জীবনের সাথে মেগাসিরিয়ালের অনেক মিল আছে। প্রথম মিলটা হচ্ছে দৈর্ঘ্যে। দুটোই বিরক্তিকরভাবে লম্বা, প্রায় সারাজীবন ধরেই চলে। দ্বিতীয় মিলটা হচ্ছে দুটোই মোটামুটিভাবে বোরিং। এভাবে খুঁজলে আরও অনেক মিল পাওয়া যায় কিন্তু সবচেয়ে বড় অমিলটা হচ্ছে সিরিয়ালগুলোর কাহিনিতে গিঁট লেগে যাওয়ার পরে হাতে নিদেনপক্ষে সাতদিন সময় পাওয়া যায়। অর্থাৎ নায়িকার অন্য ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যাবে, ঢং ঢং শব্দের সাথে নায়কের মুখের ক্লোজ-আপ দেখিয়ে ওই পর্বটা ওখানেই শেষ করা যায়। জীবনে সেই সব সুযোগ নেই – যেটা করার সেটা প্রায় তড়িঘড়ি করেই করতে হয়।
"আব্বু ক্যান আই প্লে উইথ ইয়োর আইফোন?"
বাসায় বসে একসঙ্গে পাঁচটা কাজ করছি। এই সময়ে বাচ্চাদের শান্ত রাখার জন্য টিভি ছেড়ে রাখা হয়। টিভির প্রচুর কুফল আছে কিন্তু বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখার মতো মহান কাজটা যে এই বাক্সটা প্রতিদিনই করে যাচ্ছে সেটাও স্বীকার করা উচিত। তবে ইদানীংকালে টিভির চেয়ে অনেক “কুল” জিনিসপত্র আবিষ্কার হয়েছে। প্রযুক্তির সবচেয়ে ভালো ব্যবহারকারী শিশুরা, তাই ডেস্কটপ, ল্যাপটপ এইসব আর মেয়েদের কাছে ভালো লাগে না - ওদের প্রিয় খেলনা এখন স্মার্টফোন। আইফোন নিয়ে টুকটাক করাটা বর্তমানে সবচেয়ে প্রিয় কাজ ওদের।
আইফোন ব্যবহার করতে দিতে আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে। ব্যাপারটা বাচ্চাদের কাছে ব্যাখা করলে হয়ত বোঝানো যাবে - কিন্তু সেই ক্ষেত্রে হাতের কাজগুলোর কী হবে? আমার জীবনের মেগাসিরিয়ালের ডিরেক্টর আমি নিজ হলে ঠিক এইখানে একটা পর্ব শেষ করতাম অথবা নিদেনপক্ষে একটা বিজ্ঞাপন বিরতি নেওয়া যেত।
আমার নীরবতাই সম্মতির লক্ষণ মনে করে মেয়ে দ্রুত আইফোন হস্তগত করে। ইউটিউবে মাঝে মাঝে শুনতে পাই বাচ্চাদের গানের কলি। হঠাৎই স্পঞ্জববের মুখে চার অক্ষরের পাপী শব্দ ভেসে আসে। নিমেষেই টনক নড়ে আমার। বিভিন্ন কার্টুন দৃশ্যের শব্দগুলো সম্পাদনা করে যথেষ্ট পরিমাণ আপত্তিকর শব্দযুক্ত ক্লিপ ছড়িয়ে আছে নেটজুড়ে।
চিলের মতো ছোঁ মেরে কেড়ে নিতে হয় ফোন।
"নো মোর আইফোন – ওকে...তোমরা তোমাদের গেম খেলবে, ডোন্ট প্লে উইথ মাই ফোন...দিস ইজ নট অ্যা টয়..."
"বাট ইউ প্লে উইথ ইট অল দ্য টাইম..."
কথাটার মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ সত্য লুকানো আছে। আমি আইফোনে নিয়মিত খেলাধূলা করি। দাওয়াতে গেলে বিরক্তিকর আলোচনা থেকে দূরে থাকার জন্য ই-মেইল, ফেসবুক, সচলায়তন, বিডিনিউজ সবই চেক করি। এতো ভালো খেলনা আমার জীবনে আগে কখনোই জোটে নি। জবস সাহেব কী মারাত্মক কাজটাই না করেছেন।
নবীর চিনি খাওয়ার গল্পটা আমরা সব্বাই জানি, নিজে আচার শিখে অন্যকে শেখাতে হয়। সেই নিয়মে বাচ্চাদের আইফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিতে হলে প্রথমে আমাকে এই যন্ত্র থেকে দূরে থাকতে হবে। নাহ...সেটা সম্ভব নয়। আমি এইবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের লাইন ধরি। আইনসভার ধার না ধরে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির জারি করা অধ্যাদেশ – আর কেউ বিরুদ্ধাচারণ করলে জেলদণ্ড। ব্যাপারটা মোটেও জটিল নয়।
"ওকে - দিজ ডিসকাশন ইজ ওভার – নো মোর প্লেইং উইথ আইফোন..."
আমি “আইফোন ব্যবহার অধ্যাদেশ-২০১১” জারি করি বাসায়। এই আইনবলে ১৮ বছরের নিচের কেউই মোবাইল ফোন ধরার অধিকার রাখে না। এটার ব্যতিক্রম হলে শাস্তি হচ্ছে টাইম-আউট।
শিশুদের প্রতিটি ব্যাপার বুঝিয়ে নিবৃত্ত করতে গেলে ২৪ ঘণ্টার দিনে কাজ হবে না - অন্তত পঞ্চাশ-ষাট ঘন্টা লাগবে। সেই জন্য যখনই দরকার তখনই একটা করে অধ্যাদেশ জারি করি। আজকে “টয় শেয়ারিং অ্যাক্ট ২০১১” আগামীকাল “খাদ্য অপচয় রোধ অধ্যাদেশ ২০১১” - নানান অগণতান্ত্রিক আইন জারি করতে হয়।
"ইট ইজ নট ফেয়ার..." মেয়েদের কাঁদোকাঁদো প্রতিক্রিয়া।
সেটা তো আমরা সবাই জানি। আঙ্গুল সোজা করে ঘি ওঠানোর ব্যবস্থা থাকলে বিধাতা আঙ্গুল বাঁকা করার ব্যাপারটাই রাখতেন না। আমরাও সুবোধ বালকের মতো সোজা আঙ্গুল নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম, প্রয়োজন হলেও কাউকে শুধু মাঝের আঙ্গুল বা বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করতে পারতাম না।
সোজা আঙ্গুলে ঘি ওঠে না বলেই তো এতোসব ঝামেলা। কী বলেন আপনারা?
“ভালো কাজ করলে সেটার জন্য পয়েন্ট জমা হবে - খারাপ কাজ করলে সেই পয়েন্টগুলো কাটা যাবে...বছরের শেষে সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীর জন্য হয়েছে আকর্ষণীয় পুরস্কার..." মেয়ের স্কুলের টিচারের কাছ থেকে এই আইডিয়াটা পেলাম।
সত্য বলতে এই রকম আইডিয়াটা আমাদের ধর্মেও আছে। আমাদের ডান কাঁধে এবং বাম কাঁধে দুইজন স্বর্গদূত বসে আমলনামা লেখেন - সেটা সেই ছোটবেলা থেকেই শুনেছি। ভালো কাজ লেখা হয় ডান দিকে আর পাপগুলো লেখেন বাম দিকের স্বর্গদূত। ছোটবেলায় আমাদের ধারণা ছিল বামদিকের দূতের প্রায়ই লেখার কালি “শর্ট” পড়ে, তখন ডানদিকের জনের থেকে কালি ধার নিতে হয়।
মেয়ের স্কুল থেকে ফিরে এসে আমারও ইচ্ছে হলো এই নিয়ম বাসায় চালু করার। এতে ভালো এবং খারাপের ব্যালান্সটা ভালোমতো বোঝা যাবে। গণিত ছিল দেখেই আজকে আমরা সবকিছু মাপতে পারছি। এই নিয়ে একটা আইফোন “অ্যাপ” লিখে পেটেন্ট করে ফেললে কী রকম হয়? নাম দেব “আমলনামা” - বেসিক এডিশন ফ্রি ডাউনলোড আর প্রিমিয়ামের জন্য ৯৯ সেন্ট। নিজের পিঠ নিজেই চাপড়ে দিলাম।
ঠিক হলো যে প্রতিটি ভালো কাজের জন্য পাঁচ পয়েন্ট এবং প্রতিটি খারাপ কাজের জন্য মাইনাস পাঁচ। সচলের লেখার নিচে তারার দেওয়ার মতো। পঞ্চাশ পয়েন্ট পেলে সেটাকে এয়ারলাইন্সের মাইলেজের মতো খেলনাতে রূপান্তরিত করা যাবে।
"ক্যান ইউ প্লিজ থ্রো দিজ...ইয়ে মানে...কলার চোকলা...ইন দ্য ট্র্যাশ?" অতিকষ্টে ইংরেজিটাকে সেকেন্ড গিয়ার পর্যন্ত নিতে পারি আমি।
আমলনামার লোভে দুই মেয়েই ছুটে আসে...
"লেট মি থ্রো ইট..."
সব খেলার মতো কলার খোলস ময়লার ঝুড়িতে ফেলার খেলাতেও একজন মাত্র বিজয়ী। বিজয়ী কন্যা জিপিএ পাঁচ মাত্রার হাসি দিয়ে বলে...
"আব্বু আই গট ফাইভ পয়েন্টস, রাইট?"
পরাজিত কন্যা দূরে দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। কী আর করা...তাকেও একটা কাজ দিতে হয়।
"ক্যান ইউ ব্রিং মি দ্য...বাদামের কৌটা?" ইংরেজিটাকে এই জীবনেও সাইজ করা গেল না।
পয়েন্ট নিয়ে রেষারেষির বাইরেও আরেকটা সমস্যা দেখা দিল।
"আব্বু আই এইট অল মাই ভাত টুডে...ক্যান আই গেট টেন পয়েন্টস ফর ইট?"
দেখা গেল ছোট-বড়-মাঝারি সব কাজের জন্যই পয়েন্ট দাবি করে বসছে তারা। নিত্যনৈমত্তিক প্রতিটি জিনিসের বিপরীতেই পয়েন্ট চাইছে এবং পয়েন্ট ছাড়া কোনো কাজ করতেই ইচ্ছুক নয় কেউ।
এইভাবে চললে প্রতি দিনই ষাট-সত্তর পয়েন্ট হয়ে যাবে। মুদ্রাস্ফীতির মতো অবস্থা। বাধ্য হয়েই আমাকে ব্যবস্থা নিতে হয়। যেই খেলনা আগে পঞ্চাশ পয়েন্টে পাওয়া যেতো, সেটার জন্য মূল্য ধারণ করা হলো দুইশ। পয়েন্টের প্রাবল্য যতই বাড়ছে ততই কমছে তার ক্রয়ক্ষমতা। এই ভাবে চললে একটা আইসক্রিম খেতে গেলেও একমাসের পূণ্য লাগবে। নাহ...আগের ব্যবস্থায় ফিরে যাবো ভাবছি, মাসে একটা খেলনা...একদম রেগুলেটেড মার্কেট। বলেছিলাম না - রাজনীতি থেকে অর্থনীতি সবই আছে এই শিশুপালনে?
আর দেরি কেন? আজই দলে নাম লেখান।
মন্তব্য
এমনে যে দলে টানতে চান, বলি সরকারী সাহায্য না পেলে কেম্নেকী! আইন করলেই হবে! আইন পালনের জনগন লাগবে না? তাই বলছিলাম, মানে ইয়ে, সেই যে কবে একবার জিজ্ঞেস করছিলেন পাত্রী লাগবে কিনা! সেই বিষয়ে তো পরে আর উচ্চবাচ্য করলেন না!
লেখা সম্পর্কের আর কী মন্তব্য করব! খালি পুরোনো অভিযোগ করে যাই, শিশুপালন এতো ছোটো কেন! জীবনের মতো শিশুপালনও লম্বা হোক...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সমস্যা হচ্ছে ধূগো। সিনিয়ার লোক লাইনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে জুনিয়ারদের কিভাবে সাহায্য করি? এইটা তো আর মন্ত্রীত্ব না যে দৌড়ের কম্পিটিশন করে নিয়োগ দেওয়া হবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হে হে হৈছে তাহলে আর বিয়া।
খিক-খিক-খিক!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ডুপ্লি ঘ্যাচাং
হা হা।
পিচ্চিদের কাছে আইফোন যে কি জিনিস! গত সপ্তাহে কাজিনের বাসা থেকে ঘুরে আসলাম, সব ক'টা পিচ্চি মিলে আমার আইফোন দখলে নিয়েছিলো। একটা আবার জিজ্ঞেস করে, "উইল ইউ বাই মি অ্যান আইপ্যাড অন মাই বার্থডে?"।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হুম। এগুলো সবই বাচ্চারা খেলনা মনে করে। আমার মেয়েও একটা আইপড চেয়েছে তার বার্থ ডে তে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
অচিরেই দুই কন্যা অকুপাই বাপের অফিস কর্মসূচি হাতে নেবে বোঝা যাচ্ছে।
আশা করি গান-বাজনা হবে সেই কর্মসূচিতে
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
তাসনীম ভাই, কোডিং কি শেষ ? তাহলে দুই কান্ধের ফেরেশ্তাদেরকে (বিশেষকঅরে বাম কাঁধেরজনকে) একটু ছুটি নিতে বলতাম। বেচারারা বোধহয় ক্লান্ত হয়ে গেছে। অপেক্ষায় থাকলাম লিঙ্ক এর
আপনার পিচ্চি দুইটাকে আমার পক্ষ থেকে ১০০ পয়েন্ট করে বোনাস দিয়ে দিয়েন। ওরা না থাকলে তো আমরা এই চমৎকার শিশুপালন থেকে বঞ্চিত হতাম। আর মানুষকে নির্মল আনন্দ দেয়ার চেয়ে ভাল কাজ আর কি হয় বলেন!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ধন্যবাদ কবি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হা হা। পয়েন্ট সিস্টেম না করে আমি সাজেস্ট করবো চয়েস অফার করতে। মানে দুইটা কাজের মধ্যে কোনটা করতে চায় তা বাছাই করতে দিতে পারেন। বইয়ের কথা বললাম। তবে স্কুলে বাচ্চাদের উপর ভালই পজেটিভ প্রভাব পড়ে। কারণ পয়েন্ট সিস্টেমটা একটু ঘুষ দেবার মত ব্যাপার।
বাচ্চাদের জন্য অনেক শুভাষিস রইল।
পয়েন্ট সিস্টেমের ত্রুটিটা আমি নিজেও বুঝতে পারছি। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
(গুড়) (লম্বা লম্বা)
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এখনকার বাচ্চাগুলো সাংঘাতিক!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আসলেই
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বাচ্চাদের আইফোন প্রীতি নিয়ে আর কি বলব! বিগত চার বছর আমার বাচ্চাপালনে কাটছে। এখন মনে হয় এর আগে কী করে সময় কাটিয়েছি? এই বাচ্চাগুলা ছাড়া জীবন তো একেবারেই পানসে।
একদম ঠিক কথা
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
কিছুদিন আগে নেটে একটা জোকস দেখলাম। যতদূর মনে আছে, বাসার সোফায় এক পিতা তার দুই কন্যা এবং এক পুত্র সমেত বসে আছেন। পিতার গালে দুই হাত ঠেস দেয়া, চাহনি অত্যন্ত বিষণ্ন। পুত্রের কানে হেডফোন আর হাতে i-pod, ছোট মেয়ের হাতে i-pad, আর বড় মেয়ের কানে i-phone। তিনজনের মুখেই দিগ্বিজয়ের আনন্দ। এদিকে পিতার নিরুপায় খেসারত, i-paid!!!!!
একমাস না, আরও স্বল্প সময়েই আপনি সেই পিতার স্থলাভিষিক্ত হউন...এই কামনা করি...আমল-নামায় না আমল-উঠানোয় জোয়ার বইয়ে দিক আপনার কন্যাগণ
অতীত
ধন্যবাদ অতীত।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমিও পয়েন্ট সিস্টেমের ভুক্তভোগি... আমার বড় মেয়ে তার নিজের মগে পানি না খেয়ে বাপের বড় মগে পানি খেয়ে আমার কাছে বেশি পয়েন্ট দাবি করেছে! তার লজিক 'আমি বাবার মগে করে বেশি পানি খেয়েছি'!!
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
পয়েন্ট সিস্টেম কাজের নয়।
অন্য কোন সিস্টেমে কাজ দিলে জানিয়েন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
নিধি এখন নিজে নিজে ল্যাপটপ ছেড়ে গেম বের করে খেলতে পারে, পেইন্ট বের করে আঁকতে পারে, কার্টুন ছেড়ে দেখতে পারে... মায়ের মোবাইলে গান না শুনে ঘুমাতে পারে না... সব নিজেই পারে
ইন্টারনেট এখনো ধরে নাই
ওরা কি বাংলায় কথা বলতেই পারে না?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
স্কুলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পরিষ্কার বাংলা বলত। এর পর থেকে মুখের বাংলাটা নীলকর সাহেবদের মতো হয়ে গেছে। এখন মূলত ইংরেজি বলে, বাংলা বুঝলেও জবাব দেয় ইংরেজিতে। বাংলা বলতে বললে সেটা অনুবাদ করে বলে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শিশু পালনে রাজনীতি আর অথনীতি!
বাহ্!
আসলেই...ধন্যবাদ সুমিমা।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
মশলা পরিমানে কম পড়েছে এবার। আরো ঝাল দরকার ছিলো !!
পরের বার মরিচ বেশি দিতে দিবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
কয়েকদিন আগে ফেবু তে আমার বস এর স্ট্যাটাস দেখলাম " মাই ওয়াইফ ইজ অ্যান এম বি এ এন্ড শি কান্ট ইউজ আই ফোন"
জয় হোক এই শতাব্দীর শিশুদলের।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হায়! হায়! বাচ্চারা এত বুদ্ধিমান হলে আমি যখন মা হব, আমারে তো পানিতে গুলায় পান করে ফেলবে!
আরে না না...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বাচ্চে আচ্ছে হে
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আজকালকার বাচ্চারা আসলেও অনেক স্মার্ট।
গতমাসে জম্মদিন উপলক্ষে কর্তা সাধ করে একখানা আইফোন' এনে হাতে দিলেন।
আমি হলাম আদ্যিকালের গেঁয়ো ভুত। কোনভাবেই সেটাকে বাগে আনতে না পেরে (নিজে নিজে আনলক করতেও না পেরে) মহা বিরক্ত,
'কি দরকার ছিল এত্তোগুলো টাকা অপচয় করার? (আঙ্গুর ফল টক )
ছেলে হেলাফেলায় ওটা হাতে নিয়ে আনলক করেই বলে, আম্মু, তুমি যে কি না...'
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ছোটবেলায় বামদিকের দূতের কালি শর্টপরার বিষয়টায় খুবই আমোদ পেলাম। আমি মাঝে মাঝে ভাবতাম বামদিকের জন মনে হয় সবসময় বেশি বেশি লেখে - ক্লাশের খারাপ ক্যাপ্টেন এর মত!
শিশুদের মঙ্গল হোক!
ধন্যবাদ তানিম।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শিশুপালন অধ্যাদেশগুলো পড়তে খুব মজা পাই
নতুন অধ্যাদেশ তাত্তারি প্রনয়ণ করেন, প্লীজ
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
শিশুপালন চলবে ধন্যবাদ উচ্ছলা।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনি মানুষ ভালু না তাসনীম ভাই, বাচ্চাদের সাথে শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মত ব্যবহার করেন, সুযোগ সুবিধা মত আইন পরিবর্তন করেন ।
উপায় নেই ভাই...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমার আব্বাও আমার জন্যে আমলনামা চালু করেছিলো।
তবে তখন আইফোন, পিসি কিছুই ছিলো না তাই বেঁচে গেছে মনে হয়। আজকে আবার পুরাতন এপিসোড রিভিশন দিয়ে আসলাম।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শিশুপালনের অভিজ্ঞতা সার্বজননীন।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ভালো লাগলো তাসনীম ভাই। আপনার শিশুপালন সিরিজ দেখে আমিও একটা সিরিজ লিখবো ঠিক করেছি, "স্ত্রীপালন" অথবা "সংসারপালন" নামে। ওইটার হ্যাপাও কম না
ওটার মারাত্মক হ্যাপার কাজ। ওই নিয়ে লেখাও বিপজ্জনক, গুড লাক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধরে নিচ্ছি আপনার বেটার হাফ একজন হোম মেকার। তাকে পালন করছেন এই দাবি দেখে অবাক হলাম। বাংলাদেশী মেয়েদের কোন কালেই সম্মান পেতে দেখলাম না।
এইডা আপনে কি কইলেন ভাই?? দাঁড়ান আগে অর্ধাঙ্গিনীকে জিগায়ে আসি সম্মান দেই কিনা, তারপরে আপনারে কইতেসি।
মিষ্টি করে জিগাইছিলাম, হ্যাঁগো আমি কি তোমাকে যথেষ্ট সম্মান দেই? উত্তরে বলছে, যা ভাগ, দূরে গিয়া মর।
মনে হয় আপনের কথাই সঠিক ...
সাহিত্যিকের পরের পর্বগুলা তাড়াতাড়ি ছাড়েন নাইলে আরো ঝাড়ি দিবে এই কইয়া রাখলাম।
আপনার রাজকন্যারা যদি বাংলা বলতে পারতো !!!!!!!! (আপনার লেখাগুলো পড়লে সবকিছুর আগে এটা মনে হয়)।
সব বাচ্চাই ছোটবেলায় এই পয়েন্ট সিস্টেমের বলি হয় , আমিও হইসিলাম , তখন তো এই পয়েন্টস্ফীতির ব্যাপারটা বুঝিনাই
বাংলা বিমুখতা আমাকেও বিমর্ষ করে
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
তাসনীম ভাই,
মেয়ে যখন ছোট ছিল, তখন ভাবতাম একটু বড় হোক তারপর সব সহজ হয়ে যাবে। এখন দেখছি মেয়ে যত বড় হচ্ছে সব কিছু তত কঠিন। যখন কথা বলতে শেখেনি তখন ভাবতাম কথা বলতে এবং বুঝতে শিখলে সব বুঝিয়ে বললে বুঝবে। কিন্তু না। যে কোন প্রস্তাব শুনলে আমি আগে হ্যাঁ বলি, অপশানটা দখলে রাখার জন্য। মেয়ে নাকী বাপের স্বভাব পেয়েছে, অভিযোগ করে মেয়ের মা। কিন্তু যে কোন প্রস্তাবে মেয়ে আগে বলে না। তারপর অনেক সাথ্যসাধনায় লোভ-ভয়ে কাজ না হলে জোড় করতে হয়। বাইরে যাওয়ার কাপড় পড়াতে, খাওয়াতে, গোসল করাতে সব কিছুতেই খুব সহজে সুবিধা করতে পারি না। শনি-রবি সারাদিন আমার সাথেই থাকে। মাঝে-মাঝে মনে হয় ওর মা কী করে বাগে রাখে মেয়েটাকে! আমি কয়েক ঘন্টায় হাপিয়ে উঠি। শিশুপালন পিতাদের জন্য (অন্তত আমার জন্য) খুবই কঠিন। আপনার মতো ডাবল ফাদার হলে কী করতাম, ঈশ্বর জানে!
জানুয়ারীতে তিন হবে মেয়ের। এখনো পর্যন্ত আপসহীন বাংলা বলে যাচ্ছি। মেয়েও বলছে। জার্মান সিমটম দেখা দেয় ধন্যবাদ শব্দটা নিয়ে। এই ধরণের পরিস্থিতিতে ডাংকে-টাই চলে আসে। অথচ আমরা বাংলা কার্টুন, বাংলা গান-বর্ণমালা-র সাথে বেশী পরিচিত করতে চেষ্টা করেছি এবং করছি। কিণ্ডার গার্টেনে গেলে কী মেয়ে শুধুই জার্মান বলবে! বাংলা শেখানোর সব চেষ্টা তা হলে বৃথা!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
বাচ্চা যত বড় হয় শিশুপালন কাজটা ততই ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জ থেকে মেন্টাল চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়। আমার ক্ষেত্রেও মূল কন্ট্রোল স্ত্রীর হাতে, আমি বাসায় ওদের অ্যাডভোকেট এবং টুকটাক কাজগুলো করি। সেগুলো দিয়েই এই সিরিজ, কঠিন কাজগুলো উত্তম অর্ধেক করছেন।
মাঝে মাঝে ইউটিউবে মেয়েদের পুরানো ভিডিও দেখে আমিও অবাক হই, কী পরিষ্কার বাংলাটাই না ওরা বলত। এই একটা ব্যাপার আমাকে দারুণভাবে পীড়া দেয়...ভীষণ ভাবে। স্কুল শুরু হলেই বাংলাকে বিদায়।
আপনার কন্যার জন্য অনেক অনেক আদর ও শুভকামনা রইল।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সূত্র
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
কুপনগুলোর জন্য ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কী চমৎকার লেখা!!! জেনে রাখছি, শিখে রাখছি সব..................
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনি মশাই লেখেন চমৎকার!
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ইশশ আরেকটু হলেই চোখ এড়িয়ে যাচ্ছিল লেখাটা ! আপনার লেখা 'ভালো' 'ভালো' বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভালো বলার দরকার নেই, পাঠক পড়লেই আমি খুশি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
টেকনো পরিবেশে কাজ করেও এতো বেশী টেকনোলজি ভালো লাগে না।
পিচ্চিগুলো এখন বাবা-মায়ের আইফোন নিয়েই ব্যস্ত থাকে বেশী। কথাই বলতে চায় না। গত সপ্তাহে ভাতিজীকে সাথে ভাইকেও কিছু ঝাড়ি দিয়েছি।
পরের পর্ব কই !
facebook
রয়েসয়ে আসবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
বাংলার প্রতি মেয়ের অনাগ্রহ মা হিসেবে আমাকেও খুব কষ্ট দেয়। আগে তাও বলতো, ইদানীং আমার কন্যা বাংলায় বলতে বললে কথা বলা অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেয়। কিছুটা তো আমরা দায়ীই। যতটা সময় আর ধৈর্য নিয়ে ভাষাটা শেখানো দরকার তা করতে পারছিনা। পয়েন্ট আসলেই কাজে আসে না। আমি তার ভুক্তভুগী। স্কুলের টিফিন শেষ করেছে বলে পয়েন্ট দাবী করে বসে। আজকাল একটা জিনিস গাইডেন্সে খুব কাজে দিচ্ছে...ওকে আমার পক্ষে রক্ষা করা সম্ভব ও সহজ এরকম দুই তিনটা অপশান দেই, তার থেকে বেছে নাও! উদাহরণ দিচ্ছিঃ' ডাল-ভাত শব্জি-সালাদ, নাকি চিকেন স্যান্ডুইস উইথ লেটাস খাবে?'" অথবা" বই পড়বে নাকি পাজল করবে?'খেলনা কোনো পুরস্কার হিসেবে প্রবর্তন করা মানেই পুরা ধরা খাওয়া। খেলনা মাসের শেষে একটা পাবে, কিন্তু অপশান আমি দেব, তুমি তার থেকে পছন্দ করে নেবে। আমরা ঠিক করেছি ওকে কোনোদিন ভিডিও গেইম জাতীয় কিছু কিনে দেবোনা,সে যদি এসব চায়, যখন নিজের পয়সায় কিনতে পারবে তখনই কিনবে। ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবে পেতে পারো বই, আঁকার জিনিসপত্র, ক্রাফট করার জিনিসপত্র এইসব। এগুলো নিয়ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে, কিন্তু এখন খুব সুফল পাওয়া যাচ্ছে।
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
আপনার মন্তব্যটা আগে চোখে পড়েনি।
এটা ভালো একটা সিস্টেম। কাজে লাগাতে চেষ্টা করব।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
নতুন মন্তব্য করুন