১১.
আমাদের ইতিহাসের বই বলে, পাল রাজ বংশ ৭৫০ খ্রীষ্টাব্দ (গোপাল) থেকে ১১৬১ খ্রীষ্টাব্দ (মদনপাল) পর্যন্ত চারশ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা শাসন করেছে। আবার একই বই বলছে, সেন রাজ বংশ ১০৭০ খ্রীষ্টাব্দ (হেমন্তসেন) থেকে ১২৩০ খ্রীষ্টাব্দ (কেশবসেন) পর্যন্ত বাংলা শাসন করেছে। তার মানে, পাল রাজত্বের শেষ ৯২ বছরে তাদের সাথে সেন রাজাদের রাজত্বও বাংলায় ছিলো। একটু গোলমাল হয়ে গেলো না? আসুন, আরেকটু গোলমাল বাঁধানো যাক।
একটু ভালো ইতিহাসের বই বলে, ৯০০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১০৫০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত অন্তত হরিকেল এলাকা চন্দ্র বংশ শাসন করেছে। তার মানে, পাল আমলে পুরো দেড়শ’ বছর ধরে চন্দ্ররা কমপক্ষে হরিকেল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেছে। এখানেই শেষ না, দশম শতাব্দীর শেষার্ধ থেকে একাদশ শতাব্দীর প্রথম চতুর্থাংশ পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় ৭৫ বছর উত্তরবঙ্গ (বিশেষত বৃহত্তর দিনাজপুর) শাসিত হয়েছে কম্বোজ পালদের দ্বারা। কম্বোজরা গৌড় ও মিথিলা অধিকার করেছিল। তাদের রাজ্য বৃহত্তর দিনাজপুর থেকে সুবর্ণরেখা নদী পর্যন্ত (বালাসোর জেলা) বিস্তৃত ছিল। পাল রাজা প্রথম মহীপাল কম্বোজদের কাছ থেকে গৌড় পুনরুদ্ধারও করেছিলেন। কমপক্ষে চারটি রাজবংশ বাংলা নিয়ে দীর্ঘকাল খেয়োখেয়ি করলেও এবং একই সময়ে দুই বা ততোধিক রাজবংশের শাসন বাংলায় চললেও ঐতিহাসিকেরা এই সময়টাকে কিন্তু ‘মাৎস্যন্যায়’ বলে চিহ্নিত করেননি।
ঐতিহাসিকেরা আরো একটি কাজ করেছেন। তারা সযত্নে ১০৭০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১০৭৫ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত বরেন্দ্র অঞ্চলে সংঘটিত বিদ্রোহ এবং ১০৭৫ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১০৮২ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত টিকে থাকা কৈবর্ত শাসনামলকে অনুল্লেখ রাখেন। ঐতিহাসিকদের অকারণ এই নিরবতা ভেঙে যায় দুই জন সাহিত্যিকের চেষ্টায়। তাঁদের একজন পাল রাজা রামপালের পোষ্যকবি সন্ধ্যাকর নন্দী, আরেকজন সাহিত্যিক-রাজনীতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠক সত্যেন সেন। সন্ধ্যাকর নন্দী তার প্রভু রামপালের গুণগান করে ‘রামচরিতম’ নামের মহাকাব্য রচনা করেন। রামচরিতমে বর্ণিত বরেন্দ্র বিদ্রোহের বিশদটি অস্পষ্ট, কিছু ক্ষেত্রে স্ববিরোধী এবং কিছু ক্ষেত্রে অসত্য। পক্ষান্তরে সত্যেন সেন তাঁর ‘বিদ্রোহী কৈবর্ত’, ‘পুরুষমেধ’ ইত্যাদি উপন্যাসে কৈবর্ত বিদ্রোহরূপে নিম্নবর্গের মানুষের বিপ্লবের যে চিত্র এঁকেছেন সেটির অধিকাংশ অনেক বেশি সৎ, বাকিটুকু সাহিত্যকর্ম।
পালরাজা দ্বিতীয় মহীপাল (১০৭০ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১০৭৫ খ্রীস্টাব্দ) ক্ষমতায় আসার আগেই পাল রাজাদের নিযুক্ত প্রশাসক সামন্তসেন স্বাধীনভাবে বাংলার কিয়দংশে শাসনকার্য পরিচালনা শুরু করেন। সামন্তসেনের পুত্র হেমন্তসেন ক্ষমতায় এসে তাঁর ক্ষমতা আরো সুসংহত করে ১০৭০ খ্রীস্টাব্দেই সেন রাজ বংশের গোড়া পত্তন করেন। দ্বিতীয় মহীপালের দুর্বল ও অত্যাচারী শাসন অন্যান্য সামন্তপ্রভু ও সাধারণ জনগণের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। ফলে, কাছাকাছি সময়ে সামন্তপ্রভুগনের অঘোষিত চক্র এবং মৎস্যজীবী ও কৃষিজীবিদের গোষ্ঠী বিদ্রোহ করে। নিম্নবর্গের কৈবর্ত শ্রেণীর নেতা দিব্য বা দিব্যক সাফল্যের সাথে দ্বিতীয় মহীপালকে পরাস্ত করতে সক্ষম হলেও সন্ধ্যাকর নন্দী তাঁকে ক্রেডিটটি দেন নি। সন্ধ্যাকর নন্দী পাল রাজাদের সম্মান রক্ষার্থে কোথাও দ্বিতীয় মহীপালের সাথে তার দুই ভাই শূরপাল ও রামপালের দ্বন্দ্বের ফল এবং কোথাও পাল রাজাদের নিযুক্ত প্রশাসক দিব্যর সাথে সামন্তচক্রের মিলিত প্রয়াসে দ্বিতীয় মহীপালের পতন হিসাবে দেখিয়েছেন। বস্তুত সামন্তচক্রের বিদ্রোহের ফল সেন রাজাদের পক্ষে গিয়েছিল। সেন রাজারা আর যাই হোন নিম্নবর্গের মানুষদের প্রতিনিধি ছিলেন না। কেউ কেউ বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের রীতি অনুসারে “জীব হত্যা মহাপাপ” এই নীতিতে দ্বিতীয় মহীপাল মৎস্যজীবীদের পেশাগত চর্চ্চাকে রুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন বলে কৈবর্তরা বিদ্রোহ করেছিলেন। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, নদীবিরল বরেন্দ্র এলাকায় মৎস্যজীবিদের তুলনায় কৃষিজীবিরাই সংখ্যায় অধিক ছিলেন। সুতরাং কৃষিজীবিদের ব্যাপক অংশগ্রহন ছাড়া দিব্যের পক্ষে কোন বিপ্লব ঘটানো সম্ভব ছিল না। দিব্য স্বাভাবিকভাবেই মৎস্যজীবি ও কৃষিজীবি মানুষদের নেতৃত্ব দিয়ে বরেন্দ্র বিপ্লবকে সফল করে তোলেন, সামন্তপ্রভুদের সহায়তায় নয়। সন্ধ্যাকর নন্দী এই ঘটনাকে কোথাও “অনীক ধর্মবিপ্লব” বললেও দিব্যকে বিশ্বাসঘাতক হিসাবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন - এটি স্ববিরোধীতা। রাজাপ্রিয় ঐতিহাসিকেরাও দিব্য’র বিপ্লব ও কৈবর্তদের শাসনামলকে চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
ইতিহাস বইয়ে দেখা দ্বিতীয় মহীপাল ১০৭০-১০৭৫ খ্রীস্টাব্দ, শূরপাল ১০৭৫-১০৭৭ খ্রীস্টাব্দ ও রামপাল ১০৭৭-১১২০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেছেন - এটি ইতিহাসের অসম্পূর্ণ পাঠ। আসলে এই সময়কালের মধ্যে ১০৭৫ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১০৮২ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত প্রথমে দিব্য, তারপর তাঁর ভাই রুদক এবং তারও পরে রুদকের পুত্র ভীম বরেন্দ্র শাসন করেছেন। ১০৮২ খ্রীস্টাব্দে রামপাল ভীমকে পরাস্ত করলে বরেন্দ্রে কৈবর্তদের শাসনের অবসান ঘটে। আর ইতিমধ্যে দেশের অন্য অংশে হেমন্তসেনের শাসনের (১০৭০ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১০৯৬ খ্রীস্টাব্দ) কথা বলাই বাহুল্য।
কৈবর্ত বিদ্রোহ নামে যে ঐতিহাসিক ঘটনাটিকে বোঝানো হয় সেটা কৈবর্ত জনগোষ্ঠীর একক বিদ্রোহ নয়, বরং সমাজের নিম্নবর্গের মানুষদের সম্মিলিত বিদ্রোহ। রাজতন্ত্রের উৎখাত ও নিম্নবর্গের মানুষের শাসন প্রতিষ্ঠায় এটি একটি সফল বিপ্লবও বটে। এই বিপ্লব আমাদের গর্বের বিষয়। আজ থেকে প্রায় এক হাজার বছর আগে ঘটা এই ঘটনা এ’দেশে সাধারণ মানুষের শাসন প্রতিষ্ঠার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। কিন্তু রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে ঐতিহাসিকেরা আমাদের গর্বের এই বিষয়টিকে ঠিকভাবে চিহ্নিত করতে ও তাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
১২.
১১৯২ খ্রীস্টাব্দে দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে রাজপুতদের পরাজিত করে ঘোরীরা দিল্লী অধিকার করার পর ত্রয়োদশ শতাব্দীর শুরুর দিকটায় গোটা উপমহাদেশ একটু অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে। ঘোরীরা তখন ভারতের আরো পূর্ব দিকে মনোনিবেশ করার চেষ্টা করছে। পূর্ব দিকে বাংলায় ক্ষমতাসীন সেনরাজা লক্ষ্মণসেনের শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। সামন্তপ্রভুরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। বিক্রমপুরে বৈষ্ণব মতাবলম্বী দেব রাজবংশ (সমতটের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেব রাজবংশ নয়) গুছিয়ে বসার চেষ্টা করছে। এই সময়ে এমন একটি ঘটনা ঘটে যেটিকে অনেকে বাংলার ইতিহাসে তো বটেই, গোটা দুনিয়ার ইতিহাসে এক অনন্য ব্যাপার বলে বর্ণনা করেন। সেটি ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজীর বঙ্গ বিজয়।
আফগানিস্তানে মুহাম্মাদ ঘোরী আর দিল্লীতে কুতুব উদ্দীন আইবেকের কাছে ঠাঁই না পেয়ে ইখতিয়ার বদায়ুনের জঙ্গী গভর্নর মালিক হিযবার উদ্দীনের আশ্রয় নিলে তাঁর অধীনে জায়গীরদারের পদ লাভ করেন। ইখতিয়ার জায়গীরদারীতে থেমে থাকার লোক ছিলেন না। তাই স্বগোত্রীয় খিলজীদেরকে নিজের চারপাশে জড়ো করে আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে আক্রমণ আর লুটপাট চালাতে থাকেন। তার বড় সাফল্য আসে ১২০৩ খ্রীস্টাব্দে হঠাৎ করে বিহার আক্রমণ করে বিশাল ধনসম্পদ হস্তগত করার মাধ্যমে। ইখতিয়ার বিহার অভিযান থেকে প্রাপ্ত সম্পদ থেকে কুতুব উদ্দিন আইবেককে বিপুল পরিমান নজরানা দিয়ে তাঁর সমর্থন আদায় করেন। দিল্লীর সমর্থন ইখতিয়ারের সাহস আরো বৃদ্ধি করলে তিনি বাংলা আক্রমণ করতে মনস্থ করেন এবং ১২০৪ খ্রীস্টাব্দের শেষ ভাগে ঝাড়খণ্ডের মধ্যদিয়ে নদীয়ার দিকে অগ্রসর হন। নদীয়া তখন বাংলায় সেনরাজাদের রাজধানী। সেসময় সেনরাজা অতি বৃদ্ধ লক্ষ্মণসেন সামন্তপ্রভুদের অসহযোগিতা ও বিদ্রোহ এবং রাজ-অমাত্যদের চক্রান্তে বিপর্যস্ত ছিলেন। তাঁর পূর্বপুরুষেরা শৈব হলেও তিনি ছিলেন বৈষ্ণব। ফলে তিনি তাঁর নিকটজন এবং রাজ্যের ক্ষমতাধরদের কারো কারো বিরাগভাজন ছিলেন। এমন সময়ে অশ্বব্যবসায়ীদের ছদ্মবেশে ইখতিয়ার তার সতেরজন সহযোদ্ধাসহ নদীয়ার রাজপ্রাসাদে ঢুকে পড়েন ও প্রহরীদের পরাস্ত করেন। রাজপ্রাসাদ পতনের সংবাদ শুনে লক্ষ্মণসেন দক্ষিণবঙ্গে পলায়ন করেন। রাজার পলায়ন আর ইতিমধ্যে ইখতিয়ারের সহযোদ্ধাদের মূল দলের নদীয়াতে আগমন রাজধানীর পতন সহজ করে তোলে। লক্ষ্মণসেনের রাজধানীর পতন হলেও তাঁর কিন্তু পতন হয়নি। তিনি দক্ষিণবঙ্গে সরে গিয়ে সেখান থেকেই শাসনকার্য পরিচালনা করেন এবং ১২০৬ খ্রীস্টাব্দে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর বিশ্বরূপসেন আরো ঊনিশ বছর এবং কেশবসেন আরো পাঁচ বছর রাজত্ব করেন। অর্থাৎ ইখতিয়ারের হাতে নদীয়ার পতনের পর আরো ছাব্বিশ বছর সেন রাজ বংশ টিকে ছিল।
নদীয়া বিজয়ের পর ইখতিয়ার উত্তরবঙ্গ অভিমুখে যাত্রা করেন। লক্ষ্মণসেন দক্ষিণবঙ্গে চলে যাওয়ায় ইখতিয়ার মোটামুটি বিনা বাধায় গৌড়, দিনাজপুর ও রংপুর অধিকার করেন। গঙ্গা-পদ্মা নদীর দক্ষিণপাড় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত সেনদের অধিকারেই থেকে যায়। ইখতিয়ার বস্তুত সেনদের সাথে আর কোন যুদ্ধে লিপ্ত হননি এবং দক্ষিণবঙ্গ বা পূর্ববঙ্গ আক্রমণের কোন পরিকল্পনা গ্রহন করেননি। ১২০৬ খ্রীস্টাব্দে বাংলার ঐ অংশটুকুই ইখতিয়ারের অধিকারে থাকে যা তার ১৮০ বছর আগে কম্বোজ-পালদের অধিকারে ছিল। কম্বোজ-পালদের প্রসঙ্গ এখানে কেন টানলাম সেই ব্যাখ্যা পরে দেব। এরপর ইখতিয়ার হিমালয় পাড়ি দিয়ে তিব্বত জয়ের লক্ষ্যে দশ হাজার অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে বাগমতী নদীর দিকে অগ্রসর হন। পথে পার্বত্য জাতি মেচদের সাথে তার সংঘর্ষে মেচরা পরাস্ত হলে মেচ নেতা (আলী মেচ নামে অভিহিত) ইখতিয়ারকে পথ প্রদর্শনে সম্মত হন। ইখতিয়ার যাবার পথে বাগমতী সহজে অতিক্রম করতে পারলেও বাগমতীর অপর পাড়ে উত্তরের পাহাড়ী জাতিদের আক্রমণের মুখে পড়েন। শীতল তাপমাত্রা, গিরিসঙ্কুল পথ, অধিক সংখ্যায় পাহাড়ী নদীর উপস্থিতির সাথে দুর্ধর্ষ স্থানীয় জাতিদের প্রতিরোধ যুদ্ধে ইখতিয়ারের বাহিনী সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত হয়। ফিরতি পথে বাগমতীতে ডুবে ফুসফুসে পানি ঢুকে ইখতিয়ারের প্রাণ সংশয় দেখা দেয়। প্রায় শ’খানেক সহযোদ্ধা নিয়ে ইখতিয়ার দেবকোটে ফিরতে পারলেও ইতিমধ্যে সেখানে জাঁকিয়ে বসা আলী মর্দান খিলজীর হাতে ছুরিকাঘাতে নিহত হন। পরবর্তীতে ইখতিয়ারের সহযোগী মুহাম্মাদ শিরান খিলজী, আলী মর্দান খিলজী ও গিয়াস উদ্দীন ইওয়াজ শাহ্ বা হুসাম উদ্দীন ইওয়াজ খিলজীরা আরো একুশ বছর উত্তরবঙ্গে তাদের শাসন টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন। এই খিলজীরা যথেষ্ট স্বাধীনভাবে শাসন চালালেও প্রশাসনিকভাবে তারা দিল্লীর মামলুক শাসকদের প্রতিনিধি ছিলেন মাত্র। নিজেদের মধ্যকার অনিঃশেষ অন্তর্দ্বন্দ্ব ও দুঃশাসনের জন্য হুসাম উদ্দীন ইওয়াজ খিলজীর সাথে সাথেই বাংলায় তাদের আমল শেষ হয় এবং মামলুকরা বাংলায় সরাসরি নিজেদের শাসন কায়েম করেন। খিলজীদের পতনের তিন বছর পর সেনদের আমল শেষ হয়।
একটি কথা স্পষ্ট যে, সেনদের সাথে কোন উল্লেখযোগ্য কোন যুদ্ধ ছাড়াই ইখতিয়ার উত্তরবঙ্গ নিজের অধিকার আনেন। সেটির কৃতিত্ব যতোটা না ইখতিয়ারের ভাগে যায় তার চেয়ে বেশি দায় চাপে লক্ষণসেনের দুর্বল শাসন, সামন্তদের বিদ্রোহ এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসনের অসহযোগিতার ঘাড়ে। ইখতিয়ার বাংলার অন্য অংশে আক্রমণ করার বা দখল কোন চেষ্টা করেননি; সেন বা দেবদের সাথে কোন সংঘর্ষে যাননি। তার দখলীকৃত অংশেও নিজের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত করার বদলে তার সহযোগী লুটেরাদের মধ্যে ভাগ-জোক করে দিয়েছিলেন এবং নিজে তিব্বত অভিযানে রওয়ানা হন। স্থানীয় প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগে একটি দেশের এক-পঞ্চমাংশ জায়গায় কেউ লুটের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তিনি ঐ দেশটি জয় করেছেন এমনটা বলা যায় না। তাই ইখতিয়ারকে হরহামেশা ‘বঙ্গবিজয়ী’ বলে আখ্যা দেয়া বা আঠারো জন তুর্কী বাংলা বিজয় করেছে এমন দাবী করাটা সত্যের অপলাপ মাত্র। আর বহিরাগতদের দ্বারা নিজের দেশের একাংশ দখল করাকে নিজেদের গর্বের বিষয় ভাবাটা নিজেদের মানসিক দৈন্যের পরিচয়।
বর্তমানে যেসব গোষ্ঠী ইখতিয়ারকে ‘বঙ্গবিজয়ী’ আখ্যা দিতে চান তারা মূলত মুসলিম মৌলবাদী অথবা মুসলিম পুনর্জাগরণবাদী অথবা ইসলামী রাজনৈতিক দলের মতানুসারী। তাদের ব্যাপক প্রচারণার চাপে সাধারণ অনেকেও ইখতিয়ারকে ‘বঙ্গবিজয়ী’ বলেন বা তাকে বঙ্গবিজয়ী হিসাবে জানেন। ইখতিয়ার ও তার সঙ্গীরা কতটুকু ‘ইসলামী সেনা’ বা তাদের উত্তরবঙ্গ দখল কতোটা ইসলামের বিজয় সেটি একটি ভাবার বিষয়।
ইখতিয়ার ছিলেন তুর্কী বংশোদ্ভূত খালাজ্ গোত্রের মানুষ, জন্ম বর্তমান আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশের গরমশিরে। সুপ্রাচীন কাল থেকে হেলমন্দ ছিল হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। আফগানিস্তানে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারের পর হেলমন্দ বৌদ্ধপ্রধান এলাকায় পরিণত হয়। আব্বাসীয় যুগে পারস্যের পূর্ব সীমানা ছাড়িয়ে ইসলামের ব্যাপক প্রসার শুরু হলে আফগানিস্তানের হিন্দু ও বৌদ্ধদের একাংশ ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হন, পরে আস্তে আস্তে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হতে থাকেন। মধ্য এশিয়ার তুর্কীস্তানীদের আফগানিস্তানে বসতি স্থাপন, পশ্চিম থেকে ইসলামের আগমন ও স্থানীয় বৌদ্ধদের সাথে মিলে দ্বাদশ শতকে হেলমন্দ একটি মিশ্র সংস্কৃতির দেশে পরিণত হয়। দশম ও একাদশ শতকে উত্তরবঙ্গে রাজত্ব স্থাপনকারী কম্বোজ-পালরা মূলত ইরান থেকে আগত পহলভদের বংশধর। তাই ঐতিহাসিক ভাবেই আফগানিস্তানের বৌদ্ধদের সাথে তাদের যোগাযোগ ছিল। দিল্লীতে খিলজী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবার আগে পর্যন্ত তুর্কীস্তানী খিলজীরা উপমহাদেশে বিভিন্ন সাম্রাজ্যের অধীনে মার্সেনারি হিসাবে কাজ করতেন। সেই হিসাবে পাল যুগে বা তার পরবর্তীতে বাংলায়, বিশেষত সেনাবাহিনীতে খিলজীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। খিলজী বংশোদ্ভূত ইখতিয়ার যখন বদায়ুনে শক্তি অর্জন করছিলেন, তখন তিনি স্বাভাবিক ভাবেই নিজস্ব বাহিনী গঠনে খিলজীদের উপর নির্ভর করছিলেন এবং তাদের একত্রিত করে বাংলা অভিযানের আয়োজন করেন। ইখতিয়ারের মাধ্যমে সেনদের হাত থেকে কম্বোজ-পালদের হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাবার চেষ্টার পিছনে কোন কম্বোজ-পাল বা হেলমন্দী বৌদ্ধ মাস্টারমাইন্ড থাকার একটি সম্ভাবনা দেখা যায়। ইখতিয়ারের অধীন খিলজীরা সম্পূর্ণ বাংলা জয়ের চেষ্টার পরিবর্তে তিব্বতের বৌদ্ধদের সাথে মিলিত হবার যে দুরূহ চেষ্টা করেছিলেন সেটা বৌদ্ধদের বৃহত্তর পুনরেকত্রিকরণের একটি প্রয়াস হতে পারে। ইখতিয়ারের এমন আচরণ তার কর্মকাণ্ডের পেছনে কম্বোজ-পাল বা হেলমন্দী বৌদ্ধ মাস্টারমাইন্ড থাকার সম্ভাবনাটিকে আরো দৃঢ় ভিত্তি দেয়। খিলজীদের সহায়তায় তিব্বতের বৌদ্ধরা সামরিক শক্তিসহ বাংলায় আসতে পারলে বাংলায় আরো একটি বৌদ্ধ যুগ দেখতে পাওয়া বিচিত্র কিছু ছিল না। পাল রাজবংশের পতনের পর সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বৌদ্ধরা কঠোর হিন্দুত্ববাদী সেন শাসনের বিপরীতে বহিরাগত বৌদ্ধদের বা তাদের সহযোগীদের সাহায্যপ্রত্যাশী ছিলেন। সেজন্য লক্ষ্মণসেনের দুর্বলতার সুযোগে খিলজীরা অতর্কিতে নদীয়া আক্রমণ করলে স্থানীয় বৌদ্ধরা তাদের সহযোগিতা করেছেন। ফলে খিলজীদের পক্ষে উত্তরবঙ্গ দখল করতে কোন বেগ পেতে হয়নি। জেনে হোক বা না জেনে হোক কম্বোজ-পালদের রাজত্ব পুনরুদ্ধারের চেষ্টা বা সম্ভাব্য বৌদ্ধ পুনর্জাগরণের পক্ষে কাজ করা ইখতিয়ার ও তার সহযোগীদের তাই ‘ইসলামের সেনা’ ভাবার কোন কারণ নেই; তাদের উত্তরবঙ্গ অধিকারকেও ইসলামের বিজয় ভাবার অবকাশ নেই।
ঠ্যাঙনোটঃ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহযোগিতার জন্য সচল দুর্দান্তের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।
মন্তব্য
চমৎকার লিখেছেন পান্ডবদা।
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দারুণ। অনেক অনেক ধন্যবাদ। পরেরগুলো পড়তে চাই
facebook
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। পরেরগুলো যখন যেটা লেখা হবে তখন সেটা পড়তে পাবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দারুণ।
বৌদ্ধবিহারে ভিক্ষুদের পুড়িয়ে মারাটা কি এই ইখতিয়ারের কাজ ছিলো না ??
ইখতিয়ার সংক্রান্ত ইতিহাসে এমন কিছু আমার চোখে পড়েনি। তুমি তথ্যটা কোথায় পড়েছিলে সেটা মনে করে জানাও। তাহলে খুঁজে বের করা সহজ হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কোথায় পড়েছিলাম, মনে নাই- তবে উইকি মেরে এটা পেলাম
" In 1193, the Nalanda University was sacked by the Islamic fanatic Bakhtiyar Khilji, a Turk;[10] this event is seen by scholars as a late milestone in the decline of Buddhism in India. The Persian historian Minhaj-i-Siraj, in his chronicle the Tabaquat-I-Nasiri, reported that thousands of monks were burned alive and thousands beheaded as Khilji tried his best to uproot Buddhism and plant Islam by the sword;[11] the burning of the library continued for several months and "smoke from the burning manuscripts hung for days like a dark pall over the low hills."[12]"
আমি পড়েছিলাম এই লেখাটায়।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সুহান, স্পর্শ, নিবিড়ঃ ইখতিয়ারের নালন্দা ধ্বংসের বিষয়টি স্মরণে ছিলনা। এখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে নালন্দা ধ্বংসের বিষয়টি ইখতিয়ারের বৌদ্ধ-বিদ্বেষকে নির্দেশ করে কিনা। আমার উত্তর হচ্ছে - না, করে না। কারণ, ঐসময়ে বৌদ্ধরা হীনবল ছিলেন এবং তাঁরা কোনভাবেই ইখতিয়ারের জন্য থ্রেট ছিলেন না। সংখ্যাগরিষ্ঠ ও ক্ষমতাবান হিসাবে ইখতিয়ারের জন্য থ্রেট ছিলেন হিন্দুরা। তাহলে ইখতিয়ার নালন্দা ধ্বংস করলেন কেন? এর সম্ভাব্য উত্তর দুটো হতে পারে। এক, ইখতিয়ার হয়তো ভেবেছিলেন হিন্দুদের কবল থেকে বাঁচানোর জন্য বৌদ্ধরা নালন্দাতে বিপুল সম্পদ লুকিয়ে রেখেছেন; সুতরাং নালন্দা আক্রমণ করলে ঐসব সম্পদ তাদের হস্তগত হবে। লুটপাটের ব্যাপারে তার দলের ইতিহাস পুরনো। দুই, স্থানীয় পর্যায়ের কোন ঘটনা বা সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে নালন্দা আক্রমণ করা হয়েছিল।
ঐতিহাসিক হিসাবে মিনহাজ-ই-সিরাজ অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। তবু ইখতিয়ারের তলোয়ারের জোরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত তাঁর ব্যাখ্যাটি মানতে পারলাম না। প্রথমতঃ ইখতিয়ার বা তার সহযোগীরা ‘বুতশিকন’ বা মূর্তিধ্বংসকারী ছিলেন না। তারা যদি তাই হতেন তাহলে তাদের হাতে হিন্দু মন্দির ধ্বংস হবার আরো বহু নজির থাকতো। বাংলায় কররাণী বংশের ইতিহাস নিয়ে লেখার সুযোগ হলে বাংলার ইতিহাসের প্রকৃত ‘বুতশিকন’কে নিয়ে আলোচনা করার আশা রাখি। দ্বিতীয়তঃ ইখতিয়ার ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলা বিজয়ের চেষ্টা করেছিলেন এই ধারণাটিই ভুল। ইখতিয়ারের অতীত ইতিহাস তাকে ইসলামের সৈনিক হিসাবে চিহ্নিত করে না। বাংলায় ইখতিয়ারের বছরখানেকের শাসনও তার সাক্ষ্য দেয় না। ১২০৫ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১২২৭ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় খিলজী দুঃশাসনও ইসলাম প্রতিষ্ঠার সাক্ষ্য দেয় না। অবিরাম হামলা-আক্রমণ, লুটপাট, নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও ষড়যন্ত্র, মামলুকদের সহায়তায় একে অন্যকে উৎখাতের চেষ্টাতে আর যাই হোক ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
রেফারেন্স মনে পড়ছে না, বখতিয়ার নাকি জিজ্ঞেস করেছিলেন, নালন্দার গ্রন্থাগারে পবিত্র কোরান আছে কি না। নেই শুনে সমস্ত কুফরি কিতাব-ওয়ালা সেই লাইব্রেরি আগুন লাগিয়ে দেন।
বখতিয়ার যে কোনো মন্দির ধ্বংস বা লুটপাট করেননি সেটা কি নিশ্চিত?
আচ্ছা, বখতিয়ার না ইখতিয়ার?
উনি 'ইসলামের সেনানী' না হোন, অ্যাগ্রেসিভ, সশস্ত্র ইসলামি সেনাপতি যে ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই।
এবং একজন ধার্মিক ইসলামি সেনাধ্যক্ষ বৌদ্ধদের ally যদিবা হন, তিনি বাংলা জয় করলে তাদের কী লাভ - তিনি কি তাদের বাংলার ভাগ দিতেন?
আর বৌদ্ধ শাসনেই থাকা তিব্বতে উপরি অভিযান করাবার কম্বোজ-পাল বৌদ্ধদের কী মোটিভ? তার চেয়ে সেন শাসকদের জমি কেড়ে নিলে তো বৌদ্ধ শাসন বিস্তার করা গেল।
১। কুফরী কিতাবওয়ালা লাইব্রেরীর গল্পটা কখনো শুনিনি। সুতরাং তার সত্যাসত্যের কথা বলতে পারবো না।
২। ইখতিয়ার কোনো মন্দির ধ্বংস বা লুটপাট করেছেন কিনা সেটা নিশ্চিত নই। তবে কালা পাহাড়ের মতো mass level-এ কিছু করলে ইতিহাসে সেটা থাকতো।
৩। আরবী নামে ‘বিন’, ‘ইবনে’, ‘ইবনুল’ বা ‘বিনতে’ থাকলে তার আগের অংশ নিজের নাম, পরের অংশ পিতার নাম। সুতরাং তার নাম ‘ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ’ পিতার নাম ‘বখতিয়ার’ আর গোত্রের নাম ‘খিলজী’।
৪। ইখতিয়ার ‘সশস্ত্র মুসলিম সেনাপতি’ কথাটা ঠিক, ‘সশস্ত্র ইসলামী সেনাপতি’ কথাটা ভুল।
৫। যাদের লক্ষ্য থাকে নগদ নারায়ণ, তাদের কাছে যত বেশি আক্রমণ-হামলা-অভিযান - ততো বেশি লাভ। বাংলা জয়ের ও শাসনের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ থাকলে তাদের একুশ বছরের আমলে সেন বা দেবদের সাথে নূন্যতম একটা যুদ্ধ লাগা অবশ্যম্ভাবী ছিল। বাস্তবে কিন্তু তা হয়নি।
৬। তিব্বতে অভিযান মানে তিব্বত দখল করা না। তিব্বত পর্যন্ত পৌঁছাতে পথ যে বিপদসঙ্কুল তাতে হাজার দশেক অশ্বারোহী লাগতো। সেনদের হঠানোর ক্ষমতা কম্বোজ-পালদের থাকলে তো তারা খিলজীদের সহযোগীতা নিতো না, তিব্বতের আশায়ও থাকতো না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মিনহাজের লেখা অনুসারে খিলজী বৌদ্ধদের হিন্দুদের থেকে আলাদা করতে পারেননি। উনি তাদের হিন্দু ভেবেই আক্রমণ চালিয়েছিলেন। আমি বইটার ইংরেজী অনুবাদ পড়েছি - আপনার সাথে শেয়ার করতে পারি। এখানে পৃষ্ঠা ৫৪২ থেকে পড়তে পারেন।
"The greater number of the inhabitants of that place (Bihar/Nalanda) were Brahmans, and the whole of those Brahmans had their heads shaven; and they were all slain. There were a great number of books there; and, when all these books came under the observation of the Musalmans, they summoned a number of hindus that they might give them information respecting the import of those books; but the whole of the Hindus had been killed. On becoming acquainted, it was found that the whole of that fortress and the city was a college and in the Hindui tongue, they call a college Bihar. "
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সুহানের প্রশ্নটা আমারো
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ইতিহাস নিয়ে জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে এই পোস্টের রস পুরোপুরি পেলাম না। তবে আপনার বিশ্লেষণটা ভাল লেগেছে। নতুন করে এই বিষয়ে পড়াশোনা করার উৎসাহ পাচ্ছি।
সত্যেন সেনের কৈবর্ত বিদ্রোহ পড়েছিলাম অনেক দিন আগে। চমৎকার লেগেছিল।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
এই পোস্ট পড়ার বা বোঝার জন্য ইতিহাসের বিস্তারিত জ্ঞান দরকার নেই। ইতিহাসের কিছু ঘটনার কার্যকারণ বিশ্লেষণ, সচরাচর চোখ এড়িয়ে যায় এমন বিষয়গুলো আবার খতিয়ে দেখার জন্য এই প্রচেষ্টা।
সত্যেন সেনের 'পাপের সন্তান', 'পুরুষমেধ' না পড়ে থাকলে জোগাড় করে পড়ে ফেলুন। আমরা এই মানুষটিকে তাঁর প্রাপ্য মর্যাদাটি দেইনি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি সবচে কম আগ্রহ পাই ইতিহাস আর ভূগোলে। এই দুটো বিষয় আমি খেতে পারিনা!
আপনি লিখেছেন বলে পড়লাম। পড়ে বুঝলাম, পড়ার দরকার ছিল।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তুমি যে বিষয়ে কাজ করো তাতে তোমার তো ইতিহাস-ভূগোলে আগ্রহ কম থাকলে চলবে না। ঐতিহাসিকদের অণুজীববিজ্ঞানের ব্যাপারে আরো একটু বেশি জ্ঞান থাকলে ইতিহাসের অনেক বড় বড় ঘটনাকে যথার্থ ভাবে বিশ্লেষণ করতে পারতেন। একইভাবে তুমি ইতিহাসের পাঠ নিলে সেখান থেকে কী কী শিক্ষা নিয়ে তোমার ফিল্ডে সতর্ক হওয়া যাবে সেটা বুঝতে পারবে। ডায়রিয়া, আমাশয়ের মতো রোগের মহামারীর কবলে পড়ে ইতিহাসের অনেক নামজাদা সেনাপতি সদলবলে পিছু হটেছেন বা হেরে ভুত হয়ে গেছেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সেটা হয়তো ঠিক বলেছেন, কিন্তু আমি দীর্ঘদিন পরে আবিষ্কার করেছি আমি এই দুটো বিষয়ে একেবারে অন্ধ! আপনি কী বিশ্বাস করবেন, আমার দীর্ঘকাল ধারনা ছিল সিলেট আর রাজশাহী পাশাপাশি! প্রথমবার (খুব বেশিদিন আগে নয়) সেটা আবিষ্কার করে একেবারে বোকা হযে গেলাম! ইতিহাসের ব্যপারটাও সেরকম! আমি স্রেফ অন্ধ এই দুটো বিষয়ে!
আমি গণিত প্রতিবন্ধীও! তবে সেটা আমি জানি দীর্ঘদিন থেকে। আমি স্পষ্ট জানি কখন থেকে কীভাবে কেন গণিত আমার সঙ্গে ছেড়েছে! অন্যদিকে ভূগোল আর ইতিহাস বিষয়টা আমি আচমকা আবিষ্কার করেছি! ব্যপারটা এমন যেন, আমি হঠাৎ জেনেছি পৃথিবীতে এরকম কোন বিষয় আছে! ব্যপারটা লজ্জার, এবং সেজন্য আমি লজ্জিতও!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমৎকার লেখা পান্ডব'দা। কম্বোজ-পালদের ব্যাপারটা আগ্রহ জাগাচ্ছে তাই দুইটা প্রশ্ন করলাম। কম্বোজ পালরা কী ধর্মাবলম্বী ছিল? এই কম্বোজ পালরা কি ইরান থেকে আফগানস্থানে বসতি স্থাপনের পর বাংলায় এসেছিল?
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
কম্বোজ-পালেরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। উপমহাদেশে কম্বোজদের আনাগোনা হাজার দেড়েক বছর ধরে চলেছিল। সুতরাং তারা প্রথমে আফগানিস্থানে বসতি স্থাপন করে পরে বাংলায় এসেছিল এমনটা জোর দিয়ে বলা যায় না। তাদের বিভিন্ন গোত্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সব কারণে উপমহাদেশে মাইগ্রেট করেছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আছি আছি আছি। চমৎকার, আরো পড়তে চাই।
আছি আছি আছি। চমৎকার, আরো পড়তে চাই।
আছি আছি আছি। চমৎকার হচ্ছে পান্ডবদা, আরো পড়তে চাই।
উপরেরোই আকাম কেমনে করলাম বুঝতেছি না
ফৌজদার, সামহাল্কে! যদি আরো লেখা হয় তাহলে আরো পড়তে পারবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ইতিহাস বই(পাঠ্য) পড়ার সময়ে এরকম কোন প্রশ্নই মনে আসেনি। সত্যি ভালো লাগলো পাণ্ডবদা, এরকম আরো কিছু পড়তে ইচ্ছে করবে প্রায়ই।
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
দোষটা কিছুটা পাঠ্যপুস্তক রচয়িতাদের (তাঁরা বইগুলো ইন্টারেস্টিং করে লেখেন না), কিছুটা শিক্ষকদের (তাঁরা সাধারণত এই বিষয়টা ইন্টারেস্টিং করে পড়ান না), বাকীটা শিক্ষার্থীদের (তাদের অনেকেই ভাবেন - এসব পড়ে কী হবে)।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ইতিহাস নিয়ে ইদানীং আগ্রহ পাই। পাণ্ডব'দা, আপনে লিখলে না পড়ে থাকা যায় না।
ইখতিয়ার সংক্রান্ত গ্যাঞ্জাম মনে হয় হিম্ভায়ের কোন পোস্টে হইছিল যতদূর মনে পড়ে তখন একটা বই পড়ছিলাম। নাম ভুলে গেছি।
অলস সময়
হিমুর কোন্ পোস্ট? মনে পড়লে জানিও। ইতিহাস ইন্টারেস্টিং বিষয়। পড়ার চেষ্টা করে দেখতে পারো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অসম্পূর্ণ ইতিহাস পড়ানো হয় আমাদের। যতটুকু জানা ছিল/পড়েছিলাম তার থেকেও অনেক বেশি জানলাম। অনেক ধন্যবাদ পাণ্ডবদা। সিরিজ নিয়মিত চলুক....
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ। এই বিষয়ে আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। এতে আমাদের সবারই কিছু না কিছু ভূমিকা আছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সেটা ঠিক। নিজের তাগিদে কেন জানি নি, সেটা আমার ব্যর্থতা।
_____________________
Give Her Freedom!
১.
কৈবর্ত বিদ্রোহ নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ। সম্ভবত এটিই এদেশের মাটিতে রাজরাজড়াদের বিরূদ্ধে সাধারণ মানুষের প্রথম স্বতঃস্ফুর্ত বিপ্লব ও তাদের হটিয়ে ক্ষমতালাভের প্রথম উদাহরণ। অন্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশ হলে হয়তো এ ঘটনা ব্যাপক প্রচার পেতো। কিন্তু আমরা ইতিহাসমূর্খ জাতি। যে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের ইতিহাস বলতে বোঝে শুধু শেখ মুজিবের ইতিহাস, সেখানে কৈবর্ত বিদ্রোহ তো অনেক দূরের ব্যাপার স্যাপার।
২.
বঙ্গবিজয় অসম্পূর্ণ রেখে ইখতিয়ার খলজির তিব্বত অভিযানের কারণ হিসেবে অনেকে বলেন বাংলা-কামরূপ-তিব্বত রুটে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করার অভিপ্রায়ে অথবা তিব্বত হয়ে তুর্কমেনিস্তান যাবার শর্টকাট রাস্তা আবিস্কারের জন্য ইত্যাদি নানা অভিমত রয়েছে। আপনার দেয়া তথ্যটাও ইন্টারেস্টিং। তবে ইতিহাস থেকে জানা যায় ইখতিয়ার তার রাজ্যে দিল্লীর মুসলিম শাসকদের মতো মসজিদে নিজের নামে খোতবা দেয়ার প্রচলন করেছিলেন এবং অনেক মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকা নির্মাণ করেছিলেন। সেনদের দ্বারা অত্যাচারিত বৌদ্ধরা তার বিজয়ে অবশ্যই সাহায্য করেছিলো। কিন্তু যিনি মসজিদ বানিয়ে সেখানে নিজ নামে খোতবার প্রচলন করেন তার তিব্বত অভিযানের উদ্দেশ্য বৌদ্ধ পুনর্জাগরণ এটা বোধহয় একটু কষ্টকল্পনা হয়ে যায়।
১। ইতিহাস নিয়ে লেখার ক্ষেত্রে নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গী থাকতে হয়। এর বাইরে আরো কিছু সুনির্দিষ্ট সমস্যা আছে ইব্নে খালদুন যেগুলোকে চিহ্নিত করেছিলেন। তাঁর ‘আল মুকাদ্দিমা’ রচনার ইতিহাসে সেগুলো দেখতে পাবে।
২। বাংলা-কামরূপ-তিব্বত রুটে বাণিজ্য পরিচালনার ধারণাটি ভিত্তিহীন। সেটা সত্য হলে ইখতিয়ারকে কোচ ও কামরূপের শক্তিশালী দুই রাজ্যের সাথে যুদ্ধে যেতে হতো। কিন্তু তিনি তো সেটার উলটো রাস্তায় বাগমতীর দিকে রওয়ানা হয়েছিলেন। আর ইখতিয়ারের জীবনে বাণিজ্য ব্যাপারটি তো সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। বাংলায় ইখতিয়ারের শাসনামল বড় জোর এক বছরের। তার এই সময়টার বেশির ভাগ গেছে তিব্বত অভিযানের জন্য দশ হাজার ঘোড়সওয়ারের বাহিনী এবং অভিযানের রসদ যোগাতে। সুতরাং সেসময়ে অনেক মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকাহ্ নির্মাণের দাবি অতিরঞ্জিত। পরবর্তী একুশ বছরের খিলজী শাসনামলে কিছু নির্মাণ হওয়া সম্ভব। আর মসজিদে খোত্বা চালুর জন্য অত্যুৎসাহী মাওলানারাই যথেষ্ট। ইখতিয়ার উত্তরবঙ্গ অধিকারের পর পরই সেটাকে তিন ভাগ করে তার তিন প্রধান সহযোগীর অধীনে দিয়ে দিয়েছিলেন। এটার উদ্দেশ্য প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ নয়, বরং অভিযানের সহযোগীদের কাছে জয়কৃত রাজ্য ভাগ করে দিতে বাধ্য হওয়া। এর প্রমাণ মেলে পরবর্তীতে তার সহযোগীদের অব্যাহত ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতায়।
আমি একথা দাবী করিনি যে, ইখতিয়ার বৌদ্ধ পুনর্জাগরণের চেষ্টা করেছিলেন। আমার দাবী, তাঁর কার্যক্রমের পেছনে কোন কম্বোজ বা বৌদ্ধ মাস্টারমাইন্ড থাকার সম্ভাবনা। ইখতিয়ারের পূর্ব বা দক্ষিণ বাংলা আক্রমণ না করার বা বিপদসঙ্কুল তিব্বত অভিযানের পেছনে অন্য কোন যৌক্তিক কার্যকারণ আছে কি?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ইতিহাস ভাষা খুঁজে পাক -
ইতিহাস নিরব নয়। ইতিহাসের ফলগুলো বর্তমানে দৃশ্যমান।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অণুপোষ্টগুচ্ছ ২ তে মন্তব্য করেছিলাম, আপনার পোষ্ট মনেই ভিন্নদিক থেকে আলো ফেলে ফেলে নতুন অভিজ্ঞান সেঁচে তোলার প্রয়াস। কি করে যে সেই মন্তব্য মুছে গেল বোধগম্য হল না। যাহোক, অণুপোষ্টগুচ্ছ ৩ পড়ে আবার সেই মন্তব্যে স্থির প্রত্যয় হই।
১১
কালিন্দী নদীর তীরে গড়ে উঠা ডমরনগরের পতনের ছবিটিও মনে ঠাই নিল। চণ্ডকের বিশ্বাসঘাতকতার কথাটিও মনে পড়ে গেল সেই সাথে।
১২
বখতিয়ারের ঘোড়া আজও তো ছুটছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
টেকনিক্যাল কারণে মন্তব্য হারিয়ে যেতেই পারে। মনে পড়লে আবার লিখে দেবেন নাহয়।
১১। ওসবের কিছু সাহিত্যিকের কল্পনা, কিছু সত্যিকে একটু অন্যভাবে দেখা।
১২। বখতিয়ারের ঘোড়া ছুটছেনা। ওটা আল মাহমুদের কল্পনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১৭ জন অশ্বারোহী নিয়ে বাংলা দখলের মিথ সম্পর্কে প্রথম পড়েছিলাম বঙ্কিমের লেখায়। তবে এতটা বিস্তারিত নয়।
বঙ্কিম বিষয়টি ব্যাখ্যা করেননি - 'কুলাঙ্গার' গালি দিয়ে কথা শেষ করেছেন। তাই বঙ্কিমকে মিস্কোট করা যায়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মন্তব্য হারিয়ে গ্যালো!
বখতিয়ারের বিজয়কে advent of islam দেখানোর উদ্দেশ্য হলো সুফীদের অবদানকে অস্বীকার করা। বিরোধটা অর্থোডক্সি ও লিবারেলিজমের বোধ হয়। ওতে অহমে সুরসুরিও লাগে বোধ হয়, ১৭ জন নিয়ে একটা দেশ দখল, আহা। তবে বখতিয়ার, আর দশটা মার্সেনারীর মতোই ভাগ্যান্বেষী, তার মাইগ্র্যান্ট স্পিরিটটাকে ক্রেডিট দেয়া যেতে পারে।
অন্য বিষয়ের অবতারণা করি। নানা কারণেই ইতিহাসের নানা বিষয় ফ্যাক্ট থেকে মিথ হয়ে ওঠে। ইউরোপের দেশগুলোর মতো জাতিগঠনের চড়াইটা আমাদের দীর্ঘসময় ধরে পার হতে হয়নি বলে উপনিবেশোত্তর সদ্য জাতিরাষ্ট্রে এসব মিথ অনেক সময় জাতির ধারণাকে সংহত করে, বা জাতির আত্মপরিচয়কে সংগঠিত করে বলে অনেকে মনে করেন। সে হিসেবে ইতিহাসের মিথগুলোর একটা ভূমিকা আছে নিজের আইডেন্টিটি নতুন করে আবিষ্কার করার ব্যাপারে।
লেখাতে সে কার্যকরণ থাকলে ইতিহাসের সামষ্টিক রেলেভেন্স আরো বাড়বে এবং এই কষ্ট করার জন্য দাবী জানিয়ে গেলাম।
খাসা হচ্ছে সিরিজ, আরো অপ্রচলিত উতস ব্যবহার করারও দাবী রইলো।
মোটামুটি অধিকাংশ ব্যাপারে আপনার সাথে একমত।
বাঙালী জাতি তো নতুন গড়ে ওঠা কিছু নয়, সুতরাং জাতির ধারণাকে এখানে সুসংগঠিত করার জন্য বানানো কিছুর দরকার নেই। কিন্তু 'ইসলামী বাঙালী' জাতির ধারণাটি নতুন। একে সংহত করার জন্য বানানো কিছু দরকার হতে পারে।
ঐতিহাসিক ঘটনার কার্যকারণ খুঁজতে গিয়েই তো এই সিরিজের সূচনা। সামষ্টিক রেলেভেন্স বাড়ানোর জন্য আলোচনা যতটুকু বাড়ানো দরকার সে চেষ্টা করবো।
প্রচলিত উৎসেও দেখবেন কিছু কিছু জায়গায় ফাঁক থেকে যায়। সেটা নিয়ে খোঁজ-খবর করতে গেলেই দেখবেন অনেক কিছুর ব্যাখ্যা পালটে যাচ্ছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সিরিজে রেখে গেলাম।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন