পুরাণের প্রাজ্ঞ দুরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যাখ্যাকারগণ বলেছেন, স্বর্গ কোন আকাশের মহাশূন্যে অবস্থিত স্থান নয়, একান্তভাবেই মানুষের নানা নামের জাতির যাতায়াতের পথেই একটি সুন্দর স্বাস্থ্যকর প্রাচীন পাদভৌম স্থান।
ব্যাখ্যাকারগণের মধ্যে কেউ কেউ ইলাবৃতবর্ষকে স্বর্গ নামে অভিহিত করেছেন। ইলাবৃতবর্ষে ছিল দেবতা নামে জাতির মানুষদের বাস। স্থান নির্ণয় করতে গিয়ে কোন কোন পন্ডিত নির্দিষ্ট করেছেন, পূর্ব তুর্কিস্থানের এক বৃহৎ জনপদকে।
অন্যত্র অন্য পন্ডিত স্বর্গের অবস্থান নির্দেশ করতে গিয়ে একটি পথের বর্ণনা দিয়েছেন, পঞ্চপান্ডব যখন স্বর্গ গমন করেন তখন তাঁরা যে পথে গিয়েছিলেন, মহা-হিমগিরি তাঁদের অতিক্রম করতে হয়েছিল।
এই মহা-হিমগিরি হচ্ছে হিমালয়।
তারপর মহা-বালুকাভূমি। এই মহা-বালুকাভূমি হচ্ছে তিব্বতের বিশাল মরুভূমি, গবী।
গবী মরুভূমি অতিক্রম করে তাঁরা মেরু পর্বতে উঠছিলেন। এই মেরু পর্বতেই যুধিষ্ঠির ভিন্ন দৌপদী সহ আর সবাইকেই কাল গ্রাস করে।
এই মেরু পর্বতই বর্তমানের `আলতাই' পর্বত।
এই `আলতাই' পর্বতের উপরেই অবস্থিত ছিল স্বর্গ নামক জনপদ। যে জনপদের অধিবাসীরা জাতিতে ছিলেন দেবতা।
(ঝাঁপি খুলে বহু পুরাতন একটি নোটবই পেলুম। তখনকার সময়ে আমাদের দেশে অন্তর্জালের সুবিধা ছিলনা। বইপুস্তক ঘেঁটেই যা কিছু পাওয়া। কখন কোথায় কিভাবে এগুলো পেয়েছিলাম, তা আজ আর মনে করতে পারিনা। তাই কেউ সূত্র জানতে চাইলে দিতে পারবোনা, ক্ষমা করবেন।)
চলবে ?
প্রৌঢ়ভাবনা
মন্তব্য
ভাল লাগল পুরানের ভুগোল জেনে।
ধন্যবাদ পড়বার জন্য।
প্রৌঢ়ভাবনা
স্বর্গতো মানুষের কল্পনা বয় কিছু নয়। আদম আর ঈভের স্বর্গ নিয়ে দুর্দান্ত একটা তথ্যচিত্র দেখেছিলাম, তাতে সেই প্রাচীন বর্ণনা নিয়ে কাজ করে উপগ্রহের ছবির সাহায্যে ৪০০০ বছর আগের বহমান কিন্তু বর্তমানে মৃত নদী অবস্থান জেনে মোটামুটি জানা গেছে আব্রহামিক ধর্মগুলোর স্বর্গ ছিল টাইগ্রিস- ইউফ্রেতিস নদীর মাঝের অববাহিকায়।
আর মহাভারতের ঘটনা তো এসেছেই মধ্য এশিয়া থেকে, অ্যারিয়েনদের সাথে। কাজেই তাদের স্বর্গ সেইখানে হতেই পারে, আলতাই পর্বত কি ! কিন্তু আর যায় হোক পায়ে হেঁটে হিমালয়, গোবী , আলতাই--- , কল্পনাতে তো কত কিছুই হয়।
facebook
অলটাই বা অলটেও হতে পারে কিন্তু বাংলা উইকিপিডিয়াতে আলতাই ই পেলুম।
ধন্যবাদ আপনাকে বিশদে জানাবার জন্য।
প্রৌঢ়ভাবনা
খুব চলবে
পরের পর্ব দিন।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ উৎসাহ জোগাবার জন্য।
প্রৌঢ়ভাবনা
চলতেই হবে।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ধন্যবাদ।
চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কল্যান ফৌজদার ও নজরুল ইসলাম উভয়কেই ধন্যবাদ।
প্রৌঢ়ভাবনা
ভোলগা থেকে গঙগায় পড়েছিলাম অ্যারিয়েনরা এসেছিল রাশিয়ার ভোলগা নদীর পাড় থেকে। এক দল গিয়েছিল গ্রীসে, আরেকদল হিন্দুকুশ পেরিয়ে ভারতে। অ্যারিয়েনরা হয়্ত তাই তাদের ফেলে আসা ভূমিকেই স্বররগে রূপ দিয়েছে। আর বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগেই হয়্ত তাদের কিছু দেবতা ছিলো, যা দুই জায়্গায় কিছুটা আলাদা রূপ পেয়েছে।
সিরিজ চলুক।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
চলতে হবে।
চলুক, তবে আরেকটু মোটা তাজা হওয়া উচিত
ভাল লাগল। ভারতরাজত্ব আসলে ঠিক কোথায় বলছেন?
अभूतिर एषा कस तयज्याज जीवञ जीवन्तम आत्मजम
शाकुन्तळं महात्मानं दौःषन्तिं भर पौरव
भर्तव्योऽयं तवया यस्माद अस्माकं वचनाद अपि
तस्माद भवत्व अयं नाम्ना भरतो नाम ते सुतः
(আদিপর্ব থেকেঃ ৬৯ অধ্যায়, ৩২ শ্লোক)
মোটামুটি বাংলায় অতএব পুরুর বংশধরেরা, তোমরা শকুন্তলার মহত সন্তানকে ভরন পোষন/ লালনপালন কর, এবং যেহেতু তোমরা তাকে আমাদের নির্দেশ মোতাবেক তোমরা লালন করবে, তাই এর নাম হবে ভরত
ভরতের রাজত্বই ভারত। কিন্তু সাড়ে তিন বা চার হাজার বছর আগের ভারতকে সিন্ধু নদের কাছাকাছি কোন মহজনপদ হতে বাধা কোথায়? আজকের যে ভারত ও ভারতবর্ষ ধারণা, সেটা মৌর্যদের আগে কারো মাথায় আসার কথা নয়। মহাভারতেই আশেপাশের রাজত্বগুলোকে আলাদা করে নাম দিয়ে নির্দিষ্ট করা আছে। এই যদি হয়, তাহলে আপনার তত্ব অনুযায়ী সোজা উত্তর দিকে হাঁটা দিয়েও আলতাই পৌছানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে হিমগিরি হিমালয় না হয়ে কারাকোরামও হতে পারে। এবং সেপথে উষর মরু এলাকারও কোন অভাব নেই।
তবে এখানে বেশ বড় একটি অনুসিদ্ধান্ত হল যে আর্যরা ভারতের বাইরে থেকে এসেছিল, তাই আর্যিসাহিত্যে মধ্য এশিয়ার সেইসব এলাকা ও সেইসব জনপদের স্মৃতি খুজে পাওয়া যায়। এই তত্বটি ভিক্টোরিয়ান ভাষাবিদদের বেশ সখের ছিল। কিন্তু প্রত্নতত্ব এই ধারনাকে পুরোপুরি সমর্থণ করার মত কিছু পায়নি। আবার নতুন গজিয়ে ওঠা ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ভারতের ভেতর থেকে আর্যদের উদ্ভব নিয়ে নতুন কিছু কথা বলে জল কিছুটা ঘোলা করে দিচ্ছে।
আপনার দু-একটি লেখা পড়ে জেনেছি , এবিষয়ে আপনার পড়ালেখা বিস্তর। মন্তব্য কলামে আরেকটু বিশদে লিখলে পাঠকগণ একটা দিকনির্দেশনা পেতে পারে।
বেশ কিছু বছর পূর্বে ধর্ম ও মিথ সম্পর্কে আমার আগ্রহ জন্মে। তখনতো ইন্টারনেট সুবিধা ছিলনা তাছাড়া সংশ্লিষ্ট বইপুস্তকও সহজলভ্য ছিলনা। তাই বেশিকিছু জানার সুযোগ পাইনি। ভাসা ভাসা কিছু জানা আরকি।
ধন্যবাদ, মত প্রকাশের জন্য।
স্বর্গ কি পূর্ব তুর্কিস্থানে? তাহলে তো বেশ মজা...কারন আমি এখন পূর্ব তুর্কিস্থানের প্রাণকেন্দ্রে! বলতে গেলে স্বর্গের রাজধানীতে ... কিন্তু সত্যি বলতে কি- এখানকার স্বর্গের লোকেরাও দেখি আমাদের বাঙ্গালিদের মত বাটপাড় । আর স্বর্গের খাবারও ভাল কিছু না, বিশেষত বাঙ্গালিদের জন্য- খাবারে ঝালের লেশমাত্র নেই। সব কিছুতেই পারলেই পনির দেয় ।
তবে স্বর্গের অপ্সরীরা সত্যিই সুন্দর !
বাঙ্গালিরাই শুধু বাটপাড় নয়, সারা পৃথিবীময় এদেরকে খুঁজে পাবেন। স্বর্গের খাবার ভাল নয় বলছেন! শুধু সুন্দরীদের জন্য তা হলে আর এত কৃচ্ছসাধনের প্রয়োজন কি !
যাহোক, ফেরার সময় সুভেনির হিসাবে একটা কিছু সাথে আনবেন অবশ্যই।
পারলে স্বর্গের অপ্সরীই দুয়েকটা আনবেন, দাদা। ব্রাকেটে বলে রাখি 'আমার জন্য একটা ইস্পেশাল'।
নতুন মন্তব্য করুন