'অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট' আন্দোলনে সোচ্চার হয়ে উঠেছে 'আমরাই ৯৯%' এর ব্যানার। হাজার হাজার মানুষ ওয়ালস্ট্রিটে অবস্থান নিয়েছে কর্পোরেট তন্ত্রের প্রতিবাদে। আজ শনিবার ঢাকায় টিএসসিতে সেই আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে একত্রিত হয়েছিলেন কয়েকশ উচ্চকন্ঠ মানুষ। তাঁদের অনেকেই বামপন্থী আন্দোলনের সাথে যুক্ত। কিন্তু অবশ্যই সবাই নন। আমি তাদেরই একজন, যারা বাম ধারার সাথে কোনওভাবে যুক্ত না থেকেও এই সংহতি আন্দোলন 'অকুপাই বাংলাদেশ'এ অকুন্ঠ সমর্থন জানান।
আমরা কারা? আমরা এমন কিছু মানুষ, যারা রাজনৈতিক আন্দোলনের বর্তমান স্রোতের সাথে পা মিলিয়ে চলতে অপারগ; সে ডান পাশই হোক, কী বাম পাশই হোক। কিন্তু অরাজনৈতিক চরিত্র হবার পরেও, রাজনীতি নিয়ে আমরা যথাসাধ্য সচেতন হবার চেষ্টা রাখি। দেশের কী হচ্ছে, বিদেশে কী ঘটছে, এইসব কিছু নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলি, আলোচনা করি। এই আলোচনাগুলো চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে "এই দেশের কিচ্ছু হৈব না" জাতীয় কথাবার্তা না। হ্যাঁ, আজকে এই দেশর কিছু হয় নাই, আগামিকাল বা পরশু হবে এমন উজ্জ্বল সম্ভাবনাও দেখতে পাচ্ছি না। তবে এটাও ঠিক, পরশুর পরদিন যদি দেশের কিছু হয়, তাহলে সেটা আপনাআপনি হয়ে যাবে না। তারেক আর জয় এসে আমাদের হাতে পরিবর্তন তুলে দেবে না। পরিবর্তন আনতে আমাদের রাস্তায় বেরোতে হবে। আর রাস্তায় বেরিয়ে আসার পর আমরা সমমনা যাদেরকে দেখবো, তাদের পতাকাতলে গিয়ে না দাঁড়াতে পারি, তাদের পাশে অবশ্যই দাঁড়াতে পারবো।
আমাদের দেশের তেল আর গ্যাস, উপযুক্ত দেশীয় প্রতিষ্ঠান থাকার পরেও, বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেবার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম। সেই ইস্যু এখনও শেষ হয় নাই; এমনকী সমাপ্তির কাছাকাছিও পৌঁছায় নাই। সেই আন্দোলনে রাস্তায় নেমেও আমরা বামপন্থীদের দেখেছিলাম। তাদের পাশেই দাঁড়িয়েছি। তাদের সাথে গলা মিলিয়েছি স্লোগানে,
রক্ত দেবো জীবন দেবো, তেল-গ্যাস দেবো না।
এই স্লোগান দুনিয়ার মজদুরদের এক হবার চিরাচরিত স্লোগান না। এই স্লোগান দেশের জন্য। যে মানুষটা "দেশের কিছু হৈব না" বলে মুখ বাঁকিয়ে চলে যায়, তার জন্য; আমাদের আগামি প্রজন্মটা যাতে এই গ্যাসটা ব্যবহার করতে পারে, যাতে তাদেরকে প্রাকৃতিক সম্পদের অভাবে ভাবীকালে ধুঁকতে না হয়, সেই জন্য।
বাংলাদেশ তো শতভাগ কর্পোরেট নয়। বাংলাদেশে তো পরিপূর্ণ মুক্তবাজার অর্থনীতি কাজ করে না। তাহলে এদেশে কেন আমরা কর্পোরেটতন্ত্রের একচ্ছত্র আধিপত্যের বিরুদ্ধের আন্দোলনে সংহতি জানাবো? একথা ঠিক, বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে মুক্তবাজার অর্থনীতি নাই। কিন্তু বাস্তবতা আসলে কেমন? আমরা কি কর্পোরেটতন্ত্রের অধীনস্থ না? আমাদের সিদ্ধান্তগুলো কি তারা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে রাখে নাই?
রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন টেলিটকের সার্ভিস যথেষ্ট ভালো, চাহিদা এতো কম কেন? কেন শ্যামল ত্বকের মানুষদেরকে প্রাণপণে রঙ ফর্সার ক্রিম মাখতে হবে? কেন মেয়েরা এদেশের মিডিয়ায় শুধু পণ্য হিসেবে বিবেচিত হবে? কেন এতো হাল ফ্যাশান হতে হবে আমাদের, না হলে কী হয়?
কর্পোরেট সিস্টেম আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে আমাদেরই অজানিতে। প্রচলিত মিডিয়া আমাদেরকে যা করতে বলে, আমরা তাই করে চলি প্রতিনিয়ত। আমরা কনসার্টের টিকেট নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করে মাথা ফাটাই, ফুটবল আর ক্রিকেটের উপভোগ্যতাকে বদলে দিয়ে সেখানে যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব করি, 'স্টার' হবার উদগ্র অসম্ভব ইচ্ছায় গা ভাসিয়ে চোখ বন্ধ করে স্রোতে গা ভাসাই। এই নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রিত অধিকাংশ মানুষ।
তারপরেও, সবাই না।
এবং এটাই আশা।
আজ বামধারার রাজনীতিকরা এই প্রতিবাদের সামনের সারিতে আছেন। কিন্তু এই জায়গাটা এমনকি তাদেরও না। এই জায়গাটা আমাদের। আমরা যারা বিকল্প ধারার মিডিয়াতে- ব্লগে, ফেসবুকে সচেতন হয়ে উঠছি ক্রমশ, সেই আমাদের। বাম মানুষগুলোর সাথে, তাদের পুরো দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সহমত না হবার পরেও, সেই সচেতনতার ছাপ তাদের মধ্যে দেখতে পেয়ে, আজ আমরা 'অকুপাই বাংলাদেশ' এর সাথে সংহতি জানাচ্ছি।
এই প্রতিবাদগুলো, এই স্লোগান আর মিছিল সফল হবে কী হবে না আমার জানা নাই। ফেসবুকের ওয়ালপোস্টে আর ব্লগিঙে গতি পেতে থাকা এই নতুন প্রজন্মের আন্দোলন আগামিকাল বা পরশু সাফল্য নিয়ে আসবে কি না জানা নাই। কিন্তু একটা বিশ্বাস আছে। একদিন, ঘুমিয়ে থাকা মানুষেরা জেগে উঠবে। একদিন সবাই রাস্তায় নেমে আসবে। একদিন ১% মানুষের হাতের পুতুল হবার বদলে, ৯৯% মানুষ নিজেদের মতে চলবে। সেই দিন জেগে উঠে তারা দেখবে, তাদের আগে আমরা ছিলাম। আমাদের উপর দায়িত্ব, তারা জেগে ওঠা পর্যন্ত এই প্রতিবাদ সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
আমি এবং আমরা, গতকাল এখানে ছিলাম না। আজ এসেছি। আগামিকাল আরও দশজন সচেতন মানুষ নিশ্চিন্ত নিষ্ক্রিয় জীবনটা একটু থামিয়ে রেখে রাজপথে নেমে আসবে। পরিবর্তনটা আসবে এভাবেই। কাল বা পরশু না-ই হোল; তার পরদিন যে হবে, এটা নিশ্চিত।
_____
অন্যকেউ
মন্তব্য
সাথেই আছি।
প্রৌঢ়ভাবনা
“অকুপাই” ই হতে হবে কেন এটা নিয়ে আমার একটা প্রশ্ন এসেছে মাথায় - কেন অন্যকিছু নয়? বাংলাদেশের বর্তমান যে বাংলাদেশ তার সাথে “অকুপাই” করার চাইতে বরং দরকারি হচ্ছে “আকুপাংচার” করা - রাস্ট্রের রন্ধ্রেরন্ধ্রে ঢুকে যাওয়া দূর্ণীতি আর কাজ চুরি করা মানুষেরও আগে দরকার “জামাত-শিবির-রাজাকার” বলে নাম নিতে মনচায়না এমন কিছুর বিচার -- এমন কঠিন বিচার যে বিচারে কোনদিন পরবর্তী বাংলাদেশ যতদিন ততদিন কোন চিল-শকুন-হায়েনা-শেয়াল সহ তাবৎ পশু কোনভাবে দেশের শরীরে তার বীর্য ফেলার কথা ভাবতেও না পারে .. সেটা নিয়ে আন্দোলন হচ্ছেনা কেন?
আমি কোনভাবেই বলছিনা “অকুপাই বাংলাদেশ” বলে যে পদযাত্রা শুরু হয়েছে তার বিন্দুমাত্র বিরোধীতা আমি করি - বরং আমি বলতে চাই সেখানে এই এজেন্ডাটা এত নমনীয় কেন? আমি আমার বাম মতাদর্শের বন্ধুদের সাথেও এটা নিয়ে কথা বলি - কিন্তু কোনভাবেই বুঝিনা শরীরের রক্তচুষে খাবে বলে যারা সূদীর্ঘ পরিকল্পনায় একটা দেশকে আগাতে দেয়না তাদের বিচার ঠিকমত না করে এই দেশে কোন পরিবর্তন করা সম্ভব?
আপনার পোস্টে এই এজেন্ডার তিলমাত্র না দেখে চুপ করে থাকতে পারলামনা ভাই, আমি আপনাকে বিন্দুমাত্র আহত করতে চাইনা - চাইনা আপনি মনে করুন এটা শুধু আপনাকে উদ্দেশ্য করেই বলা হলো ব্যাক্তিগত পর্যায়ে।
বাংলাদেশের প্রতিটি বদলে দেবার যেকোন ডাকে এই এজেন্ডার পৌনঃপুণিক হিসেব মেটানো হোক - এখনই শুরু না হলে আওয়ামী লীগের কাধে দায় চাপাতে আমাদের বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হবেনা। কোন রাজনৈতিক দলই যেহেতু এটাকে রাজনীতির বাইরে নেবেনা - প্রতিটি অরাজনৈতিক পদযাত্রায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আর তার সঠিক ইতিহাস, সর্বোপরি ইতিহাসের বিচার অঙ্গাঅঙ্গি থাকুক!
জামাত-শিবিরের মূলোৎপাটনে শুরু হোক নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রাথমিক ভাবনা!
আপনার সাথে কোনও দ্বিমত নাই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়ার ক্ষেত্রে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের মধ্যে অনেকেই সোচ্চার। কিন্তু সেটা কেবল অনলাইনেই এখনও সীমাবদ্ধ; এবং যথেষ্ট বিচ্ছিন্নভাবে চলছে। কোনও রাজনৈতিক সংগঠন, এটা নিয়ে রাজপথে সরাসরি নামতে চাইছে না। এই আজব নীরবতার কোনও মানে আমি নিজে অন্তত খুঁজে পাই নাই। বিশেষত বাম মতাদর্শের যারা, অন্তত তাদের এই ইস্যুটা নিয়ে এগিয়ে আসাটা উচিত ছিলো।
লেখায় যেটা বললাম, আমরা আজকেও খুব বড়ো কোনও শক্তি না। আমাদের শক্তি এবং সংখ্যা ধীরে ধীরে কেবল বাড়ছে। আজকের মতো পরিস্থিতিতে, এখনও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আমি বা আমরা কয়েকজন মিছিলের ডাক দেবার বাস্তব ক্ষমতা রাখি না। মিছিলের ডাক যখন দেওয়া হয়, সেখানে ডাক দিয়ে সমমনা পঞ্চাশজন বন্ধুকে নিয়ে যেতে পারি কেবল।
খুব চাইছি যাতে এই বিষয়টা যাতে রাজনৈতিক ফোকাসে আসে। তাহলে আমাদের জন্য ব্যাপক হারে মুভমেন্ট শুরু করাটা সম্ভব। কেউ এখনও মিছিল শুরু করে নাই বলে আমরা এখনও আমাদের চিৎকারটা রাজপথে নিয়ে যাই নাই। তবে এটাও একটা আশা, আর খুব বেশিদিন বোধহয় লাগবে না। একসময় আমরা নিজেরাই রাজপথে নামবো। অন্য যে কারও আহ্বান ছাড়াই।
দুঃখিত ভাইজান, আপনার ব্লগ পোস্ট ও সেই পুরানো ঘুনে ধরা অথর্ব বামদের চর্বিত চর্বন ব্যাতীত কিছু মনে হলো না। আন্দোলোনের উদ্দেশ্য , বা আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে কথা নয়। কথা হচ্ছে কেবল টিএসসাইট দাঁড়িয়ে সেটা কতদুর যাবে।
আমি নিজেও আজকে ঐ পথ দিয়েই যাচ্ছিলাম। সুতরাং সেখানে কি হয়েছিল সেটা নিজের চোখেই দেখেছি। ভিজে চুপচুপে হয়ে করুন মুখে দাঁড়ানো কয়েকজন "বয়স্ক" তরুন বিপ্লবী, সামনে ১০-১৫ জন প্ল্যাকার্ড হাতে ! এই হলো আপনার ভাষায় শত শত !!!! অবশ্য মাইক এর জ্বালাতন কম ছিল না।
সাথে আশেপাশে টোকাই, রিকশাওয়ালা দের হাসি, এবং "এই ভিজা ভিজা পাগল গুলা করে কি" টাইপ মন্তব্য ছিল ভার্সিটির পোলাপানদের হাতেই !!! ছবি আপলোড করতে পারছি না, ছবি গুলা ফ্লিকারে দিয়ে শেয়ার দেব !!
যাই হোক, ব্যাক্তি আক্রমন করে থাকলে দুঃখিত, কিন্তু এই লোক দেখানো অথর্ব কাজ কর্ম অসহ্য লাগে এখন
দুঃখিত, তবে আপনাকে সলিড মিথ্যাবাদী ভন্ড ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছে না। মানুষের অবগতির স্বার্থে, (আপনার না, আপনি 'নিজ চোখে দেখে' মিথ্যা বলেছেন) এখানে এই মিছিলের একটা ছবি দিলাম।
ছবিটা ওপেন করা যাচ্ছে না।
একটু সিস্টেম করে পেলাম।
ছবিটা কেন দেখা গেলো না কী জানি!
অনেক ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক।
ধৈরা নিলাম সাকুল্যে ১০জন হাজির আছিলো। এই সংখ্যা দিয়ে কী প্রমান হয় একটু বলেন শুনি। ব্যাকড্রপে বিম্পি রাজাকার জোটের লংমার্চে হাজেরানে মজলিসের সংখ্যাটা রাখলাম।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সরি ভাই, কাহিনিটা ঠিক মতন বুঝি নাই। এক দুই কথায় কি বলা সম্ভব ঠিক কাদের বিপক্ষে আপনাদের এই আন্দোলন? আর কাদেরকে আপনারা আপনাদের পাশে আশা করতাছেন? আর আপনাদের আন্দোলন এর সিস্টেম টা কি? মানে কি হইলে আপনাদের আন্দোলন ঠিকঠাকভাবে গতি পাইতাছে বইলা ধইরা নিবেন?
-মেফিস্টো
না ভাই। এক দুই কথায় বলাটা ঠিক সম্ভব না।
গতকালের এই কর্মসূচি, একটা ধারাবাহিকতার অংশ মাত্র। আমাদের এই আন্দোলন কর্পোরেট সিস্টেমের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে। তবে তার চেয়েও আসল কথা যেটা, ওয়াল স্ট্রিট দখল করে নেবার যে আন্দোলন, এই রকম একটা বৈপ্লবিক মুভমেন্টকে নৈতিক সমর্থন জানানো। আমরা এই দেশ থেকে কেউ ওয়াল স্ট্রিটে যাচ্ছি না। কিন্তু তাদের আন্দোলনে আমাদের সহমত এবং একাত্মতা জানানোর জন্য এই প্রয়াস। তবে, কর্পোরেট সিস্টেমকে যতটা না অ্যাড্রেস করা হচ্ছে এখানে, তার চেয়ে বেশি চাইছি সাধারণ মানুষের সচেতনতা। বলেছি, এটা একটা ধারাবাহিকতা। তেল-গ্যাস আন্দোলনের কথা ধরুন। গ্যাস বিদেশি কোম্পানির হাতে যেতে না দেয়াটা জাতীয় স্বার্থের বিষয়। কিন্তু এই ব্যাপারে সাধারণ মানুষের সচেতনতা যথেষ্ট কম। এই সচেতনতা আমাদের মূল টার্গেট। মানুষ যদি সচেতন হয়ে ওঠে, তাহলে যে সরকারই হোক না কেন, এরকম হঠকারি সিদ্ধান্ত আর কারও নেবার মতো সাহসটা হবে না।
আন্দোলন গতি পাবার বিষয়... আমি মূলত ফোকাস করতে চেয়েছি বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারি যুবাদের ওপর। তথ্যের ওপর এদের অ্যাকসেস সবচেয়ে বেশি। সাধারণ ছাত্ররাজনীতির ধারায় এরা প্রবেশ না করেও দেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোতে একটা শক্তিশালী প্রভাবক হিসেবে কাজ করার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু এখনও, এদের সবচেয়ে বড়ো অংশ, নিজেদের গুরুত্ব সম্পর্কে অসচেতন এবং নিস্পৃহ। আন্দোলনের একেকটা পর্যায় থেকেও বেশি জরুরি, সচেতনতার ধারাটা গতি পাচ্ছে কি না, ক্রমশ বাড়ছে কি না।
আমেরিকার ওয়াল স্ট্রীট এর একাধিপত্য আর আমাদের দেশের কর্পোরেট একাধিপত্যের মধ্যে অনেক ফারাক ভাই। ওয়াল স্ট্রীট এর ৪-৫ টা ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক আর কয়েকটা ক্রেডিট রেটং কোম্পানি মিলে সারা দুনিয়ার ১৫০ মিলিয়ন মানুষরে ফকির বানাইছে তারা দারিদ্র সীমার উপরে ছিলো - নীচে পাঠায়া দিছে, আমেরিকার ১২ মিলিয়ন লোকরে ঘর ছাড়তে বাধ্য করছে আর এই ২০০৮ সালে এমন গ্যাঞ্জাম পাকাইছে যে সারা দুনিয়ার অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা ধসে পড়তে নিছিলো আরেকাটু হলে।এবং সেই ধ্বস এর দাম আমাদের দেশের মানুষরেও দিতে হইতেছে ইনডিরেক্টলি। এবং এত কিছুর পরেও তাদের কোন ক্ষতিই হয়নাই, তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হয়নাই এখনো পর্যন্ত। আমেরিকায় সম্পদের ৯৯% কর্পোরেট এর ফাতে আর ১% সাধারন মানুষের কাছে - এইটা একটা বাস্তবতা। আর বাংলাদেশ এ একই কাজটা করতেছে আমাদের রাজনিতীবিদরা। কর্পোরেটরা আমাদের দেশে যা করতেছে সেটার সাথে আমেরিকার কর্পোরেটদের যদি তুলনা করেন তাইলে আমার কিছু বলার নাই। দাড়াইতে হলে সবচেয়ে শক্তিশালী শত্রুর বিরুদ্ধে দাড়ান। আমি দাড়াইছি নিজে - পুলিশের বাড়ি খাইয়া কনুই ভাইঙ্গা বাড়িতে ফেরত আসছি। তারপরের দিন আবার গেছি। ছবিতে ব্যানার এ যা লেখা দেখতেছি সেই বহুজাতিক কোম্পানি বলতে কি তেল গ্যাস কোম্পানি বুঝাইছেন, নাকি টেলিটকরে যে দাড়াইতে দেয়না, আমাদেরকে যারা ফর্সার ক্রীম মাখতে বাধ্য করতাছে, তাদের কথা বুঝাইছেন? তেল গ্যাস আর রাজনিতীবিদদের বিরদ্ধে যদি হয়া থাকে তাইলে ঠিক আছে। আর নাইলে হাসলাম মুখ চাইপা।
-মেফিস্টো
পশ্চিমা কর্পোরেট সিস্টেম আর আমাদের দেশে কর্পোরেট সিস্টেম আলাদা ধারায় চলে এটাতো আমি বলেছিই। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে এতো বঞ্চনা শোষণের পরেও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই। তা, এখনকার বিপ্লব কি সেটারই ধারাবাহিকতা না? রাষ্ট্র যদি সাধারণ্যের জন্যই কাজ করতো, তাহলে তো আজকে ওয়াল স্ট্রিট দখলের জন্য এতো মানুষ পথে নেমে দাঁড়াতো না।
গতকালের এই সমাবেশ কোনও একক আন্দোলন না। এটা প্রতীকি। যদি স্পেসিফিক টার্গেট নিয়ে গতকালের আন্দোলনটা হোত, তাহলে এটা অবশ্যই টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে না হয়ে মতিঝিল, কারওয়ানবাজার বা গুলশানের মতো কোনও বাণিজ্যিক এলাকায় হোত। গতদিনের কর্মসূচি পৃথিবীর সাধারণ মানুষের সাথে একাত্মতা ঘোষণার একটা পদক্ষেপ ছিলো। অন্তত আমি এটাকে এভাবেই দেখি।
রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশে সাধারণ্যের শোষণের জন্য মূলত দায়ী, আপনার এই মতের সাথে আমি আংশিক একমত। রাজনীতিবিদরা শোষণ করছে, অর্থনীতির অনেকটা অংশ তাদের কারণে পঙ্গু- একমত। কিন্তু এদের পৃষ্ঠপোষণা কে করে? রাজনীতিবিদরা কোথা থেকে তাদের ব্যাকআপ পায়? কর্পোরেশন রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কর্পোরেট সিস্টেমের টাকার খেলার একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ রাজনীতি। এটা পশ্চিমা বিশ্বে অনেক বিস্তৃতভাবে সত্য। আমাদের দেশে ক্ষমতার পাল্লাটা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের পেশিশক্তির কারণে একটু হেলে পড়া, পার্থক্যটা এটুকুই। তেল গ্যাস আন্দোলন অ্যাক্টিভিস্টদের মূল লক্ষ্য অবশ্যই। কিন্তু, কর্পোরেট সিস্টেম নিয়ে সচেতনতা একটা বড়ো ইস্যু, এটা ভুলে গেলে চলবে না বলে মনে করি।
কর্পোরেট দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে কেউ রাজপথে আন্দোলন করতে গেলে আপনার মুখ চাপা হাসির সাথে আমিও সামিল হই। কিন্তু এই বিষয়টা নিয়ে সামাজিক সচেতনতা আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার গুরুত্ব, রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে সমান্তরালে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির দায়টুকু এড়িয়ে চলতে পারি না। দুটোকেই, রাজপথে রাজনৈতিক, আর সমান্তরালে একটা সামাজিক, দুই আন্দোলনকেই সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি।
রাজপথের আন্দোলন দেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোকে প্রভাবিত করছে। রাজপথে নেমেছি এই কারণেই। সামাজিক সচেতনতার দায়টা যেহেতু দীর্ঘ সময় এবং পরিস্থিতির ওপরে অনেক বেশি নির্ভরশীল, দুটোকে সন্নিবিষ্ট না করে সমান্তরাল ধারায় প্রবাহিত হতে দেয়াটা বোধ করি বেশি ভালো হয়।
আফসোস হয়, আমরা নিজেরা কিচ্ছু করতে পারি না। বিদেশে করতেছে সেটারও কপি মারলাম। যাই হোক, উদ্দেশ্যে ভাল হলে ফলও ভালই হবে বলে মনে করি। যদিও আজকাল কাউকেই আর বিশ্বাস পাই না। আ.লীগ অনেক কিছু করবে বলে ক্ষমতায় আসছিল। আসল কাজের বারোটা বাজাতে এখন ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার সব খেলায় মেতে উঠছে। দেশের তরুণ সমাজ এখন ফেসবুক জরায় আক্রান্ত (জ্বর বলিনি কিন্তু)। এদের ঠিক করার জন্য দরকার একটা ভূমিকম্প। দ্রোহী ভাল বলতে পারবে কবে কখন কত মাত্রার ভূমিকম্প হবে। হে হে ..
কিছু মনে নিয়েন না।
আমরা নিজেরাও করছি ভাই। বরং বিদেশের থেকে কপি করা আন্দোলন (যথা- সংহতি!) দুয়েকটা দেখলাম কেবল। পরিমল ইস্যুতে আমরা পথে নেমেছিলাম, তেল-গ্যাস নিয়েও পথে নেমেছি, মিছিল করেছি। এগুলো তো আমাদের নিজস্ব একেকটা আন্দোলন।
লীগ বিএনপির কথা বলে কী লাভ ভাই! বামধারার দলগুলো পর্যন্ত গ্যাস ইস্যুটা নিয়ে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে নাই। তেসরা জুলাইয়ের হরতালের পর দেড় মাস ঝিমিয়ে পড়ে থাকা, আন্দোলনের গতি স্তিমিত করতে আর কী চাই। তার পরেও, আশা ধরে রাখতে চেষ্টা করি এখনও।
ফেসবুক জরা.. ঠিকই বলেছেন। এর মধ্যে থেকেও যতটা পজিটিভ কিছু বের করে নিয়ে আসা যায়...
মনে করব কী! দ্রোহীর লেখা খুবই ভালু পাই। হোক, একটা ভূমিকম্প খুব দরকার আমাদের!
সংহতি জানাই।
সাথেই থাকুন।
স্বতঃস্ফূর্ত মানব বন্ধন এর নমুনা দেখেছিলাম সংসদ নির্বাচনের আগে। রাজাকারদের বিচারের দাবিতে।
নতুন প্রজন্ম, হয়তো সময় লাগবে কিন্তু একদিন চলমান তুঘলোকি গণতন্ত্র নিয়েও চিন্তা করবে। যখন করবে তখন কর্পোরেট কালচার, আওয়ামী, বি এন পি, জামাতী, মিডিয়া কোন কিছুই বাধা হবেনা। সময় লাগবে।
সময় লাগবে। কিন্তু পরিবর্তন আসবেই।
লিখাটা ভাবনার আবেদন রাখে অন্য কেউ।
ধন্যবাদ বন্দনা'দি।
[আবিদের মৃত্যুর পর সমগ্র দেশবাসী শোকে বিহ্বল হয়ে শোক প্রকাশ ও সম্মাননা জানালেও রহস্যজনক ভাবে মাত্রা মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অভিনেতা আফজাল হোসেনসহ কোনও কর্মকর্তা/কর্মচারী আবিদের মরদেহ দেখতে আসেননি, সম্মাননা জানাননি বা আবিদের পিতা-মাতাকে কোনও সান্ত্বনা প্রদানও করেননি।]
আমি এই প্যরার সাথে একমত না। কারন শহীদ মিনারে নিজের উপস্থিত ছিলাম। সেখানে মাত্রার সবাই ছিল। তবে প্রথমআলো এখন খুব প্রশ্নবিদ্ধ ভুমিকা পালন করছে বিভিন্ন ঘটনাতে।
facebook
অণু ভাই।
পড়লাম।
একটা প্রশ্ন, এটা কি প্রচারণামূলক পোস্ট?
জি না। এটা ব্যক্তিগত-চিন্তাভাবনা-শেয়ার-করামূলক পোস্ট। আমার কোনও দলের প্রতি আনুগত্যমূলক রাজনৈতিক অবস্থান নাই, এটা তো পোস্টেই পরিষ্কারভাবে বলে নিয়েছি।
আপনার পোস্টের শেষের অংশটা ভাবনার রসদ যোগাচ্ছে ।
অকুপাই বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ওকে বাই বাংলাদেশ না হলেই হয় !
ছবির মানুষ তো গোনা যায় !
আপনাদের আবেগকে যথাযথ সন্মান করেই বলছি এভাবে হবে না; অন্যকিছু ভাবেন ।
রাজপথে নামার যুগ, বিপ্লব, শ্লোগান, মিছিলের দিন মনে হয় শেষ হতে চলেছে । ভিকারুননিসা বা পারসোনার ঘটনায় অনলাইন এক্টিভিস্টদের কাজকর্ম এরকম হাজার মিছিলের চেয়ে বেশী কাজে লেগেছিল, খেয়াল করেছেন আশা করি । কাজেই বাম বা ডান যে কারো উস্কানীতে মাঠে নেমে গিয়ে নিজেকে হারাবেন না; আশাহত হবেন ! শেষে আবার “ ধুর এ দেশে কিছু হবে নাহ”--- বলে ওকে বাই বাংলাদেশ আন্দোলন করতে হবে । একসময় মানুষ দেয়ালে দেয়ালে স্লোগান লিখত; এখন ফেসবুকের ওয়ালে লিখছে; মাধ্যম পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু ভাষা একই রয়ে গেছে ।
লড়াই কিন্তু চলবে; কীভাবে :- কর্পোরেটগুলোর ভেতরে ঢুকে পড়ুন, ওদের মাথার অংশটা দখল করে নিন; লড়াইটা যত সহজে বলছি তত সহজ না । এটা সংরক্ষিত রণক্ষেত্র ! শুধুমাত্র সাহসিদের জন্য ! লড়াইটা ভয়ানক হবে বটে ! তবে শুধু সুস্থদের জন্য ! মনে রাখবেন, অকুপাই করতে গেলে হেরে যাবেন, কারন ইংরেজ, আমেরিকান, বহুরূপীয়ান ( বহু+ ইউরোপিয়ান) জাতিগতভাবে লুটেরাগুলা লড়ে সম্পদের জন্য, তাই ওরা “অকুপাই” করে !! আমরা বীর জাতি, আমরা সন্মানের জন্য লড়ি; তাই আমরা সোজা বাংলায় দেশজ রীতিতে “দখল” করি ! কাজেই সুস্থ থাকবেন, সাহসী থাকবেন আর শেষ পর্যন্ত ভাল থাকবেন আশা করি ! অবশ্য মিরজাফরিতে পদে পদে নগদ লাভ; ঠিকাছেনা ? আর লালন কয়---- “ বাকীর লোভে নগদ পাওনা কে ছেড়েছে এ ভুবনে ? ” ---- লালন দিছিল জ্ঞান, আমরা বানাইছি গান কই থেইকা কই লয়া যাইতেছি ! মন্তব্যটা কী অসংলগ্ন হয়া যাইতেছে ?
ভিকারুননিসা বা পারসোনার ঘটনায় অনলাইন এক্টিভিস্টদের কাজকর্ম এরকম হাজার মিছিলের চেয়ে বেশী কাজে লেগেছিল, খেয়াল করেছেন আশা করি ।
এখানে একটু কথা আছে। অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অবশ্যই আন্দোলনটাকে গড়ে তুলেছে, ছড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু তার পরে, যারা কীবোর্ড ছেড়ে, রাস্তায় নেমেছে, সেটা কিন্তু একটা নির্দিষ্ট প্রয়োজনেরই খাতিরে। অনলাইনে আমি আন্দোলনকে সবার মাঝে ছড়াতে পারি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসলে রাস্তায় নেমে দাঁড়াতেই হয়। অনলাইন অ্যাক্টিভিজমের গুরুত্ব এখানেই যে, বিভিন্ন স্তরের অরাজনৈতিক সাধারণ মানুষকে এটা মুভমেন্টে শামিল করতে পারে।
এবং আসলেই, আপনার পুরোটা কমেন্ট পড়ার পরে মাথা ঘুরছে!
ধন্যবাদ এনিহাউ; আপনার চিন্তাগুলোর জন্য।
স্টক এস্কচেন্জ, মতিঝিল/কারওয়ান বাজার, গুলশান এভেনিউ বাদ দিয়া টি এস সি তে কেন?
বাংলাদেশ থেকে বহুজাতিক খেদেয়ানোর পরে, প্রান বা ইবকোর ইউরোপ জয়, বা বাংলাদেশী সেনাবাহিনী লিমিটেডের আফ্রিকা বানিজ্য অথবা ব্র্যাকের আফ্রিকা-আফগানিস্তান, অথবা সঔদি বাংলা ফিশফিডের পাকিস্তান, কেনিয়ায় গিয়ে বানিজ্য করা - ইত্যকার বহুজাতিক কর্মকান্ড বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কি?
টিএসসিতে- কারণ, প্রতীকি এবং সংহতি। উপরের কমেন্টগুলো দেখুন। ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি আগেই।
বাংলাদেশ থেকে বহুজাতিক যদি খেদিয়ে দিই, তাহলে কী পৃথিবী থেকে আলাদা হয়ে ঝোপের রাজা শেয়াল হয়ে বসে থাকবো? আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কখনোই বন্ধ করে দেওয়া হবে না। এটা কোনওভাবেই বাস্তবসম্মত না। বহুজাতিকের হাতে দেশ দেবো না- এই কথাটার অর্থ এখনকার সরকার যেভাবে জনগণের স্বার্থপরিপন্থীভাবে গ্যাস বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দিচ্ছে সেটা বন্ধ করা। বিদেশি ব্যবসাদাররা যেভাবে সাংস্কৃতিক মগজধোলাইয়ে অংশ নিচ্ছে, সবার মধ্যে 'প্রতিযোগিতা' ইত্যাদির যে উড়ে আসা কনসেপ্ট অনুপ্রবিষ্ট করাচ্ছে, এই সবের বিরুদ্ধে আমাদের জাতীয় চেতনাকে তুলে আনা। এই দেশে কেনিয়ান কোম্পানির ব্যবসা করার অধিকার আছে- সেটা এদেশের স্বার্থপরিপন্থী কিছু না হলেই হোল। একইভাবে, বাংলাদেশি কোম্পানি অন্যান্য দেশে গিয়ে ব্যবসা করবে, স্বভাবতই। যদি সেটা সেই দেশের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে বলতে হয়, প্রোপাগান্ডার একাধিপত্যের যুগ এখন 'পুরোপুরি' নাই। সেদেশের মানুষ অবশ্যই প্রতিবাদ করবে। তাদের অধিকারের আন্দোলনের পাশে অবশ্যই দাঁড়াবো।
অধিকার- যত যাই হোক। বিমানবাহিনীর আবদারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আমরা আমাদের নাগরিক অধিকারের পক্ষে বলতে শুরু করেছি। নজর যথাসম্ভব ছড়িয়ে রাখার চেষ্টা করি।
নতুন মন্তব্য করুন