প্রধানমন্ত্রীর অফিসে আজ বাংলাদেশের বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান আর রুশ আণবিক শক্তি কর্পোরশন রোসাটমের মহাপরিচালক সের্গেই কিরিয়েঙ্কো চুক্তি স্বাক্ষর করলেন [১]। চুক্তি মোতাবেক, পাবনার রূপপুরে দু'টি নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র স্থাপনে কারিগরি সহায়তা করবে রোসাটম। শক্তিকেন্দ্র দু'টির ইনস্টল্ড ক্যাপাসিটি হবে প্রতিটি এক গিগাওয়াট। প্রকল্পটির আকার বোঝানোর জন্যে বলছি, বাংলাদেশে সর্বমোট তিন থেকে চার গিগাওয়াটের মতো ক্যাপাসিটি বর্তমানে কার্যকর থাকে।
বাংলাদেশের শক্তি অবকাঠামো আশঙ্কাজনক রকমের গ্যাসনির্ভর। শুধু বিদ্যুতের জন্যেই নয়, আমাদের কলকারখানাও গ্যাসের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। একদিন আমাদের গ্যাস ফুরোবেই, তখন এই গ্যাসভিত্তিক অবকাঠামোর জন্যে আমাদের পরনির্ভরশীল হয়ে পড়তে হবে, যদি না মাঝের সময়টুকুর মধ্যে আমরা আমাদের অবকাঠামোর চরিত্র পাল্টাতে না পারি। বাংলাদেশের জন্যে হাতে সুযোগ থাকে চারটি, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা, নেপাল এবং/অথবা ভূটানে বৃহদাকার জলবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বিনিয়োগ করে সেই বিদ্যুৎ আমদানি করা, ভারত এবং/অথবা মায়ানমার থেকে গ্যাস আমদানি করে এনে গ্যাসনির্ভর অবকাঠামোকে খোরাক যুগিয়ে চলা, নিউক্লিয়ার শক্তির দিকে ঝুঁকে পড়া। কয়লা নিয়ে আমাদের নীতিনির্ধারকরা জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে দ্রুত কাজ শুরু করতে পারছেন বলে প্রতীয়মান হয় না। নেপাল-ভূটানে জলবিদ্যুৎপ্রকল্প এবং ভারতের ভূমি ব্যবহার করে সেই প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্যে যে পরিমাণ আঞ্চলিক উদ্যোগ ও সক্রিয় কূটনীতির প্রয়োজন হয় তা এ অঞ্চলে এখনও বিদ্যমান নয়। ভারত-মায়ানমার থেকে গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রেও আমাদের পারস্পরিক কূটনৈতিক সক্রিয়তাই বাধা হয়ে দাঁড়াবে। শক্তি সেক্টরের নীতিনির্ধারকরা যে অবশিষ্ট বিকল্পের দিকেই ঝুঁকে পড়বেন, তা বিচিত্র নয়, কারণ বাংলাদেশ শক্তির বিশাল ঘাটতি নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে চলছে। শিল্প ও কৃষি, বাংলাদেশের দুই খাতই শক্তি-ক্ষুধিত, আর সুচিন্তিত ট্যারিফ পলিসির অভাবে আমাদের নগরাঞ্চলও শক্তির বিশাল ভোক্তা। খুব শিগগীরই আমাদের অনেক শক্তি প্রয়োজন। নিউক্লিয়ার শক্তিকে তাই আমরা ক্রমশ নিজেদের জন্যে অপরিহার্য করে তুলেছি। এই পরিস্থিতি এড়ানো যেতো, যদি আমরা আমাদের সীমিত সম্পদের কথা ভেবে আজ থেকে কয়েক দশক আগেই অবকাঠামো নকশায় শক্তিদক্ষতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতাম, যদি আমাদের ট্যারিফ পলিসি শক্তিভোগে মিতব্যয়ী হওয়াকে উৎসাহিত করতো, এবং আমাদের শক্তি বিতরণ ব্যবস্থাকে কঠোরভাবে আর্থিক দক্ষতা অর্জনে উৎসাহিত করা হতো। আমরা এর কিছুই করতে পারিনি। ফলে নিউক্লিয়ার শক্তি আমাদের জন্য আর অপশন নয়, নেসেসিটি। মুখ কালো করে হলেও তাই এই প্রকল্পকে স্বাগত জানাতে হচ্ছে।
এমন বড় স্কেলের প্রকল্প নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের অনেক কৌতূহল থাকবে, এবং সরকারের উচিত সংসদের ভেতরে আর বাহিরে এই প্রকল্প সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা। আমরা পরিবর্তে দেখতে পাচ্ছি, সরকার প্রায় মৌনব্রত অবলম্বন করেছে। প্রকল্পের ব্যয় সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি, ব্যয় প্রাক্কলন আদৌ হয়েছে কি না, জানার উপায় নেই। রাশিয়া থেকে এর আগেও আমরা পুরনো বিমান অনেক চড়া দামে কিনেছি বলে অভিযোগ উঠেছে নানা মহলে, নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্রের ক্ষেত্রেও এ ধরনের কিছু ঘটতে যাচ্ছে কি না, বোঝার উপায় নেই।
জাপানে সাম্প্রতিক ফুকোশিমা শক্তিকেন্দ্রে বিস্ফোরণ এবং তারপর তেজস্ক্রিয় বস্তু আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা সারা পৃথিবীতেই নিউক্লিয়ার শক্তির ভবিষ্যৎকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। জার্মানিতে ক্রমশ তার সব নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার জন্যে প্রবল জনমত ও রাজনৈতিক ইচ্ছা তৈরি হয়েছে, ইয়োরোপের আরো কয়েকটি দেশ তাদের নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্রের সংখ্যা আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই পুরনো বিমানের মতো ফেইজ আউট করা পুরনো শক্তিকেন্দ্র আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হবে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার উপায় আপাতত নেই, এবং সরকারেরই কর্তব্য এই প্রকল্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ক্রমাগত অবহিত করা। এই ধরনের বড় প্রকল্পে নানা ধরনের আর্থিক নয়ছয় হওয়া সম্ভব, কিন্তু দরিদ্র রাষ্ট্রের পয়সা গচ্চা যাওয়ার চেয়ে বড় আশঙ্কা হচ্ছে একটি বুড়াধুড়া নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্রকে দেশে ঠাঁই দেয়া। পুরনো বিমান ক্রয়ে দুই চারটা ধান্ধাবাজ মন্ত্রী আর দশ বারোটা বাটপার এয়ার কমোডরের পকেটে পয়সা ঢুকলে সেটা এককালীন ক্ষতি, কিন্তু একটা পুরনো নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র একটা দেশকে মোটামুটি কয়েক দশক থেকে কয়েকশো বছরের জন্যে কারবালা বানিয়ে ছাড়তে পারে। তাই সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ, এই প্রকল্পটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের জন্যে তথ্য সরবরাহ করার। এরসাথে জড়িত বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা যেন পত্রিকা, টেলিভিশন ও রেডিওতে [সম্ভব হলে ব্লগেও] মানুষের জিজ্ঞাসার মুখোমুখি হন এবং তাদের সঠিক তথ্য যোগান। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শক্তিপ্রকল্প নিয়ে চোরের মতো চুপিচুপি কাজ করার তো কোনো প্রয়োজন নেই, যখন বাংলাদেশের মানুষই সেই প্রকল্পের জন্যে অর্থ যোগাবে। জোট সরকারের আমলে টঙ্গীতে হারবিন পাওয়ারের ৮০ মেগাওয়াটের ধ্বজভঙ্গ পাওয়ার স্টেশনটির কথা আমরা ভুলে যাইনি, যেটি আধঘন্টা চলার পর বিকল হয়ে পড়েছিলো।
ফুকুশিমা শক্তিকেন্দ্রের কথা মাথায় রেখেই শক্তিকেন্দ্রের নকশা ঠিক করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন কিরিয়েঙ্কো। ফুকুশিমা শক্তিকেন্দ্রের সমস্যাটা কিন্তু ছিলো সেই বয়সেই। ফুকুশিমাতে যে দুর্ঘটনা ঘটেছিলো, সেটির প্রকৃতি পারমাণবিক নয়, বরং তাপীয়। নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্রগুলো সবই বাস্তবে একেকটা প্রকাণ্ড বয়লার, সেখানে পানি গরম করে বাষ্প তৈরি করা হয়, আর সেই বাষ্প এক বা একাধিক বাষ্পীয় টারবাইনকে ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। পানি থেকে বাষ্প তৈরির তাপ আসে ইউরেনিয়ামের ফিশন থেকে। ইউরেনিয়ামের ক্ষুদে বড় একটা জিরকোনিয়াম রডের মধ্যে থাকে, সেই রডের ভেতরে নিয়ন্ত্রিত চেইন রিয়্যাকশন হয়, ফলে রডটা গরম হয়ে ওঠে। এই রডগুলো পানিতে ডোবানো থাকে, সেই পানি রড থেকে তাপ শুষে নিয়ে বাষ্পে পরিণত হয়। ফুকুশিমাতে ভূমিকম্পের ফলে কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলো। পাম্পগুলো বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে ফিশনপ্রক্রিয়া থামিয়ে দেয়া সম্ভব হলেও, বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে পানির সাহায্যে ঠাণ্ডা করার আর উপায় আর ছিলো না। জিরকোনিয়াম রডগুলো যখন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়, তখন তা পানি আর বাষ্প থেকে হাইড্রোজেন আলাদা করে ফেলে। হাইড্রোজেন আর বাতাসের মিশ্রণ একটা খুব সক্রিয় বিষ্ফোরক, ফলে যা হবার, তা-ই হয়েছিলো সেই কেন্দ্রে, অতিরিক্ত হাইড্রোজেন প্রবল চাপে রিয়্যাক্টর ছেড়ে বেরিয়ে গোটা রিয়্যাক্টর বিল্ডিংশুদ্ধ বিষ্ফোরিত হয়। ঐ বিষ্ফোরণে রিয়্যাক্টরে জমা থাকা কিছু তেজস্ক্রিয় বর্জ্য, মূলত তেজস্ক্রিয় সিজিয়া আর আয়োডিন, বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। জাপানের কিছু কিছু গ্রাম তেজস্ক্রিয় সিজিয়াম বর্ষণের কারণে আগামী পঁয়তিরিশ বছর পর্যন্ত আর মানুষ বাসের উপযোগী নয়।
আমাদের নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র স্থাপিত হতে যাচ্ছে পাবনার রূপপুরে। এর দক্ষিণে কিছুদূরে পদ্মা, পূর্বে কিছুদূরে যমুনা। নিউক্লিয়ার মেল্টডাউনের প্রয়োজন নেই, ফুকুশিমার মত কোনো ধরনের তাপীয় দুর্ঘটনাও যদি সেখানে ঘটে, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার একটা বড় অংশ খুব অল্প সময়ের মধ্যে সেই তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের শিকার হবে।
কিন্তু এগুলো সবই জুজুর ভয়, সারা পৃথিবীতে শয়ে শয়ে নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র চলছে, বাংলাদেশেই বা কেন ঠিকমত চলতে পারবে না?
এই প্রশ্নের উত্তরেই সরকারকে সরব দেখতে চাই। তারা যেন আমাদের আশ্বস্ত করেন, একেবারে স্টেইট অব দ্য আর্ট নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র আমরা পাচ্ছি, অন্যদেশে ফেইজ আউট করা কোনো বাতিল মাল নয়। নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র নিয়ে আক্ষরিক অর্থেই কোনো চুদুরবুদুর ছৈল্ত ন। আমরা প্রতিমুহূর্তে এ সম্পর্কে আশ্বস্ত থাকতে চাই, সে অধিকার আমাদের রয়েছে।
নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র সারা পৃথিবীতেই বেইজ লোড মোকাবেলার জন্যে ব্যবহার করা হয়, তাই এই শক্তিকেন্দ্র কমিশন করার আগে আমাদের দুর্বল গ্রিড সিস্টেমকেও সবল করতে হবে। বাংলাদেশের পূর্বভাগে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা, আকার ও পরিমাণ বেশি, পশ্চিমভাগ সেই তুলনায় বিদ্যুৎদরিদ্র, তাই একটি ট্র্যান্সমিশন লাইন এই দুই ভাগকে সংযোগ করেছে, যেটিকে ইস্ট-ওয়েস্ট ইন্টারকানেক্টর বলা হয়। সবেধন নীলমণি ইস্ট-ওয়েস্ট ইন্টারকানেকটরের সমান্তরালে ইমার্জেন্সি বিকল্প সহ আরো কয়েকটি বিপুল ক্যাপাসিটির ট্র্যান্সমিশন লাইন স্থাপনের কাজ যদি এই শক্তিকেন্দ্রের সাথে সমাপতিত না হয়, নিউক্লিয়ার শক্তির ফসল আমাদের ঘরে উঠতে আরো সময় লাগবে। এ ব্যাপারেও সরকারের কী পরিকল্পনা, তা আমরা বিশদ জানতে চাই।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের মতো প্রকল্পগুলো নিয়ে আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞদের কোনো কণ্ঠস্বর শুনতে পাই না, সংসদেও এ নিয়ে বিশদ কোনো আলোচনা আমরা শুনতে পাই না। সংসদে আমাদের সাংসদরা যতবার "মাননীয় স্পিকার, আমি আপনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই" বলে মুখে ফেনা তুলে সময় নষ্ট করেন, সেই অবকাশে এই সকল প্রকল্প নিয়েই মনোজ্ঞ আলোচনা হওয়া সম্ভব। বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সই হওয়ার আগে তাই সেই চুক্তি সংসদে আলোচিত হতে হবে, জনসাধারণের কাছে সেই চুক্তির অনুলিপি উন্মোচিত করতে হবে। গণতন্ত্র শুধু ভোটে সীমাবদ্ধ রাখার জিনিস নয়, বরং প্রতিনিয়ত ভোটারদের সামনে সরকারের কাজ সম্পর্কে তথ্য যোগানো ও আলোচনার সুযোগ দানই গণতন্ত্রের প্রশস্ত অংশ। আমরা সরকারের আচরণে তাই প্রকৃত গণতন্ত্রের ছাপ দেখতে চাই।
সূত্র
আমরা সবসময় পৃথিবীর তুলনায় ৩০-৪০ বছর পিছিয়ে থাকি। সারা দুনিয়া যখন নিউক্লিয়ার এনার্জির বিকল্প বের করার ফিকিরে আছে তখন আমরা নিউক্লিয়ারে যাওয়ার ফন্দি আঁটছি। তাও আবার রাশিয়ার হাত ধরে।
বড়ভাই যেমন বিয়ের আগে তার কোলবালিশ ছোটোভাইকে দান করে, রাশানরাও হয়তো সেরকম নতুন নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট বানিয়ে পুরনোগুলি আমাদের ঘাড়ে ফেলে দিয়ে যাবে। সুসম্পর্ক থাকলে এইসব একটু আধটু হয়ই। এখন বলেন চায়ে কয় চামচা তেজস্ক্রিয় চিনি খাবেন?
মেম্বর, যতদূর মনে পড়ে বাংলাদেশে জিওথার্মাল নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আপনার আছে। ভূমিকম্পের পাশাপাশি এইটা নিয়েও একটা সিরিজ চালাবেন নাকি?
পাণ্ডবদা,
ওরে না রে!!!!!!!! আমার জিওথার্মাল নিয়ে কাজ করার কোন অভিজ্ঞতা নাই। ২০০৩ সালে IWM এর গভীর নলকূপ রিহ্যাবিলিটেশন প্রজেক্টের কিছু জিওফিজিক্যাল সার্ভে করতে ঠাকুরগাঁও গিয়েছিলাম। তখন বরুণাগাঁওয়ে সেই বিখ্যাত কলটি পরিদর্শন করতে গেছিলাম। পরিদর্শন পর্বে কলের পানি খাওয়া, কুলি করা, হাত-পা ধোয়া অন্তর্ভুক্ত ছিল।
পরবর্তীতে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এক ভূতত্ত্ববিদের দল সেই কলটি থেকে পানি খেয়ে এসেছিল। তারা শুনেছি একটা রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। সেই রিপোর্টে কী লেখা ছিল, রিপোর্টটি কোথায় গিয়ে জমা হয়েছে তা জানতে পারিনি।
২০০৩ সালে আমরা কলটি দেখতে গিয়েছিলাম পানি উন্নয়ন বোর্ড ও IWM-এর কনসালট্যান্ট মিজানুর রহমানের ব্যক্তিগত উৎসাহে। ২০১১ সালে খবরের কাগজে জিওথার্মাল নিয়ে খবর পড়তে গিয়েও তার নামের পাশে আর কারো নাম দেখিনি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ভদ্রলোক একাই গত ৭-৮ বছর ধরে এই জিনিসের উপর উৎসাহ ধরে রেখেছে কিন্তু এখনো একটা কার্যকর অ্যাসেসমেন্ট করানোর জন্য কাউকে রাজি করাতে পারে নাই। অ্যাসেসমেন্ট হয়ে থাকলেও আমি শুনিনি বা পত্রিকায় পড়িনি।
আমাদের পোড়া দেশে উড়াল রেল, পাতাল রেল, ম্যাগলেভ ট্রেন হয় কিন্তু একটা সম্ভাবনাময় জায়গায় সার্ভে করে দেখার সুযোগ হয় না।
এক কথা বারবার বলতে কেমন শোনায়, তবুও বলি: সময়োপযোগী লেখার জন্য ধন্যবাদ, হিমু। ব্লগে লিখেও আজকাল কাজ হয়। হয়তো এই পোস্ট এবং এধরনের আরো পোস্টের পাতা ঘুরেই সেটা হবে। সেটা হোক, সেই আশায় থাকি। সরকার আদ্যপান্ত প্রকাশ করুক। তবে সবাই যখন নিউক্লিয়ার থেকে সরে আসতে চাইছে, তখন আমাদের এখানে প্রকল্প শুরু করা একটু সন্দেহের উদ্রেক করে আরকি।
তাই এই শক্তিকেন্দ্র কমিশন করার আগে আমাদের দুর্বল গ্রিড সিস্টেমকেও সবল করতে হবে।
বাহ! আগামী সরকারের আমলে খুটির ব্যাবসার পাকা বন্দোবস্ত, দেখি!
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
খাম্বা দিয়ে কিছু হবে না, পাইলন লাগবে। ৫০০ কিলোভোল্টের ইন্টারকানেক্টর খাম্বার উপর দিয়ে নিতে গেলে খবরই আছে!
নাইলনের মতো শক্ত আর টেকসই কিছু একটা হবে।
বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সই হওয়ার আগে তাই সেই চুক্তি সংসদে আলোচিত হতে হবে,
হ! আমাদের কোন সাংসদ এইসব কান চুলকানো বাদ দিয়ে এইসব টেকনিক্যাল আলোচনা শুনবেন, বা আদৌ কোন গঠণমূলক মতামত দিবেন বলে আপনার মনে হয়?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
গত সেমিস্টারে রিনিউয়েবল এনার্জির উপরে একটা কোর্স করেছিলাম। তাতে যা বুঝেছি তা হলো, খুব বেশিদিন দূরে নেই যখন আমাদের এইসব রিসোর্স ফুরিয়ে যাবে। উন্নত দেশগুলো এখনি এটা নিয়ে প্ল্যান করছে, এখন পার্সেন্টেজ কম হলেও ২০-৪০ বছরের রোডম্যাপ তাদের আছে যাতে রিনিউয়েবল এনার্জি বড় ভূমিকা পালন করবে। তাদের জন্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ছাড়া আরেকটা বড় সমস্যা গ্রিড রিলায়েবিলিটি ঠিক রাখা। মানে একটা বিদ্যুতকেন্দ্র তো খালি লাগালেই হবে না, সেটা লাগানোর পরে পুরো গ্রিডেই তার ইফেক্ট পড়বে। অ্যামেরিকায় রিলায়েবিলিটি ৯৯.৯৯৯%। সোলার বা উইন্ড যতদিন না এইরকম রিলায়েবিলিটি দিচ্ছে, ওরা শিফট করবে না তাতে। ফলে পুরো ইনফ্রাস্ট্রাকচার ঢেলে সাজানোও একটা অ্যাডেড কস্ট।
আমরা যে নিউক্লিয়ারে যাব, তারপর কিছুদিন পরে যখন জ্বালানি থাকবে না, তখন আমাদেরও কিন্তু এইদিকেই আসতে হবে। এর মাঝে গ্রিড উন্নয়নে যা খরচ করবো, সেটা কি তখন অহেতুক হবে না? এই অহেতুক খরচের যায় নেওয়ার মত অর্থনীতি কি আমাদের আছে?
আরেকটা জিনিস ঐ কোর্সেই পড়া। চীন বেশ কিছু ওয়েস্টার্ন কোম্পানির সাথে চুক্তি করে উইন্ডমিল নিয়েছিল, চুক্তির শর্ত ছিল কোম্পানি ইনফ্রাস্ট্রাকচারের সাথে চাইনিজ লোকদের ট্রেনিং দেবে। শুরুতে তাই খরচ বেশি পড়লেও দশ বছর পরে চীন ওয়েস্টার্ন কোম্পানিগুলোকে কিক আউট করে এখন নিজেই সর্বেসর্বা হয়ে বসে আছে। আমাদের মনে হয় এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
গ্রিড উন্নয়নের বিকল্প নাই তো। রিনিউয়েবল এনার্জির বরং আরেকটু বেশি করে গ্রিড কানেক্টেড থাকা জরুরি, কারণ ফ্লাকচুয়েশন অনেক বেশি।
আমিও সেইটাই বলতে চেয়েছি আসলে। এখন এক স্ট্যান্ডার্ডে গ্রিড উন্নয়ন হবে, এরপর আবার আরেক স্ট্যান্ডার্ড আসবে রিনিউয়েবলের জন্য, যদি না এখন থেকেই রিনিউয়েবলের কথা চিন্তা করে সেই প্রভিসন রাখা হয়। কিন্তু আমরা কবে আর ভবিষ্যত ভেবে চিন্তা করেছি?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
বাংলাদেশের সরকার গুলো পাবলিককে কোন তথ্যই দিতে চায় না। এই ব্যাপারে সরকারকে বাধ্য করা যায় না? নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ ছাড়া আমাদের এই মূহুর্তে আসলে উপায় নেই, কিন্তু লুটপাটের কবলে পরে কী যে অনর্থ ঘটায় কে জানে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
পরবর্তীতে নিউক্লিয়ার মিস্ত্রী রাশান হলে ঝুকি খানিকটা হলেও কমবে! মন্ত্রীর তালতো ভাইয়ের শ্বশুরের ছোট ছেলে বউয়ের বড় খালার তমুক, সেই সর্ম্পকের জোরে কোন অর্কমা যদি নিয়োগ পায়, তাহলে দেশে পাবনাবিল জাতীয় ঘটনা ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না!
সরকার বড় বড় প্রজেক্ট পছন্দ করেন - এক্সপ্রেস ওয়ে, পাতাল রেল, পারমাণবিক বিদুৎ । বেশি পয়সার প্রজেক্টে বেশি পয়সা মারা যায়।
আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে সরকারের উচিত আমাদের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো ও জনগনকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করা। যেমন--সৌর চুল্লি, বায়োগ্যাস প্লান্ট ইত্যাদি।
আমার মনে হয় না বাংলাদেশে উইন্ড, ওয়েভ, সোলার আর জিওথার্মাল এনার্জির সম্ভাবনা খারাপ। পনের-বিশ বছরের পরিকল্পনা করে আগালে এর প্রত্যেকটাকে সাশ্রয়ী করে তোলা সম্ভব। যদি ভোট দেবার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে আমি নিউক্লিয়ারকে 'না' ভোট দিতাম, আর এই মুহূর্তের প্রয়োজনের জন্য কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্টকে 'হ্যাঁ' ভোট দিতাম।
পুনশ্চঃ লেখাটাকে একটু এডিট করে কোন দৈনিকে দেবার কথা কি বিবেচনা করবেন?
সহমত।
আমিও গ্রীন এনার্জিকে 'হ্যাঁ' এবং নিউক্লিয়ারকে 'না' ভোট দিতাম।
আমি নিউক্লিয়ার শক্তির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ নই, তাই এ ব্যাপারে দৈনিকে লেখা আমাকে মানায় না। বায়ুশক্তি হলে লিখতাম কিছু। নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের ইরেকশন, অপারেশন আর সেফটি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ধারণা আছে, এমন কয়েকজন যদি লিখতেন, ভালো হতো। সেরকম বাংলাদেশী দেশে-বিদেশে আছেন নিশ্চয়ই। ব্লগে লিখে আমার উদ্দেশ্য মূলত তাঁদের লিখতে চাপ দেয়া।
আমি মনে করি দৈনিক পত্রিকায় এই পর্যায়ে লেখা দেবার জন্য এই বিষয়ে খুব গভীর জ্ঞানের দরকার নেই। মোটামুটি যেটুকু জ্ঞান থাকলে চলবে সেটা আপনার যে আছে তা দেখাই যাচ্ছে। এই লেখাটার ভাষাতে সামান্য পরিবর্তন করলেই এটা দৈনিকে প্রকাশের উপযুক্ত হয়ে যাবে। দৈনিকে প্রকাশিত হলে আপনার টার্গেট গ্রুপের চোখে পড়বে, তখন হয়তো তাঁরা আরো বিস্তারিত লিখতে আগ্রহী হবেন। এছাড়া দৈনিকের সাধারণ পাঠক, যাদের ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সীমিত বা নেই - এটা তাদেরকেও এই বিষয়ে সচেতন করে তুলবে।
দেশে গভীর জ্ঞানসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন আছে নিশ্চয়ই, তবে তারচেয়ে বেশি দরকার দেশপ্রেমিক সচেতন মানুষের। আপনার মানসিকতা অমন বলে ভরসা রাখি, তাই অনুরোধটা করেছিলাম।
বায়ুশক্তি হলে লিখতাম কিছু।
আমি লেখাটা পড়তে শুরু করার আগে মনে করেছিলাম নিউক্লিয়ার শক্তির পাশাপাশি বায়ুশক্তি নিয়েও কিছু লিখবি। নিউক্লিয়ারের বিপরীতে বায়ু শক্তির সম্ভাবনা, খরচ, ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি নিয়ে। তাহলে একটা তুলনামূলক চিত্র পাওয়া যেতো।
প্ল্যান্ট চালাতে দক্ষ জনশক্তির অভাব হবেনা বলেই আমার বিশ্বাস, যদি জায়গামতন যোগ্য লোককে বসানোর মতন সদিচ্ছা থাকে। আমি আশাবাদী এই ব্যাপারটায় কোন নয়ছয় হবেনা, লাখ লাখ মানুষের জীবনের ব্যাপার, শুধু তাই না, তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপরও পড়ে! হয়তো আমি বেশি আশাবাদী, কিন্তু এছাড়া আমাদের উপায়ও নাই। এনার্জি ছাড়া চলারও তো উপায় নাই।
সরকারের অবশ্যই অবশ্যই এই ব্যাপারগুলা নিয়ে খোলামেলা হওয়া উচিৎ। প্র: জামিলুর রেজা চৌধুরী এসেছিলেন ২/৩ দিন আগে দোহাতে, বললেন পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক কথাই, তিনি না বললে হয়তো কোন দিনই জানা হতনা ভিতরের এই ব্যাপারগুলা। কেন যে আমাদের সরকার বিসিআই আর রাহাত খান স্টাইল পছন্দ করে কে জানে, অদ্ভুত!
লেখাটা কোন দৈনিকে আসা উচিৎ। এই তথ্যগুলো সবার জানা প্রয়োজন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনি শুরুতে যে বিকল্প উপায়গুলোর কথা বললেন। সেখানে গ্রীন এনার্জি সলুস্যনগুলোও কি বিবেচিত হতে পারতো? যেমন সৌরশক্তি, বা বায়ু শক্তি?
এছাড়া, এধরনের বড় আকারের পাওয়ার প্লান্টের এনভায়রনমেন্টাল ইম্প্যাক্টও বেশ ভয়াবহ। ভবিষ্যত, এনার্জি সমাধানগুলো হতে যাচ্ছে ডিস্ট্রিবিউটেড। নিচের এই ছোট্টো ভিডিওটা দেখুন।
নবায়নযোগ্য শক্তির সমস্যা হচ্ছে এর ইনিশিয়াল কস্ট বেশ হাই। আমাদের যে পরিমাণ শক্তি দরকার, সেটার জন্য কেবল নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর আমরা ঝুঁকতে পারবো না। সৌর আর বায়ুবিদ্যুতের সম্ভাবনা আছে দেশে, কিন্তু সেটা সাপ্লিমেন্টারি রোলে, মূল চাঙ্কটা এখনও জীবাশ্মজ্বালানি থেকেই আসতে হবে। আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়লে ভূটান আর নেপাল এই পুরো অঞ্চলের জন্যই জলবিদ্যুৎ যোগান দিতে পারতো, ওখানে আনট্যাপড রিসোর্স অ-নে-ক।
ডিসেন্ট্রালাইজড সিস্টেমের সমস্যা হচ্ছে খরচে। আমরা এত ধনী নই। শুধু তাই নয়, এটা চালু করার জন্যে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি কিছু আইনী ইনস্ট্রুমেন্টও লাগে, যেগুলো আমাদের দেশে এখনও নেই। ভবিষ্যতে হবে, সেই আশাও কম।
কয়েকটা পয়েন্ট মনে হয় আলোচনার বাইরে থেকে গেল।
>> নিউয়ার জালানি এর যে জোগান আসবে সেটা দিন দিন ব্যয় বহুল হতে থাকবে। এবং এটাকে নিয়ে যে আন্তর্জাতিক পলিটিক্স এন্ড কন্ট্রোল মেকানিজমটি জরিত সেটি কিন্তু ভয়ংকর। যেটার মানে নিউয়ার জালানি এর জন্য পুজিবাদি দেশের কাছে দাসত্ব। কারন আমি জতদুর জানি মাত্র ৫ টি দেশ নিউয়ার জালানি সরব্রাহ করতে পারে।
>> জতই আমরা ভাবি না কেন দুঘটনা ঘটবে না সেটা ১০০% নয়। Engineering point of view থেকে সেটা ভাবাও ঠিক না।ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে মানুষ কোথায় সরানো হবে এ জাতিও বিষয় আগে ভাবা দরকার। জাপান ধনি দেশ বলে এ যাত্রায় ক্ষতি সামলে নিয়েচে। আমরা?
>> আর একটি বিষয় ভাবা দরকা্র কেন জার্মানি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করে দিচ্ছে...কেন গ্রীন এনারজিতে জুকছে...। যদি Energy Efficient State হতে হয় তাহলে আজই এ ভাবনা ভেবে নিয়ে মাঠে নামা জরুরি।
আমি কিছু টেকনিকেল বিশয় নিএ বলতে চাই। ১০০০ মেগাওয়াট এর ২ টা প্লান্ট এর কথা বলা হইসে চুক্তিতে। মানে টোটাল ২০০০ মেগাওয়াট। দেশের টোটাল লোড ৫০০০ মেগাওয়াট, এর মধ্যে ৪০০০ মেগাওয়াট বেজলড প্লান্ট থেকে আসে। গ্রিড ডিসাইন এর রিকয়ারমেনট অনুযাই ১ টা প্লান্ট এর পিক অঊটপুট টোটাল লোড এর ১০ ভাগ এর বেশি হতে পারবে না। তাহলে বর্তমান হিসেবে পার প্লান্ট এর অঊটপুট ৫০০ মেগাওয়াট এর বেশি হবার কন কারন নাই। তাহলে এখুনি ২০০০ মেগাওয়াট প্লানট কেন?
আপনার নামটা লিখতে পারতেন।
আপনার পয়েন্টটা গুরুত্বপূর্ণ (চলুক)। কোনো কারণে যদি একটা ইউনিট ফেইল করে, ফ্রিকোয়েন্সি ড্রপের কারণে পুরো গ্রিড ফেইল করতে পারে। রোসাটম যদি এই ব্যাপারটা আমলে না নিয়েই একটা এক গিগা ইউনিট বসিয়ে ফেলে, তাহলে ধরে নেয়ার সঙ্গত কারণ আছে যে এই ইউনিট হাই গ্রিড ক্যাপাসিটি সম্পন্ন কোনো দেশের জন্যে ডিজাইনড, অথবা সেরকম কোনো দেশে ব্যবহৃত।
পিক অঊটপুট টোটাল লোড এর ১০ ভাগ এর বেশি হতে পারবে না কেন? এই হিসেব মেনে চলতে হলে, এমন একটা কাঠামো চিন্তা করুন যেখানে কোন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নেই। প্রথম বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করলে তো সেই ১০০% বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে? নাকি আমি কিছু মিস করছি?
নেটওয়ার্ক স্ট্যাবিলিটির জন্য। গ্রিডে সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি দেয়া হয় ফ্রিকোয়েন্সিকে। গ্রিডে সোর্স (প্ল্যান্ট) আর লোড, দুটোই একেবারে টায়ে টায়ে ব্যালান্সে রাখতে হয়। গ্রিড থেকে যদি হঠাৎ করে একটা বড় প্ল্যান্ট সরে যায় (সেটা জেনারেশন, ট্র্যান্সমিশন বা প্রটেকশন ফল্ট, যে কোনো কিছুর জন্যেই হতে পারে), তখন সোর্সের চেয়ে লোড বেশি থাকে। পরিস্থিতি এমন হলে গোটা গ্রিডে ফ্রিকোয়েন্সি ড্রপ করে। গ্রিড থেকে লোড সরানো সময়সাপেক্ষ, এর মধ্যেই ফ্রিকোয়েন্সি অনেকদূর নেমে যেতে পারে। যেসব কলকারখানায় স্পিড-সেনসিটিভ প্রসেস চলে, সেগুলো যদি গ্রিড কানেক্টেড থাকে, কয়েক সেকেণ্ডের লো ফ্রিকোয়েন্সি তাদের বারোটা বাজিয়ে দিতে পারে (যেমন ধর পেপার ইন্ডাস্ট্রি)। ঘরোয়া জিনিসপত্রের কথা বাদই দিলাম।
একেবারে বিরান মরুভূমিতে মনে কর তুই একটা প্ল্যান্ট বসালি, তারপর গ্রিডে পাওয়ার দিলি। সেখানেও দেখবি, একটা ইউনিট দিয়ে কখনও সরবরাহ করা হয় না, কয়েকটা ইউনিট থাকে। ইউনিট সংখ্যা বাড়ানোর সাথে সাথে রিলায়েবিলিটি ফ্যাক্টরগুলোও বাড়তে থাকে। একটা ১ গিগাওয়াটের ইউনিটের চেয়ে তাই দশটা ১০০ মেগাওয়াটের ইউনিটের প্ল্যান্ট বেশি রিলায়েবল। কারণ নিশ্চয়ই বুঝতে পারছিস, একটা ইউনিটের আউটেজ প্রবাবিলিটির চেয়ে দশটার একসাথে আউটেজের প্রবাবিলিটি অনেক কম হবে। এ কারণেই আমাদের প্রথম বড় স্কেলের বিদ্যুৎ কেন্দ্র কাপ্তাই প্ল্যান্টে পাঁচটা ছোটো ছোটো ইউনিট আছে।
এতো দেশ থাকতে রাশিয়ার সাথে চুক্তি ভয় জাগানিয়া।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিউক্লিয়ার এখন বাতিল হতে যাচ্ছে এবং এদের প্লান্ট প্রটেকশন/কন্ট্রোল অনেক সিকিউর (বাস্তব অভিক্ষতা) , তাই ওদের থেকেই টেকনোটা নিলে ভালো হতো। রাশিয়ার পাওয়ার গ্রিড এখন Siemens, ABB, AREVA, ALSTOM, Schneider এগুলো থেকে নতুন টেকনোলজি নিচ্ছে।
দেশের বর্তমান অবস্হায় নিউক ছাড়া গতি নাই। কিন্তু সেই অনুপাতে আমাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ট্রান্সমিশন লাইন থেকে শুরু করে ট্রান্সফরমার প্রকেশন (চুর বেটা কখন খুলে নিয়ে যায়), লাইন প্রটেকশন, ব্যাকআপ লাইন) এইগুলোর জন্য আরো বড়ো ইনভেষ্ট দরকার।
মন্ত্রী, এম-পি'দের তো টেন্ডার হলেই হলো।
আমাদের অনেকের চেনাজানা বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন আছে গুরুত্বপুর্ণ সরকারী পদে বা গণমাধ্যমে। দয়া করে বিষয়টি সবার সাথে আলোচনা করুন, সচেতনতা ছড়িয়ে দিন যতখানি সম্ভব। সরকার নিজে থেকে কোন তথ্য প্রকাশ করবে না এটা একরকম নিশ্চিত, সম্ভাবনা অনেক বেশি যে মোটা অঙ্কের টাকা ইতিমধ্যেই হাতবদল হয়েছে কিংবা সরকারী দল বড় কোন রাজনৈতিক সুবিধার আশ্বাস পেয়েছে। সরকারকে চাপে ফেলতে না পারলে নিম্নমানের প্লান্ট স্থাপিত হওয়া শুধুই সময়ের ব্যাপার
যতদূর জানি প্ল্যান্টটা চালু করার টার্গেট ২০২০ সালে, পিডিবির পরিকল্পনা অনুযায়ী তখন গ্রীডের মোট ক্ষমতা হবার কথা ২০,০০০ মেগাওয়াট যার প্রায় ৭০% ভাগই আসার কথা থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে।কাজেই প্ল্যান্টের আউটপুট গ্রীডের ১০% এর বেশী হবে না,আর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলেও গ্রীড আনস্টেবল হওয়ার বিষয়টা তাদের মাথায় আছে(আশার কথা )।আর যে মডেলের রিএ্যাক্টর বানানোর কথা চলছে সেটা VVER-1000 এর একটা ইমপ্রুভড ভার্সন(ইমপ্রুভড emergency core cooling system (ECCS) সহ) হবার সম্ভাবনা বলে জানি,ইন্ডিয়াতে এ ধরনের একটা প্ল্যান্ট রাশিয়া বানাচ্ছে(কুদনকুলাম)। বাংলাদেশে কোনো প্রকল্পই এখনও পর্যন্ত ঠিকভাবে হয়নি,তাই এটার ক্ষেত্রেও নানাবিধ আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে। সব কিছু আরও খোলাখুলিভাবে প্রকাশিত হলে ভাল হত।
গ্রিড ক্যাপাসিটি যদি ২০২০ সালে গিয়েও ১০ গিগা না ছাড়ায়, এই প্রজেক্টটা গ্রিড কোম্পানির জন্য একটা প্রবলেম চাইল্ড হয়েই থাকবে। গ্যাসের অপ্রতুলতার কারণে আগামী বড় প্ল্যান্টগুলো কয়লাভিত্তিক হওয়াই স্বাভাবিক, তাই এই প্রকল্পের সাথে সাথে কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলোকেও এগোতে হবে। সেরকম কোনো লক্ষণ তো দেখা যাচ্ছে না।
১। রাশিয়ার সাথে আণবিক শক্তি বিষয়ক চুক্তির একটা খবর প্রতিবছরই দিয়ে আসছে। মজার ঘটনা হল ২০০৯ সালের প্রেস রিলিজের পর থেকে এ বিষয় নতুন কোন তথ্য় বাজারে আসেনি। ২টা প্লান্ট, ২গিগা ওয়াট, ২ বিলিয়ন ডলার, রাশিয়া জ্বআলানীদেবে, প্রশিক্ষণ দেবে, প্রযুক্তি দেবে, আবার বররজ ফেরত নেবে। বানংলাদেশ-রুশ বন্ধুত্ব জিন্দাবাদ। এর সাথে হাতমেলানো, দস্তখত দেবার ছবি।
এই কিস্তিতে এর বাইরে নতুন কি দেখলাম। এই কুমিরছানা যে আগের কুমিরছানাটাই নয়, সেটা বুঝি কেমনে?
২। পররদার আড়আলে কি হচ্ছে, জানিনা না। কিন্তু এই বিষয়ে আজতক চোঊফিক আর তোফায়্লের চেহারা দেখতে পাইনি। বুঝলাম দেশের পারমানবিক সাব্জেক্ট্মেটার প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ে যুক্ত, কিন্তু, হিমু যা আগেই বলেছে, অবকাঠামো আর 'ক্লায়েন্ট' সনংস্থাগুলোর সমন্বয় ঘটবে কোথায়? আপাত দ্ররিষ্টিতে দেখা যাচ্ছে, এটাকে প্রযুক্তি থেকে শিল্পে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রীর কাররযালয়ই মূল ভূমিকা পালন করবে। আর প্রধানমন্ত্রীর কাররযালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন কিভাবে হয়, তা সে আওয়ামী লীগ আর বি এন পি যেই ক্ষমতায় থাকুক, সেটা আমরা জানি বলেই ভীত হই।
৩। এই দুই গিগ, আর ভারতীয় কয়লার এক গিগ যোগ হলে, যমুনা-মেঘনার পূব-পশ্চিম বিদ্য়ুত ভারসম্য় সমন্বয় নিয়ে ভাবত হবে। গাইগরু কেনার আগে তার দুধ রাখার পাত্র ঘরে আছে কিনা তার খোঁজ রাখা দরকার।
সারা পৃথিবীতে যত সমস্যা আছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দুটো সমস্যা হলো খাদ্য আর জ্বালানী। এই দুটোই চাহিদার তুলনায় বিপদজনক রকমের সীমিত। যদি এই শতকের মধ্যে বিকল্প বের না হয় আগামী দুশো বছরের মধ্যে মানব জাতিকে হয় আংশিক বিলুপ্ত হতে হবে নয়তো অন্য গ্রহে পাড়ি জমাতে হবে। বাংলাদেশের জন্য এই সমস্যা অন্ততঃ দশগুন বেশী ভয়াবহ। পিছিয়ে থাকার প্রতিযোগিতায় আমাদের হারাতে পারে তেমন দেশ খুব কম। জ্বালানী খাতেও আমাদের একই অবস্থা। এই উপমহাদেশে বাংলাদেশে জনসংখ্যা অনুপাতে শক্তির পরিমান সবচেয়ে কম। কিন্তু দশকের পর দশক আমরা বিকল্প চিন্তা না করে আমাদের বিদ্যমান শক্তিগুলোকে অপচয় করেছি।
যে গ্যাসের উপর বাংলাদেশ দশ বছর আগেই ভাসছিল, এখন সেই গ্যাস আমদানী করার চিন্তা চলছে, দেশে গ্যাস রেশনিং চালু হতে যাচ্ছে। গ্যাসের অধিকাংশ অপচয় করেছি বিদ্যুতে। একটা শক্তির জন্য আরেকটা শক্তি নষ্ট করা যেন।
আমাদের বিকল্প জ্বালানী উৎস বের করতে হবে অতি শীঘ্রই। নিউক্লিয়ার নিয়ে যখন থেকে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে তখন থেকেই এর পক্ষে যুক্তি দিতে যথেষ্ট পরিমান আত্মবিশ্বাস পাই না। কারণ আমার বিশ্বাস বাংলাদেশে এই প্রযুক্তিতে নিরাপদে বিদ্যুত উৎপন্ন করে বর্জ্যগুলো নিরাপদে পার করার মতো দক্ষ আন্তরিক বিচক্ষণ লোকের অভাব আছে। এখানে একটা প্রজেক্ট পাশ করার জন্য হেন অপকর্ম নেই যা করা হয় না। মন্ত্রী থেকে ঝাড়ুদার পর্যন্ত ব্যপ্তি আছে এইসব দুর্নীতির মহোৎসবের।
আমরা এখনো বাজারের ময়লা রাখার ডাস্টবিনটা ঠিকমতো মেইনটেইন করতে শিখিনি। পারমানবিক বর্জ্য কি করে সামলাবো?
এমনকি দেশটা যদি ভুটান হতো, তবু বলতাম আমরা পারবো। কিন্তু আমরা বাংলাদেশী। আমাদের উপর আমাদের আস্থা দুঃখজনকভাবেই কম।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
VIVACE (Vortex Induced Vibrations for Aquatic Clean Energy) প্রযুক্তি নিয়ে কয়েক বছর আগে মিশিগান ইউনিভার্সিটি একটা পরীক্ষা করছিল প্রফেসর Michael Bernitsas এর তত্ত্বাবধানে। এটি নদী ও সমুদ্রের স্রোত থেকে বিদ্যুত উৎপাদন করার একটি প্রযুক্তি। কেউ কি জানেন লেক মিশিগানে পরীক্ষাধীন এই প্রজেক্টের ব্যাপারে? হিসেব করা হয়েছিল এই প্রযুক্তিতে উৎপাদিত বিদ্যুতের খরচ পড়বে ৫.৫সেন্ট/ইউনিট।
বাংলাদেশের জন্য এরকম প্রযুক্তি অধিকতর লাগসই হতে পারে। কেউ কি বিস্তারিত জানেন এটার ব্যাপারে?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
জ্বালানী হিসাবে ইউরেনিয়াম কি সহজলভ্য বা গ্যাস বা কয়লার তুলনায় কম দামী?
মন্তব্য
এই লেখাটা এই সময়ের। এই লেখাটা বাংলাদেশিদের পড়ার জন্য। আসুন এটা সবাই ছড়িয়ে দেই।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বাতিল মাল গছিয়ে দেয়া জাতীয় যে গ্যাঞ্জামের কথা বললেন, সেটা যদি না হয় তাহলে এই প্রকল্প আমাদের জন্যে একটা বিশাল আশীর্বাদ হতে পারে।
আর ওই কথাটা - "সারা পৃথিবীতে শয়ে শয়ে নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র চলছে, বাংলাদেশেই বা কেন ঠিকমত চলতে পারবে না?" - এই জিনিসটাই আসল। যে সমস্ত বিপর্যয় হতে পারে নানা কারণে, সেগুলি চেক দেয়ার মতন টেকনোলজি বা সামর্থ্য আমাদের আছে কি না, না থাকলে সেগুলির ব্যবস্থা আমরা সময়মতন করতে পারব কি না, এই ইস্যুগুলি নিয়েও আলোচনা হওয়া উচিত বলে মনে করি।
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
সরকার বড় বড় প্রজেক্ট পছন্দ করেন - এক্সপ্রেস ওয়ে, পাতাল রেল, পারমাণবিক বিদুৎ । বেশি পয়সার প্রজেক্টে বেশি পয়সা মারা যায়।
বাস্তবতার নিরিখে দেখলে দেশে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট হলে বেশ ভালো হয়। কিন্তু সেটা তৈরি করার সময় হরির লুট এবং তৈরির পরে সেটার ম্যানেজমেন্ট নানানভাবে দলীয় করণ করা হবে। এর ফলে দক্ষ লোকের হাতে সেই পাওয়ার প্ল্যান্ট চলবে না। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট দুর্ঘটনা একদম নিশ্চিতভাবেই মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
মারাত্নক বিপর্যয়ের একটা নমুনা কল্পনা করি - দেশটা এমনিতেই নানান দিক থেকে ধুঁকে ধুঁকে চলে, যে জিনিসটা অন্তত আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে আছে (যদি পজিটিভ দৃষ্টিতে দেখি আর কি) সেটা হল মানুষ। এই ধরনের বিপর্যয়ে যে পরিমাণ মানুষ মারা যাবে, বিকলাঙ্গ হবে আর পরবর্তী কয়েকটা প্রজন্ম যেভাবে এটার জের বয়ে চলবে সেটা অকল্পনীয়। তাছাড়া এই 'নাই নাই' এর দেশে যে কিঞ্চিৎ পরিমাণ রিসোর্স আছে, সেটার ধ্বংসযজ্ঞটা কয়েক শতাব্দী পেছনে ঠেলে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট।
সরকার বড় প্রজেক্ট করতে পছন্দ করে সেটা ঠিক, এসব থেকে কয়েক পুরুষ ধরে বসে খাওয়ার মতন টাকা "রোজগার" সম্ভব সেটাও না হয় মানলাম, কিন্তু কাজের কোয়ালিটি যখন লক্ষণীয়ভাবে নেমে যায়, সেটার রেজাল্টটা সত্যিই ভোগায়। এই জিনিসটা যদি এইরকম একটা স্পর্শকাতর প্রজেক্টেও যথারীতি হতে থাকে তাহলে তার ফলাফল মোটেও সহনীয় হবে না।
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
প্রতিটা প্রজেক্টে যে হরির লুট হয় সেটা এই প্রজেক্টে না হওয়ার কোনো কারণ দেখি না। বিপর্যয় এবং জনগনের দুর্ভোগ নিয়ে এতো মিহি ভাবনা থাকলে রাজনীতি করা দুরূহু কাজ। বিপর্যয় হলে নাশকতা বা বিরোধীদলকেই ঠিকমত দুষলেই সমস্যা মিটে যায়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হায়রে !
কথা ঠিক, লুটপাট হবে না এমন কুকথা চিন্তা করার মতন পাপিষ্ঠ মন নিয়ে জন্মাইনি। মুশকিল হল, যখন প্রজেক্টে লুটপাট হয়, তখন সমানুপাতিক হারে কাজের মানও নিম্নগামী হতে থাকে। তার উপর আবার 'ঝালাই করা' পারমাণবিক কেন্দ্র লাগানোর ঝুঁকিটা তো থাকছেই, তাহলে চিন্তা করেন এর ফলাফল কতটা ভয়াবহ হতে পারে!
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
কিরিয়েঙ্কো জানিয়েছেন, তাঁরা নিউক্লিয়ার বর্জ্য পুনর্প্রক্রিয়াজাত করার জন্যে আবার রাশিয়া নিয়ে যাবেন। পুরনো প্ল্যান্টগুলোতে বর্জ্য হিসেবে প্লুটোনিয়াম পাওয়া যেতো, যেগুলো মিলিটারি ওয়ারহেডে ব্যবহার করা হতো, আমাদেরটার কপালেও সেরকম কিছু আছে কি না নিশ্চিত জানি না। কিন্তু চুক্তিতে যদি এটা না থাকতো, গার্মেন্টসের ঝুটের মতো দেখা যেতো ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা নিউক্লিয়ার বর্জ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য টেম্পো-ট্রাক নিয়ে হাজির হয়েছে।
সার্বিকভাবে এইরকম স্কেলের একটা প্রজেক্টের তত্ত্বাবধান করার মতন সামর্থ্য আমাদের আছে কি না সেটা একটা বড় ইস্যু। আমাদের তো মামুলি প্রজেক্টগুলিতেই ম্যানেজমেন্টের লুঙ্গিছিঁড়া অবস্থা হয়ে যায়, এমন স্পর্শকাতর প্রজেক্টের ক্ষেত্রে কী হবে সেটা অনুমেয়।
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত জানার কোন সুযোগ পাচ্ছিনা, বিশেষত আর্থিক দিকটা। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে কি পরিমান খরচ হবে সেটাও জানা যাচ্ছেনা।
মিডিয়ার মারফত মনে হচ্ছে সবকিছুই থাকবে রোসাটম এর তত্ত্বাবধানে। সেখানে দেশীয় প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানীনের কতটুকু নিয়ন্ত্রন থাকবে সেটা জানা দরকার। তা না হলে সবসময় রোসাটম এর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এসব ক্ষেত্রে দেশীয় প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ বা কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি না হলে যেকোন সমস্যা হলেই নির্মান প্রতিষ্ঠান থেকে বিশেষজ্ঞ আনিয়ে কাজ করাতে হবে যা কিনা ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের রানিং কষ্ট বাড়াবে বলে আমার ব্যক্তিগত অভিমত।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এক সিনিয়র ভাই কাজ করতেন সরকারী বিদ্যুৎকেন্দ্রে, ওনার মুখে শুনেছি, সরকারী বিদ্যুৎকেন্দ্রে সবাই কাজ জানেন, কিন্তু কেউ করতে চান না। কোনো বেকুব ভুলে কাজ দেখিয়ে ফেললে দুনিয়ার কাজ নাকি তার ঘাড়েই এসে চাপে। আমাদের আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রও শুনেছিলাম তিন রুশ এনজিনিয়ারের ওপর দিয়ে চলে। এদের মধ্যে একজন সম্ভবত দুর্ঘটনায় মারাও গিয়েছিলো। তবে সবই শোনা কথা, সত্যাসত্য জানি না।
আশুগঞ্জের ঘটনা জানা নেই, কিন্তু প্রথমাংশে কাজের যে কথা বলেছেন তার ২০০ ভাগ সত্যি। মূল চিত্র আরো ভয়াবহ, যে বেচারা গাধার মত কাজ করতে থাকে স্বভাবতই তার ভুলচুক হয়, তখন সে সমানে পাছা মারা খাইতে থাকে, আর যারা কাজ কাম না করে বসে থাকে তাদের তো ভুলের কোন প্রশ্ন নাই ফলে গায়ে ফু দিয়ে বেড়াতে পারে, এসিয়ার থাকে পরিস্কার।
আদর্শ তত্ত্ব! সমস্যা হল আদর্শ তত্ত্বে দেশ কোনদিন চলে নাই..............তথ্য জানার অবাধ স্বাধীনতা আমাদের নাই..............
পোস্ট অসাধারণ হয়েছে।
_____________________
Give Her Freedom!
আমি পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ আদৌ উপযোগী কিনা সেইটা নিয়ে সন্দিহান।
কারণ বাংলাদেশে যাদের হাত দিয়ে এই বিদ্যুতকেন্দ্র হবে, তারা ফেরেশতা না...তাদেরকে আমি বিশ্বাস করি না! দ্বিতীয়তঃ যে দেশে রানওয়েতে যে কেউ ঢুকে যেতে পারে, সেই দেশে কেন্দ্রের নিরাপত্তা কারা দিবে? হাসিনার নাতনী কাল যদি বায়না ধরেন উনি রিএকটর দেখবেন, উনাকে দেখতে দেয়া হবে! তৃতীয়তঃ ধরে নিলাম নিরাপত্তার দায়িত্ব সেনাবাহিনী নিল, এমনিতেই তাদের যা ক্ষমতা, এর পর কী হবে ভাবতেই ভয় লাগে! বিডিয়ার এর মত কিছু হলে আর দেখতে হবে না!
অন্যদিকে যতই চাপা দেয়া হোক বাংলাভাইরা এদেশে বাস্তব, এবং তাদের কেউ (বা অন্য যে কেউ) কোনদিন সেটা দখলে নিয়ে নেবে কিনা সেটা কেউ বলতে পারে না। ভারতীয়-পাকিস্তানীদের উৎপাত না হয় বাদই দিলাম।
বর্জ্য-স্বাস্থ্য সুরক্ষা এগুলার প্রশ্ন তো আরও বড়...ভূমিকম্প এড়াতে পারলেও ২-৩ মাস বন্যা এড়ানোর প্ল্যান আছে কি? অন্যদিকে আমাদের কি সত্যিই আর কোন বিকল্প নেই?
প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় বন্ধু কল্লোলের লেখাটা এইখানে দিলাম!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
রিয়্যাক্টর দেখতে যাওয়া কিন্তু এমন কোনো বড় ইস্যু না, সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স নিতে হয় আগে। আর নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্রের নিজস্ব এরিয়াল ডিফেন্স আর গ্রাউন্ড সিকিউরিটি তো থাকবেই, সব কেপিআইতেই থাকে। হাসিনার নাতনি মাশরুম ক্লাউড দেখার বায়না না করলেই চলে।
তাকে বড়জোর মাশ্রুমাড্ডাতে চা খাইতে ডাকা যাইতে পারে
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পারমানবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের সুরক্ষার দিকটিকে তুলে ধরে একটি বিস্তারিত 'থ্রেট এনালিসিস' দেবার বিনীত অনুরোধ করি।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
দুর্নীতি আর অনিয়মজনিত কারণে নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র স্থাপন এবং যথাযথভাবে পরিচালনা সম্ভব বলে মনে করি না...
ঝুঁকির কথা চিন্তা করে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দিকে হাত বাড়ানোর পক্ষপাতী আমি।
বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ পোটেনশিয়াল নাই বললেই চলে। আর আঞ্চলিক সহযোগীতার মাধ্যমে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ তৈরী করে বাংলাদেশে আনার সম্ভাবনা ক্ষীণ কূটনৈতিক কারনে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
জাহিদ ভাই, একটা কোর্স আছে এইবার পাওয়ার প্ল্যান্ট নিয়ে। সেখানেও দেখলাম স্যার এই কথা বলেন। নিউক্লীয় শক্তির এই রক্ষণাবেক্ষণের গ্যাঁড়াটা না থাকলে এইদিকে ঝোঁকা যাইতো। সৌর শক্তিরেও বিবেচনা করা যাইতো- কিন্তু এফিশিয়েন্সি কম আবার। ...
জলবিদ্যুৎটা সেইফ ছিলো।
সহমত।
লেখাটিতে প্রাসঙ্গিক সবগুলো বিষয় সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
স্নায়ুযুদ্ধোত্তর রাশান ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের দূর্ণীতিকে পৃষ্ঠপোষনের ইতিহাস বিবেচনায় নিলে বাতিল মাল পারমাণবিক চুল্লী গছিয়ে দেওয়ার আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায়না।
আমাদের বিশেষজ্ঞরা সচেতন না হলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপর্যয় হতে পারে।
চিন্তার বিষয় হচ্ছে আমাদের বিশেষজ্ঞদের বিশেষ অজ্ঞদের ঠেলায় ধারেই ভেড়ার সুযোগ নেই।
ধন্যবাদ জনাব হিমু. সময়োপযোগী প্রয়োজনীয় একটি পোস্ট দেবার জন্য।
দারুন! নতুন, প্রযুক্তিবান্ধব উদ্যোগগুলো ভালো লাগায়, সাথে হিমু ভাই এর উদবেগগুলোও ভাবনায় নেয়ার মত--- থ্যাঙ্কস - সিদ্ধন্ত আর গণভোট এক নয় - গণভোট নয় এটলিস্ট বিশেষজ্ঞ মতামত এক্ষেত্রে খুব জরুরী- মুল কথা একজন লিখেছেন - বাতিল মাল গছিয়ে দেয়া জাতীয় যে গ্যাঞ্জামের কথা বললেন, সেটা যদি না হয় তাহলে এই প্রকল্প আমাদের জন্যে একটা বিশাল আশীর্বাদ হতে পারে--- আর ওই কথাটা - "সারা পৃথিবীতে শয়ে শয়ে নিউক্লিয়ার শক্তিকেন্দ্র চলছে, বাংলাদেশেই বা কেন ঠিকমত চলতে পারবে না?" - এই জিনিসটাই আসল। - সহমত
হিমু ভাই চিন্তা করলে দেখা যাবে রিনিউএবল বা বিকল্প শক্তির খরচ এত বেশি যে তা বাংলাদেশের জন্যে বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন। সৌর বা বায়ু বিদ্যুতের কথা বলছি। সৌর বিদ্যুতের উতপাদন খরচ অনেক, যায়গা লাগে বিশাল। তাছাড়া অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে বায়ুবিদ্যুতের জন্যে দেশের যে যায়গাটা সবথেকে উপযুক্ত ছিল সেখানে স্থাপিত একমাত্র উইন্ডমিল পাওয়ার স্টেশন সর্বশেষ খবর মোতাবেক ভাঙ্গনের কারণে সমুদ্রে বিলীন হওয়ার পথে। এটা ছিল দেশের একমাত্র পাইলট ভিত্তিতে গড়া বায়ুবিদ্যুত কেন্দ্র। মনে হচ্ছে আসলে পারমানবিক বিদ্যুতের কোন বিকল্প এই মূহুর্তে নাই। তবে মনে রাখতে হবে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অত্যন্ত সংবেদনশীল। এটা একটা ভয়ংকর দৈত্যকে লাগাম দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার মত। এর ক্ষেত্রে সামান্য ত্রুটির কোন ক্ষমা নেই এবং মূল্য অনেক বড়। সুতরাং স্বার্থচিন্তা বাদ দিয়ে দেশের কথা ভেবে কাজ না করলে বড় ধরনের সমস্যা আছে। এক্ষেত্রে সমাধান হল দেশীয় প্রকৌশলিদের প্রশিক্ষণ দেয়া, ভাল পরামর্শক নিয়োগ করে তাদের সাথে যুক্তকরা। এরপর টার্ন কি ভিত্তিতে প্রকল্প করা যেখানে শর্ত থাকবে দেশী প্রকৌশলীরা প্রথম থেকে হাতে কলমে কাজ করবে বিদেশি কন্ট্রাক্টরের আন্ডারে, দেশী প্রকৌশলীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এর ব্যবস্থা করে দিতে হবে কন্ট্রাক্টরকেই এবং ৩ বা ৫ বছর পর প্রকল্প হস্তান্তর করতে হবে দেশের বিদ্যুৎ বিভাগ কে। দরকার সদিচ্ছা তাহলে এটা কোন ব্যাপারি না। আর একটা খুবি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, পারমানবিক জ্বালানী কে সরবরাহ করবে এবং বর্জ্য কি করা হবে? পারমানবিক বর্জ্য নিয়ে কিভাবে কি করা হবে তার পরিস্কার নিতিমালা খুব দরকার। নাহলে উল্টা বিপদ হতে পারে। আসলে একটা বাস্তব ও পরিস্কার রোডম্যাপ দরকার আগে।
বাংলাদেশের জন্য সৌরশক্তি তখনই ফিজিবল হবে যখন আমরা প্যানেল, ব্যটারি, কনভার্টার আর লোড রেগুলেটর নিজেরা তৈরি করে চাহিদা মেটাতে পারবো। আমদানি করে চালাতে গেলে আমাদের পেছন দিয়ে নীল লোহিত সুতা বের হয়ে যাবে। আর সৌরশক্তির খরচ প্রায় ৪০-৫০ টাকা/ইউনিট পড়ে খরচ। গরীব মানুষকে ধরে ধরে সৌরশক্তির সলিউশন বেচার চেষ্টা করে সেটার নাম দেয়া হচ্ছে উন্নয়ন, যেখানে শহরে পাবলিক কয়েক কুলিং টন এসির সামনে বিচি ঝুলিয়ে বসে থাকে ৫ টাকা ইউনিট বিল দিয়ে। ট্যারিফ পলিসিতে গ্রামাঞ্চলে রিনিউয়েবলের খরচকে শহরাঞ্চলের বিলে ইন্টার্নালাইজ করা না গেলে এইটা হবে সিম্পলি দরিদ্র মানুষের সাথে প্রতারণা। আর বায়ুবিদ্যুতের সম্ভাবনা বাংলাদেশে আছে টেকনাফের কাছে অফশোরে, কিন্তু তার ইনিশিয়াল খরচ অনেক বেশি, আর ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকা বলে রিস্ক ফ্যাক্টরও বেশি।
মহেশখালি নাকি কুতুবদিয়া, ভুলে গেছি, যেখানে কয়েকটা ৫০ কিলোওয়াট টারবাইন বসানো ছিলো, ঐটা একটা বলদা প্রজেক্ট। ঐটার কাছাকাছি খরচে একটা এক মেগাওয়াটের সিঙ্গল ইউনিট টারবাইন বসানো যেতো, অল্প জায়গায়, বেটার প্রটেকশন নিয়ে। বাংলাদেশে বায়ুবিদ্যুতের আরেকটা পাইলট প্রজেক্ট ছিলো মুহুরী প্রজেক্ট, সেইটাও ইল-ডিজাইনড। ফলে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে বায়ুবিদ্যুৎ নিয়ে কেউ কথা বলতে গেলে এই দুই ধ্বজভঙ্গ প্রজেক্ট দেখিয়ে বলা হবে বাংলাদেশে বায়ুবিদ্যুতের কোনো আ্শা নাই। আমার জানালা দিয়ে উঁকি দিলেই দেখি সার বেঁধে উ্ইন্ড টারবাইন ঘুরছে সারাদিন, ঠিকমতো সার্ভে, ডিজাইন আর ডাইমেনশন করলে বাংলাদেশেও না ঘোরার কোনো কারণ নাই।
হ, ওইটা মনে হয় কুতুবদিয়াতে। পরে আরো কিছু কি হইছে? ইন্টারনেটে সার্চ দিলে আরো কয়টা পাওয়া যাচ্ছে এখন দেখলাম। আর গ্রামে সৌর বিদ্যুতের হাতি গরিব মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে উন্নয়ন করার থেকে শহরের বড় বড় হোটেল রেস্টুরেন্টগুলার জন্যে বাধ্যতামূলক ভাবে দিনের সময়টা প্যানেল বসিয়ে নিজস্ব বিদ্যুৎ তৈরি করে ব্যবহার করতে বাধ্য করা উচিত। মোবাইল কোম্পানিগুলাও দিনের বেলায় সৌরপ্যানেল ব্যাবহার করতে পারে ওদের বেজ স্টেশনগুলার জন্যে। এর ফলে দেশে এ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি বিষয়ক একটা উতপাদন ও সংযোজন খাত তৈরি হয়ে যেতে পারে। আর দেশে কিন্তু বেশ ভাল ব্যাটারি তৈরি হচ্ছে এখন। আবার ধরেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে ডিস্ট্রিবিউশন লাইন পৌছায়নি সেখানে সৌরবিদ্যুত ব্যবহার করে বাড়ি প্রতি অন্তত একটা আলোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বিদ্যুৎ বিভাগের সংস্লিষ্ট নীতি নির্ধারক আর মাথারা একটু পড়ালেখা করলে অনেক সমস্যার হাত থেকে বাঁচা যেত।
কঠিনভাবে সহমত।
ঢাকায় আমাদের পাশের বাড়ির ছাদে গ্রামীণ এর কিছু একটা কাঠামো ছিলো। সেটার চারদিকে সোলার প্যানেল দেখেছিলাম মনে হয়। বাংলাদেশের লোডশেডিং আমলে নিলে, নিজস্ব অপারেশনের স্বার্থেই নিরবিচ্ছিন্ন বিদু্যতের জন্যেই তো এদের সৌরশক্তির দিকে ঝোঁকা উচিত
পুরাই সহমত। আশঙ্কা হচ্ছে, সর্ষের ভেতরে ভূত উঁকি দিবে! বারবারই তো দিয়েই থাকে।
facebook
এখনও, এত কিছুর পরও 'আশা' করতে ইচছে করে।
কতটা স্বচ্ছতার সাথে এই প্রজেক্ট সম্পাদন হয়, এটাই দেখার বিষয়। বড়মাপের দূর্নীতি প্রমাণ হওয়া মাত্রই 'শিরচ্ছেদ'! (দিবাস্বপ্ন সত্য হয়না তবুও দেখি বার বার)
হিমুকে অনেক ধন্যবাদ সহজভাবে ব্যাখ্যা করে ব্যাপারটিতে আলোকপাত করার জন্য।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
এখন বিশ্বব্যাপী নিউক্লিয়ার রিয়্যাকটর স্থাপনে এগিয়ে আছে ফ্রান্সের আরেভা, দ: কোরিয়া, কানাডা। এসব দেশের প্রুভেন রেকর্ড থাকা সত্বেও চেরনোবিল খ্যাত রাশিয়ার কাছে দেশের ভাগ্য সমর্পন করা হলো কেনো কেজানে। রিয়্যাকটর এমনি একটা প্রজেক্ট যেখানে সেফটির সাথে সামান্যতম কম্প্রোমাইজ হতে পারে দেশের জন্যে ভয়াবহ। যমুনা ব্রীজে এরই মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ আল্লাই চালায় বলে জনগন যথারীতি নাগরিক দ্বায়িত্ব শেষ করবে কিনা কে জানে।
[quote যমুনা ব্রীজে এরই মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে।]
যমুনা ব্রিজ কিন্ত কোরিয়ান রাই তৈরি করেছে।