প্রিয় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শুক্র, ১৪/১০/২০১১ - ১:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিডিনিউজে আপনার একটি আর্টিকেল [১] পড়ে একাধারে ভালো লাগা আর বিতৃষ্ণা নিয়ে লিখতে বসলাম। আমি সম্ভবত আপনার আর্টিকেলে উদ্দিষ্ট তরুণ প্রজন্মের একজন। আপনি যদি তরুণতর প্রজন্মের জন্যে এই আর্টিকেলটি লিখে থাকেন, তাহলে সম্ভবত আমার প্রতিক্রিয়া লেখা মানায় না। কিন্তু কিছু জিনিস আপনাকে জানানো প্রয়োজন বোধ করছি।

আমার ভালো লাগা এ কারণে, যে একজন রাজনীতিক দেশের তরুণদের নিজের দলে ভেড়াতে আহ্বান করে কীবোর্ড ধরেছেন। আপনার উদ্দিষ্ট তরুণেরা অনলাইনে পাঠপ্রবণ, এটাও ধরে নিতে বেগ পেতে হয় না। পড়ার মতো সেরেব্রাল কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষদের রাজনীতির প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্যে আপনার এই উদ্যোগটি দেশে ক্রমবর্ধমান অনলাইন যোগাযোগ ও মত বিনিময়চর্চার গুরুত্বকেই প্রকট করেছে, তাই প্রারম্ভিক সাধুবাদ আপনার প্রাপ্য।

আপনার লেখা শুরু হয়েছে একটি উদ্বিগ্ন প্রশ্ন দিয়ে,

আমাদের সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে, সেটা হবে তো?

প্রিয় মির্জা সাহেব, এখানে "আমাদের" বলতে আপনি কাদের কথা বলছেন, স্পষ্ট হয়নি আমার কাছে। এ্ই "আমরা" যদি দলের মার্কা নির্বিশেষে রাজনীতিকদের বোঝায়, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করছি, আপনাদের, রাজনীতিকদের সন্তানরা দুধেভাতেই থাকবেন। আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোনো রাজনীতিককে রাজনীতির অঙ্গনে দেখিনি, যার সন্তান দুধেভাতে নেই। আপনাদের রাজনীতির খেলায় বরং আমরা, এই জনগণই দুধভাত হয়ে বসে থাকি একপাশে। আপনারা প্রকাশ্যে একদল আরেকদলের সাথে তর্কাতর্কি লাঠালাঠি করলেও বেলা শেষে আমরা দেখি, আপনাদের সন্তানেরা দলমতের সীমানা পেরিয়ে আত্মীয়তার মিষ্টি বন্ধনেও আবদ্ধ। তাই রাজনীতির পাশার দান উল্টে গেলেও বাংলাদেশের কোনো গরুর সাহস নেই, আপনাদের সন্তানদের পাতে দুধ না দিয়ে কোনো আমজনতার সন্তানের পাতে দুধ দেয়।

যদি পাবলিকের সন্তানের দুধভাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকেন, আমার বিনীত প্রশ্ন, পাবলিকের সন্তান শেষ কবে দুধেভাতে ছিলো? আর্টিকেল পড়ে বুঝলাম, '৭২ থেকে '৭৫ সালে যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশে শেখ মুজিবের শাসন নিয়ে আপনার অনেক ক্ষোভ, কাজেই আমি বুঝতে পারছি, ঐ সময় পাবলিকের সন্তান কখনোই দুধেভাতে থাকতে পারে না। তবে কি জিয়াউর রহমানের আমলে পাবলিকের সন্তান দুধেভাতে ছিলো? নাকি এরশাদের আমলে? নাকি বিএনপির প্রথম দফায়? আওয়ামী লীগের আমলে তো দুধেভাতের প্রশ্নই ওঠে না, তবে কি আপনাদের জোট সরকারের সময়? নাকি গত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়? প্লিজ, মির্জা সাহেব, জনগণের সন্তান কবে দুধেভাতে ছিলো, একটু জানিয়ে যান, নিজেদের অভিজ্ঞতার সাথে মিলিয়ে দেখি।

আপনি লিখেছেন,

আমি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করি যে আজকের তরুণদের অনেকেই ক্রোধ আর হতাশার মাঝে খেই হারিয়ে ফেলছে। তারা যেন স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছে। দেশের ঘুরে দাঁড়ানোর সাথে নিজের উন্নয়নের এক অদ্ভুত দূরত্ব তৈরি করে তারা মনে করছে, দেশের উন্নয়নটা যেন অন্য কারো কর্তব্য, যার জন্য বরাদ্দ আছে বিশেষ একদল, তাদেরকে তাচ্ছিল্য করা যায়, দোষারোপ করা যায় কোনো পরীক্ষা ছাড়া, শুধু রাজনীতিবিদ বলে শনাক্ত করেই।

তাহলে আসুন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের প্রেক্ষাপটে আপনার এই কথাটার মূল্য যাচাই করে দেখি। আপনি লিখেছেন,

মুক্তিযুদ্ধে আমরা অবশ্যই গিয়েছিলাম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার জন্য, কিন্তু মনে ছিল তার চাইতেও বড় একটা আশা: স্বাধীনতার সুফলটা আমরা সবাই ভাগ করে পৌঁছে যাবো উন্নতির দুয়ারে। আমরা কী রকম আশাহত হয়েছিলাম সে বয়ান আমার কাছে শুনলে আপনাদের মনে হতে পারে পক্ষপাতদুষ্ট, আপনার পাশের যে মানুষটা ৭২ থেকে ৭৫ এর সময়টাতে জীবিত ছিলেন, অতিবাহিত করেছেন তার যৌবন, তাকে একবার হলেও জিজ্ঞেস করুন।

তার মানে, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে, যখন আপনি তরুণ, তখন আপনিও "ক্রোধ আর হতাশার মাঝে খেই হারিয়ে ফেলেছিলেন", "স্বপ্ন দেখতে ভুলে গিয়েছিলেন", মনে করেছিলেন, "যার জন্য বরাদ্দ আছে বিশেষ একদল, তাদেরকে তাচ্ছিল্য করা যায়, দোষারোপ করা যায় কোনো পরীক্ষা ছাড়া, শুধু রাজনীতিবিদ বলে শনাক্ত করেই?"

আপনার কি মনে হয় না, যে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫-এর দুঃসময়ের বদনামকে পুঁজি করে আপনার আর্টিকেল শুরু, সেই ৭২-৭৫ কখনও শেষ হয় না, প্রতিটি সরকারের সময়ই নতুন চেহারা নিয়ে ফিরে আসে তরুণদের কাছে? আপনি তরুণদের কেন মুরুব্বির কাছ থেকে ৭২-৭৫ এর কথা শুনতে বলেন মির্জা সাহেব? কেন তাদের ৯১-৯৬, ৯৬-২০০১, ২০০১-০৬, ২০০৭-০৮ দেখান না? সেগুলো তো তারা সরাসরি দেখেছে। নাকি বাংলাদেশের যাবতীয় দুঃখ আর দুর্দশা সেই ১৯৭২-৭৫ এই নিহিত? যদি তা-ই হয়ে থাকবে, তাহলে জিয়াউর রহমান, এরশাদ আর আপনারা মিলে কুড়ি বছর কেমন শাসন করলেন, যে ঐ চার বছরের ধাক্কা এখনও আপনার আর্টিকেলে প্রতিধ্বনিত হয়?

আপনি আপনার নিজের রাজনৈতিক জীবনের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে লিখেছেন, পড়ে মন কিছুটা আর্দ্র হয়েছে। তবে এর প্রতিদানও আপনি পেয়েছেন বৈকি, সেগুলো নিয়ে তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে কিছু লেখেননি। তাই রাজনীতি যে কেবল বন্ধুর পথে বাধা ঠেলে চলা আর প্রিয়জনের কাছ থেকে দূরে থাকাই নয়, মাঝেমধ্যে মন্ত্রিত্বের ওমও তাতে যুক্ত হয়, এ ব্যাপারটা আপনার আর্টিকেলে ফুটে ওঠেনি। তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিতে (লীগ-বিম্পি-জামাত-জাপা-বাম নির্বিশেষে) যোগ দিক আর না দিক, আপনারাই ঘুরে ফিরে দেশ শাসন করবেন সামনে বেশ কিছু বছর। তাই শুধু আপনাদের কষ্ট নয়, প্রাপ্তির দিকগুলোও তাদের জানান প্লিজ।

সবচেয়ে ভালো লেগেছে আপনার একটি প্রশ্ন,

যে তথ্য, শ্রম, অর্থ ও কাণ্ডজ্ঞান সহযোগে আমরা একটা মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটার বেছে নেই, সে প্রেরণা ও প্রজ্ঞা আমাদের রাষ্ট্রভাবনায় বরাদ্দ আছে কি না?

আমাদের কথা কিছুক্ষণের জন্যে ভুলে গিয়ে বলুন তো, এই প্রেরণা ও প্রজ্ঞা কি আপনাদের, রাজনীতিকদের রাষ্ট্রভাবনায় আছে? কেমন দেশ দিতে চান তরুণ প্রজন্মকে? বেশিদূর ভাবতে হবে না প্রিয় মির্জা সাহেব, যে ইন্টারনেটে আপনি আর্টিকেলটি প্রকাশ করেছেন, সেই ইন্টারনেটের প্রসঙ্গটাই ভাবুন, আপনাদের শাসনামলে আমাদের সুযোগ এসেছিলো প্রায় নিখরচায় তথ্যসড়কে নিজেদের যোগ করার। আপনারা সময়মতো দেশকে সেই সড়কে তুলতে ব্যর্থ হয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য পাচার হয়ে যাওয়ার অভিযোগে। আজ সেই আপনিই ইন্টারনেটে লিখছেন। রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য পাচারের দুশ্চিন্তা যে আপনাদের এখন নেই, জেনে ভালো লাগলেও, এ কথা জানিয়ে দিতে চাই, সময়মতো সেই সুযোগ না নেয়ার কারণে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানের সঠিক ও সময়োচিত সুযোগ থেকে তরুণ প্রজন্মকে বঞ্চিত করার কিছু দায় আপনি এড়াতে পারেন না। তরুণ প্রজন্মের প্রেরণা ও প্রজ্ঞা গজফিতা ধরে মাপার আগে প্রিয় মির্জা সাহেব, আয়নার সামনে ফিতা নিয়ে দাঁড়ান প্লিজ। মেজার দাইসেলফ। তথ্যপ্রযুক্তি নিয়েই শুধু কথা বললাম, বাকি খাতগুলো আপনি নিজেই হয়তো অবসরে ভেবে ভেবে বার করতে পারবেন।

এবার আসি আমার বিতৃষ্ণার কথাটি জানাতে। আপনি লিখেছেন,

বিএনপি কোন অতীতমুখী দল নয়, তাদের মনোজগৎ অতীতে অবরুদ্ধ নয়। অতীতের অর্জন আর ট্রাজেডি নিয়ে মানুষের সহানুভূতি আর অনুকম্পা আশা করে না বিএনপি। বিএনপি শুরু থেকেই একটি ভবিষ্যতমুখী দল। পৃথিবীতে এমন কোনও জাতি নেই যার অতীত রক্ত-রঞ্জিত নয় কিংবা পাপবর্জিত । তারা তাদের অতীত বেদনাকে ভুলে থেকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়, প্রতি নিয়ত অতীত ক্ষতকে সজীব করার রাজনীতি করে না। নাৎজি উত্থান-পর্ব (যেটা সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ছিলো!) নিয়ে জার্মানরা রাজনীতি করে না, অস্ট্রেলীয় আদিবাসীরা তাদের উপর সংঘটিত অবিচার নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা করে নিজেদের মধ্যে বিভেদ ও হীনম্মন্যতা সৃষ্টি করে না। আমাদের রাষ্ট্রের ইতিহাস অন্যান্য আর দশটি রাষ্ট্রের মতোই ভুলে ভরা। আমাদের প্রজন্মের বহু লোক ভুলের এই ফিরিস্তি নিয়ে আলোচনা করাকে তাদের জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করেছে। দয়া করে আপনারা এই ভুলের পুনরাবৃত্তি করবেন না। আমরা এগিয়ে যেতে চাই, এগিয়ে যেতে চাই আমাদের অন্ধকার অতীতকে ভুলে গিয়ে নয়, ভুলে থেকে।

কেন এ ধরনের কথা বলেন মির্জা সাহেব? আপনার আর্টিকেল আপনি শুরুই করলেন ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ এ আপনার হতাশার কথা দিয়ে, আবার বলছেন বিএনপি অতীতমুখী দল নয়? টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয় আপনাদের (লীগ ও বিএনপি) সাংসদীয় কার্যক্রম, তার সিংহভাগ জুড়ে থাকে অতীতচারণা। আপনারা শেখ মুজিবকে তুলাধুনা করেন, লীগ জিয়াউর রহমানকে তুলাধুনা করে। অতীতের অর্জন নিয়ে সহানুভূতির কথা যখন উঠলোই, একটু কষ্ট করে কি বলবেন, আপনাদের অর্জনগুলো কী কী? ট্র্যাজেডির কথা তরুণ প্রজন্ম জানে, তারা সেইসব ট্র্যাজেডির ভিকটিম ও ভুক্তভোগী।

আপনাকে কে বলেছে, নাৎসি উত্থানপর্ব নিয়ে জার্মানরা রাজনীতি করে না? টুপির নিচ থেকে কথা বার না করে একটু খোঁজ নিন না, গুগল করলেই তো পাবেন অনেক কিছু! জার্মানিতে নাৎসি রাজনীতি নিষিদ্ধ বহুবছর ধরে। জার্মান রাজনীতিতে নাৎসি দলকে কেউ পুনর্বাসন করেনি, যেমনটা জিয়াউর রহমান করেছিলেন জামাতে ইসলামকে। জার্মানি শুধু নাৎসি পার্টিকেই নিষিদ্ধ করেনি, তারা আজও নাৎসি ধারার রাজনীতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে [২]।

অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের কথা বলছেন মির্জা সাহেব? প্লিজ, আপনার পরম স্বজনেরাই তো থাকেন ওখানে, একটু খোঁজখবর করতে ক্ষতি কী ছিলো? অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড তাদের সংসদে প্রস্তাব এনে অতীত নির্যাতন ও নিপীড়নের জন্যে ক্ষমা চেয়েছেন আদিবাসী গোষ্ঠীর কাছে [৩]। কিছু আদিবাসী এই ব্যাপারে সন্তুষ্ট হলেও ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন তাদের একাংশ। আপনি আমার দেয়া খবরটা পড়লে আরো জানবেন, একজন শ্বেতাঙ্গ অস্ট্রেলীয়র সাথে একজন আদিবাসী অস্ট্রেলীয়র প্রত্যাশিত আয়ুর পার্থক্য ১৭ বছর। তাদের মধ্যে শিশুমৃত্যু, মাদকাসক্তি, বেকারত্বের হারও অনেক বেশি। অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার ২% এই গোষ্ঠী এখনও বিপুল বৈষম্যের স্বীকার, যা রাড সরকারও স্বীকার করে নিয়েছেন। আর আপনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘরে বসে বলে দিচ্ছেন, তারা নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে না! নিজের প্রতি বৈষম্যের প্রতিবাদ করার মানে বিভেদ সৃষ্টি করা? হীনম্মন্যতা সৃষ্টি করা? আপনি কি এই ধারণা নিয়েই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন, স্বাধীনতা চেয়েছিলেন? তাহলে যখন ক্ষমতায় থাকেন না, তখন প্রতিপক্ষের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলে কেন "বিভেদ" আর "হীনম্মন্যতা" সৃষ্টি করেন মির্জা সাহেব?

কিন্তু এই কথাগুলো কেন ওঠালেন মির্জা সাহেব? আপনাদের শরীক জামায়াতে ইসলামীর চামড়া বাঁচানোর জন্যেই তো? আপনি তরুণ প্রজন্মের কাছে জার্মানি আর অস্ট্রেলিয়ার অসত্য উদাহরণ টেনে কি এটাই বোঝাতে চাইলেন, যে ১৯৭১ সালে আপনাদের শরীকদের ভূমিকার সমালোচনা আর শাস্তির দাবি থেকে তরুণ প্রজন্মকে সরে আসতে হবে? কেন মির্জা সাহেব? আপনারা কেন তরুণ প্রজন্মের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই বদমাশগুলোর বিচার দাবি করেন না? আপনি না শিক্ষকতা করতেন? আপনি না মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন? আপনি কি আপনার জীবন থেকে আর যুদ্ধ থেকে এ-ই শিক্ষা নিলেন, যে যে বিশ্বাসঘাতকের দল আপনার মতোই লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতাকামী মানুষকে হত্যার কাজে সহায়তা করেছে, তাদের গায়ে গা ঘষে আপনাকে ক্ষমতায় যেতে হবে? আপনার কি বেলা শেষে আয়নায় নিজেকে দেখে এতটুকু গ্লানি অনুভব হয় না? রাজনীতি, যেদিকে তরুণ প্রজন্মকে টানার জন্যে আর্টিকেলটি লিখলেন, কি আপনাকে স্বজনবৈরিতার ঐ সীমায় নিয়ে গেলো?

কেন মির্জা সাহেব, কেন দেশটাকে চালানোর জন্যে আমরা আহ্বায়কের ভূমিকায় আপনার সুদর্শন সৌম্য চেহারা দেখবো, আর আপনার দুর্বল আর্টিকেলের অসত্য উদাহরণের ফাঁদে পড়ে আমাদের পিতা-পিতামহের হত্যাকারীদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাবো? আপনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দালালদের বুক আগলে বাঁচাবেন, আর হাতছানি দিয়ে তরুণদের ডাকবেন সেই কাজে? আপনি অন্ধকার অতীতকে ভুলে যেতে বলে সেই অন্ধকার অতীতের পারপিট্রেটরদের হাতে ধরে গদিতে বসাবেন কেন?

প্রিয় মির্জা সাহেব, বিএনপি কি একলা চলতে অসক্ষম? একাত্তরের হন্তারকদের চামড়া না বাঁচালে কি বিএনপি চলতে পারবে না? আপনি ইনক্লুসিভিটির কথা বলছেন, বহু মতকে ধারণের কথা বলছেন, কিন্তু সব মত কি ইনক্লুড করা যায়? যে মত এই দেশের তিন মিলিয়ন মানুষ হত্যাকে সহায়তা করেছে, সেই মতও ইনক্লুড করবেন আপনি? আপনি কি আপনার পুত্রের হত্যাকারীকে, কন্যার ধর্ষণকারীকে পাশে নিয়ে মঞ্চে দাঁড়াতে পারবেন? যদি পারেন, যদি এতোই ইনক্লুসিভ হন আপনি, আপনার হাতে কি আমাদের বাংলাদেশ নিরাপদ?

আপনি প্রশ্ন রেখেছেন,

কিন্তু একবার নিজেকে সততার সাথে প্রশ্ন করুন তো দৈনন্দিন জীবনে কতবার আপনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কিংবা জাতীয়তাবাদের কথা সাগ্রহে চিন্তা করেন? চার ঘণ্টা ব্যয় করে অফিস যাওয়া আসার সময়, দশ ঘন্টার লোডশেডিঙে নেতিয়ে পড়ার সময়ে কিংবা চোখের সামনে কাউকে পিটিয়ে মারার দৃশ্য দেখার সময় কি আপনি অতীতের অর্জন নিয়ে উদ্বেলিত হন না বর্তমানের যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠেন?

এই প্রশ্ন আপনাকেও করতে চাই মির্জা সাহেব। আপনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন, যখন মন্ত্রী ছিলেন, অফিস যেতে আপনার কত সময় লাগতো? আপনার বাড়িতে কয় ঘন্টা লোডশেডিং হতো? আপনাদের শাসনামলে কয়জন মানুষের মৃত্যুর কথা জেনে আপনি যন্ত্রণায় কুঁকড়ে উঠেছিলেন? আমরা তো চিরভুক্তভোগী, আপনারা যে দলই ক্ষমতায় আসেন না কেন, ট্র্যাফিক জ্যামে আমরাই পড়ি, লোডশেডিঙে আমরাই ভুগি, আমরাই রাস্তাঘাটে রাহাজানির শিকার হই, তারপর যখন সময় আসে, তখন আপনাদের একজনকে টেনে নামিয়ে আরেকজনকে তুলি। আপনার কি মনে হয়, আপনারা নিজেদের মেরিটে ক্ষমতায় যান? আপনার ক্ষমতায় যান প্রতিপক্ষের আরো খারাপ শাসনের উছিলায়। আপনাদের হাতে একটা অজুহাত সবসময় তৈরি, সেটা হচ্ছে, প্রতিপক্ষ খারাপ। আপনারা নিজেরা কতো ভালো? আওয়ামী লীগ আর বিএনপির বর্তমান নেতারা কোন যোগ্যতায় একে অন্যের নিন্দা করে?

বিএনপির দরজা সবার জন্যে খুলে ধরছেন মির্জা সাহেব, কেন আগে ঘর থেকে একাত্তরের হায়েনাগুলোকে খেদাচ্ছেন না? আপনার সৌম্য চেহারাকে সামনে রেখে যে পেছনে তাদের দাঁতগুলোই ক্রমশ ধারালো হচ্ছে? নূহের নৌকার মতো কি সাপ আর খরগোশ, দুইই পাশাপাশি থাকতে পারবে সে ঘরে? সে ঘরে কে বেশি নিরাপদ, সাপ না খরগোশ?

আপনারা, রাজনীতিকরা, দল-নির্বিশেষে, নিজেদের প্রোপাগান্ডাময় পৃথিবী ছেড়ে একটু জেগে উঠুন। বাংলাদেশের অনেক কষ্ট, গভীর রাতে কান পেতে তার কান্নার শব্দ শুনুন। আপনারা না জাগলেও সকাল হবে, আপনাদের ছাড়াই।


সূত্র:

[১] প্রিয় তরুণ প্রজন্ম - মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিডিনিউজ, ১৩.১০.২০১০

[২] Germany bans its biggest neo-Nazi group - রয়টার্স, ২১.০৯.২০১১

[৩] Australia apology to Aborigines - বিবিসি


মন্তব্য

সুরঞ্জনা এর ছবি

সহমত।

সকাল আপনাদের ছাড়াও হবে। জেগে না উঠলে লস আপনাদের।

ধন্যবাদ হিমু ভাই।
চলুক

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অরফিয়াস এর ছবি

খুবই ভালো লাগলো, সত্যি বলতে ঠিক এরকম একটা লেখার কথা চিন্তা করছিলাম, আপনি আশা পূরণ করলেন, প্রত্যেকটা লাইন অসহ্য সত্যি, প্রত্যেকটি শব্দের সাথে সহমত... চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লেখায় গুরু গুরু

অতীত ভুলে যাওয়ার এই একটা প্রস্তাবের জন্য আপনার জন্য ঘৃণা মির্জা ফকরুল! আমরা আমাদের পুর্বপুরুষের হত্যাকারীকে ভুলে যাইনা। আমরা আমাদের নির্যাতিত পুর্বপুরুষকে ভুলে যাইনা। আমাদের মায়েরা যাদের জন্য কেঁদেছে আমরা তাদের জন্য ঘৃণা পুষে রাখি আমাদের চেতনার সবচে গভীরে!

আপনার জন্য ঘৃণা এবং ধিক্কার। মানুষের ঘৃণায় আপনার কিছু আসে যায়না আমি জানি। কিন্তু মানুষকে এই কষ্টকর কাজটি করতে হয়! মানুষের হাত ধরার সঙ্গে সঙ্গে পশুদেরকে ঘৃণা করেই তবে সে মানুষ হতে পারে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

তানিম এহসান এর ছবি

খুব ভালো লাগলো। ফেসবুকে একজন এই মহান শব্দগুচ্ছের লিংক শেয়ার করে প্রশংসাসূচক কথাবার্তা বলেছিলেন, দেখার রুচি হয়নি - আপনার পোস্ট পড়ে রুচি আরো বলবধর্ধক হলো হাসি

নিটোল. এর ছবি

মির্জা সাহেবের লেখাটাও পড়লাম। আবেগ-টাবেগ মিশিয়ে অনেক কিছু গেলাতে চেয়েছেন, কিন্তু পুরো লেখাটাই স্ববিরোধিতায় পরিপূর্ণ। হিমুকে ধন্যবাদ উনার সুন্দর প্রতিক্রিয়ার জন্য।

মৃত্যুময় ঈষৎ(Offline) এর ছবি

আপনাদের রাজনীতির খেলায় বরং আমরা, এই জনগণই দুধভাত হয়ে বসে থাকি একপাশে।

নাকি বাংলাদেশের যাবতীয় দুঃখ আর দুর্দশা সেই ১৯৭২-৭৫ এই নিহিত? যদি তা-ই হয়ে থাকবে, তাহলে জিয়াউর রহমান, এরশাদ আর আপনারা মিলে কুড়ি বছর কেমন শাসন করলেন, যে ঐ চার বছরের ধাক্কা এখনও আপনার আর্টিকেলে প্রতিধ্বনিত হয়?

সময়মতো সেই সুযোগ না নেয়ার কারণে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানের সঠিক ও সময়োচিত সুযোগ থেকে তরুণ প্রজন্মকে বঞ্চিত করার কিছু দায় আপনি এড়াতে পারেন না

কিন্তু এই কথাগুলো কেন ওঠালেন মির্জা সাহেব? আপনাদের শরীক জামায়াতে ইসলামীর চামড়া বাঁচানোর জন্যেই তো?

আপনি কি আপনার পুত্রের হত্যাকারীকে, কন্যার ধর্ষণকারীকে পাশে নিয়ে মঞ্চে দাঁড়াতে পারবেন? যদি পারেন, যদি এতোই ইনক্লুসিভ হন আপনি, আপনার হাতে কি আমাদের বাংলাদেশ নিরাপদ?

আপনি কি আপনার পুত্রের হত্যাকারীকে, কন্যার ধর্ষণকারীকে পাশে নিয়ে মঞ্চে দাঁড়াতে পারবেন? যদি পারেন, যদি এতোই ইনক্লুসিভ হন আপনি, আপনার হাতে কি আমাদের বাংলাদেশ নিরাপদ?

কেন আগে ঘর থেকে একাত্তরের হায়েনাগুলোকে খেদাচ্ছেন না?

অসাধারণ সুলিখিত পোস্ট!!! চলুক চলুক চলুক

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা বিএনপি করে।

মানব আমি এর ছবি

হাহাহাহাহা অসাধারন... গড়াগড়ি দিয়া হাসি

মুস্তাফিজ এর ছবি

অপ্রিয় সত্য কথা। ভালো লাগলো।

...........................
Every Picture Tells a Story

রু (অতিথি) এর ছবি

ক্ষুরধার লেখা। খুব ভালো লাগলো।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

অসাধারণ লিখেছেন হিমু ভাই। শেয়ার দিলাম।

এরকম একটি সুন্দর গঠনমূলক প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

ভালো থাকা হোক। চেতনায় জাগ্রত থাকা হোক।

উচ্ছলা এর ছবি

রক্তচোষা কালকেউটের দল আসছে প্রগতির কথা শোনাতে?!...চল্লিশ বছর ধরে দেশটাকে ধর্ষন করে ধর্ষকের পাল এখন আসছে মিষ্টি মিষ্টি বাণী নিয়ে?!

পোস্ট শেয়ার দিলাম।

জি.এম.তানিম এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

পাঠক এর ছবি

মির্জা ফখরুলদের মত লোকেরা মুক্তিযুদ্ধ করেছে শুনলে সন্দেহ জাগে। উনারা কাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন। শোনা যায়, কতটুকু সত্য জানিনা, কাদের সিদ্দিকীর কাদেরিয়া বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময় বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অনেক বামপন্থি বিপ্লবী( খুব সম্ভবত সিরাজ সিকদারের অনুগত যোদ্ধাদের ) হত্যা করেছিল। ফখরুল সাহেবের বন্দুক যে কার দিকে তাক করা থাকতো কে জানে! যেসব ঘৃণ্য লোকেরা এদেশের মাটি ও মানুষের বিরোধিতা করেছিল, নিষ্ঠুরভাবে হত্যা, ধর্ষণ, লুঠতরাজ করেছিল তাদের প্রতি দরদ উথলে উঠে যখন একজন মুক্তিযোদ্ধার(?) তখন তার মুক্তিযুদ্ধের উল্লিখন টানাটা হাস্যকর ঠেকে। জিয়াউর রহমান লোকটা তো সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করতে যাচ্ছিল, পথিমধ্যে কার চাপে পড়ে যেন তিনিও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যান। আওয়ামীতে যোগ দেবনা কিন্তু বিএনপি তে কেন আমার মত একজন তরুন যোগ দেবে যখন সেই দলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা অতীত ভুলে গিয়ে( যুদ্ধাপরাধীদের ভুলে গিয়ে, প্রকারান্তে মুক্তিযুদ্ধকে ভুলে গিয়ে) সামনে এগিয়ে যেতে বলবেন? আমি কি আমার রক্তরঞ্জিত মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভুলে যাব আর কতগুলো খুনী, ধর্ষক কে আমার প্রিয় স্বদেশভূমির ভাগ্য নিয়ন্ত্রক হতে দেব?

স্বাধীন এর ছবি

লীগ-বিনপি এই বৃত্ত থেকে আদৌ কি দেশ মুক্তি পাবে?

পাঠক এর ছবি

কেন মুক্তি চান?

এম সানজীব হোসেন  এর ছবি

প্রথমেই হিমু ভাই কে এই সুন্দর লেখাটির জন্য ধন্যবাদ জানাই। অনেক দরকার ছিল এমন একটি লেখার। শুধু একটি কথার সাথে আমি সামান্য দ্বিমত পোষণ করবো। আপনি শুরুর দিকেই বলেছেন, "আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোনো রাজনীতিক কে রাজনীতির অঙ্গনে দেখিনি, যার সন্তান দুধেভাতে নেই।" কিন্তু কিছু পলিটিশিয়ান কিন্তু ছিলেন, আমাদের আগের জেনারেশান থেকে, যারা কিছুই রেখে যাননি তাদের সন্তানদের জন্য। আমি আমার পরিবার থেকে কর্নেল তাহেরের উদাহরণ দিতে পারি। তাঁর তিন ছেলেমেয়ে চরম অভাব অনটনে বড় হয়। আমার বড় চাচার চেলেমেয়েরা তাদের কাপড়চোপড় তাহের চাচার ছেলেমেয়েদের সাথে শেয়ার করতেন। তাই ওদের দুধেভাতে বড় হওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।

আমার মনে হয় আপনি বর্তমান যুগের রাজনীতিকদের সন্তানরাদেরকে বোঝানোর জন্যই কথাটি লিখেছিলেন। তারা নিঃসন্দেহে খুব আরাম আয়েশের মধ্যেই বড় হয়েছেন। এই ব্যাপারে মনে হয় আমাদের কারোরই দ্বিমত নেই। হাসি

হিমু এর ছবি

চলুক

কল্যাণF এর ছবি

হিমু ভাই অসাধারন লেখা। আপনার জন্যে স্পেশাল একটা যায়গা আজকে তৈরি হল। গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

এই লোক যদি সত্যি মুক্তিযুদ্ধ করে থাকে তাহলে সে কতখানি বিক্রি করেছে নিজেকে যে জামাতীদের সাথে রাজনীতি করে আবার ওদের বিচার চাওয়াকে ভুলে যেতে উপোদেশ দেয় !!!!!!! এইরকম চিন্তা করছে যারা তাদের সবার বিচার হওয়া দরকার জামাতীগুলার সাথে। কি ভয়ঙ্কর!! এই রকম নিশ্চয় আরো লোক আছে, আর তারা নিশ্চয়ি এরকমি উচু উচু যায়গায় বসে আছে। আজকে একটা বের হয়ে এসেছে, বাকিরা হয়তো অপেক্ষা করছিল এই মুহুর্তটার। রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং রেগে টং

মঈনুল এর ছবি

গুরু গুরু

বঙ্গসন্তান এর ছবি

অসাধারন... মির্জার লিখা পড়ে গরম হওয়া মাথায় একটু পানি ঢালার জন্য ধন্যবাদ, হিমু ভাই হাততালি

নাদির জুনাইদ এর ছবি

অসাধারণ লেখা। এমন লেখা আরো পড়তে চাই।

pathok এর ছবি

চলুক

সজল এর ছবি

মানুষ তার লজ্জার ইতিহাস ভুলে যেতে চায়, গরবের না। মুক্তিযুদ্ধকে লজ্জার ইতিহাস বলে, রাজাকারদের বাঁচানোর এই চেষ্টার উদ্দেশ্যএ ঘৃণা।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সৈয়দ আফসার এর ছবি

চলুক

__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!

আজাদ মাষ্টার( রিডার/কমেণ্ট)  এর ছবি

আওয়ামীলীগ সরকার আল্লাহকে বিশ্বাস করেনা, তারা বিশ্বাস করে কালী কে। এই কারণে দেশে আজ পুজা-পার্বনও শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা আল্লাহর ওপর ইমান রেখে দেশের মানুষের মঙ্গল ও কল্যাণে কাজ করতে চাই।

সিলেটের জনসভায় খালেদা জিয়া

মির্জা সাহেব বিএনপিকে যখন বলেন একটা আধুনিক উদার দল তখন আসলেই ব্যাপক বিনোদন পাই বিএনপির মূল নেত্রী যেখানে খোদ নিজেই এই দেশে ৪৭ সালের পূর্বের মুসলিমলীগ হিন্দু মহাসভার সম্প্রদায়িক রাজনীতি পুনরায় প্রবর্তন করতে ইচ্ছুক এই দেশে নতুন করে তখন দলের “ভারপ্রাপ্ত” মহাসচিবের ২১ শতকের নেট ব্লগ প্রজন্মের তরুণদের যারা কিনা অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধে বিশ্বাস করে তাদেরকে বিএনপির দিকে আহ্বান কতোটা বিশ্বাসযোগ্য ?

দ্রোহী এর ছবি

গুল্লি
উত্তম জাঝা!
গুরু গুরু

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হিমু ভাই, অসাধারণ লেখা ... যুদ্ধাপরাধীদের সাথে তাদের সমর্থকদের বা অ্যাপোলোজিস্টদেরো বিচার হওয়া দরকার।

এরা আসলে কি বলতে চায়? ইনিয়ে বিনিয়ে সেই পাকিস্তান আমলে আমরা ভাল ছিলাম, এটাই শেষ পর্যন্ত এরা বলে ফেলে। 'আপনাদের বয়োজ্যেষ্ঠদের জিজ্ঞেস করুন, তাদের জীবনে, এমন কি পাকিস্তান আমলেও সরকারী ব্যবস্থাপনার এমন বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তারা প্রত্যক্ষ করেছেন কি না?' - এসব কথা বলার উদ্দেশ্য কি? যারা যুদ্ধাপরাধীদের পাছায় তেল মালিশ করে তাদের বিরুদ্ধেও দেশোদ্রোহীতার মামলা হওয়া উচিৎ।

'বিভিন্ন মতের মানুষকে এক প্ল্যাটফর্মে আনা কতটুকু কঠিন সেটা খালেদা জিয়াকে করুন, সাত খণ্ডে বই লিখে উত্তর দেবেন।' - যত কিছুই লেখুক আর যত সাধুই সাজুক চামচামির সুযোগ পাইলে এরা হাতছাড়া করে না। এরা কি আসলেই মুক্তিযুদ্ধ করছে? আমার বিশ্বাস হতে চায় না।

শেয়ার দিলাম।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হাফিজ আহমেদ এর ছবি

অসাধারণ লিখেছেন। আমাদের মনের কথা গুলো বলেছেন। উনি জবাবটা পড়লে আরও ভাল লাগত।
মনের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ গ্রহণ করুন।

শুভকামনা রইল। ভাল থাকেন সবসময়।

নতুন পাঠক এর ছবি

অনেক অনেক ভাল লাগল আপনার লেখাটি পড়ে।

নূপুরকান্তি এর ছবি

লজ্জা করেনা সাজিয়ে গুছিয়ে কথা বলে তরুণ প্রজন্মের কাছে ভোট চাইতে।
এখানে এসে জবাব দেবার মত সৎসাহস রাখে কি না কে জানে!
এর কাছা খুলে দেয়ার জন্যে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ হিমু।

তানজিম এর ছবি

লিখাটা সবার চোখে পড়া দরকার। সচলায়তনের কপালে ২/১ দিন ঝুলিয়ে রাখলে মন্দ হয় না। হিমু ভাইকে ধন্যবাদ। নিজস্ব পরিমণ্ডলে শেয়ার দিলাম। নূতন প্রজন্মের কাছে সব স্পষ্ট হয়ে উঠুক এই কামনাই করি।

...দলমতের সীমানা পেরিয়ে আত্মীয়তার মিষ্টি বন্ধন... টা কি মিষ্ট হবে?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

সহমত।

একটা লেখা লিখবো ভাবছিলাম। কিন্তু আপনার রিপ্লাইটা পড়ে দেখলাম আমার মনে জমা হওয়া প্রশ্নের প্রায় সবই আপনি তুলে এনেছেন। চমৎকার হয়েছে রিপ্লাইটা।

সুলতান এর ছবি

ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটির জন্য।
লিগ-বিএনপি থেকে মুক্তি চাই। কিন্তু আমাদের তো কোন পথ খোলা নাই।

শেয়ার দিলাম।

বাউন্ডুলে এর ছবি

চলুক সহমত পোষণ করছি।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

জয় এর ছবি

অসম্ভব যুক্তিসঙ্গত এবং সাজানো লেখা...সহমত পোষণ করি ।

ফয়সাল এর ছবি

ভাল লাগল গুরু গুরু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

চমৎকার একটা লেখা

কাজি মামুন এর ছবি

হিমু ভাই,
অসাধারণ। একেবারে খাসা জবাব দিয়েছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভাল ভাল কথার আড়ালে আসলে তরুণ প্রজন্মকে ''মুক্তিযুদ্ধে জামাতের কলঙ্কজনক ইতিহাস'' ভুলে গিয়ে বিএনপি-জামাতের ছাতার তলে আশ্রয় নেয়ার আহবান জানিয়েছেন, যে ছাতার ধারক আবার মহান তরুণ নেতা 'তারেক জিয়া'।

আপনার কি মনে হয়, আপনারা নিজেদের মেরিটে ক্ষমতায় যান? আপনারা ক্ষমতায় যান প্রতিপক্ষের আরো খারাপ শাসনের উছিলায়।

মোক্ষম যুক্তি। মির্জা ফখরুল তার লেখাটিতে ভবিষ্যতমুখী হওয়ার কথা বলেছেন; কিন্তু ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে কিভাবে দেশের সমস্যাগুলো মোকাবেলা করবেন, তার সামান্যতম রূপরেখা কি পাওয়া যায় লেখাটিতে?

মির্জা ফখরুলের অভিনব (কারণ রাজনৈতিক নেতা, বিশেষ করে, বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে লেখার সংস্কৃতি আগে ছিল না) ও সুললিত ভাষায় রচিত লেখাটি পড়তে গিয়ে পদে পদে হোঁচট খেয়েছি এবং মনের মধ্যে ভিড় করেছে অনেক প্রশ্ন। আর আমার প্রায় সব প্রশ্নেরই উত্তর পেয়েছি এই লেখায়! সুন্দর অবয়বের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কদর্য চরিত্রগুলোকে এভাবেই আপনি একে একে বের করে আনুন!

সাদী এর ছবি

মির্জা সাহেব মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এই তথ্য কোথায় পেলেন? আমার জানামতে তার পিতা একজন কুখ্যাত রাজাকার---মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক আমি রাজাকারেরই লোক।

হিমু এর ছবি

উনি নিজেই নিজের আর্টিকেলে দাবি করেছেন, সত্যাসত্য জানি না। তার পিতা রাজাকার কি না, তা-ও জানি না। আপনার কাছে রেফারেন্স থাকলে দিন।

কাজি মামুন এর ছবি

হিমু ভাই,
মির্জা ফখরুল ইসলামের পিতা সম্পর্কে জানা যাবে এখানে

কাজি মামুন এর ছবি

তার পিতা রাজাকার কি না, তার একটা হিন্টস পাওয়া যেতে পারে এখানে।

যুমার এর ছবি

অসাধারণ চলুক

ফিদেল এর ছবি

ভাই, সকল রাজনীতিকের বক্তব্য তার নিজের রাজনৈতিক পন্থা ও দলের পক্ষেই হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই তাদের কথাকে এত গুরুত্ত্ব দিয়ে এরকম বিশ্লেষন ধর্মী লেখা লিখে সময় নষ্ট না করাই ভাল। এর চেয়ে আরও অনেক গুরুত্ত্বপুর্ণ বিষয় আছে সেগুলো নিয়ে বিশ্লেষন করুন।

হিমু এর ছবি

ঠিকাছে। আপনার খাই পরি, আপনার হুকুম অবশ্যপালনীয়। একটু দাগায় দিয়ে যান কোন কোন "আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ" বিষয নিয়ে বিশ্লেষণ করবো। আপনার দাগানো বিষয়ের বাইরে যাবোই না। কক্ষণো না।

ফিদেল এর ছবি

এরকম একটা উত্তরই আমি সন্দেহ করছিলাম।

হিমু এর ছবি

আপনার খাই পরি, আপনার সন্দেহকে বাস্তবে রূপ দেয়াই তো আমার কাজ। বলুন খোদাবন্দ, কী নিয়ে লিখবো এরপর।

ফাহাদ এর ছবি

লেখাটা পড়ে ভালো লাগল...
কিন্তু মানুষ যে ভালো নাই এখন এইটাও সত্যি কথা। এই দেশের দুইটা প্রধান রাজনৈতিক দলের কোনটাই দেশের ভালোর জন্যে কাজ করেনা... তাও এর বাইরে যাওয়ার কোন উপায় নাই। জামায়াতে ইসলামির জন্যে শেষ নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি হয়, এইবার অতিরিক্ত ভারত প্রীতির জন্যে আওয়ামী লীগেরও একই দশা হবে।
মির্জা ফখরুল কি বলল না বলল তাতে মানুষের কিছু আসে যায় না, মানুষ যা নিজের চোখে দেখবে তাই বিশ্বাস করবে। সস্তা বুলি দিয়ে লোক পটানোর দিন শেষ।

ভালো মানুষ এর ছবি

বস পাঠিয়ে দিয়েছেন......... গুরু গুরু শেয়ার দিলাম...............।

আমি তোমাদেরই লোক এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

gogo  এর ছবি

তাহলে এখনকার তরুণরা কি চায় ?
শুধুই রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করা আর প্রবাসে (নিজের আখের গোছানো শেষ করে) বসে ব্লগিং করা?
শুধুই যুদ্ধাপরাধ ...... যুদ্ধাপরাধ বলে চেচিয়ে বিপরীত রাজনৈতিক দের ( যারা যুদ্ধাপরাধ কে ইস্যু করে নির্বাচন জেতে ) সুযোগ করে দেয়া ????
' না ' ভোট দিয়ে রাজনিতিতে অপদারথ'র মত থাকা?
বিপ্লব করা ?
কি ? কি ? কি?
সময় খুব কম, দেশ কি রসাতলে যাচ্ছে না ?????????????
জানতে চাই বর্তমানের ফেইসবুকিও হলিউডি বলিউডি এসমারট নিউ জেনারেশনের কাছে ?
এন:বিঃ দয়া করে কেউ কথার ছুতা ধরে আজাইরা প্যাঁচাল পারবেন না ( যা এখন ব্লগিং এর মূল বৈশিস্ট্য তে পরিণত হয়েছে ) ...... উত্তর থাকলে দেন...। না থাকলে ফুটেন। আজাইরা প্যাঁচাল পাইরেন না পিলিজ

কাজি মামুন এর ছবি

@gogo,
আপনার কি মনে হয়? কি করা উচিত তরুণ প্রজন্মের? মির্জা ফখরুল ইসলামের আহবানে সাড়া দিয়ে জামাতের অতীত কলঙ্ক ভুলে গিয়ে দলে দলে বিএনপি-জামাতের ছাতার তলে আশ্রয় নেয়া? আপনার মতে যেহেতু সময় খুব কম, তাই আমাদের আর 'যুদ্ধাপরাধ' বলে চিৎকার করার সময় নেই; দেশকে রসাতলে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে হলে দ্রুত 'তারেক জিয়া'র মত তরুণ নেতাকে গদিনশীন করতে হবে! কিন্তু কথা হচ্ছে, ইতিহাস কি বলে? দুর্নীতি, সন্ত্রাস, স্বজনপ্রীতি, স্বৈরাচার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলন, সীমান্ত হত্যা, ভারতের আধিপত্য ও বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা ইত্যাদির কোনটি অনুপস্থিত ছিল বিএনপি-জামাতের বিগত জামানাগুলোতে? মাত্রাগত বিচারেও কি এই সরকার এখন পর্যন্ত এগুলিকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছে? তাছাড়া, বিএনপির কাছ থেকেই বা কি দেশবাসী এখন পর্যন্ত এমন কোন রূপরেখা জানতে পেরেছে যে, কি করে উপরের সমস্যাগুলির হাত থেকে তারা বাংলাদেশকে বাঁচাবে?

এস. এম. এ হাবীব এর ছবি

এ লেখাটা পড়ে নচিকেতার একটা গান মনে পড়ছে- রাজশ্রী তোমার জন্যে......

কাবেরী এর ছবি

আপনারা না জাগলেও সকাল হবে, আপনাদের ছাড়াই। কোন সন্দেহ ?

হেমন্তের ঘ্রাণ এর ছবি

কেন আগে ঘর থেকে একাত্তরের হায়েনাগুলোকে খেদাচ্ছেন না?

আপনার কি মনে হয়, আপনারা নিজেদের মেরিটে ক্ষমতায় যান? আপনারা ক্ষমতায় যান প্রতিপক্ষের আরো খারাপ শাসনের উছিলায়।

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

মানব আমি এর ছবি

ভাই আমি খুব একটা ব্লগ ভক্ত নই। কিন্তু আপনি তা করলেন আমাকে? আমার চিন্তা করতে কষ্ঠ হয়। কি নিয়ে অনারা রাজনীতি করেন। নাকি মনে করেন অনারা হেমিলিনের সেই বাঁশি ওয়ালা। বীণে সুর তুলবেন আর তরুণরা সব পেছন পেছন দৌড়ুবে !!!!

ধন্যবাদ, একটা সঠিক জবাব দেওয়ার জন্য।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

দারুণ পোস্ট

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

Sanu এর ছবি

আমার মনে হচ্চে মিরজা সাহেব steve job এর সমাবরতন বক্ত্রিতা এর popularity দেখে ভেবেচেন আমি অ জদি এরকম বক্ত্রিতা দিয়া পপুলার হতে পারি! থিক জেমন শেখ হাসিনা সান্তির মদেল দিয়া নবেল prize পেতে চাই! আবার জেমন এরশাদ কবিতা লিখে কবি হতে চাই !
কিন্তু এদের কথার সাথে কাজ এবং আদরশ সাংঘরসিক!! কিন্তু মানুশ থিকঈ বুঝ্তে পারে গাধা রে গরদ তসরে সাজান হলেও তবু সে গাধা ঈ থাকে!!

হিমু ভাই, খুব ভাল লিখেচেন!! গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

জ.ই মানিক এর ছবি

দারুণ বিশ্লেষণ।
নিজেদেরকে তারা অতি সেয়ানা ভাবেন; আর আমাদের কদুর বলদ! তাদের প্রগাপান্ডা হজম করতে যেনো মুখিয়ে আছি আমরা।
আফসুস, এই সেয়ানা পাপীগুলা আমাদের বিতৃঞ্চা ও বাস্তবতা অনুধাবন করতে সক্ষম হয় না; একই ভাবনা আর বৃত্তের আবর্ত ঘুরপাক খায় আর বিভীষিকা উপহার দেয় আমাদের বিস্মৃতির সুযোগ নিয়ে।

guest_writer এর ছবি

জনাব হিমু, আপনার বিশ্লেষণের সাথে একশত ভাগ সহমত। কিন্তু দিনশেষে এই আমরাই আবার এঁদেরই কাউকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করব আগামী পাঁচ বছর আমাদেরকে যত রকমভাবে সম্ভব কষ্ট দেওয়ার জন্য।

আমাদের সামনে কোন বিকল্প আছেকি ? আমরা আর বীর নই এখন আমরা কাপুরুষের দল।

ধন্যবাদ, একটি সুন্দর বিশ্লেষণের জন্য।

প্রৌঢ়ভাবনা

বন্দনা কবীর এর ছবি

সুপার ঝাঝা।
চরম দাঁত ভাঙ্গা জবাব। সুপার...

তারেক অণু এর ছবি

প্রত্যেকটা লাইন অসহ্য সত্যি, প্রত্যেকটি শব্দের সাথে সহমত..

সৌমিক  এর ছবি

ফখরুইল্যা ধানকণ্যার নিরাপরাধ দাবী করা উক্তি যে আমাদের কাছে ধাপে টিকিবে না সেটা বুঝিয়াই মনে হয়, অন্য পথ ধরতে চেয়েছিলেন। সুন্দর গঠনমূলক প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই হিমু ভাই

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

এস. এম. এ হাবীব এর ছবি

মির্জা ফকরুল হয়তোবা তার দলীয় স্বার্থে তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার নিমিত্তে উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন- প্রিয় হিমু।
আমি ৭১-এ জন্ম নেয়া একজন। এ পর্যন্ত অনেক চড়াই উৎড়াই দেখেছি। দেখছি। দেখতে দেখতে নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে একটা বিষয়ে বিশ্লেষণ করেছি এবং চিন্তা করেছি যে, ৪০ বছরে দেশের উন্নয়ন হল না কেন? এর মূল কারণটা কোথায়?
আমার দৃষ্টিতে যে ফলাফল এসেছে তা হল-
০১। দেশ স্বাধীন হবার পর শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধপরাধী, রাজাকার, আলবদরদের কেন শেষ করলেন না?
০২। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কেন তিনি কঠোর হস্তক্ষেপ করেন নি কেন?
০৩। মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিকভাবে পুনর্বাসন করেন নি কেন?

স্বাধীনতার পক্ষের (!) দল হয়েও যুদ্ধপরাধী, রাজাকার, আলবদরদের সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে নি?

প্রিয় হিমু, আমি এখন আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই-
মির্জা ফকরুলকে আক্রমণ করে কার মান বাঁচাতে চাইছেন?

হিমু এর ছবি

হাবীব সাহেব, আপনার বিশ্লেষণের ফল হিসেবে শুধু প্রশ্ন উঠে এলো দেখে ঘাবড়ে গেলাম। ৪০ বছরের বিশ্লেষণে আপনি তিনটি প্রশ্ন খুঁজে পেয়েছেন কেবল, এর উত্তর খুঁজে পেতে আপনার আরো কয় বছর লাগবে কে জানে? আপনার তিনটি প্রশ্নই শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দেখে আরো ঘাবড়ে গেলাম। সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় থেকে শেখ মুজিব যা করতে পারেননি, সেটা কেন পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া বা শেখ হাসিনা করতে পারলো না, এই প্রশ্নটাও মনে এলো। এই সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার আর আলবদরদের শেষ করতে ব্যর্থ হয়েছেন, অতি সত্য কথা, কিন্তু জিয়াউর রহমান, এরশাদ আর খালেদা জিয়া কেন পরবর্তী পঁয়ত্রিশ বছরে দশগুণ বেশি সময় নিয়েও ঐ কাজটা করলেন না, উল্টা তাদের সাথে এমনই মহব্বতপূর্ণ সম্পর্ক গড়লেন যে আজ নিজামীর সাফাই খালেদাকে গাইতে হয়? শেখ মুজিব সাড়ে তিন বছরে দেশের অবকাঠামোর উন্নয়ন করে ফাটায় ফেলেন নাই, এইটাও খুউপ খারাপ কাজ হয়েছে, ওনার উচিত ছিলো যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশে পাড়া দিয়েই পকেট থেকে দুই তিনটা যমুনা সেতু, চার পাঁচটা নৌবন্দর আর দশ বারোটা এয়ারপোর্ট বের করে বসায় ফেলা, এবং বাহাত্তরে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানিয়ে ফেলা। সেইটা উনি করেন নাই, মারাত্মক অপরাধ হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিকভাবে পুনর্বাসন করেন নাই, এইটাও ভালো কাজ হয় নাই। কিন্তু পরবর্তী পঁয়ত্রিশ বছরে জিয়া, এরশাদ, খালেদা আর হাসিনা মিলে কেন এই কাম হাসিল করতে পারলেন না, এই প্রশ্ন আশা করি আপনি আরো ৪০ বছর বিশ্লেষণ করে বের করে ফেলবেন।

আওয়ামী লীগ রাজাকারদের সাথে নিয়ে নির্বাচন করলে কি রাজাকাররা জায়েজ হয়ে যায়? রাজাকারের বিচার কি আওয়ামী লীগের দাবি, নাকি আপনার আমার মতো মানুষের দাবি? আওয়ামী লীগের গুষ্টি কিলাই, বেটারা সব বদমাইশ। এখন কন, রাজাকারদের বিচার বিএনপি করে নাই ক্যান? জেল থেকে তাদের ধরে ধরে বের করে এনে মন্ত্রী বানাইল ক্যান? খালেদা এখন নিজামীর চামড়া বাঁচাইতে পথেঘাটে কান্দেন ক্যান?

আর আপনার শেষ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, আমি মির্জা ফখরুলকে আপনার ভাষায় "আক্রমণ" করে আপনার, এস. এম. এ. হাবীবের মান বাঁচাতে চাই। যাতে কোনো শুয়োরের বাচ্চা ভবিষ্যতে এসে আপনাকে মুখের উপর বলতে না পারে, কীরে হাইব্যা, ক্যামন বাংলাদেশী তুই, একাত্তরে তোর বাপরে যে মারসে, মায়রে যে বেইজ্জত করসে, তার বিচার করতারলি না?

আশা করি আপনার প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারলাম হাবীব সাহেব। আরো প্রশ্ন থাকলে জানাবেন।

এস. এম. এ হাবীব এর ছবি

আমি কাউরে আক্রমণ করে বা কারো পক্ষে বলতাছি না হিমু ছাহেব।
একজন বর্গাচাষী জমিতে আলু চাছ করনের পূর্বে যদি কীটনাছক প্রয়োগ না কইরাই আলু চাছ করে, তয় আলুতে তো পোকার আক্রমণ হইবোই। আলু ছংক্রমিত হইবার পরে আর করণের কিচ্চু থাকে না। মুজিব তো কীট নাছক না ছিটায়া আলু চাছ করছে। ছংক্রমিত আলুর ছংক্রমণ জিয়া, এরছাদ আর ঐ হাছিনা কেমনে ঠেকাইবো। তাই তেনারা হক্কলে মিল্যা পোকার লগে আতাত কইরা যতটুকু পায় ছংক্রমিত আলু তুলতাছে আর খাইতাসে। আফটার অল আমরাই তো তাগো বারে বারে হালায় পালা কইরা ক্ষমতায় বছাইতাসি।

একখান কতা মনে রাখবেন হিম-উয়া ছাহেব। যা হয় না বিয়ের রাইতে, তা হয়না আশ্বিণ-কাইতে (কার্তিকে)।
এক মুজিবের (জাতির পিতা (!)) একটুখানি ভুলের মাশুল গোটা জাতিকে দিতে হচ্ছে আজ, দিতে হবে আরো অনেক অনেক দিন।

হিমু এর ছবি

তো ভাই, আপনি কি পোকার সাপোর্টার না আলুর সাপোর্টার?

বিয়ের রাইতে আপনার শোচনীয় ব্যর্থতার কথা জেনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। পৌষ মাসে আশা করি আপনি যা হয়নি তা ঘটিয়ে ফেলবেন। আর ইন দ্য মিন টাইম চলেন রাজাকারদের বিচারের জন্য জোরসে নারা লাগাই। মাশুল উশুল করে ছাড়ি। দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা, শুধিতে হইবে ঋণ।

স্বপ্ন-হীন এর ছবি

(জাতির পিতা (!))

জাতির পিতা'র শেষে বিস্ময় বোধক চিহ্ন দিয়ে আপনি কি বুঝাতে চাইলেন।

আমি কাউরে আক্রমণ করে বা কারো পক্ষে বলতাছি না

হ, বুঝবার পারছি, আপনি কারো পক্ষে কইতে আইহেন নাইগ্যা, তয় বিপক্ষে যে কইবার পারেন এইডা বুঝবার পারছি-গা।

যা হয় না বিয়ের রাইতে, তা হয়না আশ্বিণ-কাইতে

লাইনডা দিয়ে আফনে কি বুঝাইতে চাইলেন ! একটু বুঝাইয়া জান। লেঞ্জা কি বাইর হইতাছে নাকি!!

আফনেরে শুধাই, রাজাকারের বিচার এ দেশের মাটিতেই হবে, এবং সেটা মির্জা সাহেবের তরুণরাই করবে, আশ্বিন-কাইত-পোষ-ফাগুন এর কোনো বালাই নাই।

রু (অতিথি) এর ছবি

একজন বর্গাচাষী জমিতে আলু চাছ করনের পূর্বে যদি কীটনাছক প্রয়োগ না কইরাই আলু চাছ করে, তয় আলুতে তো পোকার আক্রমণ হইবোই। আলু ছংক্রমিত হইবার পরে আর করণের কিচ্চু থাকে না। মুজিব তো কীট নাছক না ছিটায়া আলু চাছ করছে। ছংক্রমিত আলুর ছংক্রমণ জিয়া, এরছাদ আর ঐ হাছিনা কেমনে ঠেকাইবো।

হাবীব সাহেব একটু আগ বাড়ায়ে কথা বলছি কিছু মনে করবেন না। আপনার উক্তিটি খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হোল। আপনার কথার সুত্র ধরেই বলি, আসুন অতীত না ভুলে বরং অতীত থেকে শিক্ষা নেই। এখনো সময় আছে, সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কীটগুলোকে আগে শেষ করি। এই কীট যতদিন থাকবে আমরা শান্তিতে কোন কিছুই চাষ করতে পারবো না।

তানজিম এর ছবি

ভাই সাহেব পিতার পরে (!) দিলেন মানেটা কি?...পিতা বলে কিছু থাকতে পারে এটা নিয়ে আপনার এতো সন্দেহ কেন?...খারাপ কথা নাই বা কইলাম...পার্থেনোকার্পিক ফল চিনেন?...ইহাদের পিতার প্রয়োজন নাই...আপনি সেই গোত্রের হতে পারেন...কিন্তু এর মধ্যে পুরা জাতিকে না টানাই ভালো।

মুজিব পারে নাই মানলাম...তা আর কে মুজিবের থেকে বেশি কিছু করে গেছে জানাবেন। দরকার হলে তাকে না হয় জাতির দাদা উপাধিই দেব!!!

কল্যাণF এর ছবি

হাবিব সাহেব, নিজের চউক্ষে সব দেইখাও আপনার যে মন-মানসিকতা তাতে আপনার অবস্থা খুব ভালা বুঝা যাইতাছে। ৪০ বছরে আপনের মত লোকেরা শিখতে পারে নাই বইলা আপনার কিই ধারনা হইছে আমরা শিখতেছি না? হ, জাতির পিতা ভুল করছিল, তা তিনি যখন ভুল করছিলেন তখন আপনি কি কামাইতেছিলেন? একজন ভুল করছিল বইলা আপনারা ৪০ বছর ধইরা ভুলের পরে ভুল, আরো বড় বড় ভুল কইরা যাওয়ার লাইসেন্স লইছেন? এত বছরে আপনারা এত কিছু ফালাইছেন যে আমরা সব ঢাকা পইড়া যাইতাছি আপনাগো পাকা পাকা ওই নোংরার তলায়। আপনার এই 'কীটনাছক' আপনার আটিবদ্ধ রোমরাজীর কীট দূর করতে কাজে লাগান। আপনি একখান কতা মনে রাখবেন এস এম এ হাবিব ছায়েব, বিয়ার রাইতে আপনি দাড়া করাইতে পারেন নাই বইলা সেই ক্ষোভ আমাগো উপরে ঝাড়বেননা। প্রতিবাদ চলতেছে, চলতে থাকবো। বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী ও জামাতী পুটকি মাইরা খাল কইরা ওই বাঞ্চতদের এক্কেরে সারা জীবনের জন্য ঠান্ডা না করা পর্যন্ত চলবো। নো কম্প্রোমাইজ। ফুল স্টপ। আর বৃহৎ-প্রাচীন-জ্ঞানী ভাই (নাকি চাচা কমু?), মাঝে মাঝে আইসা এইরাম পুলাপানের পুন্দানি খায়া যাইয়েন।

gogo  এর ছবি

আফসুস......" খান এ সবুর " ( রাজাকার এর রাজা ) এর বিচার এ দেশের মাটিতে মির্জা সাহেবের তরুণরা আর করতে পারব না......।। কারন হেইডা করতে অইলে ...... জাতির পিতা মুজিবের বিচার করন লাগব আগে...... হ্যারে মাফ করার দুষে ।
কিন্তু আফসুস ...........................

দিগন্ত বাহার * এর ছবি

ছাগুরাম সুলভ

অরফিয়াস এর ছবি

এহ হে , কি জালা, আলু খেতের দুই চাইরটা কীট দেখি এদিকেও ঘোরা ফেরা করা শুরু করছে ... কি জালাতন ... রেগে টং

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

পাঠক এর ছবি

াআচ্ছা, এই ব্লগটিতে মতের উলটো হলেই এমন গালিগালাজ করে কেন সবাই? এতো রেগে আছে কেন সবাই এখানে???

হিমু এর ছবি

মতের উলটো মতটা জামাতি মত হলেই সবাই একেবারে ধুয়ে দেয়। এখানে জামাতিদের কেউ ভালোবাসে না রে ভাইডি।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আর্টিকেলের প্রতিক্রিয়া এর চেয়ে যুক্তিসঙ্গত, মোক্ষম এবং চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব না। তিনি যখন তাঁর 'প্রিয় তরুণ প্রজন্মে'র টানে অনলাইন পর্যন্ত আসতে পেরেছেন নিজের লেখা নিয়ে, আশা করছি এই লেখাটিও তাঁর নজরে আসবে।

তিনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন তাঁর অযৌক্তিক এবং অথর্ব লেখাটি তাঁর 'প্রিয় তরুণ প্রজন্ম'র মধ্যে কেবল তাঁর স্ববিরোধী পরিচয়টাই স্পষ্ট করে তুলতে পেরেছে, অন্য কিছু নয়। এবং তিনি এটাও নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে সমর্থ হবেন, তাঁর 'প্রিয় তরুণ প্রজন্ম'র সবাই তাঁর মতো রাজনীতিবিদেরা যা গেলানোর চেষ্টা করবেন সেটাই গিলে ফেলবে না বিনা বাক্যব্যয়ে!

তিনি সমঝদার মানুষ। হরতালের সমর্থনে রাস্তায় নামতে না পেরে তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করার দায়ে সরকারের পিণ্ডি চটকান পল্টনে দাঁড়িয়ে। অথচ তিনি যে হরতালের ডাক দিয়েছেন সেটা না মানার 'গণতান্ত্রিক অধিকার' যে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিকের আছে, এটা হয়তো তাঁর সমঝে আসে না। তিনি পল্টনে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে ঈশা খাঁ'তে গিয়ে হয়তো মুর্গাফ্রাই খেতে পারেন, তাঁর সেই সামর্থ্য আছে। কিন্তু তাঁর মতো চাঁদকপাল নিয়ে তো বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ ধরাধামে আসেনি। এই মানুষগুলোকে নিজের শ্রম বেচেই তবে খাবার কিনতে হয়। এইটা কি মির্জা ফখরুল ইসলামরা বুঝেন?

তিনি হয়তো এটাও বুঝবেন যে তাঁর মতো নীতিহীন, গলাসর্বস্ব রাজনীতিবিদরা তরুণ প্রজন্মের কাছে হিউম্যান ওয়াস্টের দুইটা দিক কেবল।

নেত্রীর যত্রতত্র ঘোষণা দেওয়া 'ফাইনাল খেলা'র তাৎপর্য বর্ণনা করা থেকে বেরিয়ে আসবেন তিনি, শুয়োরের বাচ্চা রাজাকারদের চামরা বাঁচানোর টেন্ডার নেয়া থেকে বিরত থাকবেন তিনি এবং তাঁর দল— এমনটাই তাঁর কাছে প্রত্যাশা করি তরুণ প্রজন্মের একজন হিসেবে। নয়তো, এই লেখার শেষ লাইনে যেমনটা বলা হয়েছে, আপনাদেরকে ছাড়াই বাংলাদেশের সকাল হবে জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কল্যাণF এর ছবি

চলুক

পাঠক এর ছবি

ধন্নবাদ হিমু ভাই এদের মুখশ খুলে দেয়ার জন্ন । গুরু গুরু

সাফি এর ছবি

শ্বশুর আব্বার জন্য জামাই বাবাজী লিখে দেয়নিতো?

চিলতে রোদ এর ছবি

... মির্জা সাহেবকে এই পোস্টটা পড়ানোর উপায় কি...? সেকি 'সচল' পড়ে...? কোন জামাতি ব্লগ সাইটে এই পোস্টটা প্রকাশ করা দরকার। মির্জার নজরে পড়বো তাহলে... ওঁয়া ওঁয়া চিন্তিত

পাঠক এর ছবি

হিমুঃ অসাধারন হয়েছে আপনার লেখা। স্ববিরোধীতা, অসত্য, বাংলা-ইংরেজীর হাস্যকর মিশেল, মুক্তিযুদ্ধকে ভুলে যাবার তাগিদ আর শেষ পর্যন্ত জামাতকে বাঁচানোর তাড়নায় পূর্ন একটি লেখার বিপরীতে আপনার এই যুক্তিসঙ্গত, মোক্ষম জবাবের লেখাটা থাকলো আমাদের হাতে, নতুন প্রজন্মের হাতে ! আপনার এই লেখা আর অন্য অনেকের মন্তব্য থেকে আশা করি ওনারা সামান্য হলেও বুঝতে পারবেন, প্রোপাগান্ডা লিখে দিন চালিয়ে যাবার দিন শেষ...!

উনি 'অতীত' (আসলে মুক্তিযুদ্ধ) ভুলে যাবার পরামর্শ দিচ্ছেন আর নিজের লেখাটা ব্যক্তিগত 'অতীত' দিয়ে ভরা। এমনকি দুই কন্যাকে দূরে রেখে গ্রামে গিয়ে রাজনীতি করেছেন সেই তথ্যটুকু পর্যন্ত দিতে ভোলেননি। ওনার কাছে বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ প্রজন্মের একজন হয়ে আমার জিজ্ঞাসা, কেমন মুক্তিযোদ্ধা উনি, যিনি মুক্তিযুদ্ধ ভুলে যাবার পরামর্শ দেন? কেমন মুক্তিযোদ্ধা উনি যে, জামাতের সাথে হাতে হাত মেলাতে দ্বিধা করেননা? কেমন মুক্তিযোদ্ধা উনি যে, পাকিস্তান সময়ের সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের তুলনা করতে বলেন? মির্জা সাহেব, ছেলেভোলানো লেবেঞ্চুসের দিন আর নেই। আমরা বুঝি। বাংলাদেশের তরুণ বলেন আর বয়স্ক বলেন বোঝে সবাই। আমরা এও বুঝি যে, এই তুলনা করার মধ্যে দিয়ে আপনি কাদের দিকে গেলেন। কোন দেশের স্বপ্ন আপনার মানসপটে, আর কেমনতরো মুক্তিযোদ্ধা আপনারা ছিলেন ! আপনার নেত্রীর সাত খন্ড কেন, সাড়ে সাতশ খন্ডের রামায়ন লিখলেও আমরা জানবো যে, 'কাণ্ডজ্ঞান' 'সুবিধাবাদ' নাকি রাজাকারের পোষাকপড়ে রাজাকার হয়ে আপনারা জামাতকে সঙ্গে নেন।

সাফিঃ সে আর বলতে...! হেহে ! শব্দচয়ন আর বাক্যের গঠন দেখলে বোঝা যায় !

ধ্রুবনীল এর ছবি

চলুক বরাবরের মতোই অসাধারণ হয়েছে। অসৎ উদ্দেশ্যে লেখা স্ববিরোধীতাপূর্ন লেখার একটি যুক্তিসঙ্গত জবাব দিয়েছেন। যদিও ছাগুরাম সুলভ দের তাথে কিছুই আসবে যাবেনা, কারণ তারা হয় আসলেই সব যুক্তির উধেব আর নাহয় জ্ঞানপাপী। তারপরও এসব ভণ্ডামি লেখার প্রতিবাদ দরকার। ফেবুতে একজনের মির্জা সাহেবের পোস্টের লিঙ্কের জবাঁবে আপনার এই পোস্ট শেয়ার করলাম।

যতটুকু জানি 'মির্জা' সাহেবের পরিবার পাকিস্থান সমর্থক ছিলেন। আর এখন তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত ভাঁড়। এদের মূল উদ্দেশ্য ইনিয়ে বিনিয়ে নাকি কান্না কেঁদে, ভারত বিরূধীতা আর ধর্মের কাঁধে ভর করে যেকোনভাবে ক্ষমতায় যাওয়া। এইসব সুপ্ত পাকিস্তান প্রেমীদের জন্য শেখ মুজীবের "ক্ষমা ঘোষণা" আর ৭২-৭৫ এর "দুঃসহ শাসন" বাংলাদেশের সব নষ্টের মূল। আর তাই তারা এখন আমাদের "অতীত ভুলে" সামনে আগানোর সবক দেন যাতে শেষ পর্যন্ত জামাতকে বাঁচানো যায়। ধিক্কার এইসব ভণ্ডামিকে।

বাংলাদেশের অনেক কষ্ট, গভীর রাতে কান পেতে তার কান্নার শব্দ শুনুন। আপনারা না জাগলেও সকাল হবে, আপনাদের ছাড়াই।

অসংখ্য ধন্যবাদ।

আয়নামতি1 এর ছবি

চলুক উত্তম জাঝা!

পাঠক এর ছবি

কাজি মামুন, ভাই আপনার লিঙ্কগুলো দেখা যাচ্ছেনা। আরেকবার একটু চেষ্টা করে পাঠাবেন। ভীষন মুখিয়ে আছি দেখার জন্য ।

কল্যাণF এর ছবি

কাজি মামুন ভাই এর লিঙ্কে মুল লিঙ্কের আগে সচলের এড্রেস যুক্ত হয়ে ইরর পেজ দেখা যাচ্ছিল, আমি মামুন ভাই এর প্রদত্ত লিঙ্ক থেকে নিচের এই দুইটা উদ্ধার করছিঃ

http://amarblog.com/habib/posts/135661
http://banglanews24.com/opinion/?p=47

কাজি মামুন এর ছবি

স্যরি ভাইয়া। মির্জা ফখরুল ইসলাম ও তার পিতা 'চোখা মিয়া' মিয়াকে নিয়ে সামান্য গুগল করুন; লিঙ্ক পেয়ে যাবেন।

পাঠক এর ছবি

যথারীতি, চরিত্র হনন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মির্জা আলমগিরের বাবা কখনই রাজাকার ছিলেন না। ঠাকুরগাঁ এর যেকোনো সৎ মুক্তিযোদ্ধাকে জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে চোখা মিয়া কি ভীষণ সৎ এবং ভালো মানুষ ছিলেন। মির্জা আলমগিরের ৬০ এর দশক এবং ১৯৭১ এ ভুমিকা কাউকে নয়, বরং অনার ফুপা, বিখ্যাত "এ।কে। খন্দকার হুসেন কে " জিজ্ঞেস করলেই জানবেন। মির্জা আলমগির তার সারা জীবন সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের কাজ করেছেন। একজনের লেখার প্রতিবাদ করতে গিয়ে দয়া করে মিথ্যাচার করেন না। সচলায়তনের কাছে প্রত্যাশা , মজাম্মেল বাবুর মতো মন্তব্য গুলো মোডারেট করুন। ধন্যবাদ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মির্জা শফিক ফখরুল রেহমান আলমগীরের লেখাটা পড়লাম। ইদানিং এই জুটিকে টিভি খবরে একসাথে নানা মিটিংয়ে দেখা যায়।

রেহমান অবশ্য তাঁর নেড়িকুকুর-কলামে আগেই মির্জাকে পেট্রোলিয়ামে স্নান করিয়েছেন এমন সব বিশেষণে- "...প্রাক্তন শিক্ষক ও সাবেক মন্ত্রী, সুদর্শন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর...। ... মির্জা ফখরুলের পড়াশোনায় আসক্তি এবং মদ্যপানে অনাসক্তি প্রথম থেকেই একটি দৃঢ় অবস্থানে তাকে নিয়ে গিয়েছে।"

এখন আবার তরুণদের দুয়ারে হাত পাতায় মনে পড়ে গেল, খুঁদকুটার লোভে ২০০১ সালে লেখা রেহমানের ঐতিহাসিক লেখাটিঃ "এক কোটি তরুণ ভোটারের কাছে একটি আবেদন"... lol

হিমু এর ছবি

রসিক রেহমানই কি তবে নেতাদের পপি গাইড? ওনাকে কি আমরা পপিক রেহমান ডাকতে পারি তাহলে?

ফেরদউস হাসান  এর ছবি

এই লেখাটার লিঙ্ক দিয়েছিলাম বিডিনিউজ এ ...নিজ মতামত সহ...কিন্তু ছাপেনাই ...
মির্জা সাহেব কে বলতে চাই বর্তমান তরুন প্রজন্ম হতাশ হতে পারে,ক্রোধে উন্মত্ত হতে পারে ...কিন্তু খেই হারিয়ে ফেলেনি...আপনার মত মতলববাজ নেতারা তরুন প্রজন্মের মাথায় হাতবুলিয়ে,দুইচারটা নাকি কান্না কেঁদে কি ফায়দা লুটতে চান-তা তারা বুঝে !দয়া করে মিশরের দিকে তাকান...লিবিয়ার দিকে তাকান...তাহলেই বুঝতে পারবেন ক্ষোভ আর হতাশার মধ্যেও তরুন প্রজন্ম তার সঠিক পথটা খুঁজে নিতে পারে...ক্রোধকে রুপান্তর করতে পারে মুক্তির বিক্ষোভে !
আমরা মুগ্ধ আপনার চমৎকার ভোট ভিক্ষার কৌশল দেখে !
মূর্খের দলে আপনিই প্রথম শিক্ষিত যিনি অপকৌশল প্রয়োগে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করেছেন...খুব শিগ্রি দেখতে পাবেন আপনাদের এইসব কৌশল বুমেরাং হয়ে আপনাদের উপরেই পড়ছে...যেমন হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ...!
খুব বেশি দেরি নাই তরুন প্রজন্ম. আপনাদের মত বাতিলদেরকে ছুড়ে ফেলে দিবে আস্তাকুড়ে ...।
আপনাকে তবুও ধন্যবাদ ...যাই করুন না কেন প্রযুক্তির সান্নিধ্যে তো আছেন...মনে ক্ষীণ আশা একদিন হয়ত বুঝতে পারবেন মুক্তমনা হওয়া কতটা জরুরি...কতোটা জরুরি সৎ হওয়া !হিমুর মত লাখ লাখ তরুনের মনের ভাবনা আপনারা পড়তে পারবেন খুব সহজেই ...তরুন প্রজন্ম কতখানি বিরক্ত আপনাদের উপর সেটা কিছু তরুনের ফেস বুক প্রোফাইল দেখলেই বুঝতে পারবেন...৯০% বাংলাদেশী তরুনের পলিটিকাল ভিউ নেতিবাচক...
এখনও সময় আছে...আপনারা, রাজনীতিবিদরা সতর্ক হন...নাহলে বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবেন!
অতীত কে অবজ্ঞা করে কতদুর উড়তে চান ? পাখিরও লেজের প্রয়োজন ঠিক পথে উড়বার জন্য...ডানায় তার যতোই জোর থাক।
ভাল থাকবেন !

শাকিল এর ছবি

সহমত ।
আর হিমু সাহেব কে ধন্যবাদ যুতসই প্রতিবাদ করার জন্য।

সাজ্জাদ সাজিদ এর ছবি

ভালো লাগলো।

সাজ্জাদ সাজিদ এর ছবি

ভালো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।