গত কয়েকদিন পত্রিকার পাতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাপ্রবাহ লক্ষ্য করছিলাম। সরকার ১০০ ভাগ কেনো অর্থায়ন করবে না সেটা নিয়ে মোটামুটি একটা তুলকালাম অবস্থা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খরচ সামাল দেবার জন্য উচ্চ টিউশন ফির কোনো বিকল্প খুজে পাচ্ছে না। অন্যদিকে ছাত্ররা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত টিউশন দিতে রাজি নয়। মাঝখান থেকে নিরীহ কিছু গাড়ীর প্রান নিয়ে টানাটানি। ইদানিং দেশে যেকোনো ঘটনার প্রতিবাদ জানাবার ভাষা মনে হচ্ছে ভাংচুর। একটি বিষয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছাত্ররা অন্য একটি অন্যায় করছে এটা দুঃখজনক।
আমি ব্যক্তিগতভাবে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষায় সরকারের আরো পৃষ্ঠপোশকতার পক্ষপাতি। তবে বর্তমান যে পদ্ধতিতে সরকার অর্থায়ন করে তার সাথে একমত না। এই ব্যপারে আমার ভিন্নমত আছে। যেটা কানাডার শিক্ষাব্যবস্থা দেখে মনে হয়েছে আমরা অনুসরণ করতে পারি।
কানাডায় শিক্ষার খরচ মোটামুটি বেশ ভালোই। ছাত্ররা এই খরচ মূলত ৩ ভাবে বহন করেঃ ১) বাবা মার কাছ থেকে (খুবই কম অংশ এটা পায়) ২) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কলারশিপ থেকে (অপেক্ষাকৃতভাবে এরাও সংখ্যালঘু) ৩) শিক্ষাঋণ নিয়ে (অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই এই পদ্ধতিতে পড়াশুনা করে)
শিক্ষাঋণ পদ্ধতি একটু বর্ণনা করি, কারণ এটা আমাদের দেশে প্রচলিত ব্যবস্থা থেকে একটু আলাদাঃ
কানাডায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার জন্য মাধ্যমিকের পর মোটামুটি অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই শিক্ষাঋণ নেয়। এই শিক্ষাঋণ দেবার জন্য সরকারের একটি আলাদা সংস্থা আছে। ঋণের একটি অংশ ফেরতযোগ্য, বাকি অংশ অনুদান (ফেরত দিতে হবে না)। যার আর্থিক অবস্থা প্রকৃতই বেশী খারাপ, তাকে পুরোটাই অনুদান দেয়া হয়। কত অংশ ঋন আর অনুদান হবে তা নির্ণয় করা হয় তাদের পূর্ববর্তী বছরের ট্যাক্স রিটার্নের উপর নির্ভর করে।
ঋণের শর্ত খুবই সহজ। ঋণের অংক দিয়ে সম্পূর্ণ টিউশন এবং শিক্ষা চলাকালীন সময়ের আনুষাংগিক যে খরচ তা মোটামুটি পুরোটাই বহন করা যায়। ঋণ পাবার পর একটি শর্ত অবশ্যই পালনীয়- ন্যূনতম ফলাফল বজায় রাখতে হবে। ঋণের টাকা ফেরত দিতে হবে পড়াশুনা শেষ করবার ছয় মাস পর থেকে। তবে উক্ত সময়ের মধ্যে ছাত্ররা যদি চাকরি না পায়, তবে এই সময় বাড়িয়ে নেয়া যায়। আমি এমন অনেককে চিনি যারা এই ঋণ কয়েক দশকে প্রতি মাসে ১০০ ডলার করে ফেরত দেবে। এই হচ্ছে মোদ্দাকথায় ঋন দেয়া এবং নেয়ার প্রক্রিয়া।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ঋণের টাকায় শিক্ষার্থী শিক্ষা ছাড়া অন্য আর কিভাবে উপকৃত হয়? শিক্ষার্থীরা যে ঋণ নিচ্ছে, তার একাংশ সরকার আবার অন্য উপায়ে ফেরত দেয়। উপার্জন শুরু করবার পর প্রতি বছর তার যে ট্যাক্স দেবার কথা সে ট্যাক্সের উপর টিউশন ক্রেডিট দেয়া হয়। উদাহরণ দেইঃ আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বছর ১০,০০০ ডলার টিউশন দিলেন। আপনি উপার্জন শুরু করবার পর যখন ট্যাক্স দিবেন তখন আপনার যত টাকা ট্যাক্স হলো, তার একটা অংশ (১৫%) মওকুফ পাবেন। একই সাথে আপনি মোট কত মাস ছাত্র ছিলেন, আপনার শিক্ষাউপকরণের খরচ কেমন ছিলো, এসবের জন্যও আপনি অতিরিক্ত ট্যাক্স ছাড় পাবেন।
এখন কথা হচ্ছে এই পদ্ধতিকে কেন আমি ভালো বলছিঃ
১)বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সুযোগ থেকে আগ্রহী কেউ বঞ্চিত হচ্ছে না কারণ সরকার থেকে ঋণ বা আনুদান হিসাবে অর্থায়ন নিশ্চিত করা হচ্ছে। যার আর্থিক অবস্থা বেশী অসচ্ছল, তাকে পুরোটাই অনুদান দেয়া হচ্ছে। সামাজিকভাবে হেয় হবার কোনো সুযোগ এখানে নেই, কারণ কাকে কত টাকা ঋন/আনুদান দেয়া হচ্ছে তা কখনই অন্য কারো কাছে প্রকাশ করা হয় না।
২) যেহেতু ন্যূনতম ফলাফল বজায় রাখতে হয়, ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনায় হেলাফেলা করতে পারে না।
৩) টাকা আপনি তখনি ফেরত দিবেন যখন আপনি পড়াশুনা শেষ করে উপার্জন শুরু করবেন।
৪) সরকারকে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি খুঁজে ট্যাক্স আদায় করতে হয় না, বরং এরাই নিজের গরজে ট্যাক্স দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সুযোগ না অধিকার সেটা নিয়ে অনেক বিতর্ক হতে পারে। অনেকের অনেক রকম দৃষ্টিভঙ্গি আছে। আমার মনে হয় একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পেছনে সরকার যে অর্থ শিক্ষা খাতে ব্যয় করে, সে অর্থ কর্মজীবনে প্রবেশ করবার পর ফেরত দেয়া অযৌক্তিক নয়। আপনার প্রতি মাসের উপার্জন থেকে আপনি যদি ১% টাকাও শিক্ষা খরচ হিসাবে সরকারকে ফেরত দেন (যতদিন আপনাকে প্রদত্ত সরকারের ভর্তুকির টাকা শেষ না হয়), সেই টাকা দিয়ে সরকার পরবর্তীতে অরেকজন শিক্ষার্থীর খরচ বহন করতে পারে।
আমার ধারণায় পদ্ধতিগত ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতে পারে। আশা করি পাঠক ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
নবাগত
মন্তব্য
নবাগতকে স্বাগতম।
কানাডার শিক্ষালোন আপাতদৃষ্টিতে খুব সুন্দর একটা জিনিস হলেও ছাত্র সংগঠনগুলো এখন বিকল্প কিছু ভাবেছে। একজন ছাত্র প্রতি সেমিস্টারে গতে ৬০০০ ডলার করে ঋণ নিলে চার বছরে তার ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় (৪৮হাজার থেকে ৭২হাজার ডলার)। বছরে ২ সেমিস্টার পড়লে ৪৮হাজার আর ৩ সেমিস্টার পড়ছে ৭২ হাজার।
আপনি জানেন কিনা কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশী ছাত্রদের বেতন কত হবে তা নির্ধারণ করে স্ব-স্ব বিশ্ববিদ্যালয়। স্থানীয়দের বেতন কে নির্ধারণ করে তা এই মুহূর্তে ঠিক করে বলতে পারছি না। তবে সব বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রতি বছর টুইশান বাড়াচ্ছে আর সেই সাথে বাড়ছে ছাত্রদের কাঁধে ঋণের বোঝা।
ঋণের পরিমাণ বেশী হলেও এর একটা পজিটিভ দিক হল যারা এই ঋণ নিচ্ছে তারা কিন্তু নিজের তাগিদ থেকেই কাজ খুঁজে নিচ্ছে এবং ঋণ পরিশোধ করছে। কিছু কিছু দেশী ভাই যারা সারা জীবনই ছাত্র থাকে (কারণ তাদের অন্য কিছু করার থাকেনা, বা অন্য কোন জব তারা পাননা) তারা ব্যতীত অন্যেরা পড়া শেষ করে কিন্তু বিরাটা একটা চাপের মধ্যে পড়ে। নেটিভদের চাকুরি পেতে ততটা সমস্যা না হলেও আমাদের মত যারা তাদের জন্য চাকুরি যে নিশ্চিত হবে তা বলা যায়না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ঋণ দিয়ে সরকার সেই ঋণ তুলতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস হয় না। তারচে মাগনা খরচ দেয়া মনে হয় সরকারের জন্য লাভ। তবে স্কলারশীপ, অন-ক্যাম্পাস জব, এসিস্ট্যান্টশীপ এসব চালু করে দেখা যেতে পারে।
আসলে আমার লেখাটা একটা ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত যা আমি এখানে এসে দেখেছি। এই পদ্ধতি অবশ্যই অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার দাবি রাখে। সরকার ঋণ দেক আর না দেক, এখন তো পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচের ১০০% বহন করছে। ছাত্ররা যে ২০/২৫ টাকা মাসিক বেতন দিচ্ছে তা নিশ্চয়ই আসল খরচের ১% ও না। সেখানে উপার্জনক্ষ্ম হবার পর একটি অংশ ফেরত দেয়া আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হয় না।
btw, প্রকৃতিপ্রেমিক কি ফাহিম নাকি?
উপাজর্নক্ষম হওয়ার কোন গ্যারান্টি আছে বলে মনে হয় না। আর নীচে বলাই যেভাবে বলেছে, সরকারের আরো বেশী খরচ হবে। এখন যা হচ্ছে তার চে বেশী। বাংলাদেশে ক্যানাডার মডেল ঢোকানোর আগে অনেকগুলো পূর্বকন্ডিশন পুরণ করতে হবে। দেশে কি আইনের শাসন আছে? ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা আছে? একজন সাধারণ মানুষের কোন অধিকার আছে? এই মৌলিক বিষয়গুলো যেখানে অনুপস্থিত সেখানে (আমার মতে) শিক্ষা ঋণের মত বিষয় অনেক গৌন। এখানে মানুষকে শেখানো দরকার সততা, দায়িত্বশীলতা, মাথা ঠান্ডা রাখা, অহেতুক চিৎকার চেঁচামেচি না করে কথা বলা।
না, ফাহিম না।
শিক্ষাঋণ নিয়ে ভারতের অনেক ছাত্রকে গ্র্যাজুয়েট স্টাডিতে আসতে দেখি অ্যামেরিকায়। সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে পারলে মন্দ কিছু দেখি না, কিন্তু এই ক্ষেত্রেও সরকারকে ইনিশিয়াল বিনিয়োগ ঠিকই করতে হচ্ছে, সেটা কি সরকারের পক্ষে করা সম্ভব এখন?
বাংলাদেশ সরকার কি শিক্ষা ক্ষেত্রে যথেষ্ট খরচ করছে? ধরলাম ছাত্রদের টিউশন ফি-এর টাকাটা ছাত্ররা নিজেরা দিল। কিন্তু গবেষণার জন্য যে ফান্ড দরকার সেটাতো সরকার দিচ্ছে না, সেটা নিশ্চয় টিউশন ফি থেকে তুলে আনা সম্ভব হবে না। মোদ্দা কথা হচ্ছে, আমাদের যেখানে মানব-সম্পদ উন্নয়নে বেশি বিনিয়োগ করা দরকার, সেখানে সরকার নামকাওয়াস্তে যে সামান্য টাকা শিক্ষা খাতে খরচ করে, সেটাও সরিয়ে নেয়ার চিন্তা করছে। এই জন্যই এই ধরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়। গাড়ী ভাঙচুর সমর্থন করি না, কিন্তু প্রতিবাদটা জরুরী।
[অফটপিকঃ রাণীমার পাঠশালার পড়ুয়া নাকি হে?]
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
"....সরকারকে ইনিশিয়াল বিনিয়োগ ঠিকই করতে হচ্ছে, সেটা কি সরকারের পক্ষে করা সম্ভব এখন?" সরকারতো এখন পুরো খরচটাই বহন করছে। ধরুণ, যারা ডাক্তারি পরছে, একেকজনের পেছনে সরকারের বিনিয়োগ কয়েক লক্ষ টাকা। একজন যখন ডাক্তার হিসেবে কাজ শুরু করবে তখন সে যদি এই টাকা ফেরত দেয়, আমার মনে হয় সরকারের উপর চাপ অনেকাংশে কমে যায়। আর আমার তো মনে হয় তখন ফেরত পাওয়া টাকা গবেষণা খাতে ব্যবহারের একটা সুযোগ তৈরি হবে।
এখানে একটা ভুল আমরা করি, তাহলো একজন ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া বনাম সরকার একটা সমীকরণ দাঁড় করাই। এটা আমার বিবেচনায় ভুল। কারণ, একজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা অন্যান্য পেশাজীবী শুধু নিজের প্রয়োজনেই সেই পেশায় যায় না, এটা দেশের মানুষেরও প্রয়োজন। একারণেই শিক্ষার জন্য ইনভেস্টমেন্ট শুধু যে শিক্ষাটা গ্রহণ করছে, তার একার সাথেই রিলেটেড না, সামগ্রিক অর্থে দেশের সাথেই সম্পর্কিত। দেশের স্বার্থেই মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহারের সুযোগ দরকার।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সরকার যতদূর মনে পড়ে বছরে ২০-২৫ হাজার টাকা ভর্তুকী দেয় পাবলিক ভার্সিটির ছাত্র পিছু। টিউশন ফি সেই অনুপাতে যা হয়, তা রাখা হবে? আর বুয়েটের মত ভার্সিটি থেকে পাশ করেও বেশিরভাগ ছাত্রকে ১৫ হাজার টাকা বেতনের চাকুরী পেতে সংগ্রাম করতে হয় রীতিমত, বাকিদের অবস্থা কেমন কে জানে! তো যেখানে বেশিরভাগ ছাত্র চলার মত টাকাই পাচ্ছে না বেতন হিসাবে, সে সরকারের টাকা ফেরত দিবে কীভাবে?
দেশের ডাক্তার/ইঞ্জিনীয়ার/অন্য পেশাজীবিদের ট্রেনিং/শিক্ষার সুফল শুধু সেই ভোগ করলে শিক্ষার পুরা খরচ তার বহণ করা মানায়। কিন্তু সেতো দেশে থেকে দেশের কাজেই লাগছে। একই স্কিল নিয়ে বিদেশে চলে আসলে কিন্তু সে কয়েক গুণ বেশি টাকা পেতো।
কানাডা অনেক উন্নত রাষ্ট্র, ওয়েলফেয়ার স্টেটও বটে। সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে ঋণ দিলেও স্বাস্থ্য ইত্যাদি অনেক বিষয়ে অনেক ভর্তুকী দেয়। তো আমাদের সরকার তার নাগরিকদের কাছ থেকে আদায় করা ট্যাক্সের টাকা রাস্তাঘাট আর অস্ত্র কেনা ছাড়া খরচ বন্ধ করে দিয়ে তার দ্বায়িত্ব পালন হয়ে গেলো?
গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা ছাত্রদের ভর্তুকী দেয়া টাকা দিয়ে জোগার হওয়ার কোন কারণ নেই। বুয়েটের বাজেট বছরে ২২ কোটি টাকার মত, এ দিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয় না। আন্ডারগ্রেড পড়াশোনা চলে যায় পাবলিক ইউনিভার্সিটিগুলোতে আন্ডারপেইড টীচারদের কল্যাণে জোড়াতালি দিয়ে। কিন্তু গবেষণা এই নামকাওয়াস্তে টাকা দিয়ে সম্ভব না।
সমস্যা জর্জর বাংলাদেশের জন্য মানবসম্পদ উন্নয়নই উন্নতির একমাত্র উপায়, সেখানে এমনিতেই যখন বিনিয়োগ যৎসামান্য, সেখান থেকে আরো কমিয়ে দিলে, কিছু বংশানুক্রমিক শিক্ষিত তৈরী হবে মাত্র, দেশের পিছিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না। কানাডার বাস্তবতা তাই আমাদের জন্য ঠিক প্রযোজ্য না।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
রাণীমার পাঠশালা ... না। পড়াশুনা করেছি মতিঝিল সরকারি বিদ্যালয়ে, তারপর নটর ডেম কলেজ এবং আইইউটিতে। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টায় পিএইচডি করছি।
উচ্চশিক্ষা সুযোগ না অধিকার - এটা নির্ভর করে দেশের অর্থনীতির প্রয়োজনের ওপর। এইচএসসি পাস দিয়ে অর্থনীতি চালিয়ে নেয়া গেলে উচ্চশিক্ষা স্রেফ বিলাসিতা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেয়া যায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি আরোপ করা আমার দৃষ্টিতে শিক্ষাকে আরো পঙ্গু করে দেয়া। পাবলিকে পড়া অধিকাংশ পোলাপাইনের জন্যই টিউশন ফি একটা বিরাট পেইন। টিউশন ফি ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে ক্যানাডার পদ্ধতিগুলো যে আমাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না, সেটার কারণ বলি:
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদেরকে যে টাকা স্কলারশীপ দেয়া হয়, সেটা নামমাত্র। এটা দিয়ে খরচ চালানো দূরে থাক, এটাকে দৈনন্দিন খরচের অংশ হিসেবেও সাধারণত দেখা হয় না। সুতরাং স্কলারশীপ দিতে হলে সে খাতেই প্রচুর টাকা সরকারকে আমদানি করতে হবে।
শিক্ষাঋণের ব্যাপারটা ছাত্রদের কাজ পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের কর্মসংস্থানের যে অবস্থা, তাতে সবই 'অনুদান' হিসেবে দিতে হবে। আবারও সরকারের টাকা। ছাত্রাবস্থায় টিউশনির বাইরে কাজ করার স্কোপ কম। পাস করা বেকারের জন্যও একই সংস্থান। ছাত্রের রেজাল্ট ভালো হওয়ার কাজটা শুধু 'চাপ' দিলেই হবে না, তার স্কোপ থাকতে হবে। বিরাট সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে টিউশনি করতে হয় নিজের খরচ চালাতে, এর ওপরে বাড়তি টিউশন ফি এর বোঝা চাপালে ভালো রেজাল্ট কোথা থেকে আসবে বুঝতে পারছি না।
কোনো বিষয়কে আমলাতান্ত্রিকভাবে জটিল করার আরেকটা অর্থনৈতিক অসুবিধা আছে। এই ঋণ সিস্টেমটা ম্যানেজমেন্টের পিছনেও একটা বিরাট অঙ্কের টাকা যাবে, দুর্নীতির কারণে মিসম্যানেজমেন্টও হবে প্রচুর।
উচ্চশিক্ষার চাহিদা যে আছে, সেটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির বিস্ফোরণে বুঝা যায়। প্রাইভেট ইউনি মূলত ক্ষমতাসীনদের একটা বিজনেস আইডিয়া। প্রাইভেটে এই পরিমাণ টাকা দিয়ে শিক্ষা কিনতে বাধ্য করাও সরকারের শিক্ষাক্ষেত্রে জনহিতৈষী ব্যবস্থাপনার ঘাটতিকে নির্দেশ করে। পাবলিকে টিউশন ফি আরোপ করে সেই ব্যবসায়কেই আরো ফোলানো হবে।
শিক্ষা একটা দেশের জন্য ইনভেস্টমেন্ট, যার রিটার্ন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আসে। শিক্ষায় বিনিয়োগ করলে দেশের জন্য লস নাই। শিক্ষার বাজেট বাড়ানো দরকার। অন্যদিকে সামরিক খাতের মতো হাতি পোষার খাতে ব্যয় সংকোচন করা দরকার।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এখন নামমাত্র স্কলারশিপ দেয়া হয় সেটা ঠিক, তবে এটা নিশ্চয় স্বীকার করবেন ২০/২৫ টাকা কখনো একজন ছাত্রের ১ বছরের শিক্ষার প্রকৃত খরচ নয়। সরকার নামমাত্র স্কলারশিপ দিলেও প্রত্যেক ছাত্রের পড়ার পুরো খরচটাই কিন্তু বহন করছে। সুতরাং সরকার টাকা দিচ্ছে না তা সত্য নয়। টাকাটা অনুদান হিসেবেই আসছে, কিন্তু তা প্রকাশ্য না।
"... এর ওপরে বাড়তি টিউশন ফি এর বোঝা চাপালে ভালো রেজাল্ট কোথা থেকে আসবে বুঝতে পারছি না" - আমার প্রস্তাব ছিলো যে টিউশনের টাকা সরকার ঋণ হিসেবে দেবে, যেটা আপনি উপার্জনক্ষম হবার পর ফেরত দেবেন। সুতরাং এখানে অতিরিক্ত চাপের সমস্যা থাকার কথা না।
"...প্রাইভেটে এই পরিমাণ টাকা দিয়ে শিক্ষা কিনতে বাধ্য করা ..." এই ব্যপারটা আসলে আপেক্ষিক। আমার মনে হয় যারা "টাকা" দিয়ে শিক্ষা কিনে নিচ্ছে, তাদের অনেকেই অর্থনৈতিক কারণে "ফ্রি" শিক্ষা পাবার দাবিদার ছিলেন। আর
"ফ্রি" শিক্ষা পাওয়া অনেক মানুষের "টাকা" দিয়ে শিক্ষা কিনে নেয়া উচিত ছিলো। আশা করি ব্যপারটা একটু ভিন্ন আঙ্গিকে ভেবে দেখবেন।
শিক্ষার বিনিয়োগের ব্যপার নিয়ে আপনার ধারণার সাথে আমি একমত। কিন্তু আমাদের সীমিত সামর্থের ব্যপারটাও অস্বীকার করবার উপায় নেই। বর্তমানে যে খরচ করা হচ্ছে, সেটাকে আরো ভালোভাবে ব্যবহার করা যায় কিনা সেই ভাবনা থেকেই আসলে আমার লেখা। তবে এটা অনস্বীকার্য যে অনেক গবেষণার দরকার আছে।
জাতিসংঘের নির্দেশনা আমাদের মত দেশের শিক্ষা ব্যায় বাজেটের ৬% হওয়া উচিত । তবে আমাদের দেশে বাজেটের মাত্র ২% খরচ করা হয় ।
দেশের সরকার সামরিক খাতে এত বিশাল বাজেট বরাদ্দ করতে পারে কিন্তু বিশ্ববিদ্দালয় এর জন্য অর্থ অনুদান দিতে পারেনা
দেশের এই অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে শুধু মাত্র UN মিশনে পাঠানোর হাঁটু পার্টিদের পোষার কোন যৌক্তিক ব্যাখ্যা কেও দিতে পারবে বলে আমার মনে হয়না..................
হিল্লিদিল্লিহাইকোর্টসুপ্রিমকোর্টইউরোপআম্রিকা পাবলিকরে দেখানোর আগে আসেন বাংলাদেশরে, এইখানকার মানুষ কীভাবে থাকে সেইটা আরেকটু চিনতে শিখি।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
"পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শেষ পর্যন্ত আমাদের জাতির একমাত্র অবলম্বণ। যারা দেশের উন্নয়নে এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অবদান খুজে পান না তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ''বাপেক্সের ত্রি-মাত্রিক সার্ভের সাফল্যের প্রতি।''
বাপেক্সের ত্রি-মাত্রিক সার্ভের টিমের প্রতিটি সদস্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছে। ২ টি কারণে এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আসা সম্ভব নয় ।
১) প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনও ফলিত পদার্থবিদ্যা বা ভূত্ত্বের মত বিষয় ব্যবসায়িক বিবেচনায় পড়ানো হয় না।
২) প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭/৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাশ করে সর্বোসাকুল্য ২০ হাজার মাসিক বেতনে চাকুরি সেই সকল ছাত্ররা করবে না।
আমি প্রশ্ন রেখে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা বাপেক্সের এই তরুণরা ১ ম সুযোগে যে সম্পদের সন্ধান দিল , তাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কত বৎসরের বাজেট সংস্থান করলো ?
প্রথম আলোর হিসাবে অনুসন্ধান প্রাপ্ত গ্যাসের দেশীয় বাজারে মূল্য ১০ হাজার কোটি । সামগ্রিক অনুসন্ধান-উত্তোলণ-পরিচালন-পরিবহন খরচ ২ হাজার কোটি টাকা বাদ দিলে বাকি অর্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ বৎসরের বাজেট সংস্থান হবে"
বাপেক্সে কর্মরত এক বড় ভাইয়ের ফেইসবুক মন্তব্য হুবুহু কপি করে দিলাম।
নিজের মত বলি, আমাদের মত সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদ, জনসংখ্যার ভারে ন্যুজ্ব, দূর্ণীতিপরয়ান সরকার -প্রশাসন, প্রাকৃতিক আর মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগে প্রতিনিয়ত অস্তিস্ত্ব টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাওয়া দেশে শিক্ষা ছাড়া বাঁচার আর কোন উপায় কি আপনার জানা আছে!
আম্লীগ-বিম্পি'র নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্রে আর কিছু না হোক, একটা সত্য এদেশের মধ্যবিত্ত -নিম্নমধ্যবিত্ত সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে সামনে এগুবার একটাই রাস্তা তা হলো শিক্ষা।স্কুল শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহন, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পাসকৃত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দেখলেই বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।অথচ সরকার অনেক স্বপ্ন নিয়ে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পাশ দেয়া শিক্ষার্থীদের দরজা বন্ধ করে দিচ্ছেন উচ্চশিক্ষায় এসে।এ এক কুৎসিত রসিকতা!
পিপিদা উপরে বুঝিয়েই বলেছেন "কেন বাংলাদেশে কানাডা'র মতো লোন পদ্ধতি সম্ভব নয়"।বিশদ বলার প্রয়োজন নাই।সমস্যা হলো আমরা ইউরোপ-আম্রিকা গিয়ে সবকিছুই ওদের লাইনে চিন্তা করি, ওদের পদ্ধতিই একমাত্র সঠিক জ্ঞান করি কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ছেলেরা নিজের এবং ভবিষ্যতে আমাদের মতো ফকিন্নির পোলাদের উচ্চশিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে জানবাদ রেখে সংগ্রাম করছেন, সেটুকু স্বীকৃতি দিতে চাইনা।
তাদের দাবী-দাওয়া ছাপিয়ে "গাড়ী ভাংচুর" মুখ্য হয়ে উঠে।
আপনার সাথে আমার ধারণার মূল পার্থক্য বুঝিয়ে বলিঃ
১। আপনি ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ২৯ বছর আপনার ভাষায় "...... উচ্চশিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে" চাইছেন।
আপত্তি নাই। সাথে আমি আরো বলছি যে, ২০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি শুরু করবার পর একটা অংশ সরকারকে ফেরত দেন। আবার কবে ১০ হাজার কোটি টাকার আরেক সাফল্য পাবেন তার তো কোনো নিশ্চয়তা নাই।
২। "বাপেক্সের ত্রি-মাত্রিক সার্ভের টিমের প্রতিটি সদস্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছে। ২ টি কারণে এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আসা সম্ভব নয় ।........." পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন আমার লেখায় আমি তুলিনি। এখানে আপনি পাব্লিকদের কেনো প্রাইভেটের চেয়ে মহান দেখাতে চাইলেন, ঠিক পরিষ্কার না।
৩। পরিশেষে বলিঃ "তাদের দাবী-দাওয়া ছাপিয়ে "গাড়ী ভাংচুর" মুখ্য হয়ে উঠে", গাড়ী ভাংচুর করা যে অপরাধ, যাদের সারাজীবন ফ্রি খেয়ে অভ্যাস তারা সেটা স্বীকার করতে চায় না। এটা স্বাভাবিক। দাবী দাওয়া জানান, সরকার না শুনলে বাসা থেকে কাচের ঘটি বাটি নিয়ে এসে রাস্তায় ভাঙ্গেন; সমস্যা নাই। গাড়ী ভাংচুর কইরেন না। সেটা আরেকজনের কষ্টের টাকায় কেনা; সেই আরেকজন পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা "এক সময়ের ফকিন্নির পোলা" হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক না।
"আপনার সাথে আমার ধারণার মূল পার্থক্য বুঝিয়ে বলিঃ
১। আপনি ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ২৯ বছর আপনার ভাষায় "...... উচ্চশিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে" চাইছেন।
আপত্তি নাই। সাথে আমি আরো বলছি যে, ২০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি শুরু করবার পর একটা অংশ সরকারকে ফেরত দেন। আবার কবে ১০ হাজার কোটি টাকার আরেক সাফল্য পাবেন তার তো কোনো নিশ্চয়তা নাই"।
উচ্চশিক্ষা নিয়ে আমার আপনার সাথে আমার ধারণার কোন মিলই নেই, সেখানে মূল পার্থক্য পাইলেন কোথা থেকে:)
আমি শিক্ষালোন পদ্ধতির সমর্থক না।যদি আপনার কথায় সায় দিয়ে রাজিও হয়ে যাই, তাইলে একটু ধীরে-সুস্থে একটা সৎ উত্তর দিনতো, বাংলাদেশে শিক্ষালোন চালু করার মতো অবস্থা কি বিদ্যামান! যে দেশে কৃষক এখনো ৫হাজার টাকা কৃষিলোন নিতে চপ্পলের তলানী ক্ষয় করে ফেলে, সেখানে আরেকটা শিক্ষালোন চালু করে কর্মকর্তাদের পোয়াবারো হবে, ছাত্রদের শুধুই জুতা ক্ষয় হবে, লোন আর জুটবে না।উপরের মন্তব্যে অনেকেই পরিস্কার করেছেন।এরপর লোন নিয়ে কথা বাড়ানো শুধু তর্কের খাতিরে তর্ক, যাকে বলে "আজাইরা তর্ক"।
"আবার কবে ১০ হাজার কোটি টাকার আরেক সাফল্য পাবেন তার তো কোনো নিশ্চয়তা নাই।"
চোখ-কান খোলারাখুন, বাপেক্সের মতো আরো সরকারি প্রতিষ্ঠানের এমন কোটি কোটি অর্থসাশ্রয়ের খবর পাবেন।
"পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন আমার লেখায় আমি তুলিনি। এখানে আপনি পাব্লিকদের কেনো প্রাইভেটের চেয়ে মহান দেখাতে চাইলেন, ঠিক পরিষ্কার না"।
পাব্লিকের চেয়ে প্রাইভেটকে মহান দেখানো হয়নাই, বরং বলা হয়েছে অর্থনৈতিক কারনেই বাংলাদেশের প্রাইভেট এবং পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীতে পার্থক্য আছে এবং পাব্লিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর যৌক্তিকতা এমন সাফল্যে(শুধু যদি অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় আনি) প্রমাণিত হয়।
আমার জানামতে বাংলাদেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাকাদেমিক বিষয় হিসেবে "ইতিহাস" পড়ানো হয়না।এখন কেউ যদি বলে বাংলাদেশের সব খ্যাতিমান একাডেমিক ইতিহাসবিদ পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এসেছে।তাইলে কি পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাইভেটের চেয়ে মহান দেখানো হবে! পু্র্বানূমিত ধারণা বাদ দিন:ইহা রজ্জুতে সর্পভ্রম ঘটায়।
"পরিশেষে বলিঃ "তাদের দাবী-দাওয়া ছাপিয়ে "গাড়ী ভাংচুর" মুখ্য হয়ে উঠে", গাড়ী ভাংচুর করা যে অপরাধ, যাদের সারাজীবন ফ্রি খেয়ে অভ্যাস তারা সেটা স্বীকার করতে চায় না"।
যাদের সারাজীবন ফ্রি খেয়ে অভ্যাস তারা সেটা স্বীকার করতে চায় না।
কথাটি চরমভাবে আপত্তিকর।কড়া জবাব দেয়া যায়; থাক কিছু বল্লাম না।
গাড়ি ভাংচুর যে বেঠিক কাজ-এটা কি অস্বীকার করা হয়েছে! গাড়ী ভাংচুরের প্রসংগ এসেছে আপনার উপস্থাপন ধরন
দেখে; "জগন্নাথের ছাত্ররা আন্দোলন-সংগ্রামের নামে গাড়ী-ভাংচুর করেছে" এমন একটা টোন পাওয়া যায় আপনার লেখায়; সেটাই উপরে এককথায় বলেছি ।
কোন ঘটনা উপস্থাপনার কারনে পুরো আলাদা মানে ধারণা করতে পারে, সেটাতো আপনার ভালোই জানার কথা!
যাহোক, কথা না বাড়াই।সবশেষে বলি, আপনার এমন প্রস্তবনা শেষমেষ শিক্ষানিয়ে বিশ্বব্যাংক যে নির্দেশনামা ও তরিকা আমাদের আম্লীগ-বিম্পি সরকারকে বিলায়, তার'ই সমার্থক হয়ে দাঁড়ায়।
ধন্যবাদ।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নের ব্যাপারে যে প্রস্তাবটি রাখা হয়েছে সেটা আলোচনাযোগ্য বলেই মনে হয়। আমাদের দেশের বাস্তবতায় আমরা অনেক কিছুকে প্রথমবারেই উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করি। আজ যেটা অকার্যকর সেটা কাল অত্যাবশ্যকীয় হতে পারে।
আইডিয়া ভাল লেগেছে তবে আরও ঘষামাজা হয়ত করা যাবে।
একটা থট এক্সপেরিমেন্ট করলাম। পাবলিক শিক্ষার জায়গায় পাবলিক প্রতিরক্ষা আর ছাত্রের জায়গায় সৈন্য বসিয়ে প্রস্তাবটা পড়লাম। আমার কাছে দুইটাই ভালো লেগেছে। ছাত্রেরা ঋণ করে শিক্ষা নেবে আর সৈন্যেরা ঋণ করে কমব্যাট ট্রেনিং নেবে। ছাত্র পাশ করে চাকরি জুটিয়ে ঋণ শোধ করবে আর সৈন্য প্রমোশন পেয়ে ঋণ শোধ করবে। সরকারের সব টাকা তখন আরো ভালো ভালো কাজে খরচ করা যাবে।
লেখকের প্রস্তাবে একমত। তবে তার আগে একটা কথা আছে। প্রতিটি ছেলে মেয়ে অনার্স বা সমমান পাশ করে বের হলে চাক্রির নিশ্চয়তা দিতে হবে অথবা যতদিন চাকরি না পাবে বেকার ভাতা দিতে হবে, অবসর প্রাপ্তদের জন্য বয়স্ক ভাতা দিতে হবে, সবার জন্য চিকিতসা ব্যাবস্থা করতে হবে। এগুলো বাস্তবায়ন করা হলে তারপর আমরা ঋণ নিয়ে পড়ব এবং সেই ঋণ চাকরি করে শোধ করব।
নতুন মন্তব্য করুন