"a city is a place where a small boy, as he walks through it, may see something that will tell him what he wants to do his whole life." - Louis I Kahn
১।
"লুই কানের মূল নকশার বড় ক্ষতি আগেই করা হয়েছে। এখানে ক্রিসেন্ট লেকের ওপর সেতু তৈরি ও মাজার করা হয়েছে।মূল নকশাতে ক্রিসেন্ট লেকটিকে একটি অর্ধচন্দ্রের মতো দেখা যায়। চন্দ্রের মাঝখানে সংসদ ভবন একটি তারা। ওখানে ব্রিজ ও মাজার করে এখন ধনুকাকৃতির করা হয়েছে। চাঁদ শান্তির প্রতীক আর ধনুক যুদ্ধের প্রতীক।"
সবাই জানেন বোধহয়, এই বক্তব্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। সংসদে দাঁড়িয়ে দেয়া বক্তব্য। এর জবাবে মির্জা ফখরূল ইসলাম তার পরদিনই দাবি করেন,
“জিয়ার মাজার আর সেতু নির্মাণ দ্বারা সংসদ ভবনের সৌন্দর্য আরো বর্ধিত হয়েছে।”
আমার ইচ্ছে ছিলো, রাজনীতিবিদদের বলি, তারা যেন চাঁদ-তারা বা তীর-ধনুক দিয়ে সৌন্দর্য বোঝার হাস্যকর চেষ্টাটা না করেন। তারা যেন উপলব্ধি করতে চেষ্টা করেন যে, লুই কান এর নকশার সবচেয়ে বড় ‘সৌন্দর্য’হানি সেদিন হয়ে গেছে যেদিন নিরাপত্তার অজুহাতে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ( কান এর পাবলিক প্লাজা, বাংলায় বলা যায় ‘নাগরিক চত্ত্বর’। কান এর ছেলেকে ঢাকাবাসী জানিয়েছিলো ওখানে নাকি সবারই একটা না একটা কিছু স্মৃতি আছে।) যতদিন আমাদের নেতারা এটা না বুঝবেন, ঢাকা বসবাস এর অযোগ্যই থেকে যাবে। নগর পরিকল্পনার কারিগরি বা আর্থিক দিকটা কিন্তু খুব জটিল বা দুঃসাধ্য না, ইস্যুটা সবসময়ই রাজনৈতিক, সামাজিক। এই যে ঢাকাকে বসবাস এর অযোগ্য আর প্যারিসকে তিলোত্তমা নগরী বলে, আরো হাজারটা পার্থক্য নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু খেয়াল রাখা দরকার যে, একটা সড়ক আর একটা boulevard এর আসল পার্থক্যটা কিন্তু দর্শনেই। সুশাসন ছাড়া বাসযোগ্য নগর হয়না। মেট্রোরেল, উড়াল-সড়ক কোন কিছুতেই খুব বেশি কিছু আসবে যাবে না।
কিন্তু এই লেখাটা রাজনীতিবিদদের ঊদ্দেশ্যে না।
২।
অনেকে হয়তো সংসদ ভবনের ‘sanctity’ রক্ষার কথাবার্তাকে স্থপতিদের ‘সৌন্দর্য’ নিয়ে আদিখ্যেতা ভেবে থাকতে পারেন। এই ইস্যুতে গত বুধবার একটা মানববন্ধন হয়, ‘বাংলাদেশ স্থপতি ইন্সটিটিউট’ এর আহবানে। পরদিন প্রথম-আলো’র খবরে (এবং শিরোনামে) এটাকে স্থপতিদের একটা কর্মসূচী হিসেবেই দেখানো হয়। প্রথম-আলোতে তার আগেও একদিন লেখা হয় “বিরোধিতা করছেন স্থপতি, পরিকল্পনাবিদরা।” (আর কেউ নাই!? কোন রাজনৈতিক দল!?) আমি একজন স্থপতি। লুই কান আমার কাছে দেবতুল্য মানুষ। তাঁর প্রতি, তাঁর কাজের প্রতি আমার মনে কী অপরিসীম শ্রদ্ধাবোধ জমা আছে, তা আমি কাউকে বলতেও যাবোনা। সংসদ ভবনের নান্দনিকতা বা ‘সৌন্দর্য’ নিয়েও না হয় অন্য কোনদিন, অন্য কোথাও, হয়তো অন্য কোন লেখক আলাপ করবেন। মেট্রোরেল এর রুট বিজয় সরনি দিয়ে যাওয়া উচিত নাকি খামারবাড়ি দিয়ে, সেই যুক্তিতর্কও আরো অনেক আগে থেকেই, অন্য অনেক জায়গায়, অন্য অনেক বিজ্ঞজন করে আসছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে এক পক্ষের সমর্থনে এই বিতর্কের ‘উপসংহার’ টেনে দেয়ার পর পুরো ব্যপারটায় একটা নতুন মাত্রা যোগ হয়। সেই প্রসঙ্গেই এখানে কিছু বলতে চাওয়া।
যখন বিমানবাহিনীর আপত্তিতে MRT-6 এর পথ ঘুরে যাবার কথা জানা গেলো, আপত্তিটা ছিলো প্ল্যানিং নিয়ে, 'সমন্বয়' নিয়ে। লড়াইটা ছিলো সুচিন্তিত বিশেষজ্ঞ মতামত বা শুভবুদ্ধির সাথে গোষ্ঠী-স্বার্থের। এরকম মাঝে মাঝে শোনা যায়, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মাঝে ‘সমন্বয়’ নাই। একই দপ্তরের নানা কাজের মাঝেও নাই। এখানে একটা, ওখানে দুইটা করে ফ্লাইওভার হয় (এবং কিছুদিন পর জানা যায় সেই ফ্লাইওভারে ভারি যানবাহন ওঠা যাবে না!)। ‘সমন্বয়হীন পরিকল্পনা’ কথাটা অদ্ভুত শোনায় (এটাকে কি oxymoron বলা যায়?)। সমন্বয় না থাকলে সেটা কেমন পরিকল্পনা! ঢাকায় সবকিছুই হয় ad hoc ভিত্তিতে, piece-meal সমাধান সব। উপসর্গের চিকিতসা হয় বড়জোর... রিকশা উঠে যায়, ওয়ান ওয়ে সড়ক হয়, ফ্লাইওভারে বাস ওঠা নিষিদ্ধ হয়... রোগের আর চিকিতসা হয়না। এরকম জোড়াতালি দিয়ে, আজকে আর্মির আবদারে ডানদিকে, তো কাল বিজেএমইএ’র আবদারে বামদিকে, এভাবে আর কতদিন চলতে পারবে ঢাকা?
সম্প্রতি সচলায়তনে উড়াল-সড়ক নিয়ে যেই লেখালেখি, আলোচনাটা হচ্ছে সেখানেও মুল আপত্তিটা বোধ করি এখানেই। শহর একটা জটিল matrix, এর সমস্যাগুলা পরষ্পর সম্পর্কযুক্ত। শহরের পরিবহন-ব্যবস্থার সাথে যেখানে এর ভূমি-ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ, অবকাঠামো, সামাজিক গঠন, নাগরিক সংষ্কৃতি সবকিছু জড়িত, সেখানে আমাদের এই ঢাকায় পরিবহন-ব্যবস্থার একটা পদক্ষেপ এর সাথে আরেকটা পদক্ষেপেরই কোন সমন্বয় থাকেনা। STP (Strategic Transport Plan)'র ভালোমন্দ নিয়ে প্রশ্ন ঊঠানোই যায়, কিন্তু STP অবশ্যই একটা সমন্বিত পরিকল্পনা।
স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশবিদরা তাই দাবি তোলেন বিমানবাহিনীর আবদারে যেন এই ব্যপারে বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করা না হয়, সুচিন্তিত রুটটা যেন বদলে ফেলা না হয়।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ওরকম বক্তব্যের পর ক্ষোভটা কিন্তু আর শুধু প্ল্যানিং নিয়ে থাকে না (এবং অবশ্যই সৌন্দর্য নিয়ে না)। যেই বিতর্কটা, যেই লড়াইটা আগে বিশেষজ্ঞদের হাতে ছেড়ে দিলেও চলতো, সেখানে ঢাকাবাসী সবার অংশগ্রহণটা জরুরি হয়ে পরে। বিমানবাহিনী প্রধানকে আমরা সরাসরি ভোট দিয়ে ওই পদে বসাই নাই, কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমাদের হিসাবনিকাশটা অন্যরকম। আমাদের নেতারা গোষ্টী স্বার্থের কবল থেকে শহরকে বাঁচাতে পারেন না, তাদের সেই ক্ষমতা নাই ( অথবা ঘটনা আরো ভয়াবহ, তাদের সেই চেষ্টাও নাই!), এটা মেনে নিতে আমরা রাজি না।
প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন "...বুয়েট, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশবিদসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মেট্রোরেল রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।“ তিনি মিথ্যা বলেন! এবং তিনি এই ব্যপারে আলোচনার, সঠিক তথ্য প্রকাশের (বলা যায় গনতান্ত্রিক চর্চার) সব পথ রুদ্ধ করে দেন। তিনি যখন প্রশ্ন তোলেন “বিমানবন্দর বড়, নাকি কয়েকটা খেজুর গাছ বড়?”, তিনি জটিল প্রশ্নটাকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে অতি সরল করে উত্থাপন করেন। তিনি যখন জিয়ার মাজার দ্বারা সংসদ ভবনের সৌন্দর্য নষ্ট হবার কথা বলেন, তিনি যে শুধু নিচু মনের পরিচয় দেন তাই না, তিনি মূল প্রসঙ্গ থেকে আমাদের নজর সরিয়ে দিতে চান। (সংবাদপত্রে, টিভি চ্যানেলে তাই ওই বক্তব্যটাই শিরোনাম হয়।)
লেখার শুরুর দিকেই বাসযোগ্য নগরের শর্ত হিসেবে যেই ‘সুশাসন’ এর কথা উল্লেখ করা, সেই সুশাসন এর প্রধান শর্ত কিন্তু আবার জনসম্পৃক্ততা। একটা সুন্দর নগর গড়ে তুলতে যেই সু-সমন্বিত সামগ্রিক দর্শন প্রয়োজন, জনগনের সম্পৃক্ততাই পারে তা নিশ্চিত করতে, পারে সরকারের নীতিমালাকে সেই দিকে প্রভাবিত করতে।
এই ঢাকার সমস্যা শুধু যে ব্যাপক তাই না, অনেক গভীর। শুধু আর্মি কেনো, এই ঢাকার দখল কেউ ছাড়েনা। গার্মেন্টস, কলকারখানা, বিশ্ববিদ্যালয় সব ঢাকার বাইরেই থাকা উচিত। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরও শহরের বাইরে নেয়া দরকার, এই বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ কমবে কেমন করে? আবাসন ব্যবসায়ী, পরিবহন ব্যবসায়ীরাও ঢাকার দখল নিয়ে আছে...উত্তর-দক্ষিন-পুর্ব-পশ্চিম...বুড়িগঙ্গা-তুরাগ-বালু-শীতলক্ষ্যা...রাস্তা-ফূটপাথ-জমি-জলাশয়...সব দখল! কী সুন্দর প্লটভিত্তিক আবাসন ব্যবস্থা, আর গাড়ি-প্রধান সড়ক ব্যবস্থা! ( ঢাকার দখল কিন্তু ওয়ার্ল্ডব্যাঙ্ক, আইএমএফ ও ছাড়ে না! ) এমনকি যে মধ্যবিত্ত আমজনতা, তাদেরও স্বপ্ন কিন্তু ওই দখল, ঢাকার এক টুকরা জমির দখল। সবাই সবার গাছটা আগলে ধরে আছে, পুরোটা মিলে যে জঙ্গল হয়ে আছে সেটা কে দেখবে? এই বাগানের একজন শক্ত মালি লাগবেই, যে কঠিন হাতে সব দখল ছুটাবে। জানি শেখ হাসিনা সেই মালি হতে পারবেন না, কিন্তু তার ওই বক্তব্যে জঙ্গল সাফ করার দাবিটাই যে একটা বড় ধাক্কা খায়!
এই দাবি তবু আমাদের বারবার তুলতে হবে। এই দাবির সমর্থনে আমাদের জনমত গড়ে তুলতেই হবে।
৩।
এবার একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি। কিছুদিন আগে এক প্রবাসী বন্ধুর ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখলাম, সে নাকি বুক ভরে এই ঢাকার দূষিত বাতাসে আবার নিঃশ্বাস নিতে চায়। এটা কি শহরের জন্য ভালোবাসা? এই শহরে যারা বেড়ে উঠেছি, এই শহরে যারা বাস করি, সবাই কি নিশ্চিতভাবে দাবি করতে পারি এই শহরকে আমরা ভালোবাসি?
আমি নিজেই সম্ভবত এই শহরের একজন ‘সুনাগরিক’ না। যেই গণপরিবহন ব্যবস্থার পক্ষে আমি মত দেই, সেই গণপরিবহনে আমি সচরাচর চড়ি না। আমি সেই ১৫% পাপীদের দলে যারা রাস্তার ৭০% দখল করে যাতায়াত করি। যেই আমি সুষম ভুমি-ব্যবস্থাপনার দাবি তুলি সবসময়, সেই আমি শহরের এমন এক এলাকায় থাকি যেখানে প্রতি একর এ ১০০ জন বাস করে বড়জোর। যেই আবর্জনাটা নিজের ঘরে ফেলতে বাঁধে, তা শহরের রাস্তায় ফেলতে আসলে ততটা বাঁধে না। ( আবার একটা উল্টো গল্প এখানেই শুনিয়ে রাখি, আমার এক পরিচিত ভাইয়া বছর দুয়েক বার্সেলোনাতে থেকে বেশ নাগরিক আদবকায়দায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেন। ঢাকায় ফিরে তিনি একবার চিন্তা করলেন, হাতের চিপ্স্ এর প্যাকেটটা জায়গামত ফেলবেন, যেখানে সেখানে না। হাঁটতে হাঁটতে তিনি নিজের বাসায় পৌঁছে গিয়েছিলেন, ফেলার জায়গা পান নাই।) একটা কথা শিক্ষিত মহলে মাঝে মাঝে শোনা যায়, আমাদের নাকি ‘সিভিক সেন্স’ নাই। যেই যানজট নিরসনের চেষ্টা থেকে সব আলাপের শুরু, সেই যানজটের জন্য এই নগরিক আদবকায়দার অভাবও কিন্তু দায়ী। একটা ছোট উদাহরণ দেই, ওয়ান-ওয়ে বেইলীরোডে অবশ্যম্ভাবী জট্টা আমাদের নাগরিক শিষ্টাচার এর অভাব থেকেই তৈরি হয় সবসময়। পিজাহাট, বুমার্স এর সামনে যেমন তেমন পার্কিং, যাত্রী ওঠানামা থেকেই একটা ‘bottle neck’ তৈরি হয়।
আমি টের পাই, বাবা-মা সম্ভবত এই শহরকে ভালোবাসেন না, বরং ভয় পান। ছেলে ঘরের বাইরে গেলে তারা ভয়ে থাকেন। একসময় এই ভয়কে অযথা বলে বুঝাতাম ওনাদের। কিন্তু এই শহরেই সড়ক-দুর্ঘটনা আর ছিনতাই দুটোরই কবলে পরার পর থেকে তা আর বলতে পারিনা। সঙ্গে গাড়ি থাকলে বাবা-মা কিছুটা স্বস্তিতে থাকেন। গাড়ি তাদের কাছে একটা নিরাপত্তা ব্যূহের মত, একটা ‘বাবল’। এই একই ‘বাবল’ আমাদের বারান্দার গ্রিলে, সীমানা প্রাচীরে। আমার ছিনতাই হবার পরপর আমার মধ্যে প্রচন্ড একটা ক্রোধ বেড়ে উঠ্ছিলো। আমি র্যাবসদস্য বন্ধুদের বলে রেখেছিলাম, যেমন করে হোক ওদের যেন খুঁজে বের করে, আমি ‘বদলা’ নিতে চাই। ওদের চাপাতির কোপ আর রডের আঘাত গায়ে নিয়ে আমি যখন বিছানায়, আমাকে দেখতে এসে আমার বস্ স্থপতি এহসান খান আমাকে অবাক করে দিয়ে একটা কথা বলে বসেন, “দেখতে হবে তোমার ছিনতাইকারী কারা, বখে যাওয়া মাদকসেবীরা, নাকি এই শহরের প্রান্তিক বস্তিবাসীদের কেউ, শহর যাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে নাই। একভাবে চিন্তা করলে তোমার সম্পদে তো ওদের হক আছে।“ আমার ছিনতাইকারীদের কমবয়সী মলিন চেহারাগুলা আমার মনে ছিলো, আমি ওদেরকে ক্ষমা করে দিতে পেরেছিলাম। আর মেনে নিয়েছিলাম ছিনতাইমুক্ত শহর গড়ার দায়িত্বটাও শুধু র্যাব-পুলিশের না, আমাদের সবার।
শিরোনামহীন এর ‘শহরের কথা’ গানটার শেষ পঙ্ক্তিটা খুব লক্ষনীয়, “শহর মানেই গ্রামের গল্প!“ শহর মানেই যেন গ্রামের জন্য হাহাকার। গ্রামীণ পরিবেশ শহরে চাইতে যাওয়াটা বোকামি। তা হলে হাহাকারটা কেন? বোধ করি হাহাকারটা একটা স্বাস্থ্যকর ( শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ), পরিবেশবান্ধব, সমাজবান্ধব ‘নাগরিক জীবন’ (urban life) এর জন্য। শহর শুধু কর্মসংস্থান আর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য না, শহর শুধু efficient হলেই হয় না। ‘বাসযোগ্য’ না শুধু, শহরকে হতে হয় তার নাগরিকদের সুস্থ, সুন্দর নাগরিক ‘জীবন’ যাপনের উপযোগী। আর সেরকম শহর গড়ে তুলতে নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ লাগবেই।
নগর আর নাগরিক এর সম্পর্কটা নিশ্চিতভাবেই reciprocal. আবর্জনা জায়গামত ফেলার মানসিকতা, আর আবর্জনা ফেলার জায়গা, কোনটা আগে আসতে হবে বলেন তো? আসলে দুটা একই সঙ্গে আসতে হবে। এই বোধটা আমাদের মধ্যে আসাটা জরুরি। শহর নিয়ে আমাদের দাবিগুলা তা না হলে সত্যিকারের নৈতিক জো্র পাবেনা।
৪।
বিডিআর বিদ্রোহের অল্প কিছুদিন পরে আমি আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলাম, “want BDR HQ, Dhaka Cantt & Mirpur Cantt out of my city.” BDR HQ তে শৈশব কাটানো আমার এক বন্ধু তাতে খুব ভীষণ আহত হয়। সেই শোক বিহ্বল সময়ে, যখন যুক্তিকথা খুব নির্দয় শোনাচ্ছিলো, আমার ক্ষমাপ্রার্থণাটাও খুব আন্তরিক ছিলো। কিন্তু ওই দাবি আমি বারবার তুলবো। আমার ওই বন্ধুর অভিযোগ ছিলো, কোন স্পর্ধায় আমি শহরকে ‘my city’ বলি? এই শহর কি আর্মির শহর না? আমি জানি আমি কতখানি ভালোবাসায় এই ঢাকা শহরকে ‘আমার শহর’ বলি। ভালোবাসলে এই স্পর্ধাটা দেখানো যায়। আমি চাইবো আমরা ঢাকাবাসীরা সবাই অতখানি স্পর্ধা নিয়ে ঢাকা কে ‘আমার শহর’ বলি। যেই আর্মি অফিসার তা বলতে পারবেন, তিনি ক্যান্টনমেন্ট ঢাকার বাইরে নিতে আপত্তি তুলবেন না নিশ্চয়ই। একটা সামগ্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কেউ যদি আমার প্রাণের প্রিয় বুয়েটকে ঢাকার বাইরে চলে যেতে বলে, আমার তাতে বিন্দুমাত্র আপত্তি থাকবে না।
শহরকে ঘিরে আমাদের দাবিগুলা নিয়ে আমাদেরকে আরো উচ্চকন্ঠ হতে হবে। শুধু ‘বাসযোগ্য’, শুধু efficient ঢাকা না, এই দর কষাকষিতে দরটা হাঁকতে হবে আরো উঁচু থেকে। একটা সামগ্রিক দর্শন, সামগ্রিক পরিকল্পনার দাবি জানাতেই হবে। শহরের রাস্তায় আমাদের ‘গনতন্ত্র’ চাইতে হবে। তাই আপনি মেট্রোরেল এর যেই রুটের পক্ষেই থাকুন না কেন, গবেষণা-আলোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবার বিরোধিতা করবেন আশা করি। আমাদের স্থপতিদের পরবর্তী কর্মসূচীতে সবাইকে পাশে চাই আমরা। এই লড়াই কেন স্থপতিদের একার লড়াই হবে? কেন ঢাকাবাসী সবার লড়াই হবে না?
যারা মনে করেন ঢাকাকে একটা সুন্দর নগরীতে পরিণত করা সম্ভব না, তারা ভুল মনে করেন। ঢাকাকে ততটাই সুন্দর করা সম্ভব যতটা আপনারা দাবি করতে পারবেন।
সবাইকে ঈদ মোবারক।
MRT-6 এর রুট নিয়ে অন্য লেখকদের অন্য কোথাও করা আলোচনা পড়তে চাইলে,
http://www.archsociety.com/news.php?item.167.1
http://archsociety.com/archimg/saveparliament/save_parliament_mrt_route_conflict_explained.pdf
ঢাকাকে নিয়ে কিছু বিশিষ্টজনের ভাবনা জানতে চান? আশান্বিত হতে চান এর ভবিষ্যত নিয়ে?
http://www.thedailystar.net/forum/2010/march/newdhaka.htm
http://www.4shared.com/file/2XSf7Lzr/Future_Dhaka.html
একজন সাহসী নগরপিতা, একজন শক্ত ‘মালি’র কঠিন হাতে আগাছা পরিষ্কার করার গল্প জানতে চাইলে,
http://www.pps.org/articles/epenalosa-2/
মন্তব্য
একদম প্রাণের কথাটা বলেছেন।
সাংসদরা কী থেকে নিরাপত্তা চান? মানুষের যাতায়াতের সুযোগ ওখানে ছিলো অনেকদিন থেকেই। কবে কোন নাশকতামুলক কর্মকান্ড, বা কর্মকান্ডের প্লট উন্মোচিত হয়েছে? মাঠের পরেও তো বিরাট একটা পরিখা আছেই! তাহলে আবার নিরাপত্তার ভয় কিসের?
যে 'জনপ্রতিনিধিদের' নিজের জনগনের থেকেই, বিশাল মাঠ, নিরাপত্তাব্যুহ, গভীর পরিখা, ইত্যাদি... ইত্যাদির... নিরাপত্তা লাগে তারা কিসের জনপ্রতিনিধি?
ইন ফ্যাক্ট আমাদের দেশে সংসদ ভবনটাকে তো স্রেফ অপচয় করা হইতেসে। সংসদীয় বিতর্কের মাধ্যমে কোন বড় সিদ্ধান্তে আসতে দেখিনাই আমার রাজনৈতিক জ্ঞান হবার পরে। গেল মূল উপযোগ টা। এই ভবনের যে 'অ্যাসথেঠিক উপযোগ' সেটাও তো জনগন পাচ্ছে না।
মাঝে মধ্যে তো মনে হয়। এর চেয়ে এইটা একটা বড় আর্ট গ্যালারি (বা অন্যকিছু) হইতে পারতো। আর সংসদে বসে সাংসদরা যেসব কাইজ্জা ফ্যাসাদ করে(ইনফ্যাক্ট সেটাও তো করে না!)। সেগুলোর জন্য কোথাও মাটির গভীরে আলাদা কোনো 'বাঙ্কার' (কারণ তারা নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত) বানিয়ে দিলেই হয়!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
তুমি সাংসদীয় বিতর্কের মাধ্যমে বড় সিদ্ধান্তে আসার প্রসঙ্গ তুলছো, আমি আরও সহজ দৃষ্টান্ত দেই, সাংসদ-দের একটা বিশাল বড় অংশই তো সংসদ অধিবেশন বয়কট করে সংসদ ভবনেই যান না দীর্ঘদিন, এবং এটা বিগত সরকারগুলোর সময় থেকেই ট্রেন্ড!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
জনগণ এর দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই যে ক্ষমতায় গিয়ে উলটো জনগণ এর থেকে নিরাপত্তা খোঁজেন, তাদের সাথে একটা দূরত্ব তৈরি করতে সচেষ্ট হন, এর থেকেই কিন্তু জনগণের দাবি বাস্তবায়নে তাদের সততা বা সদিচ্ছার অভাবটা টের পাওয়া যায়।
ঢাকা শহরের মালিকানা বর্তমানে ঢাকা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও তাদের চেলাচামুণ্ডাদের হাতে ন্যস্ত।
আপনার লেখাটা বেশ চমৎকার। নাম লেখেননি কেন?
নাম না থাকাটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। সচলায়তনের নিয়মকানুন পরে মনে হয়েছিলো নতুন লেখককে ‘অতিথি লেখক’ নামেই লিখতে হবে। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
লেখাটা চমৎকার হয়েছে। শেষে এসে লেখকের নাম না দেখে তাই একটু আশাহত লাগলো।
চালিয়ে যান।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমাদের সাথে থাকবেন আশা করি।
সকাল বেলা লেখাটা পড়ে মন ভালো হয়ে গেলো, লেখককে অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ। সাথে থাকবেন.
ভাল লেখেছ অমিত। ঠিক এইরকম চিন্তাভাবনা মাথায় ঘুরতে থাকে, রাস্তায় 'গণতন্ত্রও' চাই, তবে তুমি চমৎকার গুছিয়ে লেখেছ। শহরটা সবার, তবে মালিকানা তারই, সে ভালবাসে শহরটাকে।
"আমাদের স্থপতিদের পরবর্তী কর্মসূচীতে সবাইকে পাশে চাই আমরা। এই লড়াই কেন স্থপতিদের একার লড়াই হবে? কেন ঢাকাবাসী সবার লড়াই হবে না?"
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
ভাইয়া, চি্নতে পারলাম না কিন্তু।
ভাইয়া, ধন্যবাদ, কিন্তু চিনতে পারলাম না যে।
চমৎকার! আপনার ভাবনাগুলো খুব নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
ধন্যবাদ। সাথে থাকবেন কিন্তু।
লেখাটা যতটা না গোছানো, তার চেয়ে বেশি আবেগতাড়িত। তবে ভালো লাগলো।
এই বিষয়টার ওপর আপনাকে আরও কিছু লেখার অনুরোধ জানাতে চাই। ক্রমাগত লেখালেখি হওয়া উচিত যাতে সবার সচেতনতা এবং সম্পৃক্ততা বাড়ে। আর, ঈদের সময়ে অনেকেই অন্তর্জাল থেকে দূরে আছে। ঈদের পরে, এবং তার পরেও, আরও লিখুন এই বিষয়টা নিয়ে।
স্থাপত্যের সাথে জড়িত বলেই শুধু নয়, একজন নাগরিক হিসাবে সাথে আছি, রাজপথে আছি। শুভকামনা।
লেখাটা বেশ তাড়াহুড়ো করে লেখা। আরেকটু ধীরে সুস্থে লিখলে আরো স্পষ্ট হতো হয়তো। আবার নিজেকে যেরকম চিনি, এভাবে এক বসাতে লিখে না ফেললে, বেশি গোছাতে চাইলে হয়ত লেখাটা নামতোই না কখনো। দু-তিন দিন ধরে লিখার কথা ভাবছিলাম, লিখতে বসা হচ্ছিলো না। শুরু তো হলো। আপনারা সবাই লিখবেন।
তুই স্থাপত্যের সাথে জড়িত বলে আবেগ তোকে ছুঁয়ে গেছে। এমনিতে বক্তব্যগুলো স্পষ্ট।
স্ট্রীট অকুপাই এর সাথে সাথে শেষ প্রোজেক্ট কেমন চলে? আসবনে একদিন স্টুডিওতে।
চমৎকার একটি লেখা। আপনাকে ধন্যবাদ।
অতিথি লেখকদের জন্য পোস্টের শেষে অথবা শুরুতে নিজের নাম/নিক লেখাটা কাম্য।
আরিফ ভাই, অশেষ ধন্যবাদ। লেখাটা হয়তো একটু তাড়াহুড়ো করে লিখে ফেলসি। অনেক ভুলত্রুটিও চোখে পড়লো। সচলায়তনে অতিথিদের জন্য লেখা নিয়মকানু্গুলাও মনে হয় তাড়াহুড়ো করে পড়ে গেছি, ‘অতিথি লেখক’ নামে লিখতে হবে এটাই খেয়াল করছি শুধু, লেখার উপরে নিচে নাম লিখা যাবে এমন কোন কথা নজরে পড়েনি। আন্তরিক দুঃখিত। আর আপনাকে কিন্তু ভাইয়া আমাদের সাথে চাই ই চাই।
বুধবারের মানববন্ধনের খবরটা মানববন্ধন হয়ে যাবার পরে স্থপতি বন্ধুর ফেসবুক শেয়ার থেকে জেনে শেয়ার করি। তার আগে অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে জনসচেতনতামূলক যেসব শেয়ারে ফেসবুক ভেসে যায়, সেভাবে কিন্তু চোখে পড়েনি আমার অন্তত। মানববন্ধন হবে সেই বিষয়টা কি সেভাবে প্রচারিত হয়নি? দিন শেষে মনে হলো সত্যিই তো শুধু স্থপতিরাই ছিলেন সেখানে!
আপনার ঐ 'বাবল' সিনড্রোমে নিজেই ভুগি, যতই পাবলিক ট্রান্সপোর্টের জন্যে হাউকাউ করি না কেন।
শুরুর ছবি, নিচে কান-এর কোট আর পুরা লেখাটাই ভালো লেগেছে রেদওয়ান ভাই। সচলায়তনে নিয়মিত লিখবেন সেই আশা প্রকাশ করি। আর লেখার শেষে অবশ্যই নাম দিতে ভুলেন না!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ওই যে বললাম, নগর আর নাগরিকের সম্পর্কটা reciprocal. আপনি আমি যত ‘বাবল’ থেকে বেরিয়ে আসবো, নগরটাকে শোধরানো কিন্তু ততই সহজসাধ্য হবে। পরবর্তী কর্মসূচীর খবর আপনাদের পৌঁছে দিবো। সাথে থাকতে চান জেনে খুব খুশি হলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
কান এর কোটটার অর্থ শুরুতে পুরোপুরি ধরতে পারতাম না। যেদিন থেকে পারি সেদিন থেকে জানি শহর কতটা সুন্দর হওয়া সম্ভব। আজকে বা আগামীতে এই শহরে বেড়ে ওঠা কোন শিশু যেন বড় হয়ে তাসনীম ভাই এর মত অতখানি আবেগ নিয়ে তার স্মৃতির শহর নিয়ে লিখতে পারে, সেই খোরাক, সেই উপজীব্য যেন এই শহর থেকে সে পায়...এটুকু চাওয়াও এখন আমাদের জন্য অনেক বড় চাওয়া।
কান এর কোটটার অর্থ শুরুতে পুরোপুরি ধরতে পারতাম না। যেদিন থেকে পারি সেদিন থেকে জানি শহর কতটা সুন্দর হওয়া সম্ভব। আজকে বা আগামীতে এই শহরে বেড়ে ওঠা কোন শিশু যেন বড় হয়ে তাসনীম ভাই এর মত অতখানি আবেগ নিয়ে তার স্মৃতির শহর নিয়ে লিখতে পারে, সেই খোরাক, সেই উপজীব্য যেন এই শহর থেকে সে পায়...এটুকু চাওয়াও এখন আমাদের জন্য অনেক বড় চাওয়া।
সত্যগুলো একসাথে দেখে ভাল লাগল। বলিষ্ঠ লেখা। ঢাকার আগের ইতিহাস যখন পড়ি, জানি বাগিচা, ঝিল, খালের সমন্বয়ে গঠিত ঢাকাকে আমরা কি করে আজকের সবচেয়ে দূষণীয় শহরে রূপান্তরিত করলাম অবাক লাগে, আরো অবাক লাগে যখন জানি এর পিছনে আমরা সবাই দায়ী নয়, কিছু দখলবাজ মহল দায়ী অনেক অনেক আগে থেকেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়, গার্মেন্টস সহ আর যেগুলো ঢাকার বাহির উপযুক্ত জায়গায় বিকেন্দ্রীকরণ করা দরকার তা তো আপনি লেখেছেনই। কার কথায় যেন শুনছিলাম, যে কোন নগর গড়ার আগে দরকার নগরবিদের পরামর্শ, যে তা আমাদের সমাজে এখনো গ্রাহ্য করা হয় না।
facebook
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
অসাধারণ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ।
চমৎকার একটা লেখা! সাথে আছি
চমৎকার লেখা।
লেখকের নাম জানতে চাই।
নিয়মিত লিখুন।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ। লেখকের নাম তো জানলেন। সাথে থাকবেন।
ধন্যবাদ।
এরকম লেখা আরো চাই । আপনাদের পরবর্তী কর্মসূচী সম্পর্কে আগে ভাগে জানতে পারলে অংশগ্রহণ করবো। এতো চমৎকার আর জনগুরুত্বপূর্ণ লেখায় কেন নাম দেন নি বোধগম্য হলো না।
নিজেরা জেগে না উঠলে সুনিশ্চিত ভোর কোন দিন হবে না...............
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ।
সচলায়তনে স্বাগতম !
আশা করছি এরকম লেখা আরো পাবো ! ভাসমান নাগরিক হয়েও ঢাকা নিজের শহর না এটা ভাবনাতেই আসে না ! ঢাকা নিজের না হলে আমার নিজের কোনটা হবে !
শ্বাসরোগীর মতো হাসফাঁসে এই ঢাকার চেহারা তো আসলে নাগরিকদেরই চেহারা ! আমরা সুস্থ হতে চাই, ঢাকাকে স্বাস্থ্যবান বানাতে চাই।
অভিনন্দন আপনাকে। কিন্তু নামটা জানা হলো না।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেকে ধন্যবাদ।
"শ্বাসরোগীর মতো হাসফাঁসে এই ঢাকার চেহারা তো আসলে নাগরিকদেরই চেহারা !" কথাটা দারুণ লাগলো।
অসাধারণ লেখা, সাধুবাদ জানাই!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অনেক ধন্যবাদ।
লেখাটা লিখেছেন, রেদওয়ান বাশার। সচলায়তনে এটাই তার প্রথম লেখা, তাই শেষে নাম উল্লেখ করার ব্যাপারটা খেয়াল করতে পারেনি। মডারেটরদের অনুরোধ করব, লেখার শেষে অনুগ্রহ করে তাঁর নামটা জুড়ে দিতে।
সাফি দোস্ত, তোকেও একটা ধন্যবাদ দিয়েই দেই
ঢাকার মত একটা ফ্ল্যাট শহরে কেন রাস্তায় কোন বাইক লেইন থাকেনা? বাইকারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলেই তো ঢাকার রাস্তার চেহারা অর্ধেক বদলে যাওয়া উচিত।
লেখাটা খুব ভালো লাগলো রেদওয়ান। নিয়মিত লিখুন সচলায়তনে, নিবন্ধনও করে ফেলুন।
আপনার সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ করছি একটা ব্যাপারে।
হিমু ভাই, অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে! ওই ব্যাপারে যত জলদি সম্ভব জানাবো আপনাকে।
চমৎকার।
ধন্যবাদ।
আমার এই শহরে একটা ব্যপারে ভীষণ উদাসীনতা, শহরের কোন একটা প্ল্যনিং এ স্থপতিদের কথার বা মন্তব্যের কোন জায়গা দেওয়া হয়না, ঢাকা শহরের মাস্টার প্ল্যন নিয়ে আমাদের স্থপতিদের কত মতামত আছে , কিন্তু কোথাও বলার সুযোগ নাই, আমাদের ডিজাইন স্টুডিও তে আমরা যখন কাজ করি শুধু তখনি এইগুলা বলার সুযোগ পাই, আর না হলে সিদ্ধান্ত গ্রহনের পর আমাদের পথে নামতে হয়!!!এইবার সমাবেশে অনেক অভিজ্ঞ এবং সিনিয়র স্থপতি, ওইখানে গিয়ে মনে হল, এই মানুষগুলো তো ঢাকার বর্তমান স্থাপত্যশৈলীর কারিগর, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর এরকম সিদ্ধান্তে এনাদের জায়গা কই??মানতে পারিনা, নিজেদের কোন জায়গা ত খুজে পাচ্ছিনা!!!!
শহরের কোন একটা প্ল্যনিং এ স্থপতিদের কথার বা মন্তব্যের কোন জায়গা দেওয়া হয়না,
01.kon dhaka sohor er kon jaygar masterplan er kotha bolteso?link dao(i m afraid if any).
তাহলে প্রধানমন্ত্রীর এরকম সিদ্ধান্তে এনাদের জায়গা কই??মানতে পারিনা, নিজেদের কোন জায়গা ত খুজে পাচ্ছিনা!!!!
02.if you ever get a chance to ask please ask 100 people as they are aware what an architect(should) do
লেখাটায় কিছু ভুলত্রূটি চোখে পড়লো, কিছু বানান ভুলও আছে। ছোট ভুলগুলার কথা ছেড়ে দেই, কিন্তু একটা তথ্যের ভুল সংশোধন করা দরকার। মানববন্ধনটা আহবান করেন স্থপতি ইকবাল হাবিব, অনেকটা ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্যোগেই। উনি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর যুগ্ম সম্পাদক। মানববন্ধনটা উনি আহবান করেন বাপা’র হয়ে, স্থপতি ইন্সটিটিউট তাতে সক্রিয় সমর্থণ দেয়। BIP, IEB, BELA, POBA, ArchSociety এসব সংগঠনেরও সমর্থণ ছিলো। কিন্তু ঘুরেফিরে তো স্থপতিদেরই প্রাধান্য ছিলো, এক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ছাড়া উল্লেখ করার মতন কোন অ-স্থপতিকে আমরা পাইনি।
আরেকটা কথা, সবাই লেখায় শেয়ার করা লিঙ্কগুলা পড়ে দেখছেন তো, ওগুলাকে কিন্তু এই লেখার উল্লেখযোগ্য অংশ বলবো আমি। আমার লেখাটা একটা prologue মাত্র। সবাই লিঙ্কগুলা পড়ে দেখবেন প্লিজ। শহরটাকে বুঝতে পারবেন, জানতে পারবেন, শহর নিয়ে ভাবনার খোরাক পাবেন ......শহরটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার সাহস পাবেন।
আমাদের প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ না হলে ঢাকার ওপর থেকে ছাপ কোন ভাবে কমান যাবে বলে আমি মনে করি না। ঢাকাকে সব কিছুর কেন্দ্রে রাখার জন্যই সবাই শুধু ঢাকায় আসছে। এই ঢাকামুখী স্রোত কমানো গেলেই ঢাকা বাসের উপযোগী হবে।
খুবই ভাল লাগল লেখাটা
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ভালো লাগলো! সুন্দর স্পষ্ট উচ্চারন!
বাবল থেকে বেড়িয়ে এসেছি অনেক আগেই, যথেষ্ট সাহস নিয়ে চলাফেরা করি, কিন্তু নিত্য নতুন ভয়ে ভেতরটা কুঁকড়ে থাকে। এই ভয় নিয়ে বাস করাটা বড় কষ্টের।
আর, সামনে আরও লিখবেন আশা করি।
শহররক্ষায় সাথে আছি।
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
ভাল লাগল আপনার ভাবনা এবং উপস্থাপনা।
আমাদের সংসদ ভবন নিয়ে খুব ভেবেছি এমন নয়। জার্মানী থেকে খণ্ডকালী সময়ের জন্য এক স্থপতি বছরে বা কয়েক বছরের বিরতিতে ঢাকায় যান। কোন এক অনুষ্ঠানে তাঁর সাথে আলাপ। একজন বিশেষজ্ঞ হিসাবে তাঁর মুখে সংসদ ভবনের প্রশংসা শুনে খুব ভাল লেগেছিল।
সংসদ ভবনে এখন আর সাধারণের প্রবেশাধিকার নেই! অবাক লাগছে। আমাদের সপ্তাহের একমাত্র বিনোদন ছিল সেখানে হেঁটে বেড়ানো।
ঢাকাবাসীর পক্ষে নৈতিক সমর্থন রইল। লুৎফর রহমান রিটনের একটা ছড়ার নাম ছিল "ঢাকা আমার ঢাকা"। একটাই ছড়া লিখে তিনি একটা বই করেছিলেন। এত নির্দয় ভাবে ঢাকার বাস্তব চিত্র আর কোথাও পড়িনি।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
চমৎকার লেগেছে পোস্টটা। নিয়মিত লেখার অনুরোধ জানাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
সহমত। এই প্রসঙ্গে আরেকটি বিষয় মনে আসলো। ঢাকাকে দু'ভাগ করাটার বিরুদ্ধেও ঢাকাবসীকে জড়ো করানো উচিত একই সাথে।
অসাধারন একটা লেখা।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ভালো হয়েছে লেখাটা।
সবাইকে আবারো ধন্যবাদ।।
চমৎকার একটি লেখা। আপনার লেখা আশাবাদী হওয়ার প্রেরণা জোগায়।
তথাকথিত সংবেদনশীল স্থাপনার বা এলাকার বাসিন্দা কিংবা ব্যবহারকারী অতিগুরুত্বপূর্ণ মহাজনেরা, সাধারণ জনগনকে যারা জঞ্জাল ছাড়া অন্য কিছু ভাবেননা; ঢাকার বাইরে নিশ্চিন্ত নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত হতে তাদের আপত্তি কেন।
ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আর অন্যান্য নাগরিক সুযোগ সুবিধার এই বেহাল অবস্থায়ও, মানুষ কেন ঢাকা ছেড়ে বেরোতে চায়না এই বিষয়টা নিয়েও আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।
ভাল লিখেছ অমিত। বেশী ভাল লাগল, কারণ, লেখাটা নাগরিক দৃষ্টিকোণ থেকে লিখা (স্থাপত্যের দৃষ্টিকোণ থেকে নয়)।
প্রথমেই অনুরোধ রইল আমার প্রশ্নগুলোকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার...
দ্বিতীয়ত অনুরোধ রইল নিরপেক্ষ জবাবের...
#১ MRT-6 লাইন দীর্ঘ ২.৪ কিমি তেজগাঁও বিমানবন্দরের কোল ঘেঁষে আসলেও যে বিমানবাহিনী কোন আপত্তি করেনি, রোকেয়া সরনি-এয়ারপোর্ট রোড লিঙ্ক রোডের জন্য যে বিমানবাহিনী নিজ জমির উপর দিয়ে ২.২ কিমি রাস্তা বানাতে আপত্তি করেনি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের রাস্তার জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজ জমির উপর খাল কাটতে যে বিমানবাহিনী কোন আপত্তি করেনি..., বিজয় সরণির অল্প একটু জায়গার জন্য কোন যুক্তিসঙ্গত কারন ছাড়াই কি আমার দেশের বিমান বাহিনী তাতে আপত্তি করবে?
#২ মনিপুরি পাড়ার রাস্তা দিয়ে MRT-6 গেলে ১৫০০ ফিট দূরের সংসদ ভবনের আসলে কী ক্ষতি সাধন হয়? মেট্রো রেল দেখেছি মালয়শিয়ার টুইন টাওয়ারের পাশ দিয়ে, সিডনীর অপেরা হাউসের কোল ঘেঁষে; কই, এতে তো এদের নকশার কোনো ক্ষতি চোখে পড়েনি, বরঞ্চ ভালো একটা Sight-Seeing Tour হয়েছে বলতে পারেন। সাউথ প্লাজা খুলে দেয়ার পাশাপাশি MRT-6 ও কি সংসদ ভবনের সৌন্দর্য উপভোগের একটা চমৎকার মাধ্যম হয়না কি?
#৩ বয়সে অনেক বড় আপনি, যবে থেকে বুয়েট স্থপতি প্রসব করছে আমার বাবাও হয়ত তবে প্রসূত হননি। এই যুগের হয়ে আপনাদের যুগের কাছে তো আমরা তাহলে প্রশ্ন করতেই পারি -- "এতদিন তাহলে কী *** টা করেছেন আপনারা? "
প্রথমেই আপনাকে স্বাগত জানাই, একজন বিমানবাহিনী অফিসার কে এই বিতর্কে দেখে ভালো লাগলো।
এবার উত্তরে যাই।
#১
“রোকেয়া সরনি-এয়ারপোর্ট রোড লিঙ্ক রোডের জন্য যে বিমানবাহিনী নিজ জমির উপর দিয়ে ২.২ কিমি রাস্তা বানাতে আপত্তি করেনি।...“
-নগর পরিকল্পনাবিদদের মতামতটা ছিলো রাস্তাটা জাহাঙ্গীর গেট থেকে সরাসরি আগারগাও এর সাথে সরলরৈখিকভাবে লিঙ্কড হোক। নগরপরিকল্পনাবিদ হবার দরকার নেই, সাধারণ কমন্সেন্স নিয়ে একবার গুগল আর্থে ঢাকাকে দেখুন। ওই লিঙ্কটা কেন বেশি ভালো হতো এবং সেনানিবাস, বিজিবি হেডকোয়ার্টার আরো কত জরুরি লিঙ্ককে আটকে রাখে, বুঝলেও বুঝতে পারেন।
“ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের রাস্তার জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজ জমির উপর খাল কাটতে যে বিমানবাহিনী কোন আপত্তি করেন...“
-আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু এটুকু করেই ঢাকাবাসীর জন্য অনেক করেছেন এমন ভেবে থাকলে আরো ভাবতে বলবো।
“MRT-6 লাইন দীর্ঘ ২.৪ কিমি তেজগাঁও বিমানবন্দরের কোল ঘেঁষে আসলেও যে বিমানবাহিনী কোন আপত্তি করেনি, বিজয় সরণির অল্প একটু জায়গার জন্য কোন যুক্তিসঙ্গত কারন ছাড়াই কি আমার দেশের বিমান বাহিনী তাতে আপত্তি করবে?”
- লেখার মূল সুরটা যদি ধরতে পেরে থাকেন তা হলে বোঝার কথা এই প্রসঙ্গে আমি আলোচনা/গবেষণা দেখতে চাই। গা এর জোরে চাপানো সিদ্ধান্ত মানতে চাইনা। গনতন্ত্রের চর্চা চাই। ক্যান্টনমেন্টে আপনাদের গনতন্ত্র দরকার নাই। উর্ধতন কর্মকর্তা যখন বলবেন ‘শুট’...it is better for the sake of warfare that u shoot, & not question his command. শহরে আমাদের chain of command মেনে চলার জরুরত নাই, আমাদের দরকার গনতন্ত্র। যদি তর্কে প্রমাণ করতে পারেন, যদি নগরবিদ, পরিকল্পনাবিদদের যুক্তি খন্ডাতে পারেন, আমরা মেনে নিবো। আর যেই ব্যাপারে যে বিশেষজ্ঞ তাকে কথা বলতে দেন। নগরবিদকে যুদ্ধ পরিচালনা, আর জেনারেলকে নগর পরিকল্পনা করতে বলবেন না। এবার কিছু পড়ালেখা করেন। আমার শেয়ার করা লিঙ্কগিলাতে একটু ঢুঁ মারুন।
#২ মনিপুরি পাড়ার রাস্তা দিয়ে MRT-6 গেলে ১৫০০ ফিট দূরের সংসদ ভবনের আসলে কী ক্ষতি সাধন হয়? মেট্রো রেল দেখেছি মালয়শিয়ার টুইন টাওয়ারের পাশ দিয়ে, সিডনীর অপেরা হাউসের কোল ঘেঁষে; কই, এতে তো এদের নকশার কোনো ক্ষতি চোখে পড়েনি, বরঞ্চ ভালো একটা Sight-Seeing Tour হয়েছে বলতে পারেন। সাউথ প্লাজা খুলে দেয়ার পাশাপাশি MRT-6 ও কি সংসদ ভবনের সৌন্দর্য উপভোগের একটা চমৎকার মাধ্যম হয়না কি?
-ওই ১৫০ ফিট (১৫০০ ফিট পর্যন্ত যেতে হবে না) জুরে যেই রাধাচূড়া, সোনালু গাছের বেল্টটা আছে, তা সংসদভবনের নান্দনিকতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। KLCC একটা CBD (commercial business district) & so is sidney harbour (perhaps two of the major CBDs in the world) ...MRT ওইখানে মানিয়ে যাবারই কথা। সংসদ ভবনের aesthetics অন্যরকম। এর landscape নদীমাত্রিক ব্-দ্বীপ দ্বারা অনুপ্রাণিত। আপনার কথায় আরেকটা ইঙ্গিত আছে, এবং তা যুক্তিযুক্ত। এবং আপনাদের পক্ষ নেয়া ( হতে পারে কিনে নেয়া ) বুয়েট প্রফেসরদেরকেও একই যুক্তি দিতে শুনেছি, সেটা হলো MRT-6 সংসদভবন দিয়ে গেলে একটা urban integration তৈরি হবে। এই সম্ভাবনা আছে, কিন্তু সেজন্য যেই দক্ষ, সুবিবেচনাপ্রসূত, সংবেদনশীল ডিজাইন লাগবে, তার নিশ্চয়তা কে দিবে? সেরকম ডিজাইন করবার সুযোগ আমরা পাইনা তো।
তারপরও বলি, এই ব্যাপারে আমাদের কোন বাড়াবাড়ি নেই, কোন আদিখ্যেতা নেই। যদি শহরের বৃহত্তর স্বার্থে দরকার হয়, না হয় ওই দক্ষিণ প্লাজা দিয়েই যাক MRT এর লাইন। যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেন বি্জয়সরনি দিয়ে না গিয়ে সংসদ ভবন, ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল, আনোয়ারা পার্ক নষ্ট করে, ভেঙ্গে দিয়ে রুটটা গেলেই কেন বেশি ভালো হয়।
#৩ বয়সে অনেক বড় আপনি, যবে থেকে বুয়েট স্থপতি প্রসব করছে আমার বাবাও হয়ত তবে প্রসূত হননি। এই যুগের হয়ে আপনাদের যুগের কাছে তো আমরা তাহলে প্রশ্ন করতেই পারি -- "এতদিন তাহলে কী *** টা করেছেন আপনারা? "
-বাংলাদেশে স্থাপত্যশিক্ষার শুরু পাকিস্তান আমলে। স্থাপত্যচর্চার ইতিহাস আরো পুরনো। তবে নগরায়ন এর ইতিহাস পরাধীন অবস্থাতেই শুরু। মোঘল-ব্রিটিশ-পাকিস্তান...৩ টা আমলই ছিলো ঔপনিবেশিক। সে সময় নগরায়নের পিছনে রাজনৈতিক অভিপ্রায় ভিন্ন ছিলো। স্বাধীন হবার পর ‘পরিকল্পনা কমিশন’ তৈরি হয়। তাদের কিছু বিশেষজ্ঞ মতামত ছিলো। শীর্ষস্থানীয় স্থপতি মাজহারুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুকে সুনির্দিষ্ট কিছু গাইডলাইন এবং ড্রইংও তৈরি করে দেন। কতিপয় ‘পথভ্রষ্ট’ আর্মি অফিসারের হাতে তিনি নিহত হবার সাথে সাথে সেসবেরও মৃত্যু ঘটে। এরপরের সামরিক শাসনামলে গনতন্ত্র চর্চার সুযোগই ছিলোনা। আর জনৈক বিশ্ববেহায়া লেজে হুমো এরশাদ এমনভাবে দেশের প্রশাসনিক/রাজনৈতিক মেরুদণ্ডটা ভেঙ্গে দিয়ে যায় যে, ২০ বছরের গনতন্ত্রের চর্চায়ও তা শোধরানো যাচ্ছে না।
তবু গনতন্ত্রের জন্য লড়াইটা চলছে তো, বাপা/স্থপতি ইন্সটিটিউট অনেকদিন ধরেই অনেক দাবি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ৯৬ এর ‘ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড’ আর ২০০৭ এর ‘ইমারত নির্মাণ বিধিমালা’ এদের অন্যতম অর্জন। DAP ‘ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান’ ও প্রনয়ণ করা হয়ে আছে, বাস্তবায়ন আটকে আছে স্বার্থান্বেষী মহলের চাপে। জামিলুর রেজা চোধুরী, ইকবাল হাবিব প্রমুখ শুধু কাগজে কলমে লিখে দিয়েই ক্ষান্ত দেননি, দারূণ সাহসিকতার সাথে লড়ে যাচ্চেন DAP বাস্তবায়ন করতে।
তারপরও স্বীকার করে নেই আমাদের মাঝে অনেকেই এই 'বাল ফেলায়'(এটাই বলতে চেয়েছেন তো? ভয় পান নাকি? বলেন। এটা আর্মি না, কেউ কিছু বলবে না আপনাকে।) অংশ নেয় নাই... স্থপতি/পরিকল্পনাবিদরা তাদের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে সবসময় সৎসাহসী ছিলেন না, একথাও সত্য। আমাদের দেশ স্থপতিদের অর্জন কম না, অনেক আন্তর্জাতিক পুরষ্কার, সম্মাননা আছে তাদের ঝুলিতে। সেইচেলস, কেনিয়া, হাইতি, ভূটান, আফগানিস্তান এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকাতেও কাজ করে বাংলাদেশি স্থপতি/স্থাপত্যসেবা দানকারী ফার্ম। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে একটা পেশাজীবী সম্প্রদায় হিসেবে তাদের আরো অনেক দূর যাবার আছে, তাদের আরো অনেক কাজ বাকি। সেই দায়িত্ব পালন করার তাগিদ আমাদের আছে। আমাদের সাথে থাকেন।
ধন্যবাদ জনাব "কাযী ইস্তিয়াক যামান"
আপনার সুচিন্তিত (!) মতামত প্রকাশের জন্য
আপনার কথায় যুক্তি আছে বইকি
#১ _ পেট্রোনাস টাওয়ার বা সিডনী অপেরা হাউসের সামনে/পাসে দিয়ে যদি মেট্রো যেতে পারে তবে সংসদ ভবনের পাসে দিয়ে কেন যেতে পারবে না? ( তিনটিই অনবদ্য স্থাপত্যকর্ম, কিন্তু আপনি একটি তেল কোম্পানী'র হেডঅফিস আর একটি নাচঘরের সাথে একটি দেশের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্যের প্রতিক কে মিলিয়ে ফেললে কার কি বলার আছে বলুন )
#২ _ সংসদ ভবন কমপেক্সের ভিতরে দিয়ে যদি মেট্রো রুট টা যায় তাতেই বা কি সমস্যা ( জী ভাই, কোনোই সমস্যা নাই। যতোদুর জানি দেশের গোয়েন্দা বাহিনীগুলো মোর অর লেস সামরিক নিয়ন্ত্রনেই চলে, সেই সামরিক কর্মকর্তা নিয়ন্ত্রিত গোয়েন্দা সংস্থাসমুহের পরামর্শেই কিন্তু সংসদ ভবনের দক্ষিন চত্ত্বর জন্সাধারনের জন্য নিষিদ্ধ এবং এখন সেই সামরিক বাহিনী'র একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বলছেন সংসদ কমপ্লেক্সের ভিতর দিয়ে একটি গনপরিবহন ব্যাবস্থা নিয়ে যেতে। আপনি এখন বলেন এটা কি বেশখানিকটা স্ববিরধিতা হয়ে গেলো না? )
#৩ _ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দেশের গর্ব, সুধু সামরিক বাহিনী'র নয়। বিমানবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্য রক্ষার সাথে সাথে দুর্যোগ মকাবেলা, শিক্ষা প্রশার প্রভিতি কাজে অবদান রেখে চলেছে। এমনকি তারা নিজ বিমানঘাটি'র জায়গা ছেড়ে দিয়ে রাস্তা করেছে, খাল কেটেছে। সেই বিমানবাহিনী অবশ্যি কোনো যুক্তি সংগত কারনেই মেট্রো রুট পরিবর্তন করতে বলেছে। ( বিমানবাহিনী এটাও জানে যে এই বিমানঘাটি যে কোনো যুদ্ধে অব্যবহার যোগ্য, কারন তা রাজধানী শহরের মাঝে অবস্থিত বিধায় স্ট্র্যাটিজিক কারনে অনেক দুর্বল। সুতরাং বিমানবাহিনী এই স্থানে আবাসিক এলাকা গড়ে তুলতে চায়। ঘাটি সরিয়ে নেওয়ার অপ্সহন কিন্তু একটা নয়, আসলে দুইটা, কুর্মিটোলা এবং পাহাড় কাঞ্ছনপুর। তাহলে আমি বোধ করি বুঝতে ভুল করছি কোন শক্তিশালী যুক্তি'র আওতায় মাননীয় বিমানবাহিনী প্রধান রুট পরিবর্ত চান? তার আবাশিক এলাকার শান্তি নষ্ট হওয়ার ভয়ে কি? )
#৪ _ রাধাচুড়া, সোনালু গাছ তো ৭০' (!) দূরে ভাই, তাইলে আর সমস্যা কি? না হয় আরো কিছু গাছ কাটা পরলোই ( গাছের তিনটি সারি নতুন রুট এর কারনে কাটা পরবে সেটা হয়তো বিমানবাহিনী'র মাথা ব্যাথা'র কারন নয়, ফ্লাই কইরা আশমানে উঠলেই তো ভাই বিশুদ্ধ বাতাস, শহরে কি আর গাছ কাটে না মানুষ? আযাইরা পেচাল পাতাসে হুদাই। কিন্তু একজন শিল্পি'র শিল্পগুন এর জন্য যে পরিবেশ লাগে সেটা যদি নাই বুঝি তাহলে আর যুক্তি কিয়ের )
#৫ _ সেই ১৯৬৫ থেকে বুয়েট এবং পরবর্তি সময়ে অন্য প্রতীষ্ঠান গুলো থেকে যে স্থপতিরা, পরিকল্পনাবিদ্রা বেরিয়েছেন তারা কি **** ফেলেছেন? ( বিমানবাহিনী সদর দপ্তর, ট্রাস্ট টাওয়ার, ফ্যালকন টাওয়ার, নিউ গলফ ক্লাব, ডিওএইচএস এর দালান সমুহ তো রাজমিস্তিরিরা এম্নিতেই বানাইতে পারে। এইগুলাও এমনিতেই হয়ে গেছে। ভাই একটা মেট্রো রুট একটি মহান স্থাপত্য কর্মের উপর দিয়ে যাচ্ছে, সেটার প্রতিবাদ করাতেই আপ্নের যে চিল্লাচিল্লি, তাইলে বুঝেন আপ্নের উপরের হর্তাকর্তারা এই প্রসংগে এবং অন্য সব ব্যাপারে আমাদের কতটা বিপাকে ফেলেন)
#৬ _ বিমানঘাটি বা সেনানিবাস রাজধানীতে থাকলে সমস্যা কি, বরং তাতে রাজধানী শহরের নিরাপত্তা বাড়ে ( আমরা তো কথায় কথায় ভারত-পাকিস্তানের উদাহরন টানি, একবার দেখুন তো দিল্লী তে সামরিক স্থাপনা গুলো কই, ইসলামাবাদে কোনো সামরিক স্থাপনা আছে কিনা, রাওয়ালপিন্ডি শহরটি কেনো বানানো হয়েছিলো, আর দিল্লী তে মেট্রো রুট কেনো অর্ধেক মাটি'র উপর আর অর্ধেক মাটি'র নিচে )
চমৎকার লেখা । আপনার কাছ থেকে এধরনের আরও লেখা আশা করছি ।
রেদোয়ান বাশার (অমিত) কে ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
বেশ কয়েকদিন সচলে ঢুঁ মারা হয়নি, রাতুল বলল আজকে, এসেই এক নিশ্বাসে পড়লাম। ভালই লিখেছিস.....আর জনৈক বিমানবাহিনী অফিসার 'যাযাবর'এর মন্তব্যের জবাবও দিয়েছিস ভাল......তাকে শুধু আর কয়েকটা প্রশ্ন করতে পারিস যেমন -
১. নৌ সদর দপ্তর চট্টগ্রাম/ মংলা বা অন্য কোন নৌ বন্দরের কাছাকাছি না হয়ে ঢাকাতে কেন ?
অথবা,
২. এই শহরে যেখানে উত্তর- দক্ষিন মুখী সড়কের অভাব, সেখানে জাহাংগীর গেইট আর পিলখানা তে ধাক্কা খেয়ে দিনে কত কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে?.........
এই রকম আরো কয়েক ডজন প্রশ্ন রেডী ছিল।
আরেকটা কথা, পারলে নিয়মিত লিখিস। নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে কুম্ভকর্ণের ঘুম দিস না।
নতুন মন্তব্য করুন