আমার মায়ের ভুবন-ভোলানো চোখের আমি ছিটেফোঁটা খানি পেয়েছি। আমার থ্যাবড়া চেহারার এই চোখ-দুখানিই নাকি যা একটু সুন্দর, অন্তত লোকে তাই বলে। আমি ছাড়া আমার বাকী দুবোন আর দুভাই মায়ের সেই চোখের পুরোটাই পেয়েছে। বোনেরা পেয়েছে তাও নাহয় সহ্য করা যায়, বলি ভাইদের দেয়ার দরকারটা কি ছিলো, আহ ঈশ্বরের সে কি অবিচার!! বানরের গলায় মুক্তার মালা আর কি। বছর দুয়েক আগে জন্ম নেয়া আমার বোনের ছেলেটা ও সেই বানরের দলে যোগ দিয়েছে(নেন আমার পটলচেরা ভাগ্নের একখানা ছবি দেখেন শেষের দিকে গিয়ে)। ওর চোখ ও মাশাল্লা এক্কেবারে গরুর চোখকে ও হার মানায়। আমি ভাবতে থাকি আমাকেই একা এভাবে বঞ্চিত করার কি মানে, নাহ পরজন্মে গরুর চোখ না দিলে আমি আর জন্মই নিবোনা ।
আমার বন্ধুরা কখন ও সখন ও যদি আমাকে সুন্দর বলতো তো ঐ চোখগুলার জন্যই বলতো। কিন্তু আমি ওদের পাত্তাই দিতামনা, রাগে গা জ্বালা করতো, যদি বোনেদের মত চোখ পেতাম তো বুঝিয়ে দিতাম কত চোখে কত সুন্দর। ওই সময় ওদের দিকে যেভাবে তাকাতাম, ওরা ভয় পেয়ে যেত। অনেককেই বলতে শুনেছি, আমার চোখ দিয়ে নাকি আগুন ঝরে, আর ওভাবে তাকালে ওদের নাকি আত্মা হিম হয়ে যাই। এভাবে না চেয়ে একটু নরম করে তাকালে কি খুব কষ্ট হয় নাকি আমার। হুম কষ্ট তো হয়ই বটে, পটলচেরা চোখ ছাড়া তাকিয়ে আরাম আছে নাকি। তো সেই আগুনের হাত থেকে ও লোকে বেঁচে গেলো যখন বুয়েটে ঢোকার কিছুদিনের মাঝেই চোখে চশমা উঠে গেলো। তারপর থেকে কালেভদ্রে চশমা-ছাড়া দেখলে অনেকেই সেই চোখের সৌন্দর্যের কথা আমাকে আবার মনে করিয়ে দেয়া শুরু করলো। আমার চোখের আগুনঝরা সেই দৃষ্টি আজ আর নেই, তাই হতাশার সুরেই বলি আমার আর কি চোখ, চোখ ছিল আমার মায়ের আর উনার পর আমার ভাইবোনেদের আর এখন আমার ভাগ্নের। আমার চোখতো তো কেমিস্ট্রির বিক্রিয়ার বাই-প্রডাক্টের মত, আমার ভাইবোনদের চোখ হোল গিয়ে যাকে বলে মেইন প্রডাক্ট। মাঝেসাঝে শাড়িটাড়ী পরলে বাই-প্রডাক্ট চোখদুটোকে একটু সাজিয়ে গুছিয়ে খোলাই রাখি। তাতে খালাম্মা খালাম্মা ভাবটা একটু কমে যায় এই আর কি। সিনিয়র ভাইয়েরা লজ্জাসরমের মাথা খেয়ে কিছু না বললে ও আজকাল দেখি জুনিয়র পোলাপান সামনেই বলে ফেলে, কেউ কেউ তো আবার এস এম এস করে বলে আপু আপনাকে তো আজকে দারুণ লাগছিলো। আমি বুঝি সবই ওই বাই-প্রডাক্ট চোখজোড়ারই কারসাজি!
মন্তব্য
মুগ্ধ।
ধন্যবাদ মানিক ভাই ।
বাই-প্রোডাক্টের ছবিও দিয়ে দিতেন। গুটলুটাতো সেইরকম কিউট।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
বাই-প্রোডাক্টের ছবি পরজন্মে দিবনে যদি ও অমন পটলচেরা চোখ নিয়ে জন্মাতে পারি ।
তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বরং অনেক মেয়ে সুন্দর চোখজোড়ার উপর লাল নীল সবুজ বিভিন্ন রঙ মেখে আসল সৌন্দর্যটাই নষ্ট করে দেয়। প্রকৃতি যেটা সুন্দর করে তৈরি করেছে, সেটাকে রংচং মাখায় আর কী এমন বেশি সুন্দর লাগবে?
আরে করেন কি ! এরকম বললে তো কসমেটিক্স কোম্পানিগুলো লাটে উঠবে ! আর কাজল দেয়া চোখের বাণে হতাহত না হলে কবিদের কবিতা ভাণ্ডারেও তো মড়ক লাগার সমূহ সম্ভাবনা। তখন ?!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশাদি বেশ বলেছেন তো।
আরে রু এত খেপ্লে চলবে। এক্টু আক্টু কাজল দিলে তো বেশ লাগে, এটা ঠিক বেশি উগ্র সাজ করলে বিশ্রি লাগে।
ওরে বাবা চোখ নিয়ে এত কাহিনী! একবার এক রক্তবর্না চক্ষুর অধিকারিণীর সাথে আলাপ হয়েছিল, টকটকে লাল চোখে দেখে খানিকটা ভেবড়ে গেলেও মনে হয়েছিল লেন্স হতেই হবে, পরে আলাপ জমতেই জানলাম তার ভাণ্ডারে নীল, সবুজ, কালো, লাল সব ধরনের চোখই মজুদ!
facebook
হেহহেহে অণু ভাই, ওই লেন্স গুলা সেরম বিশ্রি কোন দ্বিমত নাই।
পটল পড়তে পড়তে কখন পটলু পড়া শুরু করেছি খেয়াল করিনি। তারপর মনে পড়িল, একদা কেউ একজন আমায় পটলু ডাকিত।
যাই হোক, রু এর সাথে একমত। ভাই চোখ এমনিতেই সুন্দর, সাজালে কেমন কৃত্রিম লাগে
অলস সময়
আরে আপনার নাম পটলু নাকি, বেশ বেশ এখন থেকে পটলুদা ডাকবো নাহয়।
বাই-প্রোডাক্টের ছবি দেখবার মন্চায় .......
ভাই পাঠক অপেক্ষা করেন পরজন্মে দেখতে পেলে ও পেতে পারেন।
গুটলুর চোখতো আসলেই খুব সুন্দর।
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
হুম দিহান আপু, ওর চোখ দেখলে আমার ভীষণ হিংসে হয়।
চোখ অনাবিল চোখই থাকুক। শিশুর চোখতো অদ্ভুত সুন্দর, ও বড় হোক!
ধন্যবাদ তানিম ভাইয়া, আপনার শুভকামনা জানিয়ে দেবো।
আমি আর কি কমু? আমি বরং রবিবাবুর লাইন ধরেই গাই............ বিধি ডাগর আঁখি যদি দিয়েছিলে হায়...সে কি আমারো 'পরে ভুলে পড়িবে না............
ধন্যবাদ বাংলামায়ের ছেলে।
চোখের সাথে কেন "পটল" তুলনা করা হয় ব্যাপার আমার বোধগম্য নয়।
"পটল চেরা" নিরামিষ হতে পারে যা আমার খুবই অপছন্দ, তাই বলে সুন্দর চোখকে কোনভাবেই আমার "পটল" মনে হয় না।
গুটলু খুবই কিউট, ওকে অনেক আদর।
ধন্যবাদ শাব্দিক, আপনার আদর গুটলুকে দিয়ে দেবো সময়মত। তবে ইয়ে, পটল চিরে দেখবেন, চোখ কিন্তু অমনি লাগে খেয়াল কইরা দেইখেন আর কি।
১. ভাগ্নের চোখ দেখে মনে হলো এই রকম চোখকে সম্ভবত 'মীনাক্ষী' বলে। 'পটলচেরা'র হাইট (height) 'মীনাক্ষী'র চেয়ে কম হয়। তবে এই দুই প্রকারের চোখেরই দৈর্ঘ্যই 'খঞ্জনাক্ষী'র চেয়ে বেশি।
২. চোখ সুন্দর হবার চেয়ে তাকানোর ভঙ্গীটা সুন্দর হওয়া অনেক জরুরী। শুধুমাত্র তাকানোর মর্মভেদী ভঙ্গী দিয়ে 'খঞ্জনাক্ষী' দিয়েও উদ্দেশ্য সাধন করা যায়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বাহ্ ! দ্বিতীয় পয়েন্টটা কী সুন্দর করে বললেন ! দারুন !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
পাণ্ডবদা ২ নং এ যা বলছেন একদম সহি। দুঃখ, না পাইলাম সেই চোখ, না পাইলাম সেই চাহনী।
চোখ এমনিতে সুন্দর হলেও কাজল ছাড়া অত সুন্দর লাগে না (আমার কাছে)।
গুটলুটা তো সত্যিই সুন্দর!
ধন্যবাদ যুমার।
একদম সহি কথা বলছেন।
আহেম ! পোস্ট পড়ে বুঝা গেল যে দিদিভায়ের চউক্ষু অতীব সন্দরজ্য। বেড়ে বেড়ে !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশাদি অতীব সন্দরজ্য চোখ থাকলে কি আর এই পোস্ট লিখতে বসি।
সুন্দর!
ধন্যবাদ সুমিমা আপু।
হায় চোখ...
এ বড় সব্বনেশে
বাই প্রোডাক্টের ছবি দিলে আমরাও বুঝতুম, গুটলু না কার চোখ বেশি পটল-চেরা
বন্দনাদি, বাই প্রোডাক্টের ছবি পরজন্মে দেখিতে পাইবেন যদি পটলচেরা চোখ নিয়ে জন্মাই ।
যুবক বয়সে পটলচেরা চোঁখের দিকে তাকাতেই আমার ভিতর কেমন জানি একটা অনুভূতি হত। তারচে বরং কুঁতকুঁতে চোখের দিকে তাকাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম। মনে হত সেটা অনেক নিরাপদ।
প্রৌঢ়ভাবনা
সেইটা মন্দ বলেন নাই যদিও। কিন্তু আমি আবার পটলচেরা চোখের বড্ড দেওয়ানা।
সুন্দর।
অচেনা আগুন্তুক
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------
"আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে"
ধন্যবাদ অচেনা আগুন্তুক
১)
আমি মেয়েদের চোখ দেখে পেমে পড়ি।
২)
কাজল ছাড়া আর কোন প্রসাধনী ব্যবহার করি না।
৩)
গুটলু মিয়াকে আদর।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তিথীদি আপনার ১ন পয়েন্ট আমার সাথে ও যায়। আর আমি নিজে ও কাজল আর মাশকারা ছাড়া কিছু দেইনা।
গুটলু মিয়ার আদর জানিয়ে দেবো সময়মত।
আহা, আপনিতো আমারে পুরান পুরাণ মনে করায়া দিলেন। ছাত্রজীবনে দুইখান চোখের (সেকি সৌন্দর্য!) পিছে পিছে দৌড়াইছি। সমস্যা হইলো গিয়া সেই মানুষটা বোরখা না পরলে তাকে চিনতে পারতাম না। বোরখা পরলে সেই চোখ দেখে তাকে চিনতে পারতাম...
আরে নারে আপনি কি বোরখার প্রেমে পড়ছিলেন না চোখের আমি তো যারে বলে একটু কনফিউজড হয়ে গেলাম।
ভূত্নীর মত করে ধ্যাবড়ায়ে কাজল পরি চোখে সবসময়; এটা প্রাক্তন প্রেমিকদের অনেকের ভালো লাগত, অনেকে মুখের উপর 'পেত্নী' বলত আমাকে
প্রথম দলকে বলতাম "ধন্যবাদ"; দ্বিতীয় দলের সবাইকে মোর্স কোডে রিপ্লাই দিতাম, "CDM" ( কমোডে ডুইব্বা মর্!!")
লেখা রসমালাইয়ের মত মজা হয়েছে গো
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
CDM !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আপু,
আমার এক বোনও আপনার মত ছেলেদের চোখকে হিংসা করত......যাই হোক, আপনার কেন মনে হয়, কাজল, আইলাইনার, মাশকারা বা আইশ্যাডো ছাড়া চোখকে সুন্দর করা সম্ভব না? আর কেনই বা চোখের সর্বোচ্চ ব্যবহার নির্ভর করছে চোখকে প্রসাধনী দিয়ে সুন্দর করার মাধ্যমে?
হিংসা করা ভালু নয়।
ছোটবেলায় আমাকে বোনদের জন্য একই জ্বালা সহ্য করতে হতো। আমার কান এতো সুন্দর কেনো (পারলে কয়েকটা দুল পরিয়ে দেয়) ? চোখ এতো সুন্দর কেনো? ভ্রু এতো সুন্দর কেনো? ঠোট সুন্দর কেনো? মাঝে-মাঝে সবগুলো এক হয়ে লিপস্টিক, কাজল দিয়ে দিতো। হোস্টেলে যাওয়ার পর ওদের অত্যাচার থেকে বেচে গেলাম।
ছেলেরা (আমি) মনেহয় খুটিয়ে এতো সৌন্দর্য্য দেখার সময়+সুযোগ পায় না। সব সাজুগুজু মেয়েরা করে দেখেই হয়তো সৃষ্টিকর্তা ছেলেদের অটো কিছু দিয়ে দেন
নতুন মন্তব্য করুন