তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে-১

মেঘা এর ছবি
লিখেছেন মেঘা [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২৫/১০/২০১১ - ৩:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রাত ১১টার ট্রেন।

প্ল্যাটফর্মের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে অনেকের সাথে সময়টা দেখে নিলো রিশান। আর ১০ মিনিট অপেক্ষা তারপর ট্রেন ছাড়বে। অনেক দিন পর এই যান্ত্রিক শহর থেকে দূরে যাবার অবসর হয়েছে। নিজের জন্য অবসর। মনের জন্য প্রশান্তি। কাজ আর বাসার অবস্থা এতো বেশী মানসিক যন্ত্রনা দিয়েছে যে শান্তি কি জিনিস তাই মনে করতেই কষ্ট হয় এখন। বাসায় গেলে একটু কান পাতলেই শোনা যায় মার সাথে ভাবির মধুর ঝগড়া। আর বাবা মার মধ্যেকার সমস্যাটা তো আছেই।

এসব থেকে অনেক দূরে চলে যেতে হবে এটা ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না রিশান। ট্রেনে বসে থাকতেও অস্থির লাগছে। যন্ত্রনাদায়ক ভাবনাগুলো থেকে মুক্তি চাইলেও পাওয়া যায় না মনে হয়। ঘুরে ফিরে বার বার গত দুই সপ্তাহের কথা মনে হচ্ছে। নাদিয়ার সাথে ব্রেক আপ হবার পর রিশান অনেক চেষ্টা করেছে স্বাভাবিক ভাবে সব কিছু করতে কিন্তু কেন যেন গুছানো সব উল্টা পাল্টা হয়ে গেলো। তবু কোন অভিযোগ না করে জীবনটা কে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো। তবে শেষের দিকে এসে এমন অবস্থা হয়েছিলো রিশানের অফিসের প্রেসার, বাসায় মা বাবার মধ্যে নিয়ম করে ঝগড়া, বন্ধুদের সাথে আগের মত আর কথা হয় না। সবাই অনেক বেশী ব্যস্ত নিজের কাজ নিয়ে। দেখতে দেখতে দম বন্ধ হয়ে যেতে চায়। খুব ভালো কাজ করার সুনাম প্রথম থেকেই অফিসে ছিলো তবুও এমন দম বন্ধ অবস্থাতে বোধ হয় ফেরেস্তারও কাজ করা সম্ভব না। এতো বেশী কাজে ভুল হতে দেখে রিশানের বস নিজে এসে একদিন ওর খোঁজ খবর নিলেন তারপর বললেন,

“দেখো রিশান তুমি এতো ভালো কাজ করো আমরা সবাই জানি। কিন্তু লাস্ট দুই সপ্তাহ তুমি মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারছো না মনে হয়। আমি এটা খেয়াল করেছি। তুমি অনেক বেশী ডিস্টার্ব হয়ে আছো। আমি জানি না তোমার সমস্যাটা কি তবে আমার মনে হয় তুমি অফিস থেকে কিছুদিনের ছুটি নাও। কোথাও বেড়াতে যাও। মনটাকে ফ্রেশ করে আসো। তারপর কাজ শুরু করো দেখবে সব ভালো লাগতে শুরু করেছে।"

বসের সাথে সেদিন কথা বলার পর বেশী ভাবনা চিন্তা না করেই ছুটির জন্য একটা দরখাস্ত ম্যানেজারের কাছে জমা দিয়ে সাত দিনের ছুটি নিয়ে নেয়। এখন শুধু শান্তির পথে যাত্রা শুরু করতে দেরী। তারপর অনন্ত সুখ !

১।

আনমনা হয়ে একদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ মনে হলো কেউ ওর দিকে খুব তীব্র চোখে তাকিয়ে আছে। একটু খেয়াল করে তাকাতেই দেখে প্ল্যাটফর্মে একটা মেয়ে ব্যাগের উপরে বসে তাকিয়ে আছে সরাসরি ওর চোখের দিকে। একটা বারের জন্য চোখের পলক ফেলছে না। মেয়েরা এমন করে একটা ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে না সাধারনত। অবাক হয়ে মেয়েটাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে রিশান। বেশী বয়স হবে না। বেশী হলে ২০ বছর। ফর্সা ছোট খাটো একটা মেয়ে। খুব মন দিয়ে মেয়েটাও ওকে দেখে যাচ্ছে। একমনে তাকিয়ে আছে ওর চোখের দিকে। একটা মহিলা মেয়েটার কাছে যেয়ে দাঁড়াতেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে মহিলার দিকে তাকায়। কি যেন একটা বলতেই মেয়েটা খুব খুশি হয়ে উঠে ট্রেনের দিকে আসতে থাকে। কোন বগিতে উঠলো ঠিক বোঝা গেলো না তবে এই ট্রেনেই যে উঠেছে সেটা তে শিউর রিশান। ট্রেন ছেড়ে দেবার পর এমপি থ্রি প্লেয়ারটাতে প্রিয় কিছু গান প্লে করে জানালা দিয়ে বাইরের অন্ধকারের মধ্যে নিজের জন্য জমানো প্রশ্নগুলো নেড়েচেড়ে দেখছিলো। খুব বেশী কিছু ভাবতে পারছিলো না কেন যেন। ঢাকা থেকে যত দূরে সরে যাচ্ছিলো ট্রেনটা মাথার মধ্যের কষ্টগুলো কেমন করে যেন কমে যাচ্ছিলো। একা একা কোথাও যাওয়া হয় নি আগে কখনো। সব সময় বন্ধুরা মিলে বেড়াতে যেতো। কিন্তু এখন বন্ধুরা বউ না হলে গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরতে বেশী পছন্দ করে। তবে এই একা থাকাটাও খারাপ না।

২।

রাত ৩টার দিকে কেমন হাত পা লেগে আসছে মনে হতে থাকলে রিশান একটু ট্রেনের দরজার কাছে যেয়ে দাঁড়ানোর জন্য উঠে আসে। পাশের কামরার দিকে তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটা বসে আছে। কানে হেড ফোন লাগিয়ে গান শুনছে মাঝে মাঝে মনে হয় গান করছেও সাথে। দেখতে বেশ ভালো লাগছে। কেন যেন মেয়েটা কি গান শুনছে সেই গানটাই শুনতে ইচ্ছা করে রিশানের। মেয়েটা হঠাৎ করে রিশান যেখানে দাঁড়িয়ে সেদিকে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করছে কিছু, এটা দেখেই ও সরে আসে সাথে সাথে। মনে মনে ভাবতে থাকে, “ছি ছি মেয়েটা না জানি কেমন খারাপ ভাবলো।" বাইরে দাঁড়াতে ইচ্ছা হয় না আর। ফিরে এসে একটু ঘুমের চেষ্টা করতে থাকে।

৩।

“স্যার এই সময়ে সাগরের কাছে যাওয়াটা নিরাপদ না। আপনি পরে গেলে ভালো করবেন।" বলতে থাকে গার্ড। তার দিকে চোখ কুঁচকে তাকিয়ে রিশান বলে,

“সেটা আমি জানি। আমি পানিতে নামবো না।" বলেই খালি পায়ে নেমে আসে বালুকা বেলায়। অন্ধকারে ঢেউ এর মাথা সাদা ফেনায় কেমন জ্বল জ্বল করছে। ছুটে যেতে ইচ্ছা করে। এই বিশালতার কাছে নিজেকে কেমন ক্ষুদ্র মনে হচ্ছে। যেই কষ্টগুলোর কারনে বেঁচে থাকাটা আজ কষ্টের সেই কারনগুলোকে কেমন হাস্যকর মনে হচ্ছে। বার বার একটা কথা মনে হতে থাকে—

আমি জানি, একদিন আমিও
এমন
পতঙ্গের হৃদয়ের ব্যথা হব--
সমুদ্রের ফেনা সাদা ফেনায় যেমন
ভেঙ্গে পড়ে--ব্যথা পায়,
মানুষের মন
তবুও রক্তাক্ত হয় কোন এক অন্য বেদনায়.......

এই যে ক্রমাগত ভেঙ্গে পড়া সাগরের তার জন্যে কি সাগর কাঁদছে? তার জন্যে কি সাগর থেমে গেছে? তাহলে আমার জীবনটা এমন থেমে গেলো কেন? এতো তুচ্ছ মানুষ করে সৃষ্টিকর্তা কেন বানালো? জীবনের হিসাব নিকাশ পাওয়া না পাওয়া গুলো নিয়ে ভাবার জন্যেই এখানে আসা। রিশান পানির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কেমন যেন বিমোহীত হয়ে পড়ে সাগরের বিশালতার সামনে।

হঠাৎ করে মনে হলো কে যেন গা ঘেঁষে ছুটে গেলো পাশ দিয়ে। অন্ধকারের মধ্যে এতোটাই চমকে যায় রিশান যে প্রয়োজনের চেয়ে জোরে বলে উঠে,

“কে?!”

সামনে তাকিয়ে দেখে কে যেন পানির দিকে ছুটে যাচ্ছে। আর পিছন থেকে এক মহিলা চিৎকার করতে করতে দৌড়ে আসছে,

“মৌ থামো বলছি। মৌ, মৌ......” ততক্ষণে মেয়েটা পানির কাছে চলে গেছে। রিশানের পাশ দিয়ে মহিলা যাবার সময়ে রিশান খেয়াল করলো মহিলা ভীষণ মোটা। তার পক্ষে কোনদিন দৌড়ে মেয়েটাকে থামানো সম্ভব না। আর এই সময় পানিতে নামা নামে এক টানে বহু দূর ভেসে যাওয়া। কোন রকম চিন্তা ভাবনা না করেই দৌড় দেয় মেয়েটাকে থামানোর জন্য। মোটা মহিলাকে পাশ কাটিয়ে মেয়েটার কাছে যেয়ে হাত ধরে টেনে পিছনে নিয়ে আসতে আসতে বলতে থাকে রিশান,

“আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন? এই সময় কেউ পানিতে নামে? কি, কি করতে যাচ্ছিলেন শুনি? মরতে যাচ্ছিলেন? সাথে করে আরেকজনকে নিয়ে মরতে আসার কি দরকার? এইসব নাটক একা একা করবেন। তাহলে মরতে পারবেন। অযথা মানুষ দেখিয়ে এই সব করার তো কোন মানে দেখি......” কথা বলতে বলতেই থেমে যেতে বাধ্য হয় রিশান মেয়েটার বালুতে বসে পেট চেপে ধরে হাসা দেখে। কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে জিজ্ঞেস করে,

“আপনি হাসছেন কেন?”

“ওহ! আমি আপনাকে ডিস্টার্ব করেছি?! আপনি থামলেন কেন? প্লীজ প্লীজ আবার বলেন। আমাকে এমন মজার আর সুন্দর করে কেউ কোনদিন বকে নি!“

“মরতে যাচ্ছিলেন কেন সেটা বললে আমি বেশি খুশি হই। ঘটনাটা কি?” কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে রিশান।

“মরতে যাচ্ছিলাম?! আমি?! আমাকে দেখে আপনার মনে হয় আমার মত একটা ভীষণ ভীষণ রকম হ্যাপী মানুষের পক্ষে নিজের ইচ্ছায় মরতে যাওয়া পসিবল? ইনফ্যাক্ট আমার তো মনে হয় যখন আমার মরার টাইম হবে আমি তখনো মরতে রাজি হবো না!” বলে আবার লুটোপুটি করে হাসতে থাকে মেয়েটা। মেয়েটার হাসি দেখে নিজেকে মহা উজবুক মনে হতে থাকে রিশানের। কোন মানে হয় এই রকম অপমান হবার?! মনে মনে ভাবতে থাকে রিশান, “আমার সাথেই কেন এই সব হয়? মাত্র বেড়াতে আসলাম তার মধ্যে এই অপমানটা না করলে চলছিলো না তোমার আল্লাহ?!”

“মৌ তুমি কেন করলে এই কাজটা এখনি বলবে আমাকে!” হাঁপাতে হাঁপাতে রিশানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সেই মোটা মহিলা। যার চিৎকারে রিশান ভেবেছিলো এই (ফাজিল) মেয়েটা আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে! মহিলার দিকে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে রিশান বলে,

“হ্যা মৌ না কি প্লীজ আমাদের দুইজনকে আপনি জানান কি কারনে আপনি এমন দৌড়টা দিলেন? আপনার কি মনে হয়েছিলো এটা অলিম্পিকের দৌড় প্রতিযোগিতা?”

“আপনি কিন্তু আমাকে অপমান করার চেষ্টা করলেন। যদিও আমি এগুলো গায়ে মাখি না।" বলেই হি হি করে হাসতে থাকে।

“তোমার চোখে চশমা নেই আজ তুমি চশমা হারিয়ে ফেলেছো। আমি জানি তুমি দেখতে পারছো না তারপরও তুমি এই রকম করলে! আমি তোমার বাবা মার কাছে কি জবাব দিবো?” বলতে থাকে মোটা মহিলা। তাই শুনে রিশানের একটু খারাপ লাগতে থাকে মেয়েটা চোখে দেখে না ভালো করে। আহা রে!

“উফ নিরুম্মা তুমি যে কিনা। দেখতে পারছি না বলে কি আমি এই সুযোগ নষ্ট করবো? চোখে না দেখতে পারলে ছুঁয়ে দেখবো। আর আমি তো তাই করতে গিয়েছিলাম। যদি এই হিরো না আসতো এতোক্ষণে দেখা হয়েও যেত।“ বলে হাসতে থাকে আবার।

মেয়েটা চোখে দেখে না শুনে যা সিম্প্যাথি হয়েছিলো সেটা এই কথা শুনে আবার উবে যেয়ে রাগটা জেগে উঠে রিশানের। রাগ রাগ গলায় বলে,

“জ্বি হ্যা! এই হিরো না থাকলে এতোক্ষনে পানি শুধু ছুঁয়ে দেখতেন না পানি খেয়ে মরে এতোক্ষনে তো শিউর ইন্ডিয়া চলে যেতেন!"

“ও বাবা তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ দেবো। তুমি ওর কথায় কিছু মনে করো না। এই মেয়েটা এমনি। আমরা আজকেই ঢাকা থেকে এসেছি। এখানে সাত দিন থাকার ইচ্ছা মৌর । কিন্তু আসার সময় স্টেশনে ওর চশমা হারিয়ে ফেলেছে। সাথে লেন্স নেই আর ও লেন্স পড়তেও চায় না তারপর থেকে। কি যে একটা বিপদে পড়লাম আমি এই প্রায় অন্ধ মেয়েটা নিয়ে।"

“জ্বি আমি বুঝতে পেরেছি আপনার সমস্যা। আমি কিছু মনে করি নি।"

কথা বলতে বলতে হোটেলের কাছে আসার পর মহিলা যাকে মেয়েটা একটু অদ্ভুত নামে ডাকে সে বলে,

“আমরা এই হোটেলে উঠেছি।"

“আমিও এখানেই আছি আন্টি।" বলে এই প্রথম আলোতে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠে রিশান। সেই স্টেশনে দেখা মেয়েটা! যেই মেয়েটার কথা বলতে গেলে সারাটা দিন মাথায় ছিলো! বার বার বিশাল চোখ দুটো আর তার তীব্র চাহনির কথা মনে পড়েছে। কি তীব্র চোখের দৃষ্টি! কেমন অদ্ভুত করে তাকিয়ে ছিলো মেয়েটা। অবশ্য তার কারনটা এখন বুঝতে পেরেছে রিশান। চোখে ঠিকভাবে দেখতে না পাবার কারনেই এমন করে তাকায় মেয়েটা দেখার চেষ্টা থেকে। ওরা যখন বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে তখন রিশান একটু আগে অপমানের কথা বেমালুম ভুলে মৌর চোখের ভাবনায় ব্যস্ত।

৪।

খুব ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে কোন রকমে ফ্রেশ হয়েই সাগর সৈকতে এসে দেখে আকাশ মাত্র লাল হতে শুরু করেছে। সূর্য উঠবে। কি অপূর্ব একটা দৃশ্য। চোখ ফেরানো যায় না এমন সৌন্দর্য থেকে। রিশানের অনেকদিন এতোটা নির্ভার লাগে নি। কি ভীষণ মানসিক যন্ত্রনাতে কেটেছে গত একটা বছর। মনে হতো বুকের ভেতরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে। যন্ত্রনা থেকে পালানোর জন্য কাজ, সেই কাজের ব্যর্থতা থেকে বের হবার জন্য আরো কাজ, সেই কাজের চাপ থেকে একটু মুক্তির জন্য নাদিয়ার কাছে যাওয়া। নাদিয়ার শুধু অভিযোগ। সেই অভিযোগ থেকে নাদিয়ার বিদায়। আর রিশানের জন্য একরাশ ব্যর্থতার সাথে অনেক অনেক হতাশা। যতদিন নাদিয়া ছিলো ততদিন তাও মনে হয়েছিলো কোন না কোন ভাবে চালিয়ে নিতে পারবে জীবনটাকে কিন্তু নাদিয়া চলে যাবার পর বলতে গেলে জীবন যেন থেমে গিয়েছিলো। বাঁচতে হবে নতুন আশা নিয়ে। জীবনের সঙ্গে বোঝা পড়া করা, একটু চিন্তা করে দেখা আবার নতুন করে শুরু করা যায় কিনা তার জন্যেই ছুটিতে আসা।

যেহেতু এখন সিজন না বেড়ানোর তাই মানুষ খুব কম। বৃষ্টির মধ্যে তেমন মানুষ আসে না কক্সবাজারে। সকাল বেলাটা তাই তেমন ভীড় ভাট্টা নেই। সূর্য উঠে যাবার পর হোটেলে ফিরে গোসল করে নিজের রুমে বসেই সকালের নাস্তাটা সেরে নেয় রিশান। ভালো কিছু গান কপি করাতে হবে আইপডে। খেয়াল করে দেখেছে নাদিয়ার পছন্দের গান ছাড়া আর কোন গান নেই ওর আইপডে। নাদিয়ার চিন্তা থেকে বের করতে হলে নাদিয়ার সব ভালো লাগা, মন্দ লাগা থেকে নিজেকে বের করতে হবে। আজকেই এইসব গান ফেলে দিয়ে নতুন কিছু নিতে হবে। কানের মধ্যে, মাথার মধ্যে, মনের মধ্যে সবখানে নাদিয়া বসে থাকলে তো চলবে না............ভাবতে ভাবতে হোটেল থেকে বের হয়ে দেখে মৌ আর ওর সেই নিরুপ্পা না নিরুম্মা দাঁড়িয়ে আছে। ওকে দেখার সাথে সাথে (মোটা) মহিলা উৎসাহের সাথে ওর কাছে এসে বলে,

“তুমি সেই কাল রাতের ছেলেটা না?”

“জ্বি। কেমন আছেন আন্টি? আর কেমন আছে আপনার মাথা খারাপ মৌ?” হাসি মুখে জিজ্ঞেস করে রিশান।

“আমি কিন্তু মোটেই মাথা খারাপ টাইপের মানুষ না। আমি খুব সুস্থ মানুষ। আপনি বরং বলতে পারেন চোখ খারাপ মৌ । এটাই আমার একমাত্র প্রব্লেম।" হাসি মুখে নিজের সমস্যার কথা বলছে মেয়েটা। কোন রকম আফসোস নেই।

“ওহ না। আমি আসলে সেটা মনে করে বলি নি। কিছু মনে করবেন না প্লীজ।" বিব্রত হয়ে বলতে থাকে রিশান।

“আরে ! আমার কথা শুনে কি আপনার মনে হলো আমি কিছু মনে করেছি? আপনি এখনো সেই প্রবাদের মধ্যেই আছেন দেখা যাচ্ছে।"

“কোন প্রবাদ?”

“কানাকে কানা আর খোঁড়াকে খোঁড়া বলতে হয় না। আপনি নির্দ্বিধায় বলতে পারেন আমাকে। আমি মাইন্ড করবো না। আমি তো কানা না আমি অন্ধ।" হাসতে হাসতে বলতে থাকে মৌ।

“সব কিছু নিয়ে রসিকতা করতে আপনার খুব ভালো লাগে না?”

“হ্যা। এটা তো আমার প্রিয় কাজ। আপনি আমাকে দেখে সেটা এখনো বোঝেননি?” মিষ্টি করে হেসে একটু পর বলে,

“আমি আর নিরুম্মা ভেবেছি সারাদিন আজ বীচে থাকবো। আপনি কি করবেন?” এমন ভাবে প্রশ্ন করে রিশানকে যেন কত চেনা।

“আমি দেখি এখানে কোন কম্পিউটার থেকে গান আইপডে নেয়া যায় কিনা। আমার আইপডের গানগুলো থেকে মুক্তি চাই।" মুখ গম্ভীর করে বলে রিশান।

“গান লাগবে আমাকে বলবেন তো। আমার তো চশমাটা নেই তাই আমি আপনাকে খুঁজে দিতে পারবো না। আমার ল্যাপ্পি থেকে আপনাকে নিয়ে নিতে হবে। আর সেই সময় অবশ্যই নিরুম্মা দাঁড়িয়ে আমার ল্যাপ্পি পাহারা দেবে আপনি কি দেখছেন সেটা দেখার জন্য।" রিশান কিছুটা অবাক হয়ে চিন্তা করতে থাকে একটা মানুষ এরকম অদ্ভুত হয় কি করে?! ক্রমাগত রিশানকে অপমান করেই যাচ্ছে কাল রাত থেকে মেয়েটা। কিন্তু এমন ভাব করে বলছে যেন এটা কোন দোষের কথা না। আর কেন জানি মেয়েটার উপর রাগ করে থাকতে পারছে না রিশান। কোন মানুষের দুর্বলতা নিয়ে করুনা করতে শেখেনি ও ছোটবেলা থেকে। তাই মৌর প্রায় অন্ধত্ব রিশানের কাছে আলাদা কোন ব্যাপার না। তাহলে ব্যাপারটা কি?! অনেকটা নিজের মনে কথা বলার মত করেই মৌকে জিজ্ঞেস করে,

“আপনি কি সব সময় এভাবেই কথা বলেন নাকি আমাকে আপনার খুব বাজে জঘন্য টাইপের মানুষ মনে হচ্ছে দেখে আমার সাথে এই ব্যবহার? ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবেন?”

“আপনি আমাকে লজ্জা দিতে চেষ্টা করছেন তো? আমি ওই সব গায়ে মাখি না।" হাসতে হাসতে বলতে থাকে মৌ।

“সে তো আপনি কাল রাতেও বলেছেন। আমি ভুলে গিয়েছিলাম। আপনি তো অন্যরকম। গায়ে মাখবেন কেন?!”

“তাই তো! আমি অন্যরকম। যা হোক চলুন আমরা বীচে যাই। আমাদের একটু পথ দেখালে ভালো হয়। আমি তো দেখছি না ভালো আর নিরুম্মা ভালো জায়গা বের করে কোনদিন আমাকে বসাতে পারবে না আমি শিউর।"

“আচ্ছা ভালো কথা, নাম কি আপনার?” জিজ্ঞেস করে মৌ।

“রিশান। রিশান রায়হান।"

“রিশান! এটা কি ধরনের নাম? রিশান মানে কি?”

“আপনি এভাবে কথা বলেন কেন?! এতোটুকু একটা পিচ্চি মেয়ে তার সব কথা বাঁকা বাঁকা।"

“আরে বাঁকার কি আছে? রিশান একটা নাম হলো? নামের কোন মানে নেই। আমার নাম যেমন মৌটুসি। সুন্দর একটা মানে আছে। কিন্তু সবাই আমাকে আদর করে মৌ ডাকে।" মুখ উজ্জ্বল করে বলতে থাকে মৌ। আর রিশান ওর ল্যাপটপ থেকে গান নেবার দিকে মন দেয় মৌর কথায় কান না দিয়ে।

৫।

“তোমার গল্পটা বলো মৌ।" সূর্যের ডুবে যাওয়া দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করে রিশান।

“আমার আসলে বলার তেমন কিছু নেই। তুমি তোমার কথা বলো।" বলে মৌ।

“আমার সব কথা তোমাকে বলবো, কিন্তু তুমি তোমার কথা আগে বলো।" জোর দিয়ে বলে রিশান।

“নাহ কিছু না। আমার কিছু নেই।" অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বলে মৌ।

“না কিছু তো আছে বলার। আমি জানি না কী। কিন্তু আমার মনে হয়। প্লীজ তুমি আমাকে বলো।" অনুরোধের সুরে বলে রিশান। তারপর হঠাৎ করেই বলতে শুরু করে মৌ।

“আমার যখন পাঁচ বছর তখন বাবা আমাদের নিয়ে নিউজিল্যান্ড চলে যায়। ওখানে মা মারা যায় ক্যান্সারে যাবার কয়েক মাসের মধ্যেই। তারপর আর বাবা নিউজিল্যান্ডে কেন জানি থাকতে চায় নি। আমরা চলে আসি অস্ট্রেলিয়ায়। আমি কারনটা বড় হয়ে বুঝতে পেরেছি আসলে। বাবা মা মারা যাবার চার মাসের মাথায় বিয়ে করেন তার চেয়ে বয়েসে বড় তার একজন কলিগকে। মার অনেক রিলেটিভস নিউজিল্যান্ডে থাকত। বাবার এই বিয়ে করা নিয়ে অনেক কথা হয়ত শুনতে হতো তাই বাবা শিফট করে অস্ট্রেলিয়ায়। তুমি আবার মনে করো না আমার সৎ মা সিন্ডারেলার মায়ের মত ছিলো। মামনি তেমন না। ভালো। কিন্তু আমার আরো যে দুই ভাই আছে তাদের দিকে একটু বেশী খেয়াল রেখেছে এই আর কি। আমাকে কোনদিন মারেন নি, বকেন নি, কোনদিন কিছু করতেই না করেন নি। যখন যা করতে চেয়েছি তাই করতে দিয়েছেন। আমার অপরাধগুলো বাবাকে বলতেন না। আমাকে বাবা যেন শাসন না করে তার জন্য। যার কারনে আমি লেখা পড়ায় হয়ে গেলাম যাচ্ছে তাই টাইপের স্টুডেন্ট আর হয়ে গেলাম অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়। আমি কি না করেছি। তুমি ভাবতেই পারবে না আমি কেমন ছিলাম। মামনি আমাকে সব করতে দিতো। কিন্তু আমার খুব স্মার্ট আর ব্রিলিয়েন্ট ভাইদের এই সব করতে দিতো না। অনেক শাসন ওদের জন্য। ওরা খুব আফসোস করতো আমার কাছে এই সব করতে পারে না দেখে। মামনির আগে যে হ্যাসবেন্ড ছিলেন তার একটা ছেলে আছে। স্যাম নাম। স্যাম মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসতো। স্যাম একদিন আমাকে বলল মামনি চায় আমি যেন জীবনে কিছু না হতে পারি তাই আমাকে এমন নষ্ট হয়ে যেতে দিয়েছে। ব্যাপারটা আমাকে অনেক ভাবায় জানো। আমি ভেবে দেখলাম স্যাম ঠিক বলেছে। মামনি আমাকে ইচ্ছা করে এই রকম দিকে ঠেলে দিয়েছে।"

“তোমার নিরুম্মা না নিরুপ্পা টা কে?” জিজ্ঞেস করে রিশান।

“উফ রিশান নিরুম্মা মানে বোঝো না?” হাসতে হাসতে বলে মৌ।

“নিরুম্মা মানে হলো নিরু আম্মা। নিরু নাম ওর। আর আমি ছোট থেকে নিরুম্মা বলি। নিরুম্মা আমার মার অনেক দূরের আত্মীয় হয়। উনি বিয়ে করেন নি। আমরা যখন নিউজিল্যান্ডে ছিলাম তখন আমাদের কাছেই থাকত। আর লেখা পড়া করত। পরে বাবা অস্ট্রেলিয়া যাবার পর অনেকদিন দেখা হয়নি। কিন্তু আমার যখন ১৪ বছর বয়স তখন একদিন রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে কাউকে কিছু না বলে নিরুম্মার কাছে চলে যাই। নিরুম্মা তখন মাত্রই নিউজিল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়া গেছে। আমার সাথে সেই ছোটবেলার পর তখন দেখা। কেন জানি না মনে হলো মার দেখা পেয়েছি। আমি নিরুম্মার কাছে থাকি তারপর থেকে। আমার মামনি তার দুই ছেলেকে নিয়ে খুব ভালো আছে। বাবা মাঝে মাঝে খোঁজ নেয়। কিছু লাগবে কিনা জানতে চায়। এর চেয়ে বেশী বাবার আমাকে বলার কিছু থাকে না আর আমিও বলি না। মামনি দেখা হলে, ফোন করলে খুব মিষ্টি করে প্রাণ ঢেলে দিয়ে কথা বলে। এখন বলতে পারো আমাদের দুইজনার একটা প্রতিযোগিতা চলে কে কাকে কেমন করে কথা দিয়ে ঘায়েল করতে পারি।" এই টুকু বলার পর রিশান মৌকে থামিয়ে দিয়ে বলে,

“ওহ আমি এতোক্ষনে বুঝতে পেরেছি তুমি এমন করে কথা বলো কেন! আমি জানো অবাক হচ্ছিলাম যে তুমি কেমন করে পারছো সারাটাক্ষন আমাকে অপমান করতে।" তারপর বলে,

“আর তোমার চোখের ব্যাপারটা। এটা কি.........”

“চোখের ব্যাপারটা হঠাৎ হয়েছে। আমাদের ফায়ার ওয়ার্ক্স দেখতে যাবার কথা ছিলো নিউ ইয়ার ইভসে। আমার তখন বয়স কেমন হবে? ১৩ বছর। বাবা নিয়ে যেতে পারলো না। আমরা তিন ভাই বোন খুব মন খারাপ করছিলাম। তখন মামনি বাসায় সব কিনে নিয়ে আসলো। আমাদের লনের মধ্যে আমরা ফায়ার ওয়ার্ক্স করবো। কেউই ব্যাপারটা ভালো করে জানতাম না। আমি এখনো এটা বিশ্বাস করি। এটা হয়ত সত্যি দুর্ঘটনা ছিলো। আমাকে নিয়ে মামনি আগুন দিতে যায়। তখন হঠাৎ করে একসাথে সবগুলো জ্বলে উঠে। আর এদিকে ওদিকে ছিটে যেতে থাকে। মামনি আমার দিকে খেয়াল করতে পারে নি। কখন ছিটে এসে আমার গায়ে মুখে পড়েছে সেটা সময় মত দেখে নি। আমি অনেকদিন হাসপাতালে ছিলাম। মুখ ঠিক হলেও আমার চোখ আর ঠিক হয় না। ছোটবেলা থেকেই চোখে প্রব্লেম ছিলো। চশমা পড়তে আমার ভালো লাগতো না। কিন্তু খুব কাছে থেকে কিছু দেখার দরকার হলে আসলে চশমা না পড়ে কোন উপায় নেই। সেদিন চশমা পড়ে ছিলাম। সবগুলোতে যখন একসাথে আগুন ধরে যায় তখন আমার মুখ চোখ জ্বলে যায়। আমার দৃষ্টি কমে যাচ্ছে দিনে দিনে। আর কিছুদিন পর আমি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যাবো। জানো যখন আমাকে ডাক্তার বললো আমি একটা সময় সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যাবো তখন আমার সাথে সাথে মনে হলো-এটা কিভাবে সম্ভব?! আমার এখনো কত কিছু করার প্ল্যান ছিলো, কত কিছু দেখার প্ল্যান ছিলো। আমি নতুন জায়গা দেখতে পছন্দ করি, নতুন নতুন জায়গায় তোলা আমার নিজের ছবি দেখতে পছন্দ করি, সব কিছু টেস্ট করে দেখতে আমার ভালো লাগে। সময় আমার হাতে খুব কম কিন্তু করতে হবে অনেক কিছু। আমি খুব খুব কাঁদলাম, বাবা বার বার সান্তনা দিয়ে বলতে লাগলো দরকার হলে কেউ চোখ দান করলে অপারেশন করে আমাকে নতুন চোখ দেবে। আর আমি সেই কথা শুনে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলাম আমার অনেক কিছু করার আছে। অনেক কিছু দেখার আছে। আমি এই সব কিছু না দেখে অন্ধকার জীবনটাকে মেনে নিতে প্রস্তুত না। আমি আমার নিজের চোখ দিয়ে দেখতে চাই সব। অন্য কারো চোখ আমি নেবো না।"

অনেকক্ষন কোন কথা না বলে চুপ করে থাকে রিশান। মৌর সাথে পরিচয় হবার পর আজ চারদিন হয়ে গেলো। এতো এতো বেশী ভালো লেগে গেছে এই পিচ্চি প্রাণবন্ত মেয়েটাকে যে ভাবতেই পারছে না মৌ না থাকলে কিভাবে করে এই ছুটির দিনগুলো পার করতো। রিশান এই চারদিনে নিজের কথা ভাবার কোন সুযোগই পায়নি। পুরোনো কথা মনে করে মৌ মন খারাপ করছে দেখে রিশান মৌর ল্যাপটপ থেকে গান নেবার ফাঁকে ফাঁকে ওর ছবি দেখতে থাকে। আর সব ছবি দেখে দেখে জিজ্ঞেস করতে থাকে কোথায় তুলেছে, কবে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। মৌ খুব উৎসাহের সাথে বলতে থাকে ওর বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়ানোর কথা। শুনতে শুনতে হঠাৎ করে রিশানের কি মনে হতেই বলে,

“মৌ, চলো।"

“কোথায়?” অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে মৌ।

“তোমার চশমা বানাতে দিয়ে আসি।"

“থাক চশমার দরকার নেই। আমি চশমা পড়েও এখন খুব ভালো দেখতে পাই না।" মন খারাপ করে বলে মৌ।

“খুব ভালো দেখতে না পেলেও এখনকার চেয়ে তো ভালো দেখবে তাই না?”

“হুম তা দেখবো।"

“তাহলেই হবে। চলো।" মৌকে নিয়ে শহরে এসে চশমা করতে দিয়ে আসে রিশান। আরো একটা দিন মৌকে অন্ধের মত পার করতে হয়। রাতে খেতে বসে মৌ রিশানকে বলে,

“চশমার জন্য এতো তাড়াহুড়া না করলেও চলতো রিশান। অন্ধ জীবনের সাথে অভ্যস্থ হতে হবে তো আমাকে।"

“যখন অন্ধ হবে তখন দেখা যাবে। এখন এটা নিয়ে ভেবে দরকার নেই। আর তোমার চশমা কেন করে দিচ্ছি জানো?”

“কেন?” জিজ্ঞেস করে মৌ।

“কারন আমি যখন তোমার ছবি দেখছিলাম। আমি কোন ছবি দেখছি বুঝতে পারার সাথে সাথে সেই জায়গার সব খুঁটিনাটি বলছিলে তুমি। কত মন দিয়ে সব দেখেছো তাই মনে আছে। কিন্তু তুমি প্রথম বাংলাদেশ দেখতে এসেছো কিন্তু চশমা না থাকার জন্য কিছুই দেখতে পারছো না। যখন তোমার আর দৃষ্টি থাকবে না তখন তুমি বাংলাদেশের কথা মনে রাখতে পারবে না। তুমি কিছুই দেখলে না তুমি মনে কিভাবে রাখবে? আমি এটা হতে দিতে পারি না। তুমি অন্ধ হয়ে যাবার আগে দেখো মৌ তোমার জীবনের ২০টা বছর এই সুন্দর দেশটার অপার সৌন্দর্য থেকে তুমি নিজেকে কেমন করে বঞ্চিত করেছো। দেখো চোখ ভরে দেখো। আমি তোমাকে সব দেখাবো যতদিন আমার সময় আছে।"

[চলবে]


মেঘা

toree.ahmed@yahoo.com


মন্তব্য

ভাবুক এর ছবি

অনেকটা বাংলা রোমান্টিক নাটকের মতো লাগলো হাসি তবে সব ভালোবাসার গ্ল্পই আমার পছন্দ তাই ভালো
লাগলো। লিখতে থাকুন মন খুলে।

মেঘা এর ছবি

গল্পটা আসলে সেরকমই। খুব সাধারণ একটা ঘটনা। আমার একটা বোনের খুব ইচ্ছা ওকে নিয়ে আমি কিছু লিখি। তাই খুব তাড়াতাড়ি কিছু একটা লিখেছি আমার বোনের জন্য। ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

শাব্দিক এর ছবি

পড়লাম। চলুক।

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ শাব্দিক। আশা করি মেষ পর্বটাও পড়বেন। ভালো থাকবেন।

বন্দনা এর ছবি

লিখাটা ভালো লেগেছে মেঘা, বাকিটুকু লিখে ফেলুন শেষটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বন্দনা আপু। আজকেই নতুন পর্বটা দিলাম।

কল্যাণF এর ছবি

হুম্ম

মেঘা এর ছবি

হাসি

toruni এর ছবি

রোমান্টিক গ্ল্প

মেঘা এর ছবি

হুম। হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।