তারেক অণুর মত কিছু লোক থাকে যাদের পায়ের তলে সর্ষে থাকে। সাধারণ সর্ষে নয়, বেশ বড় বড় দানার বিলেতি সর্ষে। তাইতেই তারা সরসরিয়ে গড়গড়িয়ে উত্তর মেরু দক্ষিন মেরু করে বেড়ায়। আমি সে জাত নই। আমার ভুগোল জ্ঞান একেতো 'ম্রাত্মক খ্রাপ', তায় আবার পায়ের নিচে রয়েছে চুইংগাম। এমনি চুইংগাম নয়, 'বিগ বাবুল' টাইপ বিগ সাইজ চুইংগাম। তাই আমি যেখানেই যাই ধেবড়ে বসে থাকি। বয়সের ক্যালেন্ডার ঘুরতে থাকে, দুনিয়া ঘুরা আর হয়না। কিন্তু ঘষটে মষটে দেশের উত্তর-দক্ষিন-পূব-পশ্চিমের যে কটা জায়গা ঘুরেছি তার মাঝে অদ্ভুত একটা জিনিষ চোখে পড়েছে। আমাদের দেশে নাম হিসেবে 'মায়ের দোয়া' নামটা বোধ করি খুব জনপ্রিয়। কি রিকশা, কি সাইকেল গ্যারাজ, কি হোটেল, মুদি কি মিষ্টির দোকান সবই 'মায়ের দোয়া'। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, সবেতেই মায়ের দোয়া।
ঘন বসতির দেশ বলেই হয়ত এখানে রাস্তায় বেরোলেই হাজার হাজার সাইনবোর্ড চোখের সামনে ঝুলতে থাকে। এমনিতে সাইনবোর্ড খারাপ জিনিষ নয়, পথ চিনতে মেলাই সাহায্য হয়। কিন্তু এক একটার নাম আর কায়দা দেখে একটা একটা সময় রগড়ও মন্দ হয়না। কিছু দোকান বা প্রতিষ্ঠান থাকে যাদের কাজের সাথে নামটা বেশ যুতসই হয়, দেখতে বেশ লাগে। যেমন মুদি দোকানের নাম 'বিকিকিনি', বাচ্চাদের জিনিষের দোকানের নাম 'কিড্জ এন মম', মার্বেল পাথরের দোকানের নাম 'মর্মর'। কিন্তু লন্ড্রির নাম যখন হয় 'স্কুবিডু ড্রাই ক্লিনিং' তখন চোখ আটকে যায়। সেদিন পুরান ঢাকার এক গলি দিয়ে আসার সময় দেখি ছোট এক টেইলরের দোকান; সেটা হল 'সৌদি বুরকা গর'। তাদের বিজ্ঞাপনী ক্যাচটিও মারাত্মক। দরজার গায়ে কাঁপা হাতে লেখা, 'এই সময়ের ফাটাফাটি, চলোনা বানিয়ে দেখি'। পাশেই ছবি, যেখানে ক্যাটরিনা কাইফ তাদের বানানো 'বুরকা' পড়ে বিলোল কটাক্ষে তাকিয়ে রয়েছে।
বস্তুত নায়ক নায়িকারা তাদের অজান্তেই কত কিছুতে যে মডেলিং করে ফেলে তার হিসাব সংখ্যা নেই। আমাদের ছোট বেলায় যখন আমির খান আর সঞ্জয় দত্ত রমরম করে সিনেমা করছিল, তখন একটা দোকানে দেখতাম আকিজ বিড়ির বিরাট সাইনবোর্ড, যেখানে একদিকে আমির খান আরেকদিকে সঞ্জয় দত্ত আকিজ বিড়ি ঠোঁটে দিয়ে খুব মাচো ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে। তখন আমরা অবাক হয়ে ভাবতাম নায়কদের এত টাকা তাও কিনা বিড়ি খায় !
নাম নিয়ে মশকরার প্রতিযোগিতা হলে ঢাকার বাড়িওলাদের প্রাইজ নিশ্চিত। তাদের কেউ কেউ দশ তলা বাড়ি তুলে নাম দেয় 'শিশিরকণা' নাহয় 'বাবুইনীড়'। কোন মানে হয় ! এখানে বিরাট বিরাট বিল্ডিং 'মায়া কুটির', 'শান্তি কুটির', 'কুয়াশা' এমনকি 'সংশয়' নাম নিয়ে দিব্যি দাঁড়িয়ে থাকে। ক্যান্টনমেন্টে বেশ কিছু বিশালাকৃতির বিল্ডিং আছে যেগুলোর সব ফুলের নামে নাম। মহুয়া, মাধবীলতা, স্বর্ণলতা এইসব। আমাদের এখানে এক বাড়ির নাম দিয়েছে 'মই ফুল', পাশে নেমপ্লেটে একটা মইয়ের ছবি, যেটা বেয়ে বেয়ে একটা ফুলসহ লতা বেয়ে উঠছে। নামটা রোজ দেখি আর মনের ভেতর খচখচ করতে থাকে। জঙ্গলে নই নামের এক ধরনের লতায় সাদা সাদা ফুল দেখেছি, বর্ষায় ঝেঁপে ফুটে থাকত, আর পাগল করা গন্ধে সারা বন আকুল হয়ে যেত। কিন্তু মই ফুল ! এরকম অদ্ভুত নাম কেন রেখেছে প্রায়ই জানতে ইচ্ছে করে। ভদ্রতায় আটকে আর জিজ্ঞেস করা হয়না।
নামাবলী প্রথম বার লেখার সময় ভাবিনি আবার একটা নামাবলী লিখব। সেটায় শুধু মানুষের নাম ছিল। সেই হিসেবে এটা খিচুড়ি নামাবলী হয়ে গেল বোধ হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদে তাহলে ঐতিহ্য বজায় রাখার চেষ্টা করি একটু।
সেদিন ফোনে একটা কচি গলা জিজ্ঞেস করল, 'মৃত্যু কি বাসায় আছে ? ওকে চাইছিলাম'। এত ছোট মানুষ মৃত্যু চাইবে কেন বুঝতে পারলাম না। হটাত মনে পড়ল যে এই বিচ্ছুগুলো সবকিছুর নামকরণ করে থাকে। তাই ক্লাসের রোদসী হয়ে যায় রোদি থেকে দড়ি, মোটা বেলাল হয় মটকু বিল্লি আর মিতিন ওরফে মৃত্তিকা হয় মৃত্যু ! নাম বিকৃত করতে ক্লাসের ছেলেমেয়েদের জুড়ি মেলা সত্যিই ভার। আমাদের ক্লাসের একটা গাঁট্টা গোঁট্টা ছেলেকে সবাই ডাকত বেলগাঠিয়া, আরেকজন জার্মানি থেকে এসেছিল সেই অপরাধে সে হল হিটলার। আরেকজন খুব ফর্সা বলে নাম টিকটিকি। বেচারারা প্রথমটায় একটু গাঁইগুঁই করলেও জীবনভর ওই নাম নিয়েই কাটালো।
আর নিজের নামের কথা আর কি বলব। একখানা কাঠের তক্তা বিক্রির দোকানের নাম দেখেছিলাম 'আশালতা উড হাউস'। সেই দুঃখের গল্প বলায় ব্লগ বন্ধু[?] কৌস্তুভ তো বলেই বসল যে সে এমনি যুতসই নাম হয়েছে যা নাকি আর কহতব্য নয়। কী আর করি, আজকাল লেখালেখিতে বেজায় খরা চলছে। খরা কাটাতে তাই বোধকরি স্বভাবদোষে চ্যালাকাঠ মানের পোস্টখানাই পাঠকের হাতে তুলে দিলাম। যা থাকে কপালে !
মন্তব্য
নাম বিভ্রাট এবারও ভালো লাগলো আপু। আসলেই মাঝে মাঝে কিছু এ্যাড, সাইনবোর্ড, নাম দেখলে অবাক, কখনও আতংকিত, কখনও বিব্রত, কখনও বিরক্ত হই!!!
বাহ মৃত্যু ডাকে, আমার নামে নাম, বাহ!!!
কয়েকদিন সচলপাতায় কিংবদন্তি তারেক অণুর পোস্ট নাই!!! ক্যাম্নে কী!!!!
_____________________
Give Her Freedom!
আসিতেছে ঈষৎ দা, আসলে মা এখানে থাকার ফলে বেশ ঘোরাঘুরি হচ্ছে, কেবল ফিরলাম আজকে। তার ওপর কিছু আধা সমাপ্ত লেখা নিয়ে দুই দুইখান ল্যাপটপ ঝিঙ্গে তুলেছে মনে হচ্ছে, কাজেই আবার মনের পর্দা থেকে কেঁচেগণ্ডূষ করতে হবে!
facebook
দেখেছি দাদা। একটু দৌড়ের উপ্রে আছি, তাই মন্তব্য করতে পারি নাই।
_____________________
Give Her Freedom!
মৃত্যু নামে ডাকায় আহ্লাদিত হবার কিছু নেই। এ পচা নাম। শুনলেই বুকে ছ্যাঁত করে লাগে। তোমাকে এই নাম নেবার বুদ্ধি কে দিল ? তার মাথায় বাড়ি।
কিংবদন্তি যাবে আর কই ! দেখগে শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে নীড়পাতার মাথায় ড্যাবড্যাবিয়ে পোস্ট দিয়ে দিয়েছে সক্কালেই।
এতো কিছু নাহয় হল, তোমার লেখা টেখা কই ? নির্বাসনে ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কে আর দিবে লতাদি............ডিমাইজ এর পরিভাষা করতে যেয়ে এমন অঘটন ঘটিয়েছি...........
হুমম কিংবদন্তি বলতে না বলতেই তিব্বত নিয়ে হাজির দেখেছি..........
১৫ দিন পর হলেও লিখি, পোস্ট দেই......কিন্তু লেখা নির্বাসনে পাঠায় দেয় নিষ্ঠুর মডুরা............
_____________________
Give Her Freedom!
আহারে। সে হোক, হাল ছেড়োনা বন্ধু... ব্রুসের গল্প জানো তো ? ওই করতে করতেই হবে, হবেই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ছোটবেলায় বন্ধুদের অনেক মজার সব ডাকনাম ছিল: টেম্পু, তেলের ড্রাম, ডাইলের গদি, ইত্যাদি।.
এগুলো মনে পড়লে এখনো হাসি।..
ইশ্, এতো এতো ইউনিক জিনিষ পেটে চেপে রেখেছেন ! ভারী অন্যায় ! টেম্পু, তেলের ড্রাম, ডাইলের গদি সব্বার গল্প লিখে ফেলুন এক টানে। বেশ জমিয়ে পড়ি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আপনার পস্টের অপেক্ষায় ছিলাম আশাদি, খুব ভাল লেগেছে
বলেন কী ! আমার পোস্টের অপেক্ষাও করে মানুষে ! এমন হলে গর্বে যে মাটিতে পা পড়বে না ভাই তবে কি হয়েছে বুঝলেন, আজকাল মাথায় খালি গুনগুন করে যে আমি আসলে লিখতে পারিনা। যাই লিখি কেমন ব্যাঁকাট্যাড়া হয়ে যায়। সেজন্যে লেখালেখিকে একটু শাস্তি দেয়ার ইচ্ছে জেগেছে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভালো লাগলো।
নাম প্রীতি ও আদিখ্যাতা খুব প্রবল আমাদের। তাই পথশিশুদের গালভরা 'পথকলি' নাম দিয়ে দায় সারি দায়িত্বের। নাপিতখানার নাম হয় মোনালিসা হেয়ার কাটিং।
আহা, কী আনন্দ আকাশে-বাতাসে!
ধন্যবাদ জ.ই মানিক। প্রার্থনা করি আপনার আকাশ বাতাস আনন্দময় হয়ে উঠুক।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আহ। চমৎকার পোস্ট!
আমাদের এক বন্ধু জানালেন তেনাদের পাড়ায় এক জুতার দোকানের নাম " নাই কি চাই কি? " দোকানকে দোকান ক্যাচলাইনকে ক্যাচলাইন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আরি, দারুন নাম তো। কি ক্রিয়েটিভ বুদ্ধি !
তুমি চমৎকার বলেছ, মন ভরে গেলো, সত্যি বলছি। কিছু মানুষের ভালো লাগা না লাগায় আমাদের অনেক বেশিরকম যায় আসে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হে হে, বেড়ে মজা পেলাম! আমিও একসময় ভাবতাম দেশের সমস্ত মজার মজার নামের সাইনবোর্ডগুলোর একটা লিস্টি করব, যেমন মামা-ভাগ্নে মটরস, গরীবঊল্লাহ কাঠের দোকান, রাজশাহীর ম্যাকডোনাল্ডস, জলযোগ ! মনে পড়ুক সব একে একে তারপর জানাব।
facebook
এইরকম লিস্টি হলে আসলেই মজা হবে। আপনি তো দুনিয়া ঘোরেন, আপনার ভাণ্ডারে তো বিবিধ রতন থাকার কথা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
সেদিন ফেসবুকে একটা মজার ছবিতে দোকানের নাম দেখলাম '' মিসেস মা ''
মিসেস মা ! বেশ বেশ !!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
লেখা সুস্বাদু (গুড়)
ক্লাসমেট বর্বরগুলোর কথা আর কী বলবো! ভারিক্কি ভাব নিয়ে চলতাম বলে শুরুতে ডাকতো 'আঙ্কেল'। পরে কলেজে 'রক্তাক্ত প্রান্তর' পড়ানোর সময় কার্দির পার্ট করাতে নাম দিয়ে ফেলল 'কার্দি আঙ্কেল'। রাস্তা-ঘাটে এখনও দেখা হলে "স্লামালেকুম কার্দি আঙ্কেল, জোহরা বেগম ভালো আছে?"
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
অনেক ধন্যবাদ কার্দি আঙ্কেল। জোহরা বেগম ভালো আছে জানি, আপনি ভালো আছেন তো আঙ্কেল ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কী সব্বনাশ!! শেষমেশ সচলেও......!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
হে হে হে... সেকি কার্দি আঙ্কেল, শত্তুরের হাতে অস্তর তুলে দিতে নেই যে, জানেন না বুঝি ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ক্লাস টেনে ক্লাস চলার সময় বন্ধু নয়নের সাথে গল্প করছিলাম। হঠাৎ ম্যাডাম হুঙ্কার দিয়ে বললেন, "আমি এক চড়ে সজলের নয়নকে সজল করে দিতে পারি, আবার নয়নের নয়নকেও সজল করে দিতে পারি"। নাম দিয়ে এত ইন্টেলুকচুয়াল ঝাড়ি আমি আমার জীবনে খাইনি।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
ম্যাডাম তো বস
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
নাম নিয়ে এত মজার সংলাপও আমি আগে শুনিনি। আমার এক চাচা আছেন যিনি একবার রেগে গিয়ে একজনকে বলছিলেন, "এক চড়ে মামাতো ভাইকে ফুপাতো ভাই বানিয়ে দেবো!!"
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ব্যাপক বলছে তো ম্যাডাম
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভাল্লাগসে দিদি।
থেঙ্কুস
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
মৃত্তিকা কে মৃত্যু? নাহ মানতে পারছি না...
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
ওরা হচ্ছে 'ছোট' মানুষ। বিচ্ছুর চাইতেও বেশি। বড়দের মানতে পারা না পারায় তারা থোড়াই কেয়ার করে। সবচে বড় কথা যাকে ডাকা হচ্ছে তার মোটে আপত্তি নেই দেখলাম। এমনকি নাবিলকে যখন নাবাইল্যা মাছ ডাকে সেও দিব্যি সাড়া দেয়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
এতো সুন্দর হাসির জন্য একঝুড়ি হাট্টিমাটিম টিম দিলাম।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
এর মধ্যে উত্তরায় এক বাড়ির নাম দেখলাম "মৃগয়া", বাড়ি কিভাবে হরিণ শিকার করে বুঝলাম না।
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম।
বোধ করি ওখানে যারা ভাড়া থাকতে যাবেন তারাই মৃগয়ার কবলে পড়বেন ! আরে ভাই তাওত বাড়ির নাম মৃগয়া দিয়েছে, লোকে মেয়ের নামও মৃগয়া রাখে।
অনেকদিন পর সচলে লিখলাম আসলেই। আজকাল নিজের অক্ষমতা থেকে পালাতে পালিয়ে বেড়াই বলেই হয়ত।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
একজায়গায় ছোট্ট হাতেলেখা বোর্ড দেখেছিলাম- 'ম্যাচ গড় ঠয়লেট'
অনেকক্ষণ পর বুঝছিলাম মেস ঘর ভাড়ার সাইনবোর্ড সেটি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ম্যাচ গড় ঠয়লেট ! সত্যি বলছি বলে না দিলে একাধারে সাতদিন সাতরাত ধরে ভাবলেও এর মানে উদ্ধার সম্ভব ছিলনা আমার পক্ষে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নামের কেলোতে কিন্তু দোকানগুলোই ফার্স্ট। এক্কেবারে চ্যাম্পিওন।
কদিন আগে সিলেট ঘুরতে গিয়ে বাজার টাজার ক্রস করার সময় অনেক মজাদার সব নামের বাহার দেখে আমাদের সেকি হাসি। এই যাহ, একটারও নাম মনে পড়ছেনা
তবে মৃত্তিকাকে মৃত্যু বানিয়েছে যারা তারা কিন্তু শাস্তিযোগ্য অপরাধই করেছে
ইশ আমারও কিন্তু আরও অনেক নাম জানা ছিল, কিন্তু লিখতে গিয়ে দেখি বেবাক ভুলে বসে আছি। ব্রেন এত পাজি জিনিষ, খালি অদরকারি জিনিষ মনে রাখে।
মৃত্তিকার তো কিছুতেই আপত্তি নেই দেখি। এক একদিন মার খেয়ে চোখে মুখে কালশিটে নিয়ে ফেরে, কিছু বলার আগেই বলে, আমার তো বেশি লাগেনি, বেশ আরামই লেগেছে !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আপনার মৃত্তিকা পুরাই দেখি মায়ের ডুপ্লি হয়েছে
ছোটকালে আমরা স্কুল ফ্রেন্ডদের নাম করনের চাইতে স্যার ম্যাডামদের নাম করণ করতেই বেশি আগ্রহী ছিলাম।
বায়োলজি স্যারকে নাম দিয়েছিলাম 'কাতলা' স্যার, ইংলিশের স্যারের নাম ছিল টিকটিকি, বাংলা ম্যাডামকে ডাকতাম, মেকয়াপ বক্স এমনি প্রায় সব স্যার ম্যাডামেরই নাম ছিল কিন্তু কোন বন্ধুকে আলাদা নাম দেওয়া হতনা। তবে নামটাকে ভেঙ্গে যাচ্ছে তাই করা হত। তবে সেগুলো আমরা এক্কেবারেই ক্লোজ ফ্রেন্ডদের মধ্যেই ডাকাডাকি করতাম। কারো বাবা-মায়ের সামনে ওসব বলে ডাকলে খবর করে দিত পরদিনই
(গুড়) দিলাম আশাদি।
মইফুল নামের বাড়িটা আমি দেখেছি।
একজনের নাম দিয়েছিলাম 'His master's voice' কারন তার গানের গলাটি খাসা।
স্কুল জীবনের কত স্মৃতি। আপনি বড় দুষ্ট, স্মৃতির হাড়ি উলটে দেন!
গুড়ের জন্যে মেলাই ধন্যবাদ।
বাড়িটা দেখেছ ? আরিহ্, তার মানে আমরা কাছাকাছিই থাকি ! কী মজা ! আমাদের বৃত্তগুলো কী দারুণরকম জানা অজানায় পরস্পরকে ছুঁয়ে থাকে, তাইনা ?
পদ্মজার মুখে 'দুষ্ট' শুনতে তো ভারী মিঠে ! সেই জন্যে আমিও দিলাম।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঘ্যাচাং।----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিক বাইরে একটা দোকানের নাম 'মউর দোয়ান'। পরে বুঝেছিলাম, ওটার নাম 'মামার দোকান'।
সেদিন দেখি লেখা রয়েছে 'এইখানে ময়লা ফেলানো নিশেদ'। অন্যকে দিয়ে ফেলানো নিষেধ হলে বরং নিজে নিজে ফেললে আপত্তির কিছু নেই নাকি !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমি যেখানে কাজ করি, শেখানে কাউকে বাপ দাদার দেয়া নামে ডাকা হয় না, যোগাযোগের সুবিধার্থে।
উদাহরনঃ
TAK - TANVIR AHMED KHAN
AMU - ABDUL MUKADDES
DIK - DIDARUL ISLAM KHAN
কেমন লাগে বলেন!
প্রতিক
আমাদের এক টিচারকে ছেলেমেয়েরা ডাকত স্যাক স্যার। মানে ওই SAC আরকি !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
DIK....
সম্ভবত আপনি সঠিক ধারনাই করেছেন। আমারও পুব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিন, যেটুকু ঘোরার সুযোগ হয়েছে তাতে ঐ `মায়ের দোয়া'ই বেশী নজরে পড়েছে। কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম কিশোরগঞ্জের দিকে। যাবার পথে পেলাম চৌদ্দশত বাজার, ৩২। ৩২ যে কোন জায়গার নাম হতে পারে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতোনা।
আরও আছে, ষোলটাকা। মেহেরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি গ্রাম। কেউ যদি সীমান্তে যাবার রাস্তার খোঁজ জানতে চায়, আশপাশের বখাটে ছেলেরা খুব ভাব নিয়ে বলে, ষোলটাকা দিয়ে চলে যান। ভয়ে ভয়ে অনেকেই তাদেরকে ষোলটি টাকা দিয়ে পালিয়ে বাঁচে।
আপনার লেখাটি ভাল লেগেছে।
প্রৌঢ়ভাবনা
বাংলাদেশে আসলেই অনেক মজার মজার নামের জায়গা আছে। আর ভুল বানানের দিক দিয়ে বোধ হয় 'উদ্বোধন' শব্দটা সেরা। এই একটা শব্দের যে কতরকম ভেরিয়েশন হতে পারে না দেখলে বিশ্বাস হয়না।
লেখা ভালো লাগার জন্যে কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ প্রৌঢ়ভাবনা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভ্রাম্যমাণ এক খাবারের দোকানে লেখা-
ছটফটি ও ফুসকা
আমিও দেখেছি তো- চটফটি আর ফোসকা !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
লেখা কম ভালো হয় নাই...
রাস্তায় আচমকা পাঁচটা মেয়ে আমাকে ঘিরে ধরল। ওদের দলনেতা কিচিরমিচির(বাচ্চা মেয়েতো) শব্দে জানতে চাইলো, তোমহারা নাম কেয়া হে?” আমি বললাম,“ইস্কান্দর বরকন্দাজ”। বলাই বাহুল্য, এই বিদঘুটে নাম(বদনাম) দলনেতা এবং বাকীরা উচ্চারণ করতে পারলো না। তার কয়েকটা চেষ্টা ছিল এইরকম-
: ইছাকান্দর-বান্দর(হি হি হি)
: না না, শুধু বান্দর(হি হি)
: না না, বান্দর না কান ধর, ইচকো কান ধর
এম্নে ঘুরায় বলেন ক্যান ? ধপ করে ভয় পেয়ে যাই তো ! বান্দরের কান ধরে অন্দর করলেই তো বেশ হত
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আপনার মেয়েতো বেশ আশাদি, মৃত্যু নাম নিয়ে ও কোন কমপ্লেন নাই।
মৃত্তিকা আমার মেয়ে কে বললে ? ওইটা তো বদের হাড্ডি, শিম্পাঞ্জির ছানা ! আমি কি বদ শিম্পাঞ্জি ? আমি না কত্ত ভালু
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
কক্সেসবাজারের বীচের কাছে লাইন ধরে অনেকগুলো শুটকি মাছের দোকান আছে। একটার নাম "মদিনা শুটকিঘর"
মতিঝিলে রাস্তার উপর লুঙ্গিপড়া এক লোক মাইক্রোফোন হাতে চেঁচাচ্ছিল, "মলমের জগতে এক আশ্চইর্য নাম নাজনীন মলম"...
অন্যের নাম নিয়ে হাসাহাসি কেন করি! আমার নিজের ডাকনামই তো "ঢেঁপি"
লেখা পড়তে খুব মজা লেগেছে। হাইবারনেশন কাটল তাহলে জনাবার?
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ ঢেঁপিদি
হাইবারনেশন ? কে জানে, ঠিক নাই। এইবার একটু নিঃশ্বাস নিয়ে নিলাম, বিরাট ডুব দেয়া যাবে বোধহয় তাতে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমাদের ল্যাবে না ছোট করে "মাইক্রো" সাইজ করার চল আছে।
ক্রিসান্টো => ক্রিস
ইসাবেলা => ইসা (জার্মান উচ্চারণে 'ইজা')
সুশান => সুশ
মিশাইল => মিশা
মনিকা => মনি
...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সেগুলো নিশ্চয় কাজের সুবিধের জন্যে করা হয়। আমরা তো প্রায় সবাইই পছন্দের মানুষকে আদর করে ছোট নামে ডাকি। আমার কাজিনের বরের নাম তাবিন, সেদিন দেখি সেটা ছোট করে আল্লাদি গলায় ডাকছে তাবু। পানি খেতে গিয়ে 'তাঁবু'র সাথে মানুষের প্রেমালাপ শুনে বিষম খেয়ে আমি অস্থির।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নাম নিয়ে জীবনে সবচেয়ে বেশি কথা শুনেছি, হাসির পাত্র হয়েছি আমি। আমার আকিকা করা নামে মোট শব্দ আছে ০৯ টি। কেয়ামত যদি হয়, তাহলে আমার নাম ধরে যে ডাকবে কবর থেকে উঠবার জন্য সে নিজেই পিপাসায় নিহত হবে। এখন আমি নিজেই আমার নাম নিয়ে হাসাহাসি করি, অন্য লোক করলে যেন দুঃখ না পাই, কিন্তু তারপরও না লোকে হাসলে কষ্ট লাগে।
নামাবলী চলতে থাকুক। ইউনিভার্সিটিতে পরার সময় দুই বান্ধবী মিলে ঠিক করেছিলাম "কন্সাল্টেন্সি ফার্ম" খুলব যেখান থেকে বিনামূল্যে নামকরন করে দেয়া হবে, বাড়ি, দোকান এগুলোর।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নতুন মন্তব্য করুন