এক বিকেলে আমাদের দূরপাল্লার ট্রেনটা হঠাৎ থেমে গেছিলো এক অচেনা স্টেশনে। প্লাটফর্ম মাটির সমতলে, একটুখানি দূরেই সবুজ জমি, তারপরে একটা টিলা। জমির মাঝখানে রাজার মতন দাঁড়িয়ে এক বিরাট অশ্বত্থ। এইরকম জায়গায় এসে ট্রেন দাঁড়িয়ে গেলেই কেবল কল্পনা করতে ইচ্ছে করে নেমে পড়তে। নেমে পড়ে টিলার দিকে চলতে চলতে ঠিক একটা বিন্দুতে এসে ছিঁড়ে যাবে পরিচিত পৃথিবীর সুতো। তার পরেই দেখা দেবে সেই যাদুদরজাটা।
ট্রেন আবার চলতে শুরু করলো। স্টেশন ছাড়ালে ক্রমে সন্ধ্যা নামে, তরল অন্ধকার ছড়িয়ে যায় মোহনীয় পানীয়ের মতন। দূরে দিকচক্রে আস্তে আস্তে দীপ্তি হারায় সন্ধ্যামেঘের রঙীন ডানা। কামরার ভিতরে ঘুম জমে আসে, দুলুনির সঙ্গে সঙ্গে কোমল রেশমী ঘুম। চাকার শব্দে জেগে ওঠে বুদ্ধ-বিম্বিসারের যুগের ধূসর গল্পের শহর, বিদিশার রাত্রির কাব্য। অনোমা ও শ্রীকরের গান। জানালার বাইরে তখন ফুটে উঠেছে জ্যোৎস্নার রূপোগুঁড়ো। আকাশে চাঁদকে ঘিরে অলৌকিক শোভাময় চন্দ্রসভা। তার নিচ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে গাড়িভরা ঘুম।
ঠিক তখনই ফেলে আসা শহরে নিভে গেছে বাতি। বাতিনেভা অচল শহরের দমবন্ধ গুমোট গলিতে এসে ঢোকে চোরাগোপ্তা জ্যোৎস্না। অমনি কানাগলিটা খুঁজে পেয়ে যায় একটা ম্যাজিক দরজা। সেই দরজা পার হলেই ছলোচ্ছল জলের শব্দ, একটা ঝর্ণা। তার শিয়র ঘেঁষে পাথরকুচি, ফার্ণ পাতা বুটি বুটি মুক্তোদানা পরে সেজেছে। আর ফোঁটা ফোঁটা চন্দনের মতন জ্যোৎস্না লেগে আছে জামরুল গাছের পাতায় পাতায়।
আয়নাতে জলবিন্দু দুলে ওঠে
খুলে যায় ভিতর দরজা-
হালকা শব্দ, প্রথমে স্বচ্ছ, বাষ্পময়-
তারপরে আস্তে আস্তে ফিরোজা।
ভিতরে অল্প আলো শিরশিরে
সন্ধ্যার শঙ্খধ্বনির মতো টলমল,
ঠান্ডা ঠান্ডা ভয় আর তিরতিরে নীল কৌতূহল।
মোহরের গড়িয়ে যাওয়ার শব্দ
সোনালি রূপালী তামাটে শব্দ
চন্দনের গন্ধের মত স্বাদ
জ্যোৎস্নার সুর শুনে অরণ্যরেখা স্তব্ধ।
আয়নায় আরো আরো জলবিন্দু-
প্রথমে স্থির স্ফটিক,
তারপরে দুলে ওঠে, গড়িয়ে নামে
মিলেমিশে গিয়ে ধারা বেয়ে ঝরে।
সময়ের ঘড়িতে অবিরাম টিক টিক টিক টিক ....
মন্তব্য
অ দিদি, পোলাটা তো কেবল '(গদ্য)কবিতা বুঝিনে' বলে কেঁদে কেঁদে সারা হল, একটা সহজমত লেখা দাও!
আরে মণিরত্ন, সেই পোলা তো একেবারে নিরুদ্দেশ ! কবিতা অকবিতা কোথাও তো টিকিটাও দেখি না!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পাকড়ায়ে আনো না...
আরে তোমরা এতগুলো পালোয়ান থাকতে আমি কী করবো?
তোমরা পাকড়ায়ে আনো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনি এত ভাবনায় পড়লেন কেন?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চোরাগোপ্তা জোছনা!
facebook
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দেখেছ কাণ্ড, কটা দিন আসিনি তার ফাঁকেই এই মিষ্টি লেখাটা গলে গেছে কখন। তোমার উপমাগুলো, রূপকগুলো সত্যি দারুন হয়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আরে আশালতা ! কোন ফাঁকে এ কমেন্ট দিয়ে গেছ দেখাই হয় নি!
অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন