ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার বিল্ডিঙের একটা রুমে দাঁড়িয়ে আছি। একটা চিঠি আমার নামে ইস্যু হবার কথা দু সপ্তাহ আগেই। সেটা এখনও আসেনি কেন তার খোঁজে এসেছি, কিন্তু যে ভদ্রলোক সেটার হদিস দিতে পারেন তিনি সম্ভবত সৃষ্টিকর্তার খাস লোক। চাইলেই চন্দ্র সূর্য থামিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখেন। গত দুদিন টানা সারাদিন বসিয়ে রেখেছেন, আজও ঝাড়া তিন ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছেন, মুখ তুলে কথা বলার সময় পাচ্ছেন না। এর মাঝে পাশের লোকের সাথে ক্রিকেট খেলার হালচাল জেনেছেন, কয়েক দফা পান খেয়েছেন আয়েস করে, পাশের রুমের কলিগের মুন্ডুপাত করেছেন, বৌয়ের সাথে দু দফা কথাও বলে নিয়েছেন, এমনকি পাশের জনের কম্পুতে শাহরুখের নতুন গানের ভিডিও পর্যন্ত দেখা শেষ। আমি অপেক্ষা করছি আর কি কি করতে পারেন সেটা দেখার জন্য আর চড়ে যেতে চাওয়া রক্তচাপকে থামিয়ে রাখার চেষ্টা করতে করতে ভাবছি হটাত যদি এই লোকটার গালে চটাস করে একটা চড় কষাই তো দেখতে কেমন হয়।
আমার মুখের রেখায় সম্ভবত সুপ্ত ইচ্ছেটা প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছিল, তাইতে এইবার ওনার সময় হল আমার দিকে মুখ তুলে তাকাবার। বিরাট হাতির সামনে ছোট সাইজের ছাগল ছানা হাঁটলে যেমন করে তাকায় ঠিক তেমনি একটা 'লুক' দিয়ে বললেন, "অ, আপনি ! দাঁড়ান দেখতাছি।" তারপরই ওনার ভীষণ কান চুলকানো ব্যারাম দেখা দিল। কেনে আঙুল কানে ঢুকিয়ে নির্মম ভাবে খোঁচাতে শুরু করলেন। সাধ মিটলে আঙুল বের করে এনে চোখের সামনে তুলে ধরে ময়লার টুকরোটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলেন গভীর মনোযোগে। তারপর আবার আঙ্গুলটা অন্য কানে ঢুকিয়ে রাম গুঁতো দিয়ে বললেন, "আপ্নের তো সমিস্যা আছে"। আমি শান্ত মুখে বললাম, "কি সমস্যা ?" এইবার ওনার মুখে কুলুপ পড়ে গেল। সাথে কান চুলকানোর রোগটাও থেমে গেল। কিন্তু আচমকা নাকের ভেতর চুলকোতে শুরু করল। তাই উত্তর না দিয়ে বেশ কায়দা করে নাকের ভেতরের একটা দাগী লোমকে টেনে নিয়ে দুম করে উপড়ে তুলে আনলেন। পরপর বেশকটা লোমের করুণ মৃত্যু দেখার পর আর সইতে পারলাম না। দাঁতে দাঁত চেপে আবার জিজ্ঞেস করলাম, "কি সমস্যা ?"
আষাঢ়ের মেঘের মত অন্ধকার মুখ করে বেশ কিছু কাগজপত্র ঘেঁটে বললেন, "আপনার সারটিফিকেটে সমিস্যা আছে ।"
আহ্ এতক্ষনে অরিন্দম কহিলা বিষাদে। তা, কি সমস্যা ? নাকি যে ইউনিভার্সিটি বছর কয়েক আগে আমাকে এই সার্টিফিকেটটাই ধরিয়ে দিয়ে বের করে দিয়েছে, এখন সেটাই নাকি তাদের কাছে অস্পষ্ট লাগছে। সেই কারণেই এখানে আঠারো মাসের বছর চলছে। এখন উপায় ? হে হে হে...উপায় একটাই ! আর সেটা যে কি সেটা যেকোনো বাচ্চা ছেলেও বোঝে। ফেলো কড়ি মাখো তেল। সামনে ঝুঁকে এসে যেন ষড়যন্ত্র করছেন এরকম ফিসফিস করে বললেন, "বুঝলেন ম্যাডাম, দেশটা সামাজিক অবক্ষয় দিয়া একদম ভরি গ্যাছে। চাইরদিকে পচুর সমিস্যা, বুজলেন ?!"
মুশকিল হল আমার বুদ্ধি কম। এইসব 'সমিস্যার' প্যাঁচ ঘোঁচ আমার মাথায় ঠিকমত আসেনা। তাই আমি মুখ শক্ত করে আড়াই দিন ধরে ওই বিল্ডিঙের বারান্দায় অপেক্ষা করি। তারপর সুপারভাইজারকে ধরে চেয়ারম্যান স্যারকে বলে বহুকষ্টে ওদের বিরস মুখের সামনে দিয়ে চিঠিটা অবশেষে উদ্ধার করি।
পড়ন্ত বিকেলটায় সাদা কাগজে ছাপানো সাধারণ দেখতে খামটা হাতের মুঠোয় ধরে মল চত্বরের ছায়া ছায়া বিশাল গাছগুলোর নিচে দিয়ে হেঁটে আসতে আসতে হটাত কেন যেন চোখে পানি চলে এল। চারপাশে ছেলেমেয়েরা জীবনের আনন্দে উচ্ছল হয়ে কলকল কলকল করে হাসছে, কথা কইছে। চারপাশে তাকিয়ে জীবনের এই আশ্চর্য রূপ দেখে হটাত বুকের ভেতরটা কেমন করে ওঠে। মনে হয় এই ছেলেমেয়েগুলোই আর কদিন পরে দেশটাকে চালাবে। তখন এই এরাই কি ওই চেয়ারটায় বসে এই এরকমই করবে আরেকজনের সাথে ? কয়েকটা কাগুজে টাকার জন্য আত্মা বিকিয়ে দেবে শয়তানের কাছে ?
হাতের ভেতর কাগজের সাদা টুকরোটা কেমন করকর করে ওঠে। শক্ত হাতে সেটাকে মুঠোয় চেপে বলি, না, এই দুঃস্বপ্নে আমি বিশ্বাস করিনা। আমি জানি, আমার দেশটা একদিন না একদিন হেসে উঠবে; উঠবেই। সবকিছু অস্বীকার করে এই তীব্র স্বপ্নটা আমি দেখে চলি।
খুব মন দিয়ে কোন স্বপ্ন দেখলে সেটা সত্যি হয়ে যায়, আমি জানি।
মন্তব্য
জীবনে প্রথমবার ঘুষ দিয়েছিলাম, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার প্রভিশনাল সার্টিফিকেট তোলার সময়। ওই বয়সে ভয়ঙ্কর নীতিবান ছিলাম। ৩০০ টাকা ঘুষ দেয়ার সময় হৃদয় এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিলো। টাকার শোকে না, মনে হচ্ছিলো ভয়ংকর একটা অন্যায় করছি। কুমিল্লা গিয়ে সব কাগজপত্র জমা দেবার পর এভাবেই কান চুল্কাতে চুল্কাতে বলল, ১৫ দিন পরে এসে খোঁজ নিয়ে যাবেন। আমি বললাম, আমার কালকের মধ্যে জমা দিতে হবে, নাইলে ভার্সিটি ভর্তি করবে না। আমাকে বলল, শিক্ষা বোর্ডের ইতিহাসে নাকি নাই যে একদিনের মধ্যে সার্টিফিকেট তোলা গেছে। ৩০০ টাকা দেয়া মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে নতুন ইতিহাস তৈরি হয়ে গেলো।
http://www.sachalayatan.com/comment/reply/41742/456888#
আপনার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অনেক ইতিহাস রচনা করে চলেছি।
তাহলে ঘুষের অভিজ্ঞতায় আমি এগিয়ে আছি আপনার থেকে। স্কুলে যখন বৃত্তির টাকা তুলতে যেতাম তখন কেরানীটির হাতে তার থেকে বিশ টাকা দিতে হত। নইলে টাকা তুলতে দিতেন না। আমাকে হাত বাড়িয়ে দিতে হতোনা, উনি নিজেই নিয়ে নিতেন, এই যা বাঁচোয়া। টাকাটা দেয়ার শোক তো ছিলই, সাথে একজন বড় মানুষ অবলীলায় একটা অন্যায় কাজ করছে এবং আমি কিছুই বলতে পারছিনা এই জিনিষটা ভয়াবহ যন্ত্রণা দিত। বহু বছর আগের কথা, অথচ এখনও লোকটার মুখ আমি পষ্ট দেখতে পাই। তখন প্রায়ই দুঃস্বপ্নে দেখতাম কিনা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আলো আসবেই। ভালর আগের যে চুড়ান্ত মন্দ আসে সে সময়টা চলছে এখন। দূর্ভাগ্য আমাদের হয়ত আমরা পৃথিবীর সেই মন্দ সময়টারই মানুষ। আপনার বোধের সাথে মিলে গেল আমার বোধ। এই বোধ এখন আনেকেই আরো প্রবল হয়ে উঠছে। তাই বলছি আলো আসবেই।
আলো আসুক। প্রবল আলোয় ভেসে যাক আমাদের বুড়ি পৃথিবীর জরা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশালতা, এই স্বপ্নটাই আমি ২১ বছর আগে মানে ৯০ এ দেখেছিলাম। সম্ভবত খুব মন দিয়ে দেখতে পারিনি।
আপনার স্বপ্নটা সত্যি হোক।
প্রৌঢ়ভাবনা
আপ্নেও দেহি ৯০ (৯০ বছর বয়স সেটা কিন্তু বুঝাই নাই)! ২১ বছর হয়ে গেছে! মনে হয় এই তো সেদিন! এই সময়টা কোথাও ভাল করে কেউ ধরে রাখে নাই। প্রৌড়ভাবনা আপনার কাছে অনুরোধ রইল, ৯০-এর গন আন্দোলন নিয়া কিছু লেখেন।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
বলেন কি, ২১ বছর হয়ে গেল ! কিন্তু তাই বলে কি সময় শেষ প্রৌঢ়ভাবনা ? নিশ্চয় নয় ! আবার বাঁধুন নিজেকে; আবার আমরা স্বপ্ন দেখি, সবাই মিলে !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।
ওরা নষ্ট হয়েছে বলেই আমরা তাদের দলে ভিড়ব না।
facebook
হ্যাঁ, অবশ্যই মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। এত চমৎকার প্রতিজ্ঞার জন্য দিলাম।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হ্যা!
অবশ্যই !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
এমনটা কতোবার যে করতে হয়েছে!
দুঃখজনক। আমরা অদ্ভুত এক জালে জড়িয়ে গিয়েছি যে, বেশির ভাগ সময়েই মেনে নেয়া ছাড়া কিছুই করার থাকেনা। ওরা বাধ্য করে সবাইকে মেনে নিতে। তখন অদ্ভুত এক ক্রোধ তৈরি হয়। আমি চাই এই ক্রোধটা একসাথে তীব্র হয়ে উঠে এই জঘন্য শেকলটা একদিন ভেঙ্গে দেবে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
সমিস্যা তাড়াতাড়ি দূর হোক; শুভকামনা রইল।
খাইষ্টা, অভব্য লোকজনের আচরণে মন খারাপ করতে নেই। যারা ইতর, তারা ইতরামি না করলে দুনিয়া তো ইস্টপ হয়ে যাবে, আশালতা বেগম
ভালো থেক।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
তোমার কি মনে হয় যে এইসব ইতর লোকেরা ইতরামি করে বলেই দুনিয়াটা সচল আছে আর তা না করলে বন্ধ হয়ে যাবে ? এরা যদি এই শয়তানিগুলা না করত তাহলে দুনিয়াটা আরেকটু গতিশীল হতো না কি ? আমাদের বেঁচে থাকাটা আরও একটু সহনীয় হতোনা কি ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ভাগ্যিস বুয়েটে এমন কিছু লাগে নাই!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
নাকে কানে সমস্যাগ্রস্ত লোকগুলো সব জায়গাতেই আছে ভাই। আপনি বোধহয় কপালগুণে বেঁচে গেছেন। সবাই তো আর আপনার মত ভাগ্য নিয়ে আসেনি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
lab er pc theke comment korchi. tai bangla nai.
Vaiya, amar to buet eo lagchilo
সতিই মাঝে মাঝে মেজাজ এত খারাপ হয়! ইচ্ছে করে একটা কালাসনিকপ্ফ দিয়া সব সাফা কইরা ফালাই।
আপনার হাতে তবুও সময় ছিল। জার্মানে আসার ঘটনাতো জানেনই। কষ্ট কইরা যখন পড়লামই তখন সনদটা লইয়া যাই, যদি কোন কামে লাগে! মনে হয় এখনই ঐ লোকই সার্টফিকেট দেয় রেজিষ্টার্ড বিল্ডং থেকে। অনেক কষ্টে ৫০ টা টাকা নগদ দিয়া সনদ নিয়া জার্মান আইসি।
কিন্তু স্বপ্নটা আপনার মতো এখনো দেখি। হয়তো এমন দিন নিশ্চই আসবে; দেশে গেলে বিমান বন্দর থেকে গ্রামে যাওয়ার সময় পথে গাড়ি থামিয়ে পুলিশ আর আমাদের গাড়ির চালকের কাছে টাকা চাইবে না।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পড়ার এবং সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ পুতুল। এই আমাদেরকে নিয়েই তো দেশ, পৃথিবী তাইনা ? আমরা সবাই মিলে একজোট হলে সবসম্ভব বলেই বোধ হয় আমার।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমাদের দেশে এইসব স্তরে করাপশন খুব বেশি। উন্নত দেশগুলোয় করাপশন মূলত উঁচু পদগুলোয়, এইসব স্তরের লোকগুলো সরল।
এক দাদা ঠিকই বলেছিলেন, যে আমেরিকায় এইসব লোকগুলো তাদের কাজটা তেমন ভালো পারেনা, এর অর্থ এই নয় যে তারা সেটা করতে চায়না বা ঘুষ চায়, এর মানে তারা ততটা দক্ষ নয়। আর আমাদের দেশে কাজটা করতে পারে দিব্যি কিন্তু করবে না, তার বদলে ফিল্মি ম্যাগাজিন পড়বে।
স্বপ্ন দেখা ভালো, কিন্তু সেটা যে সত্যি হবেই সে বিশ্বাসের কোনোই গ্যারান্টি নেইকো।
সবকিছু কি আর প্রব্যাবিলিটির আঁক কষে বেরোয় বাপু ! কিছু জিনিষ বুকের গহনে থাকে, তাতে বিশ্বাস রাখা চাই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঠিক ঠিক।
তাই স্বপ্নগুলো বাঁচিয়ে রাখতে হয়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এই "সমিস্যা"তে আমিও পড়েছিলাম - সে এক বিরাট ঝামেলা!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
বটে, তা সেই বিরাট ঝামেলার গল্প শুনতে পাইনা ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
সরকারী আর ইউনিভার্সিটির রেজিষ্ট্রার অফিসের সবার কানে "সমিস্যা" কেন কে জানে??? সবাইকে দেখি বেশ আয়োজন করে কান চুলকাতে ।
আশালতা, আমিও কেন জানি ভাবতে পারিনা আমাদের ভবিষ্যত অন্ধকার। আমরা পারিনি তাতে কি? আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম পারবেই।
শুধু রেজিষ্ট্রার অফিস কেন, যেকোনো সরকারি অফিসেই এই মহামারী চলছে। তবে হ্যাঁ, আমরা পারিনি, পারছিনা ঠিকমত, তাই বলে আর কেউই পারবেনা এ হতে পারেনা। অন্যরা পারবে একদিন, পারতেই হবে। আমাদের থেকেই পারাটা শুরু করলে ক্ষতি কী ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঢাবির রেজিস্ট্রার অফিস? আমি এখনো ঐ জায়গাকে ভয় পাই!
দেশটা আসলেই হেসে উঠবে তো?
ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।
বিশ্বাসে মিলায় বস্তু !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমি প্রথম ঘুষ দিয়েছিলাম অজান্তে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সময় সকল কাগজ জমা দেবার পরে কেরানিটি বল "১০০০ টাকা দেন" আমি দিলাম, বলে এবার আপনি যান, আমি বললাম টাকার রিসিট? সে বলল, "আমরা রিসিট দেই না" আমি ভাবলাম অ আচ্ছা, এই নিয়ম, হতেও পারে, ব্যাঙ্ক রিসিট দিবে এরা হয়তো দিবেনা। পরে যখন সে ভর্তি বাতিল করে খুলনা বিস্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম তখন উপলব্ধি করলাম সেই ১০০০ টাকা ঘুষ ছিল।
আপু, আমি বিশ্বাস করি আমরাই পারব এইসব পঙ্কিলতা দূর করতে। স্বপ্ন দেখিনা, নতুন স্বপ্ন তৈরী করে বিলিয়ে দেই নতুনের মাঝে।
ঠিক বলেছেন ব্যাঙের ছাতা। এই জন্যেই আমি স্বপ্নটা ছড়িয়ে দিতে চাই সবার মাঝে। যতদিন না আমরা নিজেরা এতে সত্যি বিশ্বাস করে উঠতে পারছি, ততদিন তো এ সম্ভব না। নিজেদের ওপর আস্থাটা ফিরিয়ে আনা হল প্রথম কাজ। 'পারব' এই বিশ্বাসটা তৈরি হলে বাকিটুকু খুব কঠিন না কিন্তু।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
এই সব "সমিস্যা" গুলোকে খোদা কেন জানি খাস জায়গার মাটি দিয়ে তৈরী করে প্রতিটি ইউনিভার্সিটির রেজিস্টার বিল্ডিং এর খাস গদিতে বসানোর জন্য।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
স্বপ্ন সফল হোক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ নজরুল ভাই। এটাতো আমাদের সবার স্বপ্ন, তার চাইতে বলতেন, আমাদের সবার স্বপ্ন সফল হোক।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
স্বপ্ন দেখাটা দরকার, জীবনে চলার জন্য আমার কাছে এটা খুব জরুরি।
সহমত।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
সচিবালয়ে, ডিজি অফিসে যান, আর কোন দুঃখ থাকবেনা। সেখানে সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সবেই নাক কান বিশেষজ্ঞ।
লোকে যে বলে ওখানকার টেবিল চেয়ার পর্যন্ত ঘুষ খায় কথাটা তো এমনি এমনি হয়নি। সরকারি অফিসে কাজ পড়লেই মুখ শুকোতে বাধ্য। কিন্তু কী জানেন, এই অনিয়মটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা ধরেই নিচ্ছি এটাই চলে, এটাই চলবে। এর অন্যরকমও কিছু যে হওয়ানো যায় সেটা ভুলেই যাচ্ছি আমরা। সেটাই বেশি দুঃখের।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আচ্ছা! এই বিষয়টা মনে হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম রকমের বেশি?! এ পর্যন্ত বেশ অনেকের কাছে এই সংক্রান্ত জটিলতা আর 'অর্থায়ন' প্রকল্পের কিচ্ছা-কাহিনি শুনলাম। রাবিতে কিন্তু এই জিনিসটা ফেস করতে হয়নি কখনো। হ্যাঁ, বার বার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ব্যাংকের 'বিবিধ' স্লিপ পূরণ করে আর কিছু ফর্ম ফিলাপ আর অ্যাডমিস্ট্রেশন বিল্ডিং-এর তিন তলা চড়কি ঘুরে, হল, ব্যাংক, ডিপার্টমেন্ট ইত্যাদি আরো কিছু বিল্ডিং ঘুরে হলেও কোনদিনও অর্থায়ন প্রকল্পে যেতে হয় নাই। আমার নামটা তাড়াতাড়ি কার্যোদ্ধারে সাহায্য করে সেটাও আমি জানি, কিন্তু সেটা পারতপক্ষে প্রকাশ না করেই বরং সবার সাথে দলেবলেই সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট এগুলো করেছি। সবাই এফিশিয়েন্ট আর দারুণ টাইমটেবল মেইন্টেইন করে সব হুটহাট করে দিচ্ছে তা না। কিন্তু কই কখনো তো বন্ধুবান্ধব, ক্লাসমেট, পরিচিতজনের কাছেও এমন দুর্নীতির কথা শুনি নাই! দ্রুত চাও আর নির্ধারিত ডিফল্ট টাইমে, নির্দিষ্ট ফি জমা দাও, নির্দিষ্ট কাগজের সাথে, ব্যস! ডান!
এমনকি কিছুদিন আগেই গেছিলাম রাজশাহী বোর্ডে, এই প্রথম। নাকি এক বন্ধু বললো যে খেয়াল করে দেখতে আমাদের SSC মার্কশিট বাংলিশে, দেখি তাইতো! তাই ভাবলাম কী আছে জীবনে করে রাখি পুরাই আংরেজীতে, যদি কখনো লাগে। হাতে খানিক ফ্রি সময় আছে দেখে হপ্তা খানেক আগে গেলাম। সেখানেও সিস্টেম বেশ ভালো দেখলাম, সুন্দর ফর্ম আছে, নির্ধারিত ফি আছে, কাছেই ব্যাংকে গিয়ে পে-অর্ডারের টাকা দিয়ে (সেখানেও প্রচণ্ড ভীড় সত্ত্বেও কোনরকম সমস্যা হলো না), জমা দিয়ে দিলাম মূলটার সাথে। হুঁ, আমার অফিশিয়াল র্যাংকও কাজে দেয় বৈকি, কিন্তু সেটা বলার প্রয়োজন পড়ে না তেমন। যেমন বোর্ডে পরিচয় না দিলেও একই সময়েই করে দিতো মনে হলো। তবে কিনা ফর্ম দেবার লোকটার সামনে বসেই ফর্মটা ফিলাপ করতে গিয়ে আরেকটু হলেই ভুলচুক হয়ে যেত, তিনি যেভাবে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে আলাপ জুড়েছিলেন!!
আপনাদের এমন হাল কেন? এইটা নিয়ে ঢাবির মানুষজন চেপে ধরে লিখেন না কেন, নামধাম সহ?! ভারী অন্যায় তো! আর আপনারা কি ঝাড়িটাড়ি দেন্না? আমার তো মেজাজ খ্রাপ হইলেই কষে ঝাড়ি দেই। ঝাড়ির উপ্রে কিন্তু ঔষধ নাই। এইসব মানুষ হলো শক্তের ভক্ত, নরমের যম।
তবে আপনার কথাটাও খুব সত্যি!
হবে একদিন, আমাদেরকেই করতে হবে আরকি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
বলেন কি, এত ভালো অবস্থা ! আমি তো চিন্তাই করতে পারিনা। ঢাবির অফিস গুলোর বেশির ভাগেই এই চেহারা। জান পানি করে দেয়। আমার তো রাজশাহী যাওয়া লাগবে সার্টিফিকেট তুলতে। সবাই খালি ভয় দেখাচ্ছে, তাই পেছোচ্ছে। সাহসই যোগাড় করে উঠতে পারছি না যে ওইখানে না জানি কি খেল দেখতে হবে। যা হোক আপনার কথায় একটু ভরসা পেলাম।
না রে ভাই, আমি মানুষজনকে মোটে ঝাড়ি ঝুড়ি দিতে পারিনা। খালি খেয়েই যাই। সেদিন মিতিন আমাকে বললে, এর পর যখন তুমি রাগ হয়ে আমাকে বকা দিতে থাকবা আমি তখন তোমার নাকে চুমু দিয়ে দেব ! এইরকম ঝাড়ি খেয়ে চুপচাপ থাকা ছাড়া উপায় আছে বলেন ?
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমি আজকে একটু খোঁজখবর করলাম আপু। দশ-পনের বছর আগে নাকি এখনকার চেহারা ছিলো না। শুনলাম দূরের মানুষ, গ্রামের মানুষ আসলে, দ্রুত সার্টিফিকেট তুলতে চাইলে এখনও নাকি দুই-একজন অফিসার খানিক নাকানিচোবানি খাওয়ায়। শিক্ষক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারো মাধ্যমে তুলতে পারলে সবসময়েই সুবিধা হয়। কিন্তু ইন জেনেরাল দুর্নীতির ছবিটা আর নাই। আমরা ছাত্রাবস্থাতেই বা তার শেষেই যা যা সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট তোলার তুলে ফেলেছি, শুরু থেকেই চাকরি-বাকরির বা অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনে লেগেছে বলে। আর তখন বা এখন সেরকম কিছু চোখে পড়েনি। সবাই যে এফিশিয়েন্ট না, এটাতো আগেই বলেছি। এটা সম্ভব হয়েছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রশাসনিক সিনিয়র অফিসার এঁরা শক্ত হওয়ায়। মাথায় সমস্যা থাকলে আসলে কোন কিছু করা সহজ না। মাথার দিক ঠিক হতে হবে আগে, তাহলে লেজের দিকও ঠিক হবে।
মিতিন তো জোস ভাগ্নে দেখি! একে চুরি টুরি করে আনা যাবে নাকি? বেশ পছন্দ হয়েছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আশাদি নামের মর্যাদা রাখা চাই কিন্তু।
আপনি এক একটা সময় এত ভয় ধরিয়ে দেন। কি যে বলেন অর্থই তো বুঝিনা। এই লাইনের মানে কি যে, আমি নামের অবমাননা করছি ? কিভাবে? হাতি গণ্ডারের কবল থেকে বেরিয়ে মানেটা বলে দিয়ে যান তো শিগগির।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
স্বপ্ন সত্যি হবেই একদিন। হতেই হবে।
আপনার লেখা অসম্ভব ভালো লাগে আপু।
এইতো চাই। আসুন স্বপ্নটাকে সবাই মিলে তীব্র করে তুলি, একদম ঝড়ের মত করে।
মন্তব্যের পরের অংশের জন্য অনেক ধন্যবাদ কাশফুল। আপনার নিকটি ভারী ভালো লাগলো। এখন মনে হচ্ছে ইশ তখন কেন এত সুন্দর নাম মাথায় এলনা ! যাহোক (গুড়) নিন।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
তবে আমার ভাল অভিজ্ঞতাও শেয়ার করে যাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সময় জানতে পারলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট’ লাগবে। তখন পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ‘কাগজ’ তোলার অভিজ্ঞতা হয়নি। এক ‘বিশেষজ্ঞ’ সহপাঠী আকর্ণ বিস্তৃত হাসি দিল – বুঝবি ঠ্যালা। আমি ‘বেয়াদবি’ করলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি লিখলাম, মধু-মাখানো চিঠির মূল বক্তব্য - এই আমার ডিটেইলস, মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট দরকার। তারপর আমার ‘পাগলামি’ নিয়ে হাসাহাসি...।
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই রেজিস্ট্রার অফিসের এক কর্মকর্তার কাছ থেকে চিঠি আসল, একটা ফর্ম সহ। তিনি বললেন এই ফর্ম ‘পুরণ এবং সত্যায়িত করে, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফি’র’ (যেটা সামান্য এবং জেন্যুইন)এবং রেজিস্টারকৃত একটা চিঠির টাকাটা পাঠালে তিনি মা’ইগ্রেশন সার্টিফিকেট’ তুলে পাঠাবেন। তিনি তাঁর কথা রেখেছিলেন। আমি সার্টিফিকেটের সাথে যত্ন করে সেই চিঠিটা রেখে দিয়েছি...। এখন রূপকথার মত মনে হয়...।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো অভিজ্ঞতা নেই বললে খুব মিথ্যাচার হবে। আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে আমাকে যে কি পরিমাণ সাহায্য করা হয়েছে চিন্তাও করা যায়না।
এক দুপুর তিনটায় হেলে দুলে ডিপার্টমেন্টে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম এম ফিলের ফর্ম জমা দেয়ার ডেট টেট দিয়েছে কিনা। বলে কিনা সেইদিনই বিকেল পাঁচটায় জমা দেয়ার শেষ সময়। আমার তো আক্কেল গুড়ুম ! জিজ্ঞেস করলে সুপারভাইজর ঠিক করা আছে কিনা, আমি বললাম সেই কবে পাশ করে বেরিয়েছি এতদিনে স্যার ম্যাডাম সব কবেই মরে হেজে গ্যাছে। সুপারভাইজার কোথা পাবো ? দু ঘন্টায় ফর্মই বা জমা দেব কি করে ? যেখানে এক মাসই লাগে সব যোগাড়যন্ত্র করে জমা দিতে। বললে বিশ্বাস করবেন না, দু ঘণ্টায় সুপারভাইজারসহ সব যোগাড় হয়ে গেলো, ফর্ম জমাও দিয়ে দিলাম ! আমাকে যেটা করতে হল শুধু চোখ ছলছলে করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হল কতক্ষণ !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আপনার ভাগ্য ভালো দিদি কাজ উদ্ধার করতে পেরেছেন। বুয়েটে অবশ্য এইধরনের পরিস্থিতি ফেইস করিনাই কখনো, বরং বাইরে আসার আগে রেজিস্টার অফিসে তাড়া দিয়েই কাগজ পত্র নির্দিষ্ট সময়ের আগে বের করেছি উনাদের সাহায্য পেয়েই।
লাকি ইউ !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বুয়েটে এমন পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়নাই। বরং নিজে ভুল করেছিলাম বলে হাল্কা ঝাড়িও খেয়েছি।
আপনে নিজেই ঘুষ দাবী করে বসছিলেন ভদ্রলোকের কাছে?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হ, এর পরে ঘুষি খাই আরকি!
হে হে হে... আমিও এইটাই বলতে যাচ্ছিলাম, যে আপনি নিজেই ঘুষ চাইসিলেন?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ঘুষের জন্য ঘুষাঘুষি !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
" পাল্টে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেলোনা " - কবীর সুমনের কথায় কথা বলে গেলাম।
আর
একদিন ভোর হবেই হবে...
ধন্যবাদ তাপস শর্মা । অনেক অনেক
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঘুষের জাল এত বেশি বিস্তৃত যে ব্যাপারটা নির্মূল করা দুঃসাধ্য (অসাধ্য নয় অবশ্যই)। সকলেই (চেয়ারম্যান থেকে পিওন-উমেদার) ফাইনানশোল সলভেন্সি চায়, সরকার পারছেনা (নিজেদের সলভেন্সি নিয়েই তারা বড় বেশি কন্সার্নড) যেহেতু তাই তারা 'যার-যার-তার-তার' চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এ কারণে ব্যাপারটা একদিক দিয়ে কঠিন হয়ে উঠছে (একই ভাবে জিনিশটা শাপে বর হ্তে পারে)।
আপ্নার ধৈর্য্য প্রসংশনিয়। সকলেই ধৈর্য্যশীল হলে হয়ত ওরা এক সময় গিভ আপ করত,
শাফি।
এক এক সময় সত্যি হাল ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু প্যান্ডোরার বক্সের শেষ গিফটের জ্বালায় পারিনা। আশায় বাঁধি বাসা। পড়ার জন্য (গুড়)
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
মাস দুয়েক আগের রাজশাহী বোর্ডের একটা ঘটনা শেয়ার করে যাই।
সার্টিফিকেট/মার্কশীট বোর্ডের সত্যায়িত করার জন্যে রাবি'র এক ছোটভাইকে পাঠিয়েছিলাম, নিজে যেহেতু ঢাকা থেকে যেতে পারছিলাম না। সে গিয়ে নির্ধারিত ফি ব্যাংকে জমা দিয়ে নির্দিষ্ট ভদ্রলোকের কাছে কাগজপত্র জমা দিয়েছে, কিন্তু তখন সেই ভদ্রলোকের ভাবভঙ্গী নাকি তেমন সুবিধার ছিলো না; আমার ধারনা নাক/কান চুলকানো কিছু হবে। কিন্তু আমি বলে দিয়েছিলাম সম্ভব হলে কিছু না দিয়ে কাজ করতে। তাই সে কিছু না দিয়েই চলে আসছে।
নিয়মমাফিক এক সপ্তাহ পরে দেয়ার কথা। তো সে যখন আনতে গেছে, গিয়ে দেখে, এইচএসএসসি'র টা সুন্দর মত করে রাখছে আর এসএসসি'র টা সে যেভাবে যেখানে রেখে আসছিলো সেভাবেই সেখানেই নাকি পড়ে ছিলো!!! আমার হাতে ততদিনে সময় নাই তেমন, এম্ব্যাসী তে কাগজপত্র জমা দিতে হবে; সো আমি ওরে বললাম দেখো কথা বলে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে আর বোঝার চেষ্টা কর পানি কোন দিকে গড়ায়! অবস্থা বেশি খারাপ মনে হলে কিছু দিয়ে দিও, কারন সেদিনই ওটা না পেলে আমি ঝামেলায় পড়ে যাবো ! [:(]। যাক সে কথা বার্তা বলতেছে,বসে আছে; টাইম টু টাইম আমাকে সব আপডেট দিচ্ছে ফোনে। এক পর্যায়ে নাকি সেই কর্মকর্তা/কর্মচারী ভদ্রলোক ওকে এক পাশে টেনে নিয়ে গিয়ে বলে কিছু ছাড়েন!! বেচারা আর কি করে, দিয়েছে; আর ৫ মিনিটের মধ্যে ডান!
আর একটা ইনফো।
আমার সার্টিফিকেট ছিলো লেমিনেটিং করা। লেমিনেটিং তুলে আমি পাঠিয়েছি। জানেন হয়ত লেমিনেটিং তোলার পরে কাগজের চেহারা ভালো থাকেনা, বিশেষ করে ব্যাক সাইড এব্রো থেবরো হয়ে গেছিল বেশ। তো বোর্ডে প্রথমে এটা নিতে চায় নাই, বলছে নাকি এটা করা যাবে না, লেখা ওখানে ভালোমত বসবে না, তাছাড়া এম্ব্যাসী তেও নাকি লেমিনেটিং তোলা কপি নেবে না! কী করতে হবে তাহলে? আপনাকে একটা ডুপ্লিকেট কপি প্রথমে বোর্ড থেকে তুলতে হবে, তারপর সেটা সত্যায়িত করতে হবে- মানে ৭+৭=১৪ দিনের ধাক্কা প্রায়। তবে আমার স্থির বিশ্বাস ছিল এম্ব্যাসীতে এটা কোন ঝামেলা করবে না। তাই আমি ছোটভাইকে বললাম, এই কপিতে আমার কোন সমস্যা নাই, লেখা কেমন আসে আসুক, আর এম্ব্যাসী আমি বুঝব! ওরা না নিলে তখন দেখা যাবে! তখন সে জোর করে সেটা বলার পরে ওরা রাজী হইছে! আর সেটা নিয়ে পরে শিক্ষা/পররাষ্ট্র/এম্ব্যাসী- কোথাও কোন সমস্যা হয় নাই পরে!
জীবনে যে কখনও ঘুষ দেই নি তা না। সেই বৃত্তির টাকা তোলার সময় স্কুল এর কেরানী থেকে শুরু করে পরবর্তিতে অনেক সময় অনিচ্ছা সত্ত্বেও দিতে হইছে। কখনও কখনও নিজের প্রয়োজন বা সময়ের খাতিরে কম্প্রমাইজ করতে হয়েছে, কখনো বা তাদের সাথে না পেরে হার মানতে হয়েছে।
সব মিলিয়ে, স্বপ্ন সফল হবে এটা কেন জানি বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না। তবে বিশ্বাস, আমাদের সবার এই স্বপ্ন সফল হবে একদিন! হতেই হবে আসলে, কারন মানুষ যে তার স্বপ্নের সমান বড়!
এই ভয়েই তো কাজ থাকলেও আমি বোর্ডে যাচ্ছি না। গিয়ে ওই লোকগুলোর তেলতেলে মুখ দেখতে হবে ভাবলেই ভয় পাই।
চমৎকার মন্তব্যটার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমি কখনো কারো লেখায় মন্তব্য করি না। করতে পারি না আসলে। আপনার................না, তোমার (এই লেখাটা পড়ে তোমাকে আমার খুব আপন কেউ একজন ভেবে নিতে ইচ্ছে করছে) এই লেখাটার জন্য তোমাকে আন্তরিক ভালোবাসা জানাই। কখনো কখনো জীবনের প্রতি বিশ্বাসের গোঁড়াটা নড়ে যেতে চায়। তখন কিছু একটা এসে, হাত ধরে বলে, "হেরো না, হারিও না"।
এত সুন্দর করে বলেন যে পাঠক, তিনি কারো লেখায় মন্তব্য করেন না, এ তো ভারী অন্যায্য কথা হল। লেখকরা যে বঞ্চিত হচ্ছেন ! সে বুঝি ভালো কথা ?
কালো মানুষের সোনাভালোবাসায় অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নতুন মন্তব্য করুন