একখানা টেবিল ঘিরে চলছে জম্পেশ আড্ডা। উপস্থিত আছেন এজরা পাউন্ড, গ্যারট্রুড স্টেইন, হেনরি মিলার, জেমস জয়েস, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, সিনক্লেয়ার লুইস, স্কট ফিটজেরাল্ড, স্যামুয়েল বেকেট, পল ভ্যালেরি। তুমুল হৈ হট্টগোল, করতালির সমাহার। আড্ডার বিষয়বস্তু- সমকালীন সাহিত্য। নিশ্চয়ই ভাবছেন বিশ্বসাহিত্যের এই রথী-মহারথীরা একাট্টা হয়েছেন এমন কোন আড্ডায়! আজ্ঞে না, আমি যে সময়ের ছবি আঁকছি তখন একমাত্র মহামতি স্টেইন আর পাউন্ড বাদে বাকী অন্যদের নাম বিশ্ব তো দূরে থাক পরিবারের বাইরেই কেউ জানত না। তবে এই আড্ডা থেকেই আস্তে আস্তে ক্ষুরধার হতে থাকে তাদের লেখনী, ছড়িয়ে পড়তে থাকে যশ, ছিন্নঝুলি ভরে উঠতে থাকে পুরস্কারের পর পুরস্কারে। সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী হন এখানকার বেশ কজন, কিন্তু সবাই-ই পান একজন লেখকের সবচেয়ে বড় পুরস্কার- পাঠকের অকৃত্রিম ভালবাসা আর লেখনীর অমরত্ব। আড্ডার স্থান- শেক্সপীয়ার অ্যান্ড কোম্পানি, এক জীর্ণ পুরনো বইয়ের দোকান, কিলোমিটার জিরো প্যারিস।
শেক্সপীয়ার অ্যান্ড কোম্পানিকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত বইয়ের দোকান, নোতরদাম গির্জা থেকে এক মিনিটের হাঁটা দূরত্বে সীন নদীর পাড়ে অবস্থিত, ফরাসী দেশে ইংরেজি ও আন্তর্জাতিকতার ঝান্ডা ওড়ানো এই একপৌরে দোকানটিকেই ধরা হয় মহানগরী প্যারিসের কেন্দ্রবিন্দু, যার জন্যই এর অবস্থানকে বলে কিলোমিটার জিরো! যেদিন থেকেই জেনেছি এই অসাধারণ ঐতিহাসিক স্থানটির কথা, মনের গহনে সুতীব্র ইচ্ছা জেগেছে মাদার অফ লিটারেচার বা সাহিত্য জননী খ্যাত সিলভিয়া বীচ হুইটম্যানের প্রতিষ্ঠিত এই সাহিত্য তীর্থ পরিদর্শনের। ১৯১৯ সালে যাত্রা শুরুর পর এখানে জন্ম নিয়েছে অসংখ্য কিংবদন্তীর। খুব দ্রুত বই বেচার দোকান থেকে বিনে পয়সায় বই ধার দেবার ও কফিপানের জনপ্রিয় আসরে পরিণত হয় তা, আসতে থাকেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে তরুণ লেখকেরা যাদের মনে সোনালী স্বপ্ন লেখক হবার, দিবা রাত্রি লিখে যাচ্ছেন নতুন স্বাদের সাহিত্য কিন্তু প্রকাশকদের কাছে হালে পানি পান না একেবারেই নবিশ বলে, তাদের দল ভারী হতে থাকে দিনে দিনে।
সাহিত্যচর্চার বাসনা নিয়ে ইতালি যাচ্ছিলেন সাবেক আমেরিকান সৈন্য আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, পথে এক শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শে প্যারিসে এসে আস্তানা গাড়েন। ক্লায় ক্লেশে কেরানীগিরি করে জীবন চালাচ্ছিলেন জেমস জয়েস, বিশাল বই ইউলিসিস লেখা প্রায় শেষ, কিন্তু ছাপাতে রাজি হচ্ছে না কেউ, এগিয়ে এলেন সিলভিয়া বীচ হুইটম্যান, এগিয়ে এল শেক্সপীয়ার অ্যান্ড কোম্পানি। আর এখন সবারই জানা গত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হবার অতি দুর্লভ সন্মান অর্জন করেছে ইউলিসিস।
নতুন নতুন লেখকদের আড্ডা জমছে সমানে, তাদের বাউন্ডুলেপনা দেখে তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম সেরা লেখিকা গ্যারট্রুড স্টেইন হেমিংওয়ে ও তার বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলে উঠেছিলেন - You are a Lost Generation! সোজা বাংলায় গোল্লায় যাওয়া প্রজন্ম। অথচ তারাই পরবর্তীতে আবির্ভূত হলেন একেকজন বিশ্বসাহিত্যের দিকপাল হিসেবে, মূল কারণ- শেক্সপীয়ার অ্যান্ড কোম্পানির আড্ডা, সাহচর্য, সাহায্য।
স্বপ্নপূরণের দিনে দোকানটিতে প্রবেশের আগে বেশ খানিকক্ষণ দাড়িয়ে রইলাম সাইনবোর্ডের দিকে চেয়ে, সেখানে শেক্সপীয়ারের অঙ্কিত মুখ আর নাম লেখা। দোকানের নামের শেষে কোম্পানির অর্থ বিশ্বের সমস্ত বইপ্রেমী এর অংশীদার, এমনটাই স্বপ্ন দেখতেন সিলভিয়ার পরে দোকানের দায়িত্ব নেওয়া জর্জ হুইটম্যান, যিনি নিজেকে আমেরিকান মহাকবি ওয়াল্ট হুইটম্যানের জারজ পৌপোত্র বলেই পরিচয় দেন দুষ্টুমি ভরা হাসি দিয়ে।
সামনে কাঠের বাক্সে কিছু বই আর দরজার পাল্লা ঠেলে ভিতরে পা দেওয়া মাত্রই বইয়ের সাম্রাজ্যে পদার্পণ! সব বিষয়ের উপর বই সামর্থ্য মত বিষয়ভিত্তিক সাজানো আছে। এক জায়গায় লেখা পয়েটস কর্নার, পিছনে রাজ্যের যত কবিতার বই।
সিঁড়িতে লেখা- মনুষ্যত্বের জন্য বাঁচো।
নতুন ও প্রথাবিরোধী সাহিত্যিকদের পাশে বরাবরই বন্ধুর মত দাঁড়িয়েছে শেক্সপীয়ার অ্যান্ড কোম্পানি, দেখলাম বীট জেনারেশনের সমস্ত বই কয়েক তাক জুড়ে থরে থরে সাজানো, তাতে জ্যাক কেরুয়াক, অ্যালেন গীন্সবার্গ, গ্রেগ্ররী করসোর ভিড়।
দোকানে আরেক অংশে উচ্ছন্নে যাওয়া প্রজন্ম অর্থাৎ হেমিংওয়ে ও তার সমসাময়িক আড্ডার লেখকদের সাহিত্যকর্মের সম্ভার।
প্রচুর ভিড় সেখানে, কিন্তু সবাইকে ক্রেতা ভাবলে ভুল করবেন! অনেকেই এক কোণে বসে পছন্দের বইটি টেনে নিয়ে পড়ে যাচ্ছেন নিবিষ্ট চিত্তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দোকান যতক্ষণ খোলা আছে ততক্ষণ এই ভাবে বই পড়ার অধিকার আছে সকল পাঠকের! প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় নব্বই বছর পার হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত এর বাত্যয় ঘটেনি কোন।
আগে দোকানে বড় করে লেখা থাকত TAKE WHAT YOU NEED ,GIVE WHAT YOU CAN , মানে দোকানে বইয়ের নির্দিষ্ট কোন মূল্য ছিল না, এর দাম নির্ভর করত পাঠকের উপরেই! কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনেক ভিন্ন, প্রতিটি বইয়ের সাথেই নির্দিষ্ট মূল্যের ট্যাগ, এবং দাম বেশ চড়া, নিশ্চয়ই এই অসাধারণ জায়গাটির ইতিহাসের কারণেই।
যেখানেই বিন্দু পরিমাণ জায়গা ফাঁকা পাওয়া গেছে সেখানেই বইয়ের স্তূপ, সেই সাথে দুর্লভ সব আলোকচিত্র ঝুলছে দেয়ালে আর কিছু পোষ্টার। একেবারে পিছনে গেলে পাওয়া যাবে দোতালায় যাবার কাঠের সিঁড়ি, উপরে জর্জ হুইটম্যানের আস্তানা এবং সেই সাথে পৃথিবীর একমাত্র লেখকদের হোটেল অর্থাৎ বিশ্বের যে কোন প্রান্তের লেখক এখানে এসে বিনামূল্যে রাত্রিযাপন করতে পারবেন! শুনলাম অন্তত ৪০,০০০ লেখক আজ পর্যন্ত থেকে গিয়েছেন এইখানে। অন্তত পারতেন বছর কয় আগেও, এখন দোতালায় করা হয়েছে গ্রন্থাগার আর সাহিত্য বিষয়ক নানা রকমের ওয়ার্কশপ চালানোর স্থান।
২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসী অধিক্রান্ত প্যারিসেও জ্ঞানের আলোর জ্বালিয়ে রাখত শেক্সপীয়ার অ্যান্ড কোম্পানি, কিন্তু পরে এক জার্মান ক্যাপ্টেনের হুমকির মুখে আত্নগোপন করেন সিলভিয়া হুইটম্যান, বছর চারেক পরে মিত্রবাহিনীর প্যারিস জয়ের পরে আবার খুলল সেই জ্ঞানের আঁধার, কল্পনা করুনতো মিত্রবাহিনী যখন এই বইয়ের দোকানে প্রবেশ করল তখন তাদের অগ্রভাগে কে ছিল? পুরোদস্তুর সৈনিকের ইউনিফর্ম গায়ে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে! তার বিখ্যাত স্মৃতিকথা A Movable Feast -এ সেই পুরনো দিনগুলোর কথা অমর হয়ে আছে।
কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের পর আগের সেই জায়গার দোকান আর চালু হল না, নিয়ে আসা হল তা সীন নদীর তীরে, যেখানে আমরা এখন দাড়িয়ে।
মন্ত্রমুগ্ধের মত সারা দোকান ঘুরে কিছু বই কেনা হল, সবার আগে ওয়াল্ট হুইটম্যানের লিভস অফ গ্রাস। এবার দাম চুকানোর পালা, কিন্তু সেখানেও রয়েছে এক বিশাল আকর্ষণ, শেক্সপীয়ার অ্যান্ড কোম্পানির বিশেষ সিল, যে কোন বইপ্রেমীর কাছেই এই সিল লাগানো বইয়ের মূল্য অপরিসীম, প্রমাণ হয় বইখানা এসেছে মহা গ্রন্থতীর্থ থেকে, মাঝখানে উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের ছাপচিত্র, তার চারপাশে দোকানের নাম, আর লেখা কিলোমিটার জিরো, প্যারিস।
৯৭ বছরের চিরতরুণ সদাব্যস্ত জর্জ হুইটম্যান বাহিরে থাকায় দেখা করার সৌভাগ্য হল না, আশা রাখি অদূর ভবিষ্যতে নিজের কোন বই প্রকাশিত হলে বুক ঠুকে এসে অন্তত একরাত থাকার অনুমতি চাইব, এই স্বপ্ন বুকে পুষেই বিদায় নিলাম এই যাত্রা।।
মন্তব্য
বইয়ের পাতার সেই অদ্ভূত সুন্দর ঘ্রাণ পেলাম!
এই প্রাণকাড়া ঘ্রাণের উৎপত্তি আমাদের জগতে নয়। সে এক অন্যভুবন-
facebook
দারুন, ফাটাফাটি, চালায় যাও, সাথেই আছি।
সাথেই থাইকেন কিলিমাঞ্জারোতে
facebook
আহ্... স্বর্গ যদি এমন একটা বইয়ের দোকান হত আর হতাম বইয়ের পোকা - তাহলে নির্ঘাৎ মন দিয়ে ধর্মচর্চা করতাম সেই স্বর্গে দ্রুত যাওয়ার জন্য!
****************************************
ঐ ...
বই ছাড়া স্বর্গ খুবই বোরিং হওয়ার কথা, হুর পরীর সাথে টাংকি মেরে আর কতক্ষণ...
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
কি আর করা, স্বর্গ যখন কেবল বইয়ের পাতাতেই, আমরা এইখানেই গ্রন্থকীট হয়ে থাকি।
facebook
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমার স্বর্গ অবশ্যই এমন হবে, আর একটা মিউজিক সিস্টেম ও থাকবে তাকে সাজানো প্রিয় সব সিডি।
তারেক অণু ভাই, অনেক ধন্যবাদ এই লেখাটির জন্যে। 'A Moveable Feast' পড়ার সময় এই জায়গাটিকে কল্পনার চোখে দেখার চেষ্টা করেছি। আজ আপনার সাথে যেনো সশরীরে ঘুরে এলাম।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
'A Moveable Feast' পড়েছিলাম এখানে যাবার পরে, পড়ার আনন্দ আরও দ্বিগুণ হয়ে গেছিল ! তবে এই দোকান নিয়ে শঙ্করের মানব সাগর তীরে বইটিতেও অনেক তথ্য আছে। ধন্যবাদ সুমন দা
facebook
ভাই একটা অনুরোধ - সমস্যা না থাকলে আপনার ভ্রমনের হাই রেজঃ ছবিগুলা ফ্লিকারে দিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করেন।
সমস্যা তো অবশ্যই নেই। কিন্তু ফ্লিকারে আসলে আবার ছবি খুব কম, ফেসবুকেই আছে প্রায় সব। এখানে সেই অ্যালবামগুলোর লিঙ্ক দিলে কেমন হয় লেখার শেষে?
facebook
এখন মেঘলা সকাল। পাখি ডাকছে। একটু একলা একলা লাগছে। কি আছে লেখাটায় জানি না ঠিক, পড়ে … নি:সঙ্গতাটা দুর হলো…
অবাক হলাম শুনে, খুব খুশীও হলাম
facebook
আপনার জন্য শুভকামনা রইল-আশা করি নিকট ভবিষ্যতেই আপনার মনের ইচ্ছা পূরণ হবে।
হুইটম্যানের লিভস অব গ্রাস আমিও কিনেছি তবে নীলক্ষেত থেকে।
I BELIEVE A LEAF OF GRASS IS NO LESS THAN THE JOURNEYWORK OF STARS !!
facebook
অনেক হইছে। অ্যালা অফ্ যান!
আরে ভাই, এক একটা লেখা হজম করার টাইম তো দিবেন? আপনার প্রতিটা লেখা পড়ার পর দম বন্ধ হয়ে আসে, হিংসায় না মুগ্ধতায় না কীসে সেটা বলতে পারব না, কিন্তু এমন দম আটকে থাকতে থাকতে তো পটকে যাব। দম ছাড়ার একটা সময় লাগে না?? যান তো! লেখালেখি বাদ দিয়ে মঙ্গল গ্রহ নয়ত বুধে ঢুঁ মেরে আসুন। এসে খন আবার লিখবেন।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আরে জীবন এতো সহজে আমাদের ছাড়বে না, চিন্তা কইরেন না খামোখা !
বুধ, মঙ্গল না হলেও বেশ দূরের যাত্রায়ই যাব বছর শেষে, তাইতো লিখে যাচ্ছি ধুমায়ে, যদি না ফিরি ! পরের লেখাও শেষ, শুধু পোষ্টের অপেক্ষায়
facebook
তখন উনি মঙ্গল এবং বুধের ইতিহাস সম্বলিত ছবি সহ পোস্ট দিবেন, যা দেখে হিংসায় নীল থেকে সবুজ হয়ে যেতে হবে।
কী দুর্দান্ত ! যদি ইতিহাসটুকু বাদ দিয়ে শুধু দোকানের সাজ সজ্জার দিকে তাকাই তবুও মুগ্ধ হতে হয়। চমৎকার পুরানো একটা গন্ধ লেগে আছে দোকানের চেহারাতেও। আমার তো শুধুমাত্র দোকানের নেমপ্লেটের দিকেই তাকিয়েই ভালো লাগলো। পুরানো জিনিসগুলিকে ভেঙ্গে নতুন স্টাইলে না এনে, পুরানো স্টাইলেই রেখে মেরামত করলে কী সুন্দর লাগে তার একটা উদাহরণ হতে পারে এইটা।
বইগুলি দেখে ঈর্ষাও হয়, লোভ হয় আবার হতাশও লাগে। পকেটভর্তি টাকা নিয়ে যদি এই দোকানটায় যাইতে পারতাম
অলমিতি বিস্তারেণ
পুরানো স্টাইলই অনেক ভাল লাগে, ক্ল্যাসিক মনে হয়। জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, চেক সহ অনেক দেশের ক্ষুদে ক্ষুদে কিছু শহর দেখে মনে হয় ৫০০ বছর ধরে পরিবর্তন ঘটেনি কোন, কিন্তু সব আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন।
facebook
অসাধারণ! অসাধারণ!! অসাধারণ!!!
প্যারিসে যদি কোনওদিন যেতে পারি তবে নিঃসন্দেহে এটাই হবে আমার প্রথম গন্তব্য, আইফেল টাওয়ার নয়। বই আমাকে খুব টানে। আর যদি এমন একটা বইয়ের দোকান হয়। মরে যাই মরে যাই তারেক অণু।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অবশ্যই ! আমি তো প্রথমবার প্যারিসে যাবার সময় নিজের কাজে পণ করেই গিয়েছিলাম, আইফেলকে কেবল দূর থেকেই দেখব! পথে এক বই পড়ে জানলাম গান্ধীও সেই টাওয়ারে উঠে এক রেস্তোরাঁয় খেয়েছিলেন কেবলমাত্র এত উপরে বসে খাওয়ার বাসনায়। কাজেই কয়েকদিন পণরক্ষা করে চললেও শেষতক আর পারি নি। তবে ঐ একবারই, এর পরে প্যারিস যতবারই গিয়েছি সযত্নে এড়িয়ে চলেছি সেই লৌহ স্তম্ভ।
facebook
ওরিব্বাপরে বাপ। দোকানের বিশালতা দেখে মাথা আঊলায়ে গেলো।
আকারে যে খুব বড় তা নয়, কিন্তু সংগ্রহ ব্যপক আর ইতিহাসটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না
facebook
লুটেরা হইতে মন চায়
------
অফটপিকঃ আমার ফেবুতে আপনার পোস্ট এর লিঙ্ক দিয়ে ভরে আছে। একবন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে ধমক দিয়ে বলল, কী সব লিঙ্ক দিস? খালি আফসোস জাগায়। আমার সেই অপড়ুয়া বন্ধুটি আপনার পোস্ট মন দিয়ে পড়ছে, এটাই আপনার লেখার বড় কৃতিত্ব
আপনের বন্ধু ও আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা, তাকে বলেন এখানে আফসোস বলে কিছু নেই, আনন্দটাই মুখ্য
facebook
হিংসে হিংসে!
facebook
নাহ্ এই ছেলে তো বড় ত্যাক্ত করে; এরে মাইনাষ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
পরের বারও কিন্তু মাইনাস দিয়েন লতা দি, তাইলে মাইনাসে মাইনাসে প্ল্যাছ
facebook
দূরো, পোস্টে মাইনাস দিতে যাব কোন দুঃখে, দিয়েছি তো মাইনাষ। সে ভারী ভালো জিনিষ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
facebook
এই দোকানটার উপর আগ্রহ জন্মায় শংকর এর “মানবসাগর তীরে” বইটা থেকে, তারপর থেকে আমি নানান জায়গা থেকে এর সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি, গুগল করেছি। আপনার বেলায় যে বিষয়টা আমাকে খুব আকৃষ্ট করে সেটা হচ্ছে আপনার ভ্রমনের জায়গা বেছে নেয়ার পেছনের যৌক্তিকতা, সাধুবাদ জানাই আপনাকে আর আপনার বোধকে!
প্যারিসের ক্যটাকম্বগুলো সম্পর্কে কিছু আছে আপনার রসদে? থাকলে দিননা, এটা নিয়ে আমার ব্যাপক আগ্রহ।
আপনাকে একটা গান উপহার দিতে চাই http://youtu.be/1ZSswWiWirY
অনেক ধন্যবাদ তানিম ভাই। প্রায়ই চেষ্টা করি যাবার আগে সেই জায়গাটি নিয়ে একটু মাপজোক করে যেতে, তবে উদ্দেশ্য ছাড়াও ঘোরা হয়, সেটার মজা অন্যরকম। প্যারিসের বিভিন্ন জায়গা নিয়ে আস্তে আস্তে সিরিজ মত লিখব আসা রাখি। মানবসাগর তীরে পড়ে অনেক কিছু জেনেছিলাম এই তীর্থ সম্পর্কে।
facebook
লেখা তো লেখা- সাদাকালো ছবিটা দেখেই আপনার উপরে হিংসায় জ্বলা শুরু করেছি। উরিব্বাস!! এত্তো বই একসাথে দেখাও পূন্যি !!
মরার আগে প্যারিসে যাওয়া যদি ভাগ্যে জোটেই তো এইখানে যাবোই যাবো।
চমৎকার বর্ণনা আর ছবিগুলোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পূন্যি তো বটেই, এই জন্যই তো পুরনো বইয়ের দোকান আর গ্রন্থাগারে ঢুঁ মেরে যায় প্রতিদিন। অবশ্যই যাবেন, নোতরদামের একদম পাশে।
facebook
ইবনে বতুতা ভাইয়া, আপনার লেখায় ইতিহাস-ভূগোল-ফটো জার্নালিজম সব কিছুর টাচ্ পাওয়া যায়...আপনার একেকটা পোস্ট is like a 'Total package of sheer joy'
"তু চীজ বারি হ্যায় মাস্ত মাস্ত..."
ধন্যবাদ, ধন্যবাদ , আমি কিন্তু খুব চেষ্টা করি প্রকৃতি, জীবজগত, অ্যাডভেঞ্চার লেখার মাঝে আনতে, ইদানিংকার পোষ্টগুলোতে বেশী হয় নি, পরের গুলোতে চেষ্টা করব।।
facebook
আরে মশাই এজরা পাউণ্ড বলছেন কাকে? আমিই তো এজরা পাউণ্ড। পেটালস অন আ ওয়েট ব্ল্যাক বো। ওই দোকানে সেই কবে আড্ডা দিয়েছিলাম!
লেখাটি অসীম প্রেরণাদায়ক!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আচ্ছা, রোমেল ভাইই এজরা পাউণ্ড, গোটা সচল সাক্ষী! এখন এজরা পাউণ্ড ভাই, সেই এজরা পাউণ্ড যেভাবে কেবলমাত্র কবিতা লেখার জন্য টি এস এলিয়ট কে ব্যাংকের কলম পেষা চাকরি থেকে নিজ উদ্যোগে অব্যাহতি দিয়ে কাব্যচর্চার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, আপনি আমার ক্ষেত্রে ( যদিও এলিয়টের আলোকবর্ষ ধারে কাছেও যাবার সম্ভাবনা নেই) কি করতে পারেন সত্বর জানিয়ে বাধিত করবেন...
facebook
অদ্ভুত! অদ্ভুত! একেকটা লেখা হজম হতে না হতেই আরেকটা এসে হাজির! চালিয়ে যান মহাশয়।
আসিতেছে, আসিতেছে= আরও ২ খান প্রস্তুত, সব হজম করে ফেলবেন, সমস্যা নাই!
facebook
এই দোকানটা কোন মুভিতে যেন দেখেছিলাম। সম্ভবত before sunrise অথবা before sunset. চমৎকার লাগল আপনার ভ্রমণ কাহিনী।
চলুক।
উডি অ্যালেনের Midnight in Paris চলচ্চিত্রে ছিল। অন্যগুলো মনে পড়ছে না, আপনি জানতে পারলে জানিয়েন। চলবে--
facebook
আমার সংগ্রহের মাঝে নিদেনপক্ষে একটা বই থাকবেই থাকবে যেটা সশরীরে গিয়ে এই মহাতীর্থ থেকে কেনা | নিজের একটা বইএ ওই দাড়িওয়ালা সিলটার বহুদিনের শখ !!
সেল্ফ থেকে খুব প্রিয় একটা বই খুঁজে নিয়ে একবার হলেও এক কোণে বসে কিছুক্ষণ পড়তে চাই | শুধু গল্প শুনে, বইএ পড়ে, ছবি দেখে আর কত?
ভাইরেএএএ, প্যারিস যাইতাম মন্চায়...
অবশ্যই!! তা তো করবেনই
facebook
যাইতে মুঞ্চায়, বড্ড মুঞ্চায়!!!!
_____________________
Give Her Freedom!
facebook
কিন্তু কেন?
এই ধরণের নির্দেশনামার পেছনে নিশ্চয়ই কোন মজার ইতিহাস রয়েছে যা জানতে খুব ইচ্ছে করছে!
'শেক্সপীয়ার এ্যান্ড কোম্পানি' সম্পর্কে আগে কিছুই জানতাম না; তবে বিশ্ব সাহিত্যের রথী-মহারথীদের এই সূতিকাগার ঘুরিয়ে আনার জন্য লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ!
ধন্যবাদ মামুন ভাই। পরের টা বলতে পারি- সিলিভিয়া স্বপ্ন দেখতেন প্রতিটি মানুষ যেন মনমত পড়তে পারে, অর্থের অভাবে যেন থেমে না যায়। অনেকেই যেমন বিনামূল্যে বই নিয়ে যেত আবার অধিকাংশ পাঠকই চুপিচুপি দোকানের ক্যাশবাক্সে অনেক টাকা অথবা দোকানে অনেক বই দিয়ে যেতেন।
facebook
তারেক ভাই,
আপনে আসলে থাকেন কই?? পুরাই ভাসায়া নিয়া যাইতেছেন রে ভাই...
এখন আছি ভাই হেলসিংকিতে, এটাই আস্তানা আপাতত। মাঝে মাঝে ডেরা ছেড়ে বেরিয়ে যায়, এই আর কি।
facebook
অসাধারন অসাধারন! হিংসায় ছোট চোখ আরো ছোট হয়ে গেলুগা। মন চায় মাইনাস দিতে, কিন্তু...
পরপর দুইবার মাইনাস দিয়ে দ্যান
facebook
চমতকার!
facebook
আপনার লেখাগুলো পড়ে এমন একটা হাঁসফাঁস অবস্থা হয় যে কী বলবো! মনটা হাঁসের মতন উড়ে যেতে চায় এদিকে পায়ে ফাঁস। দুবলাপাতলা হার্ট, এরকম হাঁসফাঁস করে কদিন টিঁকবে?
আপনার তিব্বতী লেখা পড়া না হতেই হার্ট জবাব দিক, এ চাই না। কোনোরকমে দম ধরে আছি।
সেই লেখা শীঘ্র দিন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
টিকবেন টিকবেন, কুন চিন্তা ন্যাই! ভাল বলেছেন, তিব্বতে হাত দিতেই হবে এবার, কিন্তু পর্বতে চড়ার আগে একবার সাগরে গেলে মন্দ হয় না কি বলেন!
facebook
চমৎকার লিখেছেন। আমি ২ বছর প্যারিসে কাটিয়েও এমন বিষয় নিয়ে লিখিনি বলে আফসোস হচ্ছে। ঘোরাঘুরির সাথে সাথে আপনার অনুসন্ধিৎসু মনটাকেও স্যালুট জানাই।
এখনো কি প্যারিসেই আছেন !
facebook
কদিন আগেও এই দোকানে গিয়ে বিনে পয়সায় বই পড়লাম, তারপর হেঁটে সরবোর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলাম, ল্যাটিন কোয়াটার্স আর বিখ্যাত ফোয়ারাটার সামনে বসে আড্ডা মারলাম। আপনি আবার মনে করিয়ে দিলেন পারীর কথা। ধন্যবাদ।
আহা, ল্যাটিন কোয়াটার্স ! প্রথমবার পারী গিয়ে সেখানেই ছিলাম। অনেক অনেক রোদ ঝলমলে স্মৃতি। মনে করিয়ে দিলেন সেই সব--
facebook
হেহে, পারি গিয়ে এইটা দেখেছি কিন্তু ঢুকি নাই। সঙ্গীরা তখন জঠরানল নেভাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছিল...
সঙ্গী নিয়ে ঘোরার এই এক সমস্যা ! রুচি খানিকটা আলাদা হলে মাঝে মাঝেই বিশাল সমস্যা হয় পথের মাঝে। আমাদের এক বড় ভাই কাঠমান্ডু যেয়ে আর সব বাদ দিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল হলে---
facebook
আপনি এত জায়গায় ঘোরার সময় পান কই? কোন কাম-কাজ নাইক্কা?
অনেক ভাল লাগল। শুভকামনা রইল।
ঘোরার চেয়ে কাজ গুরুত্বপূর্ণ হল !! হে হে--
facebook
facebook
হিংসেয় জ্বলে পুড়ে কাবাব হয়ে গেলাম!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আরে না, কাব্যপ্রেমীরা কাবাব হয় না !
facebook
কবে যে ঢাকায় এমন একটা বইয়ের দোকান হবে আর সচলের লেখকগুলি লস্ট জেনেরেশানের মত নোবেল পাবে সেই আশায় থাকলাম। আমার মত গরিবের তো পারী যাবার স্বপ্ন দেখে লাভ নাই।
হবে হবে। বাস্তব স্বপ্নের চেয়ে অনেক রোমাঞ্চকর
facebook
ওইখানে গিয়ে দাঁড়ালে ৯০ ঠিক কেমন লাগে ভাবার চেষ্টা করছিলাম। ভাবতেই মনটা ভাল লাগায় ভরে গেল। অনেক ধন্যবাদ লেখার জন্য।
"৯০" কেন লিখলাম কে জানে??? হিংসায় মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি????
আমি ভাবছিলাম ৯০ বার দাঁড়াব, না দাড়িয়ে ৯০ গুনব ! হে হে
facebook
এরকম জায়গায় যেতে পারাও চরম ভাগ্যের ব্যাপার।
তারেক ভাই, আপনে মিয়া আসলেই এক পিস আল্লাহর মাল
অতীত
কোন ফাজিল মন্ত্রী এই ডায়ালগ দিছিল না !
facebook
চমৎকার লেখা।
বইয়ের সাথে সম্পর্কটা অদ্ভূত। তবে ই-বইয়ের অভ্যেসটা তেমন রপ্ত হয়নি এখনো। বইয়ের সাথে সম্পর্ক জ্ঞান হওয়া অবধি। ই বইয়ের অভ্যেস ৭-৮ বছরের। ভবিষ্যতে বোধহয় ই-বই ই রাজত্ব করবে! তবু ম্যানুয়াল বইই ভালো লাগে বেশি!
বই তো আসলে জ্ঞান রক্ষা ও চর্চার একটা মাধ্যম। একসময় মানুষ কাদায় জ্ঞান সংরক্ষণ করেছে, কোন সময় চামড়ায়, পাঁথরে, প্যাপিরাসে এখন কাগজে এই-ই। ই-বুক হলেও জ্ঞান চর্চা তো থেমে থাকবে না। এবং অবশ্যম্ভাবী ভাবেই কোন না কোন প্রযুক্তি একদিন হটিয়ে দেবে ইবুক-কেও।
facebook
যাইতে মুঞ্চায়, বড্ড মুঞ্চায়!!!!
শেষ করছি হুইটম্যানের কাছ থেকে ধার নিয়ে:
I CELEBRATE myself;
And what I assume you shall assume;
For every atom belonging to me, as good belongs to you.
ধন্যবাদ।
এম আব্দুল্লাহ
I CELEBRATE myself;
And what I assume you shall assume;
For every atom belonging to me, as good belongs to you.
শুভেচ্ছা
facebook
ভাই আপনি যে সব যায়গায় ঘুরে বেড়ান আমি সেগুলো নোট করে রাখতেছি…
যদি কোনদিন কোন একটিতে যাওয়ার সুযোগ পাই…
এত সুন্দর একটা তথ্যবহুল লেখার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ…
facebook
নতুন মন্তব্য করুন