বাংলা লিংকের বিজ্ঞাপন : অভাগার ঢাকা দর্শন!

আরিফ জেবতিক এর ছবি
লিখেছেন আরিফ জেবতিক (তারিখ: শুক্র, ২৩/০৩/২০০৭ - ৪:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সত্য গল্প
1.আমার এক বুদ্দু বন্ধুকে আমরা ডাকতাম 'অভাগা।'তো সেই অভাগা একবার সিলেট থেকে ঢাকা শহর দেখার জন্য এলো। আমরা যারা ঢাকায় ছিলাম তাদের হলো ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। অভাগা হাইকোর্ট দেখে,মতিঝিলের বক ভাস্কর্য দেখে,লালবাগ কেল্লা দেখে,দোতলা বাস চড়তে চায়,শিশু পার্কের দোলনা চড়তে চায়...আমরা হাসি মুখে (এবং মনে মনে বিরক্ত হয়ে) তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরি।

তো সপ্তাহখানেক পরে অভাগার লিস্টে বাকি থাকলো ,এফ.ডি.সি দেখা আর চিড়িয়াখানা দেখা। আমি তখন ভোরের কাগজে প্রেষনে এফ.ডি.সি বিট করছি। সিদ্ধান্ত হলো এফ.ডি.সি তে একচক্কর ঘুরিয়ে ,বিটিভিতে একজনের সাথে আমার একটু কাজ সেরে তাকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় যাবো।

সেই মতে অভাগা আমার সঙ্গে এফ.ডি.সি ঘুরে এলো।না না সেট দেকে,ক্যামেরা দেখে অভাগা বেজায় খুশি,বিকট দর্শন নায়িকা মুনমুনের সাথেও তাকে কথা বলিয়ে দিলাম।আনন্দে অভাগার মুখে কথা সরে না!

তারপর গেলাম বিটিভি তে। আগেই দুজনের জন্য পাস নিয়ে রাখা ছিল ।সুতরাং কোন বিপত্তি ছাড়াই ভেতরে ঢুকলাম।

আমি বিটিভিতে আমার টুকটাক কাজ সারলাম,এই ফাকে অভাগা বিটিভির বিভিন্ন সেকশনের সামনে দিয়ে ঘুরে বেড়ালো।

বিটিভি থেকে বেরিয়ে অভাগার মুখ বেজার! বিমর্ষ হয়ে বলল,'না দোস্ত,আর চিড়িয়াখানা দেখব না। বাসায় যাবো গিয়া।'

2. আমরা বাকি বন্ধু বান্ধবরা সেদিন অনেক গবেষনা করেও বের করতে পারিনি ,কেন অভাগা চিড়িয়াখানার মতো ইন্টারেস্টিং একটা বিষয় না দেখে তার ঢাকা সফরের ইতি টানলো।
-------------------------------------------------

এটাও সত্য গল্প!

1.স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলা লিংক একটি সুন্দর বিজ্ঞাপন করেছে। এক বোন তার 71 এ হারিয়ে যাওয়া ভাইয়ের গল্প করে। কিভাবে তারা দুষ্টুমি করতো,কিভাবে ঝগড়া করতো এ সব টুকিটাকি।ব্যাকুল বোন এতোদিন পরেও ভাইয়ের জন্য কাঁেদ আর ভাবে,তার ভাইটি বড়ো হলে এখন দেখতে কেমন হতো,তার কি গোফ তাকতো,সে কি বিয়ে করতো ....।
নজমুল আলবাবের পোস্ট পড়ে আমি গতকাল বিজ্ঞাপনটি দেখলাম। পাঠক,আপনারা যারা বিজ্ঞাপনটি দেখেছেন,তারা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন,খুব সাদামাটা ভাবে বানানো একটি বিজ্ঞাপন,তবু কেন যেন পোড়া চোখ ভিজে যায়...।

2.এই বিজ্ঞাপনটি বিটিভি কতর্ৃপক্ষ দেখাতে অস্বীকার করেছে। সবগুলো চ্যানেলে বিজ্ঞাপনটি দেখানো হলেও বিটিভিতে বিজ্ঞাপনটি দেখানো হচ্ছে না।স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে কিছু দেখানোতে নাকি তাদের নীতিমালায় বাধা আছে!! (পাঠক,খেয়াল করুন,আমি পিটিভির কথা বলছি না।)

---------------------------------
আজ এতোদিন পরে আমি অভাগার ব্যাপারটা বুঝলাম।
আসলেই বিটিভি ভবনের প্রানীদের দেখার পর আর চিড়িয়াখানা দেখার দরকারটা কী!

মনে মনে একটু স্বস্থিও পাচ্ছি। আমার এতোদিন ধারনা ছিল,চিড়িয়াখানার ইতর প্রানী যেমন কুকুর,ুবড়াল,ছাগল এগুলো যেহেতু দ্রুত বংশ বিস্তার করে ফেলে ,তাই হয়তো স্থান সংকুলানের জন্য এদের অনেকগুলো কে মেরে ফেলা হয়।
আজ বুঝলাম, মাননীয় সরকার বাহাদুর প্রানী হত্যার মতো পাপ করেন না।

তারা এই ইতর শ্রেনীর প্রানীগুলোকে বিটিভি তে চাকরি দিয়ে দেন।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।