পিকনিক ব্যাপারটা বেশ ঝক্কির,
বাস ঠিক করো, জায়গা ঠিক করো, মেন্যু, বাবুর্চি, রাফেল ড্র –
তারপরো আছে নানান হ্যাপা, এই ধরো ক্যামেরা, চাঁদা, মেয়েদের বাথ্রুম ইত্যাদি।
ড্রাইভার যদি রাতে খ্যাপ দ্যায় তো পাশে জেগে থাকো,
ডিমটা ঠান্ডা ক্যানো চেঁচিয়ে বলে কেউ একজন,
একটা হাসি দিয়ে তাকে ঠান্ডা করো, সে যখন বউয়ের আঁচল ধরে
ফেরার বাসে উঠে যাবে তুমি জানো তখন তুমি ডেক তুলবে বাসের ছাদে।
তবু এ ভোরে এই কুয়াশামাখা আরিচা সড়ক বুঝি ভালো লেগে যায়,
মনে পড়ে এই পথ চলে গ্যাছে জলেশ্বরী, আর তার গর্ভে এখনো জমাট বেধে
আছে কুয়াশা ঘন এক। মনে হয় পিকনিকে না এলে আজ আর
সূর্যোদয় দ্যাখা হতোনা বহুকাল পর।
মন্তব্য
কবিতা যদি হয় অন্তর্গত অনুভূতির ছন্দবদ্ধ বিকাশ, তাহলে শব্দের সহাবস্থানে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন, কবি। মেয়েদের বাথরুম কিভাবে হ্যাপা হয়? ক্যামেরা আর মেয়েদের বাথরুম - এই দুইটা এক কাতারে কিভাবে আসে?
সবচেয়ে বড় কথা - যদিওবা "মেয়েদের বাথ্রুম" কবির কাছে এতটাই হ্যাপা বলে মনে হয় যে তার উল্লেখ ঘটে চান্দা তোলার মত ব্যাপারের সাথে, তারপরেও কবিতার লাইনটুকু লোকাল বাসের রোমশ পুরুষ মানুষের ঘামে লেপ্টে থাকা শার্টের মতই অস্বস্তিকর শোনাল।
কবিতাটা ভাল হতে পারত কবি। কিন্তু তৃতীয় লাইনে এসে থমকে গেলাম। ভাল লাগে নাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় এক বাথরুমের জন্য আমার বান্ধবীরা যথেষ্ট কষ্ট করেছে। ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি পেশাব পেলেই চেইন খুলে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে যায় পুরুষ মানুষ। আর মেয়েদের কাছে এরকম প্রাকৃতিক ব্যাপারটাও মুখ ফুটে বলা লজ্জার ব্যাপার।
ইন্সেন্সিটিভ মনে হল কবি। সারাদিন পেশাব চেপে রেখে সূর্্যোদয়ের সৌন্দর্য বোঝা মুশকিল। এই "হ্যাপাটুকু" যারা পোহায় তারা ব্যাপারটা জানে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
মেয়েদের বাথরুম নিয়ে সমস্যার ব্যাপারে সহমত, এ নিয়ে তারা যে কষ্ট করেন, তা সহানুভূতির সাথেই স্বীকার করি। সে অর্থে এ কবিতায় পুরুষের ইন্সেসেটিভিটির প্রতিফলন আছে, সেটা অস্বীকার করতে চাইনা।
কিন্তু কবিতা কে কি শুদ্ধ হতে হবে? নীতিবান হতে হবে? ক্যামেরা আর মেয়েদের বাথ্রুম যারা একইমাত্রার সমস্যা মনে করেন তাদের উল্লেখ কি কবিতায় থাকতে পারবেনা?
বা সেই অর্থে সাহিত্যের ব্যাপ্তি কতখানি শুদ্ধতায়, কতখানি সুন্দরে আরে কতখানি বাস্তবে?
হ্যাপা যারা ভাবেন তাদের অনেকেই হয়তো সুন্দরের রসবোধও উপভোগ করেন। নানা ধরণের বিপরীত ধারার সমন্বয়ের মানুষ আমাদের চারপাশে কি নেই? তারা কি কবিতার বাইরে থাকবেন?
প্লিজ ভাববেননা, যে আমি এ কবিতা অথবা অকবিতার ডিফেন্সে নেমেছি। আপনার মন্তব্য আমাকে ভাবিয়েছে, তাই জানতে চাচ্ছি যে কবিতা ক্যামন হওয়া উচিত এ বিষয়ে আপনার ভাবনা কি?
কবিতার সংজ্ঞা নির্ধারণে আমি অপটু - তবু দুটো কথা বলি: কবিতাকে শুচি-সতী হতে হবে এমনটা ভাবছি না। আপনার কবিতা আমাকে ভাবায়। সেই ভাবনার সূত্র ধরেই বলছি - কবিতা অনেক সময় কবির ব্যক্তিগত চিন্তার প্রতিফলন নয়, বরং নৈর্ব্যক্তিক চেতনার অংশবিশেষ। সে হিসেবে কবির নীতিবান হওয়ার দরকার নাই, কবিতারও পবিত্র হওয়ার নাই কোন প্রয়োজন। কিন্তু শুদ্ধতার ব্যাপারে পাঠক হিসেবে আমি ছাড় দিতে রাজি নই। আপনি সত্যি কথা বলুন, ইচ্ছেমত বাক্যবিন্যাসে উপলব্ধির কথা বলুন - সমস্যা নাই, কিন্তু এমন কিছু বলেন না যা স্বাভাবিক মানবিক বোধকে বিব্রত করে।
এই মানবিক বোধটুকু কোন ভৌগোলিক সীমারেখায় নির্ধারিত নয়। যত সুন্দর-মন্দ-মধুর ছন্দেই লেখা হোক না কেন, মৌলবাদী চেতনা নিয়ে কবিতা হবে না, কবিতা হবে না রেসিয়াল সুপ্রিমেসি (বাংলা খুঁজে পাচ্ছি না) নিয়ে, হিটলার/স্টালিনকে নিয়ে স্তবগানে উৎপ্রেক্ষা-উপমার ফুলঝুরিতেও সাহিত্য হয়ে উঠবে না। একই ধারাবাহিকতায় বলছি (কিন্তু কম তীব্রভাবে) যেসব শব্দবন্ধ নারীর প্রতি বিদ্রুপের তীর ছুঁড়ে, - তা কাব্যময়তা ধারণে ব্যর্থ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আমার তো মনে হয় যে কোন কিছু নিয়েই কবিতা(সাহিত্যমূল্যসমৃদ্ধ) হতে পারে। কিন্তু সব কবিতা পাঠককুলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে এমনটা কখনই নয়। মৌলবাদী চেতনা/সাম্প্রদায়িকতা/নারীবৈষম্য এই বিষয়ের কবিতাগুলো গ্রহণযোগ্য হবে না।
_____________________
Give Her Freedom!
আলোচনা কবিতার পলিটিকাল/স্যোশাল/এথিকাল কারেক্টনেসে এসে দাড়িয়েছে। বিশ্বজনীন কিছু ভ্যালুসের পরিপন্থী হলে কবিতা পাঠকের গ্রহনযোগ্যতা হারাবে, এরকমই দাড়ালো। এভাবে ভাবিনি কখনো, ভেবে দেখবো, সংশ্লিষ্ট কোন আলোচনা নজরে এলে শেয়ার করলে খুশী হবো।
কবি, সব পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে এরকমও নয়।
_____________________
Give Her Freedom!
তিন বার রাউন্ড মেরে আবার এলাম এই কবিতায়, আবার পড়লাম। ভাষায় কিছুটা আপত্তি আছে আমারও
আপত্তি যদি ফাহিমের ধারণা মতো হয়, তাহলে তা আরো বড় প্রশ্নের অবতারণা করে বলে আমি মনে করি। সে বিষয়ে আপনার ভাবনা জানাবেন।
আর ভাষা সম্পর্কে অন্য আপত্তি থাকলে লিখুন, সেটা আমাকে সাহায্য করবে।
আমি কবিতা বুঝি না বলেই কি আমার কাছে মনে হচ্ছে জীবনে সবাইকেই কখনো না কখনো শুধুই হালের বলদের ভূমিকা নিতে হয় নিঃশব্দে যেখানে আশে পাশে সবাই মত্ত আনন্দে? আর এর মাঝেই জানালা গলে ঢুকে পড়া এক মুঠো রোদ্দুর আনমনা করে দিয়ে যায় হঠাত?
কবিতা যে আমিও বুঝি তা নয়, তবে কবিতাকে বোঝার জন্য কবিতা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনার অনেক কবিতার আমি মুগ্দ্ধ পাঠক।
কিন্তু এটা ভাল লাগেনি।
হ্যা,
তবু ভাল না লাগা জানাতে ভাল লাগল না।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ভালো লাগেনি জেনে আমারই কি ভালো লাগবে?
মাফ নেই তার।
জীবনটাই একটা পিকনিক! সূর্যোদয় দেখা হয় বহুকালের বিরতিতেই...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নাগরিক জীবনে কতকিছুই দ্যাখা হয়না, ফেরত যেতে হলে তাও যেতে হয় পিকনিকে।
ভাল্লাগসে!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
ধন্যবাদ।
শুধু এই যেন হয়
যদি সত্যের মতো বদমাশও হতে হয়
যা দেখছেন, ঠিক তাই যেন কবিকে লিখতেই হয়।
এও তো জানি নিশ্চিত
সহস্রাধিক খুনের দাগী আসামীও
সুনিশ্চিত পেয়ে যাবে ক্ষমা;
কবির ক্ষমা নেই কোন,
যত গঞ্জনার বিষ, হিম নিষ্ঠুরতা, তাবৎ কন্ট্রাপ্যাসো
তার তরে রাখা আছে জমা।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
এত সামান্য একটা বেপার নিয়ে এত হই চই করার কি আছে বুঝলাম না। আজিব বেপার সেপার। আমার যেটা মনে হয় কবি এখানে যা বুঝাতে চাইছেন তা হল একটা মেয়েকে নিয়ে বের হলে ছেলেদেরকে মাথায়ে রাখতে হয় তাদেরকে সম্পূর্ণ care কিভাবে রাখতে হয়। একটা caring ছেলে সব কিছু মাথায়ে রেখে চলে। ওটাকেই উনি দুষ্টামি করে ওভাবে লিখেচেন। এটা বুঝাই জাচ্ছে। উনি মনে হয়না এত প্যাচ চিন্তা করে লিখেছে। So chill people! Grow up!!
আরও বলব মেয়ে হিসেবে আমরা অনেক সমস্যা করি যেটা নিয়ে তা হল বাথরুম যদি একটু নোংরা হয় ওখানে যাবনা বলে জিদ করে থাকি। যেটা te kidney affected হয়। আমার হয়েছে। So আমাকে নিয়ে বাইরে কোথাও বেরাতে যাওয়ার আগে আমার বাসাতে ১০ বার চিন্তা করে এই মানুষ নামক ঝামেলা কারিকে নিয়ে বের হব কিনা। আর বের হোলেও এর বাথরুম নামক যে ঝামেলা আছে ওটার পুরো নিশ্ছয়তা দিতে পারব কিনা। আল্লাহ অনেক বুঝিয়ে ফেললাম। Peace!!!
নতুন মন্তব্য করুন