কোনোদিন ভেবেছেন কি সারাদেশব্যাপী জামাতের এই সন্ত্রাস চালানোর ক্ষমতার উৎস কী? মাল্টি মিলিয়ান ডলারের এই লবিং ফার্ম কীভাবে নিয়োগ করতে পারে জামাত? শর্মিলা বসু, টোবি ক্যাডম্যান, ডেভিড বার্গম্যানের মতো বিদেশিদের পাশাপাশি কীভাবে কাদের সিদ্দিকী, পিয়াস করিম, ফরহাদ মজহার, আসিফ নজরুলের মতো দেশীয় দালালদের হাতে রাখে জামাত?
এই সব প্রশ্নের উত্তর একটাই, জামাতের শক্তিশালী অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড। এই দেশের প্রতিটি ব্যবসায়িক সেক্টরে তারা নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেছে। বাজার থেকে যে পণ্যটি আপনি কিনে এনেছেন কিংবা প্যাথলজিকাল টেস্টের জন্য যে ডায়গোনস্টিক সেন্টারে যাচ্ছেন, তার অনেকগুলিই হয়তো জামাতী মালিকানাধীন। অনেকেই ভেবে থাকেন, জামাত দল হিসেবে তো আর এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক না। ব্যক্তিমালিকানাধীন এইসব কোম্পানির মালিক যদি জামাতি হয়, তার সাথে সেই কোম্পানির পণ্য বর্জনের সম্পর্ক কী? দুঃখজনকভাবে, যারা প্রশ্নটা করেন তারা হয় জ্ঞানপাপী, নয়তো এতোটাই সরল যে, এটা জানেন না- জামাতের সমর্থক এইসব মালিকরা প্রত্যেকেই দলের ফান্ডে মোটা অংকের টাকা ডোনেট করেন। আজ আপনার টাকাতেই, তারা সন্ত্রাসী পালছে- যে সন্ত্রাসী হয়তো আগামীকাল আপনার গাড়িতে আগুন দিবে। জামাতকে পরাজিত করতে হলে শুধু আদর্শিকভাবে পরাজিত করলেই হবে না, বরং এদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডটিকেও গুড়িয়ে দিতে হবে। অর্থের যোগান বন্ধ হয়ে গেলে, জামাতের বহু বৃথা আস্ফালন আপনা আপনিই বন্ধ হয়ে যাবে।
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর থেকে জামাতি পণ্য বর্জনের যে আহবান জানানো হয়েছিলো, আশাপ্রদভাবে অনেকেই তাতে সাড়া দিয়েছেন। বিগত কিছুদিনের নিউজ মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রাপ্ত খবরের তালিকা থেকেই, এই পোস্টে সেগুলি আপনাদের জানাচ্ছি। যদি আপনাদের সন্ধানে আরো কোনো পণ্যবর্জনের হদিস থেকে থাকে, মন্তব্যের ঘরে জানাতে পারেন। সেগুলি যোগ করে পরবর্তীতে আবার পোস্ট করা যেতে পারে এই তালিকাটি।
- টাঙ্গাইলে দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ:কাদের মোল্লাসহ সব যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে টাঙ্গাইলে ছাত্র-জনতার গণঅবস্থান কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে বুধবার সকাল থেকে আবার দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় জেলার ক্যাবল অপারেটররা... মূল খবর এইখানে
- জামায়াতের গণমাধ্যম বর্জনের ঘোষনা শিল্পীদের: মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে চলা আন্দোলনের সঙ্গে এবার সংহতি জানালেন টেলিভিশন নাটকের শতাধিক শিল্পী ও কলাকুশলী। শাহবাগে শিল্পীরা জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত সব গণমাধ্যম বর্জন করার ঘোষণা দেন... মূল খবর এইখানে
- বরিশালে দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ: বরিশালে দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ীরা। সোমবার রাত থেকে সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন দিগন্ত টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান আযাদ আলাউদ্দিন... মূল খবর এখানে
- মাদারগঞ্জে দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ: জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় এক সংগঠনের চাপে পড়ে দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় ক্যাবল নেটওর্য়াক। ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে পুরো মাদারগঞ্জে দিগন্ত টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে... মূল খবর এখানে।
- ধর্মপাশায় দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ীরা। রোববার রাত থেকে উপজেলার দুটি ক্যাবল নেটওয়ার্ক মালিক এ সিদ্ধান্ত নেন এবং কার্যকর করেন... মূল খবর এখানে।
- লালমণিরহাটে দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ: গতকাল রোববার রাত থেকে লালমনিরহাটে দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে জেলা কেবল টিভি সম্প্রচার নেটওয়ার্ক। এ ব্যাপারে জেলা কেবল টিভি সম্প্রচার নেটওয়ার্কের পক্ষে মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বানে সাড়া দিয়ে গতকাল রাত নয়টা থেকে লালমনিরহাটে দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে... মূল খবর এখানে।
- বাগেরহাট এবং খাগড়াছড়িতে দিগন্ত টেলিভিশন বন্ধ: [/url] গণ মানুষের আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য বাগেরহাট কেবল ভিশন শুক্রবার রাত থেকে দিগন্ত টেলিভিশনের সমপ্র্রচার শহরে বন্ধ করে দিয়েছে...মূল খবর এখানে।
- শ্রীমঙ্গলে দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ: মৌলভী বাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কেবল অপারেটররা দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন... মূল খবর এখানে।
- ভৈরবে দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ এবং ইবনে সিনার ওষুধ বর্জন: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জামায়াতের মালিকানাধীন ইবনে সিনা কম্পানির সব ধরনের ওষুধ বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি ভৈরব শাখা এবং ভৈরব ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতি এ সিদ্ধান্ত নেয়... মূল খবর এখানে।
- বাগেরহাট ইসলামি ব্যাংক থেকে টাকা প্রত্যাহার: দ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ঢাকার শাহবাগে গত ৮ ফেব্রুয়ারির গণজাগরণ সমাবেশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জামায়াত পরিচালিত ইসলামী ব্যাংক বাগেরহাট শাখা থেকে নিজেদের হিসাব প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দু’জন গ্রাহক... মূল খবর এখানে। জামাতি পণ্য বর্জনের পথিকৃত এই দুইজন ব্যক্তির সাক্ষাতকার শুনুন সচলায়তনে।
- নেত্রকোনার ইসলামি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে ফেলার হিড়িক: যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন চলাকালে জামায়াত-শিবির পরিচালিত ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি জানানোর পর গতকাল মঙ্গলবার নেত্রকোনা ইসলামী ব্যাংকে গ্রাহকদের টাকা তোলার হিড়িক পড়েছে... মূল খবর এখানে।
- গোপালগঞ্জের ইসলামি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার হিড়িক: গতকাল সকালে ইসলামী ব্যাংক গোপালগঞ্জ শাখায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন গ্রাহক তাঁদের হিসাব প্রত্যাহার করে টাকা তুলে নিচ্ছেন... মূল খবর এখানে।
- সিলেটের ইন্টার্নি ডাক্তারদের ইবনেসিনা বর্জনের ঘোষণা: ইন্টার্নি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট শাখার সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, রোববার রাতে তাদের এক বৈঠকে ইবনে সিনার ওষুধ বর্জনের এই সিদ্ধান্ত হয়। এখন থেকে ইবনে সিনার কোনো ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে না লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা... মূল খবর এইখানে।
এর বাইরে আলাদাভাবে বলতে হয়, গতকাল গণজাগরণ মঞ্চ থেকে আহবান জানানো হয়েছে সকল মিডিয়ার প্রতি, জামাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠাণসমূহের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করার জন্য। এরই মধ্যে দেশের প্রথমসারির অনলাইন নিউজ পোর্টাল এই ইস্যুতে তাদের দৃঢ় মনোভাব ব্যক্ত করেছে। আশা করবো, অন্যান্য মিডিয়াও দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবে।
তবে সবচে বড় ধাক্কা যেটা এই অবধি এসেছে, বহির্বিশ্বের প্রথম সারির ব্যাঙ্ক কতৃক ইসলামি ব্যাংক প্রত্যাখ্যান করা। এইচ এস বি সি, সিটি ব্যাংক এন এ, ব্যাংক অভ আমেরিকার মতো প্রভাবশালী ব্যাংকগুলি ইসলামি ব্যাংকের সাথে লেনদনে অনাগ্রহ প্রকাশ করে জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইসলামি ব্যাংকের সাথে আর কোনো লেনদন করবে না। ফলশ্রুতিতে ইসলামি ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসাতে আপত্তি জানিয়েছে ওয়ালমার্ট, জেসিপেনি, এইচ অ্যান্ড এম, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসারের মতো পৃথিবীরি প্রথমসারির ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। ইসলামি ব্যাংকের মাধ্যমে আসা কোনো রফতানি দলিলও গ্রহণ করছে না।
পরিস্থিতি যে ঠিক কতোটা নাগালের বাইরে চলে গেছে, এটা অনুধাবন করা গেছে যখন ইসলামী ব্যাংক তাদের এই চারপাশ থেকে ঘিরে ধরা বিপদ থেকে মুক্তির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাহায্য চায়।
গণমানুষের জাগরণের সাথে সাথে জামাত বুঝে গেছে তাদের ভবিষ্যত। জামাত শিবিরের বিষাক্ত রাজনীতি এই দেশ থেকে দূর করার জন্য আপনার খুব সামান্য সদিচ্ছাই যথেষ্ট। জামাতি এইসব প্রতিষ্ঠাণ কিংবা পণ্য কোনোটিই একমাত্র পণ্য কিংবা সেবা না; আপনি খুব সহজেই জামাতের পণ্যটিকে বর্জন করে, অন্য আরেকটি ব্র্যান্ডের পণ্য কিনতে পারেন কিংবা জামাতের প্রতিষ্ঠাণটিকে বর্জন করে ভিন্ন একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থের বিনিময়ে সেবা নিতে পারেন।
আপনারই দেওয়া টাকাতে জামাত সন্ত্রাসী, জঙ্গী গোষ্ঠী পেলে পুষে বড় করছে, সময় এলে এরা একদিন আপনাকেই আঘাত করবে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের দাগ আপনার হাতে লাগতে দিবেন না। সময় এসেছে, সচেতন হোন, বর্জন করুন জামাতি সব কিছু।
মন্তব্য
হে হে হে... কর্মক্ষেত্রে আমার অনেক কলিগ (যরা দু'দিন আগেও ইস্লামী ব্যাঙ্কে কেন একাউন্ট খুলিনি এই প্রশ্ন নিয়ে রাত-দিন উতপাত করত) এখন নিজের একাউন্ট ব্ল্যাঙ্ক করে নিয়ে আসছে... নিজে বাচলে বাপের নাম... ... (আমিও এই আগুনে আলতো হাওয়া দিয়েছি... আপনারাও দিন )
যে সমস্ত জামাতি প্রতিষ্ঠানের নাম পোস্টার আকারে এসেছে তাতে কেয়ারী ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এর নাম চোখে পড়লনা। পর্জটন মৌসুমে এই প্রতিষ্ঠানটি দারুণ ব্যবসা করে। বিশেষ করে যারা সেন্ট মার্টিন্স ভ্রমণে যাবেন তারা অবশ্যই "কেয়ারী সিন্দাবাদ" বর্জন করবেন।
হেহে। ভাতেই মাইরালামু!
রমজানের সময় আমার মা সেহরি আর ইফতারের সময় সূচি টা বসার ঘরের দরজায় লাগিয়ে দেয়। ঠিক সেভাবেই তিনি জামাতি পণ্যবর্জন লিস্ট টা বসার ঘরের দরজায় লাগিয়ে দিয়েছেন। আশা করি আমার মা'র মত আর অনেক মা'ই এই কাজটি করবেন।
এই লেখাটি ইংরেজিতেও অনূদিত হওয়া প্রয়োজন।
বিভিন্ন সময়ে পেপারে খবরগুলো দেখেছিলাম। দেখেছি আর খুশীতে হেসেছি। সুদিন আর বেশী দূরে নয়।
সকল স্তরের জনতা সতর্ক হলে জামাতি শয়তানগুলার বিতাড়িত হতে দেরী নাই।
দরকার সচেতনতা।
বর্জন করতে হবে জামাতের সবকিছু।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
jahangir gate e Bangladesh airforce er boro bilboard e islami bank er commercial achee. channel i er banijjo sanbad eo islami bank er sponsorship achhe...........
highcourt er samne obosthan korar ki holo?
সর্বাত্বক অসহযোগীতাই পারে এই শয়তানগুলোর মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে!!
সুবোধ অবোধ
১৯৯৮ সাল থেকে জামাতের মদদপুষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং আমদানিকৃত পাকিস্তানী পণ্য বর্জন করে আসছি। পরিচিত মানুষের কটুক্তি আর প্রশ্নের জবাব দিয়েছি ঠান্ডা মাথায়। অনেকেই প্রভাবিত হয়েছে, অনেকেই ছেলেমানুষী মনে করেছে। এখন প্রচুর মানুষ দেখি যারা ওদের পণ্য, সেবা বা প্রতিষ্ঠান বর্জন করছে; বেশ ভালো লাগে!
শিমুল কিবরিয়া
shimulkibria.sachalayton
যুদ্ধ সুরু হইয়াছে। আমরা কি রেডি?
ফুয়েল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে ক্রমশ সকল হম্বিতম্বি ম্রিয়মাণ হয়ে আসবে।
স্বাধীনতা বিরোধী, মানবতা বিরোধী এই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শক্তিশালী অর্থনীতিক ভীত দূর্বল করে দেওয়ার জন্য আমাদের সচেতনতাই যথেস্ট।
সময় এখন মুখোশ উন্মচনের, সময় এখন সত্যের জাগরণের।
আসুন আমরা জেগে উঠি, জেগে থাকি
বিজন কথক
নতুন মন্তব্য করুন