• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

সূর্যসেনকে নিয়ে বোম্বের বুজরুকি ছবি Khelein Hum Jee Jaan Sey

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: রবি, ২৫/০৯/২০১১ - ১:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছবিটার নাম দেখে বোঝার উপায় নেই যে এই ছবিটা চট্টগ্রামের সেই বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে যার মহানায়ক সূর্যসেন। এত বছরেও বাংলাদেশ পারেনি সূর্যসেনকে নিয়ে একটা যুতসই ছবি তৈরী করতে, বোম্বে অন্ততঃ বাংলাকে সম্মান দেখিয়েছে ছবিটা তৈরী করে। সেই ভেবে মনে মনে পরিচালক Ashutosh Gowariker এর উপর কৃতজ্ঞতাবোধ নিয়ে ছবিটা দেখতে শুরু করি। কিন্তু ছবি যতই এগোতে থাকে কৃতজ্ঞতাবোধ কমতে থাকে আর মুখের ভেতর জমতে থাকে বিবমিষা তরল। মাঝপথ পেরোবার আগে পরিচালকের উদ্দেশ্যে একদলা থুতু তৈরী হয়ে যায় মুখের ভেতর। ওটা বাথরুমে ফেলে এসে কোনমতে ছবির বাকী অংশটা শেষ করি নেহাত ১০০ টাকা খরচ করে কিনেছি বলে। ছবিটার নাম Khelein Hum Jee Jaan Sey।

যদি কারো বিস্তারিত পড়াশোনার সময় না থাকে, ঘটনার উপর বিশদ জ্ঞান লাভের সুযোগ না থাকে, তাহলে ইতিহাস নির্ভর ছবি না বানানোই উচিত তার। নয়তো ইতিহাস বিকৃতিকারী হিসেবে নাম উঠে যাবার সম্ভাবনা থাকে দর্শকের খাতায়। বিকৃতিটুকুও সয়ে নেয়া যেত যদি ছবিটাকে কমার্শিয়াল ছবি হিসবে ঘোষণা করা হতো। কিন্তু পরিচালক সচেতন ভাবে ছবি শুরুর আগেই গম্ভীরতার সাথে জানান দেন, ইহা একটি সত্য ঘটনা, বর্ণিত সকল চরিত্র আর ঘটনা বাস্তব। এই ঘোষণাতেই পাঠকের মনে আলাদা চাহিদা তৈরী হয়ে যায় এবং সেটাই সমস্যা করেছে ইতিহাস জানা পাঠকদের।

পরিচালক হয়তো ছবিটা নেহায়েত বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই বানিয়েছে। ধরেই নিয়েছে দর্শক ইতিহাসের অত বিস্তারিত জানবে না, বোম্বের আর দশটা ছবির ফরমেটে কিছু গান, কিছু দলনৃত্য আর খুচরা প্রেম জোর করে সেঁধিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে চেয়েছে।

IMBD তে যখন দেখি "Deprived of playing football by oppressive British, children decide to join a group of freedom fighters" এই বাক্যটা তখন বুঝতে বাকী থাকে না পরিচালক ছবিটাকে কতোটা খেলো করে ফেলেছেন। এই লাইন পড়ে কেউ ভাবতে পারে এটা ফুটবল খেলা সংক্রান্ত কোন একটা গণ্ডগোলের ছবি। যার ফলে ভারতবর্ষে বিদ্রোহ করেছে কিছু বাচ্চালোগ। এটা যে পুরো ভারতবর্ষের স্বাধীনতা বিষয়ক একটি চলচ্চিত্র সেটা কিছুতেই মাথায় আসবে না।

উপমহাদেশীয় চলচ্চিত্রে প্রেম ছাড়া কোন ছবি তৈরী করা যায় না বলে একটা স্থায়ী ধারণা আছে। সেই ধারণাকে পোক্ত করতে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের মতো ইতিহাসসমৃদ্ধ ঘটনার মধ্যেই সুচারুরূপে প্রেম ঢুকে গেছে সুক্ষ্ণভাবে। এই ছবিতে প্রধান নারী চরিত্র দুজন। পুরুষ চরিত্র অসংখ্য।

পুরুষ প্রেমহীন থাকতে পারলেও নারীকে কারো না কারো প্রেমে পড়তেই হবে এরকম একটা জিনিসও পরিচালকদের মাথার ভেতরে কাজ করে। ফলে দুই নারীকে যুতসই দুজন বিপ্লবীর সাথে জুড়ে দেয়া হয়। কল্পনা দত্তকে সূর্যসেনের সাথে, প্রীতিলতাকে নির্মল সেনের সাথে।

সূর্যসেনের সাথে প্রীতিলতার সাক্ষাত হয় অস্ত্রাগার লুণ্ঠন ঘটনার দুবছর পরে ১৯৩২ সালে। কিন্তু ছবিতে দেখা যায় প্রীতিলতা বেণী দুলাতে দুলাতে সখীর হাত ধরে সূর্যসেনের সাথে সাক্ষাত করতে আসে অস্ত্রাগার লুণ্ঠন ঘটনার অনেক আগে। এবং বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সূর্যসেনের সাথে দৈনিক যুক্ত হয়ে যায়। হাসতে হাসতে বিপ্লবীর নাম তালিকাভুক্ত করে প্রীতিলতা সূর্যসেন ওরফে অভিষেক তৃপ্তির চোখে তা দেখতে থাকে, তার বিপ্লব তৈরী হতে থাকে পরিচালকের খেলা ঘরে।

ছবিতে দেখায় রামকৃষ্ণ গহীন জঙ্গলে ট্রেনিং নিতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়(সম্ভবত: নিহত হয়) যেখানে উপস্থিত প্রীতিলতা ও সূর্যসেন সহ অন্য সবাই। কিন্তু ইতিহাস বলে রামকৃষ্ণ বলে এক বিপ্লবী বোমা তৈরী করতে গিয়ে আহত হয় বিস্ফোরণে নগরীর একটা বাসায়। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে, পরে ফাঁসি দেয় ১৯৩১ সালে। প্রীতিলতা তখনো বিপ্লবের সাথে যুক্ত হননি, তবু আগ্রহ ছিল প্রবল। রামকৃষ্ণের সাথে জেলখানায় বহুবার দেখা করে। সেই ঘটনা সূর্যসেনের সাথে প্রীতিলতার সাক্ষাতের বছরখানেক আগে।

ছবিতে দেখায় কল্পনা ও প্রীতিলতাকে তার পরিবার কোলকাতায় পাঠিয়ে দেয় বিপ্লবীদের সাথে মাখামাখির কারণে। ওখানে বসে পত্রিকায় পড়ে সূর্যসেন ১৮ এপ্রিল ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুট করেছে। অথচ ইতিহাস বলে যখন অস্ত্রাগার লুট হয় তখন প্রীতিলতা মাত্র ইন্টার পাশ করেছে, ঘটনার পরদিন ১৯শে এপ্রিল সে সে চট্টগ্রাম আসে। বেথুনে পড়তে যায় আরো কিছুদিন পর।

ছবিতে দেখি প্রীতিলতা কল্পনা দত্তকে নিয়ে কোলকাতা থেকে বিপ্লবীদের জন্য বোমা আর লিফলেট নিয়ে একসাথে ফিরছে। স্টেশনে কল্পনা ধরা পড়ে, প্রীতিলতা নির্বিঘ্নে সরে পড়ে। এরকম কোন ঘটনার কথা ইতিহাস আমাদের বলে না। বরং ইতিহাস বলে কল্পনা দত্ত বেথুন থেকে প্রীতিলতার এক বছর আগেই চট্টগ্রাম কলেজে চলে আসে বদলি হয়ে। প্রীতিলতা বেথুন থেকে বিএ পাশ করে চট্টগ্রাম ফিরে আসে ১৯৩২ সালে। ওই বছর মে মাসের শেষভাগে সূর্যসেনের সাথে দেখা হয় প্রীতিলতার। তার কয়েকমাস পরেই ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করার পর আত্মাহুতি দেয় প্রীতিলতা।

প্রীতিলতার আত্মাহুতি ঘটনায়ও পরিচালক ধূম্র উড়িয়েছেন। প্রীতিলতা দেশের উদ্দেশ্যে প্রাণ উৎসর্গ করেছে বলে ইতিহাস আমাদের জানালেও এখানে দেখা যাচ্ছে প্রীতিলতা তার জানটা শেষ করে দিচ্ছে জানেমান নির্মল সেনের উদ্দেশ্যে। নির্মল সেন তার কিছুদিন আগে ধলঘাটের সংঘর্ষে নিহত হন। ইতিহাস প্রীতিলতার সাথে নির্মল সেনের কোন রকম প্রেমময় সম্পর্কের ইঙ্গিতও দেয় না। কিন্তু পরিচালক গাঁজা খেয়ে ছবিতে প্রেম আবিষ্কার করে বসেছেন।

এরকম প্রচুর ছোটবড় অসংগতি আর ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে তৈরী হয়েছে 'খেলে হাম জি জান সে'। পরিচালক ইতিহাস নিয়ে ভালোই খেলেছেন। খেলাটা মোটেও ভালো লাগেনি। ইতিহাসের সত্যঘটনা অবলম্বনে তৈরী বলে ঘোষিত যে কোন চলচ্চিত্রের কাছে প্রত্যাশা থাকে স্বাভাবিক ঘটনা নির্ভর ছবি। বাণিজ্যিক বুজরুকি নয়।


মন্তব্য

সুপ্রিয় দেব শান্ত এর ছবি

ধিক্কার পরিচালককে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ইতিহাসের বাণিজ্যিক ব্যবহার

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

জানতাম না নীড়দা। এরকম বিকৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মিথ্যা প্রত্যাশা তৈরি করার কী দরকার পরিচালকের!!! :(


_____________________
Give Her Freedom!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মিথ্যা প্রত্যাশার পেছনে বাণিজ্যই মূল।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সুমাদ্রি এর ছবি

ধন্যবাদ দারুণ একটা বিষয়ের অবতারণা করেছেন বলে। ইতিহাসের উপর বস্তুনিষ্ঠ কোন ছবি আজো পর্যন্ত এ উপমহাদেশে তৈরী হয়েছে বলে জানিনা। সবগুলোই পয়সা কামানো আর স্রেফ বিপ্লবীদের সংগীত বা নৃত্য কিংবা বাচিক শিল্পী অথবা খেলোয়াড় বানানোর জন্যই করা। এজন্য আমাদের অঞ্চলে এখন অনেকের কাছে বিপ্লবের কোন আদর্শ নেই। বিপ্লব মানে একটা রোমান্টিসিজম। আমি চট্টগ্রামের মানুষ, ধলঘাট আমার মামাবাড়ি; প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার মা'র নিকট আত্মীয় ছিলেন। এ সব এলাকার অনেকেই সূর্যসেন, প্রীতিলতা, কল্পনা, অম্বিকা এদের নামও জানেনা এখন। প্রীতিলতা বা সূর্যসেন হলের কজন ছাত্র-ছাত্রী এই মহান বিপ্লবীদের আদর্শ ও কাজ সম্পর্কে ধারণা রাখেন তা নিয়েও আমার সন্দেহ। আর বাংলাদেশে তো কোন এক নেতা সূর্যসেনের গায়ে সন্ত্রাসীর তকমাই লাগিয়ে দিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত গাঁধী'র উপর তৈরী একমাত্র প্রশংসিত ছবি একজন অভারতীয়ের হাতে তৈরী, পশ্চিমবঙ্গের বাইরে সূর্যসেনের চেয়ে ভগৎ সিং-কে লোকে বেশী চেনে, সেখানে সূর্যসেনের উপর যা তা কিছু একটা বানিয়ে দর্শককে পপকর্ন গেলানোর ফন্দিটা আশুতোষের ভালোই। সূর্যসেনের রেখে যাওয়া স্বপ্নের কথা একদিন সবাই জানুক এই প্রত্যাশায় রইলাম। নীড় সন্ধানীকে আবারো ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ধলঘাটের সাথে আপনার আত্মীয়তা আছে জেনে ভালো লাগলো। আমার নিজেরও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন বাস করে ওই গ্রামে। তাই প্রীতিলতার পোড়ো ভিটে ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছিল।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কল্যাণF এর ছবি

চমৎকার একটা বিষয় হাইলাইট করার জন্য আপনাকে (ধইন্যা)

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনাকেও (গুড়)

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আশালতা এর ছবি

আমার ইন্টিউশান দেখি খুবই ভালো। মনেই হয়েছিল এটা একটা ফালতু জিনিষ, দেখি নাই; ভাগ্যিস !

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ডিভিডির কাভারে অভিষেকের ছবি দেখে আমার মনটাও খচখচ করছিল। কিন্তু কেনার আগে এমন একজন এটাকে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন অবিশ্বাস করতে পারিনি।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ধিক্কার!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ধিক্কারের ইমোর দরকার বোধ করছি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি

ধিক্কার! ধিক্কার!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ধিক্কার পৌঁছে যাক জায়গামতো!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

ছবিটা সম্পর্কে অনেক আগে প্রথমালোতে একটা রিভিউ পড়ে বুঝতে পেরেছিলাম, এটাতে ঘাপলা থাকবে। সেটা পড়ে যেটা মনে হয়েছিল, প্রীতিলতাকে ছবিতে তেমন হাইলাইট করা হয়নি, বরং সূর্য সেনের প্রেমিকা হিসেব মূল নায়িকা হিসেবে কল্পনা দত্তকে জোর দেয়া হয়েছে। বস্তুত, প্রীতিলতার কথা- লেখাটার কোথায় ছিল বলে মনে হয়না। কাহিনীকে যে জোর করে বাণিজ্যিক বানানো হচ্ছে, আভাসটা ওখান থেকেই পেয়েছি।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কল্পনা দত্তকে নায়িকা বানাবার ইতিবৃত্ত নীচের কমেন্টে দেখুন।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নীরব পাঠক এর ছবি

"যাহাদের কথা ভুলেছে সবাই
তুমি তাহাদের কিছু ভোল নাই,
বিস্মৃত যত নীরব কাহিনী
স্তম্ভিত হয়ে বও।
ভাষা দাও তারে হে মুনি অতীত,
কথা কও, কথা কও।"

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ধন্যবাদ নীরব পাঠক!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

durer sourov এর ছবি

হক কথা।
লেখা পরে ভালই হল।
এই সিনেমা দেখে আর সময় অপচয় করব না।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ভালো সিদ্ধান্ত

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

বঙ্গসন্তান এর ছবি

এই সিনেমাটা মানিনি চ্যাটার্জির বই Do And Die : The Chittagong Uprising 1930-34 এর অবলম্বনে লিখা। মানিনি চ্যাটার্জি হলেন কল্পনা দত্ত'র ছেলের বউ। সুতরাং তার উপন্যাসে প্রীতিলতার চেয়ে তার শাশুড়ি মুখ্য চরিত্র হলে অবাক হওয়ার কিছুই নাই... আমি উপন্যাসটা পড়িনি কিন্ত মনে হয় প্রেম এর ঘটনা পরিচালকের নিজের সৃষ্টি!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মানিনি চ্যাটার্জির সাথে কল্পনা দত্তের আত্মীয়তার কথা আমিও শুনেছিলাম। বোঝাই যাচ্ছে কেন প্রীতিলতার বদলে কল্পনা নায়িকা হয়ে উঠলো ইতিহাস ছাপিয়ে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

হিমু এর ছবি

কোয়েন্টিন টারান্টিনো যেমন বিকল্প ইতিহাসকেন্দ্রিক সিনেমা বানিয়েছে, ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস, কিংবা আমাদের আবুলকন্যা যেমন বানিয়েছে মেহেরজান, গোয়ারিকার হয়তো সেইরকমই কিছু বানিয়েছে। যে যার মতো ঘরে ঘরে ইতিহাস গড়ে তুলছে। আপনি আপাতত ১০০ টাকা ফিরত চেয়ে গোয়ারিকারকে মেইল দেন।

একটা দুষ্ট কথা মাথায় এলো। লোকটার নাম আশুতোষ গোয়ারিকার না হয়ে গোয়াতোষ আসুরিকার হলে এই সিনেমার ডিরেক্টরের নাম হিসেবে এক্কেবারে খাপে খাপ মিলে যেতো।

কল্যাণF এর ছবি

=)) মন্তব্যে (জাঝা)

নীড় সন্ধানী এর ছবি

শেষ প্যারাটা পড়লে আশুতোষ মুর্ছা যেতে পারে :))

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

molecule এর ছবি

আশুতোষ গোয়ারিকর আগে ক্রিকেট নিয়ে লাগান বানিয়েছিলো তাই এইবার ফুটবল নিয়ে "খেলেংগে............." বানিয়েছে। পরবর্তীতে হকি-বাস্কেটবল আসবে মনে হচ্ছে। ;)

আপনি তো এই ছবি পুরো দেখার ধৈর্য্য দেখিয়েছেন নীড়দা, আমি শুরু করেই অভিষেকের ভাবের উপর সুর্য্য সেনের আগাম ফাঁসি দেখেছি, তাই কয়েকমিনিট পরে বাদ। বিপ্লবী হলেই ওমন ভাবধারী হতে হবে! সাথে স্লোমোশনে ডায়ালোগ বলা।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনি তো ভীষণ সচেতন দর্শক দেখা যাচ্ছে :))
আমি কানে তুলো গুঁজে বসে ছিলাম ছবিটার শেষ পর্যন্ত দেখতে। :(

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সুমন তুরহান এর ছবি

ইতিহাস নিয়ে বলিউডের এই বেসাতি করার নিন্দা জানিয়ে গেলাম।

-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বেসাতি প্রতিনিয়তই করছে ওরা, এটা নেহাত আমাদের ঘরের কাহিনী বলেই চোখে লাগলো বেশী

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ফাহিম হাসান এর ছবি

মেজাজটাই খ্রাপ হয়ে গেল

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আমাদের নায়কদের ওরা যেভাবে খেলাচ্ছে, মেজাজ খারাপ হবারই কথা

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

দুর্দান্ত এর ছবি

যতদুর জানি এই ছবিটি মানিনী চ্য়াটাররজির ডু অর ডাই বইটি অবলম্বন করে বানানো। আমার মনে হয়েছে ছবিটি বইটির কাছাকাছি থাকতে পেরেছে। আপনি বইটি পড়লে বুঝবেন আমি কি বলছি। বইটির ঐতিহাসিক সত্য়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে।

আরেকটা কথা, প্রীতিলতা ১৯২৯ সালে ইডেন কলেজ থেকে ইন্টারে পঞ্চম হন। অস্ত্রাগার লুঠ হয় ১৯৩০ এর এপ্রিলে। আপনি বলছেন অস্ত্রাগার লুঠের সময়ে সালে তিনি ইন্টার পাশ করেন। কোনটা ঠিক?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ছবিটা যদি মানিনি চ্যাটার্জির বইটার কাছাকাছি হয়, তাহলে বইটা ইতিহাস থেকে দূরে অবস্থান করছে। আমি মানিনির বইটা পড়িনি, কিন্তু ইতিহাসের সামান্য পাঠ আছে। তাই বলতে পারি কয়েকটা স্পষ্ট ঘটনার সিকুয়েন্স একদম বানোয়াট। ছবিতে দেখানো হয় রামকৃষ্ণ বোমায় আহত/নিহত হচ্ছে প্রীতিলতা সূর্যসেনের চোখের সামনে এক ট্রেনিং সেশানে। কিন্তু বাস্তবে সূর্যসেনের সাথে প্রীতিলতার প্রথম দেখা হয় ওই ঘটনার দুবছর পর।

প্রীতিলতা এসএসসি পাশ করেছে ১৯২৮ সালে। আমার কাছে তার এসএসসি সার্টিফিকেটের একটা কপিও আছে। তাই এইসএসসি পরীক্ষা ১৯৩০ সালেই দিয়েছে এটাই সত্য। আরো বিস্তারিত রেফারেন্সের জন্য এই লিংকে উঁকি দিতে পারেন।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

দুর্দান্ত এর ছবি

ধন্যবাদ। মানিনীর বইটি আপনার সমালোচনায় উপকৃত হবে। দয়া করে লিখুন।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সুযোগ পেলে বইটা পড়বো। ধন্যবাদ আপনাকেও :)

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হিন্দি দেখা হয় না
এটা দেখার ইচ্ছা বহুদিনের... ১৯৭১ নিয়াও একটা হিন্দি ফিল্ম আছে... সেটাও দেখা দরকার...

পোস্টটার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ নীড়দা

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সূর্যসেন নিয়ে আরেকটা ছবি হচ্ছে শুনলাম। নাম চিটাগং। ওটাও দেখার তালিকায় রাখতে পারেন।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তিথীডোর এর ছবি

আমিও চট্টগ্রামের মানুষ, পাহাড়তলি রেলওয়ে জাদুঘর আর ঝাউতলার রাস্তা পেরুতে গিয়ে 'প্রীতিলতা স্মৃতিস্তম্ভ' দেখেই বড় হয়েছি।
ভাগ্যিস বলিউডি যে কটা মুভি পাকেচক্রে দেখা হয়েছে, তার মধ্যে এ খানা নেই।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নীড় সন্ধানী এর ছবি

যারা অভিষেক পছন্দ করেন, তাদের অবশ্য অতটা খারাপ লাগবে না। :p
কিন্তু আমার কাছে এই কাষ্টিংটাই সবচে বিদঘুটে লেগেছে। সূর্যসেনের এই বিশালদেহী শরীর কল্পনা করা যায় না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

উচ্ছলা এর ছবি

ধৈর্য্য নিয়ে বলিউডি 'জিনিস' দেখেছেন, এইজন্য আপনার ধৈর্য্যশক্তিকে আভূমি প্রণাম ^:)^
এবং কংগ্র্যাচুলেশানস্! আপনার জীবন থেকে অমূল্য তিনটি ঘন্টা নর্দমায় পতিত হলো!!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

তিন ঘন্টা না, দেড় ঘন্টায় শেষ করছি। তবে ধৈর্যের ব্যাপারটায় দারুণ পাশ করেছি তাতে সন্দেহ নাই :)

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রানা মেহের এর ছবি

বিস্তারিত জানতামনা। সিনেমার কোন অংশের শুটিং চট্টগ্রামে হয়নি শুনেই মেজাজ খারাপ করে দেখিনি।
ধন্যবাদ আপনাকে লেখার জন্য

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নীড় সন্ধানী এর ছবি

চট্টগ্রামে সুটিং না করার অন্ততঃ একটা কারণ এরকম হতে পারে। চট্টগ্রামে এসে সুটিং করতে গেলে পুরো টীমের যে খরচ হতো, তা অভিষেকের পেছনেই খসে গেছে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সত্য নিয়ে ছবি বানাতে গেলে সততা ও সত্যতা নিশ্চিত করা দরকার। আমি ছবিটা দেখেছিলাম। আমার ছবি দেখা শুধুমাত্র টাইম পাসের জন্য। এ ছবিটাও যথারীতি বলিউডি ফ্যান্টাসি ও পেয়ার-মহব্বতের গল্প, ছবি দেখে এটুকু বোঝা গিয়েছিলো ঘটনার সাথে রঙচঙ মেশানো হয়েছে কিংবা অনেক ঘটনাকে বর্ণহীন করা হয়েছে। ছবিটাকে ইতিহাসউত্তীর্ণ মনে হয় নাই, যদিও সূর্যসেনের ইতিহাস বিস্তারিত জানতাম না। পোস্ট পড়ে গোঁজামিলগুলো জানলাম।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তানভীর এর ছবি

হিন্দি ছবি সাধারণত দেখি না। তবে এটা মুক্তি পাবার পরপরই খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতে বসেছিলাম এবং আধা ঘণ্টার বেশি দেখতে পারি নি। রুচি হয় নি।

তবে আপনার পোস্টেও কিছু তথ্যগত ভুল আছে। প্রীতিলতার সাথে সূর্য সেনের অস্ত্রাগার লুন্ঠনের আগেও দেখা হয়েছিলো। প্রীতিলতা বিপ্লবী দলে যোগ দেন ১৯২৬-২৭ সালে। তখন মেয়েরা সশস্ত্র কর্মকাণ্ডে জড়িত না হলেও, প্রচারণাসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত ছিলো। চট্টগ্রামে ১৯২৯ এ বিপ্লবী দল সূর্য সেনের নেতৃত্বে 'জিলা সম্মেলনের' আয়োজন করে। সে সম্মেলনে প্রীতিলতা, কল্পনা দত্তরা স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেন (সূত্রঃ 'স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রাম, লেখকঃ পূর্ণেন্দু দস্তিদার, বইঘর, চট্টগ্রাম ১৯৬৭)। এছাড়া ধলঘাটে ১৯৩২ এ সাক্ষাতের যে বিবরণ পাওয়া যায়, তাতে বোঝা যায় তাঁরা পরস্পরের পূর্ব পরিচিত। রামকৃষ্ণ বিশ্বাস চট্টগ্রামে এক বাড়িতে বোমা বানাতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণে আহত হয়ে ধরা পড়েন, সে বোমা বানানোর কারখানায় বোমার খোলগুলো কলকাতা থেকে মাস্টারদার নির্দেশে প্রীতিলতাসহ আরো কয়েকজন সরবরাহ করতেন। কাজেই, তাঁদের মধ্যে আগে দেখা না হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না।

পূর্ণেন্দু দস্তিদার তাঁর বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় প্রীতিলতা ১৯২৭ এ মেট্রিক পাস করেছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন। আপনি বলছেন আপনার কাছে প্রীতিলতার মেট্রিকের সার্টিফিকেট আছে। আপনি কি উইকির এই সার্টিফিকেটের কথা বলছেন? http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/8/8a/MatriculationPritilata.jpg উইকিতে এটা কেউ যে উদ্দেশ্যেই আপলোড করুক না কেন সার্টিফিকেটটা জাল বলেই সন্দেহ হয়। কারণ মেট্রিকের সার্টিফিকেটে বয়সের উল্লেখ থাকে। এখানে নেই। ফ্লিকারে ১৯১৯ সালের একটা মেট্রিকের সার্টিফিকেট পেলামঃ http://www.flickr.com/photos/manir/573564122/lightbox/
১৯২৮ সালের সার্টিফিকেটের তুলনায় অনেক পরিস্কার এবং তাতে বয়সের উল্লেখ আছে, নয় কি? এছাড়া ১৯২১ সালে তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে। তখনো কলকাতা থেকে সার্টিফিকেট দেয়ার কী কারণ থাকতে পারে? এরকম একটা সার্টিফিকেটের ছবি জোগাড় করে আমি-আপনি যে কেউই তো তাতে প্রীতিলতার নাম বসিয়ে স্ক্যান করে আপলোড করতে পারি। যেই করুক তিনি বয়সটা যোগ করতে ভুলে গেছেন। আপনার কাছে যে সার্টিফিকেট আছে তাতে কি বয়সের উল্লেখ আছে?

আপনার দেয়া লিংক থেকে বাংলা উইকিতে প্রীতিলতার নিবন্ধটাও পড়ে আসলাম। ঐ সার্টিফিকেটের মতোই কেউ একজন মনের মাধুরী মিশিয়ে এখানেও লিখে গেছেন কিংবা তিনি যে সোর্স থেকে লিখেছেন সেখানেই বানোয়াট কথাবার্তা আছে। উদাহরণ- "প্রীতিলতা দাদা পূর্ণেন্দু দস্তিদারের কাছে বিপ্লবী সংগঠনে যোগদান করার গভীর ইচ্ছার কথা বলেন"। পূর্ণেন্দু দস্তিদার তাঁর বইয়ে অর্ধেন্দু দস্তিদারকে বারবার তাঁর ছোটভাই বলে উল্লেখ করলেও প্রীতিলতা যে তাঁর বোন বা আত্মীয় এ কথা একবারও কোথাও বলেন নি। এমন একটা তথ্য তিনি চেপে যাবেন তা কি বিশ্বাসযোগ্য!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

প্রীতিলতা বিপ্লবী দলে যোগ দেন ১৯২৬-২৭ সালে, ঠিক আছে। কিন্তু তখনো প্রীতিলতা নিতান্তই স্কুল বালিকা। সূর্যসেনের কাছাকাছি যাবার সময় হয়নি তার। তাছাড়া বিপ্লবী দলে সূর্যসেনের হাত ধরে যোগ দেননি। দাদার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে বিপ্লবীদের ব্যাপারে আগ্রহী হয়েছিল। যে কয়টা বই পড়েছি তাতে জেনেছি সূর্যসেনের সাথে তার সাক্ষাত ঘটেছে ১৯৩০ সালের পরে। অস্ত্রাগার লুন্ঠনের সময় কিংবা তার আগে সূর্যসেনের সাথে প্রীতিলতার কোন সাক্ষাতের বিবরণ কোন বইতে বা স্মৃতিচারণে পাইনি। সেরকম কোন রেফারেন্স আপনার কাছে থাকলে স্বচ্ছন্দে দিতে পারেন।

আর সার্টিফিকেটের ব্যাপারটা জাল কিনা জানি না। কিন্তু ১৯১৮ সালে প্রথম শ্রেনীতে ভর্তি হলে ১৯২৮ সালে মেট্রিক দেবার হিসেবটি ঠিক আছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ততদিনে প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলেও তার আওতা বাড়েনি তখনো, কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়ই ছিল সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাই সকল সার্টিফিকেটও কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যু করতো আরো বেশ কয়েক বছর।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তানভীর এর ছবি

কিন্তু তখনো প্রীতিলতা নিতান্তই স্কুল বালিকা। সূর্যসেনের কাছাকাছি যাবার সময় হয়নি তার।

কিছু মনে করবেন না, এই অংশটা পড়ে কেন জানি হাসি পেয়ে গেলো। আর রেফারেন্স তো দিয়েছি, খেয়াল করেন নি বোধহয়। ১৯২৯-এর বিপ্লবী দলের 'জিলা সম্মেলনে' সূর্য সেন ছিলেন সভাপতি এবং প্রীতিলতা ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক। এখন যদি বলেন সভাপতির সাথে স্বেচ্ছাসেবকের সাক্ষাত হওয়ার কথা না, কাছাকাছি যাবার তখনো সময় হয় নি- সেখানে আমার কিছু বলার নেই।

উইকির সার্টিফিকেটখানা আসল নয়, ম্যানিপুলেট করা। প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির সাথে মেট্রিক পাসের সবসময় সম্পর্ক থাকে না। আর যেখানে মেট্রিকের সালই ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে প্রথম শ্রেণীতে কবে ভর্তি হয়েছিলেন সেটা সঠিক হবার সম্ভাবনা আরো কম। পূর্ণেন্দু দস্তিদার বেশ খেটেখুটে গবেষণা করে তাঁর বই লিখেছেন। নির্দ্বিধায় ব্রিটিশ ভারতে চট্টগ্রামের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে লেখা সেরা গ্রন্থ। সেখানে বেশ কয়েকবার উল্লিখিত ১৯২৭ সালই আমার কাছে বেশি বিশ্বাসযোগ্য। বইখানা পড়ে দেখতে পারেন।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনার সংযোজনগুলো অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্যতার দাবী রাখে। তবে মুশকিল হলো প্রীতিলতা ও কল্পনা দত্তের শিক্ষাদীক্ষার ব্যাপারে পরস্পরবিরোধী তথ্য মেলে। সত্যমিথ্যা যাচাই করা দুরূহ হয়ে যায়।

যেমন বেশীরভাগ জায়গায় আছে কল্পনা প্রীতিলতার চেয়ে এক বছরের সিনিয়র। কিন্তু এই লেখাটিতে ভিন্ন তথ্য পেলাম। এখানে বলা হয়েছে কল্পনা দত্ত প্রীতিলতার এক বছরের জুনিয়র। এবং এখানেও কিন্তু অর্ধেন্দু দস্তিদারের বইটির রেফারেন্স দিয়েই লেখা হয়েছে । প্রীতিলতার সাথে সূর্যসেনের 'দেখা' হয়েছে ১৯২৯ সালের মে মাসের সেই কংগ্রেস সম্মেলনে সুভাসচন্দ্র যাতে সভাপতিত্ব করেছিলেন। কিন্তু সেই সম্মেলনে প্রীতিলতা কল্পনা দত্ত কেবলমাত্র দলের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলেন। সেই সময় কোন মেয়েকে সদস্য করার নিয়ম ছিলনা। অস্ত্রাগার লুন্ঠনের পরেই মেয়ে সদস্য করা শুরু হয় সম্ভবত। সুতরাং ছবিটাতে যে সূর্যসেন প্রীতিলতাকে সমকক্ষীয় নেত্রীর ভূমিকায় দেখানো হয়েছে সেটা একেবারে বানোয়াট।

উইকিপিডিয়ার নীচের ভুক্তিটা যদি ভুয়া হয় এবং প্রীতিলতার সার্টিফিকেট কপি যদি নকল হয়ে থাকে তাহলে রাগীব বা অন্য কোন উইকি প্রশাসককে জানানো দরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। যদিও এই অংশটি যেসব রেফারেন্সের মাধ্যমে এসেছে তা ফেলে দেবার মতো নয়।

ঢাকায় যখন প্রীতিলতা পড়তে যান তখন “শ্রীসংঘ” নামে একটি বিপ্লবী সংঘঠন ছিল। এই দলটি প্পকাশ্যে লাঠিখেলা, কুস্তি, ডনবৈঠক, মুষ্টিযুদ্ধশিক্ষা ইত্যাদির জন্য ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ক্লাব তৈরী করেছিল। ঢাকায় শ্রীসংঘের “দীপালী সঙ্ঘ” নামে একটি মহিলা শাখা ছিল। লীলা নাগ (বিয়ের পর লীলা রায়) এর নেতৃত্বে এই সংগঠনটি নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য কাজ করত। গোপনে তাঁরা মেয়েদের বিপ্লবী সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ ও করত।[৩৬][৩৭][৩৮] ইডেন কলেজের শিক্ষক নীলিমাদির মাধ্যমে লীলা রায়ের সাথে প্রীতিলতার পরিচয় হয়েছিল। তাঁদের অনুপ্রেরণায় দীপালী সঙ্ঘে যোগ দিয়ে প্রীতিলতা লাঠিখেলা, ছোরাখেলা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন।[৩৯] পরবর্তীকালে তিনি লিখেছিলেন “আই এ পড়ার জন্য ঢাকায় দু’বছর থাকার সময় আমি নিজেকে মহান মাস্টারদার একজন উপযুক্ত কমরেড হিসাবে নিজেকে গডে তোলার চেষ্টা চালিয়েছি”।[৪০] ১৯২৯ সালের মে মাসে চট্টগ্রামে সূর্য সেন ও তাঁর সহযোগীরা চট্টগ্রাম জেলা কংগ্রেসের জেলা সম্মেলন, ছাত্র সম্মেলন, যুব সম্মেলন ইত্যাদি আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। নারী সম্মেলন করবার কোন পরিকল্পনা তখনও ছিলো না কিন্তু পূর্ণেন্দু দস্তিদারের বিপুল উৎসাহের জন্যই সূর্য সেন নারী সম্মেলন আয়োজনের সম্মতি দেন।[৪১] মহিলা কংগ্রেস নেত্রী লতিকা বোসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রীতিলতা ঢাকা থেকে এবং তাঁর বন্ধু ও সহযোদ্ধা কল্পনা দত্ত কলকাতা থেকে এসে যোগদান করেন। তাঁদের দুজনের আপ্রাণ চেষ্টা ছিল সূর্য সেনের অধীনে চট্টগ্রামের বিপ্লবী দলে যুক্ত হওয়ার কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তাঁদের ফিরে যেতে হয়।[৪২][৪৩] ১৯৩০ সালের ১৯ এপ্রিল আই এ পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ফিরে আসেন প্রীতিলতা।[৪৪] আগের দিন রাতেই চট্টগ্রামে বিপ্লবীদের দীর্ঘ পরিকল্পিত আক্রমণে ধ্বংস হয় অস্ত্রাগার, পুলিশ লাইন, টেলিফোন অফিস এবং রেললাইন। এটি “চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ” নামে পরিচয় লাভ করে। চট্টগ্রামের মাটিতে বিপ্লবীদলের এই উত্থান সমগ্র বাংলার ছাত্রসমাজকে উদ্দীপ্ত করে। প্রীতিলতা লিখেছিলেন “পরীক্ষার পর ঐ বছরেরই ১৯শে এপ্রিল সকালে বাড়ি ফিরে আমি আগের রাতে চট্টগ্রামের বীর যোদ্ধাদের মহান কার্যকলাপের সংবাদ পাই। ঐ সব বীরদের জন্য আমার হৃদয় গভীর শ্রদ্ধায় আপ্লুত হল। কিন্তু ঐ বীরত্বপুর্ণ সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে না পেরে এবং নাম শোনার পর থেকেই যে মাষ্টারদাকে গভীর শ্রদ্ধা করেছি তাঁকে একটু দেখতে না পেয়ে আমি বেদনাহত হলাম”

আপনাকে ধন্যবাদ মন্তব্যে অংশ নেবার জন্য।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

দ্রোহী এর ছবি

'লাগানের' ফর্মুলা ব্যবহার করে অস্কারে যাওয়ার ধান্ধা!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

হাহাহা, অস্কারে যাবার ধান্ধা মনে হয় না, তাহলে আরেকটু যত্ন করে তৈরী করতো 8)

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ইফতি এর ছবি

ধন্যবাদ। আমিও দেখেছি ছবিটা।

সুমাদ্রির সাথে একমত। পরিচালক বাণিজ্যের কথা ভেবেছেন বেশি, অভিষেকের অভিনয় আমার ভালো লেগেছে যদিও, কিন্তু তাতে কাহিনির মারাত্মক বিক্রিতি এবং চট্টগ্রামে শুটিং না করা, প্রীতিলতার চরিত্র লঘু করে ফেলার অপরাধ ক্ষমা পায়না। আমিও চট্টগ্রামের মানুষ,আমাদের পতেঙ্গায় কিংবা মুল শহরে আমি দেখেছি সূর্য সেন প্রীতিলতা নিয়ে তেমন কিছু জানেনা মানুষ।

ইতিহাস জানিনা বলেই তো জানিনা আমরা কথায় যাচ্ছি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।