শূন্যপ্রতীক্ষায়… কোন এক ফাগুনের বিকেল বেলা হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্তশ্বাসে মনের তৃপ্তি মেটাতে পাতা গাছের ছায়ার নিচে মাধুর্যহীন গোলাপ ফুল তার পাশে রেখে মৃদু কন্ঠে নিজের দুই লাইন কবিতা পাঠ করলাম, ‘রাত্রি গভীর হলে ঘুরে আসে যে মুখ,/ সে কি তুমি?/’ সে বিরক্তি সুরে বলে উঠল চারপাশে এত কিছু ভাললাগা বস্তু ফেলে আমি কেন কবিতা লিখি?... গান তখনও যে আরো বেশি প্রিয়ছিল তা বলে নি! প্রশ্নাত্তর ঠিক বুঝাতে সক্ষম ছিলাম; কিন্তু সে কেন গান শুনে? তার উত্তরে আমার মন ভরাতে পারে নি। তাকে বলেছিলাম কবিতা বা গান একই ধারায় দুটি প্রাণ, যা জীবনের কথা বলে আনন্দ দেয়। গানকে ভালবেসে কবিই তো লিখেছেন ‘আমার ছিল ভূপেন হাজারিকা/তোমার প্রিয় অন্যধারার গান/ তোমায় আমি ভুল বুঝেছি শিখা/ তুমি আমার রক্ত করেছো প্রাণ/’ কবিতা নিজেই শ্রবণ করে আনন্দ চুষে নিতে হয়, আর গান শুনে আনন্দ খুঁটে নিতে হয়। কবিতা পড়ি, গান শুনি নিজের মরচে ধরা প্রাণকে জাগাতে, না-খেলে যেভাবে ক্ষুধা নিবারণ করা যায় না, তেমনি কবিতা বা গান ছাড়া প্রাণের তৃপ্তি মিলে না, আত্মার প্রশান্তির জন্য কবিতা পড়ি, গান শুনি, সোজা কথায় যদি বলি- কবিতা পড়তে ভাল লাগে তাই পড়ি, তারচে’ বেশি ভাবি না।
আমরা যখন কথা বলি- আমাদের সুরে ও স্বরে অনেক কিছু আমাদের চেহারায় ফোটে ওঠে, যদি নিজ অভিজ্ঞতা থেকে বলি আমি এক-তৃতীয়াংশ বুঝে নিতে পারি কোন কথা ও সুরে সুখ আছে, দুঃখ আছে, আছে পাওয়া না-পাওয়ার হতাশা। কোন কথাগুলো না-বললে বুক ধুঁকরে মরে। কবিতা নিয়েই সারাক্ষণ নিজের বোধের ভেতর এক ধরণের নৈঃশব্দিকস্পর্শ অনুভব করি, উপযুক্ত ভাষার অন্বেষণ করি, চোখের সামনে নতুন কবিতা দেখলে পাঠ করার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি, পাঠ শেষে ভাল লাগে মোহিত হই, ক্লান্তিও আসে।
আমার নিজস্ব ধারণা শুধু চারপাশ ভাবনায় কবিতা হয় না, আবার চারপাশ ছাড়া কবিতা লিখাও সম্ভব হবে না। কবিতার জন্য দৃষ্টি-অনুভব-অনুভূতিসহ বোধের আলোড়ন-বিলোড়ন এবং দীর্ঘ সঞ্চয়াবেগ কবিকে নাড়া দেয়, কবির ভেতরের অহমগুলো কল্পনায় দোল খায়, না-লিখা কথাগুলো কাতরতায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে কিছু ধ্বনি উচ্চারিত হয়। ধ্বনির সমাহার ও সমন্বয় থেকে শব্দ পাঠককে দোলা দেয়, শব্দ যেভাবেই ব্যবহার হউক না কেন তা প্রাত্যহিক জীবনধারণের একটি অংশ; শব্দই হচ্ছে যে কোন বিষয়বস্তুর প্রাণ। ধ্বনি-অর্থ-চিত্রায়ণ তিনের সমষ্টি কোন না-কোন বিষয়ের শব্দ, অণুশব্দ, প্রতিশব্দের অবতারণা করে। ভাষার অর্ন্তজগত বর্হিজগত নিজেই খুঁজে নেয় তার আবাসভূমি! বিনয় মজুমদার যেমন বলেন: ‘চিন্তার মাধ্যম নয়, ভাষা হলো চিন্তাই স্বয়ং।’
ভাবছি… তারপর কি লিখব? হাতের কাছে ছিল বন্ধুবরেষু আহমদ সায়েম (সূনৃত সম্পাদক) কর্তৃক প্রেরিত অশোক মিত্রের প্রবন্ধগ্রন্থ ‘কবিতা থেকে মিছিলে’ পাঠ শুরু হল প্রথম সংস্করণের মুখবন্ধ পাঠ শেষে আমার মনে হল নিজের ভাবনা বিষয়ক কিছু না লিখে ওইগ্রন্থ থেকে নিজের ভাল লাগাটুকু, পাঠভাবনাটুকু সবার সাথে শেয়ার করা যায়- ‘কবিতা থেকে মিছিলে’ নামসন্দর্ভটি প্রসঙ্গে আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই, ‘কবিতায় বাঙালির লালন, কবিতায় বাঙালির অঙ্গীকার, কবিতার আবেগ বাদ দিয়ে বাঙালি বাঁচতে পারে না।কিন্তু কী সেই কবিতার রূপ,কাদের নিয়ে সেই কবিতা, কারা সেই কবিতার লক্ষ্য-অভিলক্ষ্য?’ আমার মনেও প্রশ্ন জাগে আসলে কবিতার পাঠক কারা? সবাই কবিতা পড়ে না, পৃথিবীতে বাংলা ভাষাভাষি লোকের একভাগও হবে না যারা শুধু কবিতা পাঠ করে বিমোহিত হন, আনন্দ পান। যারা অতিদরিদ্র তাঁদের পাঠ হচ্ছে বেঁচে থাকার সংগ্রাম, যারা উচ্চবিত্ত তাঁদের পাঠ হচ্ছে শৌখিন, বিনোদনবাসনা। কবিতার শ্রেষ্ঠ পাঠক আমাদের মতো যারা মধ্যবিত্ত সমাজে বসবাস করি। এখন কথা হচ্ছে কতজন কবিতার পাঠক? কারা কবিতা পড়েন? কেন পড়েন? কি আছে তাতে? কি কি বিষয় নিয়ে কবিতা লিখলে পাঠক উপকৃত হবেন? কেন আমরা অন্যসব বিনোদন বাদ দিয়ে কবিতা পড়বো? যেহেতু আমরা যারা মধ্যবিত্ত সমাজই কবিতার শ্রেষ্ঠ পাঠক তাহলে আমরা পাঠ করি মধ্যবিত্তের তিনটি দ্বান্ধিকতা
প্রথম দ্বান্ধিকতা- ‘আমি যে বোধ বা আবেগ নিষ্কাশন করতে চাই, এবং যে প্রকরণের সাহায্যে তা নিষ্কাষন করছি, তাদের মধ্যে। কী বলছি, কেমন ক’রে বলছি, কী গাইছি, কেমন ক’রে গাইছি, কী লিখছি, কেমন ক’রে লিখছি, কী গড়ছি, কমন ক’রে গড়ছি, কী দিয়ে গড়ছি,কী আঁকছি, কেমন তুলি দিয়ে কোন বিহঙ্গে আঁকছি:’
দ্বিতীয় দ্বান্ধিকতা- ‘সমস্যা জটিল; সৃষ্টির সঙ্গে জীবিকার। যে-কোনো কবিকে-কর্মীকে-শিল্পীকে আলাদা ক’রে সময় সাজিয়ে নিতে হয় সৃষ্টির প্রয়োজনে,অনেক-অনেক সময়, তদগত সময়, অথচ সে সৃষ্টি থেকে যদি জীবিকার সংস্থান না থাকে তা হ’লে সমস্যা, তা হ’লে সংকট। আমরা বাঁচি, বিকশিত হই সৃষ্টির মধ্য দিয়ে, তা যে-প্রকার, যে পর্যায়ের সৃষ্টিই হোক না কেন—অহরহ জীবনে নতুন স্তর আবিষ্কার করি।’
তৃতীয় দ্বান্ধিকতা- ‘ব্যক্তিসত্তার সঙ্গে সমাজসত্তার, যিনি সৃষ্টি করবেন, যিনি গাইবেন, যিনি কবিতা লিখবেন, যিনি ছবি আঁকবেন, যিনি স্থাপত্য গড়বেন, তিনি কি সমাজকে বাদ দিয়ে, সমাজের কথা ভুলে, সমাজকে প্রক্ষিপ্ত রেখে আত্ননিমগ্ন থাকতে পারেন?’
হ্যাঁ, যারা লিখছেন-গাইছেন-গড়ছেন-ভাঙছেন-আঁকছেন তাঁরাতো এসমাজেরই একজন, ইচ্ছা-অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসমাজের সাথে মিলেমিশে চলতে হয়, সমাজ নিয়ে ভাবতে হয়, কোন রকম বেঁচে থাকার জন্য জীবিকার সন্ধানও করতে হয়। যেমন আমাকেও জীবিকার তাগিদে শীতের দেশে বরফাচ্ছন্ন মাছ-মাংশ টুকরো টুকরো করতে হয়! মনে মনে পাঠ করি নিজের একটি কবিতার পঙক্তি ‘বন্ধুরা কেউ জানে না, কেন যে আমার দু’হাতে লেগে থাকে খরা’ তবুও ভাবি এসমাজ থেকে তুলে আনা সকল আটপৌর কাহিনির নেপথ্যে সব শিল্পের সৃষ্টি! ‘কবিতা থেকে মিছিলে’ প্রবন্ধের প্রথম লাইনটি পড়ে, দ্বিতীয় লাইন শেষ করার আগেই আমাকে থামতে হয়েছে, হয়ত লাইনটি আমাকে থামাতে বাধ্য করেছে! শতচেষ্টা করে পাঠ আর এগুতে পারি নি! ভাবনাটুকু আমার মাথায় ধাক্কা শুরু করল; কোথা থেকে শুরু হল গদ্য, বাক্যের প্রথমেই যে তিরস্কার নিহিত!
‘অনেক কবিতা লিখে চ’লে যায় যুবকের দল। চল্লিশ বছর আগেও যেত, তিরিশ-কুড়ি বছর আগেও, ১৯৫৮ সালেও’ আলাওল, জয়দেব থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, বুদ্ধদেব, বিনয়সহ যারা লিখেছেন, লিখছেন তাঁদের শুরু কিন্তু যুবকের দলে। ৫৮সালে আমার বাবা বয়স ছিল ১০বছর, ২০০৯ সালে যখন আমি মুগ্ধ হয়ে পাঠ করছি তাঁর প্রবন্ধ, আমি দাঁড়ানো আটাশের ছায়ায়; যাই পড়ি পাঠ শেষে নিজের ভেতর একধরণের টান অনুভব করি, ভাবি… কিন্তু বলতে পারিনা, রাস্তায় হাঁটায়-চলাফেরায় অনেক সুন্দরী নারী চোখে পড়ে তাঁদের হাঁটা নিয়ে ভাবি, দু’পায়ের ফাঁকের কম্পাঙ্ক মাপি, হাইহিল জুতোর শব্দ শুনি আড়চোখ-চাহনিও চোখে পড়ে, ভাবি যেকোন বয়সের নারী কেন দূর থেকে পুরুষদের লক্ষ্য করে, দু’চোখ ভরে দেখে, পাশ দিয়ে যায়, পারফিউমের গন্ধও নাকে লাগে না-দেখার ভান করে চলে যায়… কথাবার্তা হলে কথার ফাঁকে ফাঁকে ভাবি খাঁড়াস্তনের ভেতর হাওয়া ঢুকলো কি-না তাও ভাবি, হাসি ঠোঁটের দাগ হয়ে ভাবি, বুকের ভেতর ভাবি তাঁদেরকে কবিতার পরতে-পরতে, কেন কবিতার পরতে-পরতে ভাবি… ‘কবিতার মাংস নেই, রক্ত নেই,’ তবুও কেনো কবিতার ভেতর এত ভাললাগা,… মুগ্ধতা?
তবে প্রবন্ধের এই লাইন গুলোর সাথে পাঠক হিসেবে আমি পুরো একমত হতে পারিনি? ‘কবিরা তাঁদের স্ব-স্ব প্রেমিকাকে কবিতায় কী-সব সম্বোধন করেন, ইতস্তত এখনো নারীর শরীর ইত্যাদি নিয়ে উল্লেখ দেখতে পাই। কোন নারীর শরীর? নারীর শরীর কি শুধু শব্দের ব্যাপার, কথাগুলিকে একটার-পর-আরেকটা সাজিয়ে-যাওয়ার চাতুর্যপ্রসঙ্গ? নারীর স্তন-জঙ্ঘা-যোনিদেশের উল্লেখ দেখি, ঠোঁট-চিবুক চোখ নিয়ে অবয়বহীন দর্শনচর্চাও চোখে পড়ে। স্তন-জঙ্ঘা-যোনিদেশ কী ক’রে লোভনীয়ত্বে পৌঁছায়, ঠোঁট-চিবুক-চোখে বিদ্যুতের স্থপতি কী ক’রে গঠিত হয়?’ বিনয় মজুমদার তাঁর ‘ভূট্টা সিরিজ’ ‘কবিতার খসড়া’র জন্য যতই সমালোচিত হন তাতে হয়ত ‘স্তন-জঙ্ঘা-যোনিদেশ’ নিয়ে আকার-ইঙ্গিতে বিশদ ব্যবহার আছে, একজন কবিতার পাঠক হিসাবে ভাললাগা মন্দলাগাও আছে বৈকি, কিন্তু কারো আলোচনা-সমালোচনা পড়ে তাঁকে গ্রহণ-বর্জন করতে পারি না। আমি তাঁর ‘ভূট্টা সিরিজ’ এবং ‘কবিতার খসড়া’ কবিতা গুলোকে অশ্লীল বলতে পারি না, এই আটাশে আমিও ব্যাচেলার সারাক্ষণ না-হলেও কখনও সখনও আমার ভেতরও তো সে রকম অশ্লীল চিন্তা থেকে বহুজাতিক ইচ্ছে জাগতে পারে, কেউ হয়ত জানে না আমার ভেতর অন্যএক আমিও বাস করে, আমিও তো ‘স্তন-জঙ্ঘা-যোনিদেশ’ নিয়ে গোপনে অনেক কিছু ভাবতে পারি…। হয়ত প্রকাশ করছি না, তফাৎ এই যা...
বিনয় মজুমদার যা কল্পনায় ভেবেছেন তাই বলেছেন, আমরা হয়ত মনে-মনে চিন্তা করি কিন্তু বলছি না, পার্থক্য আমার কাছে এরকম মনে হয়, হয়ত তারচে’ বেশি হবে না। জীবনানন্দ তাঁর ‘ক্যাম্পে’ কবিতাটি অশ্লীলতার দায়ে কর্মচ্যুত হন, কই সে কবিতায় আমি তো কোন অশ্লীলতা খুঁজে পাইনি, সমরেশ বসু তাঁর ‘প্রজাপতি’ ষোল বছর অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত ছিল; কিন্তু আমি কোথাও অশ্লীলতা ছিটেফুঁটো খুঁজে পাইনি। চুম্বন আমার কাছে শিল্পই মনে হয়, শব্দটি যখন যথার্থ প্রয়োগ হয়। সঙ্গমকেও আমি শিল্পের চূড়ান্ত প্রাপ্তি হিসেবে ভাবি, যখন ওইশব্দটি কবিতার গতির সাথে অকাতরে-ধারাবাহিকতায় মিশতে দেখি। এবাক্য গুলোর সাথে সম্পূর্ণ সহমত ‘অভাবে, মেজাজ খারাপ, পরস্পরকে দোষারোপ, কান্না, তিক্ততা, মনের সুকোমল বৃত্তিগুলোর ধীরে ধীরে শুকিয়ে-আসা। এই পরিবেশে, এমনকি তেইশ বছরের আপাত-উঠতি শরীরেও, স্তন আর স্তন থাকে না, দুদিনেই তা হেলে প’ড়ে মাই হয়ে যায়।’
জানি আমাদের মধ্যবিত্ত সমাজে এরকম ঘটনা হরহামেশাই ঘটে, আমরা এসব নিয়ে কতটুকু প্রতিবাদ করি বা করছি, তা ভেবে দেখার অবকাশ হয়ত আছে; তবুও আমাদের চারপাশ নিয়ে চলতে হয়। আর চারপাশকে মনে রেখেই কবিরা কল্পনার ঢালি সাজান, কবিতা লিখেন! ‘মানি, এই রুদ্ধশ্বাস পরিবেশেও কবিতা সম্ভব।’ কিন্তু কেমন হবে কবিতা? কবিতা কি শুধু প্রতিবাদি হতে হবে, হতে হবে- ‘বিপ্লবের স্বপ্ন, রাজনৈতিক সংগঠন, মিছিল। মিছিলের দৃপ্ত মুখ, ধর্মঘট, উদ্ধত আকাশে তুলে-দেয়া হাত, একদিন-আমার-তোমার সকলের-সংসারে-প্রাচুর্য-আসবে-স্বাচ্ছন্দ্য-আসবে-সুষমা-সমতা-আসবে সেই আশায় বুক কেঁপে-ওঠা। এই সমস্ত-কিছুই কবিতা হয়, অন্তত হওয়া উচিত,’ হয়ত একসময় তা ভেবেই কবিতা লিখা হত তা যেমন অস্বীকার করা যাবে না, তেমনি কবিতায় নারী-প্রেম-স্তন-জঙ্ঘা-যোনিদেশ-ঠোঁট-চিবুক-চোখ থাকবে না তা হয়ত আমি পাঠক হিসেবে মেনে নিতে পারি না, কারণ সময় সারাক্ষণ গোপন দরজা তাকে তার মতো চলতে দিতে হয়। আমি জানি সময় যেভাবে গোপন দরজা দিয়ে পালায়, কবিতাও বিভিন্ন মুর্হুত্বের আশ্রয় হয়ে একাই দাঁড়ায়। কারণ এক-একটি কবিতা ঘোরের মধ্যে ফেলে রাখে, শব্দগুলো বুকে গেঁথে রয়, ভাবায়, কল্পনায় দোলায়, স্মৃতি সাঁতরায়, আশা জাগায়, আনন্দ দেয়, যন্ত্রণায় পোড়ায়, নতুনের পথ দেখায়, মুক্তির পথে হাঁটতে শিখায়,… বিনয় যেমন বলেন, ‘তুমি কষ্ট পাচ্ছো, সেই কষ্টের কথা লিখে তুমি আনন্দ পেতে পারো।’ সে কষ্ট-আনন্দ সফল-রূপই হতে পারে কবিতা।
কবিতাকে কোন রেখায় বেঁধে নেয়া যাবে না, কবিতা তার ভাব-সুর-ছন্দ ও চিত্রের ভেতর হাঁটবে… আমরা পাঠ করবো আনন্দ পাবো, ক্লান্তি আসবে ফেলে রাখবো মনে ধরবে বারবার পড়বো, পাঠক হিসেবে এটুকুই আমাদের চাহিদা। পরিশেষে জীবনানন্দের মতো বলবো, ‘কবিতা কী এ জিজ্ঞাসার কোন আবছা উত্তর দেওয়ার আগে এটুকু অন্তত স্পষ্টভাবে বলতে পারা যায় যে কবিতা অনেকরকম’
মন্তব্য
আপনার এই লেখা আমার কাছে মনে হয়েছে...
আর একটু বিস্তৃতি দাবী করে।
আর একটু মনোযোগ ও....
কবিতা কি...
আসলে কবিতাটা কি...
গদ্যের যে পৃথিবী.. সেই পৃথিবীর সীমানার কোন চৌহদ্দী পেরুলে তবে... জন্ম হয় একটি কবিতার ?
আমরা কবিতায় কি পাই - যা গদ্যে থেকে যায় অধরা...
যদিও আলোচনার শুরুতে ভেবেছিলাম অশোক মিত্রের কবিতার আলোচনা থেকে থেক জেনে নিতে পারবো এক কবির ভূবনেশ্বর ... কিন্তু চিন্তা চলে গেল কবিতার সংজ্ঞা অনুসন্ধান যাত্রায়....
অগোছালো পাঠের নিমিত্তেই হবে হয়তোবা...
অশোক মিত্র নয় ... কবিতাই দখল করে নিলো সমস্ত মনোযোগ...
অশোক মিত্রের কবিতার আলেখ্য আর জেগেই উঠলো না....
তবুও
কয়েকটি বিষয় -
এই যে কবিতার শ্রেষ্ঠ পাঠক হিসেব মধ্যবিত্তের প্রাবাল্যতার স্বীকৃতি এবং এর স্বরূপ বৈশিষ্ট্যের অণ্বেষা - আরো আলোচনার দাবী রাখে... এটি নিয়ে আলোচনার সম্পূর্ণ দায় আপনার একারই... তা নয়...।
শুধু একটা লাইন মনে হলো...
মধ্যবিত্ত কি সিনথেসিস...
একটা সমাজের দুই প্রান্তের মিলিত প্রতিক্রিয়া..
যা ধারণ করতে চায়
সব সমুদ্র এবং ডাঙ্গার স্বাদ....
পাঠের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এই হিজিবিজি লেখাটিকে বলতে পারেন গ্রন্থটির পাঠমুহূর্ত ভাবনা।
জানি আরো বিস্তর হতে পারত কিন্তু হয়নি,
সে আমার সীমাবদ্ধতাও বলতে পারেন।
তবে আমি ‘অশোক মিত্র’ তাঁর ওই লাইনগুলোকে ক্লীক করার চেষ্টা করেছি।
ওই লাইনগুলো পড়ে আমার ভেতর জেগে ওঠা সিম্ফনি-
ভালো থাকুন।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
নিঃশব্দে মগ্নতা।
ডাকঘর | ছবিঘর
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
আমি কবিতা পড়েছি খুবই কম, প্রথমেই দুঃখ প্রকাশ করে বলতে চাই যে আমি অশোক মিত্রের কবিতাও পড়িনি যে কারনে আপনার পুরো পোস্টটিতে কোথায় কোথায় তার পংক্তিগুলো ব্যবহার করেছেন আমি বুঝতে পারিনি। এবং সেই বুঝতে না পারাটা আমার ভেতর একটা ছটফটে ভাব তৈরী করে ফেলেছে।
কিন্তু পাঠক হিসেবে যে আঙ্গিক থেকে আপনি আপনার সারকথাগুলো বলে গেলেন ততে প্রচুর ভাবনার অবকাশ আছে, দোল আছে আর আছে মন্থর করে আসা প্রশ্নেরা। নারী নিয়ে কবিতায় নারীর অঙ্গের ব্যবহার আমাকেও ভাবায় কিন্তু আমি দেখেছি কবিতায় সেই অঙ্গের বর্ণনায় সেগুলো শারীরিক সব ভাষা ছাড়িয়ে যায় - একটা নিরাকার অবয়ব তৈরী হয় যেখানে অঙ্গ আর নির্দিষ্ট কোন অঙ্গ না থেকে একটা বিমূর্ত চিত্রকলায পরিণত হবার অনুষঙ্গ লাভ করে। কবিতার সার্থকতা বোধকরি এখানেই।
কেন জানিনা এই কথাগুলো বলতে পেরে ভালো লাগছে। আপনি ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা,
ধন্যবাদ আপনাকে।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
কবিতাকে কোন রেখায় বেঁধে নেয়া যাবে না---
facebook
কবিতাকে কোন রেখায় বেঁধে নেয়া যাবে না
তারেক ভাই।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
তামিম ভাই
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
নতুন মন্তব্য করুন