ঝানু তাত্ত্বিকেরা বলে মৃত্যুইচ্ছা নাকি মানুষের সহজাত স্বভাব আর তাইতেই সকলের নাকি খালি খালি মরে যেতে ইচ্ছে করে। কথাটা এমনিতে নেহাত মন্দ নয়। আমাদের জীবনে আমরা কথায় কথায় অসংখ্যবার মরে যেতে চাই। কিন্তু সত্যি করে মৃত্যুর সামনে পড়লে বোঝা যায় এইসব কথা বার্তা কি বিশ্রি রকমের ছেঁদো। অনেক বছর আগে একবার ছোট্ট এক কাঠের নৌকায় করে সেন্ট মার্টিন থেকে ফেরার সময় সমুদ্রঝড়ের কবলে পড়ে বুঝেছিলাম মৃত্যুভয় কি জিনিষ। মাঝ সমুদ্রে যখন দশ তলার সমান বিশাল বিশাল ঢেউগুলো খা খা করে রাক্ষসীর মত করে তেড়ে এসে নৌকোটাকে খেলনার মত ছুঁড়ে দিতে শুরু করল, সময় বুঝে ঠিক তখনই নৌকার দুটো ইঞ্জিনই গেল বিগড়ে। নৌকার ভাঙা মেশিন নিয়ে তুমুল ঝড়বৃষ্টির মাঝে বসে বসে কালচে নীল পানির চেহারা নেয়া সাক্ষাত মৃত্যুকে আমরা বিস্ফোরিত চোখে অসহায় ভাবে দেখতে থাকলাম। মৃত্যুকে প্রায় বুড়ি ছুঁয়ে এসে সেদিন বুঝেছিলাম এই অমোঘ সত্যির সামনে মানুষ কি নিদারুন অসহায় !
মৃত্যুকে ভয় পায়না এমন মানুষ কমই আছে। অনেক তাবড় তাবড় মানুষও তার সামনে গিয়ে শেষতক ভেঙ্গে পড়ে শুনেছি। কিন্তু আমাদের সাধারণ জীবনে মাঝে মধ্যে ভীষণ অসাধারন কিছু মানুষের দেখা মেলে। যারা বারবার মরে না, একবারই মরে কিন্তু জীবনের শেষ বিন্দু পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এরকম এক মেয়ের নাম হেনা।
হালকা পাতলা ছিপছিপে গড়নের শ্যামলা মত এই মেয়েটা তখন মোটে একুশ ছুঁয়েছে। বাবা আদর করে ফুলের নামে নাম রেখেছে হেনা, হাসনাহেনা। মেয়েটা অবশ্য বন্ধুদের সামনে পুরো নামটা বলতে লজ্জা পায়। রেগে উঠে এক একদিন বাবাকে বলে, কি যে একটা নাম রেখেছ, আজকালকার দিনে এরকম নাম কেউ রাখে ? বাবা হাসে, কিছু বলতে পারেনা । মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে গলা বুজে আসে। মেয়েটার যে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, কদিন পরেই চলে যাবে। কিন্তু এনগেজমেন্টের আগের দিন সন্ধ্যা নাগাদ কি যেন হল, এক বাড়ি মেহমানের মাঝে হটাত অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। কিছুতেই জ্ঞান ফিরছে না। হাসপাতালে নেয়ার পর বিস্তর টেস্ট করে ডাক্তাররা গম্ভীর গলায় জানালো মেয়েটার ক্যান্সার, একদম লাস্ট স্টেজ।
এরকম কাহিনি নিয়ে পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য নাটক সিনেমা গল্প এর মধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। কতবার আমরা তাতে দুঃখবোধ করে সাহিত্যের স্বাদ পেয়ে খুশি হয়েছি। কিন্তু সত্যি যখন হেনার জীবনে এরকমটা ঘটল তখন আমরা হতবাক হয়ে গেলাম। আমার মামা তাঁর মেয়েকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে জমিজমা বিক্রি করে করে দেশে বিদেশে ছুটতে লাগলেন আর ক্রমাগত ডাক্তারদের 'না' 'না' শুনে পাগলপারা হয়ে উঠতে লাগলেন। একদিন হেনা বেঁকে বসল। কিছুতেই আর চিকিৎসা নামের যন্ত্রণা সইবে না। যে কটা মাস হাতে আছে সে কদিন ইচ্ছেমত বাঁচতে চায় সে। সেই সময় সে সপ্তাখানেকের জন্য বেড়াতে এল আমাদের বাসায় ।
মেয়েটাকে কখনও কাঁদতে দেখিনি। আমরা সারাদিন গল্প করতাম, হাসতাম আর বেড়াতাম। কত যে গল্প জমে ছিল ওর। রাত জেগে জেগে মুভি দেখতে দেখতে মুভি দেখার চাইতে গল্পই হত বেশি। এর মাঝে ওর পছন্দের খাবারগুলো রেঁধে দিলে একদম বাচ্চাদের মত খুশি হয়ে যেত। কেমোথেরাপি দিয়ে চুল গুলো পড়ে গিয়ে টাক হয়ে গিয়েছিল অথচ নিজে তেলের বাটি নিয়ে আমায় তেল দিতে বসত। একদিন মাথায় বিলি কাটতে কাটতে হটাত বলে উঠল-
-তোমার একটা ফুটফুটে মেয়ে হবে দেখো, একদম তোমার মত।
-মানে, আরও একটা ধ্যাবড়া মুখি ?! সর্বনাশ !
-তুমি হচ্ছ পৃথিবীর সবচাইতে ভালো মেয়ে; তোমার পরে এরকম আরেকজনকে তো পৃথিবীতে থাকতেই হবে।
আমি হাসতে হাসতে বললাম, হ, তরে কইসে।
চলে যাবার আগে আমাকে বলেছিল, আমি তোমার কাছে আবার আসব।
মা বলেন আর নাকি হেনা আসেনি। অথচ ওরা জানেনা, ও কিন্তু এসেছিল। যেদিন আমি হাসপাতালে চাপ চাপ রক্তের মাঝে ভেসে অসম্ভব এক যন্ত্রণায় ডুবে যাচ্ছিলাম আর সবাই কাঁদছিল, সেদিন ও এসেছিল। আর অদ্ভুত ভাবে ও আসার সাথে সাথেই হাসপাতালের দেয়াল পর্দা গ্রিল কোথায় মিলিয়ে গিয়ে ওমাথা দেখা যায়না এমন বিরাট এক চালাঘর হয়ে গেল। দেখি সেটার চারপাশে বেড়ার ফাঁক ফোঁকর দিয়ে আলো আসছে চুয়ে চুয়ে আর ওই আলো আলো ভীষণ শান্ত একা ঘরটায় সুতোর নকশাকাটা ধবধবে সাদা বিছানায় হেনা আমার হাত ধরে বসে আছে। অল্প হেসে বলল, তোমার কষ্টগুলো আমি নিলাম। আর ভয় নেই।
দুদিন পরে জ্ঞান ফিরতে জিজ্ঞেস করলাম, হেনা কই ? শুনেই মার মুখটা যেন কেমনধারা হয়ে গেল। মুখ নামিয়ে সুপের বাটিতে কি খুঁজতে শুরু করলেন। পাশে থাকা কে একজন বললে, কাল রাতে মেয়েটা মারা গেছে।
জীবন থেমে থাকেনা। বৃত্ত পুরণ করতে আমরা ক্রমাগত জীবনের পথে হাঁটতেই থাকি অবিরাম। একদিন দিন শেষে বাসায় ফিরে শুনি মিতিন সারাদিন খায়নি। ঘরে গিয়ে দেখি ছোট্ট মুখটা ক্ষিদেয় আর বকা খাবার ভাবনায় শুকিয়ে এতটুকু হয়ে আছে। জিজ্ঞেস করলাম, খাওনি কেন ?
ওমনি চোখ ভরা পানি নিয়ে বললে, স্কুলে বলেছে খাবার খেলে তাড়াতাড়ি বড় হওয়া যায়। কিন্তু আমি বড় হয়ে গেলে তো তুমি বুড়ো হয়ে মরে যাবা মামনি। তখন তো আমার কান্না পাবে। এইজন্যে আমি আর কক্ষনও খাবার খাবনা। এখন তুমি সারাজীবন বেঁচে থাকবা তো মামনি ? বলো, থাকবা ? প্রমিস ?
হটাত আবছা হয়ে যাওয়া দৃষ্টি নিয়ে এলোমেলো ঝাঁকড়া চুলের ছোট্ট মাথাটা বুকের ভেতর লুকোতে লুকোতে ধরা গলায় বললাম, প্রমিস !
কেন যেন এই ডাহা মিথ্যেটা বলতে আমার একটুও খারাপ লাগলো না। বরং চোখের জলে ভাসতে ভাসতে মনে হল, বেঁচে থাকা কী তীব্র সুখের !
মন্তব্য
বেঁচে থাকাটা আসলেই তীব্র সুখের ...
...তা ঠিক, কিন্তু কথাটা সব সময়ে মনে থাকেনা এটাই মুশকিল।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
স্পিসলেস !!!!>>>>>>>>>>>>>>>>@
ডাকঘর | ছবিঘর
বা রে, বাক্যাহত হলে চলবে কি করে। লেখাটা কেমন হল বলুন, ভুলগুলো ধরিয়ে দিন [তবে খুব কড়া করে বললে কিন্তু আমি গাল ফোলাব ] আর অন্য কিভাবে হলে লেখাটা আরও ভালো হতে পারত সেটাও বলুন নাহয়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
না। লেখাটাতো অসাধারণ হয়েছেই তাই কিছু বলতে পারলাম না আশালতা। আর যে কাহিনি আপনি বলেছেন তা শুনেই আমি বাক্যহারা হয়েছি। আমার নিজের জগতেও এই ধরণের ঘটনা এবং অনুভুতি রয়েছে, তাই .........
ডাকঘর | ছবিঘর
এই যে এত আয়োজন, এত যজ্ঞ...সবকিছুই 'বেঁচে থাকতে চাই' বলেই। যতক্ষন বেঁচে আছি, ততক্ষন 'বাঁচব'।
Cheers to life, to this beautiful post of yours.
ধন্যবাদ উচ্ছলা । আপনার জন্যে
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভীষণ ভীষণ ভীষণভাবে ছুঁয়ে গেল।
জেনে ভীষণ ভীষণ ভীষণ ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশালতা, অসংখ্য কুর্নিশ তোমাকে। প্রতিটা ব্যর্থ গতানুগতিক দিনের শেষে যখন মনে হবে পালাই, তখন এই লেখাটার কথা মনে পড়লে মনে হবে দেখি না আরেকটা সকাল, দেখি না এমন আরেকটা লেখা তো পড়তে পাওয়া যেতেও পারে যা কিনা সেই অমৃতস্বাদ মনে পড়ায়, এই নশ্বর জীবনের মনে খুঁজে দেয়।
পনেরো বছর বয়স থেকে তৈরী হয়ে আছি পালাবার জন্য, ছোটো ছোটো কুটোকাটা ঘাস লতা জড়িয়ে ধরে রাখে, ছলছলে গঙ্গা রেগে রেগে বলে "অকৃতজ্ঞ", পালানো হয় না কিন্তু ইচ্ছেটা থেকে যায়।
নয় নয় করে কত পথ পেরোনো হয়ে গেল, যার সাথে পরিচয় হবারই কথা ছিলো না সে হয়ে গেল পরম বন্ধু, সে আবার এই পনেরো বছর বয়সের গল্প শুনলেই বলে, "তোর পনেরো, হ্যাঁরে বুড়ী ? সে তো একশো বছর আগের ব্যাপার!"
আবার কুর্নিশ আশালতা, লিখে চলো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আরে, এইসব কুর্নিশ মুর্নিশ কি শুরু কল্লে ! তারচে হাত টেনে পাশে বসতে দাও, খুশিতে গলে যাব। কী জানো তুলিরেখা, সারাজীবন ছোটাছুটি করে দেখেছি পালাবার জন্যে পৃথিবীটা বড্ড ছোট জায়গা। ঘুরে ফিরে আয়নার সামনে গিয়ে সেই নিজের মুখে পড়তেই হয়। তারচে বরং জীবনটাকে এমনি ছাঁচে ঢালা ভালো যাতে যেকোনো সময় নিজের প্রতিবিম্বের চোখে চোখ রেখে সটান দাঁড়ানো যায়। তাইতেই জীবন থেকে ভয় উবে গিয়ে ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের সামনে বুক টান করে দাঁড়াবার শক্তি মেলে।
আচ্ছা তোমার পনের একশ বছর আগের হলে আমারটা কবের যেন ? ঠিক মনে করতে পাচ্ছি না...! সাধে কী আর ছন্দ আমায় ভুত বলে !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
facebook
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভালো লাগলো
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
খালি 'ভালো লাগলো'! ব্যাস ? দু একটা সজলমার্গীয় দর্শন শুনতে পাইনা কি ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
দর্শন চিন্তায় খরা যাচ্ছে আজকাল । আমার প্রিয় একটা কোট হচ্ছে, "জীবন যেমনই হোক তা বেঁচে থাকার যোগ্য"। তাই বেঁচে থাকা খুব একটা উপভোগ না করলেও মরে যাওয়াকে কখনো অপশন হিসেবে চিন্তা করি না।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
করেন কি !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
জানি এই ইমো এই লেখার জনে্য বেমানান, তবে জীবনের সাথে পেরে উঠছিনা। এখন তাই যাই ঘটুকনা কেন, হাসি দিয়ে পাশকেটে যাই, এই হলো হাসির ইমোর কারণ। তবে আপ্নার লেখাকে সাধারণত পাশকেটে যাই না। বেঁচে থাকার তীব্রতা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি, সুখের কতটুকু জানি না। লেখায়
শাফি।
জীবনের টুকরো টাকরা ভালো লাগাগুলোর মলম দিয়েই না তীব্রতার ক্ষতটা ঢেকে রাখা যায় অনায়াসে। খুঁজে দেখুন, হয়ত রোজকার জীবনে সেটা একটুকরো মায়া রোদ্দুর, বা বারান্দার রেলিঙে বসা নীল প্রজাপতি হয়েও আসে মাঝে মাঝে। এই টুকরো ভালোলাগাগুলো বুভুক্ষের মত শুষে নেয়া চাই। জীবনে খুব বড় সুখের আশায় ক্ষুদে সুখগুলোকে অবহেলা করতে নেই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশাদি বলার কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা, তবে এমন ছোট্ট ছোট্ট মিতিনের জন্য অনেক অনেক দিন বেঁচে থাকা যায়।
আমার নানি আশীর্বাদ করতেন কি করে জানো ? হাত দিয়ে হাঁটু সমান ধরে একটু একটু করে হাত উঁচুতে ওঠাতেন আর বলতেন, এতটা এতোটা এতটা এতোটা এতটা এতোটা এতটা এতোটা...এতোওটা বাচ্চার মা হও ! সেইরকম করে আশীর্বাদ করবো ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
থ্যাঙ্কস উদাস। কমেন্টের ঘরে আপনাদের নাম ভীষণ ভাললাগা দেয়। কৃতজ্ঞতা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কি লিখব বুজছিনা, কথা হারিয়ে ফেলেছি,
আপনাদের ভাললাগাই যে আমার জন্য শক্তি হয়ে ওঠে কল্যাণ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
লেখাটা পড়ে খানিকটা অপ্রাসঙ্গিকভাবে জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা লেখাটার কথা মনে পড়ল
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
উঁহু উঁহু, এরকম আলুনে কমেন্ট ব্যান করেছি জানেন না বুঝি ? আপনার থেকে দুটো একটা মিষ্টি মাইনাস, ভুল ধরানো এইসব না পেলে লিখে স্বস্তি কই?!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
প্রিয় আশালতা, মিতিনের মত আমিও চাই আপনি সারাজীবন বেঁচে থাকুন...কারণ আপনি আবেগগুলো ছুঁয়ে দিতে পারেন...
ভালোবাসা জানবেন...
ইস্কান্দর বরকন্দাজ, আজকাল একটুও আরাম করে মন খারাপ করতে পারিনা জানেন। যখনি মনটা একটু দুক্ষু হব হব করে, আমার পুরনো পোস্টগুলোয় ঢুঁ মারলেই আপনাদের এরকম দারুন দারুন কমেন্টগুলো চোখে পড়ে আর মন বলে, এত ভালবাসা যে পেয়েছে তার আবার দুঃখ কিসের !? আর ওমনি দুম করে মন ভালো হয়ে যায়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
এতো সুন্দর লিখেন আপনি!
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
এই যাহ্, আপনার পোস্ট পড়লেই তো আমি বলি, এতো সুন্দর লিখেন আপনি !! ওর এক কানিও যদি পেতাম !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
জীবনটা একাধারে কি সুন্দর আর মর্মান্তিক হতে পারে!
কাঠের নৌকায় বসে সেন্টমার্টিন চ্যানেলের সেই ভয়ংকর ঢেউগুলি দেখার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আরেকজনের কথা শুনে ভাল্লাগছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হুম......আর বোলেন না, সেন্ট মার্টিনে যে কবার গিয়েছি প্রতিবারই দারুন সব এক্সপেরিয়েন্ন্স হয়েছে। খালি ছবি ভালো তুলতে পারিনা এই দুঃখ থেকে গেল আজীবন। ঢাল তলোয়ার নিয়ে ঘুরে বেড়াই, যুদ্ধ করতে আর পাইনা, আফসোস !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আপনার লেখাটা পড়ে বহুদিন আগে পড়া একটা উর্দু শায়েরী মনে পড়ে গেল। শেয়ার করছি।
" হর কই কাভি না কাভি ইছ্ দুনিয়াছে রেহাহ্ চাহতে হ্যায়,
ফিরভি সব কই ইছ দুনিয়াছে রেহাহ্ হনেছে ডরতা হায়।"
( অনেকদিন আগে পড়া, হুবহু লিখতে পেরেছি কিনা জানিনা।)
মন্তব্য : প্রৌঢ়ভাবনা
শের শায়েরি আমার ভালো লাগে, যদিও পুরোটা বুঝতে পারিনা। শব্দের ঝোলায় ঘাটতি পড়ে। আর আপনার এই শায়েরি তো দেখি আমার লেখার সারমর্ম হয়ে গেল। কার লেখা এটা জানতে ইচ্ছে করছে। শুভেচ্ছা রইল।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
দুপুরে পড়েছিলাম, দীর্ঘ এক মন্তব্যও করেছিলাম, কী যে হল বুঝলাম না। ঐ সময়ে করা বেশ কয়েকটি বিভিন্ন পোস্টের মন্তব্যই আসে নি/হয় নি!!!
সংক্ষেপে রিপিট করছি
আমি মৃত্যু অপছন্দ করি।
আমাদের অহঙ্কারের পরিবারপ্রথা টিকে থাকুক......
এই লেখাটি আপনার আরেকটি প্রভুখণ্ড!!!
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ প্রিয় পাঠক। কিন্তু... প্রভুখণ্ড ! তাই কি ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমার কাছে অন্তঃত!!
_____________________
Give Her Freedom!
আমার বড় বোনটার বয়স তখন কেবল ২৪।
হঠাৎ একদিন সকালে বল্লো, গলা ব্যাথা।
বাবা পিজির নাক কান গলার শিরোমণীর কাছে নিয়ে গেলেন সন্ধ্যেবেলায়।
নানারকম টেস্ট করে কতগুলো অষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো ৯টায়।
খেয়ে দেয়ে রাত করে টিভি দেখে আড্ডা মেরে ঘুমোতে গেল।
মধ্যরাতে ব্যাথায় নীল হয়ে একটা মোটে চিৎকার করে দুম করে মরে গেল
রাত আড়াইটায়।
পরে টেস্টের রেজাল্ট এনে জানা গিয়েছিল, ওর থ্রোট ক্যান্সার ছিল।
তাও এ্যাডভান্স স্টেজে।
ক্যান্সার রোগের এই কেমো দেওয়া দেখেছিলাম আম্মার এক বান্ধবীর অসুখের সময়।
খালাম্মার চুল অনেক লম্বা ছিল। কেমোর পরে তার চুল পড়ে টাক মাথা দেখেই আমি কেঁদেছিলাম প্রথম খালাম্মার জন্য। আমার বুবুর চুলও ছিল গোড়ালী থেকে বিঘত খানেক উপরে। খালাম্মার ওরকম টাক মাথা দেখার পর মনে হয়েছে, বুবু টুপ করে মরে গিয়েই ভাল হয়েছে। তা না হলে কত যন্ত্রনাই না সইতে হত!
আপনার হেনার জন্য অন্তর থেকে দোয়া রইলো আশাদি।
আর আপনার মিতিন অনেক বড় হোক কিন্তু আপনি ঠিক এরকমটাই থাকুন, চিরদিন।
বন্দনা, অনেকবার অনেকবার আপনার কমেন্টটা পড়লাম। ঠিক কী বললে ঠিকঠাক হয় বুঝে পাচ্ছিনা। আমার নিজের কোন বোন নেই, তাই ঠিক জানিনা বোনের জন্য কতটা বা কেমন খারাপ লাগতে পারে। আমার ভাইয়া আমাকে একদম ফোন টোন করেনা, হটাত মটাৎ এক আধদিন ফোন করে কেমন একটা গলায় বলে, কিরে কেমন আছিস?, ওমনি আমার গলা বুজে আসে আর ভালো লাগায় কান্না পেতে থাকে। বোনেদের জন্যেও নিশ্চয় এরকম মায়া থাকে সবার ! সেই বোন না থাকার কষ্টটা নাজানি কতটা গভীর !
সচলের ছুতোয় কত মানুষের ভালো লাগা পেলাম। আমার ঝুড়ি উপচে গেছে ফুলে...
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
পড়েছি..
ধন্যবাদ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
অসাধারণ লেখা। হ্যাঁ, বেঁচে থাকাটা আসলেই তীব্র সুখের! তাইতো কবি বলেন,
(শামসুর রাহমান, 'এই মাতোয়ালা রাইতে')
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আমি কোনকালেই ঠিক সময়ে ঠিক কথা বলতে শিখিনি। কিছু একটা হলে কি বলব ভাবতে ভাবতেই ট্রেন ছেড়ে চলে যেত। শুধু এই খামতি পুরবার জন্যেই আমার কবি হতে ইচ্ছে করে, যারা কিনা কী দারুন করে ঠিক সময়ে ঠিক লাইন আনতে পারে। আপনার দেয়া এই কবিতাটা পড়ে আবার মনে হল, আহা একদম যথার্থ !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশালতা আপা আপনার লেখা চমৎকার লাগলো, যথারীতি। খুব সহজে আপনার লেখা মন ছুঁয়ে যায়, তবে সেই মন খারাপও হলো হেনার জন্যে।
বেশ আগে কবি শ্রাবণী সেনের মৃত্যুতে এই কবিতাটি লিখেছিলাম। আপনার লেখা পড়ে আবারো মনে পড়লো যে 'বিলুপ্তির শান্ত অভিশাপ'-এ আমরা সবাই দণ্ডিত; কেউ আগে আর কেউ পরে।
-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী
চমৎকার কবিতাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ সুমন তুরহান। আমি নিজে বই টেনে খুব বেশি কবিতা পড়ি না, কিন্তু অন্যেরা পছন্দের কবিতা দিলে ভারী ভালো লাগে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
'বেঁচে থেকে কোন লাভ নেই,
আমি বলি না তা---
কারো লাভ আছে, সকলেরি... হয়তো বা ঢের!'
# জীবনানন্দ দাশ।
তাই তো 'জীবনযাপনে আজ যত ক্লান্তি থাক, বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু।'
#শক্তি চট্টোপাধ্যায়
দু- দুটো কবিতা কোট করলাম, তারপরও আলাদা করে 'লেখাটা ভাল লেগেছে' এরকম কিছু কি বলতে হবে?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হুঁউ হপে তো ! পষ্ট না বললে বুড়ো মানুষ শুনতে পাইনা তো
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভাল থাকবেন , মিতিনের জন্য। ভাল লিখেছেন ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
অপুর্ব সুন্দর হয়েছে লেখাটি। খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আশালতা।
ধন্যবাদ আসমা খান। অনেক ধন্যবাদ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নতুন মন্তব্য করুন