নিজের স্কুল কলেজের দৌড়ঝাঁপ পেরিয়েছি বহদিন হল, তবু এখনও তৃষ্ণার্ত কাকের মত ছুটির দিনগুলোর জন্যে ক্যালেন্ডারের দিকে তাকানো ফুরলো না। ব্যস্ত নাগরিক হুড়োহুড়ির মাঝে ছুটির দিনগুলো বেশির ভাগ দিনই ঘুম ডে হয়ে যায়। পুজোর লম্বা ছুটি পেয়ে তাই বেশ আহ্লাদ হল। কিন্তু আয়েশ করে পায়েস খাবার দিন আর নেই। দুপুরবেলায় কাজ সেরে ল্যাপিটা নিয়ে বসতেই টিং টং বেল। গিয়ে দেখি আমাদের নতুন পড়শি দেখা করতে এসেছেন।
ভদ্রমহিলা হালকা পাতলা গড়নের প্রায় বছর পঞ্চাশেক বয়েসের। কপালের দুপাশে চুল গুলোয় রুপোলী আভাস এলেও চেহারায় বোঝা যায় এক সময় ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলেন। পরিচয় হতেই সোফায় পা গুটিয়ে বসে খুব ক্যাজুয়াল ভঙ্গিতে গল্প করতে শুরু করলেন। পেস্তার খোসা ছাড়িয়ে দিতে দিতে হুঁ হাঁ দিয়ে শুনতে লাগলাম ওনার সংসারের গল্প, ছেলে মেয়ের গল্প, স্বামীর গল্প। হটাত কি এক গল্প বলতে গিয়ে আমার হাত জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। কান্না জড়ানো স্বরে বেরিয়ে এল তীব্রতম কষ্ট। স্বামী তাকে ভালবাসেন না। ভালোবেসে বাবা মা-কে ছেড়ে এসে বিয়ে করেছিলেন, সেই স্বামীর খালি কাজের বুয়া জাতীয় মহিলাদের শরীর ভালো লাগে। অনেক করেও ছাড়াতে পারেননি। অন্য কোথাও চলে যাবার জায়গাও নেই। এখন তাই সংসার সামলাতে নিজেই সেরকম কাজের মেয়ে যোগাড় করে এনে রাখেন। প্রয়োজনে তাদের এবরশনে সাহায্য করেন।
একদম নতুন পরিচয়ে কেউই এরকম গল্প করেন না, কিন্তু ভেতরের কষ্ট তীব্র হয়ে উঠলে প্রায় সময়েই তা যৌক্তিকতার ধার ধারে না। এইখানে ভদ্রমহিলার জন্য অনেক কিছু করে তাঁর কষ্ট লাঘব করে দিয়েছি বলে বেশ খানিকটা বীরত্ব ফলানো গেলে ভালো হত। কিন্তু সত্যি কথাটা হল, চুপচাপ কষ্টের কথাগুলো শোনা ছাড়া আর কিছুই করতে পারলাম না, কিছুই না। কদিন পরেই দেখি সে বাসায় নতুন ভাড়াটে । যাবার আগে দেখা হয়নি বলে ঠিকানাও নেয়া হলনা। সৌম্য সুন্দর চেহারার মানুষটা শহরের লক্ষ মানুষের ভিড়ে নিজের কষ্ট বুকে চেপে নিয়ে হারিয়ে গেলেন।
এটা কোন ইউনিক কাহিনি নয়। আমাদের চারপাশে হাজার মানুষের মাঝে এরকম হাজার কাহিনী আছে। আমরা জানি সেগুলো, কিন্তু ভান করি যেন কিছুই ঘটেনি। তাই মিতা ভাবি যখন নিজের বাসর রাতের কথা বলতে গিয়ে স্বামীর পরচুলা খুলে ফেলে কোন কথাবার্তা ছাড়াই নতুন বৌয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার গল্প বলতে থাকেন, আমরা সবাই হে হে করে হাসি, ওনার হাসির পেছনে চোখের কোণে ছলছলিয়ে ওঠা পানির কণাটা না দেখার ভান করি। মাঝবয়েসি আমিরন খালা যখন মায়ের কাছে গিয়ে কেঁদে বলেন, মা, আর তো পারছি না জানোয়ারটার সাথে থাকতে, তাঁর মা বিরক্ত হয়ে ঝামটে ওঠেন। আরও অনেক মেয়ের অসুখি জীবনের কথা টেনে বলেন যে এটাই স্বাভাবিক। এটা নিয়ে এত ব্যস্ত হবার কিছু নেই। একটু মানিয়ে গুছিয়ে সব মেয়েকেই থাকতে হয়। নইলে এই বয়েসে বাচ্চাসহ কে তাকে জায়গা দেবে ? জানোয়ার হোক আর যাই হোক, মাথার ওপর ছাদ তো দিয়েছে, দুবেলা খেতে পড়তে দিচ্ছে, আর কী লাগে ?
তাও তো কথা ! বেঁচে থাকতে গেলে আর কী লাগে ? আর যে কী লাগে সেটা প্রমাণ করতে পারেনা বলেই শিক্ষিত অফিসার স্বামী যে আতিয়াকে অফিস যাবার আগে কৌটোয় চাল ডাল মেপে দিয়ে ভাঁড়ারে তালা দিয়ে অফিসে চলে যায় এবং আনাজপাতির হিসেব এলোমেলো হলেই মেরে কালশিটে ফেলে দেয় একথা সেও কাউকে বলতে পারেনা।
সেদিন হাসপাতালে একজনের সাথে দেখা করতে গিয়ে দেখি পাশের বেডের ভদ্রলোক খুব হাসিখুশি মুখে গল্প করছেন। বারবার জিজ্ঞেস করছেন ডাক্তার কখন আসবেন। ডাক্তার এসে হাত ধরে পালস দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করলেন, কেমন আছেন আজ ? ভদ্রলোক হাসিমুখে বললেন, ভালো আছি। কথাটা শেষ হবার যা দেরী, চারপাশের মেশিনপত্র টিট টিট করতে শুরু করে হার্ট ফেল করে দশ সেকেন্ডের মধ্যে চোখের সামনে লোকটা আছে থেকে নেই হয়ে গেল। লোকে বলে জীবন অনিত্য; হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে দেখলাম সেকথা কী ভয়ঙ্করভাবে সত্যি।
কী ছোট্ট একটা জীবন আমাদের। অথচ তাও অচেনা এক তীব্র সুখ পাবার আশায় মারামারি খেয়োখেয়ি করে অহোরাত্র তাকে জটিল করে তুলি আমরা। মহাপুরুষ হয়ে ওঠার ধৈর্য বা সময় কারোই নেই কিন্তু পাশের মানুষটাকে কষ্ট দিয়ে অসুখি করে তোলার সময়টা ঠিকই বের করে ফেলি আমরা। অপূর্ণতায় বারবার হাত তুলে শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি বলেই হয়ত খুব কাছের চেনা মুখের কষ্টগুলো চোখ এড়িয়ে যায়।
মানুষ হতে গেলে তো মহাপুরুষ হতে হয়না, মানুষকে ভালোবাসে এরকম একজন খুব সাধারণ মানুষ হওয়া কি খুব কঠিন কিছু ?
মন্তব্য
মোটেই কঠিন না আশা'দি। শুধু ইচ্ছাটা থাকা চাই। আমার মাথায় এই জিনিস্টা কিছুতেই কাজ করে না যে একটা মানুষ কিভাবে এত নীচে নেমে যায়! প্রবৃত্তি কি এতই শক্তিশালী!!!! যারা এই কাজগুলো করে যাচ্ছে তারা নিজের মুখের দিকে কিভাবে তাকায়!!!!! কিভাবে তাকায় সন্তানের দিকে!!!
তারা পারছে কারণ পৃথিবীকে সবাই নিজের মত আলাদা আলাদা করে দেখে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা আমাদের কাজগুলোকে জাস্টিফাই করে ফেলি নিজের কাছে। সেটা যত জোরালো হয় আয়নাটাও ততই পরিস্কার হয়ে ওঠে। কাজেই নিজের দিকে তাকাতে তেমন কোন সমস্যা হয়না। এখন এই জাস্টিফিকেশনটা কতটুকু জাস্টিফাইড এটাই হল দেখার বিষয়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
দুই দিনের দুনিয়া ; কার কখন ও পারের ডাক আসবে, কেউ জানেনা। অথচ এই ছোট্ট জীবনে সম্পত্তি-ক্ষমতা দখলের লড়াই, লোলুপতার শেষ নাই।
একটুখানি শান্তি, একটুখানি ভালোবাসা...বেঁচে থাকার জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু প্রয়োজন হয়না বোধয়।
পোস্ট মন, আত্মা ছুঁয়ে গেল।
উঁহু, জীবন এত সোজা নয় যে শুধুই শান্তি আর ভালবাসায় কাজ চলে যাবে। খুব প্র্যাক্টিক্যালি দেখলে তার সাথে আরও কিছু জিনিসপত্রও লাগে। তোমার আমার কাছে ভালবাসাটা ভাইটাল মনে হতে পারে, সবার বোধ হয় মনে হয়না।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
প্রথম অংশের সাথে দ্বিতীয় অংশের থীমটা মিলল না। দুটোকে দুটো আলাদা লেখায় ডেভেলপ করতে পারতেন।
এইরকম বর্বরগুলোকে ডিভোর্স দিয়ে খোরপোষের মামলা করতে ভয় কী? সামাজিক সঙ্কোচ?
'পীড়িত পুরুষ পতি পরিষদ' এসবের সদস্যদের মনে হয় এর সমান্তরাল অভিজ্ঞতাও আছে। সংখ্যায় কম হয়ত। কিন্তু সেগুলো নিয়ে কাউকে লিখতে দেখিনি।
লেখাটার থিমটা আসলে পত্নীপীড়ন নয়। এইরকম নানা ঘটনায় চারপাশের চেনা মুখগুলোকে কষ্ট পেতে দেখে বারবার মনে হয়েছে এই মানুষগুলোকে সুখি করা আসলে খুব বেশি কঠিন কিছু নয়। স্বামীকে তাঁরা বাই ডিফল্ট এমনিই ভীষণ ভালবাসেন, অন্য দিকের মানুষটা সামান্য একটু স্নেহ দিয়ে হেসে কথা কইলেই তাঁদের দুনিয়া ঝলমল করে ওঠে। কিন্তু নানারকম কায়দায় সম্পর্কটাকে তাঁরা ক্রমাগত বিষিয়ে তোলেন। এই একই রকম বিষয় জীবনের আর সব ক্ষেত্রেও অসংখ্যবার চোখে পড়ে। তুচ্ছ তুচ্ছ সব বিষয় নিয়ে এমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে থাকে সবাই, অথচ হাসপাতালের ওই ভদ্রলোকের নিথর শরীরটার সামনে দাঁড়িয়ে সব কিছু কী অর্থহীন মনে হতে থাকে। ভদ্রলোক দু মিনিট আগেও তাঁর চশমা ধরেছে বলে ছোট ছেলেটাকে বকলেন, অথচ দু মিনিট পরেই সেটা ওঁর বিছানার নিচে পড়ে থেকে একজনের পায়ের নিচে পড়ে ক্যাচ করে চ্যাপ্টা হয়ে গেল। আমরা যেসব তুচ্ছতা নিয়ে জীবনটাকে বিষিয়ে তুলতে থাকি সেগুলো কতটা যৌক্তিক সেটাই বুঝতে চেয়েছি শুধু। পাঠককে বোঝাতে না পারলে সেটা অবশ্যই আমার লেখার ব্যর্থতা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে বাই ডিফল্ট ভালোবাসতে পারেনা। এখানে 'বাই ডিফল্ট' বলে কিছু থাকতে পারেনা। মানুষ তার নিজের পিতা-মাতাকে যে ভালোবাসে সেটাকে আপাতদৃষ্টিতে বাই ডিফল্ট বলে মনে হতে পারে। কিন্তু জন্মের পর পর কোন বাচ্চাকে তার পিতা-মাতার কাছ থেকে সরিয়ে নিলে, এবং বড় হবার পর তাকে তার পিতা-মাতার কাছে নিলে সে তাঁদের প্রতি বিশেষ কোন ভালোবাসা অনুভব করবেনা।
বিবাহিত সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকা (মানে পরকীয়ায় না জড়ানো, অন্য কারো সাথে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন না করা ইত্যাদি) তার প্রতি ভালোবাসা আছে এমনটা প্রমাণ করেনা। সংসার সুখের হবার জন্য ভালোবাসা দরকার আছে, তবে সংসার করার জন্য ভালোবাসা আবশ্যকীয় উপাদান নয় - এর কোটি কোটি প্রমাণ আমাদের চারপাশে আছে।
আমরা অল্প বয়সে মোহকে আর বেশি বয়সে নির্ভরতাকে ভালোবাসা বলে ভুল করি। মোহ আর নির্ভরতা আর যা কিছুই হোক ভালোবাসা নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
_____________________
Give Her Freedom!
সুন্দর পোস্ট।
ধন্যবাদ রিশাদ ময়ূখ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ডুপ্লি।----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
সম্পর্কের ব্যাপারে আমি আদর্শিক অবস্থান নেই, এ ধরণের অস্বাভাবিক(অসুস্থ) সম্পর্ক আমাকে খুব ব্যথিত করে।
মূল্যবোধ, নীতিবোধ শৈশব থেকে তৈরী করে দিতে হয়, শিক্ষাক্রমকেও আসলে এদিকটায় বিশেষ লক্ষ্য দেওয়া উচিৎ।
আর নারীদের শিক্ষিত আর স্বাবলম্বী হওয়া খুব খুব জরুরি।
অটঃ গল্পও কিন্তু চাই হুমম.......
_____________________
Give Her Freedom!
চারপাশে এত অসুখি মুখ দেখি যে ভরসার ওপর ভরসা নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা যাকে সুস্থ সম্পর্ক বলি সেটা আদৌ একজিস্ট করে কী ? কোন এক অজানা বিচিত্র কারণে আমাকে প্রায়ই কনফেশন বক্সের ভূমিকা নিতে হয়। এক একটা মানুষের ভেতরের তীব্র দাবদাহ দেখে শিউরে উঠতে থাকি।
...আর গল্প ? কে জানে। যদি টিকে যাই তাহলে লিখব...হয়ত।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আজ কি মন খারাপের দিন??!!
নাহ, অস্থিরতার দিন।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কি বলবো বুঝতে পারছিনা
কিছু না বলেও যে সাথে আছেন এজন্যেই আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বিষাক্ত, সব বিষাক্ত। ২১ শতকে এসে আমরা যতই নারী স্বাধীনতার বুলি আউরাইনা কেন - সত্যিকারের অবস্থানটা বোধ করি সেই মধ্য যুগেই রয়ে গেছে।
ডাকঘর | ছবিঘর
উঁহু, সব বিষাক্ত আর কী করে বলি, এই যে আলাদা করে ভাবছেন, আপনি তো তাহলে সেই বিষের অংশ নন ! এইরকম মানুষ আরও কিছু আছেন নিশ্চয়। যে মানুষ আত্মার শুদ্ধতায় বিশ্বাস রাখবে তাকে এই বিষ ছুঁতে পারবেনা এ আমি বিশ্বাস করি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
জানিনা কতটা বিষহীন হতে পেরেছি আমরা, তবে আপনার বলা'কে স্বাগত জানালাম ভাই।
আর আত্মার শুদ্ধতা মননের অভিলিপ্সার ফসল তাই কি ?
ভালো থাকবেন, এই অস্থির সময়ে আপনার কলম কথা বলুক, শুভকামনা।
ডাকঘর | ছবিঘর
ভালবাসার মানুষকে কষ্ট দেয়াই তো সবচে সহজ । যারা ভালবাসেনা তাকে কষ্ট দেবার মত কোন অস্ত্র তো নেই । যে ভালবাসেনা তাকে কষ্ট দিলে তো তৎক্ষনাত ছেড়ে যাবে । যে কষ্ট দেয় সে ঠিকই জানে ভালবাসা নামের শিকলটা কাকে বেঁধে রাখবে । ওই মার না খেয়ে সে যাবে কই ?
জীবনটা আসলেই খুব ছোট । চক্ষের পলক না ফেলতেই শেষ । তারপরও এই তুচ্ছ জীবনটা তার জন্যই ব্যয় করতে ইচ্ছা হয়, যার এটা পাবার কোন যোগ্যতাই নেই । আমাদের সব ভালবাসা তবু তাদের জন্য , যারা এর কোন মূল্যই বোঝেনা । এটাই হয়তো ভালবাসা নামের ওই নিষ্ঠুর বস্তুটার ট্রাজেডী .....
খুব সুন্দর করে বলেছেন অগ্নির। আপনার নিকটিও তো ভারী সুন্দর।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
শাফি।
মনে খারাপ করে দিয়েছি বুঝি ? বেশ তবে নিন।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
পড়ে
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
সচল কবিকে পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
তোমার সাথে কথা বলা খুব দরকার। আমাকে একটা মেইল করবা আপু।
লেখায়
আমি যখন মেয়েটিকে(বউ, প্রেমিকা) কষ্ট দেই, তখন আমি বুঝতে পারিনা। কিন্তু একই সময়ে আমি কোন না কোন অপরাধে(মিডিয়ায় প্রচারিত) নাক সিঁটকাই। আপনার লেখাটা পড়ে অনেকের মত আমারো মন খারাপ হয়েছে ঐ ভদ্রমহিলাদের জন্য। কিন্তু আমিও কি কোন না কোন ভাবে একই জাতীয় অপরাধে অপরাধী নই? প্রিয় আশালতা, আমি নিজে যদি ভালো হতে পারি, তবে সমাজে এই জাতীয় অপরাধ থাকবে না বলেই আমার বিশ্বাস...
শুভেচ্ছা...
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
দিদি কি বলবো এমন কাহিনী হরহামেশাই দেখছি। আমি যখন স্কুলে পড়ি, পাশের বাড়ীর কাজের মেয়েটা আমার মাকে বলেছিল ওর অসহায়ত্তের কথা, আমরা কিছু করতে পারিনি। সেই থেকে বুকের ভিতর কেমন একটা কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছি।
বুকের ভেতর কষ্ট বয়ে বেড়ানোই সার হল আমাদের। সেই কষ্টকে বইয়ে দেবার নদী আর পাওয়া হলনা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমি আপনার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট হব...চারপাশের জগৎটা অনেক বেশী দেখেছেন আমার চেয়ে।
এখন অবিবাহিত,তবে নিজের বিবাহিত জীবনে পাশের মানুষটির প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রাখার প্রতিজ্ঞা করি সবসময়। কিন্তু আপনার লেখাটি পড়ার পর মনে হচ্ছে জগতের সব পুরুষ পশু, এমনকি আমিও। কখনো চাইলেও পারবনা একজন নারীকে আমার সর্বশ্রেষ্ট ভালোবাসাটুকু দিতে।
দীর্ঘদিন যাবৎ বিবাহিত অনেক নারীকেই দেখি বেলা শেষে স্বামীর জন্য তার জীবনে কতটুকু সোনালী সময় সে হারালো সেই হিসেব করতে। কিন্তু এমন কাউকে দেখিনি... জীবনের অনেকটুকু পথ পেরিয়ে জীবনসঙ্গীকে সারা জীবন ভালোবেসে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানাতে। যেন 'একদা ভালোবাসা ছিল' দেখে একসাথে ছিলাম, অথবা 'সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে সয়ে গেছি' ধরনের ভাবনা।
কিন্তু আমি কখনো চাইনা আমার স্ত্রী আমার সাথে জীবনের বেশীরভাগ সময় কাটিয়ে মনে মনে আমাকে ঘৃণা করে মুখে মেকি হাসি লাগিয়ে পরিবার আগলে রাখুক। আমি নিজেকে এমন একজন মানুষ হিসেবে দেখতে চাই, যাতে পাশের মানুষটি শুধু আমার প্রতি অগাধ আস্থা রেখে আমার হাত ধরে রাখে আজীবন।
কিন্তু হতাশ হই দিন দিন এত উদাহরণ দেখতে দেখতে... পৃথিবীতে বোধহয় শুধু নারীরা ভালোবাসতে জানে আত্মত্যাগের শপথ নিয়ে... আর পুরুষদের জীবনটাতে পশুর মত কামনা ছাড়া কিছু নেই। আমি তাদের একজন।
আমার কোন লেখাতেই কিন্তু 'জগতের সকল পুরুষ পশু' এরকম কোন কথা আমি কখনই বলিনা। তাহলে আপনার মনে হল কেন ? বরং আমি সবসময়েই মানুষের ভেতরের শুদ্ধ মানুষটার বন্দনা করি। যে কিনা সব মানুষের ভেতরেই থাকে, কম আর বেশি।
কী জানেন, এই যে শুদ্ধ হয়ে ওঠবার স্পৃহা আপনার ভেতরে কাজ করে এইটিকেই জল হাওয়া দিয়ে বাড়িয়ে তোলা চাই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমি স্বপ্ন দেখি, আমাদের দেশের মেয়েরাও স্বাবলম্বী হবে, স্বাধীন হবে। স্বাবলম্বী হয়ে নিজের ভালো লাগা মন্দ লাগাকে সামাজিক বাধাকে টপকে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু এইটা জন্য সব ক্ষেত্রে সচেতনতা জরুরী।
ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটার জন্য...
ধন্যবাদ সুলতান।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশা আপি লেখাটা ভাল লাগল। কিন্তু প্লিজ দুঃখের লেখা কম লিখবেন।জীবন এর এত সব সমস্যা আয়নায় দেখতে ভাল লাগে না। আগের গুলোর মত মজার হবে ভেবে পড়তে বসে মন আরও খারাপ হয়ে গেল।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ শাব্দিক। কিন্তু মজার কিছু পড়ার আশা নিয়ে আমার লেখায় ঢোকা একটু রিস্কি ভাই। কারণ আমার লেখা দশটার মাঝে আটটাই হয় স্যাঁতস্যেঁতে টাইপ, কালেভদ্রে মুড খুব ভালো থাকলে ফাজলামি ধরনের লেখা লিখি। ভালো থাকবেন।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
শিরোনাম হতে পারতো দাম্পত্য কাহারে বলে, কারন উদাহরনগুলো ত্রুটিপূররণ দাম্পত্য়ের। পান্ডবদা ভালবাসা আর দাম্পত্য নিয়ে দরাকারি কথাগুলো বলে দিয়েছে।
উদাহরণ তো লেখার ফোকাস নয়, বরং সেগুলোর প্রেক্ষিতে আমাদের দর্শনটা কেমন হলে ভালো হয় সেটাই ফোকাসে আনার চেষ্টা হয়েছে শুধু। কাজেই উদাহরনের ওপর নামকরণ করাটা যথাযথ মনে হয়নি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
খুব মনকাড়া লেখা, কিন্তু কষ্টের। আশা করি এমন দিন আসবে যেদিন এই ধরনের গল্প- অভিজ্ঞতাগুলো কেবল ইতিহাস হয়ে থাকবে।
facebook
হুম, আশায় বাঁধি বাসা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
খুব সুন্দর করে লিখেছেন। অবাক লাগে মানুষের মুখশের আড়ালে কত কি যে করতে পারে। লিখতে থাকুন। ভাল লাগ্ল পরতে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ লাল কৃষ্ণচূড়া। আপনার নিকটি ভারী সুন্দর। কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙ কেউ নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন দেখতে ভালো লাগছে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভালোবাসা যারে কয় তার জন্যেই সারাজীবন বয়ে বয়ে চলা - আজকের ভালোবাসার যে অনুভূতি তা আবার কালকের প্রেক্ষাপটে ভিন্ন একটা আবেগের মানদন্ড দাড় করিয়ে দিতে পারে --- এটি সতত বহমান একটি জলধারা বলেই মনে হয় আমার কাছে। ভালোবাসা খুবই জটিল জিনিস, মাথা আউলে যায়
যতটা জটিল বলছেন অতটা জটিল বোধ হয় নয়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নতুন মন্তব্য করুন