আগের পর্বগুলো:
তৃতীয় পর্বে আমরা জেনেছি ভূমিকম্পের ফলে ভূগর্ভে শিলাস্তরে বিচ্যুতি সৃষ্টির মাধ্যমে শক্তি নিঃসৃত হয়। সেই শক্তি তরঙ্গাকারে প্রবাহিত হওয়ার সময় শিলাস্তরের কণাগুলোকে বিভিন্নভাবে আন্দোলিত করে। শিলাস্তরের আন্দোলনের প্রকৃতি অনুসারে ভূ–অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহিত তরঙ্গগুলোকে P ও S ওয়েভ নামে ডাকা হয়; ভূপৃষ্ঠ দিয়ে প্রবাহিত তরঙ্গ দুটোর নাম Rayleigh ও Love ওয়েভ।
ভূমিকম্পের মোট সংখ্যা:
পৃথিবীতে প্রতিবছর সর্বমোট কয়েক মিলিয়ন ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। এদের বেশিরভাগই এতে ছোট হয় যে ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রে ধরা পড়ে না। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের [USGS] জাতীয় ভূমিকম্প তথ্য কেন্দ্রের [NEIC] নেটওয়ার্ক গড়ে প্রতিদিন ৫০ টি ও প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার ভূমিকম্প রেকর্ড করে।
মাটির গভীরে শিলাস্তরের বিচ্যুতির মাধ্যমে যে বিন্দুতে শক্তি নিঃসরণের ফলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয় তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র [Focus] বলা হয়। কেন্দ্র থেকে উলম্বভাবে ভূ–পৃষ্ঠের উপরস্থ বিন্দুকে ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র [Epicenter] বলা হয়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সবচাইতে বেশি হয়। উপকেন্দ্র থেকে দূরত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে ভূমিকম্প জনিত ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে।
ভূমিকম্পের শ্রেণীবিভাগ:
কেন্দ্রের গভীরতার ভিত্তিতে টেকটোনিক কারণে সৃষ্ট ভূমিকম্পগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়:
মনে প্রশ্ন আসতে পারে ৭০০ কিলোমিটার গভীরতায় তাপমাত্রা ও চাপ বৃদ্ধির ফলে টেকটোনিক প্লেটের পক্ষে কঠিন অবস্থায় থাকা সম্ভব কি? যদি সম্ভব না হয় তাহলে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে এত গভীরতায় কীভাবে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়?
ভূ-পৃষ্ঠের এত গভীরে ভূমিকম্প সৃষ্টির প্রক্রিয়া সম্পর্কে মানুষ এখনো পুরোপুরি জানতে পারেনি। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭০০ কিলোমিটার গভীরতায় তাপমাত্রা ও চাপের পরিমাণ এত বেশি বেড়ে যায় যে টেকটোনিক প্লেটগুলো গলে যাওয়ার কথা। ~৭০০ কিমি গভীরতায় গলিত শিলাস্তরের ভেতর অলিভিন [Olivine] থেকে স্পিনেল [Spinel] এর দশা–পরিবর্তনকে [Phase–transition] ভূমিকম্প সৃষ্টির কারণ হিসাবে ধারণা করা হয়। [দশা–পরিবর্তনের উদাহরণ: ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানি তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হয়।]
ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্র:
ভূমিকম্প সনাক্ত করতে যে যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয় তার নাম সাইজমোগ্রাফ [Seismograph উচ্চারণ: sIzemu’graf ]। বাংলাভাষার বইপত্রে যন্ত্রটিকে সাধারণত সিসমোগ্রাফ নামে ডাকা হয়। সাইজমোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্পে সৃষ্ট Body-waves ও Surface-waves সনাক্ত করা হয়।
সাইজমোগ্রাফ যন্ত্রের মূলনীতি খুব সহজ। একটা ভারী বস্তুকে [লোহার গোলক] মুক্তভাবে ঝুলিয়ে দিয়ে তার সাথে একটা স্টাইলাস [কলম] সংযুক্ত করে দিলেই সাইজমোগ্রাফ তৈরি হয়ে যাবে। ভূ–পৃষ্ঠে সৃষ্ট কম্পন সাইজমোগ্রাফ যন্ত্রে এসে পৌঁছালে যন্ত্র সংলগ্ন ভূমি কাঁপতে থাকবে কিন্তু ঝুলিয়ে দেয়া গোলকটি স্থিতি জড়তার কারণে যথাস্থানে রয়ে যাবে। এমতাবস্থায় কলমের নিচে রাখা কাগজে আঁকিবুঁকি দাগ সৃষ্টি হবে।
কলমের নিচে রাখা কাগজটি যদি নির্দিষ্ট বেগে সরানো হয় তাহলে আঁকিবুঁকির শুরু ও শেষের সময়ের পার্থক্য থেকে ভূমিকম্পের সংঘটন কাল হিসাব করা সম্ভব। আবার মাটির কম্পন যত বেশি হবে কাগজের উপর আঁকিবুঁকির বিস্তার ও তত বেশি হবে। আঁকিবুঁকির বিস্তার থেকে ভূমিকম্পের তীব্রতা হিসাব করা সম্ভব। ভূপৃষ্ঠে কম্পনের ফলে কাগজের গায়ে যে আঁকাবাঁকা দাগ সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় সাইজমোগ্রাম [Seismogram]। ভূ–পৃষ্ঠে সৃষ্ট কম্পনের আনুভূমিক উপাংশ সনাক্তকরণে যে সাইজমোগ্রাফ ব্যবহৃত হয় তাকে Horizontal Seismograph বলে; একইভাবে উলম্ব উপাংশ সনাক্তকরণে ব্যবহৃত সাইজমোগ্রাফকে Vertical Seismograph বলে। সাধারণত আনুভূমিক সাইজমোগ্রাফে উত্তর–দক্ষিণ ও পূর্ব–পশ্চিম বরাবর শিলাস্তরের কম্পন সনাক্ত করা হয় ও উলম্ব সাইজমোগ্রাফ ব্যবহার করে উপর–নিচ বরাবর শিলাস্তরের কম্পন রেকর্ড করা হয়।
সাইজমোগ্রাফ ও সাইজমোগ্রামের কোনটি কি তা মনে রাখতে টেলিগ্রাফ–টেলিগ্রাম শব্দ দুটোকে ব্যবহার করা যেতে পারে। টেলিগ্রাফ যন্ত্রে প্রেরিত সংকেতকে বলা হয় টেলিগ্রাম তেমনি সাইজমোগ্রাফ যন্ত্রে রেকর্ডকৃত ভূ–কম্পনকে বলা হয় সাইজমোগ্রাম।
গত পর্বে আমরা জেনেছি ভূ–গর্ভে শিলাস্তরের বিচ্যুতির ফলে নিঃসৃত শক্তি P ও S ওয়েভ হিসাবে শিলাস্তরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এভাবে নিঃসৃত শক্তির কিছু অংশ ভূ–পৃষ্ঠে পৌঁছে সারফেস ওয়েভ [রেলি–ওয়েভ ও লাভ–ওয়েভ] সৃষ্টি করে। ভূমিকম্পের উৎস থেকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে তরঙ্গগুলো কখন হানা দেবে সেটা নির্ভর করে তাদের গতিবেগের উপর। আমরা আরও জেনেছি যে ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট তরঙ্গগুলোর মধ্যে P ওয়েভের গতিবেগ সর্বাপেক্ষা বেশি হওয়ায় তা সবার আগে সাইজমোগ্রামে ধরা পড়ে। P ওয়েভের পর গতিবেগের ভিত্তিতে যথাক্রমে S ওয়েভ ও সারফেস ওয়েভগুলো সাইজমোগ্রামে ধরা পড়ে।
সাইজমোগ্রাম থেকে P ও S ওয়েভের প্রথম আগমন–সময়ের [first arrival-time] পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে রেকর্ডিং স্টেশন থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব নির্ণয় করা সম্ভব। রুল অফ থাম্ব হিসাবে সাধারণত P – S প্রথম আগমন–সময়ের পার্থক্যকে [সেকেন্ড] ৮ দিয়ে গুন করে কিলোমিটারে রেকর্ডিং স্টেশন থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব আন্দাজ করা যায়। উপরে উদাহরণ হিসাবে ব্যবহৃত সাইজমোগ্রামটিতে দেখা যাচ্ছে P-S ওয়েভের আগমন–সময়ের পার্থক্য ২৪ সেকেন্ড। অতএব, ধারণা করা যায় সাইজমোগ্রামটি যেখানে রেকর্ড করা হয়েছে সেখান থেকে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব প্রায় ১৯২ কিলোমিটার।
সুতরাং, আমরা বলতে পারি যে রেকর্ডিং স্টেশনকে কেন্দ্র করে ১৯২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের একটি বৃত্ত আঁকলে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল সে বৃত্তের পরিধির উপর পড়বে। তাহলে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হওয়া যাবে কীভাবে?
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের অবস্থান নির্ণয় পদ্ধতি:
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মোটামুটি সঠিকভাবে জানার জন্য কমপক্ষে তিনটি রেকর্ডিং স্টেশন প্রয়োজন।
ধরা যাক ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটে তিনটি ভূমিকম্প পরিমাপক স্টেশন আছে। ঢাকা স্টেশনের সাইজমোগ্রাম পরীক্ষা করে দেখা গেল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ঢাকাস্থ রেকর্ডিং স্টেশন থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অর্থাৎ ঢাকাকে কেন্দ্র করে ১০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করলে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল সে বৃত্তের পরিধির উপর পড়বে। একইভাবে চট্টগ্রামের সাইজমোগ্রাম পরীক্ষা করে দেখা গেল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল চট্টগ্রামের অবস্থিত রেকর্ডিং স্টেশন থেকে ১৫৫ কিলোমিটার দূরে। একইভাবে আমরা বলতে পারি চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে ১৫৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধবিশিষ্ট একটি বৃত্ত অঙ্কন করলে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল সে বৃত্তের পরিধি বরাবর পড়বে। আমরা যদি ঢাকা ও চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে আঁকা বৃত্ত দুটো মনযোগ দিয়ে দেখি তাহলে দেখব বৃত্ত দুটো পরস্পরকে দুটো ভিন্ন ভিন্ন বিন্দুতে ছেদ করেছে। তাহলে আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল বৃত্তদুটোর ছেদবিন্দুদ্বয়ের যে কোন একটিতে।
তৃতীয় স্টেশনের [সিলেট] সাইজমোগ্রাম থেকে প্রাপ্ত দূরত্ব ব্যবহার করে একটি বৃত্ত অঙ্কন করলে আমরা দেখব বৃত্তটির পরিধি ঢাকা ও চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে ইতিপূর্বে অঙ্কিত বৃত্ত দুটোর ছেদবিন্দুদ্বয়ের যে কোন একটির উপর পড়ে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে কমপক্ষে তিনটি স্টেশনের সাইজমোগ্রাম থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নির্ণয় করা সম্ভব।
মন্তব্য
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
ওকে।
facebook
এটা কি লাফানো মন্তব্য, না আমার মন্তব্যের জবাব![চোখ টিপি চোখ টিপি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/3.gif)
অ্যাঁ! কার কথা জিগান?![চোখ টিপি চোখ টিপি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/3.gif)
ও আমার ভাই।
আগুনের গোলার আবার ভাই আসিতেছে নাকি??
আজই আরেকটা বিয়ে না করলে আপাতত কিছুদিনের জন্য সেই সম্ভাবনায় গুড়ে বালি।![মন খারাপ মন খারাপ](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/2.gif)
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
একটা প্রশ্ন, যেখানে সাইজমোগ্রাফ যন্ত্র রাখা হবে সেই জায়গা/বাড়ি ভুমিকম্প ছাড়া অন্য কোনো কারণে কাঁপতে পারেনা? যেমন ধরেন, বাংলা সিনেমার গানের শুটিং হলো! অথবা পাশ দিয়ে বড় সাইজের ট্রাক গেলো! অথবা সাঈদীরে ধরার ফলে গজব পড়ল? নাকি ইম্প্যাক্টের ভিন্ন ভিন্ন ধরন আছে?
আপনে নিয়মিত বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা না দিলে আপনার ফাঁসির দাবী তুলমু!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
যদি গজব সত্যই পড়তো তাহলে এতদিনে সেই হাঁসগুলো মরে ভূত হয়ে যেত।
আবার্জিগস! মিরপুর বোট্যানিক্যাল গার্ডেনে একসময় নিয়মিত ভূমিকম্প হতো। সেই ভূমিকম্পগুলোর মূল কারণ ছিল বাংলা সিনেমার নায়িকারা।
সমস্যা হচ্ছে শক্তি নিঃসরণে। আমাদের সিনেমার নায়িকাদের ওজন বড়জোর ১৫০ কেজি। অর্থাৎ, বাংলা সিনেমার গানে নায়িকার লাফ-ঝাঁপকে বড়জোর ১৫০ কেজি টিএনটি বিস্ফোরণের সাথে তুলনা করা যায়।
মানুষ সাধারণত রিখটার স্কেলে ৩-৩.৫ মাত্রার চাইতে ছোটমাত্রার ভূমিকম্প অনুভূব করতে পারে না। ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে ২.৬৮ টন টিএনটি বিস্ফোরণ ঘটাতে হবে। সুতরাং, ঢালিউডের সব নায়িকা মিলেও নেচেকুঁদেও অনুভব করার মত একটা ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারবে না।![মন খারাপ মন খারাপ](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/2.gif)
সাইজমোগ্রাফ একটি অতি সুবেদি যন্ত্র। লেখায় সাইজমোগ্রাফের মূলনীতি বুঝাতে গিয়ে যদিও বলেছি যে একটা লোহার বলের সাথে একটা স্টাইলাস বেঁধে ঝুলিয়ে দিলেই সাইজমোগ্রাফ হয়ে যাবে - বাস্তবে জিনিসটা ঠিক সেরকম না।
সাইজমোগ্রাফ যন্ত্র অচিন্তনীয় পরিমানে সুবেদি। ভূ-পৃষ্ঠে সৃষ্ট যে কোন কম্পনকে তা কয়েক মিলিয়নগুণ অ্যাম্প্লিফাই করে রেকর্ড করে। তাই সাইজমোগ্রামে ময়ূরীর নাচ থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ পর্যন্ত সবকিছুই রেকর্ড হয় কিন্তু বদমায়েশ ভূতত্ত্ববিদেরা সেগুলোকে নয়েজ হিসাবে ফিল্টার করে ফেলে।
ভূতত্ত্ববিদেরা ময়ূরীর নাচের হাত থেকে বাঁচার জন্য সাইজমোগ্রাফকে সাধারণত ভূ-পৃষ্ঠ থেকে সামান্য গভীরে ফিট করে। যাতে করে ছোটখাটো কম্পন সাইজমোগ্রাফে পৌঁছাতে না পারে।
---
বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা কেউ পড়ে না। আমার সবগুলো লেখার মধ্যে সবচাইতে কম পঠিত লেখা হচ্ছে এই সিরিজের লেখাগুলো। এই সিরিজের একেকটা পর্ব লিখতে ও কমেন্টের উত্তর দিতে যে পরিমান পরিশ্রম হয় তার কিয়দংশ ব্যবহার করে বাংলার বিপ্লবী বীর জমিদারনন্দন "দুদুরাম"কে নিয়ে গাদাখানেক গল্প লিখে ফেলতে পারি। সে গল্প চোখের পলকে হাজারখানেক লোকে পড়ে ফেলবে।
দরকারী কথা বলতে শুরু করলেই লোকের উৎসাহ কমে আসে। এটাই জগতের নিয়ম।
মনে দুষ্ক রাখতে নাই। যে অল্প কয়েকজন পড়তাছি তারা সবাই আপনারে এই সিরিজের লিগা এন্তার কেক্কুক খাওয়াইতে রাজি। আমি নিজে তো বুফে খাওয়াইতেও রাজি। চালায়া যান।![দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/4.gif)
চিন্তার কারণ নাই। এই লেখাগুলো যুগ যুগ ধরে মানুষ খুঁজে খুজেঁ পড়বে, পড়তেই থাকবে। তাঁর ঘাড়ই তাঁকে পড়াবে। দুদুরামের গল্প আজ তাৎক্ষণিকভাবে যে কজন পড়লো, সেটুকুই।
কিন্তু প্রিয়তে রাখার বাটনটা কি হারিয়ে ফেললাম ? না কি কেউ সচল থেকে বাটনটা চুরি করে নিয়ে গেছে !।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
সেইটাই। ইন্টারনেটে কোন কিছু একবার প্রকাশিত হয়ে গেলে তা আর সহজে হারায় না। কেউ না কেউ সেটা ঢুঁড়ে আনবেই।
গঙ্গা সিরিজ লেখার সময় একবার দুঃখ করে লিখেছিলাম এই ধরনের কথা। কিন্তু বস, পরে বুঝছি, কথাটা ঠিকনা। যত কম পাঠকই পড়ুকনা কেন এই ধরনের লেখার আবেদনের তাতে এতটুকুও কমতি হয়না। তার চেয়েও বড় কথা আপনি দেখবেন এই ধরনের একটা সিরিজ লিখতে আপনার নিজের যে পরিমান পড়াশুনা করতে হয় তাতে নিজের মগজটা আবার ঝালাই হয়ে যায়![দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/4.gif)
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
হ্যাঁ, অনেক কিছু ভুলে গেছিলাম। লিখতে গিয়ে নতুন করে পড়তে হলো।![চোখ টিপি চোখ টিপি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/3.gif)
ভালোমন্দ যাচাই করার একমাত্র নিয়ামক হিসাবে "পাঠ সংখ্যা"কে ধরে নিলে "ছামোয়াড় অথবা "সোনাব্লগে" গিয়ে গোলাম আযমের জীবনী পোস্ট করা উচিত কাজ হপে।
লোকে পড়ুক আর না পড়ুক সিরিজটা লিখে শেষ করবো। তারপর একটা ই-বুক বানিয়ে রেখে দেব।
তাইলে আর কী! আমিও কী লেখা বাদ দিমু?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মিয়া, আপনের লেখাগুলো কি বিজ্ঞান নাকি? ওইগুলা তো বিজ্ঞানের সাহিত্য!
তবুও লিখুন, যাদের আগ্রহ আছে তারা ঠিক কি খুঁজে পড়তে শুরু করবে।
চরম।![গুরু গুরু গুরু গুরু](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/77.gif)
সাইজমোগ্রাম দেখি মোবাইল ফোনের টাওয়ারের মতো কাজ করে- যেখানে তিনটি টাওয়ারের ডেটা থেকে একজন ব্যক্তি ঠিক কোনজায়গায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে সেটি মাপা যায়!
ভাইরাস ব্যাটার মতো আমিও আপনার ফাঁসির দাবি তুলছি- যদি নিয়মিত বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা না দেন!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
প্রকৃতির এই একটা জিনিস আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে। প্রকৃতিকে বুঝতে শুরু করলে দেখা যায় একটা নিয়ম খাটিয়েই অনেকগুলো জিনিস বোঝা সম্ভব।
আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরণের সূত্রগুলো শব্দের ক্ষেত্রেও কাজ করে। টেলিস্কোপে দুটো লেন্স ব্যবহার করে দূরের জিনিসকে কাছে দেখা যায়। তেমনি গ্যালাক্সির গ্র্যাভিটেশনকে কাজে লাগিয়ে হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বহুদূরের কোয়াজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে মানুষ।
যে পদ্ধতিতে ভূমিকম্পের উৎসস্থল নির্ণয় করা সম্ভব সেই একই পদ্ধতি ব্যবহার করে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমে [GPS] কোনকিছুর অবস্থান বের করা হয়। একইভাবে মোবাইল ফোনের অবস্থান বের করতেও সর্বনিম্ন তিনটা টাওয়ারের দরকার হয়। সোজা কথায় আমরা দেখতে পাচ্ছি অবস্থান নির্ণয় প্রক্রিয়ায় নূন্যতম ৩টা জিনিস দরকার। এই নিয়মটা প্রকৃতির সবক্ষেত্রেই খাটে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কত সহজভাবে বুঝে ফেললাম(আগে বুঝতাম না/বুঝার চেষ্টা করি নি)। অসাধারণ
। নিয়মিত লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ, দ্রোহীদা।
_____________________
Give Her Freedom!
একেবারে সায়েন্স ক্লাসের মতো মন দিয়ে অনুসরণ করলাম। কলেজ ভার্সিটির ক্লাসগুলা এইরকম হৈলে ভালৈতো।
পৃথিবীর কোন দেশেই পড়ালেখা জিনিসটা আনন্দদায়ক না।
আনন্দটা আসলে নিজের কাছে। তবে প্রেরণা জিনিসটা বাইরে থেকে স্টিমুলেশন দিয়ে তৈরি করতে হয়। সেক্ষেত্রে স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিগুলোর কথা এসে পড়ে। আমাদের দেশের স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিগুলো সে কাজটাও করতে পারে না।
এই পর্বটা সাইজে একটু ছোট হল - আগের লেখার আফটার শক নাকি? যাই হোক, লেখা পড়ে স্কুলের সায়েন্স ফেয়ারের কথা মনে পড়ে গেল - ভূ-কম্পন মাপার যন্ত্র জাতীয় প্রজেক্ট প্রায় প্রতি বছরই থাকত।পোলাপাইন টেবিল ধাক্কাধাক্কি করার জন্য ভিড় জমিয়ে ফেলত।
চমৎকার সিরিজ হচ্ছে। চলুক।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
এক বসায় শেষ করেছি তাই লেখাটা খানিকটা ছোট হয়েছে। তাছাড়া পরের পর্বে ভূমিকম্প পরিমাপক স্কেলের কথা বলবো। সেটা লিখতে শুরু করে মাঝপথে থামিয়ে দিলে ভাল দেখাতো না।
মূলনীতি দেখলেই বোঝা যায় ভূমিকম্প মাপার যন্ত্র বানানো খুবই সহজ। ঘরে লম্বা তার দিয়ে ঝোলানো বাতি বা উইকেটের উপরে রাখা স্ট্যাম্প দিয়েও ভূমিকম্পের উপস্থিতি নির্ণয় করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে কাজ করে এমন যন্ত্র যা দিয়ে ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয় করা যায় সেটা বানানো ভয়াবহ কঠিন ব্যাপার এবং বিষয়টা বেশ খরুচে।
ভূমিকম্প বিষয়ে জ্ঞানী হয়ে গেলাম। নেন খান-![আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/dhoinna4-50.png)
ধইন্যার নাম করে কাঁঠাল পাতা দেন নাই তো মিয়া?
এই পর্বটা ছোট হয়েছে এবং আগের বিষয়গুলোর তুলনায় এই পর্বের বিষয়বস্তুগুলোও মনে হয় সহজ লাগছে। মনে হয় আপনে ভালো টিচার...
পরের পর্বের অংশবিশেষ এই পর্বে টানতে চাইনি। তাই খানিকটা ছোট হয়ে গেছে।
ছাত্রী হইলে বুঝতেন মিয়া আমি কত ভালু শিক্ষক।![চোখ টিপি চোখ টিপি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/3.gif)
দ্রোহী রক্স।
দ্রোহী ভাই,
কঠিন লাগে! আবার বুঝিয়ে দিন।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
প্রশ্ন করতে শুরু করেন। যা মনে আসে প্রশ্ন করেন।![চোখ টিপি চোখ টিপি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/3.gif)
মুগ্ধতা নিয়ে পড়ছি।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
এ পর্বটা ছোট হলেও খুব প্রাঞ্জল এবং সুপাঠ্য হয়েছে। বেশ কিছু বিষয় ব্যাখ্যা করেছেন যার নাম জানা ছিল কিন্তু সঠিক ডেফিনেশন অথবা কার্যপ্রণালী জানতাম না। এ পোস্ট পড়ে জানা হলো।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
টুইটার
এখনো লেগে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
পরের পর্বে ভূমিকম্প পরিমাপে ব্যবহৃত স্কেলগুলো সম্পর্কে লিখবো। পর্বটা বেশ খানিকটা লম্বা হবে। এই পর্বকে লম্বা করতে তাই আর অন্য কিছু জুড়ে দিতে চাইনি।
খুটিনাটি কিছুই বাদ দিতেছেন না দেখে ভাল লাগ্ছে।
সামারে আউটডোর একটিভিটি বেড়ে গেলে, কিছু কিছু ভূমিকম্প কিন্তু বেশ ইয়ে মানে মনোমুগ্ধকর লাগে দেখতে
আবার্জিগস!![চোখ টিপি চোখ টিপি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/3.gif)
পরের পর্ব কবে আসবে? অপেক্ষায় আছি ।
নতুন মন্তব্য করুন