আমার যেদিন ছুটি...

দিহান এর ছবি
লিখেছেন দিহান [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২৪/১০/২০১১ - ১০:১৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার বর মাঝে মাঝে খুব দয়াদ্র আর উদার হয়ে যায়। ‘দিহান, আজ আমি আর তুংকা রান্না করবো। তুমি কয়েকটা নিটোল প্রেমের ছবি দেখে ফেলো’। (এইখানে ও খোঁচা! আমি এ্যাকশন মুভি পছন্দ করিনা। বাদবাকি আর সব জনরাঁ’র ছবি দেখলেও আমার বর বলবে আমি নাকি খালি লভ স্টোরি দেখি!) এতো কিছু গায়ে মাখলে চলেনা। রান্না করবে যখন বলেছে, আমি টিভি চ্যানেলগুলো একটু রিভিশন দিয়ে নেই...

টিভি চালানোর আগেই ফার্নিচার টানাটানির শব্দ শুনি।
-‘ল্যাপটপ আর স্পিকার রান্নাঘরে নিচ্ছি। গান শুনে শুনে রান্না করবো। আর কুইক নেট থেকে কিছু রেসিপির খোঁজ ও নিয়ে নেবো’।
তথাস্তু। চ্যানেল ঘুরিয়ে একটা ভালো মুভি পেয়ে যাই। মিনিট দশেক পরেই আমার বর এসে বলে ‘কি নায়ক নায়িকার প্রেম হয়ে গেছে’?
-এটা ‘ফ্লাইট প্ল্যান’, নায়ক নায়িকার প্রেম বলে কিছু এই সিনেমায় নেই। তুমি শুরু করোনি?
-চা খেয়ে চাঙ্গা হয়ে নিচ্ছি। কি খাবে বলো- গ্রেভি, নাকি লাইট?
-একটা কিছু হলেই হলো।
-ঠিক আছে। ভাত টা তুমি করে দিয়ো,আমি পানির আন্দাজ পাইনা।
-আচ্ছা।
-ডাল বসিয়ে দিলাম, তুমি শুধু বাগাড় দেবে। পাঁচফোড়ন দিয়ো।
-ওক্কে।

পরবর্তি আধাঘন্টা রান্নাঘর থেকে নানারকম আওয়াজ আসে। আমি কান দেইনা। তারপর আরেক কাপ চা হাতে বর এসে বলে ‘রান্না শেষ। সামান্য রান্নাবান্না করে তুমি এমন ভাব ধরো কেনো বুঝিনা। এইতো আমি তিরিশ মিনিটে করে ফেললাম। শুধু ভাতটা আর ডালটা তুমি করবে’!!

খাওয়ার টেবিলে গিয়ে দেখি আলু ভর্তা আর ডিমের একটা কিছু।

- তুমি আলুভর্তা আর ডিমভাজা খাওয়াচ্ছো?
-আলু ভর্তা? কী বলছো এসব? এর নাম ‘গার্লিক পটেটো উইথ বাটার অ্যান্ড মিন্সড টমাটো’।
-আর ডিম ভাজিটার নাম কি?
-তুমি একটা ইম্পসিবল, ডিমভাজি? মিক্সড ভেজিটেবল বয়েল করে,চিকেন কিমা আর সয়াসস দিয়ে ডিম রান্না করলে সেটাকে ডিমভাজি বলে?
-আহা আমিতো নাম জানতে চাইলাম।
-এটা তুংকার আর আমার স্পেশাল। কী নাম দেয়া যায়রে গুড়িয়া? ‘বাপ-বেটি ডিমের তরকারি’- হয়েছে?

হলো আর কই, ভাত ই নেই! আমি ভাত বসাই, ডাল বাগাড়ের ব্যবস্থা করি। লন্ডভন্ড রান্নাঘর ঠিকঠাক করার কাজে হাত দেই। এমন কোনো কৌটা নেই যেটার মুখ খোলা হয়নি! জিরার ফোড়ন দেবার জন্য চামচ খুঁজতে গিয়ে জিরার চামচ পাই চাপাতার ডিব্বায়।
এমন সময় আমার বর আমার চিৎকার করে বলে ‘দিহান, চাপাতা টা ভালোনা, মশলা মশলা গন্ধ’!


মন্তব্য

বিপ্লব কুমার কর্মকার এর ছবি

স্বামীরা এমনই হয়!!!!

আপনার স্বামী মনে হয় বড়লোকের ছেলে তাই গোবর গনেশ। ছাত্রজীবনে হল বা মেসে থাকলে এমন অবস্থা হতো না।

আপনার ঈর্ষা বাড়ানোর জন্য আর একটা কথা বলি।
বড় বড় থ্রি , ফোর , ফাইভ স্টার হোটেলের পাচকরা কিন্তু পুরষ, সেখানে কোন বুয়া নেই।ঢাকা শহরে রান্না শেখার ডিগ্রি দেয়া হয় টমি মিয়া ইনস্টিটিউট থেকে, যার পরিচালক একজন পুরুষ। রান্নার শিক্ষাগুরু কে বুঝতে হবে।

তাই একমাত্র নারীরাই রান্না জানে তা সত্যি নয়।

লেখা স্রেমহইছে।

চরম উদাস এর ছবি

হো হো হো

রু (অতিথি) এর ছবি

ল্যাবের মধ্যে খুব একচোট হাসলাম। আমার চিরচেনা সব ঘটনা।

'স্টিমিং বয়েল্ড রাইস' এবং 'লেন্টিল স্যুপ উইথ স্টার ফ্রাইড অনিওন এন্ড গার্লিক' নিয়ে বাপ বেটিকে দুছত্র শুনিয়ে দিতেন!

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

হো হো হো হো হো হো

তানিম এহসান এর ছবি

”মাসালা টি”র যাত্রা তাহলে এইভাবে শুরু হয়েছিলো! আহা, সুখী পরিবারে সুখ থাক অনাবিল হাসি

guest এর ছবি

হো হো হো

দ্যা রিডার এর ছবি

হাসি

আশালতা এর ছবি

হো হো হো

তবু তো ভালো যে ছুটির দুপুরে একটু আয়েস করে চোখ বন্ধ করতেই মেয়ে এসে চোখের পাতা টেনে ধরে মুখের সামনে মুখ এনে জিজ্ঞেস করেনি, মা তুমি কি ঘুমুচ্ছ ?!

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

guest_writer এর ছবি

সেটা কি মেয়ের বাবার আগ্রহে ?

প্রৌঢ়ভাবনা

আশালতা এর ছবি

বাবার আগ্রহে হবে কেন ? বাঁদরছানা কি অন্য কারুর আগ্রহে বাঁদরামো করে ? ও তো এমনিতেই আসে। তেমনি।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

মৃত্যুময় ঈষৎ(অফ্লাইন) এর ছবি

বাহ্!!! পোস্টের সাথে এ মন্তব্যটি পড়েও মুগ্ধ হলাম............ হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আমি এর একটা ভার্শন করতাম ছোটবেলায়। আমার মশারি গোঁজা মায়ের কখনই পদবাচ্য মনে হয় না। আমাদের ওখানে বেশরকম মশা, কিন্তু তার জন্য না - আমি বিছানায় অনেক ছটফট করি, কখন মশারি গলে পড়ে যাব, তাই মা 'শক্ত করে' মশারি গুঁজে দিত।
কিন্তু রাত্রে আবার আমার প্রায়ই তেষ্টা পেত। জলের জগ থাকত মা-বাবার ঘরে, আমি জল খেতে উঠলে বলতাম, এই দেখ, আমি উঠেছি, তখন মা এসে আবার মশারি গুঁজে দিত। আমি বলতাম, দরকার নেই, কিন্তু যেহেতু শুনত না, বাতিক করত, তাই আমি এমন ডিস্টাপ করে মজা পেতাম।
তার পর নিয়ম হল, আমি উঠব না, ডাক দেব, মা জলের গেলাস এনে দেবে। সেভাবেই কিছুদিন জ্বালালাম। শেষে আইন হল, খাটের পাশেই একটা বোতলটোতলে জল রাখা থাকবে।

আচ্ছা, আপনেই বলেন, বাতিক দেখলে জ্বালাতে মজা লাগে না? আমার ঠাকুমার যেমন প্রচুর বাতিক (অতএব এই ঠাম্মিরও আছে ধরে নিচ্ছি খাইছে ), সূর্যগ্রহণের সময় নাকি খাদ্যগ্রহণ নিষেধ, তাই আমি দেখিয়ে দেখিয়ে ওই সময় বিস্কুট খেতাম। দেঁতো হাসি

আশালতা এর ছবি

বটে ! আমি বুঝি বাতিকগ্রস্ত ? তবে রে ! @#%ঁ৳*&()ঁ%৳#@ একবার খালি হাতের কাছে পাই, পাখার ডাঁটির বাড়ি একটাও ফস্কাবে না বলে দিলাম হ্যাঁ !

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হা হা হা! আম্মাকে নানানভাবে জ্বালানোর কথা মনে পড়ে গেলো। এখনো কি কম জ্বালাই! এখন নাকি আরও বেশি জ্বালাই, হবেও বা! মাঝে বেশকিছুদিন জ্বালাতে পারিনি, ভবিষ্যতেও সেই সুযোগ দীর্ঘদিন না পেলে?! তবে কোনকিছুতে ক্ষেপলে সেটা ইচ্ছা করে করলে যে বিমলানন্দ পাওয়া যায় সেটা তুলনাহীন। দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

শামীমা রিমা এর ছবি

ভালো লেগেছে

guest_writer এর ছবি

বাহ্! ছুটির দিনটা তাহলে ভালইতো কাটে।

প্রৌঢ়ভাবনা

guest_writer এর ছবি

বাহ্! ছুটির দিনটা তাহলে ভালইতো কাটে।

প্রৌঢ়ভাবনা

guest_writer এর ছবি

বাহ্! ছুটির দিনটা তাহলে ভালইতো কাটে।

প্রৌঢ়ভাবনা

মৃত্যুময় ঈষৎ(অফ্লাইন) এর ছবি

হো হো হো
বাহ্ কী সুন্দর!!! সংসার গুলো টিকে থাকুক অপার ভালোবাসায়........... হাসি

উচ্ছলা এর ছবি
বন্দনা কবীর এর ছবি

আপনার বর তবু রান্নাঘরে যান অনেকেরটা তো রান্নাঘর কোন দিশায় সেইটাই জানেনা হাসি

অতিথি অন্যকেউ এর ছবি

অনেক মজা হইসে লেখাটা। আপনাদের ফ্যামিলিটা এতো সুইট! হাসি
সবাই মিলে গুড়ের চা খান। (গুড়)

দিহান এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আহা! আমার এমন সংসার কবে হবে?
ভালো লেগেছে আপু। আপনার লেখা পড়ে আমারও না বিয়ে করতে মন চাইছে লইজ্জা লাগে

দিহান এর ছবি

সর্বনাশ বিয়ের কবছর পরেই তো বলবেন ব্লগার দিহানের লেখা পড়েই আমার এই সর্বনাশ হলো!

ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।

কৌস্তুভ এর ছবি

মজাদার লেখা। এইরকম ঘটনার দুঃখালাপ অনেক মহিলাই শুনিয়ে থাকেন, কিন্তু আপনার লেখাটা পড়তে হয়েছে ভাল।

বাঙালি ছেলেপিলে এমনিতে রান্নার ব্যাপারে বেশ অনাগ্রহী - আলসেই বলা চলে - কিন্তু প্রবাসে এলে আবার অনেকেই টুকটাক রান্নাটা শিখে নেয়। আর আমিতো রান্নায়... হুঁহুঁ... দেঁতো হাসি

ঘ্যান-ঘ্যান এর ছবি

হ্যাপী ফ্যামিলি। জেলাস হয়ে যাচ্ছি।

শাব্দিক এর ছবি

ছোট বেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন। একদম হুবুহু আমার বাবা বেচে থাকতে মা কে এভাবেই রিলিফ দিতেন।খাবারের নাম গুলিও ছিল সেরকম অনিয়ন স্যুপ উইদ গারলিক মাসালা টম্যাটো চিকেন। এমন পদের মুরগী যে শেষ পর্যন্ত আর কারও পেট পর্যন্ত পৌছাতো না। যত রকমের মশলা কোনটার অভাব থাকত না।

রাফি এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো লাগল হাসি খুব মায়া মায়া বেপার আছে একটা হাসি

On a different note, রান্না শিখতে হবে তারাতারি দেঁতো হাসি

রাফি এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো লাগল হাসি খুব মায়া মায়া বেপার আছে একটা হাসি

On a different note, রান্না শিখতে হবে তারাতারি দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি
জয়ন্তী এর ছবি

আমার বরের মতে সে রান্নাতে খুব পারদর্শী। একদিন বললাম রান্না করত দেখি। ঠিক হল সবজি রান্না হবে। রান্না করতে গিয়ে একটু পর এসে বলে মনি তরকারি গুলো একটু কেটে দাও না। দিলাম। তারপর আবার ডাক এল কড়াই কই, খুন্তি কই দিলাম খুঁজে।তারপর রান্না বসিয়ে ডাক এল দাড়ায়ে একটু নারা দাও আমি একটা ফোন করে আসি। তারপর মসলা দেয়ার সময় ও সব খুঁজে দেয়া লাগল।এমন কি মসলার পরিমান এ ও মতামত দেয়া লাগল। শেষমেশ বলা হল মনি তারকারি টা হয়ে গেলে লবন চেক করে নামিয়ে ফেল আমি মেইল চেক করে আসি।
খেতে বসে সে কি কথা............। দেখত কত্ত ভাল হইসে। আর তুমি যে কি রান্দ না!!!!!!

দিহান এর ছবি

হাহাহা...

ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

তিথীডোর এর ছবি

আমি রান্নাবান্না জানি না বললেই চলে। শেখার চেষ্টাও করি না কখনো, হুদাই কে এত ভেজালে যাবে! অ্যাঁ

বছরখানেক আগের একদিনের 'গঠনা' বলি। খাওয়াদাওয়া নিয়ে প্রবল খুঁতখুঁতানির কারণে আমার জন্য রোজই মেন্যু থাকে আলাদা কিছু একটা... সেদিন আম্মু অফিসের জরুরি কাজে আগেই বেরিয়ে যাওয়ায় আমার জন্য কিছু তৈরি করে যাননি। বুয়াও সেদিন গরহাজির। তো বলে গেলেন দুপুরে ক্লাস থেকে ফিরে একটা ডিম ভেজে ভাত খেয়ে নিতে। ফাটালাম ডিম, ছাড়লাম কড়াইতে, তেল দিলাম একগাদা। [তোড়ায় না বাঁধা] ঘোড়ার ডিম ফুলেফেঁপে উঠতে শুরু করল! সেই মুহূর্তেই জননী প্রাত্যহিক নিয়মানুসারে ফোন করলেন। এরপরের সংলাপ--

--তিথী, খাওয়াদাওয়া হয়েছে তোমার? হাতটাত পোড়াও নি তো আবার?
--ইয়ে আম্মু, হাতপা ঠিকাছে। কিন্তু ডিম ব্যাটা তো প্যারাসুটের মতো খালি ফুলেই যাচ্ছে...এটাকে কী করব!
অপদার্থ আর কাকে বলে! ইয়ে, মানে...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাসনীম এর ছবি

হুম...লাইফ স্কিল অর্জন করার উপদেশ দেই আমি সবাইকেই, ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে। আমার মতে এই স্কিলগুলো হচ্ছে...

১/ খাওয়া নিয়ে ঘ্যানঘ্যান না করা।

২/ টুকটাক রান্না-বান্না শেখা।

৩/ গাড়ি, বাইসাইকেল ইত্যাদি চালানো।

৪/ সাঁতার শেখা।

৫/ সম্ভব হলে কুংফু এবং ক্যারাটে টাইপের কিছু।

৬/ কিছু খারাপ গালাগাল শিখে রাখা (বাংলা এবং ইংরেজি)।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

ইয়ে ভাইয়া, গালাগাল ছাড়া বাকিগুলোতে সহমত। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাসনীম এর ছবি

তুমি আপাতত #১ আইটেমের উপরে কাজ করা শুরু করে দাও।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

হে হে হে, তাইলে আমার নির্বাণ লাভ হয়ে গেছে!

৫ নাম্বারে হাডুডুও খেলতে পারি। যদিও সুবিধা হয় নাই তেমন একটা। তবে, বাগে পাইলে এমন চিবি দিয়েই ধরতাম যে প্রতিপক্ষ 'ছাইড়া দে' শব্দও বাইর করতে পারতো না গলা দিয়া।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

চলুক

খাওয়া নিয়ে একটা পর্যবেক্ষণ আছে তাসনীম ভাই, আব্বার কাছ থেকে শেখা। পৃথিবীর মোটামুটি সবখানেই চারটা জিনিসের দাম কাছাকাছি থাকে, এই চারটা গলধঃকরণ করতে পারলে আপনি টিকে যাবেন - ডিম, দুধ, রুটি, কলা!

আর আপনার বলা ৬টা স্কিলের সাথে আরেকটা অ্যাড করি, ম্যাপ দেখতে জানা, বা অন্তত রাস্তাঘাট চিনতে পারার জন্যে ঐস্থানের ইউনিক একটা ল্যান্ডমার্ক (হতে পারে কোন অদ্ভুত দেয়াল-লিখনও) খেয়াল করার ক্ষমতাটা মোটামুটি আয়ত্ব করা, নতুন জায়গায় খুব কাজে দেয়।

গাল-মন্দ শিখে রাখা খুবই জরুরি! তবে প্রয়োগ করতে পারাটাই একটু ট্রিকি! খাইছে

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

হাততালি
বিদেশ পাঠিয়ে দেন বর-কে, বাথরুম পরিষ্কার থেকে কাপড় সেলাই সব শিখে যাবে...

দেশে থাকতে এক গ্লাস পানিও ঢেলে খেতে পারতাম না, কিন্তু খেতে খুব পছন্দ করি এবং কীভাবে রান্না হয় আইডিয়া ছিল...বিদেশে থাকতে থাকতে মোটামুটি ভালই রান্না শিখে ফেললাম। "necessity is the mother of invention". অবশ্য বউই সবসময় রান্না করে, আমি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা করি...যোগালির কাজ (সবাই প্রশংসা করে যায় রাঁধুনির, কিন্তু আসল লোক যে যোগালি সেইটা কেউ বুঝে না, থ্যাংকলেস জব মন খারাপ ) মাঝে মাঝে বাসায় নিজে রান্না করতাম। কিন্তু বউ এক্সপেক্টিং হওয়ার পর ভয়াবহ অসুস্থতা-গন্ধ সমস্যার কারণে টানা পাঁচ মাস নানারকম জিনিস রান্না করেছি...একেকদিন একেকটা...নানা ভাবে...এখন পাঁকা রাধক...খাইছে

অন্যদিকে আমার বাবা তার ছোটবেলা থেকেই মারাত্মক রান্না করেন...আমার দাদী শিখিয়েছেন। প্রতি শুক্রবারে মা বিশ্রাম নেন, বাবা ভয়াবহ মজার সব খাবার রান্না করেন...গত ২৫-৩০ বছর ধরেই। আমার ছোটভাইয়েরও রান্নায় হাত খুব ভাল, কিছু খেতে ইচ্ছা হলে মা ব্যস্ত থাকলে নিজেই করে খেয়ে নেয়...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

দিহান এর ছবি

কাকে যে কী বলেন! উনি বিদেশ ফেরত!

ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।

তাসনীম এর ছবি

বিদেশে আসলে ছেলেরা সব্বাই শেফ-দ্য-কুইজিন বনে যায়। বরকে বিদেশে পাঠিয়ে দেন কিছুদিনের জন্য দেখবেন ফিরে আসলে অনেক কাজে লাগবে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দিহান এর ছবি

বিদেশে রাধে ঠিকই তারপর দেশে এসে আবার যেই কে সেই হয়ে যায়।
আমার বর বিদেশে রান্নার ভয়েই আর বিদেশের নাম মুখে নেয় না...

ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।

তাসনীম এর ছবি

উনি দেখছি জ্ঞানপাপী হাসি

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

দেঁতো হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমি প্রথমবার যেবার প্রবাসী হই। সাধারণ ডিম ভাজারও অভিজ্ঞতা ছিলো না। যাওয়ার আগে নানা ঝামেলার চাপে পড়ে সেই কথা মনে পড়লো একেবারে এয়ারপোর্টে লাগেজ চেক ইন করার পর। আমার দুঃখের কথা শুনে বড় মামী বললেন, টেনশন করিস না বাবা। খাইছোস তো, ওতেই শিখে যাবি কেমনে কী করতে হয়!

বড় মামীর কথা তেমন সত্য হয় নাই। আমি 'কিছু একটা হয়ে যাবে' ছাড়া আর কিছুই রান্তারি নাই। কিন্তু এখন মাশাল্লা পারি। ভালো-মন্দ যা কন, সবই পারি। খাইও। পুঃ যেরকম 'আপসেট থাকলেই খায়' আমিও এখন তেমনি আপসেট থাকলেই ভালোমন্দ রান্না শুরু করে দেই। তারপর রসায়ে রসায়ে খাই। মাঝে মধ্যে খোমাখাতায় জানানি দেই। পাবলিকের লোভ লাগাই আরকি! হাসি

কল্যাণF এর ছবি

এই জন্যেই আমি রান্না ঘরে যাই না দেঁতো হাসি আমি রান্না ঘরে ঢুকলে কাজ নাকি অনেক বেড়ে যায়, আমি বের হওয়ার পর কোন কিছু আর নাকি খুঁজে পাওয়া যায় না, কি আশ্চর্য কথা!! অথচ আমিওতো রান্না ঘরে গেলে কোন কিছুই খুঁজে পাই না, তার বেলায়?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমাদের পরিবারের ছেলেগুলান প্রবাসী হলে ঠিকই রাঁধে বাড়ে খায়, আর দেশে ফিরলেই আর চা-টাও বানায়ে নেয় না নিজে নিজে! তাও আবার ইলেক্ট্রিক জগ-টিব্যাগ সব রেডি করা চায়ের সরঞ্জাম থাকলেও! তবে আমার আব্বা রান্না করতে লাগলে তাতে ডিম মাস্ট! দিতেই হবে! ছোট থেকেই দেখছি, মুরগির সালুনে কাঁচা ডিম ফেটিয়ে ছেড়ে দিলো! মুরগি-আলাডিম-সালুন!

লেখা বরাবরের মতই সুস্বাদু! হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

বন্দনা এর ছবি

আপনাদের ছুটির দিনের গল্প বেশ লাগলো দিহান আপু, ভাইয়া তো অনেক কিউট।।

মেঘা এর ছবি

হ্যাপি ফ্যামিলি :)। তুমি যাই লিখো পড়তে ভালো লাগে।

আফরিন এর ছবি

অনেক মজা পেলাম হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।