পুরাণের প্রাজ্ঞ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যাখ্যাকারগণ বলেছেন, স্বর্গরাজ্যের যিনি রাজা বা পালক হতেন তাঁকে বলা হত ইন্দ্র।
এই স্বর্গের দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই থাকতো। অথচ পরিচয়ের দিক দিয়ে দেবতা আর অসুরগণ ছিলেন বৈমাত্রেয় ভাই।
ঋষি কশ্যপের এক পত্নীর নাম ছিল অদিতি। এঁর গর্ভে জন্মেছিলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, সূর্য্য, ইন্দ্র এবং আরও কেউ কেউ। এঁরা পরিচিত ছিলেন দেবতা হিসাবে। এদেরকে সুর বা সুন্দর হিসাবেই চিহ্নিত করা হয়েছে।
কশ্যপ আরও এজনকে পত্নীরূপে বরণ করেছিলেন তাঁর নাম ছিল দিতি। এই দিতির গর্ভজাত সন্তানদেরই বলা হয় অসুর। এই অসুরদের গোষ্ঠীকে সর্বত্র অসুন্দর ও দুর্দান্ত প্রকৃতির সর্বনাশা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই বৈমাত্রেয় ভাইদের সম্পর্কটা আদৌ ভাল ছিলনা। দেবতারা আগে জন্মেছিলেন। বয়োজ্যেষ্ঠ হিসাবে তাঁরা স্বর্গ নামক সুন্দর স্থানটি দখল করে নিজেদের রাজ্য স্থাপন করেছিলেন। বৈমাত্রেয় ভাতৃগোষ্ঠী অসুরদের তাঁরা মোটেই সহ্য করতে পারেননি। অতএব, নিজেদের প্রবল শক্তির দ্বারা বৈমাত্রেয় ভাইদের তাঁরা স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করেছিলেন।
অসুররা বাধ্য হয়েই চলে গিয়েছিলেন `মন্দ্' নামক রাজ্যে। `মন্দ্' রাজ্য স্বর্গ থেকে কিছুটা নিকৃষ্ট প্রকৃতির ছিল। এ কারনে প্রায়ই স্বর্গ এবং মন্দ্ এর ভিতর যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই থাকতো। অনেক সময়ই অসুররা যুদ্ধে জয়ী হয়ে স্বর্গে নিজেদের দখল কায়েম রাখতেন।
স্বর্গের দেবতাদের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ব্রহ্মা বাস করতেন মেরু পর্বত অতিক্রম করে সেই উত্তর কুরুবর্ষে। যাকে সবাই ব্রহ্মলোক বলেই জানতো। আধুনিক কালে সেই কুরুবর্ষ বা ব্রহ্মলোক এখন রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে যেখানে বছরে ছ`মাস দিন এবং ছ`মাস রাত্রি বিরাজ করে।
এই ব্রহ্মাকে দেব, মানব, প্রাণীর সৃষ্টিকর্তা বলা হয়েছে। এটি নিশ্চয় ইতিবৃত্তের বিকৃতি। তিনি নিজেই যেহেতু একজনের গর্ভজাত সন্তান সেহেতু তিনি এই প্রাণজগতের স্রষ্টা হতে পারেননা। ব্রহ্মার জ্ঞান এবং দূরদর্শিতার জন্যই তাঁকে সৃষ্টিকর্তা বলে একটি আবরণ টেনে দেওয়া হয়েছে।
"ঝাঁপি খুলে পুরোনো দিনের একটা নোটবই পেলাম। তখনকার দিনে আমাদের দেশে ইন্টারনেটের সুবিধা ছিলনা। বইপুস্তক ঘেঁটেই যা কিছু পাওয়া। কখন কোথায় কিভাবে এগুলো পেয়েছিলাম আজ আর তা মনে করতে পারিনা। কেউ সূত্র জানতে চাইলে তাই তা দিতে পারবোনা, ক্ষমা করবেন।"
পুরাণকথা, পর্ব-১
http://www.sachalayatan.com/node/41739
চলবে ?
প্রৌঢ়ভাবনা
মন্তব্য
বাহ, মজার একটা সিরিজ শুরু করেছেন তো !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
সময় করে পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
হিন্দু ধর্মের ব্যাপারে জানি কম। আগে জানতাম ব্রহ্মা হলেন সুপ্রিম । কিন্তু এখন জানলাম ওনিও জন্ম নিয়েছেন। ইতিহাসটা অনেকটা গ্রীকদের মত লাগছে। টাইটান না গায়া কই থেকে জানি জিউস জন্মালেন , আবার তার ভাই ছিল একজন আণ্ডারওয়ার্লর্ড চালাতেন আর জিউস পৃথিবী। হিন্দু ধর্মের এই কনসেপ্টগুলো কি কোনভাবে ঐগুলোর সাথে লিঙ্কড? কই যেন পড়েছিলাম যে হিন্দুরা গ্রীক দেবদেবীর অনেক বৈশিষ্ট নিজেদের ধর্মে ইঙ্কলুড করেছে। একটু জানালে ভালু পেতাম।
গ্রীক মিথ অনুযায়ী জিউস এর অধিষ্ঠান ছিল অলিম্পাস পর্বতে। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই জেনেছেন, জিউস এর এক ভাই হেডেস ছিলেন আন্ডারওয়ার্লড্ বা মৃত্যুপুরীর দেবতা। আর এক ভাই পোসেইডোন ছিলেন, নদী, সমূদ্র, বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদির দেবতা।
প্রৌঢ়ভাবনা
পড়তে ভালো লাগছে, এটাই আসল কথা। পরেরটা দেন তো প্লীজ।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
হ্যাঁ, আপনিতো বুইলবেনই।
ধন্যবাদ, সাথে থাকার জন্য।
চলবে চলবে
বলছেন ? ভরসা পাচ্ছিনাতো।
ধন্যবাদ, সময় দিয়ে পড়ার জন্য।
প্রৌঢ়ভাবনা
ধন্যবাদ।
এরকম একটা লেখা দেবার জন্য ধন্যবাদ। তবে পড়তে আরেকটু ভাল লাগতো যদি আরেকটু গুছিয়ে লিখতেন। পড়তে গিয়ে কেন জানি মনে হল তাড়াহুড়ো করে লেখা সারমর্ম।
দেখেননা ইদানংকালে প্রায় সবাই ক্রিকেটে টেস্ট এর থেকে টি-টুয়েন্টিতেই বেশী আগ্রহী। তাই আমিও...। যদি অর্ধেক পড়েই পাঠক ভেগে যায়। সেই আসংকাতো থাকেই তাইনা ?
পৌরাণিক গল্প পড়তে আমার মজা লাগে। তবে আর একটু সহজ ভাষা ব্যবহার করলে বোধহয় ভাল হত। সচলে সব কঠিন ব্যাপারগুলো একটু সহজ ভাবে থাকে।
সহজ ভাষা ব্যবহার করা যায় বইকি। তবে পৌরাণিক কাহিনী পরিবেশনের ক্ষেত্রে এক ধরনের ভাবগম্ভীর বাতাবরণের আশ্রয় নেওয়া হয়। সহজ সরল ভাবে পরিবেশনায় কাহিনীটি ঠিকই থাকে তবে আমেজটি ঠিক অনুধাবন করা যায়না।
বাকি পর্বগুলো সহজ করে লেখার চেষ্টা থাকবে।
প্রৌঢ়ভাবনা
মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতে সুরাসুর।
facebook
তিব্বত থেকে কোথায় গেলেন ? আজ কয়দিন কোন খোঁজই পেলামনা। সব কুশল মঙ্গলতো ?
ধন্যবাদ, ভাল আছি, ভাল থাকবেন।
প্রৌঢ়ভাবনা
ছোট ছোট গল্পের আকারে পুরাণকথা পড়তে ভালই তো লাগছে!
চলুক সিরিজ। সাথেই আছি।
ভরসা দিচ্ছেন ? তাহলে চালিয়ে চালিয়ে যাই কি বলেন?
ধন্যবাদ। সাথে থাকার আশ্বাসের জন্য।
আবারো অভিনন্দন।
নতুন মন্তব্য করুন