কোন কোন রাতে ঘুম ভেঙে যায়; কোন কোন রাতে ঘুম ভাঙে - কোন কোন রাতে কেউ কেউ আর ঘুমোয়না, নিশুতি রাতের মত জেগে থাকে আপন ঘোরের এক প্রজাপতি মুহূর্তে - সেখানে ভিড় করে আসে তার সোনারঙ দিন শেষে অবলা ঘুমের কথা অথবা কোন এক ঘুম ভাঙা ঘুমের কথা যেখানে সে দেখেছিলো তীব্র মায়ের হাত পৃথিবীর সব ওজন নিয়েও নরম শিমুল তুলোর মত ছুঁয়ে আছে তার এ জীবন।
কোন কোন রাতে কারো ঘুম ভাঙার পর তার মনে হয় জীবনের সব দুঃখ উধাও, চমৎকার একটা অনুভূতি তার ভেতরে খেলা করে গেলে সে দেখে ছেলেবেলায় ছুটতে ছুটতে ধরতে যাওয়া একটি শন পাতার মত এ জীবন টা কেবলই ছুটোছুটি - আর তার বুকের খাঁচার ভেতরে হুড়মুড় হুড়মুড় করে চলে আসে ঘুড়ি উড়ানোর পর ঘুড়ির দখল নিয়ে লড়াই, ভোকাট্টা হয়ে যাবার পর মন খারাপ করে ঘরে ফেরার পথে পাড়ার কোন এক বড় ভাই তাকে হাওয়াই মিঠাই কিনে দিয়েছিলো কিংবা বাবা রাগ করে ঘুড়ি আর নাটাই ফেলে দেবার পর একদিন ঘুম ভেঙে বালিশের পাশে দেখা একটা চিত্রল ঘুড়ি তার সবটুকু আহ্বান নিয়ে একটা কাঠবাদামের মত নাটাই এর পাশে পড়ে আছে। কখনো কখনো শৈশব ফিরে আসে আমাদের ঘুমে!
কোন কোন রাত কখনো বিরল কোন এক অপার্থিব বেদনা দুষ্টু জাদুকরের মত সব সুখ উধাও করে তার বাক্সের ভেতর থেকে বের করতে থাকে একটার পর একটা, একটার পর একটা ব্যথা, দুঃখ আর কষ্ট - আর তারা সব জাদুকরের সেই বাক্স থেকে বেরুতেই থাকে লাল, নীল, হলুদ, গোলাপি, সাদা, কালো, সবুজ - তারপর কোথাও একটা নীল আলো তীব্র হয়ে জ্বলে উঠে কিন্তু অনেক সুদূরে থাকে বলে তাকে আর ধরে নেভানো যায়না - বরং সেই আলোটা কুয়াশার মত ধীরে ধীরে একটা নাম না জানা রাগিণী হয়ে পুরো পৃথিবীটাকে ছেয়ে ফেলে। আলো দেখা যায় তবু মনে হয় ধোঁয়াশার কোন হাত পা নেই - একটা গো গো করা প্রতিবন্ধীতা কাবু করে রেখে যায় আমাদের পরবর্তী দিনগুলো।
এক রাতে ঘুম ভাঙে শামুকের মত গুটিসুটি পায়ে, তারপর চারপাশ দেখতে পাওয়া যায়, বই, কলম, খাতা, কম্পিউটার, জামা-কাপড়, কাঠ, লোহা - সব দেখতে পাওয়া যায় - মশারীর ঝাঝরিকাটা নকশায় পিল পিল করে দেখা যায় আলো আসে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আলো তুষারপাত এর মত করে নেমে আসে চোখে - ধীরে ধীরে ..... আরো কাছে দেখা যায় বালিশ আর কাঁথার ভাজে গুটিসুটি মেরে পড়ে আছে কেউ, হাড়-মাংসের একটা কাঠামো ফুটে ওঠে কিন্তু কোন ছায়া পড়েনা - ছায়াহীন একটা উপস্থিতি তার অবয়বে ফেলে আসা জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত নিয়ে পড়ে থাকে - আলো আর অন্ধকার তার ভেতর পুরাতন অলি-গলি পেরিয়ে মিশে যায় আরো সব আলো আর অন্ধকারের সাথে - তারপর দূরাগত ছায়া সব জেগে ওঠে নানারূপ আকৃতি নিয়ে বেভুল পথিকের মত, একটা আরেকটার সাথে ধাক্কা খেয়ে চমৎকার জোড়া লেগে যেতে যেতে সব ছায়াগুলো একসাথে উড়ে একটা গাঢ়তর ছায়া হয় ....
পরদিন সেই ছায়া ঘর ছেড়ে নুন আর পান্তার খোরাকিতে আরো কিছু ছায়া নিয়ে কাটায় আরো দিন, পরবর্তী রাতের কাছে সব প্রেম জমা দেয় ক্রমাগত তারপর অযুত নিযুত সময় শেষ হয়, শেষ হয় মহাকাল তবু তার রাত নামে, ঘুম আসে - থাকে সমান্তরাল ছায়া!
---------- ১১.১০.২০১১, খুলনা
“একদিন পাতকুয়ো দেখে হুহু চিৎকার দিলে
আরো গভীর তার প্রতিধ্বনি হুমহুম এসেছিলো ফিরে -
জীবনের পাতকুয়ো অতল তলানি
প্রতিধ্বনি কানে নয় মরমের নোনাজলে বাজে!”
------------ (২অক্টোবর, বরিশাল)
মন্তব্য
পুরোটা ঘোর। পুরোটা কবিতা
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
হাফ সচল হওয়ার অভিনন্দন
হাচলত্বে অভিনন্দন গল্পকার!!! অতি দ্রুত হলি, সচল ভালো মানকে সঠিক মূল্যায়ন করে।
হাচলত্বের অভিনন্দন!
ধন্যবাদ
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
অভিনন্দন
তানিম ভাই, মন খারাপ করে দিলেন ক্যান? শিগগির শিগগির একটা মজার কিছু পোস্ট করেন।
মন খারাপ হওয়া খারাপ না ....
নেন মজা নেন http://youtu.be/rdNdmc83xe4
অফটপিক- খুলনার কোথায় থাকেন ভাই?
facebook
প্রিয় উড়ন্ত ঘুড়ি, খুলনায় অফিস এর কাজে যাই, গেলে থাকি হোটেল ওয়েষ্টার্ন ইন এ।
খুব সুন্দর!!
অসাধারণ!!!
_____________________
Give Her Freedom!
রু এবং কবি মৃত্যুময়কে ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা,
নতুন মন্তব্য করুন