আদম পাড়ার চায়ের টংদোকানের সম্মুখে দাঁড়াইয়া একটি ভাঁড়ে করিয়া সুরুৎ সুরুৎ চা পান করিতে করিতে মুচকি হাসিতেছিল। গিবরিল ডানা ঝাপটাইয়া নামিয়া আসিয়া শুধাইল, "ভাই আদম, খাটাশের ন্যায় হাসিতেছ কেন?"
আদম চক্ষু টিপিয়া কহিল, "ঈভকে এইবার এমন ইসকুরু টাইট দানের এন্তেজাম করিয়াছি ওহে গিবরিল, স্বয়ং ঈশ্বরও তাহাকে রক্ষা করিতে অপারগ।"
গিবরিল হাঁক ছাড়িয়া এক ভাঁড় চায়ের অর্ডার দিয়া কহিল, "কী করিয়াছ? তাহার ইসকুরু তো যতদূর জানি বিলক্ষণ টাইট আছে, উহা শিথিল করিবার কোন সুযোগ তো তুমি পাও নাই!"
আদম গলা খাঁকরাইয়া কহিল, "এইসব বাজে আলাপ করিবি নাকি কী করিয়াছি শুনিবি?"
গিবরিল তপ্ত চায়ে চুমুক মারিয়া কহিল, "আচ্ছা বল শুনি।"
আদম খিলখিল হাসিয়া কহিল, "গত বৎসর এই দিনে ঈভের দেহটিকে পৌরসভা ঘোষণা করিতে বিল আনিয়াছিলাম ঈশ্বরের দরবারে।"
গিবরিল বিষম খাইয়া কহিল, "ঈভের শরীর পৌরসভা হয় কী করিয়া?"
আদম মুহুহুহু হাসিয়া কহিল, "ঈশ্বর কি সব বিল পাঠ করিয়া দেখেন নাকি? বুঢ়া ভিসিপিতে দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে দেখিতেছিল, আমি বিল লইয়া ঘ্যানাইতেছিলাম বলিয়া বিরক্ত হইয়া কহিল, "কুন!" অমনি সব হইয়া গেল।"
গিবরিল চায়ের কাপে চিন্তিত চুমুক দিয়া কহিল, "তারপর?"
আদম কহিল, "পরদিন ঈভ পরওয়ানা পাইয়া ঈশ্বরের দরবারে গিয়া কলতলা ফাঁদিয়া বসিল। ঈশ্বর বিরক্ত হইয়া তাহাকে স্বীয় পৌরসভার চেয়ারপারসন বানা্ইয়া দিলেন।"
গিবরিল কহিল, "তাতে তোমার কী লাভ?"
আদম চক্ষু মুদিয়া কহিল, "চেয়ারপারসনের মেয়াদ এক বছর হে বেয়াকুক গিবরিল! গতকল্যই ছিল ঈভের চেয়ারপারসনপনার শেষ দিন!"
গিবরিল কহিল, "এখন কি পুনরায় নির্বাচন হইবে?"
আদম কহিল, "হাঁ! গণতন্ত্র মোতাবেক ঈভ এখন তামাদি। তাহার পৌরসভাটি উত্তমরূপে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন এক জবরদস্ত ব্যক্তি, যে দৃঢ় মুষ্ঠিতে তাহার জোড়াসাঁকোকে টিপাইমুখ বানাইয়া ছাড়িবে!"
গিবরিল কহিল, "কবে নির্বাচন?"
আদম চোখ টিপিয়া কহিল, "ঈশ্বর যাতে পুনরায় তাহাকে স্বীয় পৌরসভার চেয়ারপারসন নিয়োগ করিতে না পারেন, সেইজন্য আমি আজ সক্কাল সক্কাল তাহার পৌরসভাটিকে সিটি কর্পোরেশনে পরিণত করার বিল আনিয়াছি।"
গিবরিল চক্ষু গোল করিয়া কহিল, "ঈশ্বর সেই বিল পাশ করিলেন?"
আদম কহিল, "হাঁ। ফেসবুকে বসিয়া বসিয়া স্ট্যাটাস আপডেট করিতেছিলেন, রিলেশনশিপ ইট'স কমপ্লিকেটেড, আমি গিয়া বিল লইয়া ঘ্যানাইতে আরম্ভ করিবামাত্র পাশ করাইয়া দিলেন!"
গিবরিল কহিল, "অ! তা তোমার জন্য বার্তা আছে হে আদম। সব শুনিয়া বোধ করিতেছি, বার্তাটা সুখকর নহে।"
আদম চায়ের ভাঁড় ছুঁড়িয়া ফেলিয়া কহিল, "আবার কী ঘটিল?"
গিবরিল একটি প্যাপিরাস খুলিয়া নাসিকায় চশমা আঁটিয়া পড়িতে লাগিল। "ঈভের সিটি কর্পোরেশনটিকে তাহার সুপারিশ মোতাবেক দুই ভাগে ভাগ করা হইতেছে। তাহার শরীরের বামভাগ লইয়া ঈভ উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও দক্ষিণভাগ লইয়া ঈভ দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গঠিত হইবেক। তাহার শরীরের মধ্যভাগের ত্রিকোণাকৃতির একটি অংশকে এই দুই সিটি কর্পোরেশনের মাঝে নো ম্যানস ল্যাণ্ড বলিয়া ঘোষণা করা হইল। এই আদেশ এক্ষণ হইতে কার্যকর হইবেক। স্বাক্ষর: ঈশ্বর, ৩৪/৪ নন্দন কানন, স্বর্গ ১০০০।"
মন্তব্য
ইয়া মাবুদ ... হাসিতে হাসিতে অবস্থা হালুয়া টাইট হইয়া গেল । নো মেনস ল্যান্ড ... হা হা প গে ... চ্রম হইসে মুখা দা :)
'নো ম্যান্স ল্যাণ্ড'-এর মেয়র কে হইবেন ?
ঠাকুদ্দা । মানে, হে হে
বলদিয়ার জমিদার, স্বর্গের নয়নমণি ইড়াদিল ভাইয়া
মানব শরীরের মধ্য প্রদেশ চাপিয়া ধরিয়া গড়াগড়ি খাইয়া হাসির ইমো
কল্যাণ ভাই ডেমো দেন
আরে মিয়া ইমো দিবার পারতেছি না হেল্লেগা কত কষ্টে লেইখ্যা লেইখ্যা ভাব প্রকাশ করতেছি, আর আপনি আছেন ডেমোর ধান্দায়। খালি মানুষরে বিপদে ফালাইতে চান। আর নিচে দেখেন উদাস ভাই গড়াগড়ি দিয়া হাসি মাইরা কাইট্টা পড়তেছে, কিন্তু সাহিত্যিকের পরের পর্ব দেওয়ার নাম গন্ধ নাই। আবার কামালী ভাইএর খবর টবর কি ঠিক বুঝতেছি না। কোন মাত্রায় যে সেইটা হারায় যায় তার নাই ঠিক। তারুপর আরো ধরেন ১৫০ পৃষ্ঠার একটা সাইন্স ফিকশন সেই সাথে শির সংক্রান্ত একটা লেখা চা'র পানিতে হাবু ডুবু খাউতাছে...কত টেনশন আমার, কত দিকে আমার একলা একলা খিয়াল রাখা লাগতেছে। এর মধ্যে আপনি আমার ডেমো নিয়া হাউকাউ কইরেননারে ভাই।
আইচ্ছা। আমিও ইমো- হীন অইয়া রইছি। আসেন গলায় ধইরা এক লগে কান্দি। [ গলা ছাইড়া কান্দনইন্যা ইমো]
উদাস ভাই, কলা কি নো ম্যানস ল্যান্ডের জন্যে নাকি??
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমারে কি তাইলে নোম্যান্স ল্যান্ডের মেয়র ঠাওরাইলেন !!!
উদাস ভাই আবার আসতে হইল, প্রকৃতিদত্ত যন্ত্রপাতি এখনো কাজ করতেছে, কলা ছাড়াই চালাইয়া নিবার পারুম, টেনশন কইরেন না...খিক্ক খিক্ক
খাইছে। হাস্তে হাস্তে দলা অইয়া গেলাম। হে মুখফোর আপনার এই আদমচরিত যেন কোনদিনও ফতুর না হয়। বিরামহীন চলতেই থাকুক। দরকার হলে আমরা একটা আলাদা নন্দন কানন বানাইয়া ফালামু, আর আফনারে ঠাকুদ্দা বানামু হে হে হে
হা হা হা! আর কতো আদমরিত যে বের হবে আপনার ঝুলি থেকে! হাসতে হাসতে শ্যাষ।
=))
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
(জাঝা)
নো ম্যান্স ল্যান্ড কারে দেওন যায়!!!
_____________________
Give Her Freedom!
উপস ! শেষে এসে একেবার গুগলি ! অসাম হয়েছে। পেজের ফ্যানও হয়ে গেলাম। এখন ঘুরতেই থাকবো আদমের মাথার উপর :P
নো ম্যান'স ল্যান্ড - কী অমানুষ ! =))
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
ল্যাবে বইসা ঠিকমত হাসতেও পারতেসি না।
=))
যাচ্চলে !!!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হে হে, হো হো
facebook
=)) =)) =))
নো ম্যান্স ল্যান্ড এ তত্ত্বাবধায়ক কি পার্টি দেবে নাকি তৃণমূল পর্যায় থেকে দেবে?
সঠিক প্রশ্নটা হলো, "নো ম্যান্স ল্যান্ড"-এ ইলেকশন হলে ভোটার হবে কে বা কাহারা আর ইলেকশনে দাঁড়াবেই (প্রার্থী) বা কে বা কাহারা ?
আর এখানে পার্টি-ভিত্তিক নির্বাচন সম্ভব না বাংলাদেশের রাজনৈতিক কালচারের প্রেক্ষিতে। আমাদের দেশে নির্বাচিত মেয়রকে স্ব-দলের অনেক নেতা-কর্মীকে খুশী রাখতে হয়, যেটা এক্ষেত্রে সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। এক্ষেত্রে প্রার্থীরা তাই সবাই স্বতন্ত্র হবে বলেই মনে হয়।
নো ম্যান'স ল্যান্ড। হেঃ হেঃ হেঃ
(কস্কী) =DX
গইড়ায়া হাসি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কাফের না হইলে ঈশ্বর ঠিক ঠিক আমার নামে নো ম্যানস ল্যান্ডখানা লেইখ্যা দিতো!
মুখফোড়, যাহা লিখিলেন তাহাতে হাসিয়া-গড়িয়া শেষ পর্যন্ত লগ ইন করিতে বাধ্য হইলাম। কমেন্ট না করিয়ে থাকিতে পারিলাম না। এই বেলায় জানাইয়া গেলাম, নো-ম্যানস-ল্যান্ড এর মেয়র হইতে মন্চায়!
টুইটার
আমি ভাই চেহারাসুরতে এখনও কিশোর। বিতর্কিত ভূখণ্ডটি 'নো ম্যানস ল্যান্ড', 'নো কিশোরস ল্যান্ড' তো নহে। অতএব আর পাঁচজনের কাছে ম্যান বিবেচিত হইবার পূর্ব পর্যন্ত আমাকে উক্ত 'নো ম্যানস ল্যান্ড'-এর মেয়র কিংবা তালুকদার বা চাকলাদার কিছু একটা পদে থাকিবার ব্যবস্থা করিয়া দেওয়া হউক। ঐ যে, ঈশ্বর বোধহয় লুঙ্গির গিঁট আলগা করিয়া সবেমাত্র দুষ্ট ছবি দেখিতে বসিয়াছেন, যাই এই ফাঁকে গিয়া ঘ্যানঘ্যান শুরু করিয়া দিই, তিনি বিরক্ত হইয়া 'কুন' বলিলে বলিয়াও ফেলিতে পারেন।
ঘুম থেকে উঠেই এক বন্ধুর দেয়া লিংক পেয়ে আদমচরিত এর ৪৫ নং আয়াত (!) পড়লাম। এবং চরমভাবে ভক্ত হইয়া গেলাম। গুরু মানিলাম।
হে হে আদম কিন্তু নিজের নাম পালটাইয়া NOMAN রাখিবার প্রস্তাব উত্থাপন করিতে পারে। ঈশ্বর আনমনে কুন বলিয়া ফেলিলেই কেল্লা ফতে!
আদমের স্বপ্ন ভঙ্গ? তাও বার বার - মুদ্রাদোষের মত স্বপ্ন***!!!
=))
নতুন মন্তব্য করুন