অমুক ভাইয়ের চামড়া; তুলে নেবো আমরা... কাউয়ার গলায় মুক্তার হার; মানি না- মানব না...
অমুক ভাই যখন মোটরবাইকের পেছনে তমুক আপাকে নিয়ে চক্কর দিতেন তখন নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে আমরা স্লোগান দিতাম। কথাকলিতে বড়োভাইদের মধ্যে সত্যি হ্যান্ডসাম আর আর্টিফিশিয়াল হ্যান্ডসাম কোনোটারই অভাব ছিল না। কিন্তু অমুক ভাই এক্কেবারে ফুলফোটা সর্ষেক্ষেতে কাকতাড়–য়ার মতো; হাফ-টাক মাথায় উস্কোখুশকো চুল; মুখে ক্যান্সারমার্কা খাবলা খাবলা দাড়ি; কর্কশমেজাজি খিটখিটে একটা মানুষ। কিন্তু সবাইরে ছেড়ে তমুক আপা কি না তার সাথেই ইটিশপিটিশ করে? এটা কোনোভাবেই আমরা মেনে নিতে পারি না। তাই আমরা স্লোগান দেই- অমুক ভাইয়ের চামড়া...
সকালবেলা দুর্বাঘাসে শিশির পড়লে যেরকম দেখায়; তমুক আপা হচ্ছেন ঠিক সেরকম নিটোল একটা মেয়ে। সেই তিনি কি না এরকম কাকভূশণ্ডি একটা ছেলের সাথে প্রেম করেন?
একদিন তমুক আপারে নিয়ে অমুক ভাই মোটর বাইকে কোথাও বের হয়ে গেলো। আমরা বেশ জোরে জোরে স্লোগান দিলাম। অনেকক্ষণ পরে অমুক ভাই ফিরে এসে সরাসরি আমাদের সামনে দাঁড়াল- তমুকের সাথে কেউ প্রেম করতে চাও?
আমাদের তো এইবার লেজেগোবরে অবস্থা। আমরা এর তার দিকে তাকাই কার ঘাড়ে দোষটা চাপিয়ে দেয়া যায় ভেবে। অমুক ভাই একটা ত্যাড়া হাসি দেন- কেউ ইন্টারেস্টেড হলে রাস্তা খোলা; আগাতে পারো
- এটা কী বলেন? তিনি আমাদের বড়ো বোন
- ঢাকায় চিঠি লেখার সময় দুই তিন পাতা করে যার রূপ-বর্ণনা করো; সে তোমাদের বড়োবোন তা কে বিশ্বাস করবে? ইচ্ছা থাকলে এদিক সেদিক না ঘুরে সরাসরি লাইনে আসো...
এই কাণ্ডটা ফারুকের। মারুফ এর মধ্যেই ঢাকা চলে গেছে। ফারুক প্রতি সপ্তায় মারুফকে চিঠি লেখে। সেই চিঠিতে দুতিন লাইন ছাড়া বাকি সব কথাই থাকে তমুক আপা সম্পর্কে। ঘটনাটা আমি আর মিসবা ছাড়া কেউ জানে না। কিন্তু অমুক ভাই জানলেন কেমনে?
আমরা ঝিম মেরে বসে থাকি। অমুক ভাই হাসেন- মুক্তার মালা কাউয়ার গলা থেকে ছিঁড়লে কোকিলের গলায় যাবে; কিন্তু বান্দরের গলায় যাবার কোনো আশা নেই...
অমুক ভাই সরে যেতেই ফারুক আমাদের কলার চেপে ধরে- বান্দির বাচ্চা। এই খবর অমুক ভাইকে কে বলেছে?
আল্লা খোদার কসম দিয়ে মিসবা পিছলে যায়। আমি বলি- মারুফ বলেছে। ওর তো আবার বড়োদের সাথে খাতির বেশি...
কথাটা ফারুক বিশ্বাস করে। টুনুরটানুরদের গিলাগুর্দা নেই। ওই শালা অমুক ভাইয়ের সাথে খাতির জমানোর জন্য বলেও দিতে পারে
টুনুরটানুর হচ্ছে ছড়া লেখক। ফারুক গ্র“পে বসেই মারুফকে একটা চিঠি লেখে- বেইমানের বাচ্চা টুনুরটানুর...
জীবনেও তাকে আর তমুক আপার কোনো সংবাদ জানানো হবে না বলেও শেষ লাইনে ফারুক লিখে দেয়- তমুক আপা কিন্তু এখন আরো সুন্দর হয়েছেন....
স্লোগান টোগান আপাতত বন্ধ। এর মধ্যে একদিন দেখি তমুক আপা একটা লোককে নিয়ে গ্র“পে এসে হাজির... উনার এঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেছে... আমরা তাজ্জব। অমুক ভাই বরাবরের মতো যেমন ছিলেন তেমনি। আমরা আবার জরুরি সভায় বসি- এইটা কি প্রেম না অন্য কিছু? কিন্তু কিছু বুঝিও না; কাউকে জিজ্ঞেস করারও সাহস পাই না। শেষে একটা নতুন স্লোগান ধরি- এলাকার সম্পদ বাইরে পাচার চলবে না। চলবে না...
লোকটা তমুক আপার সাথে প্রায়ই গ্র“পে আসে। অমুক ভাইয়ের সাথেও জম্পেশ আড্ডা দেয়। আমরাও ধুমা স্লোগান দেই। একদিন অমুক ভাই আবার ত্যাড়া করে হাসেন- পুকুরের মধ্যে তিমি মাছ ছাড়লে; হয় মরে যায়; না হয় ছোট হতে হতে একসময় টাকি মাছ হয়ে যায়...
আমরা হা করে তার দিকে তাকিয়ে থাকি। তিনি একটা বিড়ি ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে আবার মুখ খোলেন- বড়ো মাছকে বড়ো পানিতেই ছেড়ে দেয়া ভালো...
তমুক আপার বিয়ের তারিখ ঠিক হয়ে গেলো। কথাকলির তখন একটা বিশেষ বিয়ে সার্ভিস ছিল। নাটকের সেট এদিক সেদিক করে আমরা দুয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিয়ের স্টেজ থেকে শুরু করে গেট পর্যন্ত সাজিয়ে ফেলতাম। আর বাবুর্চিদের সাথে জোগালির কাজ কিংবা খাবার সার্ভ করার জন্য লোকের তো কোনো অভাবই ছিল না আমাদের। এসব কাজে যারা লিড করত অমুক ভাই তাদের একজন। কিন্তু আমরা কেন যে ভাবছিলাম তমুক আপার বিয়েতে অন্তত অমুক ভাই থাকবে না। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম সেখানে সে আছে। শুধু আছে নয়। সমস্ত কিছু সে একাই করল...
বিয়ে হয়ে গেলো। বরের গাড়ি বের হয়ে যাবার পর ধুপ করে পেছনে একটা ভারী কিছু পড়ার শব্দ শুনলাম। তাকিয়ে দেখি অতক্ষণ প্রচণ্ড কঠিন চেহারার অমুক ভাইটা তমুক আপা চলে যাবার সাথে সাথেই একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে মাটিতে পড়ে আছে...
২০১১.১০.১৮ মঙ্গলবার
কথাকলি। ০৮। রাবারের চাপা
কথাকলি।০৭। বিট এন্ড হিট
কথাকলি।০৬। আমি একটা দল
কথাকলি।০৫। অচেনা সেতার
কথাকলি।০৪। কী যেন ডাকে
কথাকলি।০৩। বাঙালের বাংলা শিক্ষা
কথাকলি।০২। এ্যানার্জি পয়েন্ট
কথাকলি।০১। প্রেমিক পাগল আর কবি
মন্তব্য
আরেকটা প্রেমিক জবাই হল। হায় হায় মেয়েগুলো যত সব ছেলে নাচায়। বলে বন্ধু, সব কাজ করায়, আর বিয়ের বেলায়
আর ছেলেদেরও বলিহারি কম্ম। ইয়ে খেয়েও ইয়ে হয়না। আবার ইয়ে পেতে ইয়ে হয়ে বসে যায়। যাও আবার ইয়ে খাও।
খালি তো জবাই
কত পাব্লিকরে জ্যান্ত রোস্ট হতে দেখলাম
০২
দুচারটা ছ্যাকামাইসিন না খেলে কিন্তু বুদ্ধিও খোলে না
"বান্দির বাচ্চা"...
এই লেখার প্রতিটা চিপায় চুপায় হাসির উপাদান ছড়ানো
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
চিপাচুপায় বেশি না ঢোকাই ভালো
এখন চিপায় প্রেমিকদের চেয়ে হিরোইঞ্চিরা বেশি বসবাস করে
^^^^^^^^^^
০ ০
-
*
ভালো কইলেও আপ্নার। খারাপ কইলেও আপ্নার
কিছু বুঝলাম না তাই কিছু লিখলামও না
ক্যান? মন খ্রাপ ক্যান? ঘটনা কি কমন পড়ে গেলো?
এখন পড়ে নাই, তয় ভবিষ্যতে কি আছে সেইডা কি আর জানি গুরু?
হা হা হা ! অমুক পতনের শব্দটা কি তমুক আপা শেষপর্যন্ত পেয়েছিলেন ?
ভূতপূর্ব প্রেমিকদের দাঁড়ির দৈর্ঘ্যের সাথে সাথে বন্ধন-ছেঁড়া প্রেমিকাদের আত্মসৌন্দর্য্যবোধও বাড়তে থাকে। প্রত্যেক সুন্দরী মেয়েই এরকম নমুনা উদাহরণ যথাসম্ভব দীর্ঘকাল রাখতে পছন্দ করে অন্যের কাছে নিজের কদর দেখাতে। কিন্তু বুদ্ধিমান প্রেমিকরা সাথে সাথেই একটা বিয়ে করে ফেলে কিংবা অন্যদিকে ঝুলে পড়ে, যে গেছে তাকে মূল্যহীন প্রমাণ করতে।
দুনিয়া জুড়া পচুর গিয়াঞ্জাম !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
দুঃখিত স্যার
এখন ভূতপূর্ব প্রেমিকেরা দাড়ি রাখে না। বরং ডেন্টিং পেন্টিং করেই ঘুরে বেড়ায় আর ভূতপূর্ব প্রেমিকারা এখন ইন্দে-চান্দে-পুজায়-পার্বণে-জন্মদিনে-বৈশাখে গিফট না দিলে প্রেমিকদের মেমোরি থেকে ডিলিট হয়ে যায়...
০২
সকল বুদ্ধিমানেরই কয়েকটা প্রাক্তন প্রেমিকা থাকা এখন উন্নতির চাবিকাঠি স্যার
হার্ডডিস্ক বদলান.... এইটা ডিজিটাল যুগ
শ্লোগানেই ছিটফোঁটা সুখ তারুণ্যে!
'বড় মাছকে বড় পানিতেই ছেড়ে দেয়া ভালো'
ক্ষতের মলম।
কী আর করা!
হবু বাবাগুলো সব মামা হয়ে যায় কেনো, জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন!
আহ। মামার দুঃখ....
মাঝে মাঝে মনে হয় যেন জাতীয় মামাতে পরিণত হয়ে গেছি
এইসব বেচারারা না থাকলে আমরা এইরকম সুখাদ্য লেখালেখি থেইকা বঞ্চিত হইতাম না! এইসব বেচারা অমুক ভাই আছেন বইলাই আপ্নারা লেখেন আর আমরা পড়ি। বেচারারা দীর্ঘজীবী হোক।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ইহারা শততই দীর্ঘজীবী আর ছ্যাকামাইসিন বাংলাদেশে প্রচলিত একমাত্র বিনামূল্যের দাওয়াই
ইহা খাইতে হয়- খাওয়াইতে হয়। না হলে জীবন অচল
মজা পাইলাম।
অলস সময়
আইচ্ছা
আহা
হ
এই কাহিনী ছোটবেলা থেকেই জানি। কিন্তু তোমার লেখায় আরো ডিটেইল পাইলাম।
দয়া করে সিরিজটা আর বন্ধ করোনা। চালিয়ে যাও।
ছোটবেলা থেকে জানো এইটা আবার বাহাদুরি করে বলতে যেও না
তাইলে কিন্তু অমুক ভাই তোমার গুর্দা খুলে নেবে
..
এক্কেরে রসালো লেখা।
হ। অন্যদের রস দিতে গিয়ে যে আরেকজনরে ঘানির চিপা খেতে হয়?
অমুক ভাইয়ের জন্য আন্তরিক সমবেদনা!
খালি এক ভাইয়ের জন্য সমবেদান জানালে অন্য ভাইদের কী হবে?
" সানাইয়ের সূড় নিয়ে ঝাবে দূড়, হেক্ঠু হেকঠু খরে থোমায়
হাজখে রাথেই থুমি অন্য়ের হবে, বাভথে ঝলে চখ বিঝে ঝা হা হা হায়"
একন আড় চুকে ঝল ঝড়ে না। মুভাইলে ভিল উটে
শেষাংশ ছাড়া সবখানেই
facebook
ক্যান। শেষে কী করল?
দাম্পত্য জীবনে চরম অসুখী এক থাই-ইতালিয়ান বান্ধবীর সাথে আমার কথোপকথন-
মেয়েঃ লাইফটা হেল হয়ে যাচ্ছে দোস্তো। হাবি বলে আমি নাকি বুড়ো হয়ে গেছি। তুমি বলো, এটা কি সত্যি?
আমিঃ আররে না, তোমার হাবি মনে হয় একটা বদ, অন্য মেয়ের সাথে আকামে মগ্ন হয়েছে।
মেয়েঃ তাই হয়তো হবে। দেখে আমার কি যে অবস্থা। আর ভাল্লাগেনা। বাচ্চাটার থাকায় কিছুই করতে পারছি না।
আমিঃ তুমিতো ইচ্ছে করলে একটা স্লেভ জুটিয়ে নিতে পারো।
মেয়েঃ হুম, একজন কাউকে পেলে তো ভালোই হতো। মাঝে মধ্যে একটু লাইফের চার্ম নিতে পারতাম। সত্যি কথা বলতে কি জানো, আমি কিন্তু তোমার কথাই ভাবছিলাম। আমরা দুজনেই যেহেতু সংসারী, সেখানে তোমার মতো ট্রাস্টেড একটা লোক পেলে সবকিছুই সম্ভব হতো। আমরা সময় সুযোগ মতো লাইফটাকে এনজয় করতে পারতাম। তা'ও আমি তোমাকে আর ক'টা দিন অবজার্ভেশনে রাখতে চাই।
ক'টা দিন পর-
মেয়েঃ hi bro, খবর কি?
আমিঃ আরে তোর খবরের গুল্লি মারি। আমি তোর bro হলাম কেমনে?
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
রাতঃদা, থাই+ইতালিয়ানদের ব্রো তে সমস্যা থাকা তো উচিৎ না
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনি তো বহুত কামেল লোক
বাংলাতেই ছ্যাকামাইসিন দিলে অনেকে বুঝতে সময় নেয় ছয় মাস
আর আপনি থাই ভাষায় এক শব্দ বলাতেই বুঝে গেলেন?
সেই চিরপুরাতন কাহিনী... যুগে যুগে অনিবার
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হ স্যার
খুব খুব মজা পেলাম লীলেনদা।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য
পরের... কাহিনী শুনার অপেক্ষায়
আবার শুরু করছেন তাইলে সিরিজটা। এইটা সচলে খুব প্রিয় সিরিজগুলার একটা। আশা করি আবার বছর দু'য়েকের বিরতি দিবেন না
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
চলিবে চলিবে
নতুন মন্তব্য করুন