পেঁচার ডাক শুনতে যাবার ব্যাপারটি নিঃসন্দেহে অভিনব, ভিন্ন, শিহরণ জাগানিয়া। আসলে প্রকৃতির নির্জনতাকে ছোঁয়ার, নিবিড় ঘন অরণ্যের মাঝে আধো আলো আধো আঁধারে আমাদের এই সুন্দর গ্রহটাকে, এর জীবজগতকে একটু ভিন্ন ভাবে উপলব্ধি করার প্রয়াস মাত্র।
এই সাদা জমাট বরফ ছাওয়া ভূখণ্ড আমার অতি আপন, চির চেনা। চারিদিকের মাথা উঁচু করে দিগন্ত পর্যন্ত মিছিল করে যাওয়া এই বার্চ, পাইন, স্প্রুসের সারি সুদূর সাইবেরিয়ার অন্য প্রান্ত থেকে শুরু হওয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় বনভূমি তাইগার সম্প্রসারিত অংশমাত্র।
যেদিকেই নজর যায় একমাথা বরফ নিয়ে প্রকৃতির সমস্ত রুদ্র রূপ অগ্রাহ্য করে দাড়িয়ে থাকা তুন্দ্রা অঞ্চলের এই লম্বা অতন্দ্র প্রহরী গাছগুলো এক অমোঘ আকর্ষণে আমায় ডাকতে থাকে, বলে- এই বোকা ছেলে, দাড়িয়ে ড্যাব ড্যাব করে একপলকে তাকিয়ে না থেকে এসে পড় আমার রহস্যের সুলুক সন্ধানে, প্রবেশ কর গহনে, ঘরকুনো না হয়ে খুঁজে নেও রোমাঞ্চের নতুন উপাত্ত, ছুঁয়ে ছেনে দেখ সত্যিকারের বুনো স্বাধীন জীবনকে, ফুসফুস ভরে নেও খাঁটি অক্সিজেন ভর্তি বনজ ঝাঁঝালো বাতাসে, মুখ ফুটে সব ভুলে আপন মনে আত্নহারা হয়ে গাইতে থাক- কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা।
বনের মাঝে চলতে চলতেই হঠাৎ হঠাৎ প্রেইরীর বিস্তীর্ণ সমতলের হারিয়ে যাওয়া অংশ যেন আমাদের সামনে হাজির হয়, ঘন মেঘমালার আড়াল থেকে চুইয়ে চুইয়ে আসা চাঁদের আবছা মোলায়েম আলোয় সেই কয়েক একর বরফ আচ্ছাদিত সমতলকেই আমাদের তেপান্তরের মাঠের মত দিক-কাল-সীমানা শূন্য মনে হয়। মন্ত্রমুগ্ধের মত দস্তয়েভস্কির নিশিতে পাওয়া মানুষের ন্যায় কয়েক পা ইতস্তত হেঁটে দাড়িয়ে পড়ি সবাই আলভোলে। এর মাঝে পাখি বিশেষজ্ঞ তিমো ইম্মোনেন তার টেপ রেকর্ডারে হুতুম পেঁচার ডাক চালিয়ে দেয়, কয়েক বার। নিস্তব্ধ আদিগন্ত বিস্তৃত জবুথুবু বনভূমির কোন নিশাচর জীবই আমাদের এই কৃত্রিম আহ্বানে সাড়া দেয় না, বার কয়েক চেষ্টার পর বিফল মনোরথে আমরা যখন গাড়ির দিকে ফিরছি, ঠিক তখন-ই এই জমাট নিস্তব্ধতাকে কাঁচের মত ভেঙ্গে এক নিঃসঙ্গ পুরুষ হুতুম পেঁচা তার সশব্দ উপস্থিতি জানান দেয়, তার সেই ভৌতিক অশরীরী কুহকময় ডাক নির্জন প্রকৃতিকে নির্জনতর করে দেয় এক নিমিষে। বিরল এই পেঁচার সন্ধান পেয়ে আমাদের সকলের মুখ তৃপ্তির হাসিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে, আরও ডাক শোনার আশায় সেই নিকষ কালো আঁধার বনের দিকে কান পেতে থাকি, যেখান থেকে খানিক আগেই তার ডাক শোনা গেছে, হয়ত সঙ্গিনীও আছে আশে-পাশে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা! কিন্তু সকলের সম্মিলিত আশায় গুড়ে বালি দিয়ে সে উড়ে গেল অন্য কোথাও, পিছু পড়ে রইল নিস্তব্ধ বিজন বন।
বেজায় ধরনের ঠাণ্ডা পড়েছে, কয়েক প্রস্থ শীতের কাপড়েও ঠেকানো যাচ্ছে না, বিশেষ করে হাত আর পায়ের আঙ্গুলগুলো প্রায়শই বিদ্রোহের আভাস দিচ্ছে, এর মাঝে ঝাঁকড়া ধরনের কিছু গাছের পাশে থামা হল, স্থানীয় পাখিবিশারদ মারকুস মিয়েত্তিনেন পাকা খবর দিল উরাল পেঁচার উপস্থিতির। তিমো ইম্মোনেন আবার চালিয়ে দিল তার টেপরেকর্ডার থেকে উরাল পেঁচার ডাক। খানিকটা উৎসুক্য থেকেই জানতে চাইলাম আমাদের এই রেকর্ড বাজানোর কার্যকারণ, উত্তরে জানা গেল আমরা বাজাচ্ছি পুরুষ উরাল পেঁচার ডাক, কাজেই এলাকার উরাল পেঁচাটি যদি নারী হয় তাহলে হয়ত সে নিশ্চিত ভাবেই এই আহ্বানে সাড়া দেবে, আর যদি পুরুষ হয় তাহলে নিমিষের মাঝেই যুদ্ধংদেহী অবস্থায় আবির্ভূত হবে আপন এলাকায় অনাহুত আগন্তকের উৎপাত এড়ানোর জন্য। সেই সাথে যদি তারা জুটি বাঁধা থাকে তাহলে দুইজনেই ধেয়ে আসবে আক্রমণের জন্য! তবে, সব সময়ই যে এই পদ্ধতি কাজ করে তা নয়, পেঁচাটি যদি নিজের এলাকা থেকে অনেক দূরে শিকাররত অবস্থায় থাকে তাহলে আবার কেঁচেগণ্ডূষ! সবার হিমশীতল অপেক্ষার রেশ টেনে অবশেষে শোনা গেল নারী উরাল পেঁচার ডাক, ক্ষণে ক্ষণে কয়েকবার!
সেই আনন্দেই কফি পানের বিরতিতে চললাম সদলবলে, কে না জানে জাতিগত ভাবে কফি পানে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে ফিনিশ জাতিই, গড়ে প্রতিদিন নয় কাপ আগুন গরম কফি তাদের চাই-ই চাই। এই হিম প্রকৃতির মাঝে কোনমতে ফ্লাস্কের কাপে উত্তপ্ত তরল গলাধ:করণ যেন জীবন রক্ষারই অপর নাম, সেই সাথে আছে জমে যাওয়া আঙ্গুলগুলোকে কাপের উত্তাপের মাধ্যমে খানিকটা সুস্থির করার ব্যাপার, অনেকটা পুরাণকথার মৃতসঞ্জীবনী সুধার মত।
পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় আর কয়েক প্রজাতির ডাক শোনা গেল এই পন্থায়, কিন্তু সে যাত্রার সবচেয়ে বড় পুরষ্কারটি আমরা পেলাম ফেরার পথে, ঝলমলে চাঁদ আর মৃদু সোডিয়ামের আলোর সমন্বয়ে দেখতে পেলাম শিকাররত এক বিশাল নারী হুতুম পেঁচা (Bubo bubo), যার বংশীয়রা বাস করে সুদূর বাংলাদেশে। এক চিলতে মাঠের উপরে বার কয়েক চক্কর দিল বরফের মাঝে লুকিয়ে থাকা ইঁদুরের আশায়, এর পরপরই হারিয়ে গেল সেই গাঢ় হিমে, আমাদের জন্য একরাশ মুগ্ধতা রেখে।
(বন্ধুরা, এই অভিজ্ঞতাটি কয়েক বছর আগে মধ্য ফিনল্যান্ডের বন ভ্রমণের স্মৃতি নিয়ে লেখা, ছবিগুলো এমন অন্যান্য প্রকৃতি ভ্রমণ থেকে নেওয়া, যেগুলোতে পেঁচাদের খানিকক্ষণের জন্য আটকে তাদের আকার, ওজন পরিমাপসহ নানা মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কদিন আগে একজন বলল এত কিছু থাকতে পেঁচা নিয়ে এত মাতামাতি কেন! তাকে মিনিট দুয়েকের মাঝে কিছু হিসেব করতে বললাম ক্যালকুলেটরে, একটা পেঁচা প্রতিদিন কমপক্ষে একটি ইঁদুর খায়, বাংলাদেশের এই আগুনমূল্যের বাজারে একটি ইঁদুর কমপক্ষে ১০,০০০ টাকার শস্য ধ্বংস করে থাকে, তাহলে প্রতিবছর একটি পেঁচা ১০,০০০ x ৩৬৫ টাকা রক্ষা করে! আর পেঁচাটি যদি কমপক্ষে ১০ বছর বাঁচে তাহলে কত টাকা রক্ষা করে! সেই জ্ঞানবান ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেছিলাম তাহলে সত্য করে বলুন কে দেশের বেশী উপকারে আসে, একটি পেঁচা না আপনি, আমি! )
মন্তব্য
পাখিটার সাথে আপনের চেহারার মিল আছে ...
পেঁচার মত সুন্দর পাখি আর দুইটা আছে নাকি ! আফসোস, ওদের মত ঘাড়টা ২৭০ ডিগ্রী ঘুরাতে পারি না!
facebook
অনু'দা, ঠাট্টা করে বল্লেও কিন্তু কথা আসলেই সত্য। আমার পুঁচিটাকে দেখলে সবাই এক বাক্যেই বলতো,
পেঁচা এতো সুন্দর হয় নাকি?!'
আজ সকাল থেকেই মনটা খুব খুব খারাপ। আজকে সকালে আমার সর্বশেষ পোষ্য 'ময়নাটা' মারা গেল। একটা ডায়রিতে আমি আমার খুব অদরকারি অথচ অনেক বেশি আবেগি কিছু তথ্য লিখে রাখি। আজকেও লিখতে ডায়রিটা খুলেছিলাম। নেড়ে চেড়ে পুরোনো লেখা পড়তে গিয়ে ধাক্কা মতন খেলাম। কী অদ্ভুত!! আজকে আমার পুঁচিটারও মৃত্যুদিন। ৬ বছরে আমি তারিখটাও ভুলে গেছি! এমনি করে ময়নাটার কথাও ভুলে যাবো একদিন।
আপনার এতো সুন্দর একটা পোস্টে এই অপ্রয়োজনীয় কথাগুলো কেন যে বললাম জানিনা। হয়তো আপনার পেঁচা নিয়ে লেখা দেখেই...
একটা অনুরোধ করি? খাঁচায় আর কোন পাখি আটকে রেখেন না।
রু, বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা তবে এই পুরো জীবনে আমার মোট পেট সংখ্যা ২৭। তার এক্টাকেও আমি পয়সা দিয়ে কিনিনি। প্রথম টিয়ার বাচ্চাটা ছিল ঝড়ে বাসা থেকে পড়ে আহত হওয়া। তাকে তুলে এনে শুশ্রুষা করে পেলে পুছে বড় করলাম আর ডানায় ভর দিতে শেখা মাত্রই উড়ে পালিয়ে গেল।
এরপর শিক্ষা হয় নাই। দুনিয়ার ঠ্যাং ভাঙ্গা পাখি আর মায়ে খেদানো নেড়ি কুকুর-বেড়ালগুলোকেই বুকে করে আদর দিয়ে পেলে পুছে কবরে শুইয়েছি। ডাক্তার ইঞ্জেকশন অষুধ সেবা' কিছুর অভাব রাখিনি। তাও...
পুচিকেও জখম অবস্থাতেই উদ্ধার করে এনেছিলেন কাপ্তাইয়ের জংগল থেকে। ওর তখন পাঁচ মাস বয়স কেবল। ডাক্তার দেখিয়ে সুস্থ্য করতে করতে কখন যে আমাদের কলিজার টুকরো হয়ে গেছে টের পাইনি। আর ও ছাড়াই থাক্তো। ওর ডানাও কখনো কাটা হয়নি। তাও উড়ে চলে যেতোনা। গুই সাপের সাথে ফাইট করে আহত হওয়ার পর জ্বরে পড়লো। ডাক্তার দেখানোর একদিন পরেই শেষ।
পেঁচাটা যেদিন মারা গেল আমার ঘরের মাতম শুনে আসগ পড়শি ছুটে এসেছিল ঘরের কেউ মারা গেছে ভেবে। পরে সামানু এক প্যাঁচা মরেছে শুনে মুখ ভেংচে ফিরে গিয়েছে।
ময়নাটাকে পেয়েছিলাম এক্কেবারে ডিম ফোটার পর পরই মনে হয়। অনেকটা দাদাগিরি করেই ওকে পাখি বেচাওয়ালার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলাম। ওর ডানা আর পা আহত ছিল ভীষন রকম। সেরে ওঠার পর অনেকবার ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু ও যায় নাই। জানিনা কি কারন। আর ময়নাটাও বেশির ভাগ সময় খাচার বাইরেই থাক্তো। নোংরা পাখি বলে ময়নাকে ঘরে ছেড়ে রাখা মুশকিল তাও ছাড়াই থাকতো।
হ্যা, আর নয়। এই শেষ। সাধ করে আর কষ্ট বাড়াতে চাইনা। কিন্তু কে জানে, কোন হতভাগা আবার না ডানা বা ঠ্যাং ভেঙ্গে আমার সাম্নেই এসে পড়ে। দোয়া করেন আর যেন কেউ না আসে এমন। আর পারছিনা।
খুব ভাল লাগল পাখিদের প্রতি আপনের এমন টানের কথা শুনে। গুছিয়ে লিখে ফেলুন না আস্তে আস্তে!
facebook
আপনার জবাবটা একটু দেরিতে পড়া হোল। আমি ক্ষমা চাচ্ছি হুট করে একটা ধারনার বশবর্তি হয়ে মন্তব্য করার জন্য। দুঃখিত, আমি দোয়া করছি আরও বেশি অতিথি যেন আপনার সেবা পায়। -রু
সব ঝুট হ্যায়। দূরের কোনো পেঁচাদর্শনার্থী জিপ থেকে পেঁচার ডাক চালিয়েছিল আর সেগুলোই আপনারা পেঁচার উত্তর ভেবেছেন। আর ছবিগুলো তো চিড়িয়াখানায় গিয়ে পেঁচা কোলে নিয়ে তোলা।
এত চেতলেন যে বড়! কিন্তু দাদা আপনের কথায় মানে মন্তব্যে কিন্তু আঙ্গুর ফল, আঙ্গুর ফল, টক টক গন্ধ যেন
facebook
টকটক থাকে নাকো হ'লে পরে বৃষ্টি-
তখন দেখেছি চেটে একেবারে মিষ্টি...
facebook
এত্ত cute পেঁচা জীবনেও দেখিনি!
পেঁচা পুষতে খায়েস হচ্ছে যে এখন! কি করি, কই যাই, পেঁচা কই পাই
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
এ কি কথা , দিল মেজাজটা চটিয়ে! হ্যারি পটার দেখার পর ভারতের কিছু এলাকার গ্রামের সব বাচ্চারা হ্যারি পটারের মত পেঁচা পুষতে চাওয়ায় সেখানে বনগুলো প্রায় পেঁচাশূন্য হয়ে গেছে!
কি দরকার পুষতে চাওয়ার! তার চেয়ে ওরা উচ্ছল ভাবে উড়ে বেড়াক বন থেকে বনান্তরে!
আরো কিউট পেঁচার ছবি আছে কিছু ফেসবুকে।
facebook
একটু ডিফারেণ্ট ধাঁচের তারেক অণু পোস্ট। মাঝে কিছু মিস হয়য়ে গেছে। পড়তে হবে। আর কোনো কারণে ছবিগুলো শো করতেসে না
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
এখন দেখতে পারছেন!
facebook
এইবারটা হিংসা ভুলে মন থেকে সালাম জানাই। খুব ভালো লেগেছে। পেঁচাগুলো এতো ভদ্রমানুষের মতো বসে আছে কেন? আপনি বা সেই জ্ঞানী ব্যক্তিটি কত টাকার চাল খায় জানতে পারলে হিসাব করা যাবে আপনারা কয়টা ইঁদুরের সমান।
বা রে, পেঁচারাতো ভদ্রই হয়, সমস্যা তো কেবল বজ্জাত মানুষদের নিয়ে !
কেন কেন, চাল খেতেই হবে এমন দিব্যি কে দিল, আর ইঁদুরেরা সব ধরনের শস্য নষ্ট করে, বেছে বেছে শুধুমাত্র চাল না !
ধন্যবাদ আপনের মন্তব্যের জন্য
facebook
'নিমপেঁচা তবু হাঁকে : ‘পাবে নাকো কোনোদিন, পাবে নাকো কোনোদিন,
পাবে নাকো কোনোদিন আর.....।'
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ইস, নিম পেঁচা শব্দটিই জেনেছিলাম জীবনানন্দ পড়ে, তার তো লক্ষী পেঁচা নিয়েও কবিতা আছে। এই প্রসঙ্গে পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক একবার বলেছিলেন= পেঁচা যে হামাগুড়ি দিয়ে মাঠে নামে তা এক জীবনানন্দ বাদে আর কোন কবি উল্লেখ করেন নি।
facebook
facebook
এতদিনে ( এতক্ষণে) অরিন্দম কহিলা.....। এইভাবে তাহলে চাঁদের ছবি-ব্লগের পোস্টাও দিয়ে দিন না।
মজা করলাম। ভাল লাগলো আপনার ব্যতিক্রমী পোস্টিও।
প্রৌঢ়ভাবনা
আসছে, আসছে। দুটো চমকে দেবার মত পোস্ট প্রস্তুত হচ্ছে, কিন্তু কবে আসবে বলতে পারি না /
আপনি ভালো আছেন তো ?
facebook
এমুন শান্ত সুবোধ নিরীহ পেঁচার ইজ্জৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা মোটেই ঠিক হয় নাই। বেচারারে নিয়া কি হুজ্জুতটাই না করা হইল, এইরাম কইরা অণুরেও আটকায়া আকার, ওজন মোজন সব পরিমাপ করার দাবী জানাই।
, এক দশক ধরে ওজন একই ধরে রাখছি দাদা, মস্করা কইরেন না !
facebook
তাই নাকি? তাইলে ওজনের চার্ট কই দেখি? দুনিয়ার নিরীহ পাখ-পাখালি, পশু-মশুদের সব ছবি তুইল্যা মুইল্যা একাকার করতেছ। দাড়াও পেত্যেক ছবি একটা কিছু শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হইব তুমার।
(অটঃ লেখা খুব ভাল হচ্ছে অণু, চলুক এইরকম )
নয় কাপ কফি... আমার জন্য...
হা হা, চলে আসেন দাদা কোন এক উইকএন্ডে! নয় কেন দশ কাপ হবে!
facebook
একবার সারারাত ব্যাপক পার্টি+মাস্তি করে সকালে গেছি পুরান ঢাকায়, চোখ ঢুলুঢুলু, মাইক্রো থেকে নামতেই দেখি এত্তোবড় বড় দুটো ভয়ঙ্কর চোখ আমার দিকে তাকায়ে আছে
নগদে স্থির হয়ে গেলাম... উফ, প্যাচার চোখ কী সাঙ্ঘাতিক রে ভাই!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বলেন কি ! কবেকার ঘটনা, কত বড় পেঁচা! খেয়াল থাকলে জানান, এইভাবে পেঁচা দেখতে পাওয়া তো মহা সৌভাগ্যের ব্যাপার , এরা যে হারে বিরল হয়ে যাচ্ছে!
facebook
চলেন পরের নির্বাচনে একটা পেঁচাকেই আমাদের দেশের নেতা বানাই। সেইসাথে একটা পেঁচা কেবিনেট। নির্ঘাৎ মানুষের চেয়ে অনেক ভাল পারফর্ম করবে। বিলিওন বিলিওন ডলার তছরুপ করার বদলে উলটে অনেক টাকা বাঁচাবে। তাছাড়া সব ইঁদুরগুলাকে তো অন্তত খেয়ে সাফ করবে!!
তা তো বটেই!
কিন্তু ইদুর সব বিনাশের দরকার নেয়, তাতে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে, মজার ব্যাপার যে বছর ইদুর বেশী বাচ্চা দেয়, সেই বছর পেঁচারাও বেশী বাচ্চা উৎপন্ন করে!
facebook
দারুন।
কই আপনি এখন!
facebook
খুব ই পছন্দের প্রাণী এই প্যাঁচা। একবার দেখতে গিয়েছিলাম ঘোর ঠাণ্ডার মধ্যে।
তারপর! দেখা পেলেন, কি হয়েছিল জানান আমাদের--
facebook
ভাল লাগলো।
facebook
পিচ্চি থাকতে পেঁচা দেখছি, মামাবাড়ির গ্রামে মনে হয়। আর প্রায় বোঁচা নাকের জন্য অবশ্য লোকজন আমারেও পেঁচা ডাকত। এই শীতের দেশে পেঁচা কী করে?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
শীতের মাঝে কি পেঁচার আর শীত করে! বিবর্তন তাকে সব ব্যবস্থা করে দিয়েছে এইখানেও টিকে থাকবার জন্য
facebook
এই লেখাটা আপনার অন্যলেখাগুলার চেয়ে আলাদা। লেখায় একটা নির্জনতার ছোঁয়া আছে। প্যাঁচা কাহিনি ভাল পাইলাম।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ধন্যবাদ। আসলে নির্জন স্থানে থাকি বলেই কিনা!
facebook
পেঁচা পাখিটা আসলেই কিউট। অন্য পাখির চেয়ে মুখের গড়ন আলাদা হওয়ায় মানুষ মনে হয় একে ভয় পায় (অমঙ্গলের প্রতীক মনে করে)।
পেঁচা কিন্তু অধিকাংশ জনপদেই জ্ঞানের প্রতীক, আমাদের দেশেও লক্ষী পেঁচাকে সৌভাগ্যদাত্রী হিসেবেই ধরা হয়। কিন্তু অন্যগুলোকে মানুষ খামোখা অপছন্দ করে, কারণগুলো খুজে বের করে উপড়ে ফেলা দরকার
facebook
কি হল !
facebook
ঝিমায়েছে এই পৃথিবী-
তবু পাই টের
কার যেন দুটি চোখে নাই এ ঘুমের
কোনো সাধ !
হলুদ পাতার ভিড়ে ব'সে,
শিশিরে পালোক ঘ'ষে ঘ'ষে,
পাখার ছায়ায় শাখা ঢেকে
ঘুম আর ঘুমন্তের ছবি দেখে দেখে
মেঠো চাঁদ আর মেঠো তারাদের সাথে
জাগে একা অঘ্রাণের রাতে
সেই পাখি---
আহা, খুবই খুবই প্রিয়।
facebook
ভিন্ন রূপ; ভিন্ন স্বাদ।
কাব্যিক রচনা শৈলী। ভালো লাগা অনেক।
অনেক অনেক ধন্যবাদ । ভাল লাগল--
facebook
মুখ ভার হলেই মা বলতেন-একদম প্যাঁচার মত লাগছে।
এই প্যাঁচার ছবিগুলো দেখে এখন থেকে ননস্টপ মুখ ব্যাজার
করে থাকতে ইচ্ছা হচ্ছে!
। আরেকটু অপেক্ষা করেন, সত্যিকারের সুদর্শন পেঁচার ছবি দিব
facebook
পেঁচা দেখলে জান ঠাণ্ডা হয়ে যায়। লেখায়
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
কেন, জান ঠাণ্ডা হয় কেন !
facebook
এই পর্ব পড়ে আসলেই মনে হলো ঘনাদা পড়ছি !!
আচ্ছা, ঘনুদা, দেশেবিদেশে ঘুরতে গিয়ে কোথাও কোন বিপদে পড়েন্নাই কখনো ?? বাক্সবন্দী ভ্যাম্পায়ার বা পুরাণ রাজবাড়ি- স্টাফ করা প্যাঁচার জ্যান্ত হয়ে যাওয়া ??
ঘনুদা
বিপদ তো আসেই, কখনো পাহাড়ের ঢাল বেয়ে বিছুটি ঝোপের মাঝে লুটোপুটি খায়, কখনো পানির নিচে অক্সিজেন শেষ হয়ে আসে, পর্বতে নামে তুষারধ্বস। কিন্তু যাত্রা চলছে, চলবেই--
facebook
পেঁচা এত সুন্দর হয় জানা ছিলোনা অণু ভাই। ছবিগুলা মারাত্তক হয়েছে।
কি যে সুন্দর হয় এরা, পরে মনে হচ্ছে এদের তোলা ছবি নিয়ে একটা পোস্ট দিয়ে ফেলি !
facebook
আমার এলাকায় পেঁচার ছড়াছড়ি। রাতে ওয়াশরুমে গিয়ে একবার জানালায় তাকিয়ে হার্টফেল করতে করতে বেঁচে গিয়েছিলাম। ড্যাব ড্যাব করে দেখি কে যেন তাকিয়ে আছে রক্তচক্ষে। ক্ষানিক বাদে বুঝলাম ও' প্যাঁচা। আর সন্ধ্যে হতে হতে অনেক সময় দেখি পাশের বাড়ির জানালার কার্নিশে দুই প্যাঁচার মারামারি।
পাখিকূলে আমার পছন্দের তালিকায় প্যাঁচার আসন এক নম্বরে।
সচলে ছবি কি করে দিতে হয় জানিনা। জানা থাকলে আমার অসম্ভব সুন্দর 'পুঁচি'টার ছবি দিতাম। লোকে গোমড়ামুখোকে প্যাঁচা যে কেন বলে আজো তা বুঝতে পারলামনা।
ওহ, অনু'দার হাতের লেখা খুউব সুন্দর। বেশ ঝরঝরে। যত লম্বাই হোক পড়তে আরাম লাগে।
আপনের পুচিকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে, না হলে ই-মেইলে পাঠান না, দেখি কোন প্রজাতির জ্ঞানী পাখি সেটি!আর এলাকায় কোন আলাদা পেঁচা দেখলেই ছবি তুলে আমাকে জানিয়েন, বিরল কিছু হলে আমি ঢাকার পাখি বন্ধুদের জানাব,
facebook
@ তারেক দাদা , আমি সচলে দিন দুয়েক হল আসা যাওয়া করছি । এর মধ্যে যে কয়েকটি লেখা পড়েছি তার মধ্যে আপনার লেখার সাবলীলতা ও বিষয়বস্তুর বৈচিত্র আমাকে মুগ্ধ করেছে । আপনাকে শুভেচ্ছা জানাই ।
@ বন্দনা কবীর , আপনার এই সুন্দর ঘটনাগুলি হৃদয় ছুঁয়ে গেল ... এই ধরণের অভ্যাস আছে আমার ম্যানেজার রাজীবকুমার এর । যেখানের যত মা মরা, আহত হওয়া বাসা হারিয়ে ফেলা পাখী । সব ঠিক কী করে জানিনা রাজীবের সামনে এসে পড়ে । একবার একটা বুলবুলির বাচ্চা কোথথেকে যেন কুড়িয়ে এনেছিল । একেবারেই বাচ্চা । সে তাকে নিজের হাতে করে খাইয়ে বড় করেছিল । বুলবুলি টা ছাড়াই থাকতো । সে ঊড়তেও শিখেছিল কিন্তু ঘর ছেড়ে কোথাও যেত না । খুব মিশুকে পাখী ছিল । তাকে খ্যাপালে তার মাথার ঝুঁটি টা খাড়া হয়ে যেত । তারপর একদিন একটা বেড়াল তাকে মেরে ফেলল । রাজীব তিন দিন খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে কেঁদেছিল মনে আছে । তার পর এল একটা বাচ্চা কাঠবেড়ালী, চিল না কিসে তাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাচ্ছিল তা হুট করে বোধহয় গ্রীপ মিস করে সেটা পড়বি তো পড় রাজীবের সামনে ... ঘাসের গাদায় পড়েছিল তাই লাগেনি । তো সেটাকে তুলে এনে খাইয়ে দাইয়ে এ্যাত্ত বড় করল । বছর ২ এক বেঁচেও ছিল তারপর মারা গেল । তার পর বুলবুলি, শালিক, কাগের ছানা সব এসে হাজির হয়েছে তার কাছে, তাদের গল্প লিখতে হলে একটা পুরো বই হয়ে যাবে ।
একবার রাজীব আমাকে এসে বলল তাদের পাড়ায় কিছু লোক নাকি একটা মা ভাম কে মেরে ফেলেছে । আর তার দুটো কচি কচি বাচ্চাকে নাকি নিঃসহায় অবস্থায় জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে এসেছে ।
শুনেই আমি দৌড়ে গেলাম । গিয়ে দেখি বাচ্চা দুটো লতা পাতায় জড়িয়ে গিয়ে বিষম চিৎকার করছে । আর একটু হলেই বোধ হয় দম আটকে অক্কা পেত । আমি তাড়াতাড়ি তাদের তুলে ঘরে আনলাম । তা ভাম কী খায় তা আমার জানা ছিল না । তা তাদের ক আমি তুলোর পলতে বানিয়ে দুধ খাওয়াতাম প্রথমদিকে । ভামের বাচ্চা যে এত কিউট হয় তা আগে জানতাম না ।
শুধু কিউট ই নয় । এরা ভীষণ আদুরে গলায় ডাকে । আর বাস্তবিক ই ভীষণ আদুরে হয় এরা । সারাদিন ই প্রায় ঘুমিয়ে কাটায় । শুধু ক্ষিদে পেলে আর রক্ষে নেই , চিৎকার শুরু করে দেবে । এদের মাটিতে রেখে দিলে খুব আপত্তি জানাত । তারপর খুঁজে খুঁজে আমার কোলে উঠে চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ত । আবার একটা জিনিস লক্ষ করেছি, একজন কে বসিয়ে রেখে অন্যজনকে খাওয়ালে বা আদর করলে অন্যটা বিষম খচে যেত । আর চিৎকার করে কাছে আসার চেষ্টা করত ।
আস্তে আস্তে এদের কে আম, পেঁপে, লিচু, কলা এই সব ফল খেতে শেখালাম, খেয়ে তাদের সেকী ফুর্তী, গোটা আমটার ওপর উঠে পড়ে সেটাকে দুহাতে ধরে তাদের খাওয়ার ধুম দেখে হাসির চোটে পেট ফেটে যাওয়ার যোগাড় । গোটা গায়ে মেখে একসা করত । তখন তাদেরকে ধুয়ে পরিস্কার করতে হত । আমার ভিজে যাতে ঠান্ডা না লাগে তার জন্য হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে শুকানো হত তাদের কে ।
ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছিলাম এদের কে । সম্ভবতঃ ওরাও আমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিল । কিন্তু আমি অত্যন্ত ব্যস্ত মানুষ । আমার শো নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে হয় । তাই ভাবলাম ওদেরকে বাড়িতে রাখা মানে পরে ওদের কষ্ট হবে । তাই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তাদের তুলে দিলাম শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই ।
এটাই স্বাভাবিক যে তারা হয়ত আমাকে ভুলে গিয়েছে, কিন্তু আমি এখনো মাঝে মাঝেই রাত্রিবেলা খচমচ আওয়াজ শুনলে ঘুম ভেঙে, তাদের যে কাঠের বাক্সটায় রেখেছিলাম সেটার কাছে হন্ত দন্ত হয়ে ছুটে যাই বেড়াল এসেছে কিনা দেখার জন্য । তারপর ই হঠাত মনে পড়ে যায় । নিজের ভুলটা বুঝে খুব একচোট হাসি, তার পর চোখের কোণ দুটো একটু মুছে নিয়ে আবার বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ি ।
- Devid Blackmist
মন ছুয়ে গেল আপনের খাঁটি আবেগে মোড়া লেখাটিতে।
আমি কোন সময়ই বাচ্চা ভাম প্রকৃতিতে দেখি নাই, কি আফসোস!
আপনি ভাই , এই ঘটনা নিয়েই একটা আলাদা পোষ্ট দিন না সময় করে, খুব ভাল হবে।
ইস কি ভাল লাগল সেই ছবিগুলো। আমাকে অণু বললেই হবে, শুভেচ্ছা
facebook
@Devid, আপনার ভামগুলো যে কী কিউট!!! আমি এই প্রথম ভামের ছবি-ই দেখলাম সত্যি দেখা তো দূর
এত্তো সুন্দর সুন্দর ছবি আর বর্ণনা দিয়ে ত আলাদা একটা পোস্টই দিয়ে ফেলতে পারতেন!! সে যাই হোক, অণু'ভাইটির পোস্ট উপলক্ষ্য করে ভামের ছবি দেখানোর জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সবসময় ।
আপনার সেরা লেখা, অণু ভাই
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ ফাহিম ভাই। প্রকৃতি নিয়ে লেখা আসছে সামনে ,একটু দেরি করে হলেও নিয়মিত লিখব পালকে মোড়া বন্ধুদের নিয়ে
facebook
ধন্যবাদ অনু দা ও বন্দনা ... আসলে আমি দিন কয়েক হল এই সচলায়তনে যোগদান করেছি ... সচল হইনি ... এখন শুধু একজন অতিথী ... এই অবস্থায় থেকে কী করে পোস্ট করতে হয় তা আমি জানিনা ...মানে এখন ত আমার কোন লগিং নেম বা পাসোয়ার্ড নেই ...
ভাবছিলুম আমার জীবনের সর্বপ্রথম অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে একটা লেখা দেব, কিন্তু কী করে পোস্ট করব সেটা জানা না থাকায়, দিতে পারছিনা ।
শুভেচ্ছা সহ
- Devid Blackmist
নীড়পাতায় সাহায্য নামে আলাদা জায়গা থাকার কথা। একবার পড়ে দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন, তখন জলবৎ তরলং হয়ে যাবে।
facebook
নতুন মন্তব্য করুন