বন্ধু সমেত ছোট ভাই জাবেদের ফোন পেয়ে জানতে পারলাম বন্ধু বর তাজুর মা আর নেই। খবরটা শুনেই আমার বুকটা কেন জানি কেঁপে উঠলো। কখন যেনো আমাকেও এ নিষষ্ঠুর খবরটা শুনতে হয়! বাবার কবরেতো মাটি দেয়ার সৌভাগ্য হয়নি। এ যে কত বড়ো যাতনা, যার জীবনে ঘটে গেছে এ মরমন্তুদ নিষঠুরতা সেই কেবল উপলব্দি করতে পারে।
গত সপ্তাহে তাজু ভাইকে AIB ব্যংকের কিঊএ দাড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম। আমার ব্যাংকিং কাজ শেষ করে যখন বেরুচ্ছিলাম ঠিক তখনি তার মূখোমুখি হলাম। আমাকে দেখে প্রায় কাণ্ণা জড়িত কণ্ঠে তার মার অসুসথতার খবরটা জানিয়েছিল। লিবার সিরসিস হয়েছে। এও জানালেন আগামী সপতাহেই টিকেট কেটে দেশে চলে যাবেন। কলেজে পড়া কালিন সময়ে ডঃ ফরিদা হোসেনের একটি গল্পের মাধ্যমে লিবার সিরসিসের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম। তাই এর ভয়ঙ্করতা সম্পর্কে আমার জানা ছিল। তাই আমিও সমমতি সূচক মাথা নাড়িয়ে দ্রূত দেশে যেতে বললাম।
ভদ্রলোক যে দিন রাতে ফ্লাই করবেন ঠিক সেদিন দুপুরে তার মাতৄ বিয়োগের খবরটা পেলেন। মমতাময়ী মায়ের চেহারা আর দেখা হলোনা। কবরে দুমোঠু মাটি দেয়ার সুযোগ হলোনা। কেবল জড়াতে পারলো দু ফোটা অশ্রূ।
এ নিষঠুরতা, এ জ্বালাময়ী ঘঠনা শুধু একজন প্রবাসী তাজু ভাইয়ের ক্ষেএই নয়, হাজারো প্রবাসীর জীবনে ঘঠে যাচছে এসব নিষঠুরতা অহরহ। বলতে গেলে যাদের প্রতিটি মুহূর্তই কাটে ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সহজ-সরলতার মাধ্যমে, সেই প্রবাসীরাই নিষ্পেষীত, প্রতারিত ও সমালোচিত হন পরিবার, সমাজ থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের প্রতিটি স্তরে। শুধু তাই নয় ভিন দেশে অবস্থান করেও কিছু দেশীয় কুচরিত্র সম্পন্ন মতলববাজরা যে প্রতারণা, ধূর্ততা ও অনৈতিক ক্রিয়া-কলাপের আশ্রয় নেয় তার বদনামের দায়ভারটা মাথায় নিয়ে চলতে হয় ঐ সহজ-সরল প্রবসীদেরকেই।
অথচ ফ্যামিলি মেমবার থেকে শুরু করে আত্মীয়- স্বজন সহ যারা দেশে আছেন তারা মনে করেন প্রবাসীরা কতো স্বর্গ সুখেই না আছেন! তারা কেবল বাহ্যিক কৃত্রিম দিকটাই দেখেন। প্রবাসীদের ভেতরের দুঃখ ও বেদনাকে উপলবদি করার অন্তর চোখের বড়ো অভাব।
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
মন্তব্য
একই লেখকের একটি গল্প ও একটি কবিতা নীড়পাতাতে দেখা যাচ্ছে। মডারেটরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নতুন মন্তব্য করুন