ফসল, তুমি কি জানো প্রেমিক আলপথ্
তোমাকে বানান-চিন্তা দিয়েছে দুঃখের?
বলো তো অ’ মানে ধান... এই বাংলাদেশে
প্রেমে প’ড়বো বারবার রাখালের বেশে
-বিভাস রায়চৌধুরী
২.
আহা কত কত মৃত্যুভয়, ধুলোঝর এই পাশাপাশি হেঁটে যাওয়া, গলা ছেড়ে গান ভেতরে-ভেতরে, আমিও আগুন...এই অদ্ভুত সময়ে...নাকি আমরা সবাই সেই অদ্ভুত মেঘ, দৌড়ে দৌড়ে নদীর দিকে ছুটে যাওয়া... আমাদের যত নদী...আমাদের না জানা ঢেউ... আমাদের যত মাঠ... আমাদের ভাটিফুল, ঘাস... আমাদের যত পাখি... আমাদের যত ডানা, ওড়া...
সন্ধ্যার প্রথম তারা চিনিয়াছে তারে,-
পশ্চিম সমুদ্রের পারে
সেই এক দেশ আছে;যখন দিনের শেষে আলো এসে পড়ে
এক সমুদ্রের বুকে,-- তারপর, --আর এক সাগরে
পশ্চিমের আকাশের তলে
যখন একটি তারা--প্রথম এসেছে তার স্থলে;
সেই এক দেশ ওঠে জেগে
সকল মেঘের শেষে পশ্চিমের মেঘে!
- জীবনানন্দ দাশ
৩.
কত কত অপেক্ষা... দাঁড়িয়ে থাকা মেঘে-মেঘে...গাছভর্তি বৃষ্টি আছে... বড় রাস্তার উপর মেঘ ডাকছে, মেঘ ডাকছে প্রাণপণ... আমাদের শরীরে গাছ জন্মাচ্ছে আবার... ঘাসে-ঘাসে প্রশ্নঝড়--আমাদের নাম, কত কত নাম হতে পারে, কত কত ক্ষত... দ্যাখো চাঁদ ঢেকে গেছে মেঘে... ওই দূরে আবছা গাছ। আমার পোষাক ছিঁড়ল অন্ধকার, পোড়াবাড়ি, ও পোড়াবাড়ি...মনে পড়ে? দীর্ঘ দীর্ঘ বর্ষাকাল আর কুয়াশাকাল পেরিয়ে আমাদের বাড়ি এসে একদিন তুমি আমার অনেকগুলো বিচ্ছিরি কবিতা মুখস্থ বলেছিলে
ভেবেছি মোহনা থেকে ফিরে আসা দ্বিধাগ্রস্থ মেঘ ঠেলে নিয়ে যাবো অন্যকোনো মোহনার দিকেছেঁড়া চিঠির মতো সেইসব এলোমেলো মেঘ--শিমুল তুলোর মতো সেইসব সাদাকালো মেঘ স্কুলফেরত বালিকাদের সোনালী চুল ছুয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে দূরগামী জাহাজের মতো নতুন মোহনার দিকে
শুধু পথ ভুল করা কিছু বোকা আলু-থালু মেঘ মাথা হেঁট করে ফিরে আসে বারবার
৪.
গাছেদের পাঠগৃহ...গাছেদের শান্ত সব সিঁড়ি... এ বাগানে গ্রন্থ ফোটে, এ বাগানে ফুটে থাকে গান...শোনো এ বেতের দাগ গাছে-গাছে মুছে ফেলে দেখি... মাটি ও ঘাসের কাছে চিরবর্ষা, এইসব মরে যাওয়া, এইসব নির্জন ব্যাপার... আমার অক্ষর তাইলে ক্ষ্যাপা, আমার আবেগ চই-চই... এই কি তবে নির্জনতা--মৃত্যু-মৃত্যু নাম-- অবাক গাছেরা দ্যাখে বেঁচে-থাকা... অন্ধদের আলো চুরি, জীবনে ফেরার জন্যে আমাদের মৃত্যু জরুরি।
অনেকের ধারণা,
গাছের প্রাণ আছে।
আমি বিশ্বাস করি না।যদি সত্যিই প্রাণ থাকতো, তাহলে
কোনো এক মেঘলা দুপুরে
সেই গাছ ছুটে গিয়ে
প্রতীক্ষারত আরেকটি গাছকে
জড়িয়ে ধরতো আকস্মিক, অন্ধ আলিঙ্গনে।
এ ক্ষমতা যার নেই, সে তো নিশ্চিতই জড়বস্তু।
- রণজিৎ দাশ
৫.
প্রশ্ন হচ্ছে উড়তে চাওয়া...প্রশ্ন হচ্ছে আত্মা থেকে উড়ে কতোটা গৃহের কাছে যেতে পারে মানুষ... হাওয়া এলে বলে, “ঘর তৈরী হবে কবে?”... আমরা সেতু নিয়ে ভাবি, গৃহের প্রসঙ্গে চুপচাপ... আমাদের আশেপাশে ঘাসফুল ফুটেছে প্রচুর, হাওয়া আসছে... জগতের সমস্ত বাতাস আমাদের, ওদের ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই... আমরা যাই....উড়ে যাই খড়কে কিচ্ছু লুকাবো না... ও এলেই ঘর পাই! খড় বুঝি এসব জানে না?
মিছে কেন ফেরো, আহা, -- পৃথিবীর পথ থেকে হে বিষণ্ন, হে ক্লান্ত জনতা
তোমরা স্বপ্নের ঘরে চ’লে এসো-- এখানে মুছিয়া যাবে হৃদয়ের ব্যাথা
সন্ধ্যের বকের মতো চ’লে এসো ধূসর স্তনের মতো শান্ত পথ ধ’রে।
-জীবনানন্দ দাশ
উৎসর্গ:
জুয়েইরিযাহ মউ ও রিফাত সানজিদা কে
"প্রশ্ন হচ্ছে উড়তে-চাওয়া... প্রশ্ন হচ্ছে আত্মা থেকে উড়ে
কতটা গৃহের কাছে যেতে পারে দুই ভবঘুরে?"
** এই লেখায় বিভাস রায়চৌধুরীর উপন্থিতি নানাভাবে। কখনো ভাবে, কখনো সরাসরি। তাঁর জন্যে কৃতজ্ঞতা।
মন্তব্য
ছবিগুলো কি নিজের তোলা না নেট থেকে নেওয়া? যাই-ই হোক অনেক সুন্দর।
আর লেখকের লেখার হাতও চমৎকার!
ভাল থাকুন।
কারে কী কন গো বৈন!!! একটু জাইনা বুইঝা মন্তব্য করণ ভালা............
ছবিগুলো আমারই তোলা।
আমার লেখার হাত নিয়ে নিজেই সন্দিহান। তারপরও আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।
২, ৪ নং ছবি অপার্থিব সুন্দর। চমৎকার আর যথার্থ সব উদ্ধৃতি । সাথে পেলাম কাব্যগন্ধী অপূর্ব সব বোধ, ভাবালো অনেক.................অনেকদিন পর লিখলেন................
হ্যাঁ, আসলেই অনেকদিন পর। সময়, সুযোগ দুটোই এর জন্যে দায়ী।
কিন্তু আপনি কোথায়? অফলাইনে ক্যান?
ঠিকই সময় সুযোগ আসলেই অধরা, ব্যানারজি উজানদা।
উজানগাঁ যাইতে মুঞ্চায়, মেঠো পথটা ধরে বহুদূর কোন সবুজ নক্ষত্রের ওপারে.......
------------------------------
অটঃ অফ্লাইনের কারণ আর জিগায়েন না বস। ছেলে মানুষি । ছ্যাকা(ঘ্যাচাং) খাইয়া প্রেমিকা সচলের উপ্রে অপিমান অইছিল আর কী । তয় বরফ গলে গেছে, শীঘ্রই অনলাইন হমু।
চলে আসুন কোনো একদিন। একসাথে নক্ষত্রবিহারে যাওয়া যাবে।
অট: বরফ গলছে কী না আওয়াজ দিয়ে যাইয়েন।
উজানদা, সিলেট গেলে উজানগাঁর দিকে দৌড় দিব সে নিশ্চিত, দুভাই মিলে নক্ষত্রবিহারে হারিয়ে যাবো.........
অটঃ বস, আপনার প্রতিমন্তব্য দিতে অনলাইনাইলাম........
ভালো থাইকেন বস..........আর শাটার পড়তে থাকুক..............
_____________________
Give Her Freedom!
আর কিছু বলার মতো নেই।
অতীত
ধন্যবাদ।
কোথায় যেন নিয়ে গেলেন। অসাধারণ পোস্ট
নিয়ে গেলাম উজানগাঁয়ে।
সে এক দেশ। সকল মেঘের শেষে পশ্চিমের মেঘে!
৫ তারায় টিপা দিলে সেখানে লেখা উঠে 'অসাধারণ'
৫ তারায় টিপি দিলাম
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আমার ৫ তারায় টিপা দেয়ার ক্ষেমতা নাই। থাকলে ৩/৪ বার দিতাম।
অনেকদিন পরে লিখলে।
নদী নিয়ে কি একটা লেখা দেয়ার কথা ছিল না??
তা ছিল। এইসব কথাবার্তা ভুলে যাওয়া ভালো। বেশিদিন মনে রাখতে নেই।
আমার অসম্ভব সুন্দর কিছু দেখলে বা শুনলে কেন যেন কান্না পায়। ছবিগুলো দেখেও কান্না পেল। আপনার তৈরী সচলের ব্যানার আর পোষ্টের ছবির আমি বিশাল পাংখা।
সুন্দর ব্যাপারটাই এইরকম। সবার সহ্য হয় না।
একি অদ্ভুত, একি বিস্ময়কর অপার্থিব কোন সুখে ভেসে যাওয়া ছবি আর কবিতার হাত ধরে! কয়েকদিন সচলে আসতে পারবোনা বলে একটু উকি দিতে এসে নিজেকে মহা ভাগ্যবান মনে হচ্ছে! আপনার ব্যানারের আমি মহাভক্ত, এই প্রথম আপনার লেখা আর ছবি দেখলাম!
আপনাকে কোথায় পাওয়া যাবে বলেনতো ভাই, আপনাকে খাওয়াতে ইচ্ছে করছে আমার আমার ফেসবুক আইডি এহসানুল ইসলাম তানিম, খোঁজ করলেই পাবেন, একটু কষ্ট করে খোঁচা দেবেন কি? আমি ৬ তারিখের আগে দেখতে পাবোনা। আমি কিন্তু খাওয়ানোর ব্যাপারে সিরিয়াস।
ভালো লেগেছে এতেই খুশি।
খাওয়াতে হলে হয় আপনাকে সিলেট আসতে হবে নয়তো আমাকে ঢাকা যেতে হবে। তার'চে সময়ের হাতেই ছেড়ে দেয়া ভালো। দেখা হয়ে যাবে কোনো না কোনোভাবে।
কি যে বলা যায়, জানিনা; অনবদ্য।
বিভাস রায়চৌধুরির - 'অপদেবতার জামা' কবিতাটা পড়ে দেখবেন, যদি সম্ভব হয়। ওই লেখাটার উপর একটা পোস্ট আবদার করলাম আপনার কাছে।
ডাকঘর | ছবিঘর
ধন্যবাদ।
বিভাস রায়চৌধুরীর খুব বেশি কবিতা পড়া হয়নি আমার। একখানাই কাব্যগ্রন্থ ছিল তাও এক যুগ আগের। এই লোকটা বাংলাদেশের প্রতি যে কি অসম্ভব প্রেম পুষে রাখেন তা তার কবিতা পড়লেই বুঝা যায়!
"অপদেবতার জামা" কবিতাটা আমার সংগ্রহে নাই। আর লেখার ব্যাপারে বললে, এটা আমার কাছে কিঞ্চিত কষ্টকর হয়ে যায়।
দাদা কবিতাটা দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল গত বছর। জানিনা বই হয়ে বেরিয়েছে কি না।
আর বিভাস বাবুর ২২শে শ্রাবণ(গত বছর শারদীয়া দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত) - উপন্যাসটা আমার হৃদয়কে একটা হ্যাঁচকা টানে বাস্তবের জমিতে নামিয়ে এনেছিল।
ডাকঘর | ছবিঘর
এখানে দেশ পাওযাটা অনেক ঝক্কির কাজ। খুবই অনিয়মিত। আর বিশেষ সংখ্যাগুলো তো পাওয়াই যায় না।
কোনো একদিন নিশ্চয় পড়া হবে বিভাসবাবুর উপন্যাসখানা।
কি যে বলা যায়, জানিনা; অনবদ্য।
বিভাস রায়চৌধুরির - 'অপদেবতার জামা' কবিতাটা পড়ে দেখবেন, যদি সম্ভব হয়। ওই লেখাটার উপর একটা পোস্ট আবদার করলাম আপনার কাছে।
ডাকঘর | ছবিঘর
আপনার ছবি নিয়ে আর কী বলব!
ছবি দেখে থুম হয়ে আছি। অতি অতি অতি...চমৎকার!!!!!! একেবারে ডি লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস (গুড়) (গুড়) (গুড়)
উজান'দা আপনার ফ্লিকার ফোটোস্ট্রিম দেখে আসলাম, যথারীতি আবার থুম মেরে গেলাম। ...
অসাধারণ !
ধন্যবাদ।
ছবিগুলো দেখে স্হবির ,মুগ্ধ!
অশেষ ধন্যবাদ।
আহ্। আমি প্রথম ছবিটার জায়গায় যেতে চাই।
চলে আসেন উজানগাঁয়ে।
ওয়াও ! বড় গাছের ছবিটা যা এসেছে না !
facebook
এই গাছটা আমার অসম্ভব প্রিয়। কত-শত ছবি যে তুলেছি এই গাছের !!
আমি 'রিফাত সানজিদা' নামে একটা বোকা মেয়েকে চিনি, যার ডাক নাম তিথী।
পোস্টে
এবং
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
রায়চৌধুরীর কবিতা সম্পর্কে আগে কিছুই শুনি নি, আজই প্রথম শুনলাম...
২ নম্বর ছবিটাতে ২নম্বরি না করেই বলতে হয়, দারুণ !!!
একযুগ আগের পড়া। সেই ভালোলাগা এখনো আছে।
পড়ে দেখতে পারেন।
ভালো লেগেছে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
হৈচৈ ঢাক ঢোল যখন মন ভালো করতে পারে না তখন এক ধরনের উজ্বল বিষণ্নতা মনটাকে ভালো করে দেয়
বহু বহুদিন পর এই ছবিগুলো দেখে এক ধরনের উজ্বল বিষণ্নতা অনুভব করছি
বিষে বিষক্ষয়
অসাধারণ ছবি আর লেখা। বিশেষ করে প্রথম ছবিটায় যে সবুজ ঘাস এটা আমার দেশ ছাড়া আর কোথায়ই বা আছে
এই বুনো সৌন্দর্য্য আসলেই কোথাও নেই।
এই, তুই এত চমৎকার ছবি তুলিস বলে হিংসা হয়
তুই জানিস আমারও অনেক শখ আছে ফটোগ্রাফিতে
কিন্তু আমি আর পেরে উঠলাম কই
চমৎকার পোস্টের জন্য তোকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকিস।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
ক্যামেরা একটা কিনে ফেল। এমনিতেই শেখা হয়ে যাবে।
চমৎকার লেগেছে। এই পোস্ট দেখে মনে হচ্ছে অনেককিছুই স্থায়ী ভাবে হারিয়ে ফেলেছি আমি।
...........................
Every Picture Tells a Story
স্থায়ীভাবে হারোনোর তো কোনো কারণ দেখি না। একটু গুছিয়ে নেন তারপর আপনারে খোঁচানো শুরু করবো নে।
ফটোগুলো 'Out of this world'!!!
আপনার হাত সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে রাখুন। PLEASE.
ধন্যবাদ।
ছবি কি আসলেই হাত দিয়ে তোলা হয় ?
লেখাটা দুর্দান্ত লেগেছে। আর আপনার ছবি নিয়ে মন্তব্য করাতো অর্থহীন।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
মন্তব্য করা অর্থহীন বললে তো হবে না। এই মন্তব্যগুলোই আসলে ছবি তোলাকে অর্থবহ করে তোলে।
ছবি আর লেখা গত দুদিন ধরে দেখছি তবু তৃপ্তি মিটছে না। প্রথম ছবিটা যেন স্বর্গ থেকে নেমে আসা রোদ্দুরে তৈরী হয়েছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বিকেলের আলোটা আসলেই অদ্ভুত ! চেনা পৃথিবীটাকে তখন বড় বেশী অচেনা মনে হয়।
প্রতিটা ছবির জায়গায় আমি ছিলাম। দৃশ্যগুলো কল্পনা করলেই কান্না পায়।
খুবই সুন্দর
ধন্যবাদ।
শাওন দাআআআআআআআ............ইউ রক............
কিভাবে এমন ছবি তোলে মানুষ????!!!!!
--------------------
সুবোধ অবোধ
-------------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!
নতুন মন্তব্য করুন