভেঙ্গে-পড়া খবর পেলাম- তিনি আমাদেরই বাসায় হাজিরা দিয়ে যাবেন, আমার নানার সাথে দেখা করবেন বলে!

প্রথমে বিশ্বাস হতে চায়নি, হল- যখন সত্যিই তিনি এলেন সন্ধ্যার পরপর। সাথে আরো অনেকজন, বাসার ড্রইংরুমভর্তি মানুষ, সবাই এসেছে উনার সাথে। বড়রা আজীবন বাড়তি সুযোগ নেয়, এর ব্যতিক্রম হল না- ওঁরাই কেবল কথা বলছে- আমরা দুয়েকজন পর্দার ফাঁক দিয়ে উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছি, অবাক চোখে দেখছি মানুষটাকে- কোন বাড়তি কিছু তো না! মানুষের মতই হাসেন, কথা বলেন, চা-বিস্কুট খান- আর হ্যাঁ, সিগারেটও খান- একটার পর একটা! কী আশ্চর্য!

সুযোগ আমাদেরও এলো- ড্রয়িংরুমের এক কোনায় সোফাসেটের পাশে একটা ক্যাম্পখাট, ওতেই পায়ের ওপর পা তুলে তিনি বসে- পেছনে খোলা জানালা, গেট দিয়ে মাঝে মাঝে একজন দুজন লোক ঢুকে জানালায় এসে এক ঝলক দেখে যাচ্ছে তাঁকে- ওই খাটেই বসা গেলো- তাঁর বেশ কাছটিতেই, পিঠে তাঁর হাত- “কেমন আছেন? ভাল আছেন” পর্ব শেষ হতেই বিপত্তি- আর তো কথা পাই না খুঁজে!

একটু ভেবে সাহস করে প্রশ্ন করা গেল- “আপনি ছোটদের জন্য আর লেখেন না কেন?”- তিনি তখন কেবল নাটক লেখেন, বাসার সবাই সে নাটক দেখে হাসতে হাসতে কাঁদে আর কাঁদতে কাঁদতে হাসে- আর চোখ ভেঙে ঘুম আসায় আমি তখন অন্য জগতে হারাই, কাজেই নাটকে যে অত কী আছে তা তখনো বুঝে উঠার ফুরসত পাইনি- তিনি কিন্তু আপত্তি জানালেন, “না লিখি তো! ‘সেই ছেলেটা’ পড়েছো?!”

একটু থমকে যেতে হল- বোতল ভূতের কান্ডকীর্তি আমার অজানা নেই, অমন একটা ভূত কোনমতে পাওয়া যায় কি না সেটাও ভেবে দেখেছি- বাসাভর্তি হোমিওপ্যাথি ঔষধের শিশি, কাজেই ভূত রাখার জায়গার অভাব নেই কোন- পিপলী বেগমের সাথে পরিচয় হয়ে গেছে- ঝেং এর বাচ্চা পেলে কেমন হত সেটাও চিন্তা করে রাখা আছে- পড়ুয়া ভূত গোবরচন্দ্রকেও বেশ চিনি- বড়চাচা, অরু আপা, ইমু, টগর সবাইকেই তো চিনি- কিন্তু ‘সেই ছেলেটা’ কে?! “উহহহু!”- জানাতে হল লাজে ডুবে। তিনি হাসলেন- “নতুন এসেছে, পড়ে দেখো!”

কে জেনো এর মধ্যে মনে করিয়ে দিলো- “অটোগ্রাফ লাগবে না তোমার?!” “হায়! খোদা! একটুও যদি মনে থাকে কিছু!”- বইতে যে উনার অটোগ্রাফ নিয়ে রাখা যায় এটা তো মাথাতেও আসেনি! পড়িমরি ছুটতে হল ভেতরের রুমে- বই তো সব ওখানে, ড্রয়িং রুমে দুই দুইটা বিশাল আলমারি- আমার বই তো ওখানে রাখিনি!

ফিরে এলাম কিন্তু বেশ আনন্দ নিয়ে- হাতে না হলেও তাঁর খান সাতেক বই- সে বয়সে সেটা নেহায়েত কম না! একটা একটা করে হাতে নেন আর রাখেন কিন্তু অটোগ্রাফ দেয়ার নামটি নেই- তাকাতেই বললেন, “সবাই তো দেখি লিখেই দিয়েছে বইতে! আমি কেন লিখব?!” মহা চিন্তা আর টেনশন- “হায়! বুঝি অটোগ্রাফ নেয়া হল না আর!”- বইসমেত ছুটলাম ভেতরে- ফিরে এলাম আবার- ওগুলো হাতে নিয়েই- আর যে বই নেই! মলাটের পর এক পাতা উল্টে ফাঁকা পাতাটা তাঁকে দেখিয়ে দিলাম, “এটা তো খালি! এখানে লিখে দেন!”

তিনি আবার হাতে তুলে নিলেন বই, একটা একটা করে সব ক’টায় লিখে দিলেন কিছু না কিছু- আমার সবচাইতে পছন্দের বইটায়- 'বোতল ভূত'-এর মলাট পেরিয়ে লিখলেন- “মর্মকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা”। নীচে তাঁর সই- আর তারিখ- ২০/০৪/৯৫। 'নুহাশ এবং আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ'-এ আবার মর্ম শব্দটা কাটা, মনে হয় একমাত্র ছোট ভাইটাকে খুশি করতেই- ওটাতে লেখা, "বর্ণ, অনেক শুভেচ্ছা!"

কত বছর হয়ে গেল- এখনো বেশ মনে করতে পারছি- অনেক দিন ধরে সুযোগ পেলে বলতে ছাড়িনি- “হুমায়ূন আহমেদ আমাকে বাসায় এসে অটোগ্রাফ দিয়ে গেছেন!” অটোগ্রাফ অনেকেই নেয়, পায় আর ক’জন!

খবর পেলাম, প্রিয় এই লেখক অসুস্থ। মন খারাপ হল খুব।

এই মানুষটির লেখা পড়ে কতশতবার হেসেছি তার হিসেব রাখিনি কোন, হাসতে হাসতেই আবার কোন কথায় মন খারাপ করেছি কতবার তাও গুনে রাখিনি, এই মানুষটার লেখা পড়ে কখনো কখনো রেগে উঠেছি কারো উপর, কখনো কখনো কাউকে চিনে নিয়েছি নতুন করে। এই মানুষটার লেখা পড়ে মন্ত্রমুগ্ধের মত বসে থেকেছি ঘন্টার পর ঘন্টা, এক বসায় কখনো কখনো তাঁর চার-পাঁচটা বই হাপিশ করে দিয়েছি, ক্লান্তি লাগে নাই একটুও- বিছানায় আধশোয়া হয়ে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে খেতে থাকা গুড়ো দুধ আর চিনির গুড়ো বই থেকে ঝেড়ে ফেলে বসে পরেছি আরেকটা নতুন বই নিয়ে। পুরোন বইতেই বা কি ক্ষতি? তাতেও সেই নতুনেরই তো স্বাদ!

গল্পের মানুষগুলোকে নিয়ে ভাবতে গিয়ে অবাক হয়ে গেছি, “আরে! এ কে তো চিনি!” রাস্তায় চলাফেরার সময় হুটহাট কাউকে চলে যেতে দেখে আনমনা হয়ে ভাবতে বসেছি- “এঁর কথাই তো পড়লাম!” বাসায় কোন একটা কথা হচ্ছে- আমি চুপচাপ অপেক্ষা করছি- পরের কথাটা কী হবে তা আমার জানা- জানা এর পরের সমবেত হাসির অংশটুকুও।

মানুষ বদলে যায়, টের পাওয়া যায় না সহজে। লেখক বদলে গেলে যায়।

সেই হুমায়ূন আহমেদ আর নেই। এখনো লেখেন তিনি, পড়তে ইচ্ছা হয় ; ভাল-হলেও-হতে-পারে এ আশাটুকু যায় না কোনমতেই, হাতে এলে তাই তাঁর বই এখনো পড়তেই হয়।

তিনি ‘কে কথা কয়’ লিখেন, ‘বলপয়েন্ট’ লিখেন, ‘ফাউন্টেনপেন’ লিখেন- মনে হয় সেই পুরনো, অনেক পছন্দের লেখকটিকে আবার ফিরে পেয়েছি।

তিনি ‘হিমু মামা’ লিখেন, আর আক্ষেপ থাকে না- মনে হয় ঠিক আছে, মাঝে যদি ‘পাপ’ হয়ে থাকে তো এবার নির্ঘাৎ ‘পূণ্য’ হল- পাপে পূণ্যে কাটাকাটি!

বাংলা গল্প-উপন্যাস লেখায় নতুন যুগ নিয়ে আসা কলমের জাদুকরের জন্য শ্রদ্ধা, তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন, আক্ষেপ কাটানোর মত আরো কিছু লেখা আমাদের উপহার দিন এই কামনা।

নোভা, শীলা, বিপাশা, নুহাশের জন্য লিখতেন তিনি, আমরা আনন্দে ভাসতাম। এখন না হয় নিশাদ আর নিনিতের জন্যই লিখলেন, কী এমন ক্ষতি? আরেকটা ‘বোতল ভূত’ হাতে পেলেই আমি খুশি!


মন্তব্য

আয়নামতি এর ছবি

ম্যাঁও

মিলু এর ছবি

আয়নামতি আপা এইসব কি শুরু করলেন? ইয়ে, মানে...

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আপনার মন্তব্যের অর্থ জানতে চাই।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মিলু এর ছবি

মানে হঠাৎ করে দেখছি আয়নামতি আপা অনেক জায়গাতেই চুপচাপ বিড়াল রেখে যাচ্ছেন। তাই একটু নির্দোষ কৌতূহল জাগল। ভুল কিছু বলে ফেলেছি নাকি? ইয়ে, মানে...

আশরাফ এর ছবি

আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এই লেখার মাধ্যমে হুমায়ুন আহমেদের অসুস্থতায় আপনার উদ্বেগের প্রকাশ দেখে। গতকাল সমকাল পত্রিকায় উনার ক্যান্সারের খবর পড়ে খুব দমে গিয়েছিলাম। আরো দমে গিয়েছিলাম ব্লগে বা ফেসবুকে এটা নিয়ে কারো কোন প্রতিক্রিয়া না দেখায়। আমাদের প্রজন্মে এমন পাঠক বোধহয় হাতেগোনা যাকে এই লেখকের লেখা কখনো হাসায়নি অথবা কাঁদায়নি। ইদানীং উনার লেখার মান কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে...কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় তাঁর মাপের লেখক ক'জন আছেন এটা নিয়ে বোধহয় কারোরই দ্বিমত নেই। অন্তরের অন্তঃস্থল হতে উনার সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

সচলায়তনে এ নিয়ে লেখা এসেছিল অনেক আগেই। কিন্তু প্রকাশযোগ্যতার অভাবে প্রকাশিত হয়নি।

pathok(sam) এর ছবি

মন খারাপ

ছেড়া পাতা এর ছবি

সহমত।

মর্ম এর ছবি

আমাদের প্রজন্মে এমন পাঠক বোধহয় হাতেগোনা যাকে এই লেখকের লেখা কখনো হাসায়নি অথবা কাঁদায়নি।

একমত।

হুমায়ূন আহমেদ থাকবেন না একসময়, এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা স্বীকার করতে চাই বা না চাই, হুমায়ূন ঘরানার লেখনী আরো অনেক অনেক দিন বেঁচে থাকবে নিশ্চিতভাবে। একদম সহজ সরল ঘরোয়া ভাষায় গল্প বলে যাওয়ার যে স্টাইল হুমায়ূন জনপ্রিয় করেছেন, এর প্রভাব কাটানো মোটামোটি অসম্ভব।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

আয়নামতি এর ছবি

অটোগ্রাফ যোগাড়ের নেশা আমারও ছিলো। একবার, আমার এক দূরের কাজিন কর্মসূত্রে ইন্ডিয়া যাবেন শুনে, তাকে আমার অটোগ্রাফ বইটা দিয়েছিলাম, শচীন তেণ্ডুলকারের অটোগ্রাফ এনে দিতে পারবেন এই প্রতিশ্রুতি পেয়ে। ঐ অটোগ্রাফটা পেয়ে, আমি কতদিন আনন্দে ভেসেছিলাম তার হিসেব নেই! পরে জানা গিয়েছিলো ওটা আসলে ভূয়া ছিলো রেগে টং এই রাগে আমার কত্ত সাধের অটোগ্রাফ বুকটা ছিঁড়ে ফেলি। ওটায় আরো অনেকের সাথে হুমায়ূন আহমেদেরও অটোগ্রাফ ছিলো। একটা সময়ে ওঁর খুব ভক্তই ছিলাম। তিনি অসুস্হ্ শুনে খারাপ লাগলো। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। ....লেখাটা ভালো লেগেছে মর্ম চলুক আমি প্রথম মন্তব্য করেছি, এখন আমার পুরস্কার দেন দেঁতো হাসি

অপছন্দনীয় এর ছবি

প্রথম দ্বিতীয়র ব্যাপারটা সিরিয়াস পোস্টগুলো বাদ দিয়ে খালি তুলিদির ইস্কুলবেলা আর উপকথা সিরিজের পোস্টের জন্যই তোলা থাকলে কেমন হয়? হাসি

আয়নামতি এর ছবি

সম্পূর্ণ একমত পছন্দনীয় আপনার সাথে। আসলে পোস্ট না পড়েই হুটোপাটি করেই ইমো দিয়ে বসি। এরপর আর এমনটা হবে না( আর তিনি এতটা অসুস্হ তার কিছুই আমি জানি না রে ভাই!)। পমিজ মন খারাপ

মৃত্যুময় ঈষৎ(Offline) এর ছবি

প্রথম দ্বিতীয়র ব্যাপারটা সিরিয়াস পোস্টগুলো বাদ দিয়ে খালি তুলিদির ইস্কুলবেলা আর উপকথা সিরিজের পোস্টের জন্যই তোলা থাকলে কেমন হয়?

সম্পূর্ণ সহমত পছন্দনীয়দা। সবার প্রতি অনুরোধও রইলো এটা মনে রাখার জন্য।

মর্ম এর ছবি

সিরিয়াস পোস্ট লিখতে চাইনি, হয়ে গেছে মনে হয়! মন খারাপ তবে মন খারাপটুকু পাঠকের কাছে পৌঁছেছে এটা একটা বড় কথা।

আর হ্যাঁ, 'সিরিয়াস' পোস্টকে সিরিয়াস থাকতে দেয়াই বোধ হয় উচিত।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

মর্ম এর ছবি

এই রাগে আমার কত্ত সাধের অটোগ্রাফ বুকটা ছিঁড়ে ফেলি।

আপনার জায়গায় হলে এ আফসোস আমার সমস্ত জীবনেও যেত না! মন খারাপ

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

pathok (sam) এর ছবি

-----কত অভিযোগ তার থেকে যা পাওয়ার কথা ছিল তা না পাওয়া নিয়ে, সাফল্য, প্রসংশাও অনেক – মানুষটার জন্য ভীষন খারাপ লাগছে – উইশ, দ্য নিউজ ইজ নট ট্রু ...

মর্ম এর ছবি

খবরটা মিথ্যা নয় মন খারাপ

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

সজল এর ছবি

এখন তার প্রায় কোন লেখাই পড়তে পারি না, কিন্তু তাই বলে একসময় যে তার কোন বইই মিস করতাম না সেটা মিথ্যা হয়ে যায় না। সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন, এই কামনা রইল।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

মর্ম এর ছবি

এখন তার প্রায় কোন লেখাই পড়তে পারি না, কিন্তু তাই বলে একসময় যে তার কোন বইই মিস করতাম না সেটা মিথ্যা হয়ে যায় না।

চলুক

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

চরম উদাস এর ছবি

আরোগ্য কামনা করছি।

মর্ম এর ছবি

সুস্থ্য হয়ে ফিরে আসুন এই কামনা

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

ahasnat এর ছবি

মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর একটু চিন্তায় পড়লাম। আমার এতোগুলো গল্পবই -হিসাব করলে মোটামুটি ৫০০-৬০০ হবে- এগুলোতো হোস্টেলে নিয়ে যেতে পারব না। বেশিরভাগই অনুবাদ হলেও মোটামুটি ৩৫-৪৫% ডক্টর হুমায়ূন-এর (সবাই উনাকে হুমায়ূন আহমেদ ডাকে, আমার উনাকে ড. হুমায়ূন ডাকতেই বেশি ভালো লাগে। কেমিস্ট্রি সবচেয়ে প্রিয় সাবজেক্ট বলেই হয়তো।)। উনার বই কিছুদিন পর পর না পড়লে পেটের মধ্যে ভুটভাট শব্দ শুরু হয়। পুরনো হোক বা নতুন- কোন অসুবিধা নেই। তাও এক কার্টন বই নিয়ে হোস্টেলে হাজির হলাম। যাই হোক, কলেজে একটা ক্লাব ছিল- প্রতীতি। সাহিত্য-সংস্কৃতি ক্লাব। ক্লাবটা মৃতপ্রায় হলেও বইয়ের কালেকশন আমার চেয়ে খারাপ ছিল না। ওখান থেকেই তখন উনার বই পড়তাম। প্রতীতিতে একদিন কথা উঠল কে কয়টা বই পড়েছে। আমি এরকম আলোচনা থেকে সাধারনত নিজেকে দূরে রাখি। আরে মিয়া, বই কি গুনে গুনে পড়ি নাকি। কিন্তু তখন কোন কারনে আমাকে আলোচনায় অংশ নিতে হলো। তখনই আবিষ্কার করলাম আমার বন্ধুদের মাঝে আমিই সবচেয়ে বেশি বই পড়েছি এবং উনার সবগুলো বই।
প্রিয় লেখকের জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দোয়া রইল।
আপনার জন্যও। এরকম একটা লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
ভালো থাকুন। ড. হুমায়ূন এবং আপনিও।
এ হাসনাত।

মর্ম এর ছবি

শুধুমাত্র হুমায়ূন আহমেদের বই পড়েন এমন পাঠকগোষ্ঠী এখনও মনে হয় খুব একটা ছোট নয়। এ ভালবাসা আর আস্থাটুকু হুমায়ূন অর্জন করেছেন, তবে অন্যান্যদের লেখা পড়ার পর সমসাময়িকদের সাথে তাঁর লেখার তুলনা করে তাকে কিছু জায়গায় বেশ অনেকটা এগিয়ে থাকতে দেখার যে আনন্দ আছে এটা বোধ হয় ঐ পাঠকরা পান না- আমার মনে হয় হুমায়ূন আহমেদকে ভালমত বোঝার জন্য হলেও আর সবার লেখা পড়াটা খুব জরুরী।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

রুমঝুম ১ এর ছবি

বাংলা বই পড়ার অভ্যাসের জন্য যে দু'জন মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, সেই দু'জন হচ্ছেন রকিব হাসান আর হুমায়ুন আহমেদ।

আমি খুব সাধারণ মানের একজন মানুষ। খুব সিরিয়াস ব্যাপার নিয়ে আমি তেমন কিছু জানিনা এবং আমার মাথায় ঢুকে না। কিন্তু আমি গর্ব করে বলতে পারি, আমি প্রচুর বাংলা বই পড়ি। বাংলা অহ্মরে লেখা সহজ পাঠ্য প্রায় সব লেখা আমার পড়া। পড়ার চাপ, সংসার, ছোট বাচ্চার দেখভাল সব কিছুর সাথেই আমার একটা বাংলা বই খোলা থাকে অথবা "আমার বই" বা "দেশী বই" এর ওয়েবসাইটে লগইন করা থাকে। সচলায়তন ত আছেই।

তাই হুমায়ুন আহমেদের প্রায় সব লেখাই আমার পড়া। তাঁর লেখা বই পড়ে আজকাল প্রায়ই বলিঃ ধুর সময়টাই বরবাদ করলাম। কিন্তু তারপরও পড়ি। অন্তত পাঠকে শেষ পর্যন্ত বইটা পড়তে বাধ্য করার শক্তি এই লেখকের এখনো শেষ হয়ে যায়নি।

কামনা করি তিনি সুস্থ হয়ে উঠুন। শংখনীল কারাগারের মত আরেকটি লেখা যেন তাঁর পাঠকরা পান।

মর্ম এর ছবি

শংখনীল কারাগার বা নন্দিত নরকের পাঠক 'বোতল ভূত', 'ভূত ভূতং ভূতৌ' নিয়ে আহ্লাদিত হবেন এমন আশা করি না, তবে আমার কাছে 'শঙ্খনীল কারাগারে'র হুমায়ূন আহমেদের চেয়ে 'বোতল ভূতে'র হুমায়ূন আহমেদের আবেদন এ বয়সেও অনেক বেশি!

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

guesr_writer rajkonya এর ছবি

হুম, এটা ঠিক তাঁর বইগুলোই তো আমাকে বই পড়া শিখিয়েছে। তিনি আবার সুস্থ হয়ে উঠুন। আবার লিখুন নন্দিত নরকে, অমানুষ, আকাশ জোড়া মেঘ, অচিনপুর, তোমাকে, সৌরভ এর মত বইগুলো।

মর্ম এর ছবি

পাশাপাশি লিখুন সূর্যের দিন, বোতল ভূত, মজার ভূত, বিপদ, পিপলী বেগম, নীল হাতি, ভয়ংকর ভূতূড়ে, ভূত ভূতং ভূতৌ, হিমু মামা আর এমনি আরো কিছু।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

অপছন্দনীয় এর ছবি

হুমায়ুন আহমেদের বই প্রায় পড়ি-ই নি বলতে গেলে।

সুস্থ হয়ে উঠুন তিনি।

মর্ম এর ছবি

একটু অবাক করলেন, তা মেনে নিচ্ছি!

আর কিছু না হোক, ছোটদের যে বইগুলোর কথা বললাম সেগুলো পড়ে নেবেন? আমার ধারনা এই হুমায়ূন আহমেদ আপনাকে হতাশ করবেন না।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

কালো কাক এর ছবি

হুমায়ুন আহমেদকে দেখার ইতিহাস আমারো আপনার মতই ! নানা বাড়িতে। তবে আমার অবশ্য অটোগ্রাফ নেয়া হয়নি। এরপর একদিন দেখেছিলাম একুশে বইমেলায়।

"হুমায়ুন আহমেদের লেখা আমার অনেক ভাল লাগে", বলে নিজের পাঠক মান অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করলেও আমি সবসময় এটা বলে যাব। আরো ২০বছর তিনি ছাইপাশ লিখলেও "এগুলো নিশ্চয়ই উনি লিখেননি" বলে পড়তে থাকব ........... আমার বই পড়া শুরু তাঁর লেখা ধরে, আমার মানুষ চেনা শুরু তাঁর লেখা ধরে, আমার স্বপ্ন দেখার শুরু তাঁর লেখা ধরে (আমি এখনও চাই পড়াশুনার জন্য ফার্গো শহরে যেতে !)

একটা বয়স পর্যন্ত তাঁর গল্পের চরিত্রগুলোর মত হতে চাইতাম, আশেপাশে শুধু তাদেরই দেখতাম....

খুব মন খারাপ লাগছে মন খারাপ

মর্ম এর ছবি

হুমায়ুন আহমেদকে দেখার ইতিহাস আমারো আপনার মতই ! নানা বাড়িতে।

কেমন করে? যদি বলেন তো আমরাও শুনতে পাই।

"হুমায়ুন আহমেদের লেখা আমার অনেক ভাল লাগে", বলে নিজের পাঠক মান অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করলেও আমি সবসময় এটা বলে যাব।

সহমত চলুক

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

মর্ম এর ছবি

চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

নিটোল. এর ছবি

প্রিয় এই লেখকের বই কিছুদিন পরপর না পড়লে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।

মর্ম এর ছবি

প্রিয় লেখকের জন্য শুভকামনা।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

জ়াতির বিবেক এর ছবি

হুমায়ূন আহমেদের মত এত শক্তিশালী লেখক কে আরো অনেকদিন বাংলা সাহিত্যে দরকার । উনার প্রথম দিককার লেখা হুলো পড়লে এখনো মুগ্ধ হই । প্রিয় লেখকের আরোগ্য কামণা করতেসি ।

মর্ম এর ছবি

কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন "হুমায়ূন আহমেদ-এর লেখার কোন মান নেই!" তাঁদের সমালোচনার সামর্থ নিয়ে আমার আসলেই সন্দেহ হয়! হয় তাঁরা অন্ধ, নয় স্রেফ মিথ্যা বলেন!

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

Ovi এর ছবি

ভালো লাগলো।।।

মর্ম এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

যুমার এর ছবি

তাঁর সাম্প্রতিক লেখার মান নিয়ে বির্তক থাকলেও একথা মেনে নিতেই হবে একসময় তিনি বাংলা লেখার একটা নতুন ধারা তৈরী করেছেন।তাঁর আরোগ‌্য কামনা করছি।

মর্ম এর ছবি

তাঁর সাম্প্রতিক লেখার মান নিয়ে বির্তক থাকলেও একথা মেনে নিতেই হবে একসময় তিনি বাংলা লেখার একটা নতুন ধারা তৈরী করেছেন।

'রচনার শিল্পগুণ'-এর কথা মনে পড়ে? প্রমথ চৌধুরী লিখে গেছেন, আর হুমায়ূন আহমেদ আমাদের হাতে ধরে শিখিয়েছেন 'অর্থবাচকতা' আর 'প্রাঞ্জলতা' কী বস্তু!

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

রিশাদ_ ময়ূখ এর ছবি

তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি

পারু কবির এর ছবি

তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক এ কামনা করছি।

কল্যাণF এর ছবি

হুমায়ুন আহমেদ দ্রুত সেরে উঠুন, ছাঁই পাশ (অনেকের মতে) লিখতে থাকুন, সেই ছাঁই পাশ তো নিজেই চোখ কান বন্ধ করে গিলতে থাকি। আর তাছাড়া কয়জনই বা এরকম পারে? শ্রদ্ধা

ফালতু পাঠক এর ছবি

শুনেছি নাকি হুমায়ুন আহমেদের বই পড়লে পাঠক হিসাবে জাতে ওঠা যায় না। হুমায়ুন আহমেদের বই আর হিন্দী মুভি - বাসায় বসে চুপি চুপি পড়বেন/দেখবেন আর বাসার বাইরে এসে বন্ধু মহলে কামু, সার্ত্রে, দস্তয়ভস্কি আর হিচকক, ফেলিনির শিল্পসত্তা নিয়ে জ্বালাময়ী বিশ্লেষণ করবেন, তবেই একজন প্রথম শ্রেনীর বুদ্ধিজীবী হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবেন। হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ি আর হিন্দী মুভি দেখি - এটা শোনার পর আমার আশেপাশের কিছু লোকজন আমার দিকে যে দৃষ্টি দিয়েছিল সেটা থেকেই আমার উপরের উপলব্ধি, এরপর থেকে আর সুধী সমাজে এই কথা প্রকাশ করিনা হাসি

একথা অনস্বীকার্য যে যখন একটা প্রজন্ম বই থেকে দুরে সরে যাচ্ছিল তখন তাদেরকে বই মুখী করার ব্যাপারে হুমায়ুন আহমেদের বিশাল অবদান রয়েছে (আমার মতে)। এখানে আরো অনেকের মত তার বই ধরেই বইয়ের জগতে হাতে খড়ি, তারপর পাঠাভ্যাসের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে তার বই আর এখন পড়া হয়না এটা সত্যি কিন্তু বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য তার কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। অসম্ভব অসম্ভব প্রিয় এই লেখকের শীঘ্র আরোগ্য কামনা করি।

কল্যাণF এর ছবি

চলুক আমিও অজাত পাঠক, আমার মত অনেকেই আছেন নিশ্চয়, অবশ্য জাতে উঠতে চাই কিনা আদৌ সেটাও একটা প্রশ্ন। অতি লোলেভেলে বিচরণ আর উপরের লেভেলের কাজ কারবার দেখেই শান্তি। হুমায়ুন আহমেদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সেরে উঠুক হুমায়ুন আহমেদ। তার কিছু অনবদ্য গল্প আর উপন্যাস রয়েছে যা বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন পেয়ে যাবে। বাংলাদেশে বিরাট সংখ্যক পাঠক সৃষ্টির জন্য তার অবদান অবশ্য স্মরনযোগ্য। সুস্থ হয়ে কলম হাতে নিয়ে বিচ্যুতিকালের আগের হুমায়ুন আহমেদ হয়ে উঠুক তিনি।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কল্যাণF এর ছবি

চলুক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

একটা সময় ওনার অনেক বই পড়েছি। এখনো হাতে পেলে পড়ব না এমনটা জোর দিয়ে বলতে পারিনা। এখানেই বোধহয় লেখকের স্বার্থকতা।

খবরটা সমকালে না কোথায় যেন পড়ে খারাপ লেগেছিল। আশা করি উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।

বন্দনা কবীর এর ছবি

আজ সকালেই হুমায়ূন স্যারকে নিয়ে একটা লেখা লিখেছি। লেখাটা কোথাও দেবো কি দেবোনা করেও সচলে পোস্ট করে দিয়েছি। জানিনা সে লেখা আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা।

৭ সেপ্টেম্বর তার অসুখটা ধরা পড়ার সংবাদটা পাই সাথে কাউকে না বলার নিষেধাজ্ঞা। এরকম একটা সংবাদ জানার পরেও মুখ বুজে থাকাটা যে কী ভিষন যন্ত্রনার তা যদি সংবাদদাতা জানতেন !!

কাজ কর্মের ছুঁতোয় তাঁর সাথে পরিচয় আলাপ। কাছ থেকে দেখা জানা একটা মানুষ তিনি আমার জন্য। শৈশব কৈশোর যৌবনের অনেক মুগ্ধ সময় আমরা অনেকেই কাটিয়েছি তার বই পড়ে।যদিও তা স্বিকারে অনেকের বড্ড লজ্জা!! কী অদ্ভুত আমাদের মানসিকতা!!
আমরা ভুলে যাই একজন লেখকের ১০০টি গ্রন্থ্যের ১০০টি-ই কালোত্তীর্ণ হতে পারেনা। কিংবা সবার মনে দাগ ফেলতেও পারেনা। উনিশ-বিশ অথবা একুশ-একাশিও হতে পারে। পাঠকই যাচাই করে পড়ে মনে রাখলো না হয়। তাই বলে এত্তো নিন্দে?!! তাঁর বইয়ের পাঠকের অভাবও যে নেই তা নির্দিষ্ট কিছু স্টলের সাম্নের ভীড় দেখলেই অনুমান করা যায়। তাঁর লেখা যদি এতোই অখাদ্য তো লোকে পয়সা খরচ করে পড়ে কেন এখনো? এই প্রশ্নগুলোর জবাব মেলেনা।

আর তাঁর ব্যাক্তিগত আচার আচরনের গাল গপ্প নিয়ে রসালো আলাপ জুড়তে গিয়েও ভুলে যাই যে তিনিও আমাদের মতই একজন রক্ত-মাশে তৈরী মানুষ মাত্র কোনো মহাপ্রাণ নয়। তাঁর ব্যাক্তিগত ভুল-ভ্রান্তি দ্বারা আমরা তার লেখনীকে বিচার করা শুরু করেছি, যা করার যোগ্যতাও আমরা রাখি কিনা তা চিন্তাও করিনা।
একজন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ-সুকান্ত যতদিন বেঁচে থাকবেন, হুমায়ূন আহমেদও ততটা দিনই পাঠকের কাছে বেঁচে থাকবেন আর তা তাঁর লেখার মাধ্যমেই, তা আমরা যত অস্বিকারই করিনা কেন।

আমি হুমায়ুন ভক্ত। তাতে যদি আমার পাঠ রুচি প্রশ্নবিদ্ধও হয় তো হোক। কারন, তার হাত ধরেই আমি বই পড়তে বইকে সাহিত্যকে ভালুবাসতে শিখেছি। তার বইয়ে উল্লেখ করা বই এর নাম দেখে দেখেই কৈশোরবেলা থেকেই ভাল লেখকের ভাল লেখা পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। তাঁর প্রতি ভালবাসা বা কৃতজ্ঞতা অসীম আমার।

প্রকৃতির মালিকের কাছে প্রার্থনাতাঁকে আরো কিছুকাল সুস্থ্য করে বাঁচিয়ে রাখুন। দূরারোগ্য ব্যাধির হাত ছাড়িয়ে তিনি ফিরে আসুন আমাদের মাঝে, তাঁর প্রিয়জনদের মাঝে। আবার আমরা তাঁর লেখা পড়ে হাসি কাঁদি।

ফালতু পাঠক এর ছবি

সহমত চলুক

তার বইয়ে উল্লেখ করা বই এর নাম দেখে দেখেই কৈশোরবেলা থেকেই ভাল লেখকের ভাল লেখা পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছি

আপনার কাহিনী দেখি আমার মতই। আমারও হুমায়ুন দিয়ে শুরু, তারপর শুরু অন্য লেখকের বই যেগুলো তার বিভিন্ন বইএ নাম পেয়েছি, এভাবেই আস্তে আস্তে বই পড়া নেশায় পরিনত হয়েছে। হুমায়ুন তার বিভিন্ন লেখায় অন্য বই এবং লেখকের প্রশংসা যত করেছেন, অন্য কোনো লেখকের কোনো লেখায় এমনটি খুঁজে পাইনি। হয়ত তার বইয়ের বাজার নিয়ে তার কোনো টেনসন ছিল না এই জন্যই তিনি নিঃসংকোচে অন্য লেখকের প্রশংসা করতে পেরেছেন দেঁতো হাসি

রুপালি রাত্রি এর ছবি

ওই ঘটনার পর থেকে আমি আর উনার বই পড়তে পারিনি। মনে হয়েছে উনার গল্প আর সুখী গল্প হবেনা। ওখানে গুলতেকিন, শীলা, নোভা, বিপাশা থাকবেনা। ওদেরকে নিয়ে আমি হুমায়ুন আহমেদ নামক লেখকের big fan ছিলাম। তবু দোয়া করছি আল্লাহ তায়ালা যেনও উনাকে সুস্থ করে দিন। আমীন।

মাহবুব  এর ছবি

হুমায়ুন আহমেদের লেখা আর সেবা প্রকাশনির বইয়ের সাহিত্য মূল্য কতটা জানি না , কিন্তু বাংলাদেশী পাঠকদের বই পড়ার অভ্যাস এবং বাংলা বইয়ের বাজার ( industry অর্থে) এ দুইয়ের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ।

তারেক অণু এর ছবি

আগের হুমায়ুন আহমেদ হয়ে উঠুক তিনি, লিখুন আবার নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, মিসির আলীর প্রথম দিককার বইগুলোর মত আরও অনেক অনেক বই।

ফাহিম হাসান এর ছবি

আমার জীবনে পড়া প্রথম গল্পের বই - "পিপলী বেগম"। বানান করে পড়তে দুইদিন লেগেছিল। সেই মুগ্ধতা কেটে গিয়েছে নানা ইস্যুতে তার প্রতিক্রিয়া দেখে। তবু ক্ষোভ, অভিমান বাদ দিয়ে তার আরোগ্য কামনা করছি।

তানিম এহসান এর ছবি

‘আগুনের পরশমনি’ আমার অন্যতম প্রিয় একটি বই, লেখকের জীবনে আগুনের পরশমনি আশ্চর্যকোন ছোয়ায় আরোগ্য নিয়ে আসুক, এই কামনা করছি!!

মৌনকুহর এর ছবি

মানুষ ভুল করতেই পারে। হুমায়ূন আহমেদও রক্ত-মাংসেরই মানুষ, ফেরেশতা নন।

ক্ষোভ-অভিমান ভুলে আপাতত তাঁর আশু রোগমুক্তি কামনা করি।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ

তিথীডোর এর ছবি

একসময়ের অ-তি অ-তি প্রিয় লেখকের জন্য নিখাদ শুভকামনা....

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।