তীর্থের কাক ১২

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: শনি, ০৫/১১/২০১১ - ৬:০৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তীর্থের কাক ১ তীর্থের কাক ২ তীর্থের কাক ৩ তীর্থের কাক ৪ তীর্থের কাক ৫ তীর্থেথের কাক৬+৭ তীর্থের কাক ৮ তীর্থের কাক ৯ তীর্থের কাক ১০ তীর্থের কাক ১১ ক্ষোভ-ক্লান্তি-ক্ষুধায় ঘুমোতে বেশ সময় লেগেছিল। গান আর খোস-গল্পের কিছুই বুঝতে পারিনি বলে একটু বিরক্তও হচ্ছিলাম। আমার মতো অচল দেশীর সাথে চলতে গিয়ে পদে পদে ঠকে যাওয়ার থেকে চালাক-চতুর পাকিস্তানীদের সাথে চুলো করলে আখেরে ভালতো হবেই। খান এতো ভাল উর্দু কোথায় শিখল ভেবে অবাক হই। ওদের সাথে এমন ভাবে মিশে গেল ও যেন ওদেরই দেশের বা গাঁয়ের ছেলে। চারজন মোটে মানুষ। তাদের সাথেই মিশতে না পেরে আক্ষেপও হচ্ছিল বৈকী। পিতার মৃত্যুর পর জোড় করে চুলা আলাদা করে দেয়া ছোট ভাইটির মতো সংসার ধর্মে অনভিজ্ঞ আমি শোকে-দুঃখে এক সময় ঘুমুয়ে পড়েছি। এখন উঠে দেখি ওদের নাস্তার আয়োজন শেষ। সবাই টেবিলে বসে গেছে। আন্দাজ করে দরজাটা খুলে দেখি সেটাই টয়লেট। দাঁতটা মেজে জ্যাকেটটা গায়ে জরিয়ে বের হয়ে গেলাম। কাল রাতের অসমাপ্ত ফোনটা করব এখন। বাইরে ঝলমলে রোদ। ঠাণ্ডা বাতাসটা নেই। বেশ আরাম দায়ক আবহাওয়া। আমাদের বাড়িটা টিলার উপড়ে। বাড়ির সামনের রাস্তাটা ধীরে ধীরে নীচে নেমে মিশেছে শহরের সমতলে। বাঁয়ে নাম না জানা গাছের বন। ডানে সমতল ভূমিতে ঘাস খাওয়ার গরুর মাথায় নৃত্য করছে শালিকের মতো ছোট ছোট পাখি। ফুটবল খেলার মাঠের মতো বড় একটা জায়গা কাঠের বেড়া দিয়ে ঘেরা। তার ভেতর ঘাস খায় কয়েকটা ঘোড়া। বিস্তীর্ণ মাঠের উপড় হাল্কা সবুজ সামিয়ানা চলে গেছে দূর বনভূমির গাড়হ সবুজ গাছের ধূসর গোড়ায়। কিছু কিছু মাঠ এখনো কালো। ট্রাক্টর চলছে ধীরে ধীরে কিছু জমিতে। সমতল থেকে বায়েঁ কাল রাতে জেখানে বাতি জ্বলছিল সেটা গোরস্থান। সারি সারি সব কবরের পাদ দেশে লাল মোমবাতি গুলো কে যেন নিভিয়ে দিয়েছে। লোকজনের ভীড় তেমন নেই। এমন কী এই রেলষ্টেশনটাও একদম ফাঁকা। আমি ছাড়া দ্বিতীয় কোন প্রাণী নেই। কয়েন ফেলে স্যারের নাম্বার ঘুড়ালাম। বিস্তারিত শুনে তিনি বললেন; কাল আমরা যেখানে বাস থেকে নেমেছি সেই আউগসবুর্গ শহরেই কিছু বাঙ্গালী আছে। আর মিউনিখের লোকেরা প্রতি রাতে কমপক্ষে একটা ঈগল শীকার করে ঘরে ফেরে। কথাটার মানে ঠিক বুঝতে পারলাম না! তিনি জানালেন যে; এক’শ মার্কের নোটে একটা ঈগল পাখার ছবি আছে। ফুল বিক্রি করে প্রতি রাতে এক’শ মার্ক আয় হলে বলে যে; সে রাতে সে বিক্রেতা একটা ঈগল শীকার করেছে। জানি না কাজটা কত সহজ বা কঠিন। বা ঠিক কী রতে হয়। কিন্তু লোভ হল বড়। প্রতি রাতে এক’শ মার্ক! কিন্তু সেখানে কীভাবে যাব! তার কোন কূল কীনারা না পেয়ে আপাতত আউগসবুর্গেই গন্তব্য। কাঁচের আয়নায় ট্রেনের টাইম-টেবল ঝুলছে। এই স্টেশনে কখন ট্রেন আসবে এবং আউগবুর্গে কখন যাবে তাও লেখা আছে। নোয়াখালি এক্সপ্রেসের যাত্রীরা কমলাপুর রেওলষ্টেশনে গিয়ে জানতে চাইতো নউগ্যার গাড়ি, কউগ্যায় যাইব। মানে ন’নার ট্রেন ক’টায় ছাড়বে? এখানে সে রকম কোন ব্যাবস্থা আছে কী না। সময়ে বোঝা যাবে। টাইম টেবলের এক পাশে ছোট একটা মেশিন লাগানো। দুই সাড়ি বোতামের পাশে অনেক গন্তব্যের নাম লেখা। আউগসবুর্গের পাশের বোতামে চাপতেই দেখলাম ছয় মার্ক। ছয় মার্কের কয়েন ফেলার ছিদ্রটা দেখানো তীর চিন্হ দিয়ে। পয়সা ফেলার কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই বের হল টিকেট। বাহ, কী নির্ঞ্ঝাট ব্যাবস্থা! কিন্তু এখন ক’টা বাজে সেটা জানতে পারলেই বুঝব, আর কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে, যদি নির্ধারিত সময়েই ট্রেন আসে। সময় মাপার যন্ত্রটা বিশেষ করে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণেই কেনা হয় নি। ইন্টারমেডিয়েট পরিক্ষার মাস ছয়েক আগে শপাঁচেক টাকা একসাথে করতে পেরেছিলাম। ঘড়ি কেনাটাই উপলক্ষ। কিন্তু ভেবে দেখলাম ঘড়িটা এত জরুরী কিছু নয়। লিখতে পড়তে যখন শিখেছি তখন কিছু বইপত্র কিনে বরং জ্ঞেনের মহা সমুদ্রে একটু অবগাহন করে নেই। সে যাত্রায় জ্ঞন সমুদ্রে ডুবে মরার হাত থেকে ভাগ্যগুনে বেঁচে গেছি। মাধ্যমিক পাশ করলাম ঠিকই কিন্তু ঘড়ি আর কেনা হল না। বেবী টেক্সিতে করে বিমান বন্দরে আসার টাকাই যার গাঁটে নেই, তার আবার ঘড়ি! কিন্তু ইউরোপ সময়ে চলে। এখানে ঘড়ি ছাড়া কোন গত্যান্তর নেই। বেলা দেখে সময় আন্দাজ করা আবহাওয়ার কল্যানে অসম্ভব। ঘড়ি হাতে কাউকে দেখলে সময়টা জিজ্ঞেস করব। তাই এদিক ওদিক তাকাচ্ছি কোন মানব সন্তানের আগমনের আশায়। এর মধ্যে ঠিক নাকের ডগায় দেখলাম বিশাল সাইজের সাদা চাকায় ঘন্টার দণ্ডটি পেছনে ফেলে ঘুড়ে চলছে মিনিটের কাটাটি। ট্রেন আসতে সাকুল্যে সতর মিনিট। দু’একজন যাত্রী জড়ো হয়েছে প্লাটফর্মে। ঢং ঢং শব্দে বিশাল আওয়াজের উৎস খুজতে দেখলাম মসজিদের মিনারার মতো একটা উঁচু ঘরের ক্রস চিন্হের নীচের দেয়ালে বিরাটা একটা ঘড়ি। বুঝলাম হাত ঘড়ি না থাকলেও সময় মতো চলা এখানে কোন সমস্যা না। সমস্যা হলো আউগসবুর্গ এসে। স্যারের মতে শহরটা খুব বড় নয়। এবং ভাল আবহাওয়া হলে রাস্তাঘাটেই কোন দেশীর সন্ধান মেলা কঠিন কিছু নয়। গোগিংগেন রাস্তাটার নাম মনে রাখতে হচ্ছে। পড়ার সাথে লেখাটাও শিখেছি। কিন্তু সেটা কালে-ভাদ্রে কাজে লাগে বলে কাগজ-কলম কখনো সাথে রাখি না। তাই বারবার বিড়বিড় করে বলে মুখস্ত করে ফেলেছি প্রায় রাস্তার নামটা। ১৯৪৫ সালের সালের ১৪ই আগষ্ট পাকিস্তান, আর ১৫ আগষ্ট ভারত স্বাধীন করে ইংরেজরা অশেষ নেকী হাসিল করে ফেরত এসেছে ইউরুপে। ১৯ বাদ দিয়ে এক কমালেই পাওয়া যাবে বাড়ির নাম্বার। এভাবেই মনে রাখাছি ঠিকানা। ট্রেনষ্টেশন ছেড়ে আধা মাইল এগিয়ে এই চত্তরটাতে এসে পড়লাম আর এক ফাপড়ে। গাড়ি, ট্রাম একই রাস্তায়। পীচের উপড় লোহার পাত বসানো। ট্রামের চাকার সাথে লোহার পাতের ঘর্ষণের শব্দে গা শিড়শিড় করে। চাকার নীচে পা পড়লে আর রক্ষা নেই। এর মধ্যে আবার লোকজন রাস্তা পার হচ্ছে! প্রায় দুপুর হয়ে গেছে। সকাল থেকে বা কাল বিকালে ম্যাগডোনাস খাওয়ার পরে আর কিছুই পড়েনি পেটে। সাট-আট মার্ক চলে যায় একবার খেলেই। ভাবছিলাম এর চেয়ে সস্তায় আর কোথাও কিছু পাও যায় কী না খুঁজে দেখব। কিন্তু এই রাস্তা পার হওয়ার সাহস হচ্ছে না। শুনেছি কোলকাতায় ট্রাম আছে। জানিনা কী ভাবে সেখানে ট্রাম চলে। কিন্তু জীবনে প্রথম ট্রাম দেখে এতো ভয় পেলাম কেন! হতে পারে রিক্সার চাকা পায়ে উপড় দিয়ে চলে গেলে তেমন বিপদের সম্ভবনা নেই। তা ঘটেছেও অনেক বার। তবে এই ট্রামের চিপায় পড়লে অন্তত পা আর ফেরৎ পাওয়ার সম্ভবনা নেই। ভয়ের কারণ বোধহয় সেটাই। ট্রাম থামছে লোকের উঠা নামা, মিছিলের মতো রাস্তা পারে হওয়া দেখে মনেই হয় না যে ওরা ব্যাপারটা এতো ভয়ঙ্কর ভাবে। কী স্বাচ্ছন্দে চলতি ট্রামের সামনে দিয়েই চলে যাচ্ছে অনেকে। কিন্তু আমার সাহসে কুলায় না। পেছনে একটা পার্কের মতো জায়গা। চার দিক থেকে বাস-ট্রাম-গাড়ি চলার রাস্তায় ঘেরা অনেক বড় বড় গাছের নীচে বেশ সিমসাম গোল এক চিলতে বাগান। নাম না জানা ফুল ফুটেছে সে বাগানে। একটু পর পর বেঞ্চি পাতা। সেদিকে ফিরতেই দেখি সব সাদা মানুষের ভীড়ে কয়েজন আমাদের বর্ণের মানুষ। ধীরে ধীরে ঐ দিকেই এগুচ্ছি। যত কাছে যাই কথাগুলো তত পরিচিত লাগে! নোয়াখালীর টান মনে হচ্ছে! আশা-নিরাশায় দুলে উঠে বুক। যদি খান সাহেবের মতো বাঙ্গালী হয়! কাছে যেতেই কে যেন বলে উঠল; এইগু বাঙ্গালী ন, তুর্কী। এতক্ষণে পৌঁছে গেছি প্রায় সামনা সামনি। কইত্তন আইসেন? বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ত জবাব আমার। সব বৃতান্ত শুনে সবাই ধীরে ধীরে হাঁটা ধরল। মাসুদ নামের একজন চাঁদপুরের। আমাদের গা ঘেসে মতলব থানার ছেলে। চার-পাঁচজনের ভেতর মাসুদের সাথেই ঘনিষ্টতা হল একটু বেশী ভৌগোলিক নৈকট্যের কারণে। ঘটনাক্রমে দু’জনেই একই বছরে বি.এ পাস করেছি জগা বাবুর (অধুনা জগন্নথ বিশ্ববিদ্যালয়) পাঠশালা থেকে। লঞ্চে করে নারয়ণগঞ্জ পৌঁছে মতলবের লোকজন আর গাড়ীতে উঠে না। তোলারামেই ভর্তি হয়। মাসুদ সদরঘাট পর্যন্ত এসেছে। তাকে অভিনন্দন জানাতেই হয়। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা এই সব রসিকতায় পৌঁছে গেলাম দেখে জসিম বলল; দেশী এক্কান পাই আঙ্গরে ভুলে যাইয়ে না, মাসুদ ভাই। বেশ আন্তরিকতা নিয়ে অভিযোগ করলো জসিম। ভাই আমরা সবাই তো একই দেশের মানুষ। মাসুদ একাই আমার দেশী! আর আপনারা বিদেশী! সবার মাঝে একটা একতার আমেজ তৈরী করার চেষ্টা করি আমি। ট্রাম-বাস-গাড়ি চলার পথ পেড়িয়ে একটা পার্কে ঢুকলাম। ওদের পেছনে হাঁটতে হাঁটতে কখন সেই ভয়ঙ্কর ট্রামলাইন পার হলাম বুঝতেই পারি নি। আপাতত যতটুকু দেখতে পাচ্ছি তাতে প্রায় রমনা পার্কের মতো বড় মনে হচ্ছে। পার্কের ভেতর দিয়ে একটু এগিয়েই রাস্তা পার হয়ে অন্যপাশে লাগার। “লগার” শব্দদটার মানে ঠিক জানি না। তাই বুঝতে না পেরে অন্যদের অনুসরণ করছি। সব ঘড়-বাড়ি বেশ ঝকঝকে, তকতকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল যেমন একমাত্র লাল দালান তেমনই একটা লাল দালানের ছোট্ট ফটকের দিকে এগুচ্ছি। লক্ষ্য করলাম এখানে আসা অবদি এই রকম লাল ইটের দালান আর দেখিনি। বাইরেটা দেখে আন্দাজ করা যায় যে; এই পুরানো ভবনের কোন যত্ন-আত্মি হয় নি অনেক বছর। সদর দরজা খোলার সাথে একটা বিশ্রী গন্ধ টের পেলাম। গন্ধটা খুব নতুন। বাইরের চেয়ে ভেতরের অবস্থা আরো করুণ। কাঠের সিঁড়ি ভেঙ্গে যতই উপড়ে উঠছি গন্ধটাও তত বাড়ছে। তিন তলায় উঠে সবার সাথে এগুচ্ছি আর অবাক হয়ে দেখছি চারপাশটা। বাঁয়ে টয়েট ডানে রান্না ঘর। তারপর সারি সারি ঘরে নম্বর লেখা। ২২৪ নম্বর ঘরে এসে দরজায় চাবি ঢুকাল মাসুদ। তার পাশেই ২২৩ নম্বর ঘরে এক ভদ্রলোকের হেফাজতে আমাকে ছেড়ে ওরা গেল রান্না করতে। গায়ে তেল মাখছেন ভদ্রলোক। শ্যামলা রং-এর পেটানো শরীর। মাথায় টাক। দেখলাম সবাই খুব সমীহ করে লোকটাকে। চদ্রি ভাই বলে ডাকে সবাই। আমার কাছে বংশ পরিচয়টা একটা বিব্রতকর ব্যাপার। আমাদের বংশের নাম নাকী জমিদারের লাঠিয়াল হিসাবে আগেই ছিল। তারপর ইংরেজদের গোলামী করে তা আবার পোক্ত করেছেন আমাদের পূর্ব পুরুষ। তা নিয়ে লজ্জার কারণ আছে কিন্তু গর্বের কিছু দেখি না। আর ব্যাপারটা শহরে এসে একেবারে ভুলেই গেছি। সবাই নাম ধরে ডাকে। গ্রামে এখনো কে কোন বাড়ীর ছেলে সেটা পরিচয়ের একটা অংশ। আর এই আধুনিক ইউরুপে এখনো বংশ পরিচয় দিয়ে মানুষকে ডাকা হয়। সেটা খুব ফরমাল অপরিচিত হলে ভিন্ন কথা। পাকিস্তানী ছেলেগুলো খান সাহেবকে খান নামে ডাকে কারণ আন্তর্জিক নিয়ম মাফিক সে তাদের কাছে নিজের পরিচয় দিয়েছে খান বলে। কিন্তু সেখান থেকে ডাক নামে আর নামেনি ওরা। খান ভাই-ই রয়ে গেছে। সাত বছর হল চদ্রি ভাই এখানে এই বিশাল বাড়ির ক্ষুদ্র ঘরে আছেন। বাড়ি চাঁদপুর। বিএনপির থানা কমিটির সেক্রেটারী ছিলেন এক সময়। বিএনপির সাথে এক ধরনের বিভিষীকা জড়িয়ে আছে আমার স্মৃতিতে। একটু অসস্তি হচ্ছিল। কিন্তু এখানে এই দূর প্রবাশে দলীয় রাজনীতির চেয়ে বাঙ্গালী পরিচয়টাই বড় হোক। আমি মহান হবার চেষ্টা করি। তিনি কী করেন বা করতেন সেটা বলতেই পারেন। বিএনপিতে হয়তো সংখ্যালঘুর মতো কিছু ভাল মানুষও ছিলেন। তেমন ভাল মানুষদেরই একজন আমাদের চদ্রি ভাই। পথে আসতে আসতে মাসুদ কানে কানে বলেছিল চদ্রি ভাই চেষ্টা করলে তোকে বদলী করে স্থায়ী ভাবে এখানে নিয়ে আসতে পারবেন। কাজেই চদ্রি ভাই আপাতত আমার আশার আলো। অনেক দিন এখানে থাকেন, নিয়ম কানুন জানেন। হয়তো একটা কাজেরও ব্যাবস্থা করে ফেলবেন। অবশ্য তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমার আগেই এখানে যে চার-পাঁচন আছে তাদের কাজের ব্যাবস্থা করতে হবে চদ্রি ভাইকে। তারপর আমি। কিন্তু অশাই এখানে একমাত্র ভরসা।
চদ্রি ভাইয়ের ঘরে থাকে জসিম। আর জাহিদ নামে একজান সিলেটী। কিন্তু দুটো দ্বিতল খাট। দেখে একটু ভরসা হলো। অন্তত একটা খালী বিছানা আছে। নিজের আস্তানায় যেতে ইচ্ছে করে না। মাসুদের ঘরে থাকে সুরুজ মিয়া, রফিক আর বেলাল। দুটো দ্বিতল খাটিয়ার কোনটাই এখানে খালি নেই। খেতে বসে ভালই লাগল। সবাই একসাথে রান্নকরে খায়। খাওয়ার ফাঁকে আমি নিজের সার্থটা নিয়েই ভাবছি। কী করব, কোথায় থাকব, মাথার উঁকুনের মতো এই সব মনের অজান্তেই কখন মনে উঁকি দেয় টেরও পাই না।


মন্তব্য

কল্যাণF এর ছবি

পুতুল ভাই নীড় পাতার বা দিকে আপনার নাম দেখে মনে মনে গোপন আশা ছিল যে এবার একটা কাক অবশ্যি পাচ্ছি। নিরাশ হতে হল না বলে ধন্যবাদ। ভাল লেগেছে বরাবরের মতই, চলুক

পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ কল্যান।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সজল এর ছবি

পড়ছি। পরের পর্ব দ্রুত আসুক।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

পুতুল এর ছবি

একটু দেড়ী হয়েগেল। দুঃখিত।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সবগুলো পর্ব ঠিক ঠিক পড়ে ফেলে আপনার দিনপঞ্জিতে মন্তব্য করার গুপ্ত ইচ্ছেটিকে আমি আর লুকিয়ে পুষবো না হয়তোবা কোন একদিন।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

পুতুল এর ছবি

সেদিনের অপেক্ষায় আছি।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তারেক অণু এর ছবি
পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নিবিড় এর ছবি
পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

লঞ্চে করে নারয়ণগঞ্জ পৌঁছে মতলবের লোকজন আর গাড়ীতে উঠে না। তোলারামেই ভর্তি হয়।

দেঁতো হাসি

পুতুল এর ছবি

বিশ্বস না করলে, লোকজনরে জিগাইতে পারেন।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।