সত্যজিৎ রায়ের পুত্র সন্দীপ রায় সম্প্রতি বাংলাদেশের দুই প্রকাশকের বিরুদ্ধে মেধাস্বত্ব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠি দেখিয়ে সত্যজিৎ রায়ের বইয়ের অবৈধ ব্যবসার অভিযোগ এনেছেন [১]।
সত্যজিৎ রায় বাংলাদেশের প্রকাশনী সংস্থা নওরোজ কিতাবিস্তানকে তাঁর লেখা বই প্রকাশের অনুমতি দিয়েছিলেন, যা তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে সন্দীপ রায় নবায়ন করেছিলেন। কিন্তু ‘নওরোজ সাহিত্য সম্ভার’ ও ‘নালন্দা’ নামের দুইটি প্রকাশনী সংস্থা এইসব আইনগত লালফিতেমোর ধার না ধেরে নিজেরাই সত্যজিতের বই কপিপেস্ট করে ছাপানো শুরু করে দিয়েছেন। সন্দীপ রায় এতে অত্যন্ত যৌক্তিক কারণেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাঁর এই ক্ষোভের অনুসমর্থন মিলেছে নওরোজ কিতাবিস্তানের স্বত্বাধিকারীর বক্তব্যেও।
অভিযুক্তদের একজন অভিযোগ একেবারে অস্বীকার করেছেন। ‘নালন্দা’র সত্বাধিকারি রেদওয়ানুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘আমরা ভারতীয় কোনও লেখকের বই প্রকাশ করিনি।’
আর নওরোজ সাহিত্য সম্ভারের সত্বাধিকারী ইফতেখার রসুল জর্জ এক দারুণ উত্তর দিয়েছেন।
‘আমরা সন্দীপ রায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী নভেম্বরে আমি কলকাতা গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক কোনও চুক্তি না হলেও সন্দীপ রায়ের সঙ্গে আমার ছেলে ২/৩বার দেখা করে এসেছেন।’
লেখক বা তাঁর মেধাস্বত্বের অধিকারীর সাথে কোনো চুক্তি না করে, "অতীতে অমুকের সঙ্গে দেখা হয়েছে", কিংবা "ভবিষ্যতে তমুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে", এগুলো কি কোনো গ্রহণযোগ্য উত্তর? যদি চুক্তি না করেই তারা বই ছাপিয়ে থাকেন, সোজা বাংলায় তারা লেখাচোর।
কিন্তু দারুণ এক কথা বলে বসেছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলানিউজের ভাষায়,
বাংলাদেশের বইমেলায় তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশের কপিরাইট আইনের দুর্বলতার কারণে আমরা যেমন বাংলাদেশে বই প্রকাশের আগ্রহ হারাচ্ছি, তেমনি বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রকাশকরা এই জটিলতার আমাদের বই প্রকাশ করতে পিছিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ‘এর সাথে রয়েছে পাইরেসির সমস্যা। সব মিলিয়ে আঘাতটা আসছে বাঙালি পাঠকের ওপর তারা ভালো সাহিত্য পড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
বাঙালি পাঠকের বঞ্চনা নিয়ে সংক্ষুব্ধ সুনীল গাঙ্গুলির কাছে সবিনয় জিজ্ঞাসা, বাংলায় "ভালো সাহিত্য" কি কেবল পশ্চিমবঙ্গেই উৎপন্ন হয়? পশ্চিমবঙ্গের লেখকের বই এই পোড়ার বাংলাদেশে না গেলেই কি কেবল বাঙালি পাঠক বঞ্চিত হয়? নাকি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি পাঠক বাংলাদেশের লেখকের বই না পড়লে বঞ্চনা ফঞ্চনা কিছু ঘটে না? দেশ বিভাগের পর গত চৌষট্টি বছরে এপার বাংলার সাহিত্যের ঠিক কতগুলো নমুনা পশ্চিমবঙ্গের প্রকাশকেরা ছেপে বাঙালি পাঠকের পশ্চিমভাগকে সাহিত্যবঞ্চনার হাত থেকে উদ্ধার করেছেন? সবেধন নীলমণি কুমীরশাবক তসলিমার কথা বাদ দিয়ে গণনা করুন।
বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে কলকাতার মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীরা যুক্তবঙ্গে ফাটকায় কলাকৌশল করে পাটের বাজার দখল করে নিয়েছিলো, যার খেসারত প্রায় পুরোটাই দিয়েছে পূর্ববঙ্গের দরিদ্র পাটচাষী। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে এসে দেখছি, সেই মাউড়াবাজি সাহিত্যেও সগর্জনে চলমান। কবি সুনীল গাঙ্গুলি সেই সাহিত্যমাউড়াদের হয়ে মুখ খুলে ফেলেছেন। বঙ্গসাহিত্য লিখিত হবে পশ্চিমবঙ্গে, আর বিক্রীত হবে তাবৎ বঙ্গে। বাংলাদেশেও যে লেখক আছে বা থাকতে পারে, তারাও যে লেখে, এবং তাদের লেখা ছাপার যোগ্য, তা বাক্যে না হলেও আচরণে বেমালুম অস্বীকার করে করে বাঙালি পাঠকের জন্যে ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ কুম্ভীরাশ্রু না ফেললেই কি নয়? বাঙালি পাঠকের জন্যে আপনার এতই দরদ থাকলে, ময়দানে নেমে কলকাতার প্রকাশকদের বলুন, তাঁরা এপার বাংলার সাহিত্যের কিছু নমুনা প্রকাশ করে দেখাতে রাজি আছেন কি না।
চোরের বদনাম করা সহজ, কারণ চোর আইন ভাঙে। মাউড়ার বদনাম করা যায় না, কারণ কেলোর কীর্তিগুলো সে আইন মেনেই করে।
বাঙালি পাঠকের বঞ্চনার দুঃখে হাউমাউ ক্রন্দনরত সুনীল গাঙ্গুলি, এই সাহিত্যমাউড়ামোর ওপর ছ্যাড়ছ্যাড় করে মুতে দিয়ে গেলুম স্যার। আশা করি একশো আটটা নীল পদ্ম গুণে গুণে ফুটে উঠবে ওখানে। তেত্রিশ দুগুণে ছেষট্টি বছর হবে শিগগীরই, কেউ কথা রাখে না, খালি বড় বড় গোল গোল কথা বলে।
[সূত্র]
[১] কলকাতায় বাংলাদেশি প্রকাশকদের প্রতারণা: অভিযোগ সত্যজিৎ পুত্রের - বাংলানিউজ২৪.কম
মন্তব্য
ঠিক্কতা
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সহমত
হ, আইন কইরা দেশী প্রকাশনী থিকা ভারতীয় বই প্রকাশ করা যাইতে পারে। সেই সাথে একটা টার্গেটও দেয়া যাইতে পারে বাতসরিক মোট প্রকাশনার কয়ডা হইব তার। সরকার নিয়মিত সেই টার্গেট ছেক করতে থাকব।
ওপারের বাজার বোধহয় ছোট হয়ে আসছে।
আর পঞ্চাশ বছর পর ওপারের লোক আর বাংলা বলতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। তখন আর কপিরাইট নিয়া মাথা ঘামানি লাগবে না। বঅই ছাপানোর জন্যে এপারের প্রকাশকদেরই হাতে পায়ে ধরা লাগতে পারে ভবিষ্যত গাংগু সাহেবদের।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
এখন ও তো মনে হয় ৫০% পারে না। ওপারের উচ্চশিক্ষিত সমাজ মনে হল বাংলা বলাটা একটু আনস্মার্টনেস মনে করে, ইংরেজি না হয় হিন্দি না বললে বোধ হয় জাতে উঠা যায় না।
ভয়ের ব্যাপার অন্যখানেও আছে। ওরা ভারতীয়, ওরা শেষ পর্যন্ত যদি হিন্দীভাষী হয়ে যায় তাহলে ওদের জন্যে কতটা আর লজ্জার। কিন্তু এই ট্রেন্ড যে আমাদের পুলাপানের মধ্যেও ঢুকে গেছে! বিশেষ করে তথাকথিত কিচ্ছু অর্ধশিক্ষিত উচ্চবিত্ত আবালের মধ্যে। যাই হোক এই আলোচনা বোধহয় অফটপিক বাদ দেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কৈশোরে চেপে ধরা সুনীল গাঙ্গুদা যদি পড়ন্ত যৌবনবেলায়ও চেপে ধরে পুটু মেরে দিতে চায় তাহলে ক্যামনে কী!
উদ্ধৃত অংশটুকু পড়ে আমার মনে হচ্ছে, আপনি যে অর্থে নিচ্ছেন সুনীল সে অর্থে কথাটা বলেননি। (বাংলাদেশের সাহিত্যিকদের মধ্যেও তাঁর বন্ধু আছে, বাংলাদেশে তাঁর পাঠকও আছে, এ অবস্থায় উল্টোপাল্টা কিছু বলে তিনি তাদের চটাতে চাইবেন বলে মনে হয় না।)
পশ্চিমবঙ্গে যদি কিছু ভালো সাহিত্য লেখা হয়, আর সেগুলো যদি কোনো কারণে বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে না পৌঁছয়, তারা যদি সেগুলো পড়তে না পারে, তাহলে তারা সেসব ভালো সাহিত্যগুলো পড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তাই নয় কি?
বাংলাদেশী পাঠক কোনো ভালো সাহিত্যই পড়ছে না, বা বাংলাদেশে কোনো ভালো সাহিত্যই লেখা হচ্ছে না, এরকম কথা তো সুনীল বলছেন বলে মনে হল না ওই অংশটা পড়ে।
উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি, পশ্চিমবঙ্গের পাঠক বাংলাদেশী সাহিত্যের প্রতি যথেষ্ট এক্সপোজার পাচ্ছে না, তারা সেসব ভালো লেখা পড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, এই কথা বলেই তো আমি আপনার লেখা এবং সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সেটার মানে তো এই নয় যে পশ্চিমবঙ্গে কোনো ভাল লেখা কেউ লেখে না।
কিন্তু এটা ঠিক, আমার মনে হয়, সুনীলের শব্দচয়ন এখানে যথাযথ হয়নি। "তারা ভালো সাহিত্য পড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন" এর বদলে "কিছু ভালো সাহিত্য" বা "সেইসব ভালো সাহিত্য" বললে স্পষ্ট হত।
তবে আমার অনুমান ভুলও হতে পারে, জানিনা সুনীল বাংলানিউজে বলা বাকি কথায় কোনো অন্যরকম ইঙ্গিত দিয়েছেন কিনা।
কৌস্তুভ, আপনি সম্ভবত ব্যাপারটাকে এভাবে দেখতে অসম্মত হবেন না, পশ্চিম বাংলার পাঠকের দুয়ারে একটা গ্লাস ব্যারিয়ার আছে। এই ব্যারিয়ার টপকে বাংলাদেশের বই সেখানে যায় না বা যেতে পারে না। অর্থনীতি বা সমাজতত্ত্ব টেনে ব্যাপারটাকে একটা বৈধ চেহারা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের বাজারে হয়তো চাহিদা নেই বলেই বাংলাদেশের বই সেখানে যেতে পারে না। কিংবা পশ্চিমবঙ্গের পাঠক হয়তো বাংলাদেশের সাহিত্যে উৎসাহী নন। এই কথাগুলো সামনে রেখে পেছনে যা চলে, তা পরিষ্কারভাবেই একটা ডিসক্রিমিনেশন। সেই ডিসক্রিমিনেশনে পশ্চিমবঙ্গের বড় প্রকাশক থেকে শুরু করে সুনীল গাঙ্গুলির মতো সাহিত্যঝুনঝুনওয়ালা, সকলেই শামিল। একটা একমুখী প্রবাহ তাঁরা ধরে রাখতে চান, যে মডেলে পশ্চিমবঙ্গের লেখকের বাজার বাংলাদেশে নিশ্চিত হবে, উল্টোটা কদাপি নয়।
আমি কিন্তু এতে আপত্তি করছি না। আমরা বাংলাদেশীরা আক্ষরিক অর্থেই আত্মসম্মানজ্ঞানহীন একটা চুৎমারানি জাতিতে পরিণত হয়ে আসছি গত চল্লিশ বছর ধরে। সুনীল গাঙ্গুলির মতো লোকজন বাংলাদেশে গেলে আমাদের বহু বড় বড় কবিসাহিত্যিক পীরের দরগায় তশরিফ রাখার মতো করে গিয়ে হামলে পড়ে, কলকাতার কাগজে নিজেদের নামে দুয়েক লাইন সুখ্যাতি দেখার জন্যে কখনো ঢাকায় কখনো কলকাতায় গিয়ে লোমপড়া কুত্তার মতো লেজ নাড়ে। উঠতি কবিসাহিত্যিকরা কলকাতাকেই বঙ্গসাহিত্যের কেবলাজ্ঞান করেন, সেখানকার পাতিকবিদের ফেসবুকে মুখমেহন করে জাতে ওঠার চেষ্টা করেন। আমাদের বইয়ের দোকানিরা দুইদিন পর পর কলকাতা থেকে ভারবাহী গর্দভের মতো স্যুটকেসভর্তি বই পিঠে বয়ে এনে দেশে মুদিগিরি করে। আমাদের প্রকাশকদের একটা বড় অংশ বই প্রকাশনা নিয়ে এমন নির্লিপ্ত উদাস অপেশাদার আচরণ করে, তাদের দায়দায়িত্ব নিয়ে কিছু বলার রুচিই হয় না। আর আমাদের পাঠকও গোগ্রাসে কলকাতা থেকে আসা সবকিছুকেই অমর সাহিত্যকীর্তি জ্ঞান করে পড়ে চলেন, সেটা যত ছাতামাথাই হোক না কেন। আর চুরির কথা তো পোস্টে বলেছি। এমন একটা জাতি যে সারাজীবন লুঙ্গি তুলে রাখবে, আর অন্যে এসে তার পাছা মেরে হিরোশিমা বানিয়ে দিয়ে যাবে, সে আর বিচিত্র কী?
আমার মূল আপত্তি সুনীলের ঐ "বাঙালি পাঠকের বঞ্চনা" নিয়ে ছিঁচক্রন্দনে। বাঙালি পাঠকের জন্যে তার দরদ যদি ঊরূ বেয়ে পড়তে থাকে, তাহলে আমি প্রশ্ন করতেই পারি, পশ্চিমবঙ্গের বোদ্ধারা কি আদৌ বাংলাদেশী লেখকদের হিসেবের মধ্যে ধরেন কি না। নাকি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি পাঠক বাংলাদেশের লেখকের লেখা না পড়লে সেটা বাঙালি পাঠকের বঞ্চনার মধ্যে আদৌ পড়ে না? সুনীলের এই বাঙালি পাঠকদরদ সেই মডেলের ওপর ভিত্তি করে প্রবাহিত, যেখানে বাংলাদেশী লেখকের কোনো মূল্য নাই। বাংলাদেশ শুধু বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত সাহিত্যের খাতক হয়ে থেকে যাবে, আর উল্টোটা আশা করলে আমাদের অর্থনীতি, সমাজনীতি কপচিয়ে বুঝ দেয়ার চেষ্টা করা হবে, সেটা আমার ঠিক পছন্দ নয়। টেলিভিশনের ক্ষেত্রেও এই একই খোঁড়া অজুহাত দেখানো হয়। সুনীলের এই কৃত্রিম বাঙালি পাঠকদরদ প্রকারান্তরে পশ্চিমবঙ্গীয় লেখকদরদ। তা তিনি করতেই পারেন, যেমন আমি আপত্তি করতেই পারি। আর ফ্র্যাঙ্কলি, আমি মনে করি, সুনীল এখন যা লেখেন, সেটা না পড়লে বাঙালি পাঠক তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
সাহিত্য বিনিময়ের জিনিস কি না, এ নিয়ে এক বন্ধুর সাথে খুব জোর তর্ক হচ্ছিলো। আমি মনে করি, পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিনিময়টা জরুরি। এক পক্ষ ক্রমাগত আরেক পক্ষের কাছে সাহিত্যপণ্য বিক্রি করে যাবে, এটাকে ঠিক সুস্থ সংস্কৃতিপ্রবাহ বলা যায় না। আপসোস, আমাদের দেশের সাহিত্যকেষ্টুবিষ্টুদের সেই কোমরের জোর নাই এটা নিয়ে কিছু বলার। তারা সব মুদির বাচ্চা মুদি, চৌদ্দপুরুষ এক জায়গা থেকে মালসামানা কিনে আরেকজায়গায় বিক্রি করেছে কেবল, নিজেদের কণ্ঠস্বর স্পষ্ট করার ব্যাপারে তাদের হয়তো আগ্রহ বা সাহস নাই। আমার কাছে ব্যাপারটা ভালো লাগে না বলে মৃদু এক্সপ্লোড করলাম। আমার সাথে হয়তো অনেকেই একমত হবেন না, কিন্তু এক্ষেত্রে ঐকমত্যের লোভও আমার নেই।
সহমত। বাংলাদেশী সাহিত্যের প্রতি এই অবহেলার ভাবটা আছে, এবং হয়ত লেখক হিসাবে 'বেস্ট বিফোর' ডেট পেরিয়ে যাওয়া সুনীলও সেই পশ্চিমবঙ্গীয় লেখকদরদী গ্রুপেই পড়েন। আমার বক্তব্য ছিল, সাক্ষাৎকারের ওই কটা লাইন সম্ভবত ওই অর্থ বহন করে না। আপনি বলছেন, এটা জেনারেল ট্রেন্ড। সেটা অনস্বীকার্য। যাঁরা পশ্চিমবঙ্গের বাজারে আরো বাংলাদেশী বই দেখতে চান তাঁদেরও একাংশ সেটা বলেন একটা প্যাট্রনাইজিং অবস্থান থেকে।
সুনীল গাঙ্গুলী'র মতো একজন প্রথিতযশা কথাশিল্পীর 'শব্দচয়ন' ঠিক হয়নি, বা সুনীল 'সে অর্থে' বলতে চাননি, এতোটা নিশ্চিত হচ্ছেন কী করে?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
একটু অভিজ্ঞতা বলি--
কদিন আগে জীবনে প্রথমবারের মত এক জ্যাকসন হেইটসে লেখকসভায় উপস্থিত হয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল রূপচাঁদ পক্ষীর কিছু গান সংগ্রহ করা। সেই বইয়ের দোকানে দেখি শীর্ষন্দু মুখোপাধ্যায় কথা বলছেন সভা আলোকিত করে। উপস্থাপক হাসান ফেরদৌস।
শীর্ষেন্দুদাদা তার সাহিত্যিক হওয়ার গোপন কথাটি বলে গেলেন। বললেন গুরু ধরা দরকার। এর মধ্যে আবার হাসান ফেরদৌস প্রশ্ন করলেন, দাদা আপনিতো শুধু লেখকও নন। ক্রিকেটবোদ্ধাও। ভারতের সাম্প্রতিক বাজে ফরমান্সের কারণ কী বলে মনে করেন। সে সময় ভারত ইংলণ্ডের কাছে হেরে যাচ্ছিল।
দাদা হেসে উত্তর দিলেন তিনি লেখক, ক্রিকেট বোদ্ধা এবং ধর্ম প্রচারকও বটে। একর ভিতরে তিন। অথবা তিনের ভেতরে এক। তিনি বললেন, ব্যক্তিগত গ্যাঞ্জামে ভারতের অবস্থা খুব কেরাসিন। এমন অবস্থা যে--
এইটুকু তিনি বেশ জোরে জোরো বললেও, কান পেতে শুনি--তিনি একটু রয়ে সয়ে কায়দা করে বললেন--ভারতের অবস্থা এতই খারাপ যে বাংলাদেশর মতন দলের সঙ্গেও হেরে যাবে।
আরেকজন বাংলাদেশী প্রশ্নকর্তাকে একটু প্রগতিশীল বলেই মনে হল। তিনি জিগাইলেন, বাংলাদেশের সাহিত্য পড়েন?
তিনি বললেন, পড়ি। আল মাহমুদ ভালো কবি। তবে, তিনি একটু ধর্মকর্ম নিয়ে মেতে আছেন। একটু সাম্প্রদায়িক হয়ে গেছেন।
বাংলাদেশর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন? আরেকজন প্রশ্ন করলেন। তিনি একেবারে গলে গেলেন। খুব ভালো। ওখানেই তো আমার চৌদ্দপুরুষের জন্মস্থান। আমারও। এ নিয়ে বই লিখেছি। আর প্রতিবছর বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ যাই। যাই, কারণ এক. ঢাকায়--প্রকাশকদের সঙ্গে আর পাঠকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। আর পাবনায় অনুকুল চন্দ্রের সৎসঙ্গ নামে হিন্দুধর্মের একটি ধারার গুরু হিসাবে লোকজনকে দীক্ষা দিতে।
এইসব কথাবার্তা শুনতে শুনতে আমার বেশ ঘুম পেয়ে গেল। নাকও ডাকতে শুরু করেছিল জীবনে প্রথমবারের মত। সম্মানী অতিথির সামনে আমার ঘুমিয়ে পড়া দেখে হাসান ফেরদৌস বাংলাদেশের মানসম্মান গেল গেল মনে করে আমাকে ডেকে তুললেন। বললেন, ভাই-- ঘুমাবেন না। আপনি কিছু বলুন।
আমাকে তো কেউ চেনে না। চেনার কথাও নয়। এই সব লোককে একটু ধ্যাতা করতে পারলে আরাম হয়। সেই হেতু বললেন, কিছু বলুন। বড় গুণি লোক এসেছেন। উনি বিখ্যাত সাহিত্যিক।
বললাম, ওকে। তাই সই। কিন্তু প্রশ্ন করলে তো আবার বসিয়ে দেবেন নাতো?
তিনি বললেন, নেভার। আমি বাকস্বাধীনতার জন্য আমৃত্যু লড়ে যাচ্ছি। আপনি বলুন।
যেই না শুরু করেছি, শীর্ষেন্দুদা--তখনি একজন বললেন, উহু, ঠিক হচ্ছে না। ওনাকে মাননীয় বলুন। বললাম, কভি নেহি। এটা আমার ঠাকরদা আমাকে শেখায়নি। তাছাড়া শীর্ষেন্দুবাবুও কাউকে মাননীয় বলেননি। তিনি বললে--আমি চেষ্টা করে দেখতাম।
তাকে তিনটি প্রশ্ন করলাম--ভারতের হারের আরেকটা কারণ ইংলন্ডের ভাল পারফরমেন্স, সেটা না বলে--পুরো বাংলাদেশকে শুদ্র বানিয়ে দিলেন, কনতো বাংলাদেশ কি আপনেগো দয়ায় খেলছে নাকি কোনোদিন? এত খারাপ মনে করার কারণটা কি বাংলাদেশকে
আল মাহমুদ তার ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করছেন বলে আপনি মত দিচ্ছেন--আর আপনি এইকালে এই নিউ ইয়র্ক অব্দিও লেখকসভায় ধর্মপ্রচার করছেন--সেটা কি আপনার সাম্প্রদায়িক কাজকাম নয়? সেটা কি ক্ষতিকর নয়?
এবং বললাম, দাদা--এই যে বাংলাদেশে আপনি হয়েছেন, বাংলাদেশের একটি ধর্মের গুরু হয়েও বসেছেন--সেই বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম নিয়ে কোনো বইটই লিখলেন না--ঘটনাটা কি?
শীর্ষেন্দুবাবু তখন বেশ বাবু হয়ে নড়ে চড়ে বসলেন। আর হাসান ফেরদৌস সাহেব বাকস্বাধীনতা রক্ষার্থে আমাকে থামিয়ে দিলেন। বললেন, সভা শেষ। বাই।
সুনীলবাবু তো তারই ভায়রা ভাই। নাকি বলেন?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আপনাকে স্যালুট৷ প্রশ্ন তিনটি অসাধারণ করেছিলেন৷ আপনার জায়গায় আমি হলে গুলিয়ে ফেলতাম৷ কারণ আগেই মাথা গরম হয়ে যেত৷ অসাধারণ৷ কিন্তু "মাননীয়" ভারতীয় লেখক, ক্রিকেট বোদ্ধা এবং ধর্ম প্রচারক শীর্ষন্দু মুখোপাধ্যায় কী আপনার একটি প্রশ্নের উত্তরও দেন নি?
সাহিত্যিক এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় দুই বাংলার মধ্যে সমান তালেই হওয়া বাঞ্ছনীয় কিন্তু হতাশ হতে হয় যখন পশ্চিম বাংলার সব টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে দেখা গেলেও বাংলাদেশের টিভি চ্যানেগুলা ওইখানে দেখানো হয় না
আমি নিশ্চিত এই দেশে যদি তারা বাংলা কিংবা জি বাংলা সম্প্রচার যদি কালকে সরকার বন্ধ করে দেয় তাহলে বাংলাদেশেরই বহু লোক এর প্রতিবাদ করবে কিন্তু পশ্চিম বাংলায় বাংলাদেশের চ্যানেলগুলা কেন দেখানো হয় না এই নিয়ে কাউকে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখেনি ,
হিমু ভাইয়ের বিশ্লেষনের সাথে আমি একমত কোথাই যেনো একটা অদৃশ্য দেওয়াল তৈরি করা আছে !
শুধু সাহিত্য নয়, এত তরফা ভাবে টিভি চ্যানেল, শাড়ী/পাঞ্জাবী, অর্নামেন্টস, হিন্দী/বাংলায় নির্মিত বিজ্ঞাপন, ম্যাগাজিন সহ আরো অনেক কিছু পশ্চিমবঙ্গ চাপিয়ে দিচ্ছে আমাদের উপর। বাংলাদেশের মেয়েরা সানন্দা কিনছে নিয়মিত কিন্তু এটা ভাবার সময় এসেছে যে পশ্চিমবঙ্গে কি কেউ প্রিয়জন কেনে? কিম্বা তারা বাংলা দেখার সময় আমাদের ভাবা উচিত কলকাতায় কি চ্যানেল আই বা এনটিভি দেখে? এই চেতনাবোধটা আমাদের নিজেদের মাঝে আগে জাগ্রত করতে হবে। নিজের অধিকারটুকু আদায় করে নিতে কথা বলতে হবে। আর সেই ঝলকটাই এই লেখাটায় দেখতে পেলাম। ভালো লাগলো।
টুইটার
এই মন্তব্যটি একই সঙ্গে সত্যি এবং অসত্যিও বটে।
তারা চাপিয়ে দিলেই আমরা নিচ্ছি কেন? নিতে বাধ্য হচ্ছি কেন? সাহিত্য-সংস্কৃতি তো পেঁয়াজ-রসুন-কোরবানীর গরু নয় যে আমাদের নিতেই হবে--না নিয়ে উপায় নেই? এই নেওয়ার কারণটি কি?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
ব্যাপারটা এমন নয় যে তারা চাপিয়ে দিচ্ছে। আমরা নিচ্ছি, নিজের ইচ্ছাতেই নিচ্ছি। তাদের বাজার এখানে তৈরি হয়েছে এবং তারা সেটার সুফল ভোগ করছে। অতএব, প্রশ্ন আসবে, তাহলে এত কথা কী জন্যে? আমরা যা নিজেরা স্বেচ্ছায় নিচ্ছি, তার জন্যে অন্যকে দোষ দিয়ে কী লাভ?
এর উত্তর হচ্ছে, দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই এবং আমরা দোষ দিচ্ছিও না। কিন্তু এখানে হিমু ভাই-এর লেখাটার, বা আমার মন্তব্যের অথবা আপনার করা উপরের চমৎকার তিনটা প্রশ্নের (যার উত্তর আপনাকে দেয়া হলো না শেষ পর্যন্ত) উদ্দেশ্য মূলতঃ একই। একটা জনমত গঠন করা। আমাদের 'ইচ্ছা'কে পরিস্থিাতির নিরিখে বাস্তববাদী করে তোলা। ভারতের সাহিত্য সহ অন্যান্য পণ্য আমাদের দেশে আসুক; আপত্তি নেই। কিন্তু সেটা হতে হবে দুদিক থেকেই। সেজন্যে আমরা যতটা আন্তরিকতা দেখিয়েছি, আমাদের ওপার বাংলার ভাইরা তা দেখান নি। এখন জনমত গঠন করে তাদের যদি বোঝানো যায় তাহলে তো ভালই। না হলে, কঠোর ভাবেই সেটা বোঝাতে হবে; প্রয়োজনে আইন করে।
টুইটার
চাহিদার ক্ষেত্রে যোগান একটা ব্যাপার... তাই না কী?
বাজার রাজনীতি একটা বড় বিষয়... সেটা মাথায় রাখতে হবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই, আপনার সাথে আমি একমত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই বাজার রাজনীতির খেলায় আমরা কতটুকু পারফর্ম করতে পারছি? একটা উদাহরণ দেই। ভারতে মোটামোটি একটা বড় সময়ের জন্যে কোকাকোলা এবং পেপসি বন্ধ ছিল (সময়টা স্পষ্ট ভাবে মনে পড়ছে না, গুগল ঘাটতেও ইচ্ছে করছে না )। তখন ভারতে নিজেদের কোমল পানীয়ের বাজার তৈরির প্রয়াস নেয়া হয় (কোক-পেপসিকে নিষিদ্ধ করাটা হয়তো এরই অংশ!)। এই প্রয়াসে থাম্বস আপ বলে একটা ড্রিংস উঠে আসে যা পরবর্তিতে কোকাকোলা এবং পেপসির সাথে সমান তালে পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করেছে এবং করছে। একই ধরনের উদাহরণ গাড়ীর ক্ষেত্রেও দেয়া যায়। মূলকথা, ভারত তাদের বাজারটাকে সরাসরি নিয়ন্ত্রন না করলেও, দেশীয় কোম্পানীগুলোকে মাথা তুলে দাড়ানোর মত সময় দিচ্ছে। এটা তাদের একটা স্ট্র্যাটেজি যা বেশ ভালো ভাবে সফল। অথচ আমাদের নীতিনির্ধারকরা কিন্তু বাজার রাজনীতির এই দিকগুলো নিয়ে 'স্মার্ট ডিসিশন' নিতে ব্যর্থ হয়েছেন অথবা এখনও সফল হন নি।
টুইটার
জ্বী, আমি এই কথাটাই বুঝাতে চেষ্টা করছি...
দেখা যাচ্ছে বাজার রাজনীতিতে আমরা যথেষ্ট উদারতার পরিচয় দিয়েছি, কিন্তু তবু গাঙ্গুর মন পাইলাম না পরাণের বান্ধব রে কাহিনী হয়ে যাচ্ছে...
এখন তবে বাজারের মুখ ব্যাজার করারই সময়
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সহমত
টুইটার
সহমত।
বাংলাদেশের বাজারে পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বইয়ের এই যে চাহিদা, এর পেছনে আছে এদেশের প্রকাশক আর বিক্রেতাদের উদার মানসিকতা, পাঠকেরও। যুগের পর যুগ ধরে তাদের বই এই বাজারে এনে এনে আমরা তাদের সুযোগ করে দিয়েছি, আমাদের সাহিত্যিকদের ঠেলে দিয়েছি প্রতিযোগিতায়
বিপরীতে আমরাও আশা করি পশ্চিমবঙ্গীয়রাও এরকম উদারতাই দেখাবে। তারাও আমাদের আকতারুজ্জামান ইলিয়াস, হাসান আজীজুল হকদের বই ছাপবে... বিক্রি করবে তাদের দোকানে। কিন্তু আমাদের উদারতাকে দুর্বলতা জ্ঞান করে তারা একে বাণিজ্যের স্বার্থে ব্যবহার করা শুরু করলো। এখন এটাকে তারা অধিকার জ্ঞান করছেন... সাধু সাধু...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নিজের গ্রাস রুট লেভেলের একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি-
এবছরের প্রথমদিকে কোলকাতার নিউমার্কেট এলাকা সংলগ্ন একটা বইয়ের দোকানে বই ঘাটাঘাটি করছিলাম। বই বিক্রেতা আমাকে বাংলাদেশী কিছু বই আর পত্রিকা দেখিয়ে বলল, "দিদি এগুলো বাংলাদেশী বই, রেয়ার কালেকশান, নিয়ে যান দিদি, কোলকাতা খুঁজে কোথাও পাবেন না"
আমার মনে পড়ে না নীলক্ষেতে বইয়ের দোকানে কখনও শুনতে হয়েছে যে, "আপা এগুলো কোলকাতার বই, নিয়ে যান, কোথাও পাবেন না।"
ওপারে যে আমাদের বইয়ের চাহিদা নেই, তা কোনভাবেই ঠিক না।
"পশ্চিম বাংলার পাঠকের দুয়ারে একটা গ্লাস ব্যারিয়ার আছে। এই ব্যারিয়ার টপকে বাংলাদেশের বই সেখানে যায় না বা যেতে পারে না। অর্থনীতি বা সমাজতত্ত্ব টেনে ব্যাপারটাকে একটা বৈধ চেহারা দেয়ার চেষ্টা করা হয়।"
- এই ব্যারিয়ার কে বা কারা তৈরি করে সেটাই পরিষ্কার না।
অটো- লেখকের লেখার অংশ কপি করার সময় নীল ব্যাকগ্রাউন্ডে কোট করা হয় কিভাবে?
আপনি যখন মন্তব্য লিখবেন, তখন লক্ষ্য করবেন উপরে কিছু আইকন রয়েছে। বাম দিক থেকে নবম আইকনটা কোটেশন মার্ক (স্টার্টিং) শো করে। সেই আইকনে ক্লিক করেলে quote কথাটা চলে আসবে ট্যাগ হিসেবে। সেই ট্যাগের মাঝে যা কিছু লিখবেন সব কোটেশন হিসেবে দেখাবে। অথবা আপনি লাইনটাকে সিলেক্ট করে আইকনে ক্লিক করতে পারে। তাহলেও একই ফলাফল হবে।
পুনশ্চ: নীল ব্যাকগ্রাউন্ডের বিষয়টা আমি বুঝি নি। আমার মনে হয়েছে আপনি কোট করার পদ্ধতি জানতে চাচ্ছিলেন। যদি এটা আপনার প্রশ্নের উত্তর না হয়ে থাকে, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে ইগনর করুন।
টুইটার
আমি এই পদ্ধতিটাই জানতে চেয়েছিলাম।
ও আর নীল ব্যাকগ্রাউন্ড আসলে ঠিক না, (নিজেকে কালার ব্লাইন্ড মনে হচ্ছে ) কোট করলে কোট করা অংশটুকুর ব্যাকগ্রাউন্ড কালারটা ভিন্ন দেখায়।
পুনশ্চঃ এটাই আমার প্রশ্নের উত্তর ইগনোর করার প্রশ্নই উঠে না।
স্বাগতম। আমার কাছে কোট করার পর ব্যাকগ্রাউন্ডটা একটু সবুজাভ মনে হয়। সে যাই হোক, সমাধান পাওয়া গিয়েছে এটাই মূল কথা। ভালো থাকবেন।
টুইটার
চাহিদা যদি থেকেই থাকে, তাহলে বাংলাদেশের বই এত রেয়ার কেন যে কোলকাতার কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে দোকানী চেঁচায়?
এক্ষেত্রে
এই আলোচনার সাথে সহমত।
ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর বহুল প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোর দিকে তাকিয়ে বলুনতো সেখানে সংস্কৃতি কোথায়! প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোতে যা দেখানো হয় তা মূলত চাকচিক্য এবং সাংসারিক কুটিলতা। আর এসব অনুষ্ঠানের দর্শক মূলত মহিলারাই। হিন্দী সিরিয়ালগুলোতে একটি ফকিরনীর চরিত্রে অভিনেত্রীর পরিধানেও থাকে গর্জিয়াস শাড়ি, গলায় মুক্তোর মালা ইত্যাদি।
এগুলো কি সত্যিই সাহিত্য-সংস্কৃতির আদানপ্রদান!
আমাদের দেশের মহিলারা অন্তরে ধারন করেন একধরনের কৃত্রিম অভাববোধ। সামর্থ নাথাকা সত্বেও তাঁরা চান চাকচিক্যপূর্ণ জীবন। তাঁরা মার্কেটে গিয়ে দামি শাড়ি, গহনা ইত্যাদি দেখে দেখে বেড়ান শুধু দেখতে ভাল লাগে বলেই কেনার জন্য নয়।
মহিলারা যাঁরা এই মানসিকতার বাইরে তাঁরা আমায় ক্ষমা করবেন। সম্ভবত বড্ড জেনারেলাইজ করে ফেলেছি।
জনাব হিমু, প্রতিবাদী লেখাটি ভাল লাগলো। কাউকে না কাউকেতো এসব বিষয়গুলোতে প্রশ্ন উত্থাপন করতেই হত।
প্রৌঢ়ভাবনা
এই মন্তব্যে তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি।হিন্দি সিরিয়ালের নেশা,মার্কেটে গিয়ে শাড়িগহনা দেখে বেড়ানোর পিছনে এই কৃত্রিম অভাববোধের তাড়নাই যদি কারণ হয় বলে দাবি করেন তবে প্রশ্ন রাখি আমাদের দেশের কত শতাংশ মহিলার হিন্দি সিরিয়ালে এক্সেস রয়েছে?কত শতাংশ মহিলা শাড়ি গহনা শুধু দেখার খায়েশে মার্কেটে গিয়ে বেড়িয়ে আসার মত সামর্থ্য রাখেন?
জেনারেলাইজ যে করেছেন সেটা যখন বুঝতেই পারছেন তাহলে এই ঢালাও মন্তব্যটি করার দরকার কী ছিল?
আমি অত্যন্ত দুঃখিত। ঝোঁকের মাথায় মন্তব্যটি করেছিলাম। আমি নকে খত দিয়ে আমার মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।
আপনাকে ধন্যবাদ।
প্রৌঢ়ভাবনা
কোথাও পড়েছিলাম যে বছরে দুই হাজার কোটি টাকা ভারতকে দিচ্ছি চ্যানেল দেখবার খরচ হিসেবে। খুব কম মহিলার এ্যাকসেস আছে বলে মনে হয় না।
জেনারেলাইজ করা হয়েছে বটে কিন্তু খুব বেশি জেনারেলাইজ করা হয়নি বলেই মনে হয়। আর যদি শহরভিত্তিক বিবেচনা করা হয় তাহলে একেবারেই জেনারেলাইজ করা হয়নি বলেই মনে হয়। ভিন্ন মানসিকতার মহিলাই বরং কম পাবার কথা। অবশ্যই নিজের চোখে দেখা বিশ্লেষন, কোন সমীক্ষার রেফারেন্স দিতে পারছিনা।
ইনডিয়ায় যাতায়ত আছে অনেক বছর ধরে। সেই বিনামুল্যে ‘লজ্জা‘ বিতরণের সময়ও সেখানে গিয়েছিলাম। পশ্চিম বাংলায় দেখেছি সেখানকার ম্যাংগো পাবলিক বাংলাদেশের সাহিত্যিক বলতে একমাত্র তসলিমাকেই চেনে। তসলিমার দুর্শায় হতাশ হয়।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
১. আজকাল বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় কোন লেখকের বই (তা তিনি বাংলাদেশের হোন আর পশ্চিমবঙ্গেরই হোন) প্রকাশিত হলে অচিরেই কিছু দুষ্টু ছেলের দল সেগুলো স্ক্যান করে ইন্টারনেটে তুলে দেয়। ফলে বইটাকে আর কোন মাড়োয়ারী বুদ্ধি দিয়েই কারো কাছ থেকে ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। কপিরাইট আইনের হাত আরো লম্বা আর শক্তিশালী হলে বইটা এভাবে বিনি পয়সায় হয়তো পড়া যাবে না, তবে পড়াটা ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের প্রটেকটিভ মার্কেট তখন প্রটেকশনের কী ব্যবস্থা নেবে সেটা দেখা যাক।
২. একই প্রকার অবস্থা হবে টিভি চ্যানেলগুলোরও। ইন্টারনেটের ব্যবস্থার উন্নতি হলে লোকে টিভি দেখার জন্য আর কেবল অপারেটরদের দ্বারস্থ হবে না। ফ্রি টু এয়ার চ্যানেলগুলো তখন দুনিয়ার যে কোন কোণ থেকেই অ্যাকসেস করা যাবে। পে-চ্যানেলগুলো কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হয়তো করা যাবে, বা কোন উপায়ে সেগুলো সাময়িক ভাবে ঠেকানো যাবে হয়তো তবে পথ পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না।
৩. ইন্টারনেট ভিত্তিক স্বাধীন মিডিয়ার যত প্রসার হবে কোটারি স্বার্থরক্ষাকারী গোষ্ঠীগুলোর পক্ষে কাউকে শিল্প-সাহিত্য পয়গম্বর বানানো আর কারো নাম-নিশানা মুছে ফেলা তত কঠিন হবে।
নানা প্রকার মিডিয়া মোঘলদের বৈশ্যচক্রের হাত থেকে সৃজনশীলতার মুক্তি আসবেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি ভাই বোকাসোকা মানুষ, রাজনীতি বা সমাজনীতি কোনটাই এতটুকুও বুঝি না। কিন্তু অপমান খুব ভালো বুঝি। কেউ আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করলে, আমার কথা নিয়ে টিপ্পনি কাটলে, কিংবা আমার বুদ্ধি নিয়ে কটাক্ষ করলে আমি মুহুর্তে সেটা বুঝতে পারি, যদি সামনে থাকা ব্যক্তি মুখ না খোলে, তবুও, যদি সামনে না থেকে এক দুইশ মাইল দূরে থেকে কিছু বলে তবুও। পশ্চিমবঙ্গের যত সেলিব্রেটির উদ্ধৃতি এখন পর্যন্ত শুনেছি বা পড়েছি, বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক কিছু পাইনি। কারো খোঁজে যদি থাকে, জানাবেন। শুধু একটি ব্যাপার মাথায় রাখবেন, দশটা অপমানজনক উক্তির বিপরীতে তিনটা ভালো কথাও যদি বের করতে না পারেন, তাহলে আর জানানোর প্রয়োজন নেই।
তার আগ পর্যন্ত, সুনীলের জন্য আরো কিছু নীল পদ্ম দিয়ে গেলুম
১. পশ্চিমবঙ্গের পাঠকের জন্য বাংলাদেশের সাহিত্যের এক্সেস খুব সীমিত। বাধাটা সুনীলদের আশীর্বাদপুষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোই।
২. পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের চ্যানেল দেখা যায় না। কিন্তু গেল সপ্তাহে ভুটান গিয়ে বাংলাদেশের এটিএন বাংলা দেখা গেল। অবাক হয়ে দেখতে দেখতে সংবাদ বিরতিতে বিজ্ঞাপন চালু হতেই দেখি বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনের উপর ভারতীয় বিজ্ঞাপন
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কোলকাতায় এটিএন বাংলার একটা ব্রাঞ্চ আছে, সেটা কোলকাতা থেকেই পরিচালিত হয়... সম্ভবত সেটা দেখেছেন আপনি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বাঙ্গালীদের মাঝে কেন জানি একটা মানসিকতা আছে যে পশ্চিমবঙ্গের লেখকেরা আমাদের চেয়ে ভাল, অথচ যারা এসব কথা বলে, তারা অনেকেই আমাদের অনেক ভাল লেখকদের বই পরেও দেখে না। শওকত ওসমান, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আবু ইসহাক এদের বই ঠিক মত পরেও দেখেনি।
আর ওদের সিরিয়াল গুলো দেখলে মেজাজ খারাপ হওয়া ছাড়া আর কিছুই হয় না! সব সিরিয়ালেই কুটিলতা, জটিলতা আর সংসারের কাউকে না কাউকে অবজ্ঞা! এভাবে সামাজিক অবস্থা, পরিবার প্রথাকে জেন ব্যঙ্গ করে চলেছে সব সময়!
facebook
সদ্য কলিকাতায় বাংলাদেশের বই নিয়ে সম্ভবত এই প্রথম একটা মেলা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে, এক সপ্তাও পেরোয়নি। বাংলাদেশের বত্রিশটি প্রকাশনির সেখানে অংশগ্রহণের কথা ছিলো। বিভিন্ন জটিলতায় শেষপর্যন্ত গেছে মনে হয় সতের-আঠারোটি। এ বিষয়ে সার্বিক প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে জ্ঞাত কেউ যদি আলোকপাত করেন তাহলে হয়তো নতুন কিছু জানার সুযোগ হতো আমাদের।
তাছাড়া সেখানে আমাদের কোন সচলবন্ধু যদি থেকে থাকেন বা সেই মেলাটিতে গিয়ে থাকেন বা এ ব্যাপারে কিছু জানার সুযোগ হয়ে থাকে তিনিও যদি এ ব্যাপারে আমাদের একটু জানাতেন, তাহলে দু'দেশের বর্তমান সাংস্কৃতিক প্রবাহ প্রবণতা সম্পর্কে কিঞ্চিৎ ধারণা পেতাম।
বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতির অঙ্গন এখন আর অতোটা নিচে পড়ে নেই যে আমাদেরকে এখনো হীনম্মণ্য হয়ে চলতে হবে। জ্ঞানের স্বাভাবিক প্রবাহের বাইরে যেকোন কাচের দেয়াল থাকলে তা ভেঙে ফেলাটাই এখন যুগের দাবী।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
তাহলে দুটো প্রশ্ন পাচ্ছি। দুটো প্রশ্নই পরিপূরক। দেখুন--
তাহলে বাংলাদেশের লেখকদের বই পশ্চিমবঙ্গে নেই কেন?
বাংলাদেশে পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বইয়ে ছয়লাব কেন?
মোটা দাগে কয়েকটি কথা বলা যেতে পারে--
পশ্চিমবঙ্গের বিষয়টা বলা যাক--
১. পশ্চিমবঙ্গে উল্লেখযোগ্য পাঠকশ্রেণী আছে। তারা নিয়মিত বই কেনেন।
২. লেখকদের মধ্যে ভালো লেখার একটি আয়োজন আছে। লেখাকে পেশাদারিত্বের মধ্যে নেওয়ার একটি সুযোগ আছে।
৩. প্রকাশকদের মধ্যে পেশাদারিত্ব আছে। তারা পাঠক সৃষ্টি করতে বিষয়ভিত্তিক বই প্রকাশ করেন। সে অনুযায়ী লেখকদের প্রয়োজনীয় যোগাড়যন্ত্র দেন। একটি স্বল্প পরিচিত লেখকের বইও যখন প্রকাশ পায়--সেটাকে পরিচিত করানোর জন্য বইয়ের ধারাবাহিক বিজ্ঞাপন, বুক রিভিউ, সমালোচনা, লেখক-পাঠক সমাবেশ করেন। একজন স্বল্প পরিচিত লেখককেও তার ভাল লেখার জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করেন।
৪. সরকারী পর্যায়ে পাঠাগার আছে। বই কেনা প্রকল্প আছে। নানা ধরনের পুরস্কার, ফেলোশীপের ব্যবস্থা আছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে--
১. বাংলাদেশের পাঠকশ্রেণীর সংখ্যা কম।
২. লেখকদের মধ্যে প্রতিভাসম্পন্ন ধীমান লেখকদের সংখ্যা হাতে গোনা। হুমায়ূন আহমেদকে বাদ দিলে পেশাদারি লেখকদের খুঁজেই পাওয়া যাবে না।
৩. প্রকাশকদের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পেশাদারিত্ব নেই। তারা শুধু ব্যবসা করতে চান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে লেখকদের ঘাড়ে বন্দুক রেখেই শিকার করার সখ। বইয়ের বাজার সৃষ্টি করার জন্য বিষয়ভিত্তিক লেখক সৃষ্টি, লেখকদের যোগাড়যন্ত্র দেওয়া, প্রকাশিত বইটির প্রচার প্রসারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ চোখেই পড়ে না। তাদের উদ্দেশ্য হুমায়ূন আহমেদ। বুক রিভিউ নাই। সমালোচনা নাই। ইত্যাদি। মফস্বলেও যে ভালো লেখক হতে পারে, তার লেখাটি প্রকাশ করার জন্য লেখককেই পয়সা কড়ির যোগান দিতে হয়, ছাপাখানায় দৌড়াদৌড়ি করতে হয়, বইমেলায় ছুটোছুটি করতে হয়, বইটি বন্ধুদের কাছে পুশ সেল করতে হয়, লেখককেই উপহার হিসাবে পাঠকদের হাতে গছিয়ে দিতে হয়, লেখকেই দুএক কপি কিনতে হয়, আর রয়ালটির কোনো প্রশ্ন আসেই না। প্রকাশক যদি এই মাগনা বইটির কোনো কপি বেঁচেনও তাহলে তা প্রকাশকের পকেটে যাবে। লেখক কার খালু। ফলে--লেখকের মধ্যে পেশাদারিত্ব গড়ে ওঠার সাহসটি আসে না।
৩. জনগণের পকেট কাটা ছাড়া বাংলাদেশে সরকারী কোনো উদ্যোগ নেই। নেই পাঠাগারের সংখ্যাবাড়ানো। আর পুরস্কারের যে হাল তা দেখে বেশ মজাই পেতে হয়। সেই কুমীরের বাচ্চার গল্প।
আপাতত এইটুকু। পরে আবার কিছু পয়েন্ট তোলা যাবে সময় পেলে।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
পশ্চিম বাংলার বাঙালী লেখকদের তুলনায় আমাদের লেখকেরা ভাল লেখেন জাতীয় কথা বলছেন অনেকে, একটা সাধারন প্রশ্ন করি এখানে, আমরা নিজেরাই তো ভাল বই বলতে পশ্চিম বাংলার লেখকদের রচিত বইকেই বোঝাই সে সাহিত্য হোক, কি দর্শণ হোক, কি সমালোচনাধর্মী কিছু হোক। মিথ্যা বলছি কি? আপনারা যারা লিখছেন তাদের বইয়ের ভান্ডারে বা পঠণের জগতে আমি বাজী রেখে বলতে পারব রাজত্ব করেছে বা এখনও করছে ওপার বাংলার লেখকদের সাহিত্য অথবা বিদেশী সাহিত্য। হুমায়ুন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলন, আনিসুল হক, জাফর ইকবাল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক। তাদের সাহিত্য-মান কেমন জানিনা। আমরা তো তাদের লেখার নাম শুনলেই ভ্রু কোঁচকাই। আমাদের অজনপ্রিয় অথচ ভাল লেখেন এমন লেখকদের বই আমরাই তো টাকা দিয়ে কিনিনা, তার চেয়ে বরং পশ্চিম বাংলার ভাল কোন লেখকের পরিচিতি পাওয়া বইটা পড়ে বুক ফুলিয়ে হাঁটি। দোষটা পাঠক হিসেবে আমাদের নয় কি?
পৃথিবীর আয়তন কতো?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শীর্ষেন্দুর 'না আকাশ না পাতাল' বইতে বেশ কয়েকবার এসেছে কিছু বাংলাদেশি প্রকাশকদের অসাধু উপায়ে ভারতীয় বই প্রকাশনার কারণে পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা। এই অভিযোগ অসত্য নয় বটেই।
তবে তুলনামূলকভাবে বেশি দাম হলেও আমি আগে শহীদুল জহির কিংবা মাহমুদুল হককেই পড়তে চাই।
টিভি দেখা-ই হয় না বহুদিন হলো। জিটিভি কিংবা স্টার জলসার সিরিয়ালগুলোতে লোকজন কী পায় কে জানে... বিশেষত আমাদের চ্যানেলগুলো ওপারবাংলায় প্রবেশাধিকার পায় না জেনেও!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
কিঞ্চিৎ অফ টপিক, কিন্তু শেয়ার করতে ইচ্ছে হল। ভারতে ঢুকবার সময় সীমান্তে গার্ডরা বলল, কোনরকম দেশি বই ম্যাগাজিন ইত্যাদি নেয়া যাবেনা। এক ভদ্রলোক একটা মাত্র ম্যাগাজিন পথে পড়বার জন্য নিতে চাইলে সেটা নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ওরা বলল, আপনি যত ইচ্ছা আমাদের বইপত্র বস্তা ভরে নিয়ে যান বা আসুন আমরা কিছুই বলব না, কিন্তু আপনাদের দেশের একটা ছেঁড়া কাগজের টুকরোও ঢুকতে দিব না ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কত্তবড় রেইসিস্ট, ফ্যাসিস্ট, কুটিল, কুলঙ্গার, anti-বাংলাদেশী শয়তান!!!
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
আমি এবছরই কোলকাতায় গেলাম, যাওয়ার সময় আমার কাঁধের ব্যাগ ভর্তি শুধু বই ছিলো, সীমান্তরক্ষীরা কেউ আপত্তি করেনি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেক দেশেই ফলমূল সব্জি নিয়ে বর্ডার ক্রস করতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া থাকে, কিন্তু বই/ম্যাগাজিন নিয়ে যাওয়া যাবেনা এটা জীবনে প্রথম শুনলাম!!!! গাঙ্গুরা এদেশে এসে যেসব বই উপঢৌকন পান, সেগুলো কী করেন তাহলে?
সময় এসেছে একতরফা বানিজ্য বন্ধ করার। দেশে উল্লখযোগ্য পরিমাণে টিভি চ্যানেলও হয়ে গিয়েছে। সুতরাং এখন সময় ভারতীয় চ্যানেল বর্জনের। সরকার না করুক, আমাদের নিজেদের-ই শুরু করতে হবে।
আমি নিজেও সীমান্তে এটা দেখেছি তবে সেটা বাংলাদেশ সীমান্তে, বিডিয়ার এসে সব পত্রিকা নিয়ে গেল বাস থেকে কারণ হিসেবে বলল দেশের তথ্য বা খবর ঐদেশে চলে যাবে!!
জাতি হিসাবে আমরা অদূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং আত্নমর্যাদাজ্ঞানহীন। এ বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
লেখায়
---------
হারিকেন
জাতি হিসাবে আমরা কি আলাদা? আমরাও তো বাংগালি।
এসব তো পাকিসথানি আমলের চিনতা ভাবনা।।
পাণ্ডব'দার মন্তব্যটি চিন্তা জাগানিয়া। এই একতরফা বানিজ্য বন্ধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় দেশীয় সংস্কৃতিকে অন্তর্জালে ছড়িয়ে দেওয়া। ইন্টারনেট ভিক্তিক প্রকাশনা (প্রকাশায়তন) করা যেতে পারে, ইন্টারনেট ভিক্তিক টিভি চ্যানেল করা যেতে পারে। আজ হোক আর কাল হোক ইন্টারনেটই মূল বিনোদন হবে মানুষের জন্যে।
"চোরের বদনাম করা সহজ, কারণ চোর আইন ভাঙে। মাউড়ার বদনাম করা যায় না, কারণ কেলোর কীর্তিগুলো সে আইন মেনেই করে।"
সহমত।
আমাদের দেশে পেশাদার সাহিত্যিকের অভাব আছে বা সাহিত্যকে পেশা হিসবে সেভাবে নেয়ার ক্ষেত্র বোধ হয় তৈরী হয়নি এখনো। ফলে লেখা হচ্ছে খুব উচু মানের বা একেবারে নীম্ন মানের। কিন্তু সামাজিক দায়বদ্ধতার যায়গা থেকে লেখা উচু সাহিত্য সব সময়ই কম। খোয়াবনামার মত উপন্যাস ফি বছর লেখা সম্ভব না। ফলে বিনোদন ধর্মী লেখা অপার থেকেই বেশি আসছে। পাঠক বেজ আমাদের থেকে বেশি হওয়াতে আগে থেকেই লেখায় পেশাদারিত্ত্বে্র সূচনা হয়েছে ওখানে। ওরা পেয়েছে অনেক পেশাদার লেখক। তবে সাহিত্য আর কতদিন প্রিন্ট নির্ভর থাকবে বা বর্তমান দাপট টিকিয়ে রাখতে পারবে তা বলা মুসকিল। নেট নির্ভর সাহিত্য জনপ্রিয় হয়ে উঠলে এপার ওপারের ব্যবধান আর থাকবেনা।
সুনীল গাঙ্গুলিদের আর কী দোষ! সামান্যতম পাবলিসিটির আশায় যখন আমাদের স্বনামধন্য লোকেরাও লুঙ্গি তুলে দাদাবাজী শুরু করে দেয়, তখন সেই সুযোগে যে কেউ এসে আমাদের তোলা লুঙ্গিতে একটু সুড়সুড়ি দিয়ে যাবে, এটাই তো স্বাভাবিক।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আসলে ওপার বাংলায় এদেশের লেখকদের লেখার কোনো কদর নেই।একটাই কারণ এই দেশের লেখকদের লেখা চাহিদানুযায়ী বা সময়পোযোগী নয়।
নতুন মন্তব্য করুন