জন্মনীড় ছেড়ে, চেনা মাঠ বন নদী পাহাড় ঝর্ণা সব কিছু ছেড়ে উড়াল দিয়েছিলাম, অচিন দেশের দিকে, জ্যোৎস্নাপালকের পাখিরা সেদিকে থাকে। জন্মজলের বিন্দুগুলো ঝরে পড়ে যাচ্ছিলো ডানা থেকে।
অনেকটা পথ ওড়া, নীচে কখনো ডাঙা কখনো জল। তারপরে পৌঁছাই, অচিনগাছে বাসা বাঁধি, ফল ঠোকরাই, খাই আর ভাবি কোথায় সেই জ্যোৎস্নাপালকের পাখিরা? চেনা-চেনা পাখিদের দেখি মাঝে মাঝে, ছোটো ছোটো দলবাঁধা ছাতারে, ওরা সবসময় দলবেঁধে থাকে আর খুনসুটি কি ঝগড়াঝাঁটি করে, ঠোকরায়। ওদের পালকে কেমন যেন দুঃখী ধূসর রঙ! আমি উড়ে পালাই অন্যদিকে।
তবু কেজানে কেন আর কিসের দায়ে বারে বারে ফিরে আসি উত্তরের পাহাড়ে! সব সুখদুখমন্থন করে সেই যে সুপ্রাচীন পাখি গেয়েছিলো নিদ্রাহারা গান, সেই গানের মায়াটানে। আমি সবকিছু এড়াই, তবু একে এড়াতে পারিনা কেন? দুঃখবালি মাখবো না বলে কত পথের আলাপ পথেই রেখে চলে গেছি, ভেতরের ওই অন্ধকার আমার চেনা বলে সেখানে যাই নি কখনো, সুকৌশলে এড়িয়ে গেছি আমন্ত্রণী হাসি। কিন্তু এই পাহাড় কেন ভুলতে পারিনা? কেন এখানে ফিরে আসি বারবার?
নিদ্রালু চোখে চুপ করে বসে থাকি নীলকদম্বের ডালে , বাতাসে ভেসে আসে সেই গান, প্রাচীন পাখি যে গান গেয়ে গিয়েছিলো কতযুগ আগে, কুলহারা সমুদ্রের মত সে গান, দিগন্তে নত হয়ে পড়া আকাশের হৃদয় থেকে ভেসে আসে সেই গান। আমি নড়তে চড়তে পারিনা, চুপ করে ঝিম হয়ে বসে থাকি যেন মহুয়াফুলের মধু পান করেছি আকন্ঠ।
বন্ধুরা বলে এই করেই নাকি আমি মরবো। ওই পাহাড় এক মস্ত ফাঁদ। ওই গানের মায়ায় ভুলিয়ে শিকারী বিঁধবে আমায় তীরে! আমি শুনি, বুঝি, কিন্তু কিছুই করতে পারিনা, যেই না সেই গানের রেশ শুনি বাতাসে, অমনি প্রাণপণে ডানা নাড়তে নাড়তে এসে পৌঁছাই পাহাড়ে, হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বসি নীলকদমের ডালে, তারপরে বুঁদ হয়ে যাই সেই গানে। কোথা দিয়ে যে প্রহরের পর প্রহর কেটে যায়, কোনো হুঁশ থাকে না আমার।
বন্ধুরা বলে, "ওসব মনের ভুল। আসলে কোনো গান নেই। ও মায়া, ও শুধুই মায়া। বাঁচতে চাস তো যাসনে আর ওখানে।"
আমি ওদের কথা শুনিনা, আমি তবু যাই, আমি শুনতে পাই যে গান! অকুল সমুদ্রের মত সে গান, দিগন্তে নত হয়ে পড়া আকাশের হৃদয় থেকে ভেসে আসে সেই গান- কী করে বলি ও সত্য নয়, মায়া?
একদিন পাহাড় থেকে ফিরছি ঘরে, বেশ রাত, দখিনা হাওয়া ঝুরুঝুরু করছে জারুলের ডালে ডালে, রক্তকাঞ্চনের পাতায় পাতায়। আকাশে ফালি চাঁদ বেশ পুরুষ্টু হয়ে উঠেছে, নারিকেলের পাতায় পাতায় পিছলে পড়ছে রুপোগলা আলো। হঠাৎ দেখা হলো এক চেনা পাখির সঙ্গে, আমি অবাক হলাম- সে একা! ওরা তো কখনো একা থাকে না!
সে কুশল সংবাদ জানতে চায়, আমিও জানতে চাই তার কুশলসংবাদ। আমরা কথা বলি পাশাপাশি উড়ে চলতে চলতে, অনেকক্ষণ কথা কই, অনেকটা পথ উড়ি পাশে পাশে, একসময় সে বিদায় চায়, অন্যপথে উড়ে যায় একা একা--আমি আবার ভাবি এ কেন একা ছিলো আজ? ওরা তো কখনো একা থাকে না!
তারপরে ভাবনাচিন্তা মুছে ফেলে টলটলে জলের দিঘির উপর দিয়ে উড়ে যেতে যেতে দেখি জলের ভিতরে চাঁদ! আমার মতন আরেক পাখিও উড়ে যাচ্ছে জলের ভিতর দিয়ে। জলের ভিতরে কি আরেক দেশ আছে? চেনাজানা সবকিছুই কি সেখানে আছে উল্টা হয়ে?
কনকনে একটা হাওয়া কোথা থেকে এসে আমায় ছুঁয়ে যায়! এখন তো এই হাওয়ার সময় নয়! এ তো সেই নিঠুর হাওয়া যা ধারালো ক্ষুরের মতন বনের সব পাতা ঝরিয়ে দেয়! এখন এ হাওয়া এলো কোথা থেকে? সেই অদ্ভুত অকাল শীতবাতাসের ঝাপটা চোখেমুখে নিয়ে ফিরে আসি বাসায়, কোমল আস্তরণের মাঝে সঁপে দিই নিজেকে, উষ্ণ পালকের মধ্যে মুখ গুঁজে চোখ বুজি। আধোঘুমে আধোজাগরণে ভাবি কোথায় থাকে সেই জ্যোৎস্নাপালকের পাখিরা?
কিন্তু ঘুম আসে না চট করে। চোখ মেলি। হাওয়া শন্শন্ করে বয়ে যায় বনের ভিতর দিয়ে, চাঁদের রূপালী আলো চিকমিক করে ঝোরার জলে, ঝুঁকে থাকা ফার্ণের পাতায় জলের বিন্দু লেগেছে, তাতেও ঝিকমিক করে জোছনা। আমার মনে পড়ে বহুদূর উষ্ণ দেশের বনকুঞ্জের কথা, তাতেও এমন জ্যোৎস্না পিছলে পড়তো শুক্লপক্ষ রাতে। ভাবতে ভাবতে আমি ঘুমিয়ে যাই।
দেখি এক আশ্চর্য গাছ, পাহাড়ের উপরে। মস্ত বড়ো সেই গাছের মাথা যেন হারিয়ে গেছে আকাশে। মেঘ ফুঁড়ে, আকাশ ফুঁড়ে কোথায় যে চলে গেছে কত উপরে কিছুই বুঝতে পারিনা। শিকড় তার নেমে গেছে কত নীচে মাটির কত গভীরে- তাই বা কেজানে! হয়তো চলে গেছে পাতালে, ঝিমঝিমে দুপুরের ঘুমঘুম বাসায় মায়ের ঘুমপাড়ানি গল্পে যে পাতালের রাজ্যের কথা শোনা যেতো। কেজানে!
গাছের এক ডালে ছিমছাম এক ছোট্টো বাসা। হেলাফেলার খড়কুটোকাটার বাসা না, অচেনা উদ্ভিদতন্তু দিয়ে বহু যত্নে বোনা বাসা, সোনালী তার দিয়ে মজবুত করে বাঁধা, ভিতরে নরম তুলোর আস্তরণ। সেই বাসায় বসে তাকাই আকাশের দিকে, খোলা আকাশ ছড়িয়ে আছে অনেক অনেক দূর, নীল আকাশে রোদ্দুর আর মেঘেরা লুকোচুরি খেলে। পাখির দল উড়ে যায় মাঝে মাঝে। ওদের কথাবার্তার টুকরো-টাকরা মাঝে সাঝে এসে পৌঁছায় আমার কাছে, কখনো বা বাতাসে উড়ে যায় অন্যদিকে।
উপরে তাকাই, গাছের শেষ মেলে না, নীচে তাকাই, গাছের শেষ মেলে না। এর মাঝখানে বসে থাকি সাধের বাসায় আমার, ভাবি এই বুঝি বাতাসে ডানা ভাসিয়ে ভাসিয়ে এলো জ্যোৎস্নাপালকের পাখি! ভাবতে না ভাবতেই মস্ত পুচ্ছে অজস্র ঝলমলে রঙ আর মস্ত দুই ডানায় রঙধনু ঝলকিয়ে উড়ে এসে নামলো এক অচিনপাখি! আকাশের বিদ্যুতের মতন তীব্রোজ্জ্বল তার রূপ, সমারোহ ধরে না।
সে পাশের ডালে বসে আমার দিকে চেয়ে হাসলো, বললো, "তুমি কোথাকার ? এখানে, এই গাছে আগে তো তোমায় দেখিনি!"
উত্তেজনায় ধকধক করে হৃৎপিন্ড, কোনোরকমে আমি বলি, " আমি তো এই সেদিন এলাম। আগে এখানে ছিলাম না তো! দেখবে কেমন করে? তুমি কে? তুমিই কি জ্যোৎস্নাপালকের পাখি?"
সে হাসে, নির্মেঘ আকাশে যেন বিদ্যুতের সমারোহ জাগে সে হাসিতে--- হাসি থামলে সে বলে, " আমি এইখানে থাকতাম। বেড়াতে গেছিলাম দূরের দেশে, ফিরে এসে তোমার বাসা দেখে অবাক হয়েছি।"
আমি অবাক, বলি," তুমি এইখানে থাকতে? কই, তোমার বাসা তো দেখিনি!"
সে বলে, "আমার তো বাসা নেই। আমি বাসা গড়ি না। গাছের ডালে থাকি আর আকাশে আকাশে উড়ে বেড়াই। বাসা গড়ে কী হবে?"
আমি বিস্ময়ে চোখ বড়ো বড়ো করে চেয়ে থাকি, সেই অদ্ভুত কনকনে ঘুম ভেঙে যায়। আহ, সব স্বপ্ন! এত স্পষ্ট স্বপ্ন ? অফুরান সেই গাছ, ঝলমলে সেই পাখি, সব স্বপ্ন? যাঃ।
ছলছলে রূপালী জ্যোৎস্না আরো তীব্র এখন, এর মধ্যেও যেন স্বপ্নাভা লেগে আছে। একা জেগে বসে থাকি বাসায়। সর্বচরাচর ঘুমিয়ে আছে, কী অসীম নিতল রহস্যে ভিজে আছে সবকিছু!
***
পাশের ডালে একটা বাসা, সেখানে থাকে এক ভিনদেশী পাখি। সে কথা বলে না বিশেষ, কতটুকুই বা দেখা হয় আমাদের! আমি উড়ে বেড়াই, খাবার খুঁজে বেড়াই, ঝুপ করে জলে পড়ি মাছ ধরার জন্য-বেশ স্নানও হয়ে যায়! নয়তো পাহাড়ে যাই, সেই অলৌকিক গানের পাহাড়! শুধু ফিরে আসি রাত্রের ঘুমটুকুর জন্য।
পাশের বাসার পাখির সঙ্গেও তাই তেমন আলাপ-পরিচয় হয় নাই। সেতো বেশী কথাও বলে না, নইলে হয়তো নিজেই এসে একফাঁকে বন্ধু হয়ে যেতো! অবশ্য আমি নিজেও যেতে পারতাম বৈকি! কিন্তু সে কিনা ভিনদেশী, হয়তো তার কথাও সহজে বুঝবো না! কী দরকার বাপু ঝামেলার! তারচেয়ে যেমন আছি, তেমনই থাকি! এইসব ভেবে ভেবে আর আলাপ-পরিচয় তেমন হয় নি! আজকের স্বপ্নভাঙা রাতে হঠাৎ মনে হলো বন্ধুত্ব থাকলে মন্দ হতো না!
নেশাধরানো জ্যোৎস্নায় ডুবে আছে সবদিক। আমি উপরে তাকাই, অফুরাণ আকাশে চাঁদের আলো ছাড়িয়ে আছে হাওয়াহাল্কা রুপোলী জরির ওড়নার মতন, ফুটকি ফুটকি কয়েকটা তারাও জ্বলছে। চাঁদনি রাতে বেশী তারা দেখা যায় না, যে রাতে চাঁদ থাকে না, সেই নেইচাঁদ রাতে আকাশে তারায় তারায় ঠাসাঠাসি লেগে যায়।
ভিনদেশী ডানা ঝাড়া দেয় ওর বাসায়, সেও জেগে গেছে। আমি ছোট্টো করে ডাক দিই।
"এই যে শুনছেন, আপনি কি জেগে আছেন?"
ঘুমঘুম গলায় সে বলে, "জেগে গেলাম, আপনিও জেগে যে!"
" আমি ঘুমিয়েছিলাম, ঘুম ভেঙে গেল। জেগে উঠে অবশ্য লাভই হলো। এমন জ্যোৎস্না!!! আপনি আগে দেখেছেন এমন আশ্চর্য জ্যোৎস্না? " আমি আবিষ্ট গলায় বলি।
সে উদাসীন গলায় বলে, " কত দেখেছি, খোলা মাঠের ধারে গাছে বাসা বেঁধে থাকতাম, সে গাঁয়ের মাঠের দুধেল জ্যোৎস্না দিকদিগন্ত ভাসিয়ে দিতো। এ আর এমন কী জ্যোৎস্না!"
আমি একটু ক্ষুব্ধ হই, বলি, "তাই নাকি? কোথায় সে গাঁ?"
এবারে ওর উদাসীন স্বরে দু:খ মিশে যায়, দক্ষিণের দিকে ডানা ছড়িয়ে দিয়ে সে বলে, "ওওওও ই দিকে। অনেক পাহাড়, বন, নদী, মাঠ, ঘাট, ঝর্ণা পার হয়ে ছিলো আমাদের গাঁ।"
" ছিলো? এখন আর নেই?"
" নাহ, সে গাঁ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বনে আগুন লাগলো তো! বিরাট দাবানল। সবাই পালিয়ে গেলো। আমরাও।"
আস্তে করে বলি, " আমি জানতাম না, মাফ করে দিন। আপনার দু:খ হবে জানলে আমি কখনো জিগ্গেস করতাম না।"
"নাহ, মাফ চাইবার কী আছে? আর, এতদিন পরে আজ আর দু:খ কিসের? ছিলো সেদিন দু:খ, যেদিন আমাদের সদ্য ডিমফোটা চারটি অসহায় শিশু আগুনে পুড়ে গেলো। ওদের মা চাইছিলো না ওদের ছেড়ে আসতে, কিন্তু ওরাই বললো নিজের শক্তি থাকতে কেন পুড়ে মরবে মা? পালাও। আমরা পরের বছরেই আবার তোমাদের ঘরে ফিরে আসবো নতুন হয়ে। "
আমি স্তব্ধ হয়ে যাই, চুপ করে চেয়ে থাকি ওর দিকে। সে একটুক্ষণ থেমে থাকে, তারপরে আস্তে আস্তে বলে, " ওদের মা পালিয়ে এসেছিলো আমার সঙ্গে, কিন্তু সন্তানশোক সইতে পারলো না, অসুখ হয়ে মরে গেলো। আমি বেঁচে রইলাম, একা একা। ভুলতে চেষ্টা করি, খাই দাই বেড়িয়ে বেড়াই, কিন্তু ভুলতে পারিনা। "
আমি কি বলবো বুঝতে পারিনা, এ কি ভয়ঙ্কর কাহিনী! আমার ইচ্ছে করে কিছু সান্ত্বনার কথা বলি ওকে, এমন কিছু যা ওই ভয়ানক দু:খের কিছুটা হলেও প্রশমন করে! কিন্তু কিছু বলতে পারিনা। বোবা হয়ে বসে থাকি। সব ভাষা যেন ভুলে গেছি, যেন কোনো বাক্য শব্দ কিছুই ছিলো না আমার কোনোদিন!
এমন সময়! ঠিক সেই মুহূর্তে! আকাশভরা জ্যোৎস্নাকে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতন কাঁপিয়ে দিয়ে বেজে উঠলো সেই অলৌকিক সঙ্গীত! সেই সব সুখদুখমন্থন করা গান! নিদ্রাহারা, কুলহারা গান! সুপ্রাচীন অলীক পাখির সেই গান!
আমি কানখাড়া করি, সেও করে। শুনতে পেয়েছে, সেও শুনতে পেয়েছে! মায়া নয়, মায়া নয়! সে আমার দিকে তাকায়, বলে, " গান? কোথায় হচ্ছে? আপনি শুনতে পাচ্ছেন?"
আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতন মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলি। বলি, " আমার এখনই যেতে হবে, ওই পাহাড়ে, ওখান থেকে ভালো শোনা যায়।"
সে বলে," আমিও যেতে চাই, আমাকে সঙ্গে নিন।"
আমরা দুজনে উড়াল দেই, জ্যোৎস্নাভরা আকাশ দিয়ে ভেসে চলি গীতপাহাড়ের দিকে, দু:খজল শিশিরের মতন ঝরে যায় আমাদের ডানা থেকে। আমাদের চারিপাশে উপরে নীচে ছড়িয়ে যেতে থাকে অনন্ত রাত্রির পালক, সীমাসংখ্যা পেরোনো পালকেরা, তার নরম ওমের মধ্যে নিজেদের সমর্পণ করে দিয়ে বসি নীলকদমের ডালে। আকাশ ভরে, বাতাস ভরে, জলস্থলের হৃদয় ভরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে সেই অলৌকিক সুরের সুধা-- "বহে নিরন্তর অনন্ত আনন্দধারা/ জাগে অসীম নভোমাঝে অনাদি সুর ......"
( শেষ )
মন্তব্য
আরে এতো কবিতা! সুন্দর।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
গদ্যভবে কাব্যভাব এবং যথারীতি তাতে তুলিদির তুলির অতুলনীয় আঁচড়
অতীত
অনেক ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ফরিদুদ্দিন আত্তারের 'The Conference of the Birds' এর কথা মনে পড়ে গেল। সেখানে সুফীবাদ আর এখানে প্রকৃতি, কিন্তু দু'টোই সন্ধান।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
এই অসাধারণ হদিশটির সন্ধান দিলেন বলে কৃতজ্ঞ থাকলাম রোমেল।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার পোস্ট দেখেই পড়তে শুরু করা তারপর দেখি অনেক বড়। সময় নেই, ঘুরে গেলাম আপু, পরে এসে পড়বো। যত বড় তত সন্তরন হবে মনে হচ্ছে
আচ্ছা।
বেশী বড় না। পড়া হলে বোলো কিন্তু।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কি বলবো? কেমন লেগেছে, না বলি। ওইযে বললাম আপনার পোস্ট দেখেই পড়তে শুরু করি। আপনার গদ্যে কাব্যভাব সহজাতভাবে প্রবল
গদ্যে কাব্যভাব? আসলে মনে হয় জয় গোস্বামী এফেক্ট। ভদ্রলোক যখন খুব ভালো কবিতা লিখতেন তখন একসময় গল্প লেখাও শুরু করেন, সাঁঝবাতির রূপকথারা, যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিলো ইত্যাদি মরমী লেখা লেখেন, এদিকে মা নিষাদ এর মতন কবিতাও। তখন পরিস্থিতিও একেবারে যাকে বলে আলোড়িত, আমাদেরও বয়স তখন কাঁচা, মন সবুজ, এসবের প্রভাব হয়তো অজান্তে পড়েছিলো, বুঝতেও পারি নি। এখন অবশ্য এগুলোর থেকে বের হওয়া দরকার।
আবারও ধন্যবাদ নিন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বের হওয়ারতো কোন কারন দেখিনা, যেভাবে চলছে চলুক; জয় গোস্বামীও নিশ্চয়ই কারো না কারো প্রভাবে লিখতে শুরু করেছিলেন। এমনটাই হতে দেখি। ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা
চেইন রিয়্যাকশনের মত ব্যাপার, এক ক য়ের প্রভাবে তিন খ চলতে শুরু করলো, এক এক খ য়ের প্রভাবে তিন তিন গ(৯), এক এক গ য়ের প্রভাবে তিন তিন ঘ(২৭)- এইভাবে শয়ে শয়ে বেরিয়ে লেগে গেল ধুন্ধুমার!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
facebook
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এটাও কি গপ্প আর কোবতের লিনিয়ার কম্বিনেশান?
আরে না না, এটা গপ্পো। ট্যাগে আছে, দেখলে না?
কেমন আছো ? পড়াশুনো, খাওয়া, খেলা, বেড়ানো এসব কেমন চলছে?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পড়াশুনোঃ নেই নেই... গুরু চেঁচান আর এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে আরেক কানে ট্রানজিট নিতেও যেহেতু এনার্জি খরচা হয়, আমি সেটা কোন কান দিয়ে ঢুকতেই দেই না।
খাওয়াঃ আহা , নতুন এক্সপেরিমেন্ট সর্ষে-রামপাখি আর মোজারেল্লা-রামপাখি পুরোপুরি সফল
খেলাঃ খেলবো আর কী করে
বেড়ানোঃ এই বুড়ো বয়সে একা একা বেড়াতে ভালো লাগে না (দীর্ঘশ্বাস)
আরে সামান্য ত্যালমরিচ দিয়াই রামপাখি যা ভালা হয়, সরিষা দিয়া তো হইবোই।
অর্গানিক রামপাখি হইলে সোয়াদ আর ভালা।
কিন্তু মোজারেল্লা টা কী? চীজ? আমি আবার চীজ বিশেষ ভালা পাই না।
আরে ছন্দ, তুমি উধাও। দ্যাখো আয়নামতি, আশালতা এরা ও আর আসে না। কী হইলো তাইনগো?
আরে তোমার গুরুরে লইয়াই তো খেলতে পারো আর বেড়াইতে পারো। খেলা বেড়ানো আর শিক্ষা সব একলগেই হইয়া যাইবো। সারাদিন আঁক কইষা গুরু কইলেন "আর তো পারি না, আয় খেলতে যাই।" ব্যস, গেলা আখড়ায়। দুইজনে দুই ঘন্টা কুস্তি আর লাঠিখেইলা ফিরলা। খেলতেই খেলতেই ক্রস সেকশান ভেলোসিটি অ্যাক্সিলারেশান random নাম্বার, মন্টি কার্লো সব শিখ্যা ফেলাইলা। উইকেন্ডে পাহাড়ে বনে সাগরতীরে বেড়ানোর প্ল্যানও কইরা ফেলাইলা। টোটাল অ্যাচিভমেন্ট!
আরে এইভাবেই তো গ্রস আর উইলকজেক গুরুশিষ্যে অ্যাসিম্পটোটিক ফ্রীডমের সব আঁকজোক খেলতে খেলতেই কইরা ফেইলা প্রাইজ পাইসিলো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হাসো কেন? আরে হাসো কেন?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তুলিদি, অসাধারন!
মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় এক নিঃশ্বাসে পড়ে গেলাম।
কিন্তু একে গদ্য বলবো নাকি পদ্য বলবো?!
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
এটা গদ্যই মনে হয়।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আগাগোড়া কাব্যগন্ধী গল্পটা পড়া শেষ হতেই ইচ্ছে হলো পুরো লেখাটাই কপি করে সংগ্রহে রেখে দেই। কারণ এরকম লেখা বিশেষ বিশেষ সময়ে উল্টে পড়তে ইচ্ছে করে অফলাইনেও। কিন্তু নতুন সিস্টেমের কারণে কিছুতেই কপি করতে পারলাম না।
তাই আপাততঃ পছন্দের পোষ্টে নিয়ে রাখলাম। আপনার লেখার হাতের দীর্ঘায়ু কামনা করছি। অসাধারণ বাক্যমালা!!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধন্যবাদ নীড় সন্ধানী।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন