প্রথম পর্ব http://www.sachalayatan.com/node/48143
রিনার শ্বশুরের নাম রহমত আলী। প্রায়মারী স্কুলের হেডমাস্টার। গনিতের শিক্ষক। বিকেল বেলা একা একা বাড়ি ফিরছেন। তীব্র গরম পরছে। তার ব্যাপক তেষ্টা পেয়েছে। ছাতি বন্ধ করে রহমত সাহেব, রাস্তার পাশের চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়ালেন। পানি চাইলেন।
চায়ের দোকানে এক দরবেশ বেশী ব্যক্তি বসে চা খাচ্ছিলেন। বয়স তার পঞ্চাশের উপরে। পরিপাটি সাজসজ্জা। চোখে সুরমা লাগিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। চোখে সুরমা লাগালে দৃষ্টি পবিত্র থাকে।
চুল দাড়ি সব পেকে গেছে। মেহেদী লাগিয়ে সব লাল করা হয়েছে। মাথায় তার মস্ত বড় জিন্না টুপি। একেবারে যাকে বলে, ধার্মিক বেশ।
কি ব্যাপার রহমত ভাই ? কেমন আছেন ?
এইত, আছি। আছি,কোন মত ।
“কোন মত” বলতে নেই। বলেন, “আলহামদুল্লিলাহ, ভাল”।
দুঃখিত। ভুল হয়ে গেছে। আর হবে না। ভাল আছি আপনাদের দোয়ায়।
দেশের অবস্থা তো তেমন একটা ভাল না। খবরাখবর রাখেন ?
রাখি। দেশ নিয়ে চিন্তা সবাই করে।
তোমার আবার চিন্তা কি ? ঘরে বউ, বেটার বউ আছে। নাতি আছে। তোমার তো এখন সুখের সময়। রোজগেরে ছেলে থাকতে তোমার কাজ করার দরকার কি ? তুমি বিশ্রাম নাও।
এতকাল কাজ কারবার করছি। কাজে ডুবে না থাকলে সময় কাটে না।
ভাল, ভাল। কাজ পাগল মানুষের দরকার আছে। তুমি তো আবার মাস্টার মানুষ। তয়, তোমার ছেলে কই ? অনেকদিন তার কোন খোঁজখবর নেই।
ঢাকায় আছে। চাকরি বাকরি করছে।
ঢাকায় আবার চাকরি বাকরি চলছে না কি ? খোঁজখবর নিও। কাফেরের প্ররোচনায় যেন মুক্তি বাহিনীতে যোগ না দেয়। পোলা পাপ করলে, তুমি বাপ হয়ে পাপের ভাগীদার হইবা। তাই সাবধান।
ঠিক আছে।
শুনলাম তোমার বেটার বউ আবার পোয়াতি হইছে। মাসআল্লাহ, তোমার বড় কপাল। পোলারে কইবা, বাড়ি ফিরে আসতে। বউরে সময় দিতে। ঢাকার অবস্থা খুবই খারাপ। চাকরি বাকরি আগে, না জীবন আগে। তবে, চিন্তা করার কোন কারণ নেই। খুব তাড়াতাড়ি পাকিস্তানী বাহিনী সব কিছু আবার নিয়ন্ত্রণে নিব। সব আগের মত হয়ে যাবে।
হুম।
তোমার ছেলে কিসে চাকরি করে ?
ব্যাংকে।
ওহ। ঠিক আছে। আমি যাই। আমার কিছু জরুরী কাজ আছে। পরে দেখা হবে। সাবধানে থেকো।
মজিদ চলে গেল। রহমত সাহেব কিছুক্ষণ থমকে দাড়িয়ে রইলেন। অতঃপর ছাতি ফুটিয়ে আবার হাঁটতে শুরু করলেন। চোখ তার মাটির দিকে। মনে তার প্রশ্ন। মাটি, তুমি কার ?
৫
রিনার শ্বশুরবাড়ির পেছনে বিশাল বাঁশবাগান। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নদী। নদীতে স্রোত নেই। মরা নদী। পানি ময়লা হয়ে গেছে। নদীর অবস্থা যেন স্থবীর জীবনের মত। বাঁশবাগানের পেছনে বেশ বড়সড় জঙ্গল। গ্রামের ভাষায় যাকে বলে জংলা।
আফসার সিগারেট ধরালো। জঙ্গলের মাঝে দিনের বেলাতেও বড় বড় মশা। সিগারেটের ধোয়া মশা তাড়াতে পারে বলে আফসারের বিশ্বাস। কতটুকু বাস্তব সম্মত, সেটা অবশ্য প্রশ্ন সাপেক্ষ।
দশজন মুক্তিযোদ্ধার একটি দলের আগমন। আফসার এই দলের লোক। দলটির মুল ঘাটি পাশের গ্রাম, কাশীপুরে। সেখানে বেশ জোরেসোরেই চলছে গেরিলা কার্যক্রম। আফসার ও তার দুজন সহযোগী সহ দলটির মোট সদস্য এখন তের জন। আগে ছিল পঁচিশ জন। বারো জন ইতিমধ্যে সম্মুখ সমরে শহীদ হয়েছেন।
আফসার ও তার দুজন সহযোগীকে এই গ্রামে পাঠানো হয়েছে অস্ত্র মজুদ ও নতুন মুক্তিবাহিনীর সদস্য সংগ্রহের জন্য। অনেক বাঙ্গালী সন্তান যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরার জন্য মুখিয়ে আছে। আফসার ভারতে গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়েছে যুদ্ধের প্রথম দিকে। পর্যাপ্ত অস্ত্র মজুদ করে, এই গ্রামের ছেলেদের সাথে নিয়ে নিজ গেরিলা বাহিনী গঠন করা তার স্বপ্ন।
দশজনের মুক্তিবাহিনীর দলটি একজন পাকসেনাকে সাথে নিয়ে আসলো। আজ সকালে তাকে পাকড়াও করা হয়েছে।
আফসার সিগারেট ফেলে দিল। দলে তার চাইতেও বেশ কয়জন বয়জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি আছে। গুরুজনের সামনে সিগারেট খেতে নেই। এটাই ভদ্রতা।
এই দলের নেতা আজিম। সে আফসারকে দেখে হাসিমুখে বলে উঠলো, কি রে ? সব ঠিকঠাক আছে তো ?
হ্যাঁ। এইটারে কই পেলেন ?
সকালবেলা করিমের বাড়ির সামনে আধমরা হয়ে পড়ে ছিল। গতরাতে কাশীপুরে পাক বাহিনী টহল দিতে আসছিল। তখন আক্রমন করছিলাম। ওখান থেকে হারামজাদা জান নিয়ে দিক-বিদিক ভুলে পালিয়ে পাশের গ্রামে চলে আসে। হাতে গুলি লাগছে।
বাংলা বোঝে ?
একদম না। নাম তার আমির। বাড়ি লাহোরে।
ওকে এখানে আনলেন কেন ? এ কোন কাজে আসবে ?
মনে হয় আসবে। ওর কাছ থেকে ছোটখাটো তথ্য পেলেও, লাভ। দুনিয়াতে কোন কিছু বৃথা যায় না।
তা না হয় ঠিক আছে। কিন্তু, আমাদেরই খাবার জোগাড় হয় না। আবার একটা অতিরিক্ত মুখ। রাতে আপনারা চলে যাবেন। থাকবো শুধু আমরা তিনজন। এটাকে রাতে কই রাখব ?
এখানেই বেধে রাখবা।
মশার কামড়েই তো মারা যাবে।
গেলে যাবে। মশা খোদার সৃষ্টি। নমরুদের মত শয়তান মারতে খোদা মশা বানাইছিল। ওদের মত শয়তানের রক্ত খাবার অধিকার মশার আছে। ওটাই ওর শাস্তি। কত নিরিহ মানুষ মেরেছে, তার ঠিক আছে? শকুন, কুকুরে তা সাবাড় করেছে। এখন শালারা মশার কামড়ে মরুক। ক্ষতি কি ? এমনিতেও তো ওর কপালে মরন ছাড়া আর কিছুই নেই। আজ মিজান তোমাদের সাথে থাকবে। ও ভাল উর্দু বলে। দেখা যাক, ও কোন কথা বের করতে পারে কি না।
ঠিক আছে।
আজিমের সাথে যখন আফসারের কথোপকথন চলছে, সে সময় তার অন্য সহচরেরা পাক সৈনিকটিকে গাছের সাথে শক্ত করে বাধছে। এ বাধন মনে হয় না আর খুলবে। একজন তাকে পানি খাওয়ালো। এই দেখে বাঘের মত গর্জন করে খানিক দূর থেকে রাশেদ ছুটে এল।
ওকে পানি খাওয়াচ্ছিস কেন ?
হিরা বলল, ‘ভাইজান, এর নাকি সকাল থেকে খুব তেষ্টা পাইছে। বুক ফেটে যাচ্ছে’।
ও বললো আর ওমনি তুই ওকে পানি দিলি। আমাদের কাউকে জিজ্ঞাসা করেছিস ?
ভুল করেছি, ভাইজান। আর দ্বিতীয়বার এমনটি হবে না।
আজিম কথা থামিয়ে রাশেদের কাছে আসলো। তার কাধে হাত রেখে শান্ত হতে বলল। ‘সামান্য পানিই তো দিয়েছে। বাদ দাও’।
বাদ দিব কেন, ভাইজান ? পানি মোটেও সামান্য না। রহিম যখন পাক বাহিনীর হাতে ধরা পরছিল, তখন ওরে কাশীপুর বাজারে নিয়া, লেংটা করে, সবার সামনে পিটাইছিল। গরমে সে বার বার পানি খাইতে চাচ্ছিলো। তখন পাকসেনারা সবাই মিলে তার গা ভরে মুতে দেয়। এরা মানুষ না। মানুষ এমন হয় না। এরা যা করে তা মানুষের কর্ম না। এরপর পানি খাইতে চাইলে, আমারে ডাকবি। ওর মুখ ভরে মুতুম।
আজিম দীর্ঘশ্বাস ফেলল। রাশেদের রাগে মিশে আছে সীমাহীন আবেগ। আবেগ যুক্তি বোঝে না। এ রাগ, বেদনার রাগ।
‘তারা অধম হতে পারে। তোমার উত্তম হতে তো ক্ষতি নেই। কুকুর তোমার পায়ে কামড় দিতে পারে। তুমি লাঠি দিয়ে তার জবাব দাও। কিন্তু, তাই বলে তুমি কি কুকুরের পায়ে কামড় দেবে। কুকুরের প্রকাশ ভঙ্গী হবে কুকুরের মত। মানুষের হবে মানুষের মত’।
আজিমের কথা শেষ হলে রাশেদ কোন উত্তর না দিয়ে মাথা নিচু করে চলে গেল। যাবার সময় পাক সৈনিকের গায়ে জোরে একটা লাথি মারল। আজিমের অপর একজন সহচর আফসারের কাছে একটি ছোট বাক্স দিয়ে গেল। বাক্সে কিছু গ্রেনেড আছে।
আফসার, আজাদ ও কামাল এ গ্রামেরই সন্তান। আজ রাতে তারা বরাবরের মত একসাথেই থাকবে। লোকচক্ষুর আড়ালে। মজিদ রাজাকারের লোকজন মুক্তি খোঁজার কাজে ব্যস্ত। আপাতত তাদের চোখ থেকে বাঁচতে হবে। আজ তাদের সাথে দুজন অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি থাকবেন। একজন উর্দু জানা মুক্তিযোদ্ধা সহচর, মিজান। আর একজন পাক সৈনিক।
আজ আফসারের ঘুমানোর দিন। গতকাল সে জেগে ছিল। তার দু’সহচর রাতে ঘুমিয়েছিল। বাঁশবাগানের পেছনের কবরে। নাদের আলীর কবর। কবরের পাশে মানুষ প্রবেশ করতে পারে, এমন একটি গর্ত বানানো হয়েছে। ঘুম আসলে, শিয়ালের মত সে গর্ত দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবে। এই গরমে বাইরে থাকার চেয়ে কবরে থাকা ভাল। শীতল, পবিত্র এক জায়গা। উপরে-পাশে, সামনে-নিচে মাটির দেয়াল। নতুন কবর। যেন মনে হয় নতুন ঘর। কেউ সন্দেহ করবে না। নাদের আলীর কেউ নেই। মানুষটা খুব একটা মিশুক ছিল না। মনে হয় না, কেউ কোনদিন যিয়ারত করার জন্য এত বড় বাঁশবাগানের ভেতর দিয়ে এতদূরে আসবে। আসার মানুষ থাকলে কি আর এতদূরে কবর দিতো ?
গ্রামের কোন এক বাড়িতে আশ্রয় নেওয়াটা সম্ভব ছিল। কিন্তু, সেটা নিরাপদ নয়। তারা চাইলে হয়ত কেউ না কেউ তাদের আশ্রয় দিবেন। কিন্তু, হানাদাররা জানতে পারলে, এসে গোটা বাড়িটা ধ্বংস করবে। তাদের তো মারবেই, এমন কি তাদের আশ্রয়দাতার যদি দুধের শিশুও থাকে, সেও রেহায় পাবে না। তারা কোন পরিবারকে এতটা বিপদে ফেলতে চান না। গ্রামের প্রায় সব বাড়িতেই মা-বোন সহ বাচ্চা ছেলেপেলে থাকে। তাই আপাতত তারা গর্তবাসী। গর্তের আরবি হচ্ছে কবর। ভিয়েতনামের যুদ্ধের সময় আমেরিকান বাহিনী মাকড়াসার জালের মত কোমর সমান গভীরতার এক বিশাল আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্ক আবিষ্কার করেছিল। প্রায় পনের কিলোমিটার যাবার পর তালগোল পাকিয়ে তারা অন্য কোন এক মুখদিয়ে বের হয়ে আসে। সেই নেটওয়ার্কের মানচিত্র তারা অনেক চেষ্টা করেও তৈরি করতে পারে নি। এরকম ছোট বড় আরো অনেক নেটওয়ার্ক সারা ভিয়েতনামের জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। ভিয়েতকং যোদ্ধারা তা ঠিকই বুঝত। কোন গর্ত দিয়ে ধুকে, কোন দিক দিয়ে যেয়ে, অন্য কোন গর্ত দিয়ে বের হলে তারা কোন জায়গাতে পৌঁছাবে। সবই তাদের মুখস্ত ছিল। মানুষ ঠেলায় পড়লে কি না করে?
একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। তারা যখন এই এলাকায় আসে, তখন নাদের আলী মরার এক সপ্তাহ হয়েছে। নাদের আলীকে কবর থেকে বের করে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হল, রাতের আধারে। আফসারদের তিন জনের কাছেই টর্চ লাইট ছিল। একটি হারিকেন ছিল। রাতের বেলায় সাধারণত তারা চলাচল করেন না। চলাচল না করলে টর্চের দরকার হয় না। টর্চ নিরাপদ নয়। এর আলো বহুদুর চলে যায়, রেখার মত। ঘুমানোর সময় হারিকেন কবরের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। বাইরে যে জন পাহারায় থাকে, সে সচারচর সময় পেলে, কিছুদূরের নদীর ধারে চলে যায়। খোলা আকাশের নিচে স্টেনগান হাতে বসে থাকে। চাঁদনী পসন রাত হলে তো আর কথাই নেই। এই এলাকার মানুষ এমনিতেই রোম্যান্টিক। সারা রাত চাঁদ দেখে সময় ক্ষেপণ তাদের কাছে খুব একটা কঠিন ব্যাপার না। রবিঠাকুর শুধু শুধু সারা দুনিয়া ভুলে কুষ্টিয়ায় এসে বসে থাকতেন না। তিনি তো জমিদারের ছেলে ছিলেন। তার যাবার জন্য সারা দুনিয়া ছিল। সমগ্র ভারতবর্ষ ছিলো।
যাই হোক, একরাতে আফসার কবরের ভেতর। জীবিত, কিন্তু ঘুমন্ত অবস্থায় শুয়ে আছে। কামাল তার সাথে। বাইরে আজাদ পাহারারত। হঠ্যাৎ বাইরে কিছু এলোমেলো পায়ের আওয়াজ শোনা গেল। আফসারের কান খুব খাড়া। বাইরে দুজন মানুষের কথা বার্তার শব্দ শোনা গেল। তারা বাঙ্গালী। আফসারের ভয় হতে লাগলো। সে কাত হয়ে শুয়ে ছিল। কবরের ভেতর জায়গা কম। কামালও কাত হয়ে তার পাশে শুয়ে আছে। গ্রামের কবর গুলো কিছুটা বড় করেই কাঁটা হয়। গ্রামে জায়গার অভাব নেই। বাঁশেরও অভাব নেই। এই কবরটা যথেষ্ট বড়। পুরুষ মানুষের কবর হাওয়াতে তার গভীরতা তুলনামুলক ভাবে কম।
আফসারের ভয় হতে লাগল। এতরাতে ভুত ছাড়া এখানে আর কে আসবে? নাকি রাজাকারেরা পাকসেনা সাথে এসেছে ? কেউ হয়ত তাদের খবর দিয়েছে। তার ভয় হতে লাগল, আজাদের জন্য। তার বিপদ হয় নি তো ? সে হয়ত তাদের বাঁচানোর জন্য কোন শব্দ করে নি। সে আস্তে করে কামালের ঘুম ভাঙ্গালো। হারিকেনের আলোটা প্রায় নিভন্ত অবস্থায় ছিল। আলোটা একটু বাড়িয়ে দিল। কবর থেকে বের হতে হবে। দুজন একসাথে বের হতে পারবে না। একজন একজন করে বাইরে বের হতে হবে। কবরের পাশে হেলানো একটি পথ তারা তৈরি করেছে কবর থেকে বাইরে বের হবার। এর জন্য কবরের উপরের অংশ রয়ে গেছে সম্পূর্ণ অক্ষত। উপরে কবরের বেড়ার বাইরে, কিছুতা দূরে বেরোবার মুখ। সেটা কলাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখা। আজাদ স্টেনগান হাতে বের হয়ে আসলো। দু’জন লোক কবরের বাইরে লন্ঠন হাতে দাড়িয়ে ছিল। আফসারকে তারা অনেকটা মাটি ফুঁড়ে বের হতে দেখল। আফসার বন্দুক তাক করা মাত্র তারা জ্ঞান হারাল। ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেল। তারা যেন নিশ্চিত ভাবে ভুত দেখেছে।
আফসার আর কামাল তাদের গাছের সাথে বেধে ফেলল। কিছুক্ষণ পর বিরি ফুকতে ফুকতে আজাদ আসলো। আফসারের কাছ থেকে সে সব শুনলো।
পরদিন সকালবেলা তাদের জঙ্গলের আরো ভেতরে নিয়ে ছুরিকাঘাতে মেরে ফেলা হল। তারা রাজাকার ছিল না। পাকবাহিনীর লোকও নয়। তারা ছিল কবরের চোর। এদের কাজ নতুন কবর থেকে কাফনের কাপড় চুরি করা। সম্ভব হলে লাশ। গ্রামে লাশের কোন দাম না থাকলেও শহরে আছে।
( আমার নাম - ফয়সাল শোভন। বুয়েটের সদ্য graduate ।।। ব্লগে এটাই আমার প্রথম লেখা।। আগে কবিতা লিখতাম। গত ১ বছর লেখালেখি করি ফেসবুকে। আগামী বছর ২ টি বই বের করতে পারব বলে আশা করছি।।।। ফেসবুকে আমি আমার অন্য একটি উপন্যাস " "কথোপকথন" পর্ব আকারে লেখি। সেটা বেশ কিছু মানুষ পছন্দ করেছে বলেই আমার হালকা সাহস হয়েছে ব্লগে কিছু একটা লেখার। ভাল লাগলে বলবেন। আমি চেষ্টা করবো চালিয়ে যাওয়ার। এখন নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সময় বের করাটা একটু কঠিন। )
https://www.facebook.com/unwanted36
মন্তব্য
সব লেখককে সমান সুযোগ দেবার জন্য প্রথম পাতায় একজন লেখকের একটি লেখা প্রকাশ হয় সচলায়তনে। আপনার প্রথম পর্ব প্রথম পাতা থেকে সরেনি বলে দ্বিতীয় পর্বটি প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে। এজন্য আমরা দুঃখিত।
কয়েকটা কথা বলি, আপনার ইচ্ছে হলে রাখতে পারেন।
এক, লেখার শেষে নিজের নাম বা নিক লিখুন। তাহলে পাঠক কার লেখা পড়লো সেটা যেমন জানতে পারবে তেমন সেই লেখকের অন্য লেখাও ফলো করা যাবে।
দুই, লেখকের মূল পরিচয় তার লেখায়, তার ব্যক্তি পরিচয়টি জানা জরুরী নয়। তাই লেখার শেষে ফেসবুক আইডি বা ছবি না থাকলেই ভালো হয়।
তিন, সচলায়তন লেখকদের কমিউনিটি বলে এখানে লেখক-পাঠকের মিথষ্ক্রিয়াকে খুব গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। তাই আপনার লেখায় পাঠকের করা মন্তব্যের প্রত্যুত্তর করা যেমন দরকার তেমন অন্যের লেখায়ও আপনার সুচিন্তিত মন্তব্য করা দরকার।
সচলে স্বাগতম। লেখালেখি চালিয়ে যান।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
লেখা ভালো লেগেছে।
পান্ডব’দার সাথে সহমত। এর বাইরে বানান এর বিষয়ে একটু নজর দিন আর লেখা
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
চলতে থাকুক কী-বোর্ড।
ভালো লাগলো। চলুক
নতুন মন্তব্য করুন