মদিনা ট্রাভেলস এর অফিসের এক কোনায় জবুথবু হয়ে বসে থাকা লোকটাকে নিয়ে ট্রাভেলসের ম্যানেজার আকরাম খুব ঝমেলায় পড়েছে। সপ্তাহে দুইবার করে লোকটা আসছে আর সারাদিন বসে থাকছে। এইভাবে চোখের সামনে মূর্তিমান ঝামেলা ঘুরঘুর করলে কাজে মন বসেনা। লোকটার নাম জামশেদ, বছর পঁয়তিরিশ বয়স। জামশেদ কথা বলার চেষ্টা করলে আকরাম কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়, নয়তো ফোনে কথা বলা শুরু করে, নয়তো উঠে বাইরে চলে যায়। তারপরও এই লোক নিয়মিত আসছে, সারাদিন বসে থাকছে। এই ঝামেলার আজকেই একটা সুরাহা করবো ভেবে আকরাম জামশেদকে ডাক দেয়।
-হু বলেন আপ্নে কি ঠিক করলেন?
-আপ্নে আমার ট্যাকা ফেরত দেন।
-ক্যান কুয়েত যাবেন না?
-আপ্নেরে ট্যাকা দিয়া রাখছি আইজ চাইরমাস, আর কুনদিন যামু? আপ্নে আমারে ঘুরাইতেছেন হুদাই। ভাই আমার ভিসা লাগব না, আপ্নে ট্যাকা ফিরত দেন।
-ভিসা তো আছে আমার হাতে। আপ্নের পরিবাররে পাঠায়ে দেন, বাসাবাড়ির কাজ করতে। ট্যাকা ফেরত দেন বললেই কি দেয়া যায় নাকি? আপ্নের বেতনের চে আপ্নের বউ বেশি বেতন পাবে।
-নাহ পরিবাররে পাঠাইতে পারুমনা, বাল-বাচ্চা আছে ঘরে। আমার ট্যাকা দেন।
এই পর্যায়ে আকরামের অসহ্য লাগে। কি মিয়া ট্যাকা দেন ট্যাকা দেন লাগাইছেন? যান ঐখানে যায়া বসেন, এয়ারলাইনের ম্যাডাম আসতেছে আমি উনার সাথে কথা সাইরা নেই। সে সময় মদিনা ট্রাভেলসের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে নুসরাত। জামশেদ আগেও এই মহিলাকে দেখেছে, বাপরে কতো বড় অফিসার!
নুসরাত ঢুকতে ঢুকতে বলে কেমন আছেন আকরাম ভাই? বাইরে যা গরম...
- আপনি কোট-ফোট পরে আছেন গরম তো লাগবেই বলতে বলতে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নেয় নুসরাতকে।
-কি করবো বলেন, ইউনিফর্ম তো পরাই লাগে। মনে মনে বলে কোট-ফোট পরে আছি তাতেই তুই যেভাবে তাকাচ্ছিসরে শিয়ালের বাচ্চা শুধু শার্ট পরে এলে কি করতি আল্লাই জানে। মুখে বলে আকরাম ভাই আমার প্যাসেঞ্জার আপনি অন্যদের দিয়ে দিচ্ছেন কেনো?
-আপনাকে তো দিতেই চাই কিন্তু অন্য এয়ারলাইনে রেট কম পেলাম ।
- আপনি আমাকে গ্রুপ দেন, আমি সবচে বেশি ডিসকাউন্ট দেবো।
-কতোজন হলে গ্রুপ হবে?
-অন্তত পনেরোজন।
-পনেরোজন কই পাবো? পাঁচজন করেন, আমি গ্রুপ দেবো।
-নাহ অন্তত দশ না হলে গ্রুপ হবেনা আর আমি স্পেশাল ফেয়ার নিতে পারবোনা। আপনার হাতে ভিসা আছে আমি জানি।
-একটা গ্রুপ আছে সত্যি। নয়জন ঠিক করেছি, একজন পাওয়া যাচ্ছেনা। পেলে আপনাকে দেবো।
- ভিসা কেনার লোক পাচ্ছেন না? বলেন কি? কী ভিসা?
-হাউজ ওয়ার্কার মহিলা। আর বইলেন না, ভিসা দেন ভিসা দেন বলে সবাই জ্বালায়ে মারে। কিন্তু হাউজ ওয়ার্কার মেয়ে পাচ্ছিনা আমি। এই দেখেন ঐ লোকটা আমার জান পানি করে দিচ্ছে ভিসার জন্য। কিন্তু বউরে পাঠাবে না।
-আহা আমাদের দেশে এটাই তো স্বাভাবিক। আচ্ছা আকরাম ভাই গ্রুপটা ম্যানেজ হলে আমাকে জানাবেন।
-জানাবো ম্যাডাম জানানো। আপনাকে এতো প্যাসেঞ্জার দেই আপনিতো আমাকে কিছু দেননা বলে কুৎসিত একটা হাসি দেয়।
নুসরাত ব্লেজারটা টেনে নিয়ে বলে ‘কিছু দেইনা বলতে পারলেন আপনি? আপনাদের এইবার লন্ডন পাঠাবো আকরাম ভাই’। আকরাম সেইরকম পিচ্ছল হাসি দিয়ে বলে সেটাতো আপনার কোম্পানি দেবে, আপনি কী দেবেন।
নুসরাত বলে ছোটবোন বড়ভাইকে আর কী দিতে পারে বলেন?
আকরাম মনে মনে বলে মাগী কাজের কথায় এলে ভাই, ভাইয়া বলে গলে পড়ে যায়। খালি প্যাসেঞ্জার দাও, প্যাসেঞ্জার দাও কিন্তু বাইরে কোথাও বসতে বললে বা কোনো ইঙ্গিত দিলে শুধু পিছলে যায়।
মদিনা ট্রাভেলস থেকে বেরিয়ে নুসরাতের হালকা লাগে। ঐ আকরাম কীটটার সামনে বসে থাকা একটা শাস্তির মতো। নীচে নেমে দেখে ট্রাভেলসের কোনায় বসে থাকা লোকটা সিঁড়ির গোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। নুসরাত একটু হাসে। এগিয়ে যায় লোকটার দিকে।
-ভাই আপনি কতো টাকা দিয়েছেন?
-আপা, সাড়ে চাইরলাখ।
-ইশ! এখন কী বলে আপনাকে?
-আপা আমার নামে ভিসা আনছে কিন্তুক পরে চাইরলাখ আশি হাজার ট্যাকায় আরেকজনের কাছে বেইচ্চা দিছে। অখন আমার ট্যাকাও দেয়না, কয় আমার বউরে বলে বিদেশে পাঠায় দিতাম।
-আপনি এতোগুলো টাকা দিয়ে দিয়েছেন এরা লোক ভালোনা, টাকা ফেরত দেবেনা। দুইবছরের জন্য আপনার বউকে পাঠিয়ে দেননা? কি ভাই আমি চাকরি করছি না?
-আপা বাচ্চারা ছোট বুঝছেন...আমার মায় ও রাজি হইবোনা।
-আমার ও ঘরে ছোট বাচ্চা আছে। শোনেন এতোগুলো টাকা এরা যদি ফেরত না দেয় আপনার তো বিপদ হবে। আপনি ভেবে দেখেন।
এয়ারলাইনের ম্যাডামের কথা জামশেদ তার বউ কোহিনুরের সাথে আলাপ করে। কোহিনুর প্রথমে হাসে ‘আমি বিদেশ যামু চাকরি করতে?’ পরে তার খুব লজ্জা লাগে আর গর্ব হয়। বাসাবাড়ির কাজ, ধোয়ামুছা, ঘরদোর পরিস্কার করার কাজতো সে পারবে। আর ওখানে কাজ এতো কঠিণ না, মেশিন আছে সব কিছু করার জন্য!
জামশেদের মা যায় রেগে। যতোটা না নাতি-নাতনির দুঃখে তারচেয়ে বেশি ছেলের মেরুদন্ডহীনতায়, তারচেয়েও বেশি ছেলের বউয়ের সৌভাগ্যে। তার ছেলেটা একটা কী? ব্যাটা মানুষ এমন হয়? বাইরে মুখ দেখাবে কী করে? নিজে বাচ্চা পালে আর বউ বিদেশে চাকরি করে এমন আজব ঘটনা সাতজন্মে কেউ শুনেছে কোনদিন! আর হারামজাদী বউটা বাপের বাড়ি থেকে একপয়সা আনেনাই, ভিটা বিক্রি করে বিদেশ যাবার টাকা যোগাড় করলো ছেলে আর সেই হারামজাদী বিদেশ গিয়ে চাকরি করবে?
বাচ্চারা নেচে উঠে। মা থাকবেনা এটা তারা বুঝেনা। তারা বুঝে মা বিদেশ থেকে নানানরকম খেলনা পাঠাবে,তারা পেটভরে খেতে পারবে,ইশকুলে তাদের মর্যাদা কতো বেড়ে যাবে।
দুসপ্তাহ পরে নুসরাত আবার মদিনা টাভেলসে গেলে জামশেদ, কোহিনুর আর তাদের তিনবছর বয়সী ছেলের সাথে দেখা হয়ে যায়। নুসরাত দেখে কোহিনুর মায়ামায়া চেহারার গ্রামের মেয়ে। বয়স নুসরাতের সমান বা হয়তো কম ই হবে।
নুসরাত জিজ্ঞেস করে আপনার কি এই একটা বাচ্চা?
-না আপা আমার বড় দুইটা মাইয়া আছে, বাড়িত রাইখা আসছি।
-কি নাম আপনার মেয়েদের?
-মৌসুমী আর শাবনুর ।
-বাপরে সব দেখি নায়িকাদের নাম। আপনার মেয়েরা কি নায়িকাদের মতো সুন্দর নাকি? নুসরাত ছোট ছেলেটার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে ‘আর তোমার নাম কি’?
-শাকিব।
- ‘শাকিব খান’?
-নাক টেনে বাচ্চাটা বলে ‘না শাকিব আল হাসান’।
-বাব্বাহ।
নুসরাতের খুব ভালো লাগে। আমাদের দেশে অনেক পরিবর্তন আসছে। ভাবা যায় গ্রামের একটা মেয়ে বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছে। তার স্বামী অমত করছেনা। একটু গর্ববোধ করে সে। সেদিন অমন করে বোঝানোতে কাজ হয়েছে হয়তো।
পরের সপ্তাহে নুসরাত খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সেলস রিপোর্ট,কম্পিটিটর অ্যানালাইসিস, মার্কেটিং স্ট্রাটেজি দুনিয়ার হাবিজাবি রেডি করে। সবচে বেশি প্যাসেঞ্জার দেয়া পাঁচটা ট্রাভেল এজেন্সির মালিক আর ম্যানেজারদের লন্ডনে ফান ট্রিপে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানিয়ে লেটার লিখে কান্ট্রি ম্যানেজারকে। মদিনা ট্রাভেলস এই পাঁচজনের একজন। নুসরাতের হঠাৎ’ মনে পড়ে মদিনা ট্রাভেলসের গ্রুপটার কথা। সে রিজার্ভেশনে ফোন করে গ্রুপের সব ডকুমেন্ট চায়। গ্রুপভিসায় ভেজাল হয়, দেখা যায় একজন দুজনকে এদিক সেদিক করে দেয় রিক্রুটিং এজেন্টরা। ভিসা করলো একজনের নামে তো বেশি টাকা পেয়ে বেঁচে দিলো আরেকজনের কাছে। নুসরাত এইজন্য সব ফাইল করে রাখে। মদিনা ট্রাভেলস এর কাগজগুলোতে চোখ বুলাতে বুলাতে সে আর কাগজগুলোর অর্থ বুঝে উঠতে পারেনা । তার ভেতরে শুরু হয় অস্থিরতা।
নুসরাত ফোন করে আকরামকে। আকরাম ভাই আপনি দশজন মেয়ের যে গ্রুপটা দিলেন তারা ঐখানে কী কাজ করবে? আপনি বললনে হাউজ ওয়ার্কার, আমি দেখছি এদের আর্টিস্ট হিসেবে রিক্রুট করেছে একটা ক্লাব! এর মানে কী? আপনি আমাকে বুঝিয়ে বলেন তো বিষয়টা কী?
- ম্যাডাম বুঝিয়ে বলার কি আছে। ঐখানে ক্লাবে নাচগান করবে।
-এরা নাচগান করবে কি, এরা এসব কিছু জানে? এরা আসলে সেক্স ওয়ার্কার?
-আপনি এতো কিছু জেনে কি করবেন? আপনার প্যাসেঞ্জার দরকার, আমি প্যাসেঞ্জার দিয়েছি। এখন বলেন আপনি আমাকে কী দিচ্ছেন?
নুসরাতের মাথা ঘুরে উঠে। চোখের সামনে ভেসে উঠে কোহিনুর,জামশেদ আর শাকিবের চেহারা। নুসরাত হঠাৎ’ বুঝতে পারে নিজের অজান্তে কতোবড় অন্যায় সে করেছে। সে নিজেই না জামশেদ কে বুঝিয়ে রাজি করেয়েছিলো?! সে না ভেবেছিলো দেশ কতো বদলে গেছে?!
মন্তব্য
চিন্তা করতে বাধ্য করে এমন টপিক। লেখাটা গুছিয়েছেনও সুন্দর। অভিনন্দন।
অনেক ধন্যবাদ।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
আপনার লেখ সবসময়ই ভালো লাগে
ধন্যবাদ আয়ন।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
কী নিখুঁত আর প্রাঞ্জল ভাষায় পুরো বিষয়টি এঁকে দিলেন!
মুগ্ধতার ইন্টেনসিটি মাপার যন্ত্র থাকলে দেখতেন আপনার এই লেখায় আমার মুগ্ধতা চরমের উপর দিয়ে চরম!
কেমন আছেন? বাচ্চারা ভালো তো?
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
উচ্ছলা যে অল্পতেই বেশি উচ্ছল হয়ে পড়ে তা দেখতে পাচ্ছি!
ভালো আছি। আপনার লেখা পড়তে অনেক ভালো লাগছে।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
দিহান জাস্ট অসাধারণ
অসংখ্য ধন্যবাদ।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
চমৎকার!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ,ধন্যবাদ।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
চমৎকার।
সম্ভব হলে ফরম্যাটিং এর সমস্যাগুলো ঠিক করে নেবেন। একটু প্যারা ব্রেক থাকলে পড়তে সুবিধা হয়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হুমম ফরম্যাটিং এর সমস্যা চোখে পড়ছে, ঠিক করে নেবো।
ধন্যবাদ।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
খুব অচেনা বিষয় নয়, তবু ধাক্কা খেলাম, যদিও সেটা উচিত হয়নি। এতদিনে তো চামড়া মোটা হয়ে যাওয়া উচিত ছিল !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
চামড়া মোটা হয়না আশালতা। প্রতিনিয়ত ধাক্কা খাই,তবু হয়না।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
আপু, আজ এসে একদম ঠিক করে নিয়ে আপনার লেখা সবার শেষে পড়লাম। ভিন্নতার ছোয়া খুব খুব ভালো লাগলো - প্রয়োজনীয় একটা বিষয় তুলে ধরেছেন। দেবশিশুদের জন্য আদর আর আমাদের হাতিল ফার্নিচারের ভক্ত ভাইয়ার জন্য শুভেচ্ছা
ইশ এই ছেলে দেখি কিচ্ছু ভুলেনা!
ভালো থাকবেন।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
যদিও একটি বহুল আলোচিত বিষয়। পরিবেশনটাওতো একটা আর্ট। সেটাই আপনি খুব সুন্দর ভাবেই করেছেন।
খুবই ভাল লেগেছে।
প্রৌঢ়ভাবনা।
অনেক ধন্যবাদ।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
facebook
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
(গুড়)
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
নুসরাত এতদিন ধরে এয়ারলাইন্সে কাজ করে আর এধরনের ঘটনা আঁচ করতে এতো সময় লাগলো?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নুসরাত বেশিদিন এয়ারলাইন্সে কাজ করতে পারেনি। এধরনের ঘটনা দেখে টিকতে পারেনি।
(নজরুল ভাই, আমি মধ্যপ্রাচ্যের একটা এয়ারলাইনে কাজ করতাম। ভয়ংকর সব অভিজ্ঞতা নিয়ে একবছর পুরো না করেই সরে গেছি।)
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
নিচের একটা মন্তব্যে দেখলাম আপিই নুসরাত...
এরকম অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে গুছিয়ে একটা লেখা দিতে পারেন...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লিখবো আশারাখি। অন্তত মধ্যপ্রাচ্যের আরবদের যেমন দেখেছি সেটা লিখবোই।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
ভালো লেগেছে। "আদম পাচারে" যে কি পরিমাণ অব্যবস্থাপনা চলছে!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ধন্যবাদ সজল।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
ধারণা করছিলাম যে এরকম কিছুই হবে। খারাপ কিছুর ক্ষেত্রে ধারণাগুলোই সত্য হয়ে ওঠে। এরকমই তো চলছে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনি ধারনা করতে পেরেছিলেন? আমি পারিনি...
(এটা একটা সত্যি গল্প, বলতে পারেন আমিই এই গল্পের নুসরাত।)
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
ভাজে ভাজে কেবল ভেজালের দায় সাড়া
পরিচ্ছন্ন্নতা
ঘুন পোকা থেকে যায় আরো অদূর কোন শক্তি
চিন্তা কিংবা ক্লান্তির ফাক ফোকড়ে।
ইদানিং কেবল ক্লান্তিটাই লাগে... আর ভাজের অন্তরালে ঘুন পোকারা আবিরাম কারুকাজেই ব্যাস্ত।
লেখাটির জন্য কৃতজ্ঞতা।
ধন্যবাদ।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
এইসব আকরামদের কবে যে শিক্ষা হবে নাকি আদৌ হবেনা? এই দেশের নিয়ম কানুন আর ভালো লাগে না। কোন মনিটরিং/ সুপারভিশন নাই। যার যা ইচ্ছা তাই করতেছে। কিন্তু এর কি কোন সমাধান নাই?
আমরা শুধু সমস্যা গুলো নিয়ে আলোচনা করি কিন্তু সমাধান কি? এইটা নিয়ে কি আলোচনা করতে পারি না? এত সমস্যা আর ভালো লাগে না। মন খারাপ হয় খুব। আর কি ই বা করার আছে আমার অথবা আমাদের। আমরা তো একটা বৃত্তের ভেতর আটকে গেছি।
-সুলতান
একটা কথা বলতে ভুলে গেছি। দিহান, আপনার লেখাটা অনেক সুন্দর হয়েছে।
আসলেই আমরা বৃত্তবন্দি।
ধন্যবাদ সুলতান।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
বহু বহু বছর ধরেই এই ভাবেই এই উপমহাদেশের কোহিনুর'রা পাচার হচ্ছে।
আকরামদের ঠেকানোর কোনো রাস্তাই নেই! 'অভাব' নামক এক ভয়ঙ্গকর আস্ত্রের কাছে ঘায়েল কোহিনূর জামশেদরাই আকরামদের বুক ফুলিয়ে এগিয়ে যাওয়ায় সাহায্য করে।
আর আমরা, কাকের মত চোখ বুজে ভাবি, এই সব অনাচার দেখার দায় আমাদের নয়, সরকারের।
খুব জানতে ইচ্ছা করছে, শেষ মেষ কোহিনুরের কি হয়েছিল। সে কি বিদেশ গিয়েছিল, আর্টিষ্ট হয়ে?
সে চলে গিয়েছিল...
এই মেয়েগুলো এরপর হারিয়ে যায় সাধারনত। স্বামীরা বিয়ে করে, মেয়েগুলো বাচ্চাদের জন্য টাকা পাঠানো বন্ধ করেনা। যতোদিন ভিসার জটিলতা না হয়, আর দেশে ফিরেনা...
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
এরকম অনেক ঘটনা ঘটছে। এটা আসলেই ভাবনার বিষয়।
জনশক্তি রপ্তানিতে ভয়ংকর সব অন্যায় হয়। ভেবে কিছু হবেনা...
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
বাস্তববর্তী লেখা..
ভাল লাগলো....
তবে একবার মনে হয়েছে- নুসরাত তো আগে থেকেই কাজ করেন ... তার নিশ্চয়ই জানার কথা মেয়েদের মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর নামে কি হয়... তার কি কোহিনুরকে পাঠানোর কথা জামশদেকে এভাবে বলতে পারে...
আমার পড়ার সময় প্রথমে মনে হয়েছিল... সে বোধহয় ওদেরই একজন...
পরে অবশ্য মনে হলো - না হতেও পারে ...
নুসরাত ওদের একজন না। তবে এয়ারলাইনের লোকেরা ট্রাভেল এজেন্টদের উপর অনেকটাই নির্ভর করে বলে অনেক অন্যায় দেখেও দেখেনা। অনেকে আবার অন্যায়ের সহযোগি ও হয়ে যায়। বিশেষ করে একজনের ভিসায় আরেকজনকে পাঠানোর সময় এয়ারলাইনের এয়ারপোর্ট অফিসের প্রত্যক্ষ সাহায্য লাগে। সব ম্যানেজ হয়ে যায় টাকা দিয়ে!
মধ্যপ্রাচ্যে অনেক মেয়ে কিন্তু গৃহকর্মী হিসেবে আছে। শ্রিলঙ্কান মেইড দের খুবই কদর সেখানে, আমি দেখেছি সেখানে গিয়ে। যারাই যাচ্ছে সবাই কিন্তু সেক্স ওয়ার্কার হয়না, এইখানে ভুল বোঝাবুঝি হয়না যেনো। অনেক মহিলা আছেন গৃহকর্মীর কাজ ই করেন।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
দিহান আপুর "আ ম্যাজিকাল জার্নি" পড়তে এসে সচলে নিবন্ধন করেছিলাম গত মাসে। দিহান আপুকে বলছি, আমি আপনার ফ্যান নই, উইন্ডমিল। লিখে চলেন আপু, আমি পড়তে থাকি
ইশ কী যে বলেন, আমি লজ্জায় বাঁচিনা...
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
ব্যাপারটি জানার পরে আপনি কোহিনূরকে এবং অন্যদেরকে সতর্ক করতে পারেননি কেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই ঘটনায় আমার চোখ খুলে দশটা মেয়ের গ্রুপটা চলে যাবার পর।
সাধারনত কাগজপত্র সব দেখে রিজার্ভেশন। মার্কেটিং শুধু সংখ্যা দেখে। যেমন, অমুক ট্রাভেলস এই সপ্তাহে এতো প্যাসেঞ্জার দিলো। ওদের কাগজপত্র দেখার দরকার ও পড়েনা কখনো কখনো, কারন বড় বড় ট্রাভেল এজেন্সি কে আগেভাগেই টিকেটের লট দিয়ে দেয়া হয়।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
পড়েই দিশেহারা লাগছে আপু। কি ভয়াবহ........................
আপনার অভিজ্ঞতা থেকে আরো কিছু লিখুন।
যাতে এমন কাউকে সামনে পেলে সাবধান করে দিতে পারি।
মানুষ কিভাবে এই সব ট্রাভেল এজেন্টদের বিশ্বাস করবে।পত্রিক্য় ব্লগে লিখা পড়ে এদের জন্য শুধু সমবেদনাই দেখাতে পারি কিন্তু এদের জন্য কিছুই করা হয়ে উঠেনা।
পড়তে পড়তে আমার মনে যেই কথাটা এসেছি সেটা হচ্ছে, বাহ! দিহান তো মারাত্মক গল্প লেখে!! মন্তব্যে এসে বুঝলাম গল্প আপনার নিজের চোখেই দেখা। লিখেছেন খুব সুন্দর, খুবই প্রাঞ্জল বর্ণনা।
নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে আরও লিখুন। প্রতিকারের সম্ভাব্য কিছু যদি জানা থাকে সেগুলোও শেয়ার করুন।
চমৎকার।
সবাইকে ধন্যবাদ।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
চমৎকার লেখা দিহান
নতুন মন্তব্য করুন