আবুল মনসুর আহমেদ প্রণীত ‌বর্ণ পরিচয় -প্রথম ভাগ / কেবলমাত্র রাজনৈতিক শিশুদের জন্য লিখিত (বয়স্করাও পড়িতে পারেন কিন্তু গোপনে)

কর্ণজয় এর ছবি
লিখেছেন কর্ণজয় (তারিখ: বুধ, ১৯/১০/২০১১ - ১:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(দুধের) স্বরবর্ণ
- অন্যের ভালমন্দের পরোয়া করিও না; নিজের লাভ-লোকসান আগে দেখিও।
- আমদানি রফতানির আধুনিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এই যে, আমদানি মানে আমার পকেটে আমদানি; রফতানি মানে তোমার পকেট হইতে রফতানি।
- ইহকালে ইলেকশন বৈতরণী পার হইতে পারিলে পরকালে পোলসিরাতের ভাবনা থাকিবে না। অতএব ইউনিয়ন বোর্ড হইতে হাত-সাফাই কর।
- ঈমান যদি বাঁচাইতে চাও, তবে ক্ষমতায় আসীন (উলিল-আমর) দলের তাবেদারি কর।
- উপকার যত পার গ্রহণ করিও; কদাচ দান করিও না।
- ঊর্ধ্বে দৃষ্টি রাখিও; অন্তত কিছুদূর উঠিতে পারিবেই।
- ঋণ করিয়া মে¤¦র-মন্ত্রী হও। দেনা আর শোধ করিতে হইবে না।
- এন্টি-কোরাপশন পোস্ট-কোরাপন নয়। অর্থাৎ ওটা কোরাপশনের আগের ব্যাপর। একবার কোনমতে কোরাপশন করিয়া ফেলিলে এন্টি-কোরাপনের আর ভয় নাই।
- ঐক্য ঈমান ও শৃংখলা জাতির পিতার ওসিয়ত। এটা কাজের গুণের কথা নয়, কার্য-পদ্ধতির কথা। অতএব যাই কর একতাবদ্ধ হইয়া করিও।
- ওয়াদা খিলাপ করিতে কিছুমাত্র দ্বিধা করিও না। এ বিষয়ে দ্বিধা করা নৈতিক দুর্বলতার লক্ষণ।
- ঔৎসুক্য খুবই ভাল গুণ। কিন্তু ক্ষমতায় আসীন লোকদের সোর্স-অব-ইনকাম স¤¦ন্ধে ঔৎসুক্য প্রকাশ করিও না।

(বেগুনের) ব্যাঞ্জনবর্ণ
- কনট্রোল শপ ও কন্ট্রাক্ট হাতে রাখিয়া কমিউনিজমকে কষিয়া গাল দিও। কন্স্টিটিউশন রচনার কোনো কারণ থাকিবে না।
- খলিফা ওমরকেই আদর্শ রাখিবে বটে, কিন্তু খরচপত্রে বাগদাদের খলিফাদেরই অনুসরণ করিবে।
- গণ্ডারের চামড়ার মত গায়ের চামড়া করিও। মে¤¦রগিরি নিশ্চয় স্থায়ী হইবে।
- ঘন ঘন ভোটারদের কাছে যাইও শুধু ইলেকশনের আগে; ইলেকশনে জিতিয়া গেলে আর ও-মুখী হইও না।
- চতুর্দ্দিকে শত্রু; এখন হৈ-চৈ করিয়া রাখিও। মন্ত্রী হইলে কাজে লাগিবে।
- ছাত্রসমাজকে ছত্রভঙ্গ করিতে ভুলিও না; নইলে ওরা মে¤¦র-মন্ত্রীদের ছক্কা-পাঞ্জা করিয়া ছাড়িবে।
- জনসাধারণের নামে কথা বলিও; কিন্তু মন্ত্রীদের নামে জিন্দাবাদ দিও; জঞ্জাল পোহাইতে হইবে না। কারণ জনসাধারণ বলিয়া সত্যিই কোন জীব নাই।
- ঝড়-ঝঞ্ঝা যে মাঝে মাঝে হয়, তা’ আল্লাহর গজবের ঝাপ্টা নয়Ñ রহমতের ঝর্ণা। কারণ তাতে রিলিফ কার্যের সুবিধা হয়।
- টেন্ডার দিলেই কন্ট্রাক্ট পাওয়া যায় না; টিপও দিতে হয়।
- ঠকবাজিতে গাঁ উজাড় করিবার ঠাট দেখাইও না। কারণ তাতে মেজরিটিকে ঠাট্টা করা হয়।
- ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের উপর ডাট নজর রাখিও; কারণ ওখানেই রাজনৈতিক পরীক্ষার ডবল প্রমোশন।
- ঢাক পিটাইবার লোক রাখিও; কারণ প্রপ্যাগাণ্ডা পাবলিসিটি গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হইলেও তার ঢোল বাতাসে বাজে না।
- তহবিল কখনো তছরূপ হয় না; হাত ফেলিতে তোমারটা আমার হয় মাত্র।
- থলিয়া জগতে মাত্র একটি, সেটি আমার থলিয়া। ওটি ভরিলেই দুনিয়া ভরিল।
- দল বা পার্টি মানে একই উদ্দেশ্যে কতিপয় লোকের একত্রিত হওয়া,Ñ যথা জয়েন্ট স্টক কোম্পানী। স্টক যদি জয়েন্ট না থাকে, তবে দলত্যাগ করিতে একমুহূর্ত বিল¤¦ করিও না।
- ধন মানে, দওলত, দওলত মানে রাজত্ব। রাজত্বের মালিক রাজা। কিং ক্যান ডু নো রং। অতএব ধনীর কোনো অপরাধ নাই।
- নিজামে ইসলামের কথায় মুখে খই ফুটাইও; ইসলামের পন্থা বাদ পড়িলেও নিজামের পন্থা বাদ পড়িবে না।
- পারমিটের পরিকল্পনা যতদিন আছে, ততদিন পাটের দাম না থাকিলেও চলিবে। কারণ পারমিটটা তোমার; আর পাটটা কৃষকের।
- ফটকা বাজার বাঁচাইয়া রাখিও। গদি যদি নিতান্তই হাতছাড়া হয়, তবে ওখানেই কপাল ফাটিবে।
- ব্যালট বাক্সে বিশ্বাস রাখিও না, বাস্তব বুদ্ধি অনুসারে বাজেটের ব্যবস্থা করিও।
- ভোট একটা কাঁচা মাল। যে দামেই কিননা কেন, ঠিকমত ফিনিশ করিতে পারিলে উচ্চ লাভে বিক্রয় করিতে পারিবে।
- মন্ত্রী হইতে চাহিলে আগে মিউনিসিপ্যালিটি ও ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডে হাত মক্শ কর।
- যন্ত্রযান যত পার আজ করিয়া লও; হায়াত-মওত আল্লার হাতে। যশ ও যম যমজ-ভ্রাতা। তারা ওৎ পাতিয়া বসিয়া আছে।
- রাষ্ট্রভাষা উর্দ্দু হইলে আমাদের কোনো অসুবিধা হইবে না; কারণ ছেলেবেলা হইতেই বাড়ির পাশের জঙ্গলে ‘ক্যা হুয়া’ ‘ক্যা হুয়া’ শুনিয়া আসিতেছি।
- লবণের সের ষোল টাকা হওয়ায় কি আর এমন অসুবিধা হইয়াছে? লবণ না হইয়া চাউলের সের ষোল টাকা হইত হবেই অসুবিধা হইত। কারণ চাউলের চেয়ে লবণ অনেক কম লাগে।
- শাসন যারা করিতে জানে, তাদের কোনো শাসনতন্ত্র লাগে না। যেমন চিনা বামুনের পৈতা লাগে না।
- ষড়দর্শন মানে ঢাকা দর্শন, করাচি দর্শন, লন্ডন দর্শন, ওয়াশিংটন দর্শন, লেক-সাকসেস দর্শন এবং বাড়ি ফিরিবার পথে মক্কা দর্শন।
- সরকার যখন জাতীয় সঞ্চয়ের (ন্যাশনাল সেভিং-এর) কথা বলেন, তখন স¥রণ রাখিও, তুমিও জাতির অংশ; অতএব তোমার আয়ই জাতির সঞ্চয়।
- হতাশ রাজনীতিকরাই ইলেকশনের জন্য হৈ-চৈ করিয়া থাকে। হতভাগাদের কথায় হাঙ্গামা করিও না। হতবাক্ হইতে হইবে।
- নিজ বংশধরের অংশ সংগ্রহে অপর অংশীদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতে অথবা দেশ ধ্বংস করিতে কদাচ শংকা করিও না।
- দুই হরফের মধ্যে বিসর্গ বসিলে পরের হরফের শক্তি ডবল হয়। অতএব তোমার পুত্রকে তোমার চেয়ে দোর্দ্দণ্ড-প্রতাপ করিতে চাহিলে বাপ-বেটার মধ্যে একটা বিসর্গ বসাও।
- চন্দ্রবিন্দু মানে চাঁদের ফোঁটা। চাঁদ থাকে আসমানে। ফোঁটার স্থান কপালে অথচ চন্দ্রবিন্দুর উচ্চারণ নাসারন্ধ্রে। অতএব তোমার নাকের উচ্চতা থাক না থাক, ঘ্রাণশক্তি থাকিলেই হইল।

এই বর্ণমালা গ্রন্থখানি অদ্যকালে আর সহজে খুজিয়া পাওয়া যায় না। তখনও রাজনৈতিক শিশুত্বপ্রাপ্ত হই নাই, কেবল বয়সের শিশুকাল ছাড়িয়াছি মাত্র। বালকবেলার শেষকালে মনের ভেতর যে যুবা যুবা ভাব জাগিত - সেই যুবককালেই আগামীদিনের রাজনৈতিক শিশুর হাতে এই বর্ণমালা পড়িয়াছিল। রাজনৈতিক শিশুত্ব অনুশীলন করিতে না করিতে কোন এক অর্বাচীন মালিকানার টানে উহা দিকচক্রবাল অতিক্রম করিয়া স্মৃতির মনিকোঠাতে আসন গাড়িয়া জুল জুল করিতে লাগিল- কিছুতেই আর সেখান হইতে তাহাকে পাড়িয়া নামানো গেল না। আমারও আর রাজনৈতিক সাবালকত্বলাভ ঘটিল না।

এরপর রূপকথার গল্পে যে লেখা থাকে- তাহার পর অনেক অনেকদিন কাটিয়া গেল।
এক আত্মীয়ের বাটি গিয়াছি। আত্মীয়ের বাড়ি সভ্যতার ত্রিসীমানার যে সীমান্তরেখা তাহার এক বিঘত বাহিরে। বিজলীর আলোতো নাইই এমনকি মোবাইল নেটওয়ার্কের ফাঁড়াও ওখানে নাই। তাই ওখানে যাওয়া মানে নির্ঘাত স্বর্গপ্রাপ্তি। সেই স্বর্গলোভে ওখানি গিয়াছি। এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিয়া মহিষের ন্যায় চড়িতে লাগিলাম। আর সন্ধ্যা হইলে তাহার পুরোনো একখানি বইয়ের আলমিরা আছে – তাহা উল্টাইয়া পাল্টাইয়া কোন একটা কিছু হাতে লইয়া পৃষ্ঠা উল্টাইতে উল্টাইতে নিদ্রাদেবীর প্রেম কামনা করিতাম। এই চলছিল। কিন্তু স্বর্গসুখ কপালে বেশিদিন সইলো না। ফেরার সময় হইয়া আসিল। বাক্স পেটরা বাধিয়া ছাদিয়া প্রায় রেডি হইয়া আছি- আলমিরার দিকে শেষবারের মত দৃষ্টিপাত করিতেই বাছাধন খল খল শব্দে হাসিয়া উঠিল। এইবার পাইয়াছি তোমাকে’ – রাজনীতিতে আমার সাবালকত্ব অর্জন ঠেকাইবি কে- এমন ভাবখানায় বেশ গদগদ হইয়া গ্রন্থখানা বগলদাবা করিয়াছি আমার আত্মীয় আত্মার নিকুচি করিয়া হাহা রব তুলিয়া ছুটিয়া আসিলেন। যতই তাহাকে বুঝাইবার চেষ্টা করি – এই বইখানা যাহা তুমি দেখিতেছো তাহা শুধুমাত্র দেহ। এর আত্মাপ্রবর আমার মণিকোঠায় আশ্যয় লইয়াছেন। তাহার অভাবে তোমার এই বইখানা শূধুমাত্র একটা এপিন্ডিটাইসিস। আত্মার অভাবে বইখানা শুষ্ক মরুভূমির ন্যায় কাঠ হইয়া আছে। তুমি উহা ছাড়িয়া দাও। তাহারা মিলিত হইয়া সুখে শান্তিতে বাস করিতে থাকুক। কিন্তু কাহাকে কি বলি- সহস্র অনুনয় বিনয় উপদেশেও তিনি কিছুতেই ইহাকে হস্তবিগত করিতে রাজী নন। শেষ পর্যন্ত কি আর করা। অবশেষে বিরস নয়নে পৃষ্ঠাগুলোর দিকে তাকাইয়া তাকাইয়া হাতখানা ব্যাথা করিয়া আদি ও অকৃত্রিম কাগজেই বর্ণমালাগুলি টুকিয়া লইলাম। এইটুকু পরিশ্রমের বিনিময়েও তাহাতে যদি আত্মার সহিত দেহের মিলন ঘটে। ওরা সুখী হয়। আমিও রাজনীতিতে সাবালকত্বপ্রাপ্ত হই। সদগতি হয়। কিন্তু হাতখানা এত টনটন করিয়া উঠিল যে বুঝিলাম - আমি বৃদ্ধ হইয়া গিয়াছি। আমার আর হইবে না। আমার হইবে না তাহাতে কি? তাই বলিয়া যাহারা পারিবে তাহাদিগদের শিক্ষারহিত করার কোন অধিকার আমার নাই... তাই-


মন্তব্য

দুর্দান্ত এর ছবি

আহমদ ছাহেবের কথা সুন্দর ও কিছুটা কালজয়ীও।
সমস্যা একটাই তিনি কারাবদ্ধ যুদ্ধপরাধীদের 'অতীতের ভূলচুক' মাফ করে দেয়ার পক্ষপাতি ছিলেন। ৭২-৭৪ সালের ইত্তেফাকে তার সম্পাদকীয়/কলাম গুলি দ্রষ্টব্য।

ঐ- এর জাতির পিতা কিন্তু কায়েদে-আযম, সুতরাং খিয়াল কইরা।

কর্ণজয় এর ছবি

ধন্যবাদ দূর্দান্ত। আবুল মনসুর আহমেদের রাজনৈতিক অবস্থানটি গোচরে আনার জন্য। যদিও এই পোস্টটি আবুল মনসুর আহমেদের রাজনৈতিক অবস্থানের কথা বিবেচনা না করেই পাঠানো। এ পোস্টটির বিবেচনাবোধটি ছিল শুধুই তার লেখার আঙ্গিক আর বিষয়টিকে তুলে ধরার প্রকাশভঙ্গির বৈশিষ্ট্যগুলো আর একবার সবার সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য। আবুল মনসুর আহমেদের প্রতি সন্মান জানানোও আমার ভেতরে কাজ করেছে।
কেন?
এমন একটা সমাজ যখন স্যাটায়ারকে সহ্য করে উঠতে পারে না - সেই রকম একটা সমাজে একজন লেখক রাজনৈতিক স্যাটায়ারের ভাষা তৈরী করার চেষ্টা করেছেন- তার প্রতি সন্মানটুকুই আমি জানানোর চেষ্টা করেছি।
তবুও এই বিষয়টি যখন উঠেছে- এ নিয়ে আলোচনার অবকাশ রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। বিশেষত আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে।
আবুল মনসুর আহমেদের পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক শক্তিকে দেখার যে ভঙ্গি - সেটি আপনি যেমন প্রত্যাখ্যান করে আপনার যে অবস্থান তার সাথে আমার যে অবস্থান তার খুব একটা ফারাক নেই।
কিন্তু তবুও স্বাধীনতা বিরোধী যে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির কাতারে আমি তাকে সবসময় অন্তর্ভূক্ত করতে পারি না। সবসময় শব্দটি আমি ব্যবহার করলাম এই কারণে - দ্বিজাতিতত্বের ভিত্তিতে যে বাঙ্গালী মানস গড়ে উঠেছিল তার দোদূল্যমানতা সেই সময়ের অনেক স্বাধীনতার সংগঠকের মধ্যেও অনেকের ছিল। সম্ভবত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানও এর ঊর্দ্ধে নন। এ কারনেই যাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে এবং এদেশীয় সহযোগী ছিলেন না- কিন্তু পাকিস্তানী রাষ্ট্র কাঠামোর ভেতরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভেতর দিয়ে পশ্চিম এবং পূর্ব পাকিস্তানের সমস্যা মেটানো সম্ভব ছিলো বলে বিশ্বাস করতেন তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুকে বেশকিছু ভূমিকা নিতে আমরা দেখেছি। বঙ্গবন্ধু তাদের হৃদয়টাকে বুঝতে পেরেছিলেন কারণ তিনিও শেষ পর্যন্ত একজন বাঙ্গালী মুসলমান হিসেবে ভাবতেন। আমরা বিভিন্ন ভাষণে - এমনকি স্বাধীনতার পরে মুক্ত স্বদেশে প্রথম ভাষণে তার সুর শুনতে পাই। তার আবেগ জর্জরিত কণ্ঠে উচ্চারিত- আমি মুসলমান, একবারই মরে বারবার মরে না... শব্দগুলো আমরা কান পাতলে এখনও শুনতে পাই।
বাঙ্গালী মুসলমানদের এই চেতনা থেকে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালী চেতনার জন্ম নিয়েছিল তার সাথে একাত্ম হতে অনেকেই পারেন নি। বিশেষত তারা- যারা পাকিস্তান আন্দোলনের সাথে নিজেদের স্বপ্ন এবং সংগ্রামকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন। এটি একটি মানবিক সীমাবদ্ধতা।
কলিম শরাফীর সাথে শেষ সাক্ষাতে- একটি গল্প বলছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়কালীন স্মৃতি। অবিভক্ত ভারতবর্ষের বামপন্থী আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন বলে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের ভারত সরকার কলিম শরাফীকে পশ্চিমবঙ্গেও নকশাল আন্দোলনের সহানুভূতিশীল ভেবে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছিল। এই রকম এক সময়ে তিনি কলকাতার এক নিম্নবিত্ত মুসলমান এলাকায় কিছুদিন আত্মগোপন করেছিলেন। এক বিকেল বেলায় তিনি ঘুমিয়ে আছেন, এক মহিলার আর্ত-চিৎকারে তার ঘুম ভেঙে গেল।
“আমি কই যামুরে- আমার আর যাওয়ার জায়গা নাই- হায় আল্লাহ”
কলিম শরাফী ভাবলেন- নিশ্চয়ই মহিলার স্বামী কিংবা সন্তান মারা গেছেন, আমাদেও মায়েরা শুধূমাত্র স্বামী কিংবা সন্তানের মৃত্যূতেই এই রকম আর্তনাদে ভেঙে পড়েন। কিন্তু একটু পরে জানা গেল- তিনি কাঁদছেন - বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার খবর শুনে। তিনি ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমান- সংখ্যাগুরুর অথ্যাচারে পাকিস্তান নামটি ছিল একটা কাল্পনিক আশ্রয়ের মত। যদি তিনি মুসলমান হিসেবে ভারতে টিকে থাকতে না পারেন- তাহলে সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে চলে যাবেন। এখন পাকিস্তান ভেঙ্গে গিয়ে বাংলাদেশ হলো- কিন্তু বাংলাদেশতো তার মানসিক আশ্রয় হতে পারবে না। আবার হাজার হাজার মাইল দুরে - ভিন্ন ভাষার, ভিন জাতির পাকিস্তানও -তার কাছে ঠিকানা মনে হয় না। পাকিস্তান তার মধ্যে কোন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। তাই আশ্রয় হারানোর যে বেদনায় তিনি আর্তনাদ করে উঠলেন - এই আর্তনাদ অনেক সৎ বাঙ্গালী মুসলমানও ভারতভাগের রক্তাক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বহন করে চলছিলেন। এদের মন এবং মানসিকতার রেখাপাত ঘটেছিল সেই সময়ের রাজনীতিতে- রাজনৈতিক চিন্তায়। তাই যুদ্ধ যখন শেষ হলো- আমরা স্বাধীন হলাম- ঐ মানসিকতার অনেক রাজনীতিবীদ যাদের বিরুদ্ধে সরাসরি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করার অভিযোগ ছিল না- কিন্তু চিন্তায় পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিলেন, তাদেরকে ক্ষমা করার কথা অনেকেই বলেছিলেন।
আমি জানি আবুল মনসুর আহমেদ সেই সময়ে এই রকম ক্ষমার বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু একটি বিষয় বিবেচ্য- ১৯৭২- ৭৪ সালে তিনি এই বিষয়টি তুলছেন, তার মানে স্বাধীনতার পক্ষে তার অবস্থান না থাকলে অšত— নিজের স্বচ্ছ্বতা ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষের প্রবলতম সংবাদপত্র- ইত্তেফাকে ঐ রকম কলাম লেখা বোধহয় সম্ভব ছিল না। এটি আমার অনুমান। ভুল হতে পারে। আপনি নিশ্চয়ই আরো ভাল জানবেন।
আমি আবারও বলছি- আপনি যা বলছেন, তার সাথে আমার এতটুকু দ্বিমত নেই। নিশ্চয়ই আমাদের সচেতন থাকতে হবে। যেন আমরা আবার ভুল না করি। আমাদের অন্ধত্বের সুযোগ যেন প্রতিক্রীয়াশীলরা নিতে না পারে। কিন্তু সচেতন থেকে যদি ভাল থেকে মন্দকে আলাদা করে তাকে বর্জন করে আর ভালটুকুকে আমরা গ্রহণ করতে পারি- তবেই নিজেদের গড়ে তুলতে পারবো।
আপনাকে ধন্যবাদ- আমাদের সচেতন করে তোলবার জন্য।
মঙ্গল হোক সবার।

[পুনশ্চ : ঐ - এর জাতির পিতা কায়েদে আযম ছিলেন, এটি তার সময়ের সত্য। আমরা সেটি পার করে এসেছি- ৭১ সালে। আমরা একটা পুরনো সময়ের লেখা পড়ছি এবং নামটা বিবেচনা না করলে বক্তব্য এবং বাস্তবতা এখনও প্রাসঙ্গিক]

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আহমদ ছাহেবের এক পুত্রের নাম মাহ্‌ফুজ আনাম - ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক। এই সব বিষয়ে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গ্রুপের অবস্থান ও ভূমিকা স্মর্তব্য। প্রায়ই তাদেরকে একটু ঘুরিয়ে forget, forgive and reconciliation-এর কথা বলতে দেখা যায়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

anind1981 এর ছবি

ইনি হচ্ছেন সেই লোক যিনি পাক-বাংলার প্রসারের লক্ষ্যে বাংলার সংস্কৃতি থেকে
বাঁশী কেও বাদ দিতে চেয়েছিলেন ।
পাক-বাংলার কালচার নামে তার বইটি ছিল পাকিস্তানি বাদের বাইবেল ।
এই ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার পাকবাদী গুরু, যদিও আওয়ামী লীগ করতেন,
মুলতঃ ছিলেন দ্বিজাতিতত্বের হোতা ।
এর হাত থেকে মুক্তিই ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ।
যদিও ৭৫ পরবর্তিকালে দ্বিগুনবেগে দ্বিজাতিতত্ব ফিরে এল ,
আমরা পুনরায় মুসলমান হলাম- অন্য ভাষায় বাংলাদেশী ।

কুলদা রায় এর ছবি

হাসি

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

কর্ণজয় এর ছবি

শুধু আবুল মনসুর আহমেদেই নয়, অবিভক্ত ভারতবর্ষে অনেক মুসলমান প্রগতিশীল ব্যক্তিত্বই দ্বিজাতিতত্বের ঘোরে পড়েছিলেন। আবুল হাশিম তার একজন উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
আপনার হয়ত জানা আছে পাকিস্তান পর্বের প্রথম যুগে যখন রবীন্দ্রনাথকে পাকিস্তানী ভাবধারার পক্ষে ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্ণিত করে মুসলিম বাংলার একটি সাহিত্য সন্মেলনের প্রথম দিন আবুল হাশিম পরিচালনা কার্যে অংশ নিয়েছিলেন। সেইদিনই এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাঙ্গালী সংস্কৃতি কর্মীরা। দ্বিতীয়দিন আবুল হাশিম রবীন্দ্রবিরোধী সম্মেলনে তার বক্তব্য পাঠ করলেন পবিত্র কোরআন তেলওয়াত দিয়ে। এবং এরপরে তিনি রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা (সুরাটি এবং রবীন্দ্রনাথের কবিতাটির নাম এই মূহূর্তে স্মরণ করতে পারছি না বলে ক্ষমাপ্রার্থী) আবৃত্তি করে বললেন- সুরাটির এর চেয়ে ভাল মর্মার্থ আর হতে পারে- তিনি বিশ্বাস করেন না। এবং যিনি এই কবিতা রচনা করতে পারেন তাকে পাকিস্তান যে আদর্শেও উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার জন্য ক্ষতিকারক এটি তিনি বিশ্বাস করেন না। তিনি রবীন্দ্রনাথের পক্ষে অবস্থান নিলেন।
গোটা পাকিস্তান পর্বে আমরা এরকম অনেক ঘটনা লক্ষ্য করি যার মধ্য দিয়ে বুঝতে পারি সময়ের সাথে সাথে বাঙ্গালী মনের রূপান্তর ঘটে যাচ্ছিল একটা ঐতিহাসিক প্রেক্ষিতের ভেতর দিয়ে। এটা কারো ক্ষেত্রে খুবই ধীর গতিতে ঘটেছিল- এবং কারো ক্ষেত্রে খুব দ্রুত পরিল্লিখিত হচ্ছিল। আমরা যেকোন সময়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষন করলে দেখি - সেই সমাজে দুটি মত বিপরীত অবস্থানে মুখোমুখি দাড়ায় – কিন্তু এর বাইরে একটি অংশ এই দুই মতাদর্শের যে মিথস্ক্রিয়া পর্ব সেখানে অংশগ্রহণ করে। সাধারণত এই গোষ্ঠী বিপ্লবী বা দ্রুত পরিবর্তনের পরিবর্তে একটি সামাজিক প্রগমণের স্বাভাবিক ধারাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে কাজ করেন। এরা কোন পক্ষে অবস্থান নিলেও সেটা সাংঘর্ষিক হয় না। এরা সাধারণত সামাজিক ভারসাম্যমূলক অবস্থা তৈরীতে অংশগ্রহণ করেন। দেখা যায় এই সমােিজ ক্রিয়াশীল দুই প্রান্তিক দুই গোষ্ঠীর কাছ থেকেই তারা তিরষ্কার লাভ করেন। আমার বিবেচনায় আবুল মনসুর আহমেদ এই রকম একটি মধ্যপন্থী অবস্থানে অংশ নিয়েছেন- যার কারনে তাকে দুইদিক থেকেই বিশ্লেষন করা সম্ভব। একই কথা খাটে ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলো এই দুই পত্রিকার চরিত্রের ভেতর। এরা একটা ভারসাম্যমূলক এবং অসাংঘর্ষিক উপায়ে সমাজের প্রগমণ ধারাকে নিয়ন্ত্রিত করতে চায়। সমাজের সকল শ্রেণীমতকে বিবেচনা করে এরা এদের অবস্থান ঠিক করে। যেই কারণে এরা যুদ্ধ অপরাধীদেও বিচারের কথাও বলে আবার এর সুষ্ঠ প্রক্রিয়াকে নিশ্চিত করার কথা বলতে গিয়ে মনে হয় বিচারের পথটাকেই মন্থর করে দিতে চাইছে। এরা আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে- এবং একই সঙ্গে বিএনপির বিরোধিতা করে। এরা আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেয় আবার কিছু ক্ষেত্রে বিএনপিরও অবস্থান নেয়। কিন্তু সাধারনভাবে এই পত্রিকাদুটোর অবস্থান দেখি তাহলে দেখবো - বিএনপি কিংবা পাকিস্তানপন্থী মানুষের কাছে প্রথম আলো গ্রহণযোগ্য যদিও তারা বলে এটি আওয়ামী লীগপন্থি। এই আওয়ামী লীগ পন্থি হিসেবে তাদেরকে চিহ্ণিত করার কারণ হিসেবে কিন্তু বলা যায় এই পত্রিকাদুটো খুব কৌশলে পাকিস্তানপন্থী যেই সামাজিক শক্তি তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। প্রথম আলো এবং ডেইলি ষ্টার যে কৌশলে কাজ করছে সেখানে একটি ক্যামোফ্লেজ রাখার দরুণই কিন্তু এই মানুষেরাও এই পত্রিকা দুটোকে অস্বীকার করতে পারছে না।
সামাজিক আন্দোলনের ইতিহাসে এই ধারাটি সবসময়ই ক্রিয়াশীল ছিল। এই ধরণের অবস্থান যারা নেন তারা আলাপ- আলোচনা এবং প্রচলিত মূল্যবোধকে আঘাত না করে কৌশলে তাদের অবস্থানের পক্ষে কাজ করে যায়। এই অংশে স্বাভাবিকভাবে দুই মানসিকতার অবস্থান থাকে। বঙ্গবন্ধু এবং অনেকেই পাকিস্তান কাঠামোর মধ্যে বাঙ্গালীর অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্পষ্ট যুক্তি ছিল- পাকিস্তান আমরা কেন ভাঙবো? সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ কখনও আলাদা হতে চায়? সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ (অর্থাৎ বাঙ্গালীরা) তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারলেই গোটা পাকিস্তান শাষণ করতে পারে। এই বিবেচনাবোধ থেকে তিনি অপেক্ষা করেছেন শেষ মূহূর্ত পর্যন্ত। যখন বাঙ্গালীকে তার গণতান্ত্রিক অধিকার দেয়া হলো না- এবং সেই সম্ভাবনাটুকুও আর রইলো না তখনই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিলেন। মূলত তার সারজীবনের সংগ্রামই ছিল গণতান্ত্রিক পদ্ধতি প্রবর্তনের সংগ্রাম। এইদিক থেকে আমরা আবুল মনসুর আহমেদ এর অবস্থানকেও প্রায় একরকম দেখি। প্রতিষ্ঠিত দ্বিজাতিতত্বের বিরুদ্ধে না গিয়ে তিনি কথা বলেছেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং চেতনার। তার পাক বাংলার কালচার বইটি দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমার পড়া হয়ে ওঠে নি। আমি ঠিক জানি না কোন সময়ে এবং কোন প্রেক্ষাপটে তিনি এটি রচনা করেছিলেন। কিন্তু তিনি যেই প্রেক্ষিতে কাজ করতেন সেই প্রেক্ষিতে যারা কাজ করেন প্রায় দেখা যায় তারা তাদের আদর্শগত অবস্থার বিপরীতে কৌশলে অবস্থান নেন। তাজউদ্দিন আহমেদেও মত একজন মানুষের একটি দূর লক্ষ্য ছাড়া দ্বিজাতিতত্ত্বের উত্তরাধীকার মুসলীম লীগজাত আওয়ামী লীগ করার কারণ খুজে পাওয়া যায় না।
আবুল মনসুর আহমেদকে নিরপেক্ষভাবে দেখলে দেখা যায় এই সময়কার কোন প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি তাদের পক্ষে তার লেখাকে ব্যবহার করতে কিংবা তাকে তুলে ধরতে দেখিনি। বরঞ্চ আমার জীবনে তার গ্রন্থগুলো- আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর – কিংবা রাজনৈতিক রম্যরচনাগুলোকে প্রগতিশীলদেরই পড়তে দেখেছি।
এ বিষয়ে এটি আমার ভাবনা। এই পোস্টটি যে তার মূল লক্ষ্য হারিয়ে ফেলে একটি নতুন খাতে প্রবাহিত হচ্ছে – তার কারণেই কথাগুলো বলা। নতুবা আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি – এশটি সুন্দর লেখা- একটি সুন্দর কবিতা- একটি সুন্দর সৃষ্টিকর্ম যা মানুষের মনন, চিন্তাকে সুন্দর করে তোলে তা কে এটি সৃষ্টি করলো তাকে অতিক্রম করে যায়। আর একটু সাহস নিয়ে বলি- আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন অন্ধহৃদয়ের মুক্তিযোদ্ধার চাইতে কবি ফররুখ আহমেদের সান্নিধ্যই কামনা করবো।

কল্যাণF এর ছবি

কর্ণদা আমি আপনার যুক্তির তীব্র প্রতিবাদ করছি। প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে ৭১ এ জামাত পাকিস্থান রক্ষার পক্ষে ছিল। তারা যা করেছে তা একজন পাকিস্থানীর করা উচিত মনে করে করেছে। এখন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের বিবেচনায় তারা বাংলাদেশে রাজনীতি করছে, তাহলে আপনার যুক্তিতে ওদেরো ছাড় দিতে হবে? অ্যাঁ

কর্ণজয় এর ছবি

কল্যাণFদা,
আমার মনে হয় আমাদের মধ্যে কোন বিরোধ নেই।
যতটুকু ভিন্নতা মনে হচ্ছে...
আমার বিশ্বাস সময়ের সাথে তা কেটে যাবে।

তানিম এহসান এর ছবি

খুব আগ্রহভরে মন্তব্যগুলোর অগ্রসরমানতা খেয়াল করছি।

 তাপস শর্মা  এর ছবি

হাসি ব্যাপক। খুব ভালো লাগল কর্ণজয় দাদা।

কর্ণজয় এর ছবি

...

উচ্ছলা এর ছবি

ভালো লেগেছে। খুব।
মন্তব্যগুলো থেকেও অনেক কিছু জানলাম।

তারেক অণু এর ছবি

সুতরাং খিয়াল কইরা।----

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।