ফেরা - ০৪

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি
লিখেছেন ত্রিমাত্রিক কবি (তারিখ: মঙ্গল, ০১/১১/২০১১ - ৯:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


ইভানা

গ্রীসের একেবারে দক্ষিণের শান্ত শহর কালামাতা। একেবারে মেডিটেরিয়ান সী এর কোলঘেঁষা শহর। শহরের একেবারে দক্ষিণে সাগরের কোল ঘেঁষে চলে গেছে একটা রাস্তা, পসিডোনাস এভিনিউ। এমনিতে খুব বেশী লোকসমাগমস নেই, শহরটার মতই শান্ত, কিন্তু মাঝে মাঝে আশে-পাশের বাড়িঘরের মানুষের কান ঝালাপালা করে প্রচণ্ড গর্জন করে চলে যায় রেসিং কার। কার রেসিং এই রাস্তায় নিত্যদিনের ঘটনা। রাস্তার দক্ষিণে সাগর, নগরের শাসনে অনেকটাই শান্ত। ইয়াট আর স্পিডবোটের জন্যে জেটি করা আছে সেখানে।

একেবারে রাস্তা ঘেঁষে ছোট্ট ছিমছাম একটা দোতলা বাড়ি। দক্ষিণের জানালা খুললেই চোখ পরে অসীমে। সাগরের পাশে বাড়ির এটাই বাড়তি সুবিধা। নিত্যদিন অসীমের সাথে কথা হয়। দোতলার এই ঘরটাই বাসার সবচেয়ে বড়, বিশাল দখিনা জানালা, সাগরের অসীমত্ব বাতাসের সাথে হুহু করে ঢুকে পড়ে। এটা ইভানার ঘর। বাড়িতে থাকে কেবল ওর বাবা-মা আর ইভানা, ইভানা জান্থিস। বাবা-মার প্রচণ্ড আদরের মেয়ে। আট দশটা ইওরোপিয়ান মেয়ের মত না। আড্ডাবাজি, পার্টি আর বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটানোর চেয়ে বাসায় বাবা-মার সাথে সময় কাটাতেই বেশী ভাল লাগে ওর। সেরকম কোন বন্ধুও নেই। অনেকটাই আত্নকেন্দ্রিক, কোন বয়ফ্রেন্ডও নেই। উইকএন্ডগুলোতে তাই বাসায়ই অলস সময় কাটে।

সে প্রায় পাঁচ মাস আগের কথা। জুন মাসের কোন এক সোমবার। ঘড়িতে সকাল দশটার মত বাজে। বাসায় একা ইভানা। বাবা-মা কেউই বাসায় নেই। শরীরটা ভালো নেই ওর, নাহলে ওরও এখন বাসায় থাকার কথা না। পসিডোনাস এভিনিউ থেকে প্রায় আশি কিলোমিটার দূরে ইউনিভার্সিটি অব পেলোপনিস। ওখানকার ফিলোলজির ছাত্রী সে। ক্লাসিক্যাল গ্রীক আর ল্যাটিনের ছাত্রী। উইকডেগুলোতে ওখানেই থাকে, ডর্মে। কিন্তু এই উইকএন্ড শেষে আর যায়নি, একটু জ্বর-জ্বর ভাব আছে। লিভিংরুমে বসে কম্বল জড়িয়ে আরাম করে একটা মুভি দেখছিল।

হঠাৎ দরজায় বেশ জোরে নক করল কেউ একজন। খুব তাড়াহুড়ো যেন। আবার নক করলো বেশ জোরে। বেশ বিরক্ত হয়। উঠে গিয়ে দরজার ডোরহোলে চোখ রাখল। অপরিচিত একজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। মুখে দাঁড়িগোফের জঙ্গল। এক দেখায় সাউথ এশিয়ান বলে মনে হয়। সাথে একটা মেয়ে। দরজা খুলে দিয়ে, জানতে চায়, "কাকে চান?"।

"তোমাকেই", মৃদু হেসে বলে ছেলেটা, 'তুমিই তো ইভানা, ইভানা জান্থিস, রাইট?'

মনে করার চেষ্টা করে ইভানা। কিছুতেই এই চেহারা কোথাও দেখেছে কিনা মনে করতে পারে না। আপাদমস্তক খেয়াল করে দেখে, বেশ ধোপদুরুস্ত পোষাক, অফ-হোয়াইট ফুল প্যান্টের উপরে মেরুন কালারের একটা শার্ট, ইন করা, বেশ ফিটফাট, সামারের এই সময়ে ইউরোপে এরকম পোষাক খুব একটা পরেনা মানুষ, বিশেষ করে টুরিস্টরাতো একেবারেই না। চোখে একটা সানগ্লাস। পোষাকের সাথে একেবারে বেমানান দাড়ি, একেবারে ভারতের ঋষিদের মত। চুলও বেশ বড়। অবশ্য দাড়ি চুল দুটোই বেশ পরিপাটি করে আঁচড়ানো। রাস্তার পাশেই একটা বাইক দাঁড়া করানো। হার্লে ডেভিডসন। বোধহয় ওটাতে চড়েই এসেছে ওরা। ছেলেটার বাড়াবাড়ি পরিপাটি পোষাকের তুলনায় পাশে দাঁড়ানো মেয়েটা একেবারেই বিপরীত। হাত, পেট আর উরুতে বিশাল ট্যাটু আঁকা, ফণাতোলা সাপ। একটা হটপ্যান্ট আর একেবারে উর্ধাঙ্গ চিপকে ধরা একটা টপস। ঠোঁটে কড়া লিপস্টিক, চর্চিত ভ্রু, বোধহয় কন্টাক্ট লেন্সও পরা আছে চোখে, এককথায় যে কেউ বলবে, হুম 'হট'। ড্যাম কেয়ার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে, রাস্তার দিকে মুখ করে। হাতে একটা ফাইলে বেশ কিছু কাগজ পত্র রাখা। ওর দিকে তাকানোরই প্রয়োজন বোধ করল না।

ইভানা জিজ্ঞেস করল ছেলেটাকে, "আপনার জন্য কি করতে পারি?"

"আপনাকে সাহায্য করতে এসেছি আসলে আমরা, আপনার সাথে কথা বলতে চাই, আপনার কি একটু সময় হবে?", খুব ভদ্রভাবে জবাব দিল ছেলেটা।

"আমি তো চিনতে পারছি না আপনাকে, তাছাড়া আমার তো কোন সাহায্যের দরকার নেই, আপনি বোধহয় ভুল করছেন", বলল ইভানা।

"আপনার কাছ থেকে আমি দশ মিনিট সময় চাচ্ছি, আমি নিশ্চিত এর পর আপনার আমার সাহায্যের খুব দরকার হবে, খুব", বেশ একটা বুজরুকি ভাবের হাসি দিয়ে বলল ছেলেটা। একটু যেন নরম হল। ইভানাকে একটু বাগে পেয়েছে বুঝে বলে ফেলল, "আপনি জানেন, আপনি কে?"

"আমি কে সেটা আমি খুব ভালমত জানি, কিন্তু আপনার মতলবটা বুঝতে পারছি না, আপানাকে বরং চিনতে পারছি না, এরকম ধোঁয়াশায় না রেখে একটু পরিষ্কার করে বলবেন কি?", বেশ রাগের সাথে বলল ইভানা।

ওপাশ থেকে ফোঁড়ন কাটল মেয়েটা, "লেট হার টক বুলশীট, লেটস গো, গায়ে পরে সাহায্য করতে এসে অপমান হওয়ার তো মানে হয় না!"

মানুষের সাথে খুব বেশী মেশেনি ও, কথার পিঠে কথা বলতে অভ্যস্ত না, খুব সহজে কনভিন্সড হয়ে যায়। ইভানাকে এর মধ্যেই বেশ কনভিন্সড দেখাচ্ছে। মেয়েটার কথা শুনে এখন বেশ খানিকটা অপ্রতিভ। এই সুযোগটা নিল ছেলেটা, "আমি কি একটু ভেতরে আসতে পারি?, ইউ ক্যান কল মি স্যাম"। একটু ইতস্তত জায়গা করে দিল ইভানা, বলল, "প্লিজ বি সিটেড অ্যান্ড বি স্ট্রেইট"।

মেয়েটার হাত থেকে ফাইলটা নিয়ে ওটা থেকে কয়েকটা কাগজ বের করে ইভানার দিকে বাড়িয়ে দেয়। বলে "ওয়াচ কেয়ারফুলি, টেক ইওর টাইম"। ইভানা চোখ বুলাতে থাকে কাগজগুলোর ওপরে, একটা করে কাগজ উল্টাতে থাকে, উল্টানোর গতি দ্রুত হয় ক্রমেই। চেহারা থেকে রক্ত সরে যেতে থাকে। প্রচণ্ড ইমোশোনাল মেয়ে ইভানা। দু'চোখ দিয়ে কয়েকফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। অভিমানে গলার কাছটা দলা পাকিয়ে আসে। অনেক কষ্টে কান্না আটকিয়ে বলে,

- আপনি বলতে চাচ্ছেন আমার বাবা-মা আমার আসল বাবা মা না?

- না না আমি বলতে চাচ্ছি না। এই কাগজপত্রগুলোই কিন্তু বলছে। আপনাকে আসলে অ্যাডাপ্ট করা হয়েছিল, কিন্তু সেটা একটা এক্সপেরিমেন্টের পার্ট হিসেবে। আজকে সেই এক্সপেরিমেন্টের শেষ দিন। আপনি হয়ত জানেন না আপনার মত আরও অনেক ছেলে মেয়েকে অ্যাডাপ্ট করেছে আপনার এই নকল বাবা-মা, ওরাও এই শহরেই থাকে। সবাই এই এক্সপেরিমেন্টের পার্ট।

- আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, আমি কেন আপনার কথা বিশ্বাস করব?

- বিশ্বাস অবিশ্বাস আপনার ব্যপার, আমি শুধু বলতে চাই, আপনি যদি আমার কথা না শোনেন তাহলে আপনার ভাগ্যে মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই লেখা নেই। আপনার বাবা-মা আপনাদের নিয়ে একটা ভয়ানক এক্সপেরিমেন্ট করছেন, আমি নিজেও এই এক্সপেরিমেনটের একটা পার্ট ছিলাম। আমি শেষ মুহূর্তে বুঝতে পেরেছি। পালিয়ে যাচ্ছি আমরা। এখন শুধু আমরাই আপনাকে সাহায্য করতে পারি।

আবার কাগজগুলো উল্টেপাল্টে দেখতে থাকে। ওর বাবা-মার বেশ কয়েকটা ছবি। ছবিসহ সব প্রমাণই নিয়ে এসেছে ওরা। নিজের চোখকে তো আর অবিশ্বাস করতে পারে না। প্রচণ্ড ইমোশোনাল মেয়ে। কিন্তু অনেক কষ্ট করে কান্না আটকিয়ে রাখে। একটা অপরিচিত ছেলের সামনে ও কিছুতেই কাঁদতে পারবে না। মেয়েটা উঠে আসে। ওর পিঠে হাত রেখে খুব নরম করে বলে, "আমাকে বিশ্বাস করতে পার তুমি, আমরা তোমাকে আসলেই সাহায্য করতে চাই"। চোখমুখ শক্ত করে বলে ইভানা, "কি করতে হবে আমাকে?"

"তোমার কোন চিন্তা নেই, শুধু তোমার কাছে টাকা পয়সা যা আছে আর প্রয়োজনীয় কিছু কাপড় চোপড় একটা ব্যাগে গুছিয়ে নাও, বাঁচতে চাইলে আমাদের সাথে এখনই যেতে হবে", একটানে বলতে লাগল মেয়েটা, "বাকি সবকিছু আমাদের ওপর ছেড়ে দাও, তোমার আর কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।"

কি করবে ভেবে পায় না ইভানা। কিন্তু ছবিগুলো দেখার পর ওদের কথা অবিশ্বাস করারও কোন কারণ নেই। আর ওদের কথা যদি সত্যি হয় তাহলে এখানে আর এক মুহূর্ত থাকা চলে না। নিজের সাথে অনেক্ষণ যুক্তি-তর্ক করে। শেষ পর্যন্ত তেইশ বছরের বিশ্বাস আর ভালবাসা পরাজিত হয় নতুন সত্যের কাছে। ওদেরকে বসতে বলে নিজের রুমে যায়, একটা ট্রাভেল ব্যাগে প্রয়োজনীয় কিছু পোষাক, পাসপোর্ট আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে নেয়। টেবিলের ওপর একটা নোট রেখে যায় শুধু, "আমি ভাল থাকব হয়ত, তোমরাও ভাল থেক - ইভানা"। অল্প কিছু ক্যাশ টাকা পার্সে ভরে নীচে নেমে এসে, কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলে, "চল"।

তিনজন উঠে পড়ে। মেয়েটা বাইকে স্টার্ট দেয়, পেছনে বসে বাকি দুজন। গর্জন করতে করতে শেকড় ছেড়ে অজানা ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ায় ইভানা।

রোড ই৬৫ দিয়ে দশ পনের মিনিট সামনে এগিয়ে, বামে তীব্র মোর নেয় বাইক। ছোট থেকে এই শহরে বড় হলেও শহরের খুব বেশী কিছু চেনেনা ইভানা। বাসার এত কাছের রাস্তাও অচেনা লাগে ওর কাছে। ওর ঘরকুনো স্বভাবের কারণে বাসা থেকে খুব বেশী বের হতনা ও। রাউট ৮২ দিয়ে আর পনের মিনিটেই পৌছে যায় কালামাতা এয়ারপোর্টে। বুঝতে পারে ইভানা, শহর ছেড়ে হয়ত চিরতরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু তখনও জানত না, কী ভয়াবহ ফাঁদে পা দিয়েছে ও।

এয়ারপোর্টের কার রেন্টাল থেকে একটা ট্রাক নিয়ে নেয় ওরা। কথাবার্তায় বোঝা গেল ওরা যাবে এথেন্সে। এখান থেকে প্রায় ঘন্টা তিনেকের পথ। এয়ারপোর্টের পাশের দোকান থেকে কিছু স্ন্যাক্স আর জুস নিয়ে নেয় ওরা। ওরা দুজন নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে কথা বলছে, প্রায় কিছু শুনতে পারছে না ইভানা। এতক্ষণেও মেয়েটার নাম পর্যন্ত জানা হয়নি ওর। পৃথিবীর সব কিছুতেই যেন আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। নিজের ওপর সামান্যতম বিশ্বাস নেই। চাবি দেয়া পুতুলের মত ওদের দুজনকে অন্ধের মত অনুসরণ করছে শুধু।

এথেন্সে যখন পৌছেছে তখন দুপুর গড়িয়ে বিকাল। ইলাস্টিক ম্যাটেরিয়ালকে খুব বেশী টানাটানি করলে, অল্প সময়ের মধ্যে বারবার বিকৃত করলে, ইলাস্টিক ম্যাটেরিয়াল যেমন তার ইলাস্টিসিটি হারায়, ইভানার অবস্থা এখন অনেকটাই সেরকম। ও নিজেকে ওদের হাতে সঁপে দিয়েছে। যেরকম বলছে করছে। আশে পাশে কোন কিছুতেই ওর এখন কোন আগ্রহ নেই। নাহলে আশে পাশে তাকালেই বুঝত এই এলাকা খুব একটা অচেনা না ওর কাছে। এথেন্সের এই অংশটাতে আগেও এসেছে ও, বেশ কয়েকবার।

একটা বেশ পুরানো বাড়িতে ঢুকে পড়ে ওদের গাড়ি। বাড়িটা একতলা। বাড়ির চারপাশে বেশ উঁচু করে দেয়া প্রাচীর। ওকে নিয়ে বাড়ির ভেতরের দিকে চলে যায় মেয়েটা। ওর ঘর দেখিয়ে দেয়। বলে ফ্রেশ হয়ে নিতে। তারপর চাইলে ঘুমাতে পারে। ওরা একটু বের হবে, বাসা তালা দেয়া থাকবে বলে যায়। ফ্রীজে খাবার রাখা আছে। চাইলে খেয়ে নিতে পারে ও। আর চাইলে ওদের জন্য অপেক্ষাও করতে পারে। ফিরতে রাত হবে ওদের। ইভানা কিছু বলে না, চুপচাপ শুনে যায়। মেয়েটা চলে গেলে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। ঘুব দরকার ওর। গভীর ঘুম।

কতক্ষণ এভাবে ঘুমিয়েছে বলতে পারবে না নিজেও। দরজায় নক শুনে ঘুম ভেঙ্গে যায় ওর। ওরা দুজন দাঁড়িয়ে আছে দরজায়। ফ্রেশ হয়ে লিভিংরুমে আসতে বলে, জরুরী কথা আছে নাকি। দেরী করেনা ও। হাত মুখ ধুয়ে দেখে ওরা দুজন বসে আছে টেবিলে। টেবিলের ওপর কিছু শুকনো খাবার, ব্রেড আর মাফিন। প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছে ওর, কিছু না বলেই খেতে শুরু করে। তারপর ওদের দিকে তাকিয়ে বলে, "বল"।

"আমরা পরের সপ্তাহেই গ্রীস ছাড়বো", বলল স্যাম, "আমরা স্টেটসে চলে যাব, ওখানেই আমরা সেফ, তোমার জন্যে সব কাগজপত্রের ব্যবস্থা করে ফেলেছি। ওখানে একটা ইউনিভার্সিটিতে তোমার অ্যাডমিশানও হয়ে গেছে"।

"কিছুই বুঝলাম না আমি, কিভাবে? আমার অ্যাডমিশান কিভাবে কোথায়?, আমাকে একটু বলবে তোমাদের প্ল্যান কি আসলে?", কন্ঠে রাজ্যের কৌতুহল, বুঝতে পারছে না ওকে নিয়ে কি গেম খেলা হচ্ছে।

"তোমার কিছু ভাবতে হবে না, তুমি যাবে ক্যালিফোর্নিয়াতে, তোমার জন্যে সব ব্যবস্থা করা আছে, তোমার কাগজপত্র এখানে আছে সব, দেখে নিতে পার, কোন সমস্যা থাকবে না আশা করি, টিউশান ফি নিয়ে ভেবোনা, ওটা আমরা ম্যানেজ করব", বলে একটা ফাইল এগিয়ে দেয় মেয়েটা। "একটা শর্ত শুধু মানতে হবে তোমাকে, আমরা যেভাবে বলব, সেভাবে চলতে হবে", বেশ কড়া কন্ঠে বলে মেয়েটা, "আর না হলে ...", নিজের গলায় হাত দিয়ে পোচ দেয়ার ভঙ্গি করে, তারপর খিলখিল করে হেসে ওঠে, হাসতেই থাকে। শিঁড়দাড়া বেয়ে ভয়ের একটা শীতল স্রোত বয়ে যায়।

আর কথা বাড়ায় না, নিজেকে ভাগ্যের হাতে সঁপে দিয়েছে। ফাইলটা নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। খুলে দেখে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালইফোর্নিয়া রিভারসাইড থেকে ওর নামে আসা অ্যাডমিশান কনফার্মেশান লেটার।
(চলবে)
ফেরা - ০১
ফেরা - ০২
ফেরা - ০৩


মন্তব্য

চরম উদাস এর ছবি

চমৎকার। একটু ছোট হয়ে গেছে এই পর্ব। পরের পর্বের অপেক্ষায়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হুম উদাস ভাই, সময় পাচ্ছিলাম না। ভাবলাম যেটুক লেখা হয়েছে দিয়ে দেই। পরের পর্ব তাড়াতাড়িই আসবে আশা করছি।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ও ভাই, সাহিত্যিক কই হারাই গেল?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

চরম উদাস এর ছবি

হারায় নাই ভাই। বেশ কিছু ঘষামাজা করতেছি, আরও ৫/৬ দিন লাগবে মনে হয়। কিন্তু হারাবেনা।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নীল ঘূর্ণী এর ছবি

ও ভাই, সাহিত্যিক কই হারাই গেল?

চিন্তিত

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আসলেই সাহিত্যিক তো উদাস ভাই উধাও কইরা দিল মন খারাপ

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

কল্যাণF এর ছবি

আছি আছি আছি...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সাথে থাকলে ভরসা পাই হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাফি এর ছবি

আগের পর্বগুলোর তুলনায় একটু পানসে লেগেছে এটা, কিন্তু বুঝতে পারছি কাহিনী জমাট বাঁধাচ্ছেন।

গ্রীসের ওইদিকে কি আসলেই বাংলাদেশের মতন বাইকে ট্রিপ্লিং করে নাকি?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ। চেষ্টা করছি আগের যে চরিত্রগুলো এনেছি সেগুলোর অবস্থান একটু পরিষ্কার করতে। ধীরে ধীরে আসবে বাকি চরিত্রগুলোর পরিচয়ও অনি, শামনুন, প্রফেসর বিটলার, প্রফেসর জুবায়ের। এই পর্বটা আসলে একা হয়ে গেছে, আগের ঘটনাগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন কিছুটা, ইচ্ছা ছিল আরও দু'পর্ব লিখে একেবারে ছাড়ব, কিন্তু একটু টানাটানিতে থাকায় ছেড়ে দিলাম এটাই। সব পর্বেই একেবারে টান টান উত্তেজনা ধরে রাখাটা আসলে বেশ কঠিন। অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ও আচ্ছা, ট্রিপ্লিং হয় কিনা আমি আসলে অতটা শিওর না। লেখার সময় মাথায় এসেছিল যদিও। কিন্তু অল্প রাস্তাতো তাই বেনিফিট অব ডাউট দিলাম আরকি দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

দ্যা রিডার এর ছবি

চলুক...।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলবে ... আপনারা সাথে থাকলেই।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

উচ্ছলা এর ছবি

পরের পর্ব দিতে এত দেরী করছেন কেন? হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

কই আর দেরী করলাম! আপনার প্রেম কাহিনীর পরের পর্ব ছাড়েন কইলাম।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তারেক অণু এর ছবি

চলুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনার লেখা আর ছবি দেইখা তো সময়ই পাইনা দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সুমন ধ্রুব এর ছবি

চিন্তিত.........গল্পটা কোথায় যেনো চলে যাচ্ছে!.........আর অনেক ছোট হোল এবার......পড়ার আগেই শেষ!......

কিন্তু দারুন লেগেছে্‌

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভাই চরিত্রগুলা গোছানোর চেষ্টা করতেছি ... পরের কয়েক পর্ব একটু ডাইভার্জ করবে ... আগে যে চরিত্রগুলাকে বলা কওয়া ছাড়া নিয়া আসছি তাদের একটু সাইজ করার চেষ্টা আরকি ... তারপর আশা করি কনভার্জ করবে সিংগেল সলুশান এর দিকে। ধন্যবাদ হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

শাব্দিক এর ছবি

পর্ব টা ছোট হলেও পড়তে ভালই লাগল।
ইভানাকে ট্র্যাপে ফেলা বোধ হয় সবচেয়ে সহজ হল।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ওরা তো বুঝে শুনে বোক মেয়েটাকে টার্গেট করেছে, অবশ্য টার্গেট করার আরও কারণ আছে, পরের পর্বগুলোতে পরিষ্কার হবে হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ন এর ছবি

ইউরোপে গরম কালে মোটরবাইকে ট্রিপ্লিং হয়। টানটান উওেজনা, ভাল লাগছে ঃ-)

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- সাথে থাকুন হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

পাঠক এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম চলুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধইন্যবাদ পাঠক ভাই হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সবকটি পর্ব পড়ে শেষ করলাম। ভালো লাগলো। উপন্যাসে আবহ রক্ষা একটি কঠিন কাজ। এ পর্যন্ত লেখক সেটিতে উতরে গেছেন বলেই বিবেচনা করি।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ রোমেল ভাই। প্রিয় কবির চমৎকার মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল। পুরো লেখা জুড়ে সিঙ্গেল টোন ধরে রাখা আসলেই কঠিন, বিশেষ করে দীর্ঘ সময় ধরে লেখার ক্ষেত্রে। এক বসায় টানা দশ-বারো দিনে লিখে ফেলতে পারলে হত, কিন্তু সে তো আর সম্ভব না মন খারাপ

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

পাঠক এর ছবি

মজা কম পাইছি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মন খারাপ

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।