একসময় যাত্রা পালা গ্রাম বাংলার একমাত্র বিনোদনের মাধ্যম ছিল। গভীর রাত এ আরাম্ভ হয়ে ভোররাত অবধি গ্রামের সবাই উপভোগ করত গানের - নাচের মাধ্যমে তুলে ধরা নানান কাহিনী। এখন দিন বদলের হাওয়ায় গ্রামের মানুষদের বিনোদনের মাধ্যমও বদলে গিয়েছে। সবার বাসায় টিভি ,ডিশ এর লাইন। আগে যে যাত্রা পালার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকা তার আর দরকার পড়েনা, চ্যানেল ঘুরালেই শীলাকি জাওয়ানি দেখা যায় । যাত্রাতেও লাগে দিন বদলের হাওয়া , মানুষজন কে আকর্ষণ করার জন্য শীলাকি জাওয়ানি দেখানো শুরু হয় যাত্রাতেও। সেদিন রাত ৭টার দিকে সিলেট ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ফকরুল ভাই যখন বললেন বিলুপ্তপ্রায় যাত্রা হচ্ছে চা বাগানে আর ২/৩ জন নিয়ে ছবি তুলতে যাবার অনুমতি যোগার করেছেন উনি তখন আর সুযোগ মিস করলাম না।
যাত্রাদলের নেতা লোকনাথ B.Ed পাস একজন লোক , অনেক সুন্দর করে কথা বলেন। অনেক অমায়িক ভাবেই গ্রহণ করলেন আমাদের কে (মানে আমি , একলাস ভাই, ফকরুল ভাই আর ফরহাদ নামের একজন নবীন ফটোগ্রাফার )
যাত্রার ওইদিনের গল্পের নাম ছিল "আলোমতি ও প্রেমকুমার" পল্লীকবি জসিম উদ্দিন এর লিখা একটা রূপকথা এটা জানতে পারলাম। সব পুরুষদের দেখলাম সাজঘরে চটি টাইপের বই দেখে ডায়ালগ মুখস্ত করতে । অপরদিকে মহিলাদের দেখলাম মেকআপ নিতে। স্কুল ঘরের একটা রুম এই সব কিছু , মহিলাদের কাপর বদলাবার ও কোন আলাদা ঘর নাই।
যাত্রার শুরুটা হল দেশের গান গেয়ে , এরপর শুরু হল নাচ, কিছুটা অশালীন ই বলা যায় নাচের ধরন। যেন দর্শক দের ওয়ার্ম আপ করা। এমন ৩/৪ টা খেমটা নাচের পর শুরু হল আসল যাত্রা। যাত্রার মাঝে মাঝে আবার সেই ওয়ার্ম আপ খেমটা নাচ।
যাত্রা দলের সবাই খুব সাধাসিধা এবং আমাদের অনেক সহযোগীতা করেছে পুরা সময় কিন্তু মাঝ রাতের দিকে কয়েক জন আয়োজক (এলাকার প্রভাবশালীরা) কি কারনে যেন আমাদের উপর ক্ষেপে গেল (সম্ভবত আমাদের কারনে নাচে একটা সীমা পর্যন্ত অশালীনতার হচ্ছিলো তাই) , বলে বসল আর ছবি তুলতে পারবেন না । মাতাল মানুষ দের সাথে তর্ক করে একবার চা বাগানে বিপদে পরেছিলেন আমাদের সুহাস ভাই- রোয়েনা সহ মুনায়েম ভাইরা তাই আমরা আর অনাদের ঘাঁটালাম না। শিলার জাওয়ানি খোলামেলা ভাবে দেখার সুযোগ দিয়ে বের হয়ে আসলাম।
১।
মন্তব্য
প্রথম বাক্যটাতে সম্পূর্ণ দ্বিমত করি। যাত্রাপালা গ্রাম বাংলার একমাত্র বিনোদন কখনোই ছিল না
গ্রাম বাংলার আরো বহু বিনোদন ছিল। এখনও আছে। বর্তমান ধারার যাত্রার বয়স কিন্তু খুব বেশি না...
অনেকেই বাংলায় চরিতাভিনয় আর যাত্রার বয়সকে এক করে গুলিয়ে ফেলে
০২
বাংলাদেশের যাত্রার অশ্লীল নাচ কিন্তু পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের রপ্তানি
বাংলাদেশের যাত্রা সেই সময় মুকুন্দরামের উত্তরাধিকার বহন করে প্রতিবাদের মঞ্চ হয়ে উঠেছিল
তাই তরুণদের মাতিয়ে রাখতে আইয়ুব খান পাকিস্তান থেকে বাইজি পাঠিয়ে চালু করে আনন্দ যাত্রা
বর্তমান যাত্রার নাচনেওয়ালিরা সেইসব বাইজিদেরই উত্তরাধিকার
এবং এখনও যাত্রা দলে প্রচুর অবাঙালি নাচনেওয়ালি দেখা যায়। আমি জানি না তারা কোত্থেকে আসে
জিজ্ঞেস করলে বাংলাদেশের বিভিন্ন ঠিকানার কথা বলে। কিন্তু তাদের ভাষা দেখলেই বোঝা যায় তারা বাঙালি না
০৩
ছবিগুলো চমৎকার
০৪
আরেকটু বড়ো করে বর্ণনা দিলে ভাল্লাগতো
০৫
বহুদিন সিলেটের চাবাগানে যাত্রা দেখতে যাওয়া হয় না
সামনের কালীপুজায়ও মনে হয় না যাওয়া সম্ভব হবে
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
_____________________
Give Her Freedom!
লেখায় নিজের নাম লিখতে ভুলে গেছেন। অবশ্য ছবিতে আপনার নাম পাওয়া যাচ্ছে। তারপরো লেখায় নাম দেয়াটা জরুরি।
আলাদাভাবে বিচার করলে ২ নং ছবিটা ভাল লেগেছে। ফোকাস DOF সব মিলেয়ে সুন্দর। ৯নং ছবিটা আরেকটু শার্প হলে ভালো লাগতো। যেহেতু আপনার সাবজেক্ট স্থির এই জায়গাটাতে। তাই সেটা আমরা আশা করতেই পারি।
ছবিগুলো সাজানোর মধ্যে দিয়ে একটা গল্প বলার চেষ্টা করেছেন আপনি। পুরোমাত্রায় সফল হয়েছেন সেটা আমি বলবো না। সেটা অনেক কারণেই হয়নি এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণটা হচ্ছে সময়-স্বল্পতা। খুব অল্প সময় পেয়েছেন আপনি ছবি তোলার জন্যে। তবে ছবিগুলো দেখে আপনার পরিশ্রমটা টের পাওয়া যাচ্ছে। একেতো আলো কম তার উপরে আপনার ছবির বিষয় গতিশীল। এই পরিস্থিতিতে ভালো ছবি বের করে আনতে হলে অনেক অ্যাফর্ট দিতে হয় এবং ট্যাকনিক্যালি অনেক সাউন্ড হতে হয়।
আপনার ছবি এবং লেখা নিয়মিত পাওয়ার আশা ব্যক্ত করছি।
লিখে যান, ছবি তুলে যান, দিয়ে যান আমাদের পথ প্রান্তরের জীবনের প্রতিচ্ছবি।
facebook
ভালো লাগল ছবিগুলো
ছবিগুলো ভালই, তবে সাব্জেক্টের সম্পর্কে আরেকটু পড়াশোনা করা জরুরী।
ফটোস্টোরিতে গল্প বলার ভঙ্গীটুকু আসে নাই, ছবিগুলো তাই আলাদা আলাদা করে সুন্দর - কিন্তু সব মিলে দানা বাঁধে নাই।
ভাল থাকুন, হ্যাপি ক্লিকিং
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ছবিগুলো ভাল।
লেখায় নাম দেন ভাই।
২ আর ৪ নং ভাল লেগেছে।
আরেকটু গুছিয়ে লিখলে ছবির সঙ্গে গল্প মিলিয়ে নেয়ার সুযোগ হতো।
লেখালেখি_ ফটুকবাজি চলুক।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খুব ভাল লেগেছে। আরও ছবি তুলুন, আরও লিখুন।
বিষয়ভিক্তিক ছবি আর লেখা নিয়ে সিরিজ করা যায় কিনা ভাবুন।
_____________________
Give Her Freedom!
নতুন মন্তব্য করুন