রোমান হলিডে

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: শনি, ০৮/১০/২০১১ - ১:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বর্তমান মানব সভ্যতার পিছনে যে কয়টি শহর ও সংস্কৃতির অবদান অনস্বীকার্য তাদের মধ্যে সবচেয়ে অগ্রগামীদের অন্যতম রোম। প্রায় তিন হাজার বছর আগে যাত্রা শুরু করা এই তিলোত্তমা শহর গত দুই হাজার বছর ধরে ইউরোপ তথা সমগ্র বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র। এই শহরেই গোড়াপত্তন ঘটে রোমান সভ্যতার, যা শাসন করেছে তৎকালীন জানা বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশী, যার অবদান আমরা এখনো প্রতিনিয়ত অনুভব করি প্রতিদিনের নিত্য জীবনে। চলুন পাঠক ঘুরে আসি সাত পাহাড়ের শহর রোম থেকে যাকে বলা হয় আধুমিক সভ্যতার জন্মক্ষেত্র।
স্বপ্ননগরী রোমে পা দিলাম আমরা এক সন্ধ্যায়, আমরা বলে আমি আর ইতালির বোলগনা বিশ্ব- বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মণি ভাই। বেশী আঁধার হয়ে আসায় আর কোথাও ঘোরাঘুরি না করে রেলস্টেশনের কাছেই এক হোটেলে আস্তানা গাড়লাম সেই রাতের মত, তবে হোটেল রিসেপ্সনিস্টের কাছে থেকে জেনে নিতে ভুললাম না কিভাবে পরদিন প্রথম গন্তব্য বিশ্বের বিস্ময় রোমের কলোসিয়ামে পৌঁছাব যা আমাদের হোটেল থেকে পদব্রজে মাত্র মিনিট দশেকের পথ।
পরদিন সূর্যিমামা গগনের কোনে উকি দেওয়ার পরপরই আমরা ম্যাপ হাতে চললাম কলোসিয়ামের পানে।এই গলি, সেই গলি, এই রাস্তা, সেই রাস্তা পার হয়ে অবশেষে এক মোড় ঘুরতেই নজরে আসল চিরচেনা কলোসিয়ামের বিশাল অবয়ব, ইতিহাস যেন থমকে গেছে এইখানে।
IMG_5024
এই সাতসকালেও দেখি আমাদের আগে বেশ কিছু্ দর্শনার্থীর ভিড়, বিশাল লাইন হয়ে গেছে প্রায় ২০০০ বছর আগে নির্মিত তৎকালীন এই অ্যারেনা বা স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য। উল্লেখ্য, এইটাই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রোমান অ্যাম্ফিথিয়েটার। ৫০,০০০ মানুষের ধারনক্ষমতা সম্পন্ন এই অ্যারেনা মূলত ব্যবহৃত হত লোকসমাগম, রাজকীয় ভাষণ, নাটক আর বিনোদনের নানা আসরের জন্য, বিশেষ করে ইতিহাস কুখ্যাত গ্ল্যাডিয়েটর মল্লযুদ্ধের কারণে। বিশ্বের মধ্যযুগের সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম এই রোমান স্থাপত্য আসলেই মনে অপার বিস্ময়ের উদ্রেক করে, আজ ২০০০ বছর পরেও রোদ-বৃষ্টি-ঝড়সহ প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প আর পাথরচোরদের দৌরাত্ন উপেক্ষা করে কালের করাল গ্রাসের নানা সাক্ষী আপন শরীরে নিয়ে আমাদের সামনে তা গর্বভরে দাড়িয়ে থাকে অতীত ও আধুনিক যুগের মিলনকেন্দ্র হয়ে। অবশেষে ভিতরে ঢোকার সৌভাগ্য হয় আমাদের সেই বিস্ময়ের বিস্ময়ে, সারি সারি গ্যালারী, কুলীন আর সাধারণ জনগণের জন্য পৃথক বসার ব্যবস্থা আর সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সিজার আর সিনেটরদের জন্য আলাদা আলাদা বিলাসবহুল কক্ষ।
অ্যারেনার কেন্দ্রস্থলে প্রায় গোলাকৃতির এক মাঠ থাকার কথা যেমনটা আমরা সাধারণত চলচ্চিত্রে আর চিত্রকর্মে দেখে থাকি কিন্তু সময়ের ভারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কলোসিয়ামটির পাটাতন ভেঙ্গে পড়েছে অনেক অনেক আগেই, সেই ভঙ্গুর পরিবর্তনযোগ্য পাটাতনেই মল্লযুদ্ধ হত গ্ল্যাডিয়েটর আর নানা বুনো পশুদের, সেই সাথে যুদ্ধ অনুযায়ী পট পরিবর্তন করা হত প্রায়শই, কখনো মরুভূমি, কখনো জঙ্গল, কখনো বা জলজগৎ। তবে পাটাতনটি ভেঙ্গে পড়ায় তার নিচের স্থাপত্যে আমাদের দৃষ্টি পড়ে অবধারিত ভাবেই, জানা যায় সেখানকার সারি সারি ক্ষুদে কামরাগুলো ব্যবহার হত পশুর খাঁচা, খাদ্যের গুদাম আর গ্ল্যাডিয়েটরদের বিশ্রামাগার ও শরীরচর্চার ক্ষেত্র হিসেবে।
IMG_5094
আর গ্যালারীগুলো ঘুরে ঘুরে যেন সব এসে এক জায়গাতেই মিলিত হয়েছে, এই আশ্চর্যকর স্থাপত্য এমনভাবে তৈরি যেন মাঝের মাঠটাতে সৃষ্টি হওয়া প্রতিটি শব্দ সবচেয়ে উঁচুতে বসে থাকা দর্শকের কানে যেন নিখুঁত ভাবে পৌছায়! প্রাচীন সেই সরু সরু অলি গলিতে মুগ্ধ হয়ে ঘুরতে থাকি আমরা, সূর্যের তেজালো রশ্মি এসে পড়েছে কলোসিয়েমের অর্ধেকে, অবাক হয়ে ভাবছি যে রোমানদের বলা হয় আধুনিক সভ্যতার জন্মদাতা, যারা বিশ্বকে এনে দিল প্রথমবারের মত গণতন্ত্রের স্বাদ, তারা কিভাবে পারত এই রক্তপাতময় বিনোদনকে উপভোগ করতে? একদল মানুষ যথেচ্ছ ভাবে লড়ে যাচ্ছে প্রাণের দায়ে, অথবা বুনো বাঘ, সিংহ হামলে হামলে খাচ্ছে ক্রীতদাস বা যুদ্ধবন্দীদের, এই অমানুষিক অচিন্ত্যনীয় ঘটনাগুলোও ছিল রোমানদের কাছে নিছকই বিনোদন।
IMG_5125
অবশেষে কয়েকঘণ্টা পরে একরকম জোর করেই কলোসিয়াম থেকে বের হয়ে আমরা রওনা দিলাম অন্য গন্তব্যের দিকে। অ্যারেনার মূল দরজার সামনেই দেখা হল একাধিক রোমান সৈন্যর সাথে, আসলে একদল শিল্পী যারা তৎকালীন রোমান সৈন্যদের পোশাক ও নকল অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে টহল দিচ্ছে, পর্যটকদের মনোরঞ্জনের এক ফন্দি, অনেকেই সাগ্রহে ছবি তুলছে তাদের সাথে।
IMG_5124
কলোসিয়ামের অদূরেই বিশ্বখ্যাত ইতিহাসময় স্থাপত্য রোমান ফোরাম, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে যাত্রা শুরু করা সিজারের ভাষণ ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয়কাজে ব্যবহৃত এই সুরম্য স্তম্ভ ও ভবনময় এলাকাটি কালের করাল গ্রাসে হারিয়েই যেতে বসেছিল, দুইশ বছর আগেও এর অধিকাংশ স্থান ছিল দশ ফুট মাটির নিচে! ধন্যবাদ ইতালীয় প্রত্নতাত্ত্বিকদের, তাদের অপরিসীম চেষ্টা ও বিপুল অধ্যবসায়ের ফলেই আজ আমরা খানিকটা দেখতে পারছি অতীতের কোল খুঁড়ে বাহির করা এই ইতিহাসস্নাত স্থান। জানলাম জুলিয়াস সিজারের মৃত্যুর পরে রোমান সেনাপতি মার্ক অ্যান্টনী এইখানেই দাড়িয়ে রোমানদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন। কি অদ্ভুত অনুভুতি, রোমের সবখানেই ইতিহাসের এমন ছড়াছড়ি! প্রতি নিঃশ্বাসে, প্রতি পদক্ষেপেই আপনি অনুসরণ করতে পারবেন তা।
IMG_5088
IMG_5089
এরপরে যাত্রাপথে এসে দাড়ায় দিগন্ত আড়াল করে থমকে থাকা অতুলনীয় বিশালত্ব আর সৌন্দর্যের অধিকারী সফেদ মর্মর পাথরের ভবন ভিক্তর ইমানুয়েল মনুমেন্ট। ইতালির নানা রাজ্যকে সর্বপ্রথম এক পতাকার নিচে নিয়ে আসা অবিভিক্ত ইতালির প্রথম রাজা ভিক্তর ইমানুয়েলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২৩০ ফুট উচু ও ৪৪৩ ফুট দীর্ঘ উৎকৃষ্ট মার্বেল পাথরের এই ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৩৫ সালে। মূল সিংহদরজার সামনেই এক বেদীর উপরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত এক নাম না জানা সৈনিকের সমাধি, যা ইতালির স্বাধীনতা ও তা রক্ষার্থে প্রাণদানকারীদের প্রতীক। ভেতরে ঢোকার সুতীব্র ইচ্ছা থাকলেও দরজায় দর্শনার্থীদের ভিড় দেখে সেই আশায় গুড়ে বালি দিয়ে এগোলাম রোমের প্রাণদানকারী নদী টিবেরের দিকে।
IMG_5300
নদীপ্রধান দেশের মানুষ আমি। শৈশব, কৈশোর কেটেছে পদ্মাতীরের রাজশাহীতে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, সুরমা, কর্ণফুলী, ব্রহ্মপুত্র, নাফ, ইছামতী, ধলেশ্বরী কত অসম্ভব সুন্দর নদীগুলো আমাদের চিরসবুজ পলিমাটির দেশটা তৈরি করেছে লক্ষ হাজার বছর ধরে, তাই কোন দেশে গেলেই সেখানকার স্থানীয় নদী দেখার জন্য মন আনচান করে, হয়ত সেই নদীর তীরে ইতস্তত পথ ভুলে বেড়ানো কোন শিশুকে দেখে রোমন্থন করি নিজের শৈশব, পৃথিবীর সব নদীর জেলেকেই মনে হয় অতি আপন পদ্মাপারের জেলে। সোজা কথাই বলি- আমি নদী জমায়। বিভিন্ন চিত্রবিচিত্র নদী, তাদের বাঁক, লোকজন, জীবনযাত্রার সাথে একাত্নতা বোধ করি। এই মুহূর্তে জীবন নামের নদীর বাঁকে সামনে এসে উপস্থিত হয়েছে টিবের নামের এই ইতিহাসখ্যাত নদী, যা সঞ্জীবনী অমৃত সুধা দিয়ে প্রাণ সঞ্চালন করেছে রোমান সভ্যতায়, যাকে কেন্দ্র করে দুপাশে বিকশিত হয়েছে আধুনিক সভ্যতার আঁতুড়ঘর। সেই দিকেই চললাম টিবেরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
আল্পস পর্বতমালা থেকে যাত্রা শুরু করা ৪০৬ কিলোমিটার দীর্ঘ টিবের ভূমধ্যসাগরে মোহনায় বিলীন হবার আগ পর্যন্ত প্রায় আঠার হাজার বর্গকিলোমিটার ভূমি উর্বর করে চলেছে অনাদিকাল ধরে আপন স্বকীয়তায়, নিজস্ব ছন্দে কিন্তু তার প্রস্থ মাত্র কয়েকশ মিটার, স্থান বিশেষে আরো কম! ইউরোপের নদী হিসেবে তা ঠিক থাকলেও পদ্মা, মেঘনা, যমুনার দেশের মানুষের কাছে তা কিছুটা শীর্ণকায় বলেই প্রতীয়মান হলেও টিবেরের ইতিহাসখ্যাত অতীতের কারণে মানবজাতির কাছে তার আবেদন থাকে আগের মতই অটুট, অম্লান, আবেদনময়ী।
IMG_5257
নদীর উপরে সারি সারি সেতু, প্রত্যেকটিতেই মর্মর পাথরের রেলিং আর সুদৃশ্য সব প্রমাণ আকারের ভাস্কর্যের ছড়াছড়ি। এমন এক সেতুর অন্যপারে দেখলাম দুই হাজার বছরের সমৃদ্ধময় অতীত নিয়ে সগর্বে দণ্ডায়মান ক্যাসল সেন্ট অ্যাঞ্জেলো, দুর্গাকৃতির এই ভবনটি ছিল এক সময়ের বিখ্যাত রোমান সম্রাট হাইড্রিয়ানের সমাধি, পরবর্তীতে তা ব্যবহার হয় দুর্গ, কারাগার ও পোপদের বিপদকালীন সময়ের আবাসস্থল হিসেবে। বর্তমানে সেখানে প্রতিরক্ষা জাদুঘরের অবস্থান।
IMG_5259
এমনই আরেক সারি সারি দেবদূতের ভাস্কর্য শোভিত সেতুর অন্য প্রান্তে চোখে পড়ল আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টারত এক অবেলিস্ক স্তম্ভ, তারপর বিশালাকার এক গম্বুজ ও সুরম্যপ্রাসাদ। বুঝলাম চেয়ে আছি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ ভ্যাটিকান সিটির পানে, রোম মহানগরীর মাঝেই যে এর অবস্থান। কিন্তু সে অন্য সময় দেখব এই চিন্তা করেই টিবেরের প্রতি নীরব শ্রদ্ধা জানিয়ে চললাম পিয়াজ্জা ন্যাভনার উদ্দেশ্যে।
রোমের একমাথা থেকে আরেক মাথা পায়ে দলতে দলতে ক্ষিদে পেয়েছে বেশ, কাছে পিঠেই এক রেস্তরা দেখে ঢুকে পড়লাম পেটপূজোর আশায়। ইতালি ভোজনরসিকদের প্রিয় দেশ, রসনাতৃপ্তকারী রকমারি মজাদার খাবারের জন্ম ও বিস্তার এই দেশে। মুখে জল আনা পিজ্জা, পাস্তা, স্প্যাগেটি আর কত নাম বলব! সেই সাথে আছে শত শত বর্ণ, গন্ধ, স্বাদের চীজ। মনপ্রাণ উদাস করা এক ধরনের স্প্যাগেটিই খেলাম ভূমধ্যসাগরের খাঁটি জলপাই তেল দিয়ে তারিয়ে তারিয়ে। সেই সাথে প্রচুর দুধ চিনি দেওয়া বিশেষ ধরনের কফি- ক্যাফে দ্য লাত্তে। রেস্তরাটি অত্যন্ত সুরুচিপূর্ণ ভাবে সাজানো, আধুনিকতার সাথে নান্দনিকতার বহিঃপ্রকাশ। দেয়ালে দেয়ালে ঝুলছে বিশ্বনন্দিত ক্ল্যাসিক সব চলচ্চিত্রের কিছু আলোকচিত্র, সবই সাদা কালো। এর মাঝে আবার বিশেষভাবে সাজানো রোমে শুটিং করা সিনেমাগুলো যার মধ্যমণি হয়ে আছে প্রিয়মুখ অড্রে হেপবার্ন আর গ্রেগ্ররী পেক অভিনীত বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক সিনেমা রোমান হলিডে।
IMG_5264
এরপরের গন্তব্য পিয়াজ্জা ন্যাভনা, প্রাচীন কালে স্টেডিয়াম হিসেবে ব্যবহৃত এই চত্বরে তখন লাখো দর্শনার্থীর ভিড়, এর মাঝে নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে হরেক জাতের দোকানীরা, এর মাঝে ভাল করে খুঁটিয়ে কিছু দেখা প্রায় অসম্ভব, তাই মূলত দেখা হল এই চত্বরের মূল আকর্ষণ বিখ্যাত রেনেসাঁ শিল্পী ভ্যাটিকানের বরপুত্র বার্নিনির চারনদীর ঝরনা। বাইবেলে বর্ণিত স্বর্গের চারদিকে প্রবাহিত চার নদীর প্রতীক হিসেবে পৃথিবীর চারটি মহাদেশের অন্যতম বিখ্যাত চার নদী দানিয়ূব, গঙ্গা, নীলনদ ও প্লেটের প্রতীকি ভাস্কর্য। মজার ব্যপার হচ্ছে এই অনন্যসাধারণ ঝরনাটি নির্মাণের সময় নীলনদের উৎস মানুষের অজানা ছিল তাই এর মাথাটি যেন বস্ত্রখণ্ড দিয়ে আবৃত।
¨¨
ঝর্নাস্তম্ভের ঠিক মাঝখানে সগৌরবে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দাড়িয়ে আছে সুউচ্চ অবেলিস্ক স্তম্ভ। চার নদীর ঝর্না ছাড়াও এই চত্বরেই আছে একাধিক নয়নাভিরাম ঝর্না যার স্থপতিও বার্নিনি।
IMG_5274
চারপাশে প্রাচীন সব আবাসস্থলের ছড়াছড়ি। কিন্তু এই ভিড় এড়িয়ে রওনা হলাম খোদ রোমের সবচেয়ে প্রাচীন পুরাকীর্তির দিকে, যার নাম প্যানথেওন!
IMG_5294
২০০০ বছরের অধিক বয়সী এত চমৎকার ভাবে সংরক্ষিত ভবন রোমেও আর নেই। প্রাচীন রোমান দেব-দেবীদের আরাধনার জন্য স্থাপিত এই অসাধারণ এক গম্বুজবিশিষ্ট ভবনটি ৬০৯ সালে পরিণত হয় খ্রিস্ট ধর্মের গির্জাতে, এভাবেই তা রক্ষা পায় ধর্মান্ধদের হাতে ধ্বংস হবার পরিণতি থেকে। এ এক অদ্ভুত অদেখা ভুবন, মূল দরজা পার হতেই সময় যেন পিছিয়ে গেল হাজার হাজার বছর, সেই একেই আলোআঁধারময় সুপ্রাচীন ইতিহাস বাতাসে মিশে তৈরি করেছে এক আলেখ্য আবহ। ১৪২ ফিট পরিধি আর উচ্চতার সুবিশাল সেই গম্বুজের ঠিক কেন্দ্রস্থলে একটি মাত্র গোলাকৃতি ছিদ্র, যা সত্যিকার অর্থে সুবিশাল প্যানথেওনে সূর্যের আলো প্রবেশের একমাত্র পথ, আর সূর্যদেবের অবস্থান পরিবর্তনের সাথে সাথে সেই রশ্মি বিভিন্ন অংশে পড়ে তৈরি করে অপার্থিব সব রূপ, রেখা, রঙ।
IMG_5287
রেনেসাঁ যুগ থেকে প্যানথেওন ব্যবহৃত হত থাকে সমাধিস্থল হিসেবে, যার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত সমাধিটি ভুবনবিখ্যাত শিল্পী রাফায়েলের। উল্লেখ্য, তিনি ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম সেরা স্থপতি নকশাবিদ ও বিশ্বের প্রথমদিককার একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ। ১৫২০সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সেই এই ভুবনের মায়াত্যাগ করেন মরণশীল ঈশ্বর রাফায়েল।
প্যানথেওন বর্তমানে রোম মহানগরীর সবচেয়ে গভীর অংশে অবস্থান করছে, বলা হয় এর চারপাশে মাটির স্তর দেখলেই বোঝা যায় গত দুই হাজার বছরে কি পরিমাণ মাটি জমেছে এই অঞ্চলে। যে কারণে একসময় প্যানথেওন রোমের শীর্ষে অবস্থান করলেও আজ তা সী লেভেল থেকে মাত্র ৪৫ ফিট উঁচুতে অবস্থান করছে, অর্থাৎ রোমে বন্যা দেখা দিলে সবার আগে অস্তিত্ব নিয়ে হুমকির সম্মুখীন হবে বিশ্বসম্পদ প্যানথেওন। মনোমুগ্ধকর এই স্থাপত্য থেকে বেরোতেই দেখি সূর্য প্রায় পশ্চিমের কোলে, আরামদায়ক এক উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশের বাতাসে আর আমরা ঊর্ধ্বশ্বাসে রওনা দিলাম সেদিনের শেষ গন্তব্যস্থল ত্রেভির ঝর্নার দিকে। বলা হয়ে থাকে ত্রেভি ঝর্না দেখে তাতে পয়সা নিক্ষেপ করে কোন আকাঙ্খা ব্যক্ত না করলে নাকি রোম ভ্রমণ কোন ভাবেই সম্পূর্ণ হয় না!
IMG_5301
ঠিক সূর্যাস্তের মুহূর্তে আমার উপস্থিতি রোমের সবচেয়ে বড় ঝর্না ত্রেভির সামনে, ৮৫ ফিট দীর্ঘ আর ৬৫ ফিট প্রসস্থ ঝর্নাতে অসংখ্য মর্মর ভাস্কর্যের ছড়াছড়ি কিন্তু এর শাসনকর্তা ঠিক ঝর্নার দেয়ালের কেন্দ্রস্থলে দাড়িয়ে থাকা সাগর দেবতা নেপচুন, তার রথের উপরে বিশ্বশাসনের ভঙ্গিমায়।
IMG_5310
তিন রাস্তার মোড়ে অবস্থিত এই বিশাল ঝর্নাটির নির্মাণ কাজ প্রাক রেনেসাঁ যুগে শুরু হলেও তা শেষ হয় ১৭৬২ সালে। রোমে দর্শনার্থীরা সবাই-ই ত্রেভি ঝর্নার জলের কিনারে উল্টো হয়ে পয়সা ছুড়ে মারেন, এর অর্থ তারা আবার কোন না কোন সময়ে রোমে প্রত্যাবর্তন করবেন। এক সমীক্ষায় জানা গেছে এতে প্রতিদিন বাংলাদেশী টাকায় তিন লক্ষ টাকার উপরে পাওয়া যায়, যা রোমে দুঃস্থদের জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি দাতব্য সংস্থায় যায়। চারিদিকে লাখো পর্যটকের ভিড়, সবাই চাইছে মুদ্রা ঝর্নার জলে নিক্ষেপ করে নিজের ভালবাসার রোমে বারংবার ফিরে আসা নিশ্চিত করতে। সূর্যাস্তের শেষ মুহূর্তে রোমের প্রতি, এর শিল্পের প্রতি, এর কারিগরির প্রতি, এর অধিবাসীদের প্রতি একবুক অব্যক্ত ভালবাসা নিয়ে আমিও ভিড়ে গেলাম সেই দলে।।
IMG_5316


মন্তব্য

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দারুণ। বর্ণনা আর ছবি

তারেক অণু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ লীলেন দা, আরে আগে আপনের মত হৃদয়ে দাগ বসানো মন ছুয়ে যাওয়া উপমার ব্যবহার শিখি, তারপর না দারুন লিখার চেষ্টা চালাতে পারব। শুভেচ্ছা।

পারী এর ছবি

চমৎকার করে গুছানো আর তথ্যবহুল লিখা। পড়ে অনেক অজানা কিছু জানলাম এবং অনেক ভালো লাগলো।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ। গুছানো ঠিক না, যা ঘটেছে কেবল একটানে লিখে গেলাম এই--

ফাহিম হাসান এর ছবি

কোন বালিকার জন্য পয়সা ছুঁড়লেন? ইচ্ছা পূরণ হয়েছিল কি অণু ভাই?

তারেক অণু এর ছবি

শুধুমাত্র বালিকার জন্য শুধু শুধু ইচ্ছেটা মাটি দেব, আমি কি পাগল না প্যান্টলুন ! চোখ টিপি
তবে হ্যাঁ, কিশোরী বা তরুণী সোফিয়া লরেন হলে সারা ঝর্না দখল করে রাখার জন্য জবরদস্ত একখান ফাইট দিতাম দেঁতো হাসি

শাব্দিক এর ছবি

হো হো হো

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

তবে হ্যাঁ, কিশোরী বা তরুণী সোফিয়া লরেন হলে সারা ঝর্না দখল করে রাখার জন্য জবরদস্ত একখান ফাইট দিতাম হো হো হো


_____________________
Give Her Freedom!

মানব এর ছবি

Home » Bangla Lyrics | বাংলা লিরিক » সিনেমা » আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব

আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব

আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব
হারিয়ে যাব আমি তোমার সাথে
সেই অঙ্গীকারের রাখী পরিয়ে দিতে
কিছু সময় রেখো তোমার হাতে।।
কিছু স্বপ্নে দেখা, কিছু গল্পে শোনা
ছিলো কল্পনা জাল এই প্রাণে বোনা
তার অনুরাগের রাঙা তুলির ছোঁয়া
নাও বুলিয়ে নয়ন পাতে।।
তুমি ভাসাও আমায় এই চলার স্রোতে
চির সাথী হয়ে রইব পথে।
তাই যা দেখি আজ সবই ভালো লাগে
এই নতুন গানের সুরে ছন্দ রাগে
কেন দিনের আলোর মতো সহজ হয়ে
এলে আমার গহন রাতে।।

ঠিক এই গানটির মতনই আপনার ভ্রমণ মূলক পোষ্ট পড়ে আমি হারিয়ে যাই সুদূর ইতিহাসের পাতায়, নিহারিকার মাঝে, অতীব গগনে , মাঝদরিয়ায়

তারেক অণু এর ছবি

আহা, আমার সবচেয়ে প্রিয় গানগুলোর একটা, এতবার শোনা হয়,
আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব
হারিয়ে যাব আমি তোমার সাথে
সেই অঙ্গীকারের রাখী পরিয়ে দিতে
কিছু সময় রেখো তোমার হাতে।।
কিছু স্বপ্নে দেখা, কিছু গল্পে শোনা
ছিলো কল্পনা জাল এই প্রাণে বোনা
তার অনুরাগের রাঙা তুলির ছোঁয়া
নাও বুলিয়ে নয়ন পাতে।।

মানব এর ছবি

সিনেমা » আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব

আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব

আজ মন চেয়েছে আমি হারিয়ে যাব
হারিয়ে যাব আমি তোমার সাথে
সেই অঙ্গীকারের রাখী পরিয়ে দিতে
কিছু সময় রেখো তোমার হাতে।।
কিছু স্বপ্নে দেখা, কিছু গল্পে শোনা
ছিলো কল্পনা জাল এই প্রাণে বোনা
তার অনুরাগের রাঙা তুলির ছোঁয়া
নাও বুলিয়ে নয়ন পাতে।।
তুমি ভাসাও আমায় এই চলার স্রোতে
চির সাথী হয়ে রইব পথে।
তাই যা দেখি আজ সবই ভালো লাগে
এই নতুন গানের সুরে ছন্দ রাগে
কেন দিনের আলোর মতো সহজ হয়ে
এলে আমার গহন রাতে।।

ঠিক এই গানটির মতনই আপনার ভ্রমণ মূলক পোষ্ট পড়ে আমি হারিয়ে যাই সুদূর ইতিহাসের পাতায়, নিহারিকার মাঝে, অতীব গগনে , মাঝদরিয়ায়

কর্ণজয় এর ছবি

*...*

তারেক অণু এর ছবি
তিথীডোর এর ছবি

ছবি + লেখা = গুরু গুরু

এত চমৎকার লেখা আসলে সাত তারা পাওয়ার দাবি রাখে।
'সাতটি তারার তিমির.....' হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তারেক অণু এর ছবি

সাতটি তারার তিমির., আহা নক্ষত্রের রূপালী আগুন ভরা রাতে।
তবে সাত তারা শুনলেই আমার এক বিদঘুটে অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে, একবার দুবাইতে ঘোরার দুর্ভাগ্য হয়েছিল দিন চারেকের জন্য ( দুবাইবাসী বন্ধুদের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি সেখানকার স্থানীয়দের ব্যবহারে সেই ৪ দিনই যথেষ্ট মনে হয়েছিল ঐ শহরে আর না যেতে চাইবার জন্য), সেখানে বিশ্বের একমাত্র ৭ তারা হোটেল বুরজ আল আরব দেখতে গিয়েছিলাম, ব্যাটারা বলে কিনা ঢুকতেই ৫০ ডলার মত দিতে হবে! এমনিতেই এমন মেকি জায়গায় যেতে আমার ভাল লাগে না , যাও একটু ইচ্ছে ছিল এমন দাম শোনার পর থেকেই ৭ তারা শুনলেই মানে মানে কেটে পড়ি!

কাজি মামুন এর ছবি

তারেক ভাই,
আপনার এই ক্লান্তিহীন ভ্রমণে আমাদের যেভাবে অক্লান্ত আনন্দ বিতরণ করে চলেছেন, তার কোন তুলনা নেই! মনে হচ্ছিল, Dan Brown এর Angels and Demons এর পাতায় পাতায় ঘুরছি! আমাদের এসএসসি পরীক্ষায় একটা কমন প্রশ্ন থাকত ইটালির বিখ্যাত খাবার নিয়ে। মনে আছে, স্প্যাগেটি এর ইংলিশ স্পেলিং মনে রাখতে কি কসরতই না করতে হয়েছিল! আপনার ছবিগুলোও ভাল হয়েছে; তবে টাইটেল দেয়া থাকলে থাকলে দারুণ হতো।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ মামুন ভাই, সিনেমাটিতে রোম আর ভ্যাটিকানের অনেক অনেক জায়গা দেখে দারুন মজা পেয়েছিলাম, বইগুলো পড়ার সময়ও।

পাঠক এর ছবি

দারুণ! রোমে তিন দিন ছিলাম। লিখব লিখব করে আর লিখা হয়ে উঠলনা। কলোসিয়ামের ভেতরে দুদিন চেষ্টা করেও ঢুকতে পারিনি লম্বা লাইনের কারণে। আর সিসটিন চ্যাপেলের সামনে বসে থেকেও ভেতরে ঢুকতে না পারার আফসোস কখনো যাবেনা। ঘুরে বেড়ান আর আমাদের ঘুরে বেড়াতে উৎসাহিত করে যান। সুস্থ থাকুন।

তারেক অণু এর ছবি

আরে দাদা সেই কাহিনীই লিখে ফেলুন না ! রোম আর রোমান তো, দারুন জমবে--

কল্যাণF এর ছবি

অণু তোমার পোস্টের এত প্রশংসা আমরা সবাই করেছি ইতিমধ্যে যে নতুন করে আর কিছু খুঁজে পাইলাম না। তাই ওইসব বাদ দিয়ে পোস্টের বাদ পড়া অতি প্রয়োজনীয় বিষয়টা তুলে ধরলাম। তুমি লেখনি রোমানরা সব দখল করে ফেল্লেও এস্টেরিক্সদের পরাজিত করতে পারেনি। এইটা অপরাধ হইছে। গ্রামের প্রধাণ বিশালাক্রিতিক্স এর পক্ষ থেকে আমি কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাছাড়া তোমার রোমান সেনারা কেম্নে এস্টেরিক্স আর ওবেলিক্সের হাতে নাজেহাল হইছে সেইটাও বাদ পড়ে গেছে। যাইহোক, আমি আমার মন্তব্যের মাধ্যমে গলদের বীরত্বের হালকা আভাস রেখে গেলাম।

তারেক অণু এর ছবি

আর বুলেন না খো দাদা, মামুর বুটা ষন্ডাভরিক্স আমার সাথে বারকি লিছে মহাপাজিক্সকে সাথে লিয়ে। তাই এবার গল নিয়ে লেখা হল না, কিন্তু একটু এটাসেটামিক্সের সাথে ভাব করে লি, তারপরেই গ্যারাজ করে লিব মামুর বুটাকে শয়তানী হাসি

কল্যাণF এর ছবি

লি য়ে লা ও, লি য়ে লা ও হাততালি

বাউন্ডুলে এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
বন্দনা কবীর এর ছবি

আমাকে একটা পুরষ্কার দিন আগে অনুদা। এই নিয়ে আমি পঞ্চম বারের মত মন্তব্য টাইপ করছি আপনার পোস্টে। এর আগে কি কি লিখেছিলাম মনে নেই তাই প্রত্যাকবার নতুন করে করে মন্তব্য লিখেছি। আর সংরক্ষনে ক্লিক করার সাথে সাথেই পোস্ট সহ পুরো সচলই গায়েব হয়ে যাচ্ছে। এটাই শেষ। এবার না গেলে আমি আর আপনার পোস্টের প্রশংসা করার জন্য কমেন্ট লিখবোনা, হু।

তারেক অণু এর ছবি

তাই নাকি ! আজব ঘটনা ! আচ্ছা আপনের এই অবিরাম প্রচেষ্টার জন্য আমার তোলা যে ছবিটি আপনের বেশী পছন্দ হয় সেটা ই-মেইলে পাঠিয়ে দিব, সিরিকাসলি।
আপাতত আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লেখা আর ছবি খুবই সুন্দর। যথারীতি... চলুক

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

কোথায় হারাইছিলেন গো ভাইডি এতদিন !

গৌতম এর ছবি

১. রোম শহর নাকি দিনের বেলা তৈরি হয় নাই; আর আপনি সব ছবি তুলেছেন দিনের বেলা।

২. হিংসা।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

তারেক অণু এর ছবি

তাই নাকি ! কে বলল এই কথা, কলোসিয়াম কি কেবল রাতের বেলা নির্মাণ করা সম্ভব ! আগে শুনি নাই কিন্তু!
দিনের বেলায় তুললাম, পরে কোন চাঁদনী রাতেও তুলব

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বাহ, বাহ- খুব বেড়ানো হচ্ছে দেখি আজকাল দেঁতো হাসি

এইবারে ছবি অনেকগুলোই পূর্বে দেখা, রোম মনে হয় অনেক চেনা শহর আমাদের।

... আপনার ভ্রমণকাহিনী বিষয়ে একটা কথা বলি। আপনার গতিশীল বর্ণনায় প্রায়ই ইতিহাস/ পরিসংখ্যান উঠে আসে। তুলনামূলক ভাবে আপনার চারপাশের মানুষেরা/ সহটুরিস্টেরা- অনেক কম প্রাধাণ্য পান। এটা কিন্তু করতে পারেন সচেতন ভাবে। এতে অন্য আরেকটা দিক উঠে আসে সেইসব জায়গার।

তারেক অণু এর ছবি

ইদানীং পোস্টে অ্যাডভেঞ্চার আর প্রকৃতি কম আচ্ছে তো, তবে সেগুলোও আসছে !
রোম তো আমাদের চেনা হবেই, আমরা সবাই তো রোমান, কোন না কোন অর্থে!

উচ্ছলা এর ছবি

Mamma Mia!! রোমও বাদ পড়ল না !!!

বর্ননা আর ফটোতে মুগ্ধ হয়ে আপনার জন্য স্যাটারডে মর্নিং শুভেচ্ছা পাঠালাম হাসি

তারেক অণু এর ছবি

Grazie! Grazie !!

রেজাউল এর ছবি

অদ্ভুত সুন্দর আর একটি লেখা উপহার দেওয়ার জন্য লেখক কে ধন্যবাদ... গুরু গুরু

তারেক অণু এর ছবি
ধ্রুবনীল এর ছবি

বর্ণনা আর ছবি দুটোই চমৎকার! রোম আমার প্রিয় শহরগুলোর একটা। সবচেয়ে পছেন্দের ত্রেভীর ঝর্না!

আপনার লেখাগুলো পড়ি আর আপনাকে অনেক হিংসা করি খাইছে । আপনার অসাধারন ধারাবর্ণনা আর ঝকঝকে ছবির সাথে সাথে আমাদের বিশ্বভ্রমন করানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ।

শুভকামনা রইলো চলুক

তারেক অণু এর ছবি

আসলেই রোম অনন্য। শুভেচ্ছা-

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

আহা প্যানথেওন.. আহা রাফায়েল..
মুগ্ধতা!

তারেক অণু এর ছবি

আহা প্যানথেওন.. আহা রাফায়েল..

চরম উদাস এর ছবি

ছাগুরাম সুলভ

কল্যাণF এর ছবি

অ্যাঁ ... চিন্তিত

চরম উদাস এর ছবি

অবাক হন কেন? ছাগল উপহার দিছি কেটেকুটে মাটন বানায়ে খাওয়ার জন্য। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করে ছেলেটা কোন সব আগাড়ে পাগাড়ে ঘুরে ঘুরে কেমন দুবলা হয়ে যাইতেছে দেখেন না?

শাব্দিক এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

কল্যাণF এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি উদাস ভাই আপনার রসবোধ মারাত্মক, রীতিমত বিধ্বংসী। এখনতো আমারো মনে হচ্ছে পুলাডা আসলেই কেমন জানি দুব্যল হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন। আসলে এই ইমোটা দেখলেই আমার কিছু অন্যধরনের চিন্তাধারা সমৃদ্ধ প্রাণীর কথা মনে পড়ে যে আর কি বলব।

( অটঃ আপনি লেখা না দিয়ে অতি শর্টকাটে মন্তব্য করে করে পলাইয়া যাচ্ছেন, এইটা আমাদের পাঠককূলের সাথে প্রতারনার সামিল। আপনারে 'ফৌজদারি' ধাওয়ার লিস্টে তুইল্যা দিমু কইলাম শয়তানী হাসি )

তারেক অণু এর ছবি

দেখা হউক উদাস ভাইয়ের সাথে, যদি খিচুড়ির সাথে মাটন না খাওয়ায় তারপর ধইরা ঠুয়া দিয়া দিমু... সেই সাথে চলুক ভাবীর হালুয়া বানানো।
ঐ কল্যাণ দা, মশকরা কইরেন না। নিজের লেজ কেটে আমার লেজ কাটবার মতলব শয়তানী হাসি

কল্যাণF এর ছবি

দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

উল্‌স্‌

তারেক অণু এর ছবি
দেবানন্দ ভূমিপুত্র এর ছবি

নতুন করে আর কী বলবো? আপনি একটি ধারা বেছে নিয়ে চুটিয়ে বাজার দখল করছেন। শুধু একটা জায়গায় ঘটকা লাগলো। 'প্রতিদিনের নিত্য জীবনে' কি ঠিক আছে? ওভার ল্যাপ করে কি না?

তারেক অণু এর ছবি

কেন রে ভাই, প্রতি সপ্তাহেই মুভি রিভিউ লিখি। আদর্শ মানুষ আর পাখি দেখা নিয়ে লিখি, কিন্তু সচলে দেওয়া হচ্ছে না। নীড়পাতায় একসাথে ২ লেখা দেওয়া যায় না যে।
ভাবলাম এত বেশী জিনিসগুলো অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে জড়িত, তাই !

দেবানন্দ ভূমিপুত্র এর ছবি

তারেক ভাই, আমি তো কমপ্লিমেন্ট দিয়েছি। কারণ আপনি এই বিশেষ এরিয়া চমৎকার কব্যিক ঢঙে তুলে ধরছেন। আপনার ছবিগুলো দারুণ থাকে। কিন্তু আমি বেশি খেয়াল করি আপনার বর্ণনা। এক্কেরে সেই রকম। ভাষায় হেব্বি দম আছে। খুব ভালো থাকুন।

তারেক অণু এর ছবি

হাসি শুভেচ্ছা

মুহিত হাসান এর ছবি

ইতালির খাবার নিয়ে একটা পোষ্ট দিন পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

তারেক অণু এর ছবি

দিচ্ছি দিচ্ছি, ডিসেম্বরে ঘুরে আসি, তারপর--

শাব্দিক এর ছবি

তারেক অনু আপনাকে আর নতুন কি বলব?
আসাধারন.................... চলুক

তারেক অণু এর ছবি

নতুন শব্দ ! ধন্যবাদ।

যুমার এর ছবি

ভাবছিলাম এতদিনে বুঝি ঘোরাঘুরি বাদ্দিয়া রোমান হলিডে মুভি রিভিউ লিখতে বসলেন!
ভুল,সবই ভুল মন খারাপ
কী নিয়ত কইর‌্যা পয়সা ছুড়লেন?

তারেক অণু এর ছবি

মুভি রিভিউ তো প্রতি সপ্তাহেই লিখি! দিব খন,
আর নিয়ত! চোখ টিপি

দ্রোহী এর ছবি

আপনি মানুষটা খুবই নির্দয় প্রকৃতির। দুইদিন যেতে না যেতেই একেকটা পিত্তি জ্বালানো পোস্ট দেন। আপনার শাস্তি হওয়া উচিত।

তারেক অণু এর ছবি

আরে না দাদা, পিত্তি পড়ে যাবে আপনি বললে। এখন গ্যাপ দিচ্ছি তো, ল্যাপটপ দুইটা একসাথে ক্রাশ করছে মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি

আরে না দাদা, পিত্তি পড়ে যাবে আপনি বললে। এখন গ্যাপ দিচ্ছি তো, ল্যাপটপ দুইটা একসাথে ক্রাশ করছে মন খারাপ

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ও আইচ্ছা, এইডারেই কয় তাইলে 'ক্যালসিয়াম'? আর ঐডারে 'তেরা ভি' ঝর্ণা? এইগুলা তো ম্যায় হেই কোন লাল শুক্রুবারই দেইখ্যা ফালাইছি। বিশ্বাস লয় না! এই দেহো, ফটুকও তুইলা রাখছি! এহ, ভাবখানা এমুন লইচে য্যান হ্যায় একাই দ্যাখছে! এই পুলার খুব বাড় বাড়ছে। জানস না, 'হাজার বছর ধরে আমি পথ হাটিতেছি পৃথিবীর পথে'? খাড়া, কলমে আগে কালি ভইরা লই, এক্লগে পাচপঞ্চাশটা পোষ্ট দিমু এইবার!

চান্নিপহর রাইতে ক্যালসিয়ামের সামনে ভুড়িওয়ালা চৌধারি।

জিউস তো গোসল কইরা সারবার পারে নাই, তাঁর আগেই চৌধারি গোসল সাইরে এক্কেরে স্যুটেট-বুটেড...

(চুপি চুপি) এই পোষ্টে হাজার-কোটি তারা মাইরা যাই, কেডা তারা দিল হেইডা তো আর টের পাইবো না!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তারেক অণু এর ছবি

সাবাস, সাবাস, থ্রি চিয়ার্স ফর চৌধারি ভাই, হিপ হিপ হুররে ! দেঁতো হাসি যবের ফটু!

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

চৌধুরী সা'বকে কিন্তু প্রবাসীই লাগছে, পর্যটক নয়!! দেঁতো হাসি ! চৌধুরী সা'ব কি ভ্রমণে গিয়েছিলেন না কি বেশ কিছুদিন প্রবাসযাপন করেছিলেন? দেঁতো হাসি


_____________________
Give Her Freedom!

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

কী সুন্দর বর্ণনা আর ছবিগুলো!!! চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

তারেক অণু এর ছবি
guesr_writer rajkonya এর ছবি

বড়ই সৌন্দর্য!!!
রোম, কলোসিয়াম গ্ল্যাডিয়েটর, পেনথ্যায়ন, ঝর্ণার জলে পয়সা ছুঁড়ে ফেলা, খুবই ভাল লাগলো।

তারেক অণু এর ছবি

বড়ই সৌন্দর্য!!! সত্য

বিলাস এর ছবি

আহ ! অনুদা কি চমৎকার পোস্ট ! মনটা ভালো হয়ে গেল হাসি

তারেক অণু এর ছবি

খুব খুশি হলাম শুনে। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি আছে!

মামুন এর ছবি

আমি একজন নতুন পাঠক। তাই এখনো ঠিকমত মন্তব্য করতে শিখেনি। তবে এটুকুই বলতে পারি, আপনার লেখা যতই পড়ছি, ততই আপনার ভক্ত হয়ে পড়ছি।

তারেক অণু এর ছবি
তুলিরেখা এর ছবি

আমি কেবল দেইখা যাইতেছি দেইখা যাইতেছি। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তারেক অণু এর ছবি

কি দেহেন খ্যামোকা।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

অনু ভাই এট্টু দৌড়ের উপ্রে আছিলাম ... মইন্তব্য করা হইয়া উঠে নাই ... তয় লেখা পড়ছি আপনার নিয়মিতই ... কি আর কমু ... ভাই কওনের কিছু নাই ... দেইখা যাই

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তারেক অণু এর ছবি

কই আপনে! ভাবতেছিলাম কবি ভাই গেল কতি!

মুস্তাফিজ এর ছবি

ভালোই ঘোরাঘুরি চলছে। একবার আমাদের এদিকে ঘুরে যান, ভালো লাগবে।

টেভরিতে পয়সা ছুঁড়ে মারার কাহিনী নিয়ে একটা ছবি তৈরী হয়েছিলো, নাম “থ্রি কয়েনস্‌ ইন আ ফাউন্টেইন” ঐটাতে এ নিয়ে চমৎকার একটা গানও ছিলো
“থ্রি কয়েনস্‌ ইন আ ফাউন্টেইন
ইচ ওয়ান সিকিং হ্যাপিনেস্‌
থ্রোওন বাই থ্রি হোপফুল লাভারস্‌
হুইচ ওয়ান উইল দ্যা ফাউন্টেইন ব্লেস
মেইক ইট মাইন, মেইক ইট মাইন, মেইক ইট মাইন

আর একটা ছোট্ট সংশোধনীঃ ভিক্টর ইমান্যুয়েল এর ঐ বিল্ডিং এর সামনে ১১ জন অজানা আর নাম জানা ১ জনের দেহাবশেষ সংরক্ষিত আছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই। আসব।
ঐ ঝরনা নিয়ে সবচেয়ে বিখ্যাত রূপোলী ফিতের কাহিনী মনে হয় LA DOLCE VITA , কিন্তু অন্যটা এখনো দেখা হয় নি। ভালো থাকবেন-

guest_writer এর ছবি

দেখলাম। পড়লাম। আবারও মুগ্ধতা জনালাম।

বিশেষ কারনে দিনকয়েক ল্যাপিটা খোলা হয়নি তাই মন্তব্যে দেরি হল।

প্রৌঢ়ভাবনা

তারেক অণু এর ছবি

শুভেচ্ছা, ভাল আছেন আশা করি।

Md Zabedul akbar এর ছবি

অসাধারন লেখা। আমার রোম ভ্রমনের ইচ্ছা অনেকদিনের, আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো।

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই যাবেন। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আশালতা এর ছবি

চমৎকার ! হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তারেক অণু এর ছবি
বন্দনা এর ছবি

অনু ভাই ফাঁকি মারছেন, পোস্টের নাম দিলেন রোমান হলিডে কিন্তু ওই মুভিটাতে যে ট্রুথ অফ মাউথ এর একটা অংশ ছিলো সেই ট্রুথ অফ মাউথ এর ছবি ই দেন নাই।

তারেক অণু এর ছবি

আর বইলেন না, ট্রুথ অফ মাউথ দুই খান দেখছিলাম, দুইটাই নকল! আসলটা দেখার জন্য আবার যেতে হবে--

নিত্যানন্দ রায় এর ছবি

আপনার সাথে সাথে রোম ঘুরে এলাম। চমৎকার বর্ণনা ।

তারেক অণু এর ছবি

হাসি ধন্যবাদ।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

শুরু থেকে পড়তে শুরু করেছিলাম, বিশ্বাস করেন! তারপর মাঝপথ পর্যন্ত এসে আরও অনেক চিন্তাভাবনা চলে আসলো, দিয়ে কল্পনা, সিনেমা, গল্প... নানান জিনিস! তাপ্পর খালি ছবিগুলানই দেখতে থাকলাম... লাস্টে এসে ভাবছিলাম গ্ল্যাডিয়েটর মূর্তির গায়ে জ্যাকেট কেন, তো খেয়াল করে দেখি আপনার ছবি জুড়ে দিছেন!!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তারেক অণু এর ছবি

মডার্ন গ্ল্যাডিয়েটর দেঁতো হাসি

অমিত এর ছবি

আপনার পোস্ট শেষ থেকে পড়া শুরু করলাম। এখন মোটামুটি মাঝামাঝি অবস্থায়।
গুরু গুরু
নিজের মনের শান্তির জন্য এখন থেকে ধরে নিব এই পোস্টগুলা ফিকশন আর প্রতিটি চরিত্র কাল্পনিক মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি

ওম শান্তি! জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।